বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
খ্রিস্টান মিশনারিদের দলগুলো প্রায়ই মুসলিমদের বিরুদ্ধে ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করে সম্মানিত নবী হযরত ঈসা আঃ কে, বাইবেলের আলোকে ভুল ব্যাখ্যা করে তাঁর ঈশ্বরত্ব দাবি করেন এবং এটাও বলেন যে, "মুসলিমদের নবী মুহাম্মদ নাকি তাঁর ঈশ্বরত্ব হওয়া সম্পর্কে মিথ্যাচার করেছে।" (নাউযুবিল্লাহী মিনযালিক; আস্তাগফিরুল্লাহ)
ত্রিত্ববাদী খ্রিস্টানগণ সম্মানিত যীশু খ্রিস্টের ঈশ্বরত্ব দাবি করেন কিছু অস্পষ্ট ভার্স দিয়ে, যেখানে তাঁর ঈশ্বরত্বের পক্ষে সুস্পষ্ট কোন উদ্ধৃতি নেই বাইবেলের মধ্যে। তো কী সেই ভার্স? আসুন তা খন্ডন করে তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেই ইনশাআল্লাহু তা'আলা।
যোহন ১০:৩০
যীশু বলেছেন: আমি ও পিতা, আমরা এক" [1]
এইখানে মূল গ্রিকে (ἕν উচ্চারণ: hen) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ "এক/One"। আর এটা দেখিয়ে ত্রিত্ববাদী খ্রিস্টানগণ দাবি করেন যে, "যীশু নিজেকে ঈশ্বর দাবি করেছেন।"
▪︎ জবাব: যীশু ও ঈশ্বর এক; এ বাক্যও ঈশ্বরত্বের প্রমাণ নয়। অন্যের জন্যেও এ বাক্য ব্যবহৃত হয়েছে। প্রমাণ:
যোহন ১৭:১১
17. আমি আর জগতে নাই, কিন্তু ইহারা জগতে রহিয়াছে, এবং আমি তোমার নিকটে আসিতেছি। পবিত্র পিতঃ, তোমার নামে তাহাদিগকে রক্ষা কর যে নাম তুমি আমাকে দিয়াছ যেন তাহারা এক হয়, যেমন আমরা এক।" [2]
এইখানেও মূল গ্রিকে (ἕν উচ্চারণ: hen) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ "এক/One"। আর আপনি যদি উভয় আয়াতে ἕν শব্দের স্ট্রং নাম্বার দেখেন তাহলে দুটোরই সেম অর্থাৎ 1520 [e].
এছাড়া আমরা যদি বাইবেলের অন্যত্রে পড়ি যেখানে বলা হয়েছে:
যোহন ১০:২৯
29. আমার পিতা, যিনি তাহাদের আমাকে দিয়াছেন, তিনি সর্বাপেক্ষা মহান ; এবং কেহই পিতার হস্ত হইতে কিছুই কাড়িয়া লইতে পারে না।" [3]
অর্থাৎ যীশু থেকেও পিতা তথা ঈশ্বর মহান। তাহলে এখানে যীশু ও পিতার "এক"- হওয়া কথাটা দ্বারা কোন বিষয়কে বোঝানো হয়েছে? কিন্ত আর যাইহোক "আমি ও পিতা এক/I and my Father are one"-কথাটার দ্বারা যীশুর ঈশ্বরত্ব ইঙ্গিতকে কখনো বোঝানো হয় নাই। এছাড়া "আমি ও পিতা এক"- ঠিক এরুপ "এক হওয়ার" একই কথা যীশু তাঁর শিষ্যদের সম্পর্কেও/বিষয়েও বলেছেন। তিনি বলেন:-
যোহন ১৭:২১-২৩
21. পিতঃ, যেমন তুমি আমাতে ও আমি তোমাতে, তেমনি তাহারাও যেন আমাদের মধ্যে থাকে; যেন জগৎ বিশ্বাস করে যে, তুমি আমাকে প্রেরণ করিয়াছ।
22. আর তুমি আমাকে যে মহিমা দিয়াছ, তাহা আমি তাহাদিগকে দিয়াছি; যেন তাহারা এক হয়, যেমন আমরা এক;
23. আমি তাহাদের মধ্যে ও তুমি আমাতে, যেন তাহারা সিদ্ধ হইয়া এক হয়; যেন জগৎ জানিতে পায় যে, তুমি আমাকে প্রেরণ করিয়াছ, এবং আমাকে যেমন প্রেম করিয়াছ, তেমনি তাহাদিগকেও প্রেম করিয়াছ।" [4]
উপরোল্লিখিত (যোহন ১৭:২১-২৩) নং ভার্সসহ সব জায়গায়-ই গ্রিক (ἕν উচ্চারণ: hen) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ "এক/One". আর আপনি যদি এই তিন আয়াতে ἕν শব্দের স্ট্রং নাম্বার দেখেন তাহলে সবগুলোই সেম অর্থাৎ 1520 [e].
তাহলে কি প্রমাণিত হলো যে, যীশুকে যে ঈশ্বরত্ব প্রদান করেছিলেন পিতা ঈশ্বর, সে ঈশ্বরত্ব তিনি শিষ্যদেরকে প্রদান করলেন এবং পিতা ঈশ্বর, পুত্র ঈশ্বর ও শিষ্য ঈশ্বরগণ সকলে মিলে ১৫ জন ঈশ্বর!
তথ্যসূত্রঃ-
➤[01] যোহন ১০:৩০
https://bible.com/bible/1791/jhn.10.30.ROVU
"আমি ও পিতা, আমরা এক"- কথাটির প্রসঙ্গ পড়তে ক্লিক করুন:
https://bible.com/bible/1791/jhn.10.22-30.ROVU
➤[02] যোহন ১৭:১১
https://bible.com/bible/1791/jhn.17.11.ROVU
➤[03] যোহন ১০:২৯
https://bible.com/bible/1791/jhn.10.29.ROVU
➤[04] যোহন ১৭:২১-২৩; আমি ও পিতা এক"- ঠিক এরুপ "এক হওয়ার" একই কথা যীশু তাঁর শিষ্যদের সম্পর্কেও/বিষয়েও বলেছেন
https://bible.com/bible/1791/jhn.17.21-23.ROVU
গ্রিকসহ ইংরেজি অনুবাদ দেখতে চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করুন:
https://biblehub.com/text/john/17-21.htm