Are you sure?

বিবিধ »  ইসলাম বিদ্বেষীদের অপনোদন

আয়েশা رضي الله عنه এর বিয়ের বয়স নিয়ে অপপ্রচারের জবাব

আয়েশা رضي الله عنه এর বিয়ের বয়স নিয়ে ইসলাম বিদ্বেশীরা সুযোগ পেলেই সব-সময় অপপ্রচার করে। আয়েশা رضي الله عنه এর বিয়ে হয়েছিল ৬ বছর বয়সে। কিন্তু ৬ বছর বয়সেই তিনি সংসার জীবন শুরু করেননি। বরং ৬ বছর বয়সে বিবাহ হলেও মুহাম্মদ ﷺ এর সাথে যখন সংসার শুরু হয় তখন আয়েশা رضي الله عنه এর বয়স ছিল ৯ বছর। অর্থাৎ তাদের দুজনের দাম্পত্য জীবন যখন শুরু হয়; তখন আয়েশা رضي الله عنه এর বয়স ছিল নয় বছর। 

মরুভূমি অঞ্চলের মেয়েরা শীতপ্রধান অঞ্চলের মেয়েদের চেয়ে দ্রুত বয়ঃপ্রাপ্ত হয়। মরুভূমির মেয়েরা যেখানে ১০ বছর বয়সে বয়ঃপ্রাপ্তি লাভ করে সেখানে অনেক শীতপ্রধান অঞ্চলের মেয়েরা ১৩-১৫ বছর হয়ে গেলেও বয়ঃপ্রাপ্ত হয় না। ফ্রেঞ্চ ফিলোসফার Montesqueu তার ‘Spirit of Laws’ বইটিতে উল্লেখ করেছেন, উষ্ণ অঞ্চলে মেয়েরা ৮-৯-১০ বছর বয়সেই বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায়। বিশ বছর বয়সে তাদেরকে বিয়ের জন্য বৃদ্ধ ভাবা হয়। ‘Spirit of Laws’ বইটি আমেরিকার সংবিধান তৈরীতে ব্যবহৃত হয়েছে।

১৮৮০ সালের দিকে অধিকাংশ জায়গায় বিয়ের জন্য অনুমোদিত বয়স ছিলো ১০-১২ এর মধ্যে। আমরা যদি ইতিহাসে আরো পেছনে যেতে পারি তাহলে আরো কম বয়স লক্ষ্য করতে পারব। আবার যত সামনে এগুবো লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অনুমোদিত বয়সের সীমা ক্রমাগত বাড়ছে। এর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।

আজ থেকে ১৪০ বছর আগে মেয়েরা ১০ বছর বয়সে বিয়ের জন্য উপযুক্ত হলে তা মেনে নিতে যদি আমাদের আপত্তি না থাকে তাহলে ১৪০০ বছর আগে একজন নারীর নয় বছর বয়সে সংসার করা নিয়ে অভিযোগ তোলা কি নোংরা রাজনীতি নয়?

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের "সেই সময়” একটি জনপ্রিয় গবেষণাধর্মী উপন্যাস। এর কালপর্ব ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ অবধি বিস্তৃত। মধ্য ঊনবিংশ শতাব্দীর কলকাতা এই উপন্যাসের পটভূমি। সেই সময়ের সংস্কৃতি, বিবাহ ও বিধবাদের অবস্থা সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। সেখানে কতো বছর বয়সে মেয়েদের বিয়ে হতো খোজ নিয়ে দেখেন। এ রকম হাজারও প্রমাণ হিন্দু ভাইদের লেখনিতে আছে।

৮০ বছর বয়সী আপনার দাদী কিংবা নানীকে জিজ্ঞেস করুন তাদের কত বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিলো, সম্ভব হলে তাদের কাছ থেকে জেনে নিন তার দাদী এবং নানীর বিয়ে কত বছরে হয়েছিলো। তাহলেই আপনি সুন্দর ধারণা পেয়ে যাবেন।

আসুন, এবার একটু ইতিহাসে ফিরে যায় -

  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যখন বিবাহ করেন তখন তার স্ত্রীর বয়স ছিল ৮ বছর। 
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন বিবাহ করে তখন তার স্ত্রীর বয়স ছিল ১১ বছর। 
  • দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন বিবাহ করেন তখন তার স্ত্রীর বয়স ছিল ৬ বছর।
  • সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন বিবাহ করেন তখন তার স্ত্রীর বয়স ছিল ৭ বছর। 

এরকম আরও অনেক উল্লেখ করা সম্ভব। প্রাচীন ইতিহাসে ফিরে গেলে আপনি দেখতে পাবেন আগেকার যুগে এমন বয়সেই নারীদের বিবাহ হতো। 

আপনাকে বেশী দূরে যেতে হবে না, উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন শেখ ফজিলাতুন্নেসাকে বিয়ে করেন; তখন শেখ মুজিবুর রহমানের বয়স ছিল ১৮ বছর। অপদিকে শেখ ফজিলাতুন্নেসার বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। ইসলাম-বিরোধীরা এখন কী বলবে?  আপনি যদি একটু ইতিহাস নিয়ে লেখাপড়া করেন, তবে দেখতে পাবেন; আগেকার যুগে রীতি ছিল সন্তানদের ছোট থাকতেই কারও সাথে বিবাহ ঠিক করে রাখা। যেমন নিচের স্ক্রিনশটে দেখতে পাচ্ছেন যে, তাদের বিয়ে যখন ঠিক হয় তখন শেখ মুজিবুর রহমানের বয়স ছিল ১৩ বছর এবং শেখ ফজিলাতুন্নেসার বয়স ছিল মাত্র ৩ বছর। 

 

 

  • হিন্দুধর্মের শ্রীকৃষ্ণ

শ্রীকৃষ্ণ যখন রুকমিনিকে অপহরণ করে বিয়ে করে তখন আপনি কী জানেন রুকমিনির বয়স কত ছিল? বিবাহের সময় তখন রুকমিনির বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। প্রিয় পাঠক উগ্রবাদী হিন্দুরা যখন আপনাকে প্রশ্ন করবে, তখন একই প্রশ্ন আপনিও তাদেরকে করবেন শ্রীকৃষ্ণ রুকমিনির বিয়ের বয়স নিয়ে। 

এটা কিছুই না। হিন্দুধর্ম থেকে উল্লেখ করা শুরু করলে বিশাল একটি আর্টিকেল লিখা যাবে। শ্রীকৃষ্ণ ছাড়াও হিন্দুদের দেবতাদেরও রয়েছে এমন কাহিনী। কাজেই যেসব হিন্দুগণ আমাদের আয়েশা رضي الله عنه এর বিয়ের বয়স নিয়ে কটুক্তি করে, হাসাহাসি করে; তাদের নিজের ঘর! আই মিন তাদের নিজেদের ধর্মগ্রন্থ গুলো পাঠ করা উচিৎ। 

 

সমাপ্ত।