আকাশ নিয়ে অমুসলিমদের কোরআনের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা মিথ্যাচার ও অজ্ঞতা। যা নিতান্তপক্ষে খুবই লজ্জাকর একটি বিষয়। আজ আমরা কোরআনের বিরুদ্ধে আকাশকে নিয়ে করা সমস্ত অভিযোগের জবাব দেখবো।
🚫১. পিলার ছাড়া কি আকাশ কি সত্যিই কঠিন পদার্থ?
Luqman 31:10
خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَاۖ وَأَلْقَىٰ فِى ٱلْأَرْضِ رَوَٰسِىَ أَن تَمِيدَ بِكُمْ وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَآبَّةٍۚ وَأَنزَلْنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَأَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ
He created the heavens without pillars that you see and has cast into the earth firmly set mountains, lest it should shift with you, and dispersed therein from every creature. And We sent down rain from the sky and made grow therein [plants] of every noble kind.
তার বলে যে এটা দিয়ে আকাশকে শক্ত বুঝিয়েছে।আসলে এখানে বুঝতে হবে তখনকার সময় মানুষের আকাশ নিয়ে কি ধারনা ছিলো।তখন কার সময়ে মানুষরা ভাবতো আকাশ শক্ত আর সেটার আছে স্তম্ভ এমন কি কুরআনের আগে আসা বাইবেলে বলে আকাশের স্তম্ভ আছে।সেই সময়ে মানুষ যে ভুল ভাবতো সেই ভুলি বাইবেল করেছে।বাইবেল বলে,,,
"তিনি[ঈশ্বর] দুনিয়াকে তার জায়গা থেকে নাড়া দেন, তার #থামগুলোকে কাঁপিয়ে তোলেন।”
[বাইবেল, ইয়োব(আইয়ুব/Job) ৯:৬ {কিতাবুল মোকাদ্দস, বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি অনুবাদ}]
“He shakes the earth from its place so that its #pillarstremble.”
[ Job 9:6; Holman Christian Standard Bible (HCSB) ]
"ভূগর্ভস্থ থামগুলি আকাশকে ধারণ করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঈশ্বর যখন তাদের তিরস্কার করেন তখন তারা ভয়ে চমকে যায় এবং কাঁপতে থাকে।"
[বাইবেল, ইয়োব(Job) ২৬:১১, বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি অনুবাদ]
আর পবিত্র কুরআন সেই সময়ের এবং বাইবেলের কথাকে কে ভুল প্রমাণ করলো এবং বলল,
Ar-Ra'd 13:2
ٱللَّهُ ٱلَّذِى رَفَعَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَاۖ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِۖ وَسَخَّرَ ٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَۖ كُلٌّ يَجْرِى لِأَجَلٍ مُّسَمًّىۚ يُدَبِّرُ ٱلْأَمْرَ يُفَصِّلُ ٱلْءَايَٰتِ لَعَلَّكُم بِلِقَآءِ رَبِّكُمْ تُوقِنُونَ
It is Allah who erected the heavens without pillars that you [can] see; then He established Himself above the Throne and made subject the sun and the moon, each running [its course] for a specified term. He arranges [each] matter; He details the signs that you may, of the meeting with your Lord, be certain.
উত্তরঃ ধরুন আপনার কাছে একটি ব্যাগ আছে। তো এখন আমি যদি বলি যে ব্যাগটি কথা বলতে পারে না,খেতেও পারে না। আমার কথা কি ভুল?
এখন আপনি যদি বলেন ব্যাগ কথা বলবে কিভাবে কারণ ব্যাগের তো জীবনই নেই। তাহলে আপনার এই প্রশ্ন দ্বারা কি আমার বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হয়? কখনোই না।
আসলে কথার বা লাইনের স্টাইলই এরকম কিন্তু এরমানে এই না যে আকাশকে শক্ত কোন পদার্থ বুঝানো হয়েছে ।
🚫২. আকাশে দরজা থাকা কি সম্ভব। ইসলাম এই
বিষয় কি বলে।
An-Naba' 78:19
وَفُتِحَتِ ٱلسَّمَآءُ فَكَانَتْ أَبْوَٰبًا
And the heaven is opened and will become gateways.
Al-Hijr 15:14
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ فَظَلُّوا۟ فِيهِ يَعْرُجُونَ
And [even] if We opened to them a gate from the heaven and they continued therein to ascend,
নাস্তিকরা এই আয়াত দুটিকে বৈজ্ঞানিক ভুল বলে প্রচার করে, তাদের মতে আকাশ শক্ত পদার্থ নয়, এবং তাতে ছিদ্র বা দরজা হওয়া সম্ভব নয়।
জবাবঃ
এখানে কেয়ামতের কথা বলা হয়েছে, আমরা জানি না সেসময় পরিস্থিতি কেমন হবে। আমাদের প্রচলিত ৪ মাত্রা ব্যাতীতও আরো মাত্রা রয়েছে। সেসময় বিভিন্ন মাত্রার সংঘর্ষে আমাদের প্রচলিত মাত্রায় ছিদ্র, দরজা বা Para dimensional Door সৃষ্টি হওয়া কি অস্বাভাবিক,
নাস্তিকরা বোধহয় জীবনেও Wormhole এর কথা শুনে নাই। আলবার্ট আইনস্টাইন ও নাথান রোজেন ১৯৩৫ সালে গবেষনা করে দেখেন যে স্থান-কালের অভ্যন্তরে এক প্রকার সেতু ও গহবরের অস্তিত্ত্ব রয়েছে। এই পথসমুহকেই বলা হয় আইনস্টাইন রোজেন সেতু বা ওয়ার্মহোল। তত্ত্বীয়ভাবে এটি এমন একটি সংক্ষিপ্ত গমনপথ, দরজা কিংবা ছিদ্র যা দ্বারা স্থান কালের ভেতর দিয়ে মহাবিশ্বের এক স্থান থেকে দীর্ঘ দূরত্বে অন্য স্থানে ভ্রমন সম্ভব করে। https://en.wikipedia.org/wiki/Wormhole
একিসাথে আকাশে ছিদ্র হবার আরো অনেক উপায় রয়েছে।
প্রথমে আকাশের সংজ্ঞাটা জেনে নিই, কারন অনেক অমুসলিম রয়েছে যারা কিনা আবার কোরআনকে ভুল প্রমাণের জন্য আকাশকেও অস্বীকার করে। আকাশ বলে নাকি কোনো কিছুর অস্তিত্বই নেই। আকাশ শব্দটাই নাকি বৈজ্ঞানিক ভুল। আসলে তারা ইসলামকে ভুল প্রমান করতে কতখানি অজ্ঞতার পরিচয় দিতে পারে এটাই তার প্রমান।
আকাশের সংজ্ঞা হিসেবে উইকিপিডিয়াতে আছে,
The sky (or celestial dome) is everything that lies above the surface of the Earth, including the atmosphere and outer space.
https://en.wikipedia.org/wiki/Sky
অর্থাৎ পৃথিবি ব্যাতীত সব কিছুই আকাশ। পৃথিবি পৃষ্ট হতে উপরে বায়ুমন্ডল ও তার বাইরের সব কিছুই আকাশ এর অন্তর্গত।
অর্থাৎ বায়ুমন্ডলও আকাশের অন্তর্গত, এবং এই বায়ুমন্ডোলের ওজনস্তরেও এমনকি ছিদ্র হতে পারে যাকে বলা বলা হয় Ozone Depletion
https://en.wikipedia.org/wiki/Ozone_depletion
hole in the ozone layer
এগুলো না জেনে কোরানকে অবৈজ্ঞানিক বলা তাদের অজ্ঞতা বৈই আর কিছুই নয়।
🚫৩.আকাশে কিভাবে ছিদ্র হতে পারে?
Qaf 50:6
أَفَلَمْ يَنظُرُوٓا۟ إِلَى ٱلسَّمَآءِ فَوْقَهُمْ كَيْفَ بَنَيْنَٰهَا وَزَيَّنَّٰهَا وَمَا لَهَا مِن فُرُوجٍ
Have they not looked at the heaven above them – how We structured it and adorned it and [how] it has no rifts?
An-Naba' 78:19
وَفُتِحَتِ ٱلسَّمَآءُ فَكَانَتْ أَبْوَٰبًا
And the heaven is opened and will become gateways.
Al-Mursalat 77:9
وَإِذَا ٱلسَّمَآءُ فُرِجَتْ
And when the heaven is opened
নাস্তিকরা এই আয়াত দুটিকে বৈজ্ঞানিক ভুল বলে প্রচার করে, তাদের মতে আকাশ শক্ত পদার্থ নয়, এবং তাতে ছিদ্র বা দরজা হওয়া সম্ভব নয়।
জবাবঃ
এখানে আল্লাহ এমন শব্দ ব্যাবহার করেছেন যার অর্থ ত্রুটি/ফাটল/ছিদ্র/খুঁত কারণ আয়াতে আরবী ( فُرُوجٍ ) শব্দটি ব্যাবহার হয়েছে।তাই এখানেও খুঁত/ত্রুটি যুক্তি-যুক্ত।
বলতে গেলে এখানেই নাস্তিকদের চিন্তা ও জ্ঞানের দৈন্যতা। এই দুটো আয়াতে কেয়ামতের সময়ের একটা কথা বলা হয়েছে। এখানে কেয়ামতের কথা বলা হয়েছে, আমরা জানি না সেসময় পরিস্থিতি কেমন হবে। আমাদের প্রচলিত ৪ মাত্রা ব্যাতীতও আরো মাত্রা রয়েছে। সেসময় বিভিন্ন মাত্রার সংঘর্ষে আমাদের প্রচলিত মাত্রায় ছিদ্র, দরজা বা Para dimensional Door সৃষ্টি হওয়া কি অস্বাভাবিক, যেমনটা এভেঞ্জার্স মুভিতে দেখানো হয়েছে।
একিসাথে নাস্তিকরা বোধহয় জীবনেও Wormhole এর কথা শুনে নাই। আলবার্ট আইনস্টাইন ও নাথান রোজেন ১৯৩৫ সালে গবেষনা করে দেখেন যে স্থান-কালের অভ্যন্তরে এক প্রকার সেতু ও গহবরের অস্তিত্ত্ব রয়েছে। এই পথসমুহকেই বলা হয় আইনস্টাইন রোজেন সেতু বা ওয়ার্মহোল। তত্ত্বীয়ভাবে এটি এমন একটি সংক্ষিপ্ত গমনপথ, দরজা কিংবা ছিদ্র যা দ্বারা স্থান কালের ভেতর দিয়ে মহাবিশ্বের এক স্থান থেকে দীর্ঘ দূরত্বে অন্য স্থানে ভ্রমন সম্ভব করে। https://en.wikipedia.org/wiki/Wormhole
তো কেয়ামতের সময় আমাদের মহাশূন্যে ওয়ার্মহোল সৃষ্টি হওয়া কি অযৌক্তিক নাকি মুর্খ নাস্তিকদের খাতায় অবৈজ্ঞানিক ?
নাস্তিকেরা আরো একটি আয়াত নিয়ে প্রশ্ন করে,
তারা কি তাদের উপরস্থিত তাদের আকাশের পানে দৃষ্টিপাত কর না আমি কিভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি? তাতে কোন ছিদ্রও নেই।"(৫০:৬)
জবাবঃ
নাস্তিকদের মতে এই আয়াতে আছে আকাশে কোনো ছিদ্র নেই, তারমানে নাকি কোরানে বলা হচ্ছে আকাশ শক্ত পদার্থ।
মূলত নাস্তিকদের অনেকগুলা হাস্যকর অভিযোগের মধ্যে এটা একটা। যেখানে বলা আছে ছিদ্র নেই, সেখানে নাকি বুঝানো হয়েছে আকাশ শক্ত পদার্থ। আমি তো সমুদ্রের দিকেও তাকিয়ে কাউকে বলতে পারি, এতে কোণ ছিদ্র নেই ? এরমানে কি আমি এটা বুঝাচ্ছি সমুদ্র ধাতব কিছু ? হাস্যকর
🚫৪. আকাশ কি সত্যিই পৃথিবীর উপর ছাঁদ?
Al-Baqarah 2:22
ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ ٱلْأَرْضَ فِرَٰشًا وَٱلسَّمَآءَ بِنَآءً وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَأَخْرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلثَّمَرَٰتِ رِزْقًا لَّكُمْۖ فَلَا تَجْعَلُوا۟ لِلَّهِ أَندَادًا وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
[He] who made for you the earth a bed [spread out] and the sky a ceiling and sent down from the sky, rain and brought forth thereby fruits as provision for you. So do not attribute to Allah equals while you know [that there is nothing similar to Him].
Al-Anbiya 21:32
وَجَعَلْنَا ٱلسَّمَآءَ سَقْفًا مَّحْفُوظًاۖ وَهُمْ عَنْ ءَايَٰتِهَا مُعْرِضُونَ
And We made the sky a protected ceiling, but they, from its signs, are turning away.
আকাশ হল এমন একটি ছাঁদ যা কঠিন পদার্থের সুরক্ষিত ছাঁদ আর এই ছাঁদ হতেই বৃষ্টি বর্ষণ হয় - এটি তো বৈজ্ঞানিক ভুল?
এখানে কোথাও বলা নেই যে আকাশ পৃথিবীর উপর কঠিন ছাঁদ যা থেকে বৃষ্টি হয়। এখানে জাস্ট উপমা দেয়া হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন "আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি" আর এই ছাদ দিয়ে কখনো কঠিন পদার্থ বুঝায় না।কুরআনের কোথাও বলা নেই "আমি আকাশকে ঘড়-বাড়ীর ছাদের মতো করেছি।
আমরা অনেক সময় বলি আমাদের পরিবারের আমার পিতা হলেন আমাদের ছাঁদ স্বরূপ । এরমানে কি আপনার বাবার মাথা ইট বালু সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা ছাঁদের মত ? উত্তর হল না । একজন বাবা যেমন তার পরিবারকে রক্ষা করে সব দিক থেকে ছাঁদের মত তাই বাবাকে ছাঁদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে এরমানে এই না যে বাবার মাথা কঠিন পদার্থের ছাঁদ !
আকাশের ছাদ হলো সুরক্ষার ছাদ।কিভাবে আকাশ ছাঁদরুপে আমদের সুরক্ষা দেয় বিজ্ঞান আমাদের বলে দেয়। পৃথিবীর আকাশের বায়ু মন্ডল মহাজাগতিক অনেক ক্ষতিকর বিষয় যেমন আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মিসহ আরও অন্যান্যঅনেক ক্ষতিকর পদার্থকে পৃথিবীতে আসতেবাঁধা প্রদান করে। বায়ুমন্ডল একটি গ্যাসের স্তর যার 78% নাইট্রোজেন, 21% অক্সিজেন, 0.9% আর্গন, 0.03% কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অবশিষ্টাংশ বিভিন্ন ধরনের গ্যাস।পৃথিবীর আকাশের বায়ুমন্ডলের কারনেপ্রায় সকল উল্কাপিন্ড পৃথিবীতে পৌছানোর আগেই তা বায়ুমন্ডলের সংস্পর্শে এসে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তাছাড়া সূর্য থেকে বেরিয়ে আসা বিদ্যুৎ- চুম্বকীয় বিকিরণ, তেজস্ক্রিয় রশ্মি, অতি বেগুণী রশ্মি যা ঘন্টায় 900000 মাইল বেগে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করে। যদি সেই মহাজাগতিক রশ্মি, আয়ন এবং ইলেকট্রন কণা যদি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে ভূপৃষ্ঠে পৌছতে পারে তবে উদ্ভিদজদৎ, প্রাণীজগৎ এর ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হতো। কিন্তু বায়ুমণ্ডলীয় স্তরগুলো সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর রশ্মি ও অণু কণাগুলোকে বাধা প্রদান করে।
আকাশ নিয়ে উইকিপিডিয়া তে বলা আছে,- 'The sky (or celestial dome) is everything that lies above the surface of the Earth, including the atmosphere and outer space', অর্থাৎ, পৃথিবীর ভূ-পৃষ্টের উপরে যা কিছু আছে, তার সবই আকাশের অন্তর্গত। এর মধ্যে বায়ুমন্ডল এবং তার বাইরের সবকিছুও আকাশের মধ্যে পড়ে'।
আকাশ নিয়ে ইংরেজি অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে বলা আছে,- 'The region of the atmosphere and outer space seen from the earth', অর্থাৎ, পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমন্ডলের এবং তার বাইরে যা কিছু দেখা যায়, সেটাই আকাশ।
বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিজ্ঞানিরা পৃথিবীর উপরিভাগে যে বায়ুমন্ডল আছে, তাতে কিছু স্তরের সন্ধান পেয়েছেন।আমাদের পৃথিবীর বায়ুমন্ডল এসব পুরু স্তর দ্বারা গঠিত।এই স্তরগুলো হচ্ছে- ১/ ট্রপোস্ফিয়ার ২/ স্ট্রাটোস্ফিয়ার ৩/ মেসোস্ফিয়ার ৪/ থার্মোস্ফিয়ার ৫/ এক্সোস্ফিয়ার। এই প্রত্যেকটি স্তরের আলাদা আলাদা কাজ রয়েছে। বিজ্ঞানি Sir Venn Allen প্রমান করে দেখিয়েছেন, আমাদের পৃথিবীর ভূ-পৃষ্টের চারদিকে একটি শক্তিশালী Magnetic Field আছে। এই ম্যাগনেটিক ফিল্ড আমাদের পৃথিবীপৃষ্ঠের চারদিকে একটি বেল্টের মতো বলয় সৃষ্টি করে রেখেছে। বিজ্ঞানি স্যার Venn Allen এর নামে এই জিনিসটার নাম রাখা হয় Venn Allen Belt... এই বেল্ট চারপাশে ঘিরে রেখেছে আমাদের বায়ুমন্ডলকে। আমাদের বায়ুমন্ডলের দ্বিতীয় স্তরটির নাম হচ্ছে 'ষ্ট্রাটোস্ফিয়ার।' এই স্তরের মধ্যে আছে এক জাদুকরি উপ-স্তর। এই উপ-স্তরের নাম হলো 'ওজোন স্তর।' এই ওজোন স্তরের কাজের কথায় পরে আসছি। আগে একটু সূর্যের কথা বলি। সূর্যে প্রতি সেকেন্ডে যে বিস্ফোরণগুলো হয়, তা আমাদের চিন্তা-কল্পনারও বাইরে। এই বিস্ফোরণগুলোর ক্ষুদ্র একটি বিস্ফোরণের তেজস্ক্রিয়তা এমন যে, তা জাপানের হিরোশিমায় যে এ্যাটমিক বোমা ফেলা হয়েছিলো, সেরকম দশ হাজার বিলিয়ন এ্যাটমিক বোমার সমান। চিন্তা করার মত বিষয় যে সেই বিস্ফোরণগুলোর একটু আঁচ যদি পৃথিবীতে লাগে, পৃথিবীর কি অবস্থা হতে পারে? এখানেই শেষ নয়। মহাকাশে প্রতি সেকেন্ডে নিক্ষিপ্ত হয় মারাত্মক তেজস্ক্রিয় উল্কাপিন্ড। এগুলোর একটি আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে পৃথিবী।
মূলত এজন্যই আল্লাহ আকাশকে ছাঁদ বলেছেন।
🚫৫. ৭ আকাশ কি বৈজ্ঞানিক?
At-Talaq 65:12
ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ سَبْعَ سَمَٰوَٰتٍ وَمِنَ ٱلْأَرْضِ مِثْلَهُنَّ يَتَنَزَّلُ ٱلْأَمْرُ بَيْنَهُنَّ لِتَعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ وَأَنَّ ٱللَّهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَىْءٍ عِلْمًۢا
It is Allah who has created seven heavens and of the earth, the like of them. [His] command descends among them so you may know that Allah is over all things competent and that Allah has encompassed all things in knowledge.
Nuh 71:15
أَلَمْ تَرَوْا۟ كَيْفَ خَلَقَ ٱللَّهُ سَبْعَ سَمَٰوَٰتٍ طِبَاقًا
Do you not consider how Allah has created seven heavens in layers
Fussilat 41:12
فَقَضَىٰهُنَّ سَبْعَ سَمَٰوَاتٍ فِى يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِى كُلِّ سَمَآءٍ أَمْرَهَاۚ وَزَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَٰبِيحَ وَحِفْظًاۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْعَلِيمِ
And He completed them as seven heavens within two days and inspired [i.e., made known] in each heaven its command. And We adorned the nearest heaven with lamps [i.e., stars, for beauty] and as protection. That is the determination of the Exalted in Might, the Knowing.
Al-Baqarah 2:19
أَوْ كَصَيِّبٍ مِّنَ ٱلسَّمَآءِ فِيهِ ظُلُمَٰتٌ وَرَعْدٌ وَبَرْقٌ يَجْعَلُونَ أَصَٰبِعَهُمْ فِىٓ ءَاذَانِهِم مِّنَ ٱلصَّوَٰعِقِ حَذَرَ ٱلْمَوْتِۚ وَٱللَّهُ مُحِيطٌۢ بِٱلْكَٰفِرِينَ
Or [it is] like a rainstorm from the sky within which is darkness, thunder and lightning. They put their fingers in their ears against the thunderclaps in dread of death. But Allah is encompassing of the disbelievers.
মহাবিশ্ব ট্রিলিয়ন সংখ্যক ছায়াপথ আর সাথে বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্র দিয়ে গঠিত - আচ্ছা এর দ্বারা কি প্রমান হয়েছে যে ৭ আসমান নেই ? উত্তর হচ্ছে না ।
৭ আকাশ মোটেও কোনো বৈজ্ঞানিক ভুল নয়, আকাশের সংজ্ঞা আমরা আগেই পেয়েছি, পৃথিবী ব্যাতীত সব কিছুই আকাশ। অর্থাৎ পুরো আকাশ বলতে বুঝায় পৃথিবী ব্যাতীত পুরো মহাবিশ্বকে। আর কোয়ান্টাম সাইন্স অনুসারে আমাদের এরকম মহাবিশ্বই একমাত্র নয়, বরং রয়েছে একাধিক। এখানে চলে আসে মাল্টিভার্স থিওরী, যা বলে আমাদের দৃশ্যমান মহাবিশ্ব একটি নয়, অসংখ্য। আমাদের মহাবিশ্ব যদি কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মধ্য দিয়ে স্থান-কালের শূন্যতার ভিতর দিয়ে আবির্ভূত হয়ে থাকে, তবে এই পুরো প্রক্রিয়াটি কিন্তু একাধিকবার ঘটতে পারে, এবং হয়ত বাস্তবে ঘটেছেও। ধারণা করা হয় যে, ইনফ্লেশনের মাধ্যমে সম্প্রসারিত মহাজাগতিক বুদ্বুদ থেকে আমাদের মহাবিশ্বের মতই অসংখ্য মহাবিশ্ব তৈরী হয়েছে, যেগুলো একটা অপরটা থেকে সংস্পর্শবিহীন অবস্থায় দূরে সরে গেছে। এ ধরনের অসংখ্য মহাবিশ্বের একটিতেই হয়ত আমরা অবস্থান করছি। আর এরকম অগনিত মহাবিশ্ব বা আকাশ রয়েছে আমাদের দৃশ্যমান আকাশ বা মহাবিশ্বের বাইরে।
তবে এখানে আবার নাস্তিকরা প্রশ্ন করবে যে, মাল্টিভার্স তত্ব অনুসারে মহাবিশ্ব ৭ টি নয়, বরং অগনিত। কিন্তু কোরান তো বলল মাত্র ৭ টির কথা ?
এখানে জবাব হচ্ছে, আরবীতে ৭ শব্দটির একটি বিশেষ অর্থ রয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে আরবীতে ৭ অগনিত সংখ্যাকে নির্দেশ করে।
যেমন (Quran 65:12 ) এ Dr. Kamal Omar অনুবাদ করেছেন,
65:12
Allah is That Who created seven (or many) heavens and of the earth the like thereof (i.e., seven or many).
Dr. Mohammad Tahir-ul-Qadri Quran 71:15 এ অনুবাদ করেছেন,
Have you not seen how Allah has created seven (or many) heavenly spheres corresponding to one another (layer upon layer)?
অর্থাৎ তারা উভয়ই ৭ কে শুধু সেভেন নয়, বরং Many ও অনুবাদ করেছেন।
একিসাথে ৭ আকাশের জবাব আরো একভাবে দেয়া যায় তা হচ্ছে কোরানে এখানে যে শব্দটি এসেছে তা হচ্ছে ‘সামাওয়াত’ ‘সামাওয়াতিন’ ইত্যাদি, প্রচলিত সকল অনুবাদকই যার অনুবাদ Sky নয় বরং Heaven করেছেন।
http://corpus.quran.com/translation.jsp?chapter=67&verse=3
তাই আরেকভাবে বলা যায়, এখানে ৭ স্বর্গের কথা বলা হয়েছে, আমাদের আকাশের কথা নয়। আর স্বর্গ নরক যেহেতু আপাতদৃষ্টিতে দৃশ্যমান নয় তাই এটী ভুল বা শুদ্ধ প্রমান অপ্রমানের কোণ উপায়ও নেই।
দৃশ্যমান মহাবিশ্ব ও এর বাইরের অংশ সকল কিছুকে বিবেচনায় এনে তুর্কী মহাকাশবিজ্ঞানী ড. হালুক নুর বাকি(Haluk Nur Baki) সমগ্র মহাবিশ্বকে ৭টি স্তর বা অংশে বিভক্ত করেছেন। এই স্তরগুলো হচ্ছেঃ
১. মহাশূন্যের যে ক্ষেত্র সৌরজগত দ্বারা গঠিত তা প্রথম আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
২. সম্প্রতি ‘মিল্কিওয়ে’ বা আকাশগঙ্গার চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। আমাদের ছায়াপথের এই বিস্তৃত ক্ষেত্রটি দ্বিতীয় আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৩. ছায়াপথসমূহের ‘Local Cluster’ মহাকাশীয় ক্ষেত্র তৃতীয় আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৪. ছায়াপথসমূহের সমন্বয়ে গঠিত মহাবিশ্বের কেন্দ্রীয় চৌম্বক ক্ষেত্র চতুর্থ আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৫. অতি দূর থেকে আগত আলোকতরঙ্গের উৎসসমূহের প্রতিনিধিত্বকারী মহাজাগতিক বলয় পঞ্চম আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৬. মহাবিশ্বের প্রসারমান ক্ষেত্র ষষ্ঠ আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৭. মহাবিশ্বের প্রান্তহীন অসীমত্বের নির্দেশক সর্ববহিরস্থ ক্ষেত্র সপ্তম আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
আসমানের এই স্তরসমূহ অকল্পনীয় স্থান জুড়ে আছে। প্রথম আসমান স্তরের পুরুত্ব আনুমানিক ৬.৫ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। দ্বিতীয় স্তর তথা আমাদের ছায়াপথের ব্যাস হল ১৩০ হাজার আলোকবর্ষ। তৃতীয় স্তরের বিস্তার ২ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। চতুর্থ স্তরের ব্যাস ১০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। পঞ্চম স্তরটি ১ বিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে। ষষ্ঠ স্তরটি অবস্থিত ২০ বিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে। এ কথা বলা বাহুল্য যে, সপ্তম স্তরটি বিস্তৃত হয়ে আছে অসীম দূরত্ব পর্যন্ত। [ http://www.ghanaweb.com/GhanaHomePage/religion/Qur-anic-Commentary-Analysis-through-the-Lens-of-Modern-Science-4-315276
ধরুন , একটা আলমারীর ৭টা ড্রয়ার আছে। প্রত্যেকটা ড্রয়ারে ২০টা করে কলম আছে। অর্থাৎ আলমারীতে মোট কলম আছে ১৪০টা।কেউ বলা শুরু করলঃ এই আলমারীতে ১৪০টা কলম আছে; কাজেই এতে ৭টা ড্রয়ার থাকতে পারে না! এই ব্যক্তির কথাকে কি কোন যুক্তিসম্পন্ন মানুষ মেনে নিতে পারবে?
পাল্টা অভিযোগ ; এটা হবে বায়ুমন্ডল। বায়ুমন্ডল কি সাতটি ?
আরবী "سَمَ" থাকলে হতো বায়ুমন্ডল কিন্তু কুরআনে (اَسَّماَ) ব্যাবহার হয়েছে।যা দিয়ে সাত আসমান পর্যন্ত বুঝায়।যেমন পবিত্র কুরআন বলে,
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
বাংলা অনুবাদঃ আমি সর্বনিম্ন আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুসজ্জত করেছি; সেগুলোকে শয়তানদের জন্যে ক্ষেপণাস্ত্রবৎ করেছি এবং প্রস্তুত করে রেখেছি তাদের জন্যে জলন্ত অগ্নির শাস্তি।
(সূরাঃ আল মুলক, আয়াতঃ ৫)
এখানে "আসসামা" বলা তাই এখানেও বায়ুমন্ডল ধরা যাবে না।
বিজ্ঞান মহাবিশ্বকে সম্পূর্ণ বুঝে উঠতে পারবে না এই কথার ভিত্তিতে তথা মানুষের সব রহস্য ভেদ করতে পারবে না তা এখন বিজ্ঞান স্বীকার করছে । "কোয়ান্টাম মেকানিক্স" পৃষ্ঠা ১০ -এ স্যার জাফর ইকবাল লিখেছেন "যারা বিজ্ঞান চর্চা করে তারা ধরেই নিয়েছে আমরা যখন বিজ্ঞান দিয়ে পুরো প্রকৃতিটাকে বুঝে ফেলব । তখন আমরা সব সময় সবকিছু সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারব। যদি কখনো দেখি কিছু ব্যাখ্যা করতে পারছি না তখন বুঝতে হবে এর পিছনের বিজ্ঞানটা তখনো জানা হয়নি । জানা হলে তখন ব্যাখ্যা করা যাবে । এক কথায় বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা বা ভবিষ্যবানী সব সময়ি নিখুত এবং সুনিশ্চিত - কোয়ান্টাম মেকানিক্স বিজ্ঞানের এই ধারনাকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা সবিস্ময়য়ে আবিস্কার করেছেন যে প্রকৃতি আসলে কখনোই সবকিছু জানতে দেবে না । সে তার ভিতরের কিছু কিছু জিনিস মানুষের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে । মানুষ কখনোই সেটি জানতে পারবে না । সবচেয়ে চমৎকার ব্যাপার হচ্ছে এটি কিন্তু বিজ্ঞানের অক্ষমতা বা অসম্পূর্ণতা নয় । এটাই হচ্ছে বিজ্ঞান । বিজ্ঞানীরা একটি পর্যায়ে গিয়ে কখনোই আর জোরগলায় বলবে না "হবে" তারা মাথা নেড়ে বলবেন "হতে পারে"।
🚫৬. আকাশ টুকরো টুকরো হয়ে পড়বে।
Saba' 34:9
أَفَلَمْ يَرَوْا۟ إِلَىٰ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِۚ إِن نَّشَأْ نَخْسِفْ بِهِمُ ٱلْأَرْضَ أَوْ نُسْقِطْ عَلَيْهِمْ كِسَفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةً لِّكُلِّ عَبْدٍ مُّنِيبٍ
Then, do they not look at what is before them and what is behind them of the heaven and earth? If We should will, We could cause the earth to swallow them or [could] let fall upon them fragments from the sky. Indeed in that is a sign for every servant turning back [to Allah].
(৩৪:৯) আয়াতটি অনুসারে আকাশের কোণ অংশ অর্থাৎ গ্রহানু, উল্কা বা মহাবৈশ্বিক পার্টিকেল পৃথিবীর উপর আচড়ে পড়া খুবই যুক্তিযুক্ত। কোরানও সেটাই বলেছে।
একিসাথে আমরা যদি সহী ইনটারন্যাশনাল এর অনুবাদ দেখি, তো দেখতে পাব, কথাটি আরো স্পষ্ট, এখানে বলা আছে,
let fall upon them fragments from the sky
https://quran.com/34/9
অর্থাৎ আকাশের টুকরো নয় বরং আকাশ থেকে টুকরো ফেলা হবে , যেটা স্পষ্টভাবে গ্রহানু বা Asteroid কে নির্দেশ করে।
🚫৭. আসমানকে গুটিয়ে নেয়া কি আদৌও সম্ভব?
Az-Zumar 39:67
وَمَا قَدَرُوا۟ ٱللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِۦ وَٱلْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُۥ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ وَٱلسَّمَٰوَٰتُ مَطْوِيَّٰتٌۢ بِيَمِينِهِۦۚ سُبْحَٰنَهُۥ وَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ
They have not appraised Allah with true appraisal, while the earth entirely will be [within] His grip on the Day of Resurrection, and the heavens will be folded in His right hand. Exalted is He and high above what they associate with Him.
Al-Anbiya 21:104
يَوْمَ نَطْوِى ٱلسَّمَآءَ كَطَىِّ ٱلسِّجِلِّ لِلْكُتُبِۚ كَمَا بَدَأْنَآ أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيدُهُۥۚ وَعْدًا عَلَيْنَآۚ إِنَّا كُنَّا فَٰعِلِينَ
The Day when We will fold the heaven like the folding of a [written] sheet for the records. As We began the first creation, We will repeat it. [That is] a promise binding upon Us. Indeed, We will do it.
নাসার অফিশিয়াল সাইট থেকে। সেখানে বলা আছে,
the geometry of the universe is flat like a sheet of paper
সমগ্র ইউনিভার্স এর ক্ষেত্রমিতি হচ্ছে অনেকটা সমতল কাগজের শিট এর মত।
[ https://map.gsfc.nasa.gov/universe/uni_shape.html ]
এখান থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে আমাদের ইউনিভার্স হচ্ছে সমতল। এর কারণ হচ্ছে এই ইউনিভার্স এর ঘনত্ব এখনো Equality তে আছে [ https://map.gsfc.nasa.gov/universe/uni_shape.html ]
তাহলে সেটা কি গুটিয়ে নেওয়া সম্ভব ?
এর উত্তরও নাসার ওয়েবসাইট ই দিচ্ছে সেখানে বলা হচ্ছে
The density of the universe also determines its geometry. If the density of the universe exceeds the critical density, then the geometry of space is closed and positively curved like the surface of a sphere.
অর্থঃ ইউনভার্স এর ঘনত্ব এর ক্ষেত্রমিতি নির্ধারন করতে সক্ষম। যদি ইউনিভার্স এর ঘনত্ব চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে ফেলে তাহলে এই ইউনিভার্স এর ক্ষেত্রমিতি Closed এবং সুনিশ্চিতভাবে বাকা হয়ে যাবে বা গুটিয়ে যাবে গোলকের পৃশঠের মত।
আর আল্লাহই ভালো জানেন।
🚫৮. আকাশ খন্ড খন্ড হয়ে পৃথিবীতে পড়বে।
At-Tur 52:44
وَإِن يَرَوْا۟ كِسْفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ سَاقِطًا يَقُولُوا۟ سَحَابٌ مَّرْكُومٌ
And if they were to see a fragment from the sky falling, they would say, "[It is merely] clouds heaped up."
কুরআনের মতে, মানুষ যেটাকে মেঘ বলে ভুল করে সেটা আসলে মেঘ নয়! আল্লাহর দাবী অনুযায়ী শক্ত কঠিন পদার্থের তৈরী আকাশের কোন এক খন্ড! অর্থাৎ মেঘ তৈরী হয় আকাশের কোনো খন্ড থেকে। কিন্তু বিজ্ঞান বলে, মেঘ সৃষ্টি হয় পানি বাষ্প হয়ে........ কত অবৈজ্ঞানিক কুরআন?
উত্তরঃ পাঠক আপনারা আয়াতটি আবার পড়ুন তো , আল্লাহ কি একবারও দাবী করেছেন যে আকাশ শক্ত পদার্থ ? উত্তর হল না । আবার মেঘ তৈরি হয় আকাশের কোন এক খণ্ড থেকে এই কথা কি কুরআনের আয়াতে বলা আছে ? উত্তর হচ্ছে না । তাহলে কুরআনের আয়াত যা বলে নি সেখানে নিজের মিথ্যাচার প্রবেশ করিয়ে দিয়ে আবার নিজেই সেটির উপর ভিত্তি করে কোন একটি তথ্যকে ভুল প্রমান করা যে কতটুকু হাস্যকর সেটি আপনারাই বিচার করুন । তাই আমরা পরিস্কার ভাবে দেখতে পারছি যে প্রশ্নকর্তা সরাসরি ডাহা মিথ্যাচার করেছেন কুরআনের আয়াত নিয়ে এতে কোন সন্দেহ নেই ।
ধরুন আপনি আর আমি রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছি একটি মাঠের কিনারা দিয়ে । আপনি দেখতে পেলেন এক দল যুবক গাজা খাচ্ছে । আপনি তাদেরকে বাধা দিলেন এবং বুঝালেন যে দেখ ছেলেরা এসব নেশাদ্রব্য নাস্তিক ধর্মে জায়েজ থাকলেও , এটি খাওয়া ইসলামে নিষেধ , খারাপ কাজ, যা খেলে তমাদের গুনাহ হবে এবং তওবা না করলে মৃত্যুর পরে আল্লাহর আজাব আসবে । আপনি তাদেরকে এত ভাল করে বুঝানোর পরেও তারা আপনার কথায় পাত্তা দিল না । আমি আপনাকে বললাম যে ভাই আপনি তাদেরকে যাই উপদেশ দেন না কেন, আপনার উপদেশের খাজানার এক খণ্ড শুনেও গাজা খাওয়াকে একপ্রকার ফ্যাশনই মনে করবে তারা ।
আমার উদাহরণ বুঝে থাকলে বলুন আমি যে বললাম "উপদেশের এক খণ্ড শুনেও তারা গাজা সেবন করাকে এক প্রকার ফ্যাশন ভাববে" এরমানে কি আমি বিশ্বাস করি যে গাজা খাওয়া ফ্যাশন ? অথবা এরমানে কি আমি দাবী করেছি যে উপদেশ থেকে একখণ্ড পুষ্টিকর নাস্তিকিও গাজা তৈরি হয় ? উত্তর হচ্ছে না । ঠিক একইভাবে আল্লাহও কুরআনে সেই কথাটি বলছেন যে কাফেররা যদি আকাশের কোন খণ্ডকে পতিত হতে দেখে, তবে বলবে এটি তো পুঞ্জিভুত মেঘ
কাফেরদের ইসলাম বিদ্বেষীতা বুঝাতে গিয়েই আল্লাহ সূরা তূর, ৫২: ৪৪ এর কথা বলেছেনঃ বিস্তারিত জানতে দেখুন = তাফহীমুল কুরআন, সুরা তুর ৫২:৪৪ , ১২৮ পৃষ্ঠা দেখুন এবং ড মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত তাফসীরে ইবনে কাসীর ১৭/১২৮ পৃষ্ঠা দেখুন ।
৮ নং টি এমডি আলী ভাই থেকে নেয়া।
🚫৯. আকাশকে কি ধরে রাখা সম্ভব?আকাশ কিভাবে পৃথিবীর উপর পতিত হতে পারে?
Al-Haqqah 69:16
وَٱنشَقَّتِ ٱلسَّمَآءُ فَهِىَ يَوْمَئِذٍ وَاهِيَةٌ
And the heaven will split [open], for that Day it is infirm.
Al-Hajj 22:65
أَلَمْ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ سَخَّرَ لَكُم مَّا فِى ٱلْأَرْضِ وَٱلْفُلْكَ تَجْرِى فِى ٱلْبَحْرِ بِأَمْرِهِۦ وَيُمْسِكُ ٱلسَّمَآءَ أَن تَقَعَ عَلَى ٱلْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِۦٓۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِٱلنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَّحِيمٌ
Do you not see that Allah has subjected to you whatever is on the earth and the ships which run through the sea by His command? And He restrains the sky from falling upon the earth, unless by His permission. Indeed Allah, to the people, is Kind and Merciful.
Saba' 34:9
أَفَلَمْ يَرَوْا۟ إِلَىٰ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِۚ إِن نَّشَأْ نَخْسِفْ بِهِمُ ٱلْأَرْضَ أَوْ نُسْقِطْ عَلَيْهِمْ كِسَفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةً لِّكُلِّ عَبْدٍ مُّنِيبٍ
Then, do they not look at what is before them and what is behind them of the heaven and earth? If We should will, We could cause the earth to swallow them or [could] let fall upon them fragments from the sky. Indeed in that is a sign for every servant turning back [to Allah].
সাইন্স সম্পর্কে অজ্ঞ মুর্খরা এখানেও বৈজ্ঞানিক ভুল দেখবে, বলবে আকাশ তো শক্ত পদার্থ নয়, এবং তা মানুষের মাথায় ফেলাও সম্ভব নয়। তা স্থির থাকে না ইত্যাদি।
প্রথমত, কোরান (২২:৬৫) এ অনুবাদটি তারা ভুল প্রদান করে, এখানে হবে, “তিনি আকাশকে নিবৃত রাখেন, যাতে তা ভূপৃষ্টে পতিত না হয়।” সহী ইন্টারন্যাশনাল থেকে অনুবাদ চেক করুন https://quran.com/22/65
নিবৃত আর স্থির রাখা দুটির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
যাক গে, আমরা আগেই জেনেছি আকাশ বলতে কি বোঝা যায়, ভূপৃষ্ট ব্যাতীত সকল কিছুই অর্থাৎ গ্রহ, নক্ষত্র, বা স্পেস পার্টিকেল সব কিছুই আকাশের অন্তর্গত। আর আমরা জানি যে গ্রাভিটেশনাল ফোর্স দ্বারা এই সব কিছুই নিয়ন্ত্রিত। যদি তা না হত তবে যেকোন সময় গ্রহ উপগ্রহের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হত, যেকোন গ্রহ বা গ্রহানু আমাদের পৃথিবীর উপর এসে পড়তে পারত ও পৃথিবী ধংস হয়ে যেত। তাই কোরানে যথার্থই বলা হয়েছে, তিনি আকাশকে নিবৃত রাখেন যাতে তা আমাদের উপরে এসে না পড়ে।
একিসাথে কেয়ামতের সময় ন্যাচারাল অর্ডার ব্যাহত হবে। মহাবিশ্ব তখন সংকুচিত হবে, ধংস হবে।
এখানে মূল কনসেপ্ট বুঝতে হবে।প্রথমে দেখি কুরআনে কি বলা আছে,,,
⦁أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ وَيُمْسِكُ السَّمَاءَ أَنْ تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ
"তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, যমীনে যা কিছু আছে এবং নৌযানগুলো যা তাঁরই নির্দেশে সমুদ্রে বিচরণ করে সবই আল্লাহ তোমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন। আর তিনিই আসমানকে আটকিয়ে রেখেছেন, যাতে তাঁর অনুমতি ছাড়া তা যমীনের উপর পড়ে না যায়। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি বড়ই করুণাময়, পরম দয়ালু।"
প্রথমত এখানে আটিকে রেখেছেন এর আরবী শব্দটি দেওয়া হয়েছে ( يُمْسِكُ ) যার অর্থ - ধারণ রাখা , আনুগত্যে রাখা , পরিচালিত করা , স্থির , আটকিয়ে রাখা , আয়ত্তে রাখা ইত্যাদি ।
এটা তুমি দেখতে পারো [ Wikitionary - ( يُمْسِكُ ) ] থেকে।
এবার আসি মূল কথায়।মূলত আকাশ পতিত হয়।এটা শুধু কুরআন নয় নাসা ( Nasa ) এর মত ওয়েবসাইটেও বলা হয়েছে যে , The Sky is Falling (Nasa.com /The Sky is Falling)
🚫১০. আকাশে ফাটল থাকা কি বৈজ্ঞানিক?
Al-Mulk 67:3
ٱلَّذِى خَلَقَ سَبْعَ سَمَٰوَٰتٍ طِبَاقًاۖ مَّا تَرَىٰ فِى خَلْقِ ٱلرَّحْمَٰنِ مِن تَفَٰوُتٍۖ فَٱرْجِعِ ٱلْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِن فُطُورٍ
[And] who created seven heavens in layers. You do not see in the creation of the Most Merciful any inconsistency. So return [your] vision [to the sky]; do you see any breaks?
Al-Mursalat 77:9
وَإِذَا ٱلسَّمَآءُ فُرِجَتْ
And when the heaven is opened
Qaf 50:6
أَفَلَمْ يَنظُرُوٓا۟ إِلَى ٱلسَّمَآءِ فَوْقَهُمْ كَيْفَ بَنَيْنَٰهَا وَزَيَّنَّٰهَا وَمَا لَهَا مِن فُرُوجٍ
Have they not looked at the heaven above them – how We structured it and adorned it and [how] it has no rifts?
তাফসিরে আহসানুল বায়ান: অর্থাৎ, বিনা স্তম্ভে; যার সাহায্যে তা প্রতিষ্ঠিত আছে। অর্থাৎ, তারকারাজি দ্বারা তাকে সুশোভিত করা হয়েছে। অনুরূপ তাতে কোন অসামঞ্জস্য ও খুঁত নেই। যেমন, অন্যত্র বলেছেন, "তিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সপ্তাকাশ। দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোন খুঁত দেখতে পাবে না; আবার তাকিয়ে দেখ, কোন ত্রুটি দেখতে পাচ্ছ কি? অতঃপর তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরাও, সেই দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।"
এখান আসলে ফাটল দিয়ে কি বুঝিয়েছে তা জানতে হবে।এখানে ফাটল বা ( فُرُوجٍ ) এই শব্দটিকে তাফসিরে আহসানুল বায়ান সহ আরও অনেক স্কলার ত্রুটি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
একিসাথে আকাশে ছিদ্র হবার আরো অনেক উপায় রয়েছে।
প্রথমে আকাশের সংজ্ঞাটা জেনে নিই, কারন অনেক মুর্খ নাস্তিক আবার কোরানকে ভুল প্রমান করতে গিয়ে বলে বসে যে, আকাশ বলে কোণ কিছুর অস্তিত্বই নেই। আকাশ শব্দটাই নাকি বৈজ্ঞানিক ভুল। আসলে তারা ইসলামকে ভুল প্রমান করতে কতখানি অজ্ঞতার পরিচয় দিতে পারে এটাই তার প্রমান।
আকাশের সংজ্ঞা হিসেবে উইকিপিডিয়াতে আছে,
The sky (or celestial dome) is everything that lies above the surface of the Earth, including the atmosphere and outer space.
https://en.wikipedia.org/wiki/Sky
অর্থাৎ পৃথিবী ব্যাতীত সব কিছুই আকাশ। পৃথিবি পৃষ্ট হতে উপরে বায়ুমন্ডল ও তার বাইরের সব কিছুই আকাশ এর অন্তর্গত।
অর্থাৎ বায়ুমন্ডলও আকাশের অন্তর্গত, এবং এই বায়ুমন্ডোলের ওজনস্তরেও এমনকি ছিদ্র হতে পারে যাকে বলা বলা হয় Ozone Depletion
https://en.wikipedia.org/wiki/Ozone_depletion
hole in the ozone layer
এখন মুর্খ নাস্তিকরা কি বলবে ? আকাশে ছিদ্র অবৈজ্ঞানিক নাকি এগুলো না জেনে কোরানকে অবৈজ্ঞানিক বলা তাদের মুর্খতা?
যেমন ধরুন আমি যদি বলি পানিতে কোন ফাটল নেই এরমানে কি পানি শক্ত কিছু ? উত্তর হল না । কিন্তু আমি যে বললাম পানিতে ফাটল নেই আমার কথা কিন্তু বাস্তব সত্য কারন পানিতে আসলেই কোন ফাটল নেই, ছিদ্র নেই ।
অমুসলিমরা মূলত ঘুরিয়ে পেচিয়ে কোরআনের বিরুদ্ধে আকাশ নিয়ে এই অভিযোগগুলোই করে থাকে। অতএব পরিশেষে আমরা দেখতে পেলাম কোরআনে আকাশ নিয়ে কোনো অবৈজ্ঞানিক তথ্য তো নেই ই বরং যা রয়েছে তা অত্যান্ত বৈজ্ঞানিক এবং যুক্তিযুক্ত।
Author: Br. SK Shakib.