Are you sure?

কুরআন »  বিবিধ

ইসলামে নারী ও পুরুষের বহু বিবাহ সংক্রান্ত জবাব।

মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনুম মাজীদে কেন একজন পুরুষকে ৪ টা বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে অথচ নারীকে দেয়নি। এটা কি নারীর প্রতি অন্যায় অবিচার ও বৈষম্যমূলক আচারণ নয়? আর একজন পুরুষের চারটি বিবাহের যৌক্তিকতা কতটুকু? 

ইসলাম যে কতটাই বাস্তবিক ধর্ম এবং সেই সাথে ইসলাম যে মানবতার জটিল জটিল সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে সেই বিষয়টি যথার্থ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ এবং যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিব ইনশাআল্লাহু তা'আলা। অনেকেই বুঝতে পারে না ইসলাম কিভাবে মানবতার সমাধান হয়? আর এখানে সেটাই প্রমাণ করব যে, একমাত্র মানবতার পরিপূর্ণ সমাধান হলো ইসলাম। 

পৃথিবীতে আল কুরআনই একমাত্র ধর্মীয় গ্রন্থ যেখানে বলা হয়েছে, "...অথবা বিবাহ করো মাত্র একজনকে।" অন্য কোন ধর্মীয় গ্রন্থে এমনটা নেই, যেখানে পুরুষের জন্য মাত্র একটি বিবাহের কথা বলা হয়েছে। অন্যসব ধর্মীয় গ্রন্থ হোক তা বাইবেল, বেদ গীতা রামায়ণ মহাভারত, তালমুদ, ত্রিপিটক। এসবের মধ্যে স্ত্রীদের সংখ্যার উপর কোন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। এসব ধর্মীয় গ্রন্থ অনুযায়ী একজন পুরুষ যত ইচ্ছে ততই বিয়ে করতে পারে। সেখানে পবিত্র কুরআন বহুবিবাহকে সীমিত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এরও অনেক কারন রয়েছে।  

>(ক) বহু বিবাহের সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের আয়াত কি বলেছে? আসুন দেখে নিই।
▪︎ বিবাহের ক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ আসমানী কিতাব মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনুম মাজীদের ৪ নং সূরা আন নিসার, আয়াত: ৩ এ মহামহিমান্বিত রব আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া'জ্বাল্লা বলেছেন: 

وَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تُقْسِطُوا۟ فِى ٱلْيَتَٰمَىٰ فَٱنكِحُوا۟ مَ طَابَ لَكُم مِّنَ ٱلنِّسَآءِ مَثْنَىٰ وَثُلَٰثَ وَرُبَٰعَ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا۟ فَوَٰحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُكُمْ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰٓ أَلَّا تَعُولُوا۟ 

"আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতীমদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে নারীদের মধ্য হতে তোমাদের পছন্দ মত দু’টি, তিনটি কিংবা চারটিকে বিয়ে করে নাও; কিন্তু যদি তোমরা আশংকা কর যে, তাদের সাথে ন্যায় সঙ্গত আচরণ করতে পারবে না তাহলে মাত্র একটি অথবা তোমাদের ডান হাত যার অধিকারী (ক্রীতদাসী); এটা আরও উত্তম; এটা অবিচার না করার নিকটবর্তী"। [01] 

আয়াতটার প্রতি ভাল করে লক্ষ্য করুন। এইখানে শর্তমূলক বাক্যে বিবাহের সংখ্যা হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, "তোমরা বিয়ে করতে পারবে...
• দুটি - مَثْنَىٰ , 
• তিনটি - وَثُلَٰثَ ,
• কিংবা চারটি - وَرُبَٰعَ ,
• অথবা একটি বিবাহ - فَوَٰحِدَةً ,
• অথবা তোমাদের ডান হাত যার অধিকারী (ক্রীতদাসী) - أَيْمَٰنُكُمْ ।  

এখন প্রশ্ন হলো, এইখানে কোনসব মেয়েদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে? ধনী শ্রেণীর মেয়ে নাকি গরীব শ্রেণীর মেয়ে? নিশ্চিত মূল উদ্দেশ্য ছিল গরীব শ্রেণীর মেয়ে মানুষ, যারা কিনা ইয়াতীম। অর্থাৎ পিতৃ-মাতৃহীন বা পিতৃহীন মেয়ে। এটা কিভাবে বুঝলাম? কারণ একই সূরার পূর্বের আয়াতে বলা হয়েছে,  

"ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন-সম্পদ বুঝিয়ে দাও। তোমাদের খারাপ মালামালের সাথে তাদের ভালো মালামালেরও অদল-বদল করো না। আর তাদের ধন-সম্পদ নিজেদের ধন-সম্পদের সাথে মিশিয়ে তা গ্রাস করো না। নিশ্চয়ই এটা বড় মন্দ কাজ।" [02] 

অর্থাৎ সূরা আন নিসার ২ এবং ৩ নং আয়াতের মূল ব্যাখ্যা হলো: এইখানে "ٱلۡيَتَٰمَىٰٓ/ইয়াতীম" শব্দটির অর্থ হলো নিঃসঙ্গ। একটি ঝিনুকের মধ্যে যদি একটিমাত্র মুক্তা জন্ম নেয়, তখন একে 'দুররাতুন ইয়াতীমাতুন' বা 'নিঃসঙ্গ মুক্তা' বলা হয়ে থাকে। আর ইসলামী পরিভাষায়- যে শিশু সন্তানের পিতা ইন্তেকাল করে, তাকে ইয়াতীম বলা হয়। ছেলে মেয়ে বালেগ হয়ে গেলে তাদেরকে ইসলামী পরিভাষায় ইয়াতীম বলা হয় না। যেমনটা সহীহ হাদিসের মধ্যে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 

"বালেগ হওয়ার পর কেউই ইয়াতীম থাকে না...।" [03] 

অর্থাৎ এইখানে সেইসব ইয়াতীম শ্রেণীর মেয়েদের কথা বলা হয়েছে, যারা কিনা নিঃসঙ্গ এবং তারা কারো তত্ত্বাবধানে লালিত পালিত হয়। এদের ধনসম্পত্তিও তাদের অভিভাবকদের কাছে গচ্ছিত থাকে।  

>(খ) এখন আসুন আমরা এই আয়াত নাযিলের মূল কারণ জেনে নিই। কেন মহান আল্লাহ এই আয়াত নাযিল করেছিলেন?
▪︎ আসলে তৎকালীন আরবে ইয়াতীম মেয়েদের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালনকারী অভিভাবকগণ তাদের ধনসম্পত্তিও ভোগ করতো। এমনকি পিতৃহীন ইয়াতীমদের ছাগল/বকরীর পালগুলো হতে বেছে বেছে ভালগুলো নিয়ে নিজেদের দুর্বল ও পাতলা পশুগুলো দিয়ে দিত এবং এভাবে নিজেদের সম্পদ ঠিকঠাক রাখত। অনেকেই আবার এসব ইয়াতীম মেয়েদের ধন সম্পদ লুটে খাওয়ার জন্য, তাদের সম্পদ পরিপূর্ণ হস্তগত করার জন্য তাদের বিয়ে করে নিত। অনেকেই আবার তাদের রুপ লাবণ্যে মুগ্ধ হয়ে, তাদের সম্পদকে খুব সহজেই নিজের দখলে নিতে উপযুক্ত মর্যাদা ও দেন মোহর ছাড়াই কোনভাবে বিয়ে করে নিত। এরপর তাদের নিকট গচ্ছিত ঐ ধনসম্পত্তি পরিপূর্ণ হস্তগত করা হলে এসব অসহায় মেয়েদের নিজেদের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে অবজ্ঞাভরে দূরে ছুঁড়ে মারত। ফলশ্রুতিতে তাদের যাওয়ার আর কোন জায়গা না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হতো। আর এরূপ উদ্দেশ্যে এসব ইয়াতীম মেয়েদের বিয়ে করা নিষেধ করা হয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য নারীদের বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের ক্ষেত্রেও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।  

এছাড়া এই আয়াত নাযিলের প্রসঙ্গে আম্মাজান হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা বলেছেন যে, "এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে একজন ইয়াতীম বালিকা ছিল। অতঃপর সে তাকে বিয়ে করল আর সে বালিকার একটি বাগান ছিল। তার অন্তরে ঐ বালিকার প্রতি কোন আকর্ষণ না থাকা সত্ত্বেও বাগানের কারণে সে ঐ বালিকাটিকে বিবাহ করে রেখে দিতে চেয়েছিল। আবার উরওয়া ইবনে জুবাইর রহঃ আয়েশা রাঃ কে উক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, "...সে হচ্ছে পিতৃহীনা বালিকা, যে অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে থাকে, তার সম্পত্তিতে অংশীদার হয় এবং তার রূপ ও সম্পদ তাকে (অভিভাবককে) আকৃষ্ট করে। এরপর সেই অভিভাবক উপযুক্ত মোহর ছাড়াই তাকে বিয়ে করতে চায়।" [04] 

অর্থাৎ ইয়াতীম মেয়েদের ধনসম্পত্তি হস্তগত করার উদ্দেশ্যে তাদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে, উপযুক্ত দেনমোহর দেয়া ও ন্যায়বিচার করা ছাড়াই এসব মেয়েদের বিয়ে করা যাবে না। আরো বিস্তারিত জানতে হলে উক্ত আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর, ফাতহুল মাজীদ, আহসানুল বায়ান, তাফসীরে আবু বকর যাকারিয়া পড়তে পারেন। ফলাফল হিসেবে আমরা পাই, এসব ইয়াতীম মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে: 

• তাদের ধনসম্পত্তি হস্তগত করার লোভে অভিভাবকদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে; 
• তাদের রুপ লাবণ্যে মুগ্ধ হয়ে অন্যান্য স্ত্রীদের যেভাবে দেনমোহর প্রদান করে বিয়ে করত, সেভাবে অনুরূপ দেনমোহর দেওয়া ছাড়াই অথবা কম দেনমোহর দেওয়ার নাম করে হলেও বিয়ে করা যাবে না। 

এছাড়া এই আয়াত অবতীর্ণ হবার পর লোকেরা আল্লাহর রাসূল সাঃ এর কাছে মহিলাদের ব্যাপারে আরো জানতে চান। তখন আম্মাজান আয়েশা রাঃ বলেন, অন্য এক আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন "তোমরা তাদেরকে বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ কর। ইয়াতীম বালিকার ধন-সম্পদ কম হলে এবং সুন্দরী না হলে তাকে বিবাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করো না। আর এই জন্য ইয়াতীম বালিকাদের মাল ও সৌন্দর্যের আকর্ষণে বিবাহ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে ন্যায়বিচার করলে ভিন্ন কথা। -- সহীহ বুখারি, হাদিস- ৪৫৭৪।  

এরপর আবার সেখানে বলা হয়েছে, যদি ইয়াতীম মেয়েদেরও উপযুক্ত সম্মান ও মর্যাদার সাথে দু, তিন অথবা চারটি বিবাহ করতে না পারো, তাইলে একটিই হবে উত্তম। অর্থাৎ একটি বিবাহ করতে উৎসাহিত করা হলেও বহু বিবাহের ক্ষেত্রে সতর্কতা আরোপ করা হয়েছে। আর এও না পারলে তোমাদের অধীনস্থ দাসীদের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে পারো। এটাই বলা হয়েছে।  

>(গ) এখন এইখানে একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে পুরুষদের উপর কী ধরনের শর্ত আরোপ করা হয়েছে?  
▪︎ সহজ উত্তর হলো শর্ত হিসেবে 'ন্যায়বিচার' প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। আর এ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সকল স্ত্রীদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার তাগিদ দেওয়া হয়েছে জোরালোভাবে। আর সত্য বলতে কি এটা অসম্ভব যে, সব স্ত্রীকে সমানভাবে ভালবাসা। এমনকি একজন মা তাঁর সন্তানদের ভালবাসে। কিন্তু কোন মা'ই বলতে পারে না যে- আমি আমার সকল সন্তানদের একই রকম ভালবাসি। কমবেশি হবেই হবে। তবে সব মিলিয়ে কোন অবিচার হবে না। তাই স্ত্রীদের অন্যসব ব্যাপারে টাকা পয়সা, বাড়ি গাড়ি, ধন সম্পদ, সময় ইত্যাদির ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার করতে হবে। যেমন এক স্ত্রীকে বাড়ি কিনে দিলে অন্য স্ত্রীও যেন তা থেকে বঞ্চিত না হয়। এক স্ত্রীকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিলে অন্য স্ত্রীকেও পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এইভাবে সকল স্ত্রীদের মধ্যে সমানহারে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যদি এগুলো আপনি করতে পারেন তাইলে বহু বিবাহ আপনার জন্য খাস অন্যথায় আপনার পথের কাঁটা। আর কাঁটা ডিঙিয়ে যাওয়ার চেষ্টা মানেই সীমালঙ্ঘন করা, যার দরুন শাস্তি আপনাকে পেতে হবে।  

>(ঘ) এখন বহুবিবাহ কি সবার জন্য বাধ্যতামূলক?
▪︎ উত্তর হলো 'না'। আবার সবার ক্ষেত্রেও বহু বিবাহ খাস নয়। বরং যারা শর্ত পূরণ করতে সক্ষম, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম কেবলমাত্র তাদের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।আর বহুবিবাহের ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হলেও মাত্র একটি বিবাহ করাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এছাড়া ইসলামে পাঁচ প্রকার কাজের কথা বলা হয়েছে। 
১. ফরজ/বাধ্যতামূলক,
২. মুস্তাহাব/উৎসাহ দেওয়া হয়েছে,
৩. মুবাহ/ঐচ্ছিক,
৪. মাকরুহ/নিরুৎসাহিত করা হয়েছে,
৫. হারাম/নিষিদ্ধ করা হয়েছে এমন কাজ।  

আর একাধিক বিয়ে করাটা হলো ঐচ্ছিক পর্যায়ের কাজ। ঐচ্ছিক পর্যায়ের কাজ হলেও কঠিন শর্তারোপ প্রদান করা হয়েছে, ভয়ভীতিও দেখানো হয়েছে।  

>(ঙ) এখন প্রশ্ন হলো একজন পুরুষকে কুরআন কেন বহুবিবাহের অনুমতি দিয়েছে?
▪︎ আমরা সবাই আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে জানতে পারি যে, পুরুষ ও নারী প্রায় সমান অনুপাতে জন্মগ্রহণ করে। তবে সমান অনুপাতে জন্মগ্রহণ করলেও মেয়ে শিশুরা ছেলে শিশুদের তুলনায় বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এটাই মেয়েদের অন্যতম একটি শারীরিক বৈশিষ্ট্য। তাই মেয়ে শিশুর তুলনায় ছেলে শিশুরা রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। আপনারাও যদি খেয়াল করেন তাইলে দেখবেন প্রায় সন্তানের মাতা অপেক্ষা বাবা দ্রুত মারা যায়। এছাড়া বিভিন্ন দুর্ঘটনা, ধূমপান, যুদ্ধ ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারীদের তুলনায় পুরুষদের মৃত্যু হার বেশি। আর তাই বর্তমান দুনিয়াতে পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের সংখ্যা বেশি।  

বর্তমানে কয়েকটি দেশে যেমন ভারতে পুরুষদের সংখ্যা নারীদের চেয়েও বেশি। এর প্রধান কারণ অভিশপ্ত যৌতুক প্রথার প্রভাবে কেবল ভারতেই জন্মের পূর্বে আল্ট্রাসনোগ্রামের দ্বারা মেয়ে শিশুর ভ্রুণ চিহ্নিত করে দৈনিক তিন হাজারেরও বেশি মহিলার গর্ভপাত করানো হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশেও বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ সম্পর্কের মাধ্যমে শিশু সন্তানের ভ্রুণ হত্যা করে ফেলা হচ্ছে। অর্থাৎ কেবলমাত্র ভারতেই বছরে প্রায় দশ লক্ষেরও বেশি মহিলার গর্ভপাত ঘটানো হয়, যখন বুঝতে পারে সে গর্ভের সন্তান মেয়ে। আর এ মেয়ে ভ্রুণ হত্যা বন্ধ করা হলে ভারতসহ আরো কয়েকটি দেশে মেয়েদের সংখ্যা ছেলেদের ছাড়িয়ে যাবে।  

এছাড়া এক পরিসংখ্যানে শুধু আমেরিকাতেই মেয়েদের সংখ্যার ছেলেদের চেয়ে ৭৮ লক্ষ জন বেশি। শুধু নিউইয়র্কে পুরুষদের চেয়ে ১০ লক্ষ জন নারী বেশি। নিউইয়র্কের অধিবাসীদের এক তৃতীয়াংশ পুরুষ হলো সমকামী। তার মানে পুরুষেরা পুরুষদের সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়। আমেরিকার প্রায় ৩ কোটিরও বেশি নারী পুরুষ সমকামীতায় লিপ্ত। এটি বিশাল পরিমাণে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের উদাহরণ। গ্রেট ব্রিটেনে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা ৪০ লক্ষ জন বেশি। জার্মানিতে ৬০ লক্ষ, রাশিয়াতে ৯০ লক্ষ জন নারী জনসংখ্যা বেশি পুরুষদের চেয়ে। মহান আল্লাহ্ ভাল জানেন সারা বিশ্বে পুরুষদের তুলনায় নারীর জনসংখ্যা কতটাই বেশি হতে পারে। [পূর্বের পরিসংখ্যান। আপডেট পরিসংখ্যান হয়তোবা আরো বাড়তে পারে] 

এখন মনে করেন- আমি পশ্চিমাদের দর্শন মেনে নিলাম যে, একজন লোক শুধু একটাই বিয়ে করতে পারবে। যেমন আমেরিকায় প্রত্যেক ছেলে একজন করে মেয়ে বিয়ে করল। এরপরও পুরুষ জীবন সঙ্গী ছাড়াও আরো লক্ষ লক্ষ নারী থেকে যাবে। তাইলে এই বাকি নারীরা কি করবে? তাদের জন্য একটা পথ খোলা থাকবে। হয়তো তার এমন পুরুষকে বেছে নিতে হবে যার পূর্ব থেকেই একটি স্ত্রী আছে, অথবা তারা হতে পারে জনগণের সম্পত্তি অর্থাৎ পতিতা। আর যে কোন ভদ্রমহিলা বলবেন- তিনি প্রথমটাই বেছে নিবেন। কারণ সবার সম্পত্তি হওয়ার চেয়ে এমন একজনকে 
বিয়ে করা ভাল যার স্ত্রী আছে। আর অধিকাংশ নারীই অপর নারীর সাথে তার স্বামীকে ভাগাভাগি করতে রাজি হয় না। কিন্তু ইসলামে পরিস্থিতি বিবেচনায় তা-ই জরুরি হয়ে ওঠে- "মুসলিম নারী তার সঠিক ঈমানের কারণে এই সামান্য ক্ষতির বিনিময়ে অনেক বড় ক্ষতি হতে রক্ষা করে তার আরেক মুসলিম বোনকে, যাকে সে জনগণের সম্পত্তি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন। জনগণের কুনজর থেকে রক্ষা করতে পারেন। তারও সুন্দর একটা পরিবার গঠনের সুযোগ করে দেন। এটা হলো মূলত একজন নারী আরেক নারীর জন্য ত্যাগের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলা। 

আর আপনারা জানেন কি, পশ্চিমারা উপস্ত্রী রাখে। এটি খুবই সাধারণ ব্যাপার। আমেরিকায় গড়ে একজনের ৮ জন করে যৌনসঙ্গী থাকে। কাউকে বিয়ে করার আগ পর্যন্ত সে তার জীবনসঙ্গী। কারো হয়তোবা কম দু একজন হতে পারে। তবে গড়ে আটজন করে যৌনসঙ্গী থাকে একজনকে বিয়ে করে সংসার গড়ার আগ পর্যন্ত। রক্ষিতা রাখলে কোন দায়িত্ব থাকে না। আপনি একজন, দশজন, বিশজন যা খুশি রাখেন। সমস্যা নেই। কিন্তু যদি হয় উপস্ত্রী, তবে তার কোন সম্মান থাকে না। সে ছোট হয়ে যায়। যদি রক্ষিতার সাথে সেই মহিলার তুলনা করেন, যে মহিলা কোন লোকের দ্বিতীয় স্ত্রী তবে দেখবেন সে সম্মান পায়। সকলেই শ্রদ্ধা করে। তার আইনসঙ্গত অধিকারও থাকে। আমরা ইসলামে মহিলাদের উপযুক্ত সম্মান দেই। রক্ষিতার কোন সামাজিক সম্মান নেই। 

>(চ) বহু বিবাহ করতে পবিত্র কুরআন উৎসাহিত করেছে নাকি অনুৎসাহিত করেছে
▪︎ আসলে বহু বিবাহের অনুমতি রেখে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনের তাগিদে। এর মানে এই নয় যে, সবাইকেই চার বিয়ে করতে হবে। ইসলাম বহু বিবাহের অনুমতি রেখে দিয়েছে তবে ভীতি মূলক শর্তারোপ করার মাধ্যমে, বহু বিবাহের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। যেমনটা এই প্রসঙ্গে মহামহিমান্বিত রব আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া'জ্বাল্লা পবিত্র কুরআনের ৪ নং সূরার ১২৯ নং আয়াতে বলেছেন: 

وَلَن تَسۡتَطِيعُوٓاْ أَن تَعۡدِلُواْ بَيۡنَ ٱلنِّسَآءِ وَلَوۡ حَرَصۡتُمۡۖ فَلَا تَمِيلُواْ كُلَّ ٱلۡمَيۡلِ فَتَذَرُوهَا كَٱلۡمُعَلَّقَةِۚ وَإِن تُصۡلِحُواْ وَتَتَّقُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا  

"তোমরা কখনও স্ত্রীগণের মধ্যে সুবিচার করতে পারবে না যদিও তোমরা তা কামনা কর, সুতরাং তোমরা কোন একজনের প্রতি সম্পূর্ণরূপে ঝুকে পড় না ও অপরজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখ না এবং যদি তোমরা পরস্পর সমঝতায় আসো ও সংযমী হও তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।" [5] 

এখন কোন ব্যক্তির একাধিক স্ত্রী থাকলে আন্তরিক সম্পর্ক ও ভালোবাসায় সে সবার সাথে এক রকম আচরণ করতে পারবে না এটা বাস্তবিক অর্থে সত্য। কেননা ভালোবাসা হল অন্তরের কাজ যা কারো এখতিয়ারাধীন নয়। এমনকি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে আয়েশা রাঃ এর প্রতি সবচেয়ে বেশী ভালোবাসা ছিল। চাওয়া সত্ত্বেও সুবিচার না করতে পারার অর্থই হল আন্তরিক টান এবং ভালোবাসায় অসমতা। আন্তরিক এই ভালোবাসা যদি বাহ্যিক অধিকারসমূহে সমতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে কোনরুপ বাঁধার সৃষ্টি না করে, তাহলে তা আল্লাহর নিকট পাকড়াও যোগ্য হবে না। যেমন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অতি উত্তম দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন। কিন্তু অধিকাংশ লোক আন্তরিক এই ভালোবাসার কারণে অন্য স্ত্রীদের বাহ্যিক অধিকারসমূহ আদায়ের ব্যাপারে ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটায় এবং যার প্রতি বেশি ভালোবাসা বাহ্যিকভাবে তার মত অন্য স্ত্রীদের অধিকার আদায় না করে তাদেরকে দোদুল্যমান অবস্থায় ছেড়ে রাখে; না তাদেরকে তালাক দেয়, আর না স্ত্রীত্বের অধিকারসমূহ আদায় করে। এটা অতি বড় যুলুম; যা থেকে এখানে নিষেধ করা হয়েছে। আর নবী করীম সাঃ বলেছেন,  

"যে ব্যক্তি দুইজন স্ত্রী থাকা অবস্থায় তাদের একজনের প্রতি ঝুঁকে পড়ল, নিশ্চিত কিয়ামতের দিন সে পঙ্গু অবস্থায় উপস্থিত হবে।" [6] 

>(ছ) কোন নারী যদি পুরুষ বা তার স্বামীর একাধিক বিয়েকে অপছন্দ করে এই ক্ষেত্রে তার গুনাহ হবে কী?
▪︎ ইসলাম প্রয়োজনের তাগিদে শর্ত সাপেক্ষে একজন সক্ষম ও উত্তম পুরুষকে সর্বোচ্চ চারজন নারীকে বিয়ে করার সুযোগ দেওয়ায় নারীদের প্রতি অসম্মান করেনি। বরং তাদের যথাযথ ব্যবস্থা ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতেই এমন ব্যবস্থা করা। কারণ এমনও সময় আসতে পারে, যখন পুরুষের চেয়ে নারীদের সংখ্যার অনুপাত অনেক বেশি হবে। যা ইতিমধ্যে সারা পৃথিবীতে এ সংখ্যার তারতম্য লক্ষ করা গেছে। এছাড়া বহুবিবাহ ইসলামি শরিয়তে অন্যতম একটি বিধান। এ সকল শরিয়তি বিধান নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে এসেছেন, যা কেউ ঘৃণা করলে কাফের হয়ে যাবে। যদিও স্বভাবগতভাবে কোন নারী নিজের স্বামীর জন্য এটা পছন্দ না করে (কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে পছন্দ করে), তবুও তার ইমানের কোন ক্ষতি হবে না বা এই জন্য তার কোন গুনাহ হবে না। কিন্তু এই বিধানকে ঘৃণা করা যাবে না বা অস্বীকার করা যাবে না। অর্থাৎ একাধিক বিয়ের শরিয়তি বিধানকে ঘৃনার সাথে অস্বীকার করলে সে মুরতাদ হয়ে যাবে। এর কারণ হিসেবে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের ৪৭:৯ নং আয়াতে বলে দিয়েছেন- "যারাই আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অপছন্দ করে, তিনি তাদের আমলকে নষ্ট করে দিবেন।" 

>(ছ) এখন পুরুষদের কোন অবস্থায় বহুবিবাহ অনুমোদনযোগ্য? সকল পুরুষ কি বহুবিবাহ করতে পারে?
▪︎ এখন বহুবিবাহ করার ক্ষেত্রে ভীতিমূলক সতর্কতা আরোপ করা হয়েছে, কঠিন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আর সেই শর্ত যে কেউ পূরণ করতে পারবে সে চাইলে দুই, তিন অথবা চারটি বিয়ে করতে পারবে তবে স্ত্রীদের মধ্যে সুষম ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর যদি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সক্ষম না হয় তবে একটি বিবাহ করাকে উত্তম বলা হয়েছে, যদিও সে তার অধীনস্থ দাসী হোক না কেন।  

কিন্তু এমন কতগুলো অবস্থা আছে যখন একজন পুরুষের উচিত একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করা। যেমন একটি হলো অতিরিক্ত মহিলা, যারা স্বামী পাচ্ছেন না তাদের নৈতিকতা সংরক্ষণের জন্য এটা করা যেতে পারে। আরো অনেক অবস্থা আছে -- যেমন একজন মহিলা বিয়ে করার পর দুর্ঘটনায় প্রতিবন্ধীত্ব বরণ করে, ফলে সে তার স্বামীর চাহিদা পূরণ করতে অক্ষম। তখন স্বামীকে হয় প্রথম স্ত্রী রেখে অন্য আরেকটি মহিলাকে বিয়ে করতে হবে অথবা প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে নতুন বিয়ে করতে হবে। ধরুন আপনার বোনের এমনটা হল এবং সে প্রতিবন্ধী হয়ে গেল- আপনি এখন কোনটাকে চাইবেন? আপনি কি চাইবেন আপনার বোনকে তালাক না দিয়ে বিয়ে করুক নাকি চাইবেন তালাক দিয়ে বিয়ে করুক। ধরুন কারো স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার ফলে স্বামী ও সন্তানদের দেখাশোনা করতে পারে না। এমন অবস্থায় এটাই ভাল নয় কি- সে আরেকজন স্ত্রী গ্রহণ করবে যে তার সন্তান সন্ততি ও অসুস্থ স্ত্রীকেও দেখাশোনা করবে। 

কেউ কেউ বলতে পারেন পরিচালিকা রাখলেই তো হয়ে যায়। আমিও তাদের সাথে একমত যে পরিচালিকা রাখা যেতেই পারে, যে ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীর দেখাশোনা করতে পারে। কিন্তু আপনার দেখাশোনা করবে কে? তাই এটিই ভাল নয় কি আপনি আরেকটা বিয়ে করবেন এবং দুজনের প্রতি সুষম ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। এমনও হতে পারে যে, আপনার বিয়ের কয়েক বছর পরেও সন্তান হয়নি এবং স্বামী স্ত্রী দুজনেই সন্তানের জন্য আগ্রহী। স্ত্রী আরেকজনকে বিয়ের অনুমতি দিতে পারেন এবং তারা সন্তান পেতে পারেন। কেউ কেউ আবার বলতে পারেন- দত্তক গ্রহণ করলেই তো হয়। এখন অনেকগুলো কারণে ইসলাম দত্তক গ্রহণকে সমর্থন দেয় না, যার কারণ এইখানে বলতে গেলে লেখাটা অতিরিক্ত বড় হয়ে যাবে। অন্য আরেক লেখায় এগুলো বলব ইনশাআল্লাহু তা'আলা। 

যার ফলশ্রুতিতে আমরা পাই দুটি উপায়। হয়তো আগের স্ত্রীকে তালাক দিয়ে বিয়ে করবে অথবা প্রথম স্ত্রীকে রেখেই আরেকজন স্ত্রী গ্রহণ করা।

>(জ) একজন পুরুষ যদি একাধিক বিবাহের অনুমতি পায়, তাইলে ইসলাম কেন একজন নারীকে একাধিক স্বামী রাখতে নিষেধ করেছে?
▪︎ অসংখ্য মানুষ যাদের মধ্যে বহু সংখ্যক মুসলিমও আছেন, যারা জানতে চায় মুসলিম পুরুষ একাধিক নারীকে বিয়ে করতে পারলেও একজন নারী কেন একাধিক বিবাহ করতে পারে না? এটার কি যৌক্তিকতা রয়েছে। আসলে মুসলিম পুরুষরা একই সঙ্গে একাধিক স্ত্রী রাখতে পারলেও মুসলিম নারীরা একই সঙ্গে একাধিক স্বামী গ্রহণ করতে পারেন না। ইসলামে মহিলাদের জন্য এটা হারাম করা হয়েছে। আর এটাও বলে রাখা ভাল যে- ইসলাম ভারসাম্যপূর্ণ ন্যায়বিচার ও সমতার ভিত্তির উপরেই সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে। মানুষ হিসেবে মহান আল্লাহ প্রত্যেক নারী পুরুষকেই সমান মর্যাদা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু সাথে সাথে সামর্থ্য ও যোগ্যতার ভিন্নতা এবং সে অনুযায়ী দায়িত্ব কর্তব্যের ভিন্নতা দিয়েছেন। শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে নারী পুরুষ সম্পূর্ণ আলাদা। তাই জীবনযাপনের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা, দায়দায়িত্ব ও কর্তব্যে ভিন্নতা দেখা যায়।  

আর ইসলামে নারী ও পুরুষ সমান কিন্তু একই রকম নয়। যেমন পবিত্র কুরআনের ৪ নং সূরা আন নিসার ২২ - ২৪ নং আয়াতে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে যে, মুসলিম পুরুষরা কোন কোন নারীকে বিয়ে করতে পারবে না। এরপর ২৪ নং আয়াতের পৃথকভাবে বলেও দেওয়া হয়েছে সেসব নারীও (নিষিদ্ধ) যারা অন্যের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ আছে। 

এখন ইসলামে নারীর জন্য একই সঙ্গে একাধিক স্বামী গ্রহণে কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে? কারণ একজন পুরুষের একাধিক স্ত্রী থাকা সত্বেও তার ঔরশে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের পিতামাতার পরিচয় খুব সহজেই পাওয়া যায়। অন্যদিকে একজন নারী যদি একই সঙ্গে একাধিক স্বামী গ্রহণ করে, তবে এ পরিবারে জন্মিত শিশুর মায়ের পরিচয় পাওয়া যাবে কিন্তু বাবার নয়। বাবা ও মায়ের সুস্পষ্ট পরিচয়ের ক্ষেত্রে ইসলাম আপোসহীন। আধুনিক মনোবিজ্ঞানীদের মতে, "যে শিশু তার মা বাবার পরিচয় জানে না, বিশেষ করে বাবার - সে শিশু তীব্র মানসিক যন্ত্রণা ও হীনম্মন্যতায় ভোগে। আর এসব শিশুদের শৈশব নিকৃষ্টতর হয় এবং আনন্দহীন কাটে। দেহপসারিনীদের সন্তানরা এর জ্বলন্ত প্রমাণ। একাধিক স্বামী গ্রহণকারী পরিবারে জন্ম নেওয়া শিশুকে কোন স্কুলে ভর্তি করাতে গেলে যদি মাকে প্রশ্ন করা হয় শিশুর পিতার নাম কী? তাহলে সে মাকে দু'জন অথবা অত্যাধিক পুরুষের নাম বলতে হবে। এখন আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতির কারণে ডিএনএ টেস্টের দ্বারা মা বাবার পরিচয় শনাক্ত করার কৌশল আবিষ্কৃত হলেও তা অতীতে একেবারেই অসম্ভব ছিল।

এছাড়া প্রকৃতিগত যোগ্যতা ও বৈশিষ্ট্য, বহুগামিতায় নারীর চেয়ে পুরুষের বেশি। শারীরিক যোগ্যতায় একজন পুরুষের পক্ষে একাধিক স্ত্রীর স্বামীর দায়িত্ব ও ভূমিকা পালন করা সহজ। অপরদিকে একজন নারী কয়েকজন স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা তার পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। আবার মাসিক ঋতুচক্রের বিভিন্ন পর্যায়ে মানসিক ও আচারণগত বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্যে তাকে ঘুরপাক খেতে হয়; আর এসব থেকে পুরুষ একেবারেই মুক্ত।  

একজন নারী যার একাধিক স্বামী থাকবে- তাকে তো একই সঙ্গে কয়েকজনের যৌনসঙ্গী হতে হবে। এক্ষেত্রে আশঙ্কা রয়েছে যৌন রোগের এবং যৌনতার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ার। ফলে তার মাধ্যমেই সেসব রোগে তার স্বামীরা আক্রান্ত হবে। অপরদিকে একজন পুরুষ - যার একাধিক স্ত্রী, স্ত্রীদের মধ্যে কারো যদি পরকীয়ায় যৌন সম্পর্ক না থাকে তাহলে যৌনতা সংক্রান্ত কোন রোগে আক্রান্ত হবার আদৌ কোন সম্ভাবনা থাকে না।  

এখন এসব কারণ ছাড়াও আরো বহুত কারণ রয়েছে। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। যদি কোন দম্পতির কোন সন্তান না থাকে, তবে একজন পুরুষকে বহুবিবাহের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু নারীকে কেন অনুরূপ কারণে অনুমতি দেওয়া হয় না? ধরুন- যদি পুরুষ বন্ধ্যা হয়, তাইলে স্ত্রী কি একাধিক স্বামী গ্রহণ করতে পারে? অবশ্যই না। কারণ কোন ডাক্তারই শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারবে না যে পুরুষ বন্ধ্যা। এমনকি শুক্রকীটবাহী নাড়ীচ্ছেদ করেও কোন ডাক্তার এটা বলতে পারবে না যে, সে পিতা হতে পারবে না। সুতরাং সন্তানের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।  

এছাড়া আরো বহুত থাকতে পারে, যে কারণে অনন্ত জ্ঞানের আধার সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ নারীদের জন্য বহু স্বামী গ্রহণ নিষিদ্ধ করেছেন। 

>(ঝ) তাহলে নারীরা কি একটার বেশি বিয়ে করতে পারবে না ইসলামে?
▪︎ মূল কথা হলো নারীরা একই সঙ্গে একাধিক স্বামী গ্রহণ করতে পারে না। তবে উক্ত মহিলাটি যদি বিধবা হয় তথা যার অল্প বয়সে বিভিন্ন কারণে স্বামী মারা গেছে অথবা ডিভোর্সি এমন নারী চাইলেই কিন্তু পরবর্তীতে অন্য কোন পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে। এইভাবে সে ক্রমে ক্রমে বহুবিবাহ করার সুযোগ পেলেও একই সঙ্গে বহু স্বামী রাখতে পারবে না, যেটা কিনা পুরুষরা পারে। 

>(ঞ) ইসলামে সকল পুরুষ কি বহুবিবাহের সমান সুযোগ পাবে?
▪︎ উত্তর হলো 'না'। একাধিক বিবাহের সুযোগ ও সামর্থ্য সব পুরুষের থাকে না বিধায় এটা সকল পুরুষের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য নয়, এটা বরং ব্যতিক্রমী বিধান। এটা সেই সকল সক্ষম ও উত্তম পুরুষদের জন্য যারা কিনা সুষম ন্যায়বিচার ও অধিকার নিশ্চিত করার সামর্থ্য রাখে। সর্বোপরি এটা বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনার উপর নির্ভরশীল। ধরুন পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যার অনুপাত হলো ১০০০:১০০৫ জন। তাইলে ২০০ জন পুরুষের মধ্যে মাত্র একজন পুরুষের সুযোগ রয়েছে একাধিক বিয়ের। আর সেই পুরুষকে হতে হবে এমন ব্যক্তি, যে কিনা স্ত্রীদের মধ্যে অধিকার, ন্যায়বিচার ও ভালবাসায় সুষম বন্টন করতে পারে। 

>(ট) ইসলামে নারী ও পুরুষের অধিকার কি সমান নাকি?
▪︎ ইসলামে নারী ও পুরুষ সমান কিন্তু সমতা মানে সর্বতোভাবে এক নয়। ইসলামে পুরুষ এবং নারীর মর্যাদা সামগ্রিকভাবেই সমান কিন্তু সমতা অর্থ হুবহু অনুরূপ (identically) নয়। এ বিষয়ে নানা ধরনের ভুল ধারণা রয়েছে। বিশেষত ইসলামে যখন নারীদের বিষয়ে কথা বলা হয়। এটা বোঝাতে একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। মনে করুন, কোন এক শ্রেণীতে দুজন স্টুডেন্ট মুহাম্মদ ও আয়েশা। তারা দু'জনই প্রথম হয়েছে। দু'জনেই পরীক্ষায় ১০০ তে ৮০০ নম্বর পেয়েছে। যদি আপনি উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন, তাইলে দেখা যাবে তাতে মোট ১০ টি প্রশ্ন রয়েছে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১০। এখন প্রথম প্রশ্নের উত্তরে মুহাম্মদ পেল ১০ এর মধ্যে ৯। অপরদিকে আয়েশা পেয়েছে ১০ এর মধ্যে ৭। সুতরাং প্রথম প্রশ্নের উত্তরে আয়েশার তুলনায় মুহাম্মদ সামান্য অগ্রগামী।  

আবার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে আয়েশা পেল ১০ এর মধ্যে ৯। আর মুহাম্মদ পেল ১০ এর মধ্যে ৭। সুতরাং দ্বিতীয় প্রশ্নের ক্ষেত্রে আয়েশা মুহাম্মদের থেকে সামান্য অগ্রগামী।  

আর বাকি ৮ টি প্রশ্নের উত্তরে মুহাম্মদ ও আয়েশা উভয়েই প্রত্যেকটিতে ১০ এর মধ্যে ৮ করে পেয়েছে। সুতরাং এইখানে দুইজন স্টুডেন্টের প্রাপ্ত নাম্বারের যোগফল ১০০ তে ৮০ হয়। সামগ্রিক মূল্যায়নে আয়েশা ও মুহাম্মদ উভয়েই সমান। কিন্তু বিশেষ প্রশ্নের উত্তরে আয়েশার তুলনায় মুহাম্মদ সামান্য অগ্রগামী আবার কিছু প্রশ্নের উত্তরে মুহাম্মদের চেয়ে আয়েশা কিছু মাত্রায় এগিয়ে আছে। কিন্তু সর্বোপরি উভয়েই সমান।  

অনুরূপ ইসলামে নারী ও পুরুষের অধিকার এভাবেই সমান। কিন্তু কতিপয় ক্ষেত্রে পুরুষ কিছু মাত্রায় সুবিধাভোগী, অপরদিকে কতিপয় ক্ষেত্রে নারী কিছু মাত্রায় সুবিধাভোগী; কিন্তু সামগ্রিকভাবে উভয়েই সমান। যেমন যদি আমার ঘরে একজন ডাকাত প্রবেশ করে, তখন আমি বলব না যে ''আমি নারী অধিকারে বিশ্বাস করি'',..."আমি নারীর স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি",...সুতরাং আমার বোন, আমার মা, আমার স্ত্রীর উচিত এগিয়ে গিয়ে ডাকাতের মোকাবিলা করা। কেননা সূরা আন নিসার ৩৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, "আল্লাহ্ পুরুষদের নারীদের চেয়ে বেশি শক্তি দান করেছেন।"  

অর্থাৎ নারীর তুলনায় পুরুষদের দৈহিক শক্তি বেশি। সুতরাং দৈহিক শক্তি সামর্থ্য যেখানে বিবেচ্য, পুরুষ সেখানে অনেকটাই সুবিধাভোগী। তাই তাদেরকে শক্তি দেওয়া হয়েছে সেহেতু মহিলাদেরকে রক্ষার দায়িত্ব পুরুষেরই। এক্ষেত্রে সুবিধা দেওয়া হয়েছে।  

আবার স্নেহ, মায়া-মমতা, আবেগ-অনুভূতি ও সাহচর্য যখন বিবেচ্য, যখন সন্তান পিতামাতাকে তা প্রদান করে তখন মহিলাদেরকে কিছু মাত্রায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মাতা, পিতার তুলনায় তিনগুণ শ্রদ্ধা ও সাহচর্য পাওয়ার যোগ্য। এখানে মহিলাকে অগ্রবর্তী করা হয়েছে। কিন্তু সার্বিকভাবে আপনি যদি বিশ্লেষণ করেন, তাইলে দেখবেন ইসলামে নারী ও পুরুষ সমান। অর্থাৎ যার যেখানে যেটা প্রয়োজন ইসলাম তার সেখানে সেটাই দিয়ে উপযুক্ত মর্যাদা ও সম্মানে ভূষিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে।

>(ঠ) স্বামী যদি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চায়, তাইলে তাকে কি প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে

▪︎সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ আসমানী কিতাব মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনুম মাজীদের ৪ নং সূরা আন নিসার, ৩ নং আয়াতের মধ্যে দেখুন তো কি বলা হয়েছে? সেখানে দুটো জিনিস বলা হয়েছে:
1• সুবিচার করতে সক্ষম হওয়া/تُقْسِطُوا۟
2• ন্যায়সঙ্গত আচারণ করা/تَعْدِلُوا۟  

এখন পুরুষকে একের অধিক বিয়ের ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ কি আদেশ করেছেন? আর সেটা হলো স্ত্রীদের মধ্যে 'সুবিচার এবং ন্যায়সঙ্গত আচারণ' করা। এটা বাধ্যতামূলক।  

এখন আসুন স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগবে কিনা? এটি স্বামীর জন্য জরুরি নয় যে, দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে তাকে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে। আপনি যেহেতু পরবর্তীতে স্ত্রীদের মধ্যে কতটুকু সুবিচার এবং ন্যায়সঙ্গত আচারণ করতে পারবেন, সে সম্পর্কে নিজেই ভাল অবগত আছেন; আবার আপনার স্ত্রীও আপনার স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে জানেন। যেহেতু ইতিমধ্যে আপনাদের সাংসারিক জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে।  

তবে এটি অবশ্যই উত্তম যে, প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করা। যেহেতু মহামহিমান্বিত রব আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া'জ্বাল্লা পবিত্র কুরআনের ৪ নং সূরার ১২৯ নং আয়াতে বলেছেন: 

وَلَن تَسۡتَطِيعُوٓاْ أَن تَعۡدِلُواْ بَيۡنَ ٱلنِّسَآءِ 

"তোমরা কখনও স্ত্রীগণের মধ্যে সুবিচার করতে পারবে না যদিও তোমরা তা চাও না কেন...।" 

অর্থাৎ স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেওয়ার বিষয়টি ইসলামিক শরিয়তে সরাসরি বাধ্যতামূলক না হলেও এটি পরস্পর সম্মান এবং ভালবাসার দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে প্রথম স্ত্রীর আবেগ অনুভূতি আর মানসিক অবস্থা এবং সম্পর্কের পরিস্থিতি বিবেচনা করা উচিত। কেননা স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে তার জন্য পীড়াদায়ক হতেও পারে। আর এরই জেরে পরবর্তী সময়ে আপনার সংসারে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হতে পারে। ফলশ্রুতিতে সেখানে আপনি সুবিচার এবং ন্যায়সঙ্গত আচারণ করবেন না। কারণ আপনার প্রথম স্ত্রীর আচারণ আপনার মানসিক স্বভাবে বিরূপ চরিত্র সৃষ্টি করে দিয়েছে। কাজেই এটা যেন না হয় সেই জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হল প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেওয়া।  

আর স্ত্রীর প্রতি 'সুবিচার ও ন্যায়সঙ্গত আচারণ' করতে গেলে অবশ্যই আপনার স্ত্রীর মনমানসিকতার প্রতি যত্নশীল হতে হবে। তার আশা আকাঙ্খা ও চাহিদার প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে। স্ত্রী যেন আপনার কোন কিছুতেই বিরক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক কথায় খুশি রাখতে হবে তাকে। আর এটাই হলো স্ত্রীর প্রতি আপনার ন্যায়সঙ্গত আচারণ। আর ন্যায়সঙ্গত আচরণ করতে পারলেই ন্যায়বিচার রক্ষা করতে পারবেন। 

এছাড়া বিয়ের চুক্তিপত্রে যদি স্ত্রী এই শর্ত আরোপ করে যে, "আমি থাকাকালীন সময়ে তুমি দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে না", আর আপনিও যদি সেটি মেনে নেন, তবে এক্ষেত্রে আপনার জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে যায় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেওয়াটা, যখন আপনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চান।  

ফুটনোট: বিভিন্ন সহীহ হাদিস বিশ্লেষণ করলে এটাই দেখা যায় যে, "স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেওয়া অতি উত্তম"। যদিও এটি সরাসরি বাধ্যতামূলক নয় যদি বিয়ের চুক্তিপত্রে তা উল্লেখ না থাকে। 

>(ড) যদি নারীর সংখ্যা পুরুষ অপেক্ষা অত্যাধিক হওয়ার কারণে পুরুষ বহুবিবাহ করতে পারে, সেখানে তাইলে নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলে নারী কি বহুবিবাহ করতে পারবে না
▪︎  'না' কোনভাবেই পারবে না। যদি এই পৃথিবীতে নারীর সংখ্যা একজনও হয়, আর অপরদিকে পুরুষের সংখ্যা ৫ জন হয় তবুও ঐ নারী বহুবিবাহ করতে পারবে না; কেন পারবে না তাও বহুবার বলেছি। আর ইসলাম এটাই বলেছে, এখানেই স্থির অবস্থানে রয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ-
➤[01] 
৪ নং সূরা আন নিসার, আয়াত: ৩ 
অনলাইন সোর্স: তাফসীর সহকারে পড়ুন।
https://www.hadithbd.com/quran/link/?id=496
➤[02] 
৪ নং সূরা আন নিসার, আয়াত: ২
অনলাইন সোর্স: তাফসীর সহকারে পড়ুন। 
https://www.hadithbd.com/quran/link/?id=495
➤[03] 
সুনানে আবু দাউদ (তাওহিদ পাবলিকেশন্স) এর ১৮ নং অধ্যায় 'ওসিয়াত প্রসঙ্গের' ৯ নং অনুচ্ছেদে ২৮৭৩ নং হাদিস দ্রষ্টব্য- ইয়াতীমের মেয়াদ কখন শেষ হয়? তার বালেগ হওয়ার পর। 
http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=60241
➤[04] 
সহিহ বুখারী (তাওহিদ পাবলিকেশন্স) এর ৬৫ নং অধ্যায়- তাফসীর, হাদিস নং ৪৫৭৩ ও ৪৫৭৪ দ্রষ্টব্য। অনলাইন সোর্স:
http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=29049
➤[05] 
৪ নং সূরা আন নিসার, আয়াত: ১২৯
অনলাইন সোর্স: তাফসীর সহকারে পড়ুন। 
https://www.hadithbd.com/quran/link/?id=622
➤[06] 
সুনানে আবু দাউদ (তাওহিদ পাবলিকেশন্স) এর বিবাহ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ ৩৯ এর ২১৩৩ নং হাদিস দ্রষ্টব্য। 
http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=59501

সহায়ক বই: এই লেখাটির জন্য আমি পাঁচটা আয়াত ভিত্তিক তাফসীরের সাহায্য নিয়েছি। যেমন: তাফসীরে আহসানুল বায়ান, তাফসীরে আবু বকর যাকারিয়া, তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ, তাফসীরে ইবনে কাসীর এবং তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন। এছাড়া ইউটিউবে ইন্টারনেটে বিভিন্ন আর্টিকেল ও লেকচারগুলো পড়েছি। এক কথায় বলব বিভিন্ন ইনফরমেশনের সমন্বয়ে আর আমার নিজস্ব চিন্তা ভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়েছি। বিশেষ করে ডাক্তার জাকির নায়েকের লেকচার সমগ্র থেকে আরো বেশি উপকৃত হয়েছি। উনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এই জন্য। তবে যতটুকু সম্ভব নিজেই যাচাই বাছাই করেছি। পারলে আপনারাও করতে পারেন।