🔥অভিযোগ:
কুরআন -এ চন্দ্র ও সূর্য একই কক্ষপথে আবর্তনের কথা বলা হয়েছে (৩৬:৪০) এবং সেই সাথে মহাবিশ্বকে ভূ-কেন্দ্রিকও মনে করা হয়েছে (৩১:২৯)!
36.40: It is not permitted to the Sun to catch up the Moon, nor can the Night outstrip the Day: Each (just) swims along in (its own) orbit (according to Law).
31.29: Seest thou not that God merges Night into Day and he merges Day into Night; that He has subjected the sun, and the moon (to his Law), each running its course for a term appointed; and that God is well-acquainted with all that ye do?
💮জবাব:
কুরআনের কোথাও চন্দ্র ও সূর্য একই কক্ষপথে আবর্তনের কথা লিখা নেই। তবে সে সময় মানুষ এমন কিছুতে বিশ্বাস করতে পারে। কোরআনে বিষয়টিকে সংশোধন করা হয়েছে। অন্যথায় চন্দ্র ও সূর্য একে-অপরকে ধরার প্রশ্ন আসতো না। তাছাড়া কেউ যদি অনুমান করে বলেন: The sun cannot cause the moon to gravitate towards itself and the night and the day cannot lengthen or shorten other than the appointed measure–সেক্ষেত্রেও কিন্তু কারোরই কিছু বলার থাকবে না। অনুরূপভাবে, কোরআনের কোথাও মহাবিশ্বকে যেমন ভূ-কেন্দ্রিক বলা হয়নি তেমনি আবার সূর্যকে পৃথিবীর চারিদিকে আবর্তনের কথাও লিখা নেই। ভূ-কেন্দ্রিক মহাবিশ্বের ধারণা এসেছে গ্রীক ফিলোসফি ও বাইবেল থেকে। আর এ কারণেই ভূ-কেন্দ্রিক মহাবিশ্বের বিশ্বাসে আঘাত হানার কারণে ক্রিস্টিয়ান চার্চ বিজ্ঞানীদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছিল।
🔥অভিযোগ:
কুরআনে বলা হয়েছে পৃথিবী তার নিজ অক্ষের উপর ঘুরছে না–অতএব অবৈজ্ঞানিক!
💮জবাব:
প্রথমত, কোরআনের কোথাও পৃথিবীকে স্থির তথা নিজ অক্ষের উপর না ঘোরার কথা বলা হয়নি। কুরআনের বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচারের মধ্যে এটিও একটি। দ্বিতীয়ত, কেউ কি কুরআন থেকে অকাট্য যুক্তির সাহায্যে দেখাতে পারবেন যে পৃথিবী সত্যি সত্যি ঘুরছে না? উত্তর হচ্ছে, মোটেও না। তাহলে বছরের পর বছর ধরে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে কেন! নীচের আয়াতগুলো দিয়ে তাদের দাবিকে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়। 15.19: And the earth We have spread out (like a carpet); set thereon mountains firm and immovable; and produced therein all kinds of things in due balance. 27.61: Who has made the earth firm to live in; made rivers in its midst; set thereon mountains immovable; and made a separating bar between the two bodies of flowing water. আয়াতগুলোতে ‘Immovable’ শব্দটা দেখেই পৃথিবীকে বুঝানো হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়েছে! কিন্তু এখানে ‘Immovable’ বলতে পর্বতমালাকে বুঝানো হয়েছে, পৃথিবীকে নয়। দ্বিতীয় আয়াতে ইউসুফ আলীর অনুবাদে ‘Who has made the earth firm to live in’ বলতে পৃথিবীর শক্ত (Firm/Solid: Having a solid or compact structure that resists stress or pressure–Merriam-Webster Dictionary) উপরিভাগকে বুঝানো হয়েছে, যার উপর পর্বতমালা ও নদী-নালা তৈরী হয়েছে। পৃথিবীর উপরিভাগ মধ্যভাগের মতো গলিত পদার্থ দ্বারা তৈরী হলে তার উপর কিন্তু পর্বতমালা ও নদী-নালা তৈরী হতো না। পুরো আয়াতটা তো পড়তে হবে। তাছাড়া শাকিরের অনুবাদে কিন্তু ‘Restingplace’ লিখা হয়েছে। পিকথালের অনুবাদে ‘Fixed abode’ দেখে সম্ভবত ‘পৃথিবী ঘুরছে না’ ধরে নেয়া হয়েছে! ‘Fixed abode’ এর ব্যাখ্যা হচ্ছে পৃথিবী তার নিজ অক্ষের উপর প্রচন্ড বেগে ঘোরা সত্ত্বেও মানুষ ও অন্যান্য জীবের সুবিধার জন্য পৃথিবীকে আপাতদৃষ্টিতে স্থির অবস্থায় রাখা হয়েছে। অন্যথায় পৃথিবীতে জীবনযাত্রা ব্যহত হতে পারতো। কোরআনে অন্যান্য আয়াতে বলা হয়েছে যে, পৃথিবীর পৃষ্ঠভাগে পর্বতমালা স্থাপন করে ঝাঁকুনিকে প্রতিরোধ করা হয়েছে। নীচের আয়াত দুটি দিয়েও ‘পৃথিবী ঘুরছে না’ প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়। 30.25: And one of His signs is that the heaven and the earth subsist by His command. 35.41: It is God Who sustains the heavens and the earth, lest they cease (to function). প্রথম আয়াতে ‘Subsist by His command’ বলতে ‘পৃথিবী ঘুরছে না’ ধরে নেওয়া হয়েছে! অথচ ‘Subsist’ শব্দের অর্থ কিন্তু ‘ঘুরছে না’ নয়। তাছাড়া আয়াতটাতে হেভেন ও পৃথিবী উভয়েরই কথা বলা হয়েছে, শুধুই পৃথিবীর কথা বলা হয়নি। দ্বিতীয় আয়াতে ‘Who sustains the heavens and the earth, lest they cease to function’ কথাটার দ্বারা পৃথিবী ও গ্রহ-নক্ষত্রের যথাযথ কার্য-প্রণালীকে বুঝানো হয়েছে, কোনভাবেই ‘পৃথিবী ঘুরছে না’ বুঝানো হয়নি। কী মনে হয় পাঠক! উপরের আয়াতগুলো থেকে কি বলা যাবে যে পৃথিবী ঘুরছে না? কুরআনে পৃথিবীর ঘূর্ণনের স্বপক্ষে বা বিপক্ষে সরাসরি যেমন কোন আয়াত নেই তেমনি আবার এমন কোন আয়াতও নেই যেখানে থেকে কেউ অকাট্য যুক্তির সাহায্যে পৃথিবীর ঘূর্ণনকে থামিয়ে দিতে পারে। চ্যালেঞ্জ থাকলো। তবে কুরআনে পৃথিবীর ঘূর্ণনের স্বপক্ষেই কিছু ইঙ্গিত আছে (২৭:৮৮, ৫৫:১৭-১৮, ২১:৩৩)। কুরআনের আলোকে পৃথিবী আসলে ঘূর্ণায়মান। যদিও পৃথিবী তার নিজ অক্ষের উপর প্রচন্ড বেগে ঘুরছে তথাপি আপাতদৃষ্টিতে পৃথিবীকে স্থির তথা অনড় মনে হয়। পৃথিবীর পৃষ্ঠভাগ ফুটবল বা বেলুনের মত মসৃণ হলে পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে হয়তো ঝাঁকুনির সৃষ্টি হতো। কোরআনে বলা হয়েছে যে, পৃথিবীর পৃষ্ঠভাগে পর্বতমালা স্থাপন করে ঝাঁকুনিকে প্রতিরোধ করা হয়েছে। ফলে কোরআনে যদি পৃথিবীকে ‘স্থির’ তথা ‘অনড়’ মনে করা হতো তাহলে পৃথিবীতে পর্বতমালা স্থাপন করে ঝাঁকুনি প্রতিরোধের কথা কোনভাবেই আসতো না। অতএব কুরআনে সুস্পষ্টভাবে পৃথিবীর ঘূর্ণনের স্বপক্ষেই ইঙ্গিত আছে। অথচ এই আয়াতগুলো নিয়েই বোকার মতো বেশ হাসি-তামাসা ও কৌতুক করা করা হয় এবং সেই সাথে উল্টোদিকে কোরআনের পৃথিবীর ঘূর্ণনকে জোর করে থামিয়েও দেয়া হয়! কিছু নমুনা দেখুন: 31.10: He created the heavens without any pillars that ye can see; He set on the earth mountains standing firm, lest it (the earth) should shake with you. 16.15: And He has set up on the earth mountains standing firm, lest it (the earth) should shake with you. 21.31: And We have set on the earth mountains standing firm, lest it (the earth) should shake with them (mountains).
🔥অভিযোগ কুরআনে যেহেতু পৃথিবীকে বেড ও কার্পেটের সাথে তুলনা করা হয়েছে সেহেতু পৃথিবীর আকারকে ডিস্কের মতো সমতল মনে করা হয়েছে–অতএব অবৈজ্ঞানিক!
💮জবাব: