Are you sure?

তুলনামূলক ধর্মতত্ব »  বিবিধ

হাদিস-বাইবেলে আলোকে দাজ্জাল ও মসীহ ঈসাঃ

হাদিস-বাইবেলে আলোকে দাজ্জাল ও মসীহ ঈসাঃ 

 

☢️লেখকঃ- হাবিব ইবনে সানোয়ার

 

কিয়ামতে সবচেয়ে বড় আলামত মসীহ এবং দাজ্জাল।নবি(স)বলেনঃ পৃথিবীতে যত নবি এসেছিলেন তারা সবাই তাদের উম্মতকে কানা ও মিথ্যাবাদী দাজ্জালের ব্যাপারে ভয় প্রদর্শন করেছেন।জেনে রাখো !!!সে হবে কানা তোমাদের প্রভু কানা নয় এবং দাজ্জালের দুচোখের মাঝখানে কাফের লেখা থাকবে।এই কাফের শব্দটি প্রত্যেক মুসলিম পড়তে পারবে।(আবু দাউদ হাঃ4267,4268)।।

 

আসুন নবি(স)এর এই কথা সত্যতা যাচাই করি প্রচলিত বিকৃত তৌরাত ও ইঞ্জিল তথা বাইবেলে আলোকেঃ ""দেখো কেউ যেন এই বিষয়ে তোমাদের কোনভাবে প্রতারিত করতে না পারে ।সেই দিন আসার আগে পৃথিবীতে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দিবে।সেই পাপ পুরুষ ধবংস হওয়া যার ভাগ্যে লেখা সে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত সেদিন আসবে না।(থেসালোনিকীয় 2য়পত্র 2:3)।তোমরা জানো কোন শক্তি ঐ পাপ পুরুষকে বাধা যাতে সে নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ পায়।(থেসালোনিকীয় 2য়পত্র 2:6)।আমি এসব বলছি কারন মন্দতার সেই গোপনশক্তি এখনই জগতে কাজ করে চলেছে।কিন্ত একজন রয়েছেন যিনি এই শক্তিকে প্রতিরোধ করতে আসছেন।তিনি তা করতে থাকবেন যতক্ষন না এটি দুর হয়।তারপর সেই পাপপুরুষ প্রকাশিত হবে।আর খৃস্ট তার মুখে তেজময় নিঃশ্বাস এবং আর্বিভাবের মহিমা দ্বারা সেই পাপ পুরুষকে হত্যা করবেন।

শয়তান শক্তিতে(কুফরিতে)সেই পাপপুরুষ আসবে।সে মহাপরাক্রমের সাহায্যে নানা ছলনাময়ী অলৌকিক কাজ করবে।অদ্ভুদ লক্ষন ও চিহ্ন দেখাবে।যারা বিনাশপথে যাত্রী তাদের ভ্রান্তিজনক বিষয়ে সে ভোলাবে।পরিত্রান পাবার জন্য যে সত্য রয়েছে তা ভালবাসতে যারা অস্বীকার করছে তারাই সেই বিনাশপথের যাত্রী।তাই ইশ্বর ওদের এক শক্তি পাঠিয়েছেন যাতে ওরা ভুল কাজ করে।তাই যারা সত্যের বিশ্বাস করলোনা ও মন্দ বিষয়ে আনন্দ করলো তারা(শেষ)বিচারে দোষু সাব্যস্ত হবে।(থেসালোনিকীয় 2য় পত্র2:7-12)

 

হাদিসে এই পাপ পুরুষের নাম দেয়া আছেঃ মসীহ দাজ্জাল।কারন ঈশ্বরে সাহায্যে মসীহ মতোই অলৌকিক কাজ করবে এবং সকলকে নিজের মতো করে ভ্রান্ত করবে।হাদিস বাইবেলে চাইতে একটু বিস্তারিত পরিচয় দিয়েছেঃ নবি(স)বলেনঃ আমি তোমাদের কাছে দাজ্জালের ব্যাপারে অনেক হাদিস বর্ননা করেছি।এতকিছু পরও আমার ভয় তোমরা চিনতে পারবে কিনা।জেনে রাখো!দাজ্জাল হবে বেঁটে,তার পা হবে দীর্ঘ,মাথার চুল হবে কুঞ্চিত ,সে হবে কানা ।তার চোখ হবে সমতল ।যা উপরে উঠবে না এবং নীচে থাকবে।তারপরও যদি তোমরা সন্দিহান হও তবে জেনে রাখো তোমাদের প্রভু কানা নন।(আবুদাউদ হাঃ4272)যে ব্যক্তি দাজ্জালের খবর শুনবে সে যেন তার থেকে দুরে থাকে।আল্লাহর শপথ!যে ব্যক্তি তার কাছে সে তাকে মুমিন(মুসলিম) মনে করে তার অনুসারী হয়ে যাবে।কেননা দাজ্জালের কাছে সন্দেহ নিক্ষেপকারী জিনিস থাকবে।(আবু দাউদ হাঃ4270)

দাজ্জালের সাথে যা থাকবে সে সম্পর্কে আমি খুব ভাল করে জানি।তার সাথে একটি পানির সাগর এবং আগুনের নদী থাকবে ।তোমরা যাকে আগুন মনে করবে তা হলো পানি।(আবু দাউদ হাঃ4266)দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাচাঁর আমলঃ নবি(স)বলেনঃ যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের ১ম ১০ আয়াত মুখস্থ করবে।সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা পাবে।(আবু দাউদ হাঃ4275)তোমরা যারা দাজ্জালের দেখা পাবে তাদের উচিত দাজ্জালে সামনে সুরা কাহাফের ১ম দিকের আয়াতগুলো পড়া।কেননা তা করলে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদে থাকতে পারবে।(আবু দাউদ হাঃ4272)।।দাজ্জালের অবস্থানরত বর্ননাঃনবি(স)তার সাহাবিদের ডেকে বললেনঃতোমরা কি জানো আমি কি কারনে তোমাদের একত্রিত করেছি?তারাঁ বললেনঃ আল্লাহ এবং তার রসুলই ভালো জানেন।তিনি বলেনঃ এখন আমি তোমাদের দ্বীনের কাজে উৎসাহিত ও ভয় প্রদর্শনে জন্য একত্রিত করেনি বরং আমি তোমাদের একটি ঘটনা শুনবার জন্য একত্রিত করেছি তা হলোঃ তামীমদারি খৃস্টান সে এসে বাইয়াত হয়ে ইসলাম গ্রহন করেছে।আমি দাজ্জালের ব্যাপারে তোমাদের কাছে যা বর্ননা করেছি সে বলেছেঃ একবার সে লাখাম ও জুযাম সম্প্রদায়ের 30জন লোকের সাথে জাহাজ যোগে সমুদ্র সফরে বের হয়।এক মাস সমুদ্রে চলার পর তাদের জাহাজটি একটি দ্বীপে গিয়ে পৌছায়

সেখানে এক নারীর সাক্ষাৎ হয় যে তার নিজের মাথার চুল টানছিলো।এ অবস্থা তারা বললঃতুমি ধবংস হও, তুমি কে?তার উত্তরে বললঃ আমি একজন গোয়েন্দা।তোমরা এ প্রসাদের অবস্থানকারী কাছে চলো কেননা সে তোমাদের জন্য খূবই উদগ্রীব।রাবি বলেনঃযখন আমাদের কাছে সে ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে তখন আমরা মহিলাটি ব্যাপারে ভয় পাই যে হয়তো সে শয়তান!আমরা সেখান থেকে চলে যাই এবং উক্ত প্রসাদে প্রবেশ করে সেখানে বিশাল আকৃতি এমন এক ব্যক্তিকে দেখি যার মত কাউকে এর আগে দেখি নাই।সে শিকলে বাধা ছিলো এবং তার দুহাত ঘাড়ের সাথে আবদ্ধ ছিলো।তারপর সে তাদের কাছে বায়সান নামক জায়গায় খেজুর যায়ার নামক কুপ এবং উম্মী(লেখাপড়াহীন) নবি(স)ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে।সে বলেঃ আমি মসীহ দাজ্জাল।খুব তাড়াতাড়ি আমাকে বের হওয়া অনুমতি দেয়া হবে।এরপর নবি(স)বলেনঃ দাজ্জাল শাস অথবা ইয়ামনের সমূদ্র অবস্থিত একটি দ্বীপে বন্দী দশায় আছে।না বরং সে পুর্বদিকে আছে আর তিনি তার হাত দিয়ে দুবার ইংগিত করলেন।ফাতেমা(রাঃ)বলে­নঃ আমি এই হাদিসটি রসুল(স)এর কাছে শুনেছি এবং মনে রেখেছি।(আবু দাউদ হাঃ4277,,4276 বুখারি ও মুসলিম)

 

দাজ্জাল হত্যাকারি মসীহ ঈসা আগমনঃনবি(স) বলেনঃআমার এবং নবি ঈসা মাঝে আর কোন নবি আসবে না।অবশ্যই তিনি আসমান থেকে নামবেন(আমার উম্মত হয়ে)।তোমরা তাকে যখন দেখবে তখন তাকে এভাবে চিনবে যে তার দেহের আকার হবে মধ্যমাকৃতি।তার গায়ের রং হবে লাল-সাদা মিশ্রিত,তার পরিধানে কাপড় হবে হালকা হলুদ রং বিশিষ্ট দুখানি চাদর এবং তার মাথার চুল ভিজে না থাকা সত্ত্বেও তাতে ফোটা ফোটা পানি ঝড়তে থাকবে।তিনি ইসলাম বিরোধীদের প্রতি যুদ্ধ করবেন,ক্রুশ(+)ভেংগে ফেলবেন,শুকর নিধন করবেন,জিজিয়া কর(অমুসলিমদের নিরাপত্তাকর)বিলুপ্ত করবেন।আল্লাহ পাক ঐ সময়ে ইসলাম ছাড়া সকল মতবাদ ধবংস করে দিবেন।।মসীহ ঈসা দাজ্জালকে হত্যা করবেন।তারপর তিনি পৃথিবীতে চল্লিশ বছর জীবিত থাকার পর মৃত্যূবরন করবেন এবং মূসলমানরা তার জানাজা নামাজ আদায় করবে।(আবু দাউদ হাঃ4324)

তিনি আরো বলেনঃ আল্লাহর শপথ!!!যার হাতে আমার প্রান।শীঘ্রই তোমাদের মাঝে মরিয়মের পুত্র মসীহ ঈসা(আঃ) শাসক ও ন্যায়বিচারক হিসেবে আগমন করবেন এবং তিনি ক্রুশ(+)ভেংগে ফেলবেন,শুকর নিধন করবেন এবং যুদ্ধের সমাপ্তি করবেন।তখন সম্পদের পরিমান বেড়ে যাবে।তখন আল্লাহকে একটি সেজদা করা পুরো দুনিয়া এবং তার মধ্যকার সমস্ত সম্পদ থেকে মুল্যবান বলে গন্য হবে।(সহিহবুখারি হাঃ3448,425,ফাতাহুল বারী হাঃ657)সাহাবি আবু হুরাইয়াহ(রাঃ)বলেনঃ তোমরা ইচ্ছা করলে এই ঘটনা সমর্থনে কোরানে এ আয়াতটি পড়তে পারোঃ আর আহলে কিতাবীরা(ইহুদিখৃষ্টা­নেরা) প্রত্যেকে ঈসা এর মৃত্যূপুর্বে তার প্রতি তাকে ঈমান আনবে এবং কিয়ামতের দিনে তাদের বিরুদ্ধে তিনি সাক্ষি দিবেন তাদের কৃতকর্ম ব্যাপারে(4:159)।।।(স­হিহ বুখারি হাঃ2222)

 

অনুরুপভাবে বাইবেলে বলা আছেঃযিশু(ঈসা)তার গোপনীয়তা(দাজ্জাল হত্যা ঘটনা)প্রকাশ করতে আসবেন(১ম কারিন্থীয়4:5)।।পাপ,ম­ৃত্যু ও শয়তান(দাজ্জাল)ধধংস করতে আসবেন(কলঃ2:15)।।সমস্­ত জাতির বিচার করতে আসবেন(মথি25:31-46)।।­যারা(ইহুদি,হিন্দু ইত্যাদি)যিশুর প্রতি ঈমান আনেনি যিশু তাদের বিচার করতে আসবেন(থেষালোনিকীয় 2য়পত্র 1:7-8)।।যীশুয়ি(ঈসায়ী­)ঈমানদার রুপি ভন্ডদের(খৃষ্টানদের)ব­িচার করতে আসবেন।(মথি13:40-43,,­7:21-23)।।যিশু তার সত্যিকারে অনুসারিদের(মুসলিমদের­) সংগে মিলিত হবেন(থিসালোনীকিয় ১ম পত্র 4:17-18)।যিশু মহানঈশ্বরের বাছাই করা বান্দাদের(মুসলিমদের)­ একত্রিত করতে আসবেন।(মথি24:30-31)।­।যিশু তার সত্যিকারে অনুসারিদের(মুসলিমদের­)স্বর্গে নিতে আসবেন।(যোহন 14:1-3)

 

ঠিক এই কথা হাদিসে বলা

নবী(স)বলেন-আমার

উম্মতের মধ্যে দুটি দলকে

আল্লাহ জাহান্নাম থেকে

পরিত্রান দিবে।একদল

যারা হিন্দুস্তানের সাথে

জিহাদ করবে আর একদল

ঈসা(আ)এর সাথে থাকবে

(নাসায়ী হাঃ 3175)।

 

সর্বোপরি নবি ঈসা(যিশু)আঃ বিবাহ করবেন এবং 40 বছর জীবন অতিবাহিত করবেন।।তিনি নবি মোহাম্মাদের উম্মত হয়ে ইসলামের সর্বশেষ শরীয়ত(কোরান ও হাদিস) প্রচার করবেন।এরপর হজ করে মক্কা ও মদিনায় যাবেন।তারপর তিনি মারা যাবেন।মসজিদে নববীতে তাকে নবি(সঃ)এর কবরে পাশে দাফন করা হবে।৷ حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عَنْهُ ـ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ أَنَا أَوْلَى النَّاسِ بِابْنِ مَرْيَمَ، وَالأَنْبِيَاءُ أَوْلاَدُ عَلاَّتٍ، لَيْسَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ نَبِيٌّ ‏"‏‏.‏

 

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

 

তিনি বলেন,রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি মারিয়ামের পুত্র ‘ঈসার অধিক ঘনিষ্ঠ। আর নবী‎গণ পরস্পর বৈমাত্রেয় ভাই। আমার ও তার মাঝখানে কোন নবী‎ নেই।

  

 

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৪৪২

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।।।  সেখানে ইতিপুর্বে তার জন্য জায়গা নির্ধারন করে রাখা হয়েছে।মূসলিমরা তার জানাজা নামায পড়বে।।মানবসমাজে প্রেরিত প্রথম পাচঁজন আল্লাহর শ্রেষ্ঠ রাসুলে(উলুল আযম)মধ্যে একজন হলেনঃ নবি হযরত ঈসা(আঃ)