আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? [নাঊযুবিল্লাহ; আস্তাগফিরুল্লাহ]
লেখকঃ হাবিব
ইসলাম বিদ্বেষী অমুসলিম কাফের মুশরিকদের একটা কমন প্রশ্ন হলো, তারা মুসলিমদের কাছে জিজ্ঞেস করে মহান আল্লাহ্কে কে সৃষ্টি করেছে? [নাঊযুবিল্লাহ; আস্তাগফিরুল্লাহ]
প্রথমত আমাদের জানতে হবে সৃষ্টিকর্তা এবং সৃষ্টির মধ্যে পার্থক্য কী? এবং সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তার সংজ্ঞা টা কী?
সৃষ্টিকর্তার সংজ্ঞা: যাঁর জন্ম মৃত্যু নেই অর্থাৎ অনাদি অনন্ত এবং মহাপরাক্রমশালী সত্ত্বা, যিনি এক ও অদ্বিতীয় অর্থাৎ যাঁর তুলনাযোগ্য কেউই নেই তিনিই হলেন মহান সৃষ্টিকর্তা।
সৃষ্টি: যার জন্ম মৃত্যু আছে অর্থাৎ অনাদি অনন্ত নয়।
তাহলে আমরা দেখতে পেলাম, সৃষ্টিকর্তার জন্ম মৃত্যু নেই। অপরদিকে সৃষ্টির জন্ম মৃত্যু আছে। আর যখন সৃষ্টিকর্তার জন্ম মৃত্যু নেই তখন তাঁর আবার আরেকজন সৃষ্টিকর্তা কে,,,প্রশ্নটাই অবান্তর এবং অযৌকক্তিক।
উদাহরণ স্বরূপ: আমি বললাম ১ হলো সৃষ্টিকর্তা। আরেকজন তখন বলল, ১ কে আবার কে সৃষ্টি করেছে? তখন যদি বলি ১ কে ২ সৃষ্টি করেছে। তখন আবার প্রশ্ন করবে ২ কে, কে সৃষ্টি করেছে? উত্তর যদি বলি ৩ সৃষ্টি করেছে। তাহলে দেখা যাবে এইভাবে প্রশ্নটা অসীমে যেতেই থাকবে অর্থাৎ এর কোন লজিক্যাল উত্তর ই নেই যা হবে চুড়ান্ত। এছাড়া এইখানে সৃষ্টিকর্তার যে সংজ্ঞা, তার-ই অবমূল্যায়ন হবে এসব অবান্তর প্রশ্ন করে। কেননা সৃষ্টিকর্তার সংজ্ঞা যাঁর জন্ম মৃত্যু নেই। তাহলে যার জন্ম মৃত্যু নেই তাহলে তাঁর আবার সৃষ্টিকর্তা আসবে কোথায় থেকে? সৃষ্টিকর্তার আবার সৃষ্টিকর্তা কে প্রশ্নটাই অবান্তর এবং অযৌকক্তিক একটা ভুল প্রশ্ন।
এছাড়া বিজ্ঞান কখনোই বলে না, সৃষ্টিকর্তা বলে কেউই নেই। কেননা আজ পর্যন্ত বিজ্ঞান এমন কিছুই প্রমাণ দেখাতে পারেনি যা একা একাই নাথিং থেকে সামথিং এ এসেছে কারো সাহায্য ব্যতীত। স্বয়ং বিশ্বের বড় বড় বিজ্ঞানীরা সহ মহান মনীষীরাই সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন, বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন, জাবির ইবনে হাইয়ান, টলেমী ইত্যাদি। তাহলে এসব বড় বড় পন্ডিতগণ কী অজ্ঞ মূর্খ ছিল নাকি যখন তারা নিজেরাই সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস করতেন। অপরদিকে বাংলা পাতি নাস্তিকরা বলে সৃষ্টিকর্তা বলে কেউই নেই। তাহলে তাদের কাছে প্রশ্ন রইল রইল:
১) কিভাবে কোন কিছু নাথিং থেকে সামথিং হওয়া সম্ভব?
২) বিজ্ঞান কী এমন কোন কিছু প্রমাণ দেখাতে পেরেছে যা একা একাই অস্তিত্বে এসেছে?
বরং বিজ্ঞান বলে একটা সুঁচ তৈরি করতে গেলেও কারিগর প্রয়োজন। তাহলে এই বিশাল মহাবিশ্ব তৈরি করতে কেন কোন কারিগর প্রয়োজন হবে না? একটা সামান্য সুঁচ-ই কারিগর ছাড়া তৈরি হয় না; তাহলে এই বিশাল মহাবিশ্ব কিভাবে কোন কারিগর ছাড়াই অস্তিত্বে আসা সম্ভব? এই মহাবিশ্বের যেই গভীরতা তা চিন্তা ভাবনা করলে অটোমেটিক্যালি সত্য টা হাজির হবে নিজের সামনে অর্থাৎ কোন ভাবেই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে অবিশ্বাস করা যাবে না।
এছাড়া মহামহিমান্বিত পবিত্র আল কোরআনে মহান আল্লাহ তাঁর নিজের পরিচয় আমাদের কে জানিয়ে দিয়েছেন। বলা হয়েছে:-
"বলুন, আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তিনি অমুখাপেক্ষী/পরনির্ভরশীল নন। তিনি কাউকে জন্ম দেন নি, কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। তারঁ সমতুল্য কেউ নেই।" [পবিত্র কোরআন ১১২:১-৪]
আরো বলা হয়েছে:-"আল্লাহ চিরস্থায়ী ও চিরঞ্জীব" [পবিত্র কোরআন ২/২৫৫]
আল্লাহ আরো বলেন:-"তিনি প্রথম, তিনিই শেষ, তিনিই প্রকাশ্য ও তিনিই গোপন এবং তিনি সব পরিজ্ঞাত" [পবিত্র কোরআন ৫৭/৩]
এছাড়া আমাদের সমগ্র মুসলিমদের কাছে সত্যের মানদণ্ড হল মহামহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন। তাই আমরা মুসলিমরা সবার আগে বিজ্ঞানময় কোরআন কেই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি সবচেয়ে বেশি।