আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতাহু প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা। আশা করি অবশ্যই সবাই মহান আল্লাহ্ সুবহানু ওয়াতা'আলার অশেষ রহমত ও দয়ায় ভালো এবং সুস্থ আছেন। আজকে বহুদিন পরে পবিত্র কোরআনের ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতা সিরিজের ১১ তম পর্ব আলোচনা করতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহু তা'আলা। আশা করি অবশ্যই সবাই মনোযোগ সহকারে পড়বেন ইনশাআললাহ। তাহলে আপনাদের কিছুটা হলেও জানা হবে এবং আমার লেখার কিছুটা হলেও স্বার্থক হবে বলে মনে করি,,,এবং সেই সাথে নিজেও তৃপ্তি পাব। মহামহিমান্বিত আল্লাহ্, ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন মাজীদের ৫ নং সূরা আল মায়িদাহ (المآئدة), আয়াত: ৬৭ এ এরশাদ করেছেন:-
يَٰٓأَيُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغْ مَآ أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُۥ وَٱللَّهُ
يَعْصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلْكَٰفِرِينَ
অর্থঃ হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দাও আর যদি তুমি না কর তবে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছালে না। আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।[অনুবাদক: আল-বায়ান]
O Messenger, announce that which has been revealed to you from your Lord, and if you do not, then you have not conveyed His message. And Allah will protect you from the people. Indeed, Allah does not guide the disbelieving people." [Translator: Sahih International]
সম্পূর্ণ আয়াতের তাফসীর পড়তে লিঙ্কে ক্লিক করুন: https://hadithbd.com/quran/link/?id=736
আমাদের এখানে আলোচনার মূল বিষয় হলো:-" يَعْصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِ إِنَّ (উচ্চারণ: ইয়া'সিমুকা মিনান্না-ছি ইন্না)/Allah will protect you from the people অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে মানুষ (কাফেরদের) থেকে রক্ষা করবেন।" [⁶⁷].
অর্থাৎ আল্লাহ্ রাসূল ﷺ কে কাফের-মুশরিকদের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করবেন। তাদের হাতে রাসূল ﷺ এর কোন ক্ষতি হতে দিবেন না।
প্রসঙ্গত কথা হলো যে, এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার বহু পূর্বেই মহান আল্লাহ্ সুবহানু ওয়াতা'আলা রাসূল ﷺ এর জন্য, তাঁর চাচা আবু তালেবের অন্তরে প্রকৃতি ও স্বভাবগত ভালবাসা দান করেন এবং তিনি তাঁর নিরাপত্তা বিধান ও রক্ষণাবক্ষেণ করতে থাকেন। আর রাসূল ﷺ এর প্রতি চাচা আবু তালেবের এই ভালবাসা ছিল অপরিসীম, যদিও তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি। অতঃপর চাচা আবু তালেবের মৃত্যুর পরে মহান আল্লাহ্ তা'আলা কুরাইশদের কিছু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে রাসূল ﷺ এর রক্ষণাবক্ষেণ ও নিরাপত্তা বিধান করেন। উপরোল্লিখিত আয়াত নাযিল হওয়ার পূর্বে সাহাবীগণও তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। সহীহ হাদিসে বলা হয়েছে:-
"মা আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত,"একদা রাসূল ﷺ জেগে ছিলেন। রাতে তাঁর ঘুম হচ্ছিল না। তারপর তিনি যখন মদিনায় এলেন এই আকাঙ্খা প্রকাশ করলেন যে, আমার সাহাবীদের মধ্যে কোন যোগ্য ব্যাক্তি যদি রাতে আমার পাহারায় থাকত। এমন সময় আমরা অস্ত্রের শব্দ শুনতে পেলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইনি কে? লোকটি বলল, আমি সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস, আপনার পাহারার জন্য এসেছি। তারপর নবী ﷺ ঘুমিয়ে পড়লেন।" [একটা রিওয়াতে আছে যে, এটা দ্বিতীয় হিজরির ঘটনা]
অনলাইন সোর্স থেকে পড়ুন:
http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=2771
[নোট: উক্ত আয়াত নাযিলের পূর্বে রাসূল ﷺ তাঁর নিরাপত্তার জন্য দেহরক্ষী তথা প্রহরী নিযুক্ত করেছিলেন। রাসূল ﷺ কে পাহারা দেওয়ার মহান দায়িত্ব যারা পালন করেছিলেন তাঁরা হলেন হযরত আব্বাস রাঃ, সাদ ইবনু মুআয রাঃ, মুহাম্মদ ইবনু সামালামা রাঃ, যুবায়ের রাঃ, আবু আইয়ুব আনসারি, যাকওয়ান ইবনু আবিল কায়েস, আদরা আস সুলামি মিহজান ইবনু আদরা, আব্বাস ইবনু বিশর, আবু রাইহানা প্রমুখ সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমাইন --সূত্র: ফাতহুল বারী]
পরে এই আয়াতটি::-" يَعْصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِ إِنَّ /Allah will protect you from the people অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে মানুষ (কাফেরদের) থেকে রক্ষা করবেন।" আয়াতটা নাযিল হয়।
আয়াতের এ বাক্যে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে, যে যত বিরোধিতাই করুক, শক্ররা আপনার কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না। উপরোল্লিখিত আয়াত নাযিল হওয়ার পরে রাসূল ﷺ নিজের ঘর হতে মাথা বের করে পাহারাদারগণকে বললেন, হে লোকজন! তোমরা (আমার পাহারা হতে) চলে যাও। কারণ আল্লাহ তা'আলাই আমার হিফাজাতের দায়িত্ব নিয়েছেন।"
অনলাইন সোর্স থেকে পড়ুন:
http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=41582
অর্থাৎ রাসূল ﷺ বাহ্যিক সুরক্ষা ব্যবস্থা (দেহরক্ষী বা পাহারাদার ইত্যাদি) উঠিয়ে দেন। যার ফলশ্রুতিতে তাঁকে কঠিন বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু মহান আল্লাহ তাআলা তাঁকে রক্ষা করেন ও নিরাপত্তা দেন। এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর প্রচারকার্যে কেউ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বিন্দুমাত্রও ক্ষতি করতে সক্ষম হয়নি। অবশ্য যুদ্ধ ও জিহাদে সাময়িকভাবে কোনরূপ কষ্ট পাওয়া এর পরিপন্থী নয়। তাছাড়া কোন কোন হাদীসে এ হিফাযতের বাস্তব নমূনাও আমরা দেখতে পাই। মক্কার কাফের মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে হত্যা করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। মহান আল্লাহ্ তাআলা মদিনার আনসারদের অন্তরে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি শরিয়তগত মুহাব্বত পয়দা করে দেন এবং তিনি তাঁদের কাছেই চলে যান। তখন মুশরিকরা ও ইহুদিরা অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে উঠে ও ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত সেনাবাহিনী নিয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মানসে এগিয়ে আসে। কিন্তু তারা বার বার অকৃতকার্য হওয়ার ফলে তাদের আশার গুড়েবালি পড়ে যায়। অনুরূপ ভাবে তাদের গোপন ষড়যন্ত্র এবং ইয়াহুদীদের বিভিন্ন কুচক্রান্তের কথা মহান আল্লাহ্ তাআলা যথাসময়ে তাঁর রাসূলুল্লাহ ﷺ কে জানিয়ে দেন। এমনিভাবে কঠিন বিপদ ও তুমুল যুদ্ধের সময় কাফেরদের ভয়ঙ্কর আক্রমণ হতে রক্ষা করেন আল্লাহ্। এ হল আল্লাহর কুদরত।
আবার এদিকে লাবীদ ইবনু আ'সাম নামক এক মুনাফিক, যে ছিল ইহুদিদের মিত্র এবং বনু সুরাইক গোত্রের একজন, সে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপরে যাদু করে, অপরদিকে মহান আল্লাহ্ তা'আলা সুরা নাস ও সুরা ফালাক অবতীর্ণ করেন, যার ফলশ্রুতিতে ইহুদিদের যাদু ক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায় এবং রাসূল ﷺ সুস্থ হয়ে উঠেন। এভাবেই মহান আল্লাহ্ সুবহানু ওয়াতা'আলা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে রক্ষা করেছেন।
ইমাম ইবনে কাসির (রহঃ) তাঁর তাফসীর ইবনে কাসিরে লিখেছেন,"...জিবরাঈল (আঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে এসে বললেনঃ “হে মুহাম্মদ (ﷺ) আপনি কি রোগাক্রান্ত?” রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উত্তরে বললেন “হ্যাঁ”। হযরত জিবরাঈল (আঃ) তখন নিম্নের দু'আ দু'টি পাঠ করেনঃ অর্থাৎ “আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ফুঁ দিচ্ছি সেই সব রোগের জন্যে যা আপনাকে কষ্ট দেয়, প্রত্যেক হিংসুকের অনিষ্ট ও কুদৃষ্টি হতে আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন।"
এই রোগ দ্বারা সম্ভবতঃ ঐ রোগকেই বুঝানো হয়েছে যে রোগে তিনি যাদুকৃত হওয়ার পর আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা স্বীয় রাসূল (ﷺ) কে সুস্থতা ও আরোগ্য দান করেন। এতে হিংসুটে ইয়াহুদীদের যাদুর প্রভাব নস্যাৎ হয়ে যায়। ফলে তারা রাসূল সাঃ কে মারতে (হত্যা করতে) ব্যর্থ হয়েছিল। তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেয়া হয়। তারা চরমভাবে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়।রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে যাদু করা সত্ত্বেও তিনি যাদুকারীদেরকে কোন কটু কথা বলেননি এবং ধমকও দেননি। আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী (ﷺ) কে সুস্থতা ও আরোগ্য দান করেন..."(তাফসীরে ইবনে কাসির, আল-কুরআন ১১৩:৫ আয়াতের তাফসীর হতে বিবৃত)
উক্ত ঘটনা অনলাইন সোর্স থেকে পড়ুন:
https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=30350
উল্লেখ্য যে, যাদুগ্রস্ত অবস্থায় চিকিৎসার ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীর মাধ্যমে উম্মতের জন্য সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস এর ব্যবহারিক গুরুত্বও পেশ করেছেন। নিম্নের হাদিসটি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য:
اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: أَلَمْ تَرَ اٰيَاتٍ أُنْزِلَتِ اللَّيْلَةَ لَمْ يُرَ مِثْلُهُنَّ قَطُّ ﴿قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ﴾. وَ ﴿قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ﴾. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
"উকবাহ্ ইবনু ‘আমির (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেনঃ আজ রাতে এমন কিছু আশ্চর্যজনক আয়াত নাযিল হয়েছে, আগে এ রকম কোন আয়াত (নাযিল) হতে দেখা যায়নি। (আর তা হলো) ‘‘কুল আ‘ঊযু বিরাব্বিল ফালাক’’ ও ‘‘কুল আ‘ঊযু বিরাব্বিন্না-স’’।"
[মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২১৩১, মুসলিম ৮১৪, সহীহ আত্ তারগীব ১৪৮৫, নাসায়ী ৯৫৪, মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৯৬৮, তিরমিযী ২৯০২, সহীহ আল জামি‘ ১৪৯৯]
অনলাইন সোর্স থেকে পড়ুন:
http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=56691
উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় আল্লামা আবুল হাসান উবায়দুল্লাহ আল-মুবারকপুরী (রহঃ) লিখেছেন,"...নবী (ﷺ) জিন্-ইনসানের অনিষ্টতা থেকে বাঁচার জন্য সর্বদাই এ দু’টি সূরা পাঠ করে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। আশ্রয় প্রার্থনার অন্যান্য দু‘আ যা ইতিপূর্বে পড়তেন তা ছেড়ে দিলেন। নবী (ﷺ)-কে যাদু করলে তিনি এ দু’টি সূরার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করেন.."(তথ্যসূত্র - তাহক্বীক্ব মিশকা-তুল মাসা-বীহ (তৃতীয় খণ্ড) [আরবি ও বাংলা] ব্যাখ্যা: মির্'আ-তুল মাফা-তীহ শার্হু মিশকা-তিল মাসা-বীহ)
[নোট: রাসূল ﷺ কে যাদু করার জন্য উক্ত মুনাফিক রাসূলের বাসার কাজের ছেলের মাধ্যমে কয়েকটি চুল সহ তাঁর ব্যবহৃত চিরুনীটি সংগ্রহ করে। অতঃপর তার কন্যাদের দ্বারা উক্ত চুলে ১১টি জাদুর ফুঁক দিয়ে ১১টি গিরা দেয় ও তার মধ্যে ১১টি সুচ ঢুকিয়ে দেয়। অতঃপর চুল ও সুচ সমেত চিরুনীটি একটি খেজুরের কাঁদির খোলা আবরণীর মধ্যে প্রবেশ করিয়ে ‘যারওয়ান’ কূপের তলায় একটি বড় প্রস্তর খন্ডের নীচে চাপা দিয়ে রাখে। মূলত তারা রাসূল ﷺ কে হত্যা প্রচেষ্টা ছাড়াও তাঁকে জাদু করে পাগল বানিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করে ষড়যন্ত্রকারীরা।
আর মহান আল্লাহ্ তা'আলাও সূরা নাস এবং সূরা ফালাক নাযিল করেন। আর এই দুইটি সুরাতে মোট আয়াত: ৬+৫=১১ আয়াত। আর
রাসূল ﷺ ও এই ১১টি আয়াত পাঠ করার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেন।]
আবার এক ইয়াহুদী নারী বিষ মিশ্রিত একটি ভূনা ছাগী নিয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সামনে উপস্থিত হলে তিনি তা থেকে খেলেন। অতঃপর তাকে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট উপস্থিত করা হলে তিনি তাকে এ জন্য প্রশ্ন করলেন। সে বললো, আমি আপনাকে হত্যা করার জন্যই এটা করেছি। তিনি বললেন, ‘‘এ ব্যাপারে আল্লাহ তোমাকে সফল হতে দেননি অথবা তিনি বলেছেন, আমার উপর তোমাকে সফল হতে দেননি অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ সুবহানু ওয়াতা'আলা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে খাবারে বিষ মিশ্রিত করার কথা জানিয়ে দেন।
অনলাইন সোর্স থেকে পড়ুন:
http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=61876
[নোট: বিষ মিশ্রিত খাবারের ঘটনা আবু দাউদ শরীফে "রক্তমূল্য" অধ্যায়ের ৬ নং অনুচ্ছেদ, ৪৫০৮ থেকে ৪৫১৪ নং হাদিসে বিবৃত হয়েছে। এছাড়া সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৪৪২৮। আরো দেখুনঃ ‘আর রাহিকুল মাখতুম’, শফিউর রহমান মুবারকপুরী; পৃষ্ঠা ৫৩৪ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) অথবা পৃষ্ঠা ৪৮৯(আল কোরআন একাডেমী লন্ডন)।
আর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবনে এ ধরণের বহু ঘটনা ঘটতে থাকে, আর মহান আল্লাহ্ পাকও তাঁর রাসূলুল্লাহ ﷺ কে এভাবেই বার বার রক্ষা করেন শত্রুদের থেকে।
আবার সহীহ বোখারিতে জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে,"একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ কোন এক যুদ্ধে দুপুরে বিশ্রামের জন্য একটি গাছে তাঁর তরবারি ঝুলিয়ে রেখে সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। এক বেদুঈন সেখানে এসে তাঁর তরবারিটা নিয়ে নেয়। আর রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন জেগে উঠলেন তখন উক্ত লোকটির হাতে তাঁর তরবারি দেখলেন। আর এরূপ সময় উক্ত লোকটি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলেন,"এখন তোমাকে আমার হাত থেকে কে রক্ষা করবে? আর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জবাবে বলেন,"আল্লাহ্ আমাকে রক্ষা করবেন।" তখন এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে যে সে তরবারি খানা খাপে রেখে দেয়।" [সহীহ বুখারি, হাদিস নং-২৯১০]
আর আপনি যদি ইসলামিক ইতিহাস পড়েন তাহলে দেখবেন যে, রাসূল ﷺ কে হত্যা করার জন্য যতবারই গভীর ষড়যন্ত্র সহ, যত কৌশল ই করা হোক না কেন তাঁর কিন্তু বিন্দুমাত্রও ক্ষতি করতে সমর্থিত হয়নি, আর সেখানে হত্যা করা তো দূরের কথা। এখন তাঁকে কেন হত্যা করতে পারেনি? তার কারণ হলো প্রত্যেকবারই মহাবিশ্বের সর্বশক্তিধর স্রস্টা মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ সুবহানু ওয়াতা'আলা তাঁর প্রিয় রাসূল ﷺ কে কাফের- মুশরিকদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে দেখা যায় যে, মহান আল্লাহ্ রাসূল ﷺ কে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি রক্ষা করেছেন অর্থাৎ ভবিষ্যদ্বাণীর ফলাফল বাস্তবায়িত করেছেন। আর এভাবেই মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র কোরআনের প্রতিটি ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বক্তব্য বাস্তবায়িত হয়েছে। সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। সুবহানআল্লাহ্। আল্লাহু আকবর।
[নোট: সম্পূর্ণ বিস্তারিত পড়তে পবিত্র কোরআনের ৫ নং সূরা আল মায়িদাহ এর ৬৭ নং আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর পড়তে পারেন। আর যদি পারেন উক্ত আয়াতের বেশ কয়েকটি তাফসীর পড়লে আরো গভীর ভাবে জানতে এবং বুঝতে পারবেন ইনশাআল্লাহু তা'আলা।]
i) সম্পূর্ণ পবিত্র কোরআনের অর্থ, বাংলা, ইংরেজি, আরবি সহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ, তাফসীর লিংক (আবু বকর যাকারিয়া হাফিঃ) পড়ুন।
Published by: King Fahd Complex, Madina, Saudi Arabia
https://quranenc.com/en/browse/bengali_zakaria/48/1
ii) বাংলাদেশ হাদিস অ্যাকাডেমির "কোরআনের তাফসীর লিংক)
https://hadithbd.com/quran/
"আল্লাহ নবী ﷺ কে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন" [মায়িদাহ (المآئدة), আয়াত: ৬৭]
https://www.facebook.com/104106391067326/posts/346215036856459/