Are you sure?

দর্শন »  নাস্তিক্যবাদ

চিকেনোসরাস ও ম্যামোফ্যান্ট বৃৃত্তান্ত

বিজ্ঞানের জন্য কল্পনা করা প্রয়োজন, এতে কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু খেয়াল রাখা উচিত তা যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়। আর সীমা অতিক্রম করলে তাকে ফিকশন বলা উচিত। কিন্তু ফিকশনকে বিজ্ঞান বলে চালিয়ে দিলে তার কঠোর সমালোচনার যোগ্য।

কথা হল, একজন বিজ্ঞানবাদীর প্রজেক্ট রিজারেকশন নিয়ে। দুইটা লাইন বেশ নজরে এসেছে-

  • জুরাসিক পার্ক সিনেমার গল্প অনুযায়ী অ্যাম্বারে আবদ্ধ মশার পেটের রক্ত থেকে ডাইনোসর ক্লোন করা অসম্ভব। কারন DNA বাইরে থেকে কিছু না ঢুকলেও  কিছুদিন পর নষ্ট হয়ে যায়।

কথা সত্য। এমনকি ল্যাবের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশেও ডিএনএ বেশি সময় টিকে না। অথচ বিবর্তনবাদীদের অনেকেই দাবি করে থাকে প্রাগৈতিহাসিক কালের প্রতিকূল পরিবেশে তেজস্ক্রিয় সৌর বিকিরনের মাঝেও নাকি rna/dna self- replicating অনু হিসাবে কাজ করেছে। বিশ্বাস করা যায় বলুন?

ম্যামথের ডিএনএ-র কিছু খণ্ডিত অংশ পাওয়া গেলেও তা anomaly বলে গ্রহণযোগ্য মনে করা যায় না। তবুও তিনি বলতে চান যে, হাতি ও ম্যামথের সংকর তৈরি করা সম্ভব। মানে, কিভাবে? Viable nucleus পাওয়া গেছে নাকি? তাছাড়া হাতি মোটেও ই.কোলাই বাক্টেরিয়ামের মত সংকরায়নের যোগ্য সরল জীব না। তিলকে তাল বানিয়ে প্রচার করা বিবর্তনবাদীদের পুরাতন অভ্যাস। ফাকা কলসি বাজে বেশি বলে কথা। খুব বেশি হলে, লোমশ হাতি উদ্ভাবন করা যেতে পারে। সেটা ভিন্ন কথা।

  • চিকেনোসরাস [মুরগিকে ডাইনোসরে রূপান্তর] নিয়ে লিখেছেন, এইসব জিন টার্ন অফ হয়ে আছে। এগুলোকে অন করে দিলেই মুরগি ডাইনোসর হয়ে যাবে।

মানে কি? ডাইনোসর থেকে মুরগি এসেছে কোন নতুন তথ্যের উৎপত্তি নয়, বরং তথ্য বিয়োগের দ্বারা? কথা শুনে তো তাই মনে হচ্ছে। আমি অবশ্য ভেলোসির‍্যাপ্টর থেকে মুরগি আসার বিরোধী। মানে, ভেবে দেখুন, বেচে থাকার তাগিদে 2 মিটার লম্বা প্রাণী 1 ফু্টের মুরগি হয়ে গেছে। লিংকে 10টা কারণ পাবেন, ভলফ একহারদ লনিগের লিখা। আমার খুব পছন্দের বিজ্ঞানী।

তিনি আরও লিখেছেন যে, কিছু মিউটেশন ঘটালে নাকি মুরগি ডাইনোসর হয়ে যাবে। আসলে, এরা এই আধুনিক যুগে এসেও ডারউইনের মত কোষকে সরল মনে করে।

এই প্রজেক্টে কর্মরত বিজ্ঞানী লার্সন দাবি করেন যে, প্রাণী তার জীবদ্দশাতেই তার মিলিয়ন মিলিয়ন বছরের বিবর্তনের কিছু ইঙ্গিত বহন করে। তাই ভ্রূণীয় তরল থেকে মুরগিতে পরিণত হবার মধ্য দিয়েই প্রাণী তার বিবর্তনের কিছু তথ্য প্রদান করে। (Lunau, K., The quest to build a dinosaur, Maclean’s)

এধরনের মন্তব্য প্রমাণ করে যে, বিবর্তনবাদ কিভাবে বিজ্ঞানীদের বিপথগামী করছে। Natural Sciences and Engineering Research Council of Canada, the Canada Research Chairs program & National Geographic জনগণের ৳ এমন কাজে নষ্ট করছে যা মানবহিতৈষী নয়। হর্নার তার How to build a dinosaur বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে, লার্সন ব্যর্থ হয়েছে।

তাহলে অবশ্যই, প্রাণীজনি (অন্টো জেনি) জাতিজনির(ফাইলোজেনি) সারাংশ, এমন ধারণাকে প্রশ্ন করা উচিত ছিল। কিন্তু বিবর্তন তত্ত্ব প্রশ্নের উর্ধ্বে। তাই তিনি বললেন, বিকাশের প্রক্রিয়া নাকি বেশ জটিল।(Hecht, J., Review: How to build a dinosaur by Jack Horner and James Gorman, New Scientist 201(2697):44)

যাক, অন্তত জটিলতার কথা স্বীকার করেছেন। আর, হ্যা, অপরিকল্পিত মিউটেশন নিশ্চয়ই জটিলতা সৃৃষ্টি করে না। জটিলতা মানেই নিপুণ নকশা তত্ত্ব ঠিক।

প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন: চিকেনোসরাস কি বিবর্তনের প্রমাণ হবে?

না। মনে করুন, একটা রোবটের কারখানায় শিল্প-কারখানার জন্য রোবট বানানো হয়। ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্যে ভিন্ন ভিন্ন পরিবারের রোবট প্রয়োজন হলেও প্রস্তাবকারী যন্ত্রপাতি প্রায় একই। যেমন: ব্যাটারি, মেশিন ল্যাংগুয়েজ।

এবার একদল ডাকাত প্রকৌশলী যদি কারখানা দখল করে সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ভিন্ন প্রজাতির রোবট বানাতে চায়, তাহলে তা সম্ভব কিনা? সম্ভব। কিন্তু এতে করে কি প্রমাণ হয়, পূর্বের ও বর্তমানের উভয়ের নকশাকারী দল একই? না। এতে শুধু বর্তমান প্রকৌশলীদের দক্ষতা প্রমাণ হয়।

মুরগিকে ডাইনোসরে ফিরিয়ে নেয়া অসম্ভব। কারণ ডাইনোসর মুরগির  বাপ হতেই পারে না। তবে মিউটেশনের ফলে বিকৃৃত মুরগি উদ্ভাবন সম্ভব। কিন্তু সেটাকে ডাইনোসর বলা যাবে না। মুরগিই বলতে হবে।

লিংকেই স্বীকার করা হয়েছে যে, গর্ভধারণের সময় প্রভাতী রোগ সারাতে থ্যালিডোমাইড ব্যবহারের ফলে 1960 সালের দিকে রোগী ফোকোমেলিয়া আক্রান্ত শিশু জন্ম দেয়। যাদের হাত-পা ভোদরের পাখনার মত হয়। এসব বিকালাঙ্গ শিশুরাও তো মানুষ।