***বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম***
মহাবিশ্বের সার্বভৌমত্ত্বের একমাত্র
অধীকারী ও পরম করুণাময় আল্লাহ্ তায়ালার পবিত্র বাক্য দিয়ে শুরু হউক।
এখানে লিখিত দপ্তর কথাটি খুব সাধারন মনে হলেও আসলে এর মধ্যে অসাধারন এক আধুনিক বিজ্ঞানের এক আসাধারন এক তথ্য লুখিয়ে রয়েছে। যেটি সাড়ে চৌদ্দশত বৎসর পূর্বে মরুর প্রান্তের কোন মানুষের পক্ষে এটি চিন্তা করাটা কখনো সম্ভব হতে পারে না। আমাদের স্বাভাবিক জীবনে লিখিত দপ্তর অর্থ কোন অফিসিয়াল যেকোন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সকল প্রকার দাপ্তরিক রেকর্ড বা আইনের কপি সংরক্ষিত করে রাখা।
যার মাধ্যমে উক্ত অফিসিয়াল সকল কর্যক্রম পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়।
একটু চিন্তুা করে দেখুন, কোন লিখিত আইন, নীতিমালা বা সংবিধান ছাড়া কখনো কোন কিছুই চালিত হতে পারে? অকপটেই বলবেন, কখখনই সম্ভবপর হবে না। তাহলে কখনো কি ভেবে দেখেছন যে, আমাদের এই মহাবিশ্ব কোন নীয়মে বা কোন Law তে পরিচালিত হচ্ছে? হ্যা, অবশ্যই সুনির্দিষ্ট কোন না কোন বস্তু জগৎতের আইন নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
কম্পিউটার সায়েন্সের ভাষায় বলতে গেলে যেমন একটি মেশিন লেঙ্গুয়েজ বা অপারেটিং সিষ্টেম সফটওয়ার এর সাথে তুলনা করতে পারি। এসকল সফটওয়ারে থাকে প্রচুর ইনফরমেশন যার মূল সংঘঠক হলো অজস্র ডাটা, যাদের মাধ্যমে পরিপূর্ণ প্রেগ্রাম ডিজাইন করা হয়ে থাকে। আবার এসকল সিষ্টেম সফটওয়ারের মাধ্যেমে অপারেট বা চালিত হয় হাজার হাজার সফটওয়ার বা আপ্স।
এখন আমরা এই মহাবিশ্বের লিখিত আইন নিয়ে আলোচনা করব।
আমি এখানে শুধু মহাবিশ্বের বস্তুজগৎতের এই লিখিত দাপ্তরিক Law কে নিয়ে আলোচনা করব। বস্তু জগৎতের Law হল মূলত পদার্থ বিজ্ঞানের সকল প্রতিষ্টিত সূত্র ও তার গাণিতিক সমীকরণসমূহ।
হলোগ্রাপিক প্রিন্সিপল হচ্ছে আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের একটি যুগান্তরকারী একটি তত্ত্ব। যাদের হাত ধরে এই তত্ত্ব প্রতিষ্টিত হয়েছে তারা হলেন Gerard't Holft ও Leonard Susskind। তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দিলাম।
Caption
হলোগ্রাপিক প্রিন্সিপলের মূল সারাংশটা হল আমরা যে বস্তুগত মহাবিশ্ব দেখছি যেমন গ্রহ,উপগ্রহ, গ্যালাক্সি, সুপার নোভা এগুলো প্রায় সবগুলো হল ত্রিমাত্রিক আ্যনিমেশনের ফসল।
আর এই ত্রিমাত্রিক আ্যনিমেশনের (3D Animation) হল আসলে দ্বিমাত্রিক সমতলের প্রজেকটরের প্রজেকশন ( 2D Projection)।
অথ্যাৎ এই 2D সমতল প্রজেক্টরই ঐ 3D Animation বা ত্রিমাত্রিক ছবিকে গঠন করে ও একই সাথে নিয়ন্ত্রন করে। লক্ষ্যকরুন দ্বিমাত্রিক সমতলে (2D Plain or Projector) অনিমেটেড বস্তুর সকল ইনফরমেশন/তথ্য/data অন্তর্নিহিত থাকে।
মজার বিষয় হচ্ছে এই 2D Universe Plain or Projector এ যে ইনফরমেশন/data বা instruction set থাকে তা হুবহু আমাদের দৃশ্যমান বস্তুজগৎতেও থাকে।
আরো কিছু তথ্য দিই। প্রত্যেক পদার্থের সুনির্দিষ্ট ইনফরমেশন সেট থাকে যা Black Hole এ পতিত হলেও ধ্বংস হয় না! যদিও বস্তুটি ফিজিক্যাল বডি বা বস্তুগত সত্ত্বা একেবারেই ধ্বংস হয়ে যায়। কি অবাক লাগছে? হ্যা, এটাই সত্য। অথ্যাৎ মহাবিশ্বের প্রত্যেক বস্তুকণার অস্তিত্বের নিয়ন্ত্রন কোন না কোন এক তথ্যভান্ডার বা Information Source থেকে আসছে ও সুচারুভাবে সুনিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আর এ তথ্যভান্ডার বা Information Source দ্বিমাত্রিক তথা 2D Plain/Projector এ লিখিত বা কোডেড অবস্থায় রয়েছে যার মাধ্যমে এই মহাবিশ্ব অপারেটেড হচ্ছে ও পদার্থের নিজ অস্তিত্ত্বে ঠিকে রয়েছে। এটিই হলো মহান আল্লাহ্ তায়ালার লিখিত দপ্তর, যেখান থেকে এই মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বস্তুগত অস্তিত্ত্ব ঠিকিয়ে রাখার জন্য।
তবে, এখানে একটা বিষয় ক্লিয়ার করতে হবে যে, মহাবিশ্বের কিছু অবস্তুগত সত্ত্বা রয়েছে যেমন মানুষের আত্মা, মন, কনসাসনেস প্রভৃতি অদৃশমান মেটাফিজিক্যাল বস্তু সমূহ কিন্তু এই Holographic Principle এর আওতায় পড়বেনা। অথ্যাৎ মানুষের মন Information Source দ্বিমাত্রিক তথা 2D Plain/Projector দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না, কারন এগুলো Metaphysical বা অবস্তুগত।
এই Holographic Principle এর উল্লেখযোগ্য সফলতা হচ্ছে, দীর্ঘ দিনের চলমান Black Hole Information Paradox এর সমাধান দিতে পেরেছে যেখানে অনেক থিওরী ব্যর্থ ছিল।
পরিশেষে, আপনাদের বুঝার হয়তা আর অবকাশ নেই যে, আল্লাহ্ তায়ালা মূলত উঁনার যে মহাবিশ্বের লিখিত দপ্তরের কথা বলা হয়েছে সেটিই হল Information Source দ্বিমাত্রিক তথা 2D Plain/Projector of Universe আজ আধুনিক বিজ্ঞান প্রমাণের স্বাক্ষর দিল। আর সেজন্যই পবিত্র কোরআনে বলেছেন যে, তিনি কেয়মতের দিন এই মহাবিশ্ব তথা আকাশমন্ডলীকে ঐ Information Source দ্বিমাত্রিক তথা 2D Plain/Projector of Universe কে গুটিয়ে ফেলার কথা বলেছেন। আর যেটি গুটিয়ে ফেললে দৃশ্যমান বস্তৃগত জগৎ অকপটেই গুটয়ে বা ধ্বংস হয়ে যাবে।
এরকম হাজারো অতি আধুনিক বিজ্ঞানের ইঙ্গিত পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ তায়ালা দিয়েছেন। ইনশাআল্লাহ্! সে সকল রহস্য বিজ্ঞানেই মধ্যমে উন্মোচিত হবে।
রচনায়,
মোঃ আবদুল হাকিম
সহঃ শিঃ ( গণিত ও সাঃ বিজ্ঞান)।