বাইবেলের Old Testament হলো ইহুদিদের তাওরাত বা তৌরাহ। খ্রিস্টানরা ইহুদিদের কাছ থেকে Old Testament কপি করেছে।
আসুন জানি ইহুদিরা কীভাবে আল্লাহ প্রদত্ত তাওরাত বিকৃত করেছিল ।
সুদ গ্রহণকে আল্লাহ কুরআনে খুবই কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। কিন্তু ইহুদিরা তাওরাতের সেই বাণীকে বিকৃত করে নিজেদের জন্য তা হালাল করে নেয়।
তাওরাত থেকে রেফারেন্স থাকুন :-
আল্লাহর তাওরাত বিকৃতি,
19. “তুমি যখন কোন ইস্রায়েলীয়কে কিছু ধার দাও, তখন সুদ ধার্য কোরো না| টাকা, খাবার বা অন্য যা কিছুই সুদ আদাযে সক্ষম তার উপরে তোমরা সুদ ধার্য করবে না|(দ্বিতীয় বিবরণ 23:19)
Thou shalt not lend upon usury to thy brother; usury of money, usury of victuals, usury of any thing that is lent upon usury . (Deuteronomy 23:19)
20. তোমরা কোন বিদেশীর কাছে সুদ নিতে পার, কিন্তু তোমরা কোন ইস্রায়েলীয়র কাছ থেকে সুদ নিও না| তোমরা এই বিধিগুলো মেনে চললে তোমাদের প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমরা যে দেশে বাস করতে যাচ্ছ সেখানে তোমরা যা কিছু করবে তাতেই আশীর্বাদ করবেন|(দ্বিতীয় বিবরণ 23:20)।
Unto a stranger thou mayest lend upon usury; but unto thy brother thou shalt not lend upon usury: that the Lord thy God may bless thee in all that thou settest thine hand to in the land whither thou goest to possess it. (Deuteronomy 23:20)
(দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:১৯) এ বলা আছে ইসরায়েলের মানুষদের থেকে সুদ দেয়া বা নেয়া যাবে না।
কিন্তু (দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:২০) এ বলা আছে ইসরায়েলের মানুষ ছাড়া যে কারো কাছ থেকে সুদ দেয়া বা নেয়া যাবে।
মূলত আল্লাহ তায়ালা সুদ সব ক্ষেত্রেই হারাম করেছিলেন। আল্লাহ তাওরাতে ইহুদিদের থেকে যে কারো কাছ থেকেই সুদ দিতে বা নিতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু ইহুদিরা সেই বাণী বিকৃতি করে তাওরাতে লিখে "ইসরায়েলের মানুষ ব্যতীত অন্য কোন বিদেশের মানুষের কাছ থেকে সুদ নেয়া যাবে" । যা সম্পূর্ণ আল্লাহর বাণী নিয়ে একটি ভয়ঙ্কর মিথ্যাচার।
সুদ নিয়ে তাদের এই বিকৃতির কথা আল্লাহ কুরআনে বর্ণনা করেছেন। রেফারেন্স সহ নিচ থেকে পড়ুন :-
فَبِظُلْمٍ مِنَ الَّذِينَ هَادُوا حَرَّمْنَا عَلَيْهِمْ طَيِّبَاتٍ أُحِلَّتْ لَهُمْ وَبِصَدِّهِمْ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ كَثِيرًا وَأَخْذِهِمُ الرِّبَا وَقَدْ نُهُوا عَنْهُ وَأَكْلِهِمْ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ ۚ وَأَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِينَ مِنْهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
সুতরাং ইয়াহুদীদের যুলুমের কারণে আমি তাদের উপর উত্তম খাবারগুলো হারাম করেছিলাম, যা তাদের জন্য হালাল করা হয়েছিল এবং আল্লাহর রাস্তা থেকে অনেককে তাদের বাধা প্রদানের কারণে। আর তাদের সুদ গ্রহণের কারণে, অথচ তা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল।’[সূরা নিসা আয়াত ১৬০-১৬১]
ইবনে কাসির রহ. বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তথা ইহুদিদের সুদ খেতে নিষেধ করেন, তারপরও তারা সুদ খাওয়া থেকে বিরত থাকেনি। এজন্য তারা নানা কৌশল গ্রহণ করল। বিষয়টিকে সন্দেহের বাতাবরণে ঢেকে ফেলল আর মানুষের সম্পদ খেতে লাগল অবৈধ পন্থায়। ইহুদিরা সুদ হারাম ঘোষণাকারী বক্তব্যকেই বিকৃত করল। তারা সে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দাঁড় করাল এভাবে, ইহুদিদের পরস্পরের মাঝে সুদ খাওয়া নিষেধ, তবে অন্য ধর্মের লোকদের সঙ্গে ইহুদিদের সুদী কারবার করতে কোনো বারণ নেই। রাব নামক এক ইহুদি যাজক বলে, যখন কোনো খৃস্টানের দরকার পড়বে দিরহামের, ইহুদির উচিৎ হবে সর্বদিক থেকে এ সুযোগে তার ওপর প্রভাব বিস্তার করা। তাকে আটকে ফেলা ব্যাপক লাভের বেড়াজালে। যাতে সে সম্পূর্ণভাবে পর্যুদস্ত হয়। এবং তার সম্পদের মালিকানা খর্ব হয় কিংবা তার সম্পদ এবং ঋণ সমান্তরাল হয়ে যায়। এভাবে ইহুদি খৃষ্টান ব্যক্তির ওপর কর্তৃত্ব লাভ করবে অতপর বিচারকের সহযোগিতায় তার সম্পদের অধিকার কেড়ে নিতে সক্ষম হবে। সুতরাং আল্লাহর বাণীর আলোকে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, তিনি তাওরাত গ্রন্থেই ইহুদিদের ওপর সুদ হারাম করেছেন। তারা আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছে এবং কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তাঁর বাণীর বিকৃতি সাধন করেছে। তারা মনগড়া ব্যাখ্যা স্থির করেছে যে, হারাম শুধু ইহুদিদের পরস্পরের মাঝে সুদী লেনদেন করা অন্যথায় অন্য ধর্মের লোকদের সঙ্গে সুদী কারবার করা হারাম নয়। এ জন্যই আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে তাদের ভৎর্সনা করেছেন। যেমনটি জানা গেল উপরের আয়াত থেকে।
তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/৫৮৪
উমর বিন সুলাইমান আল আশকার, সুদ ও মানব সমাজের ওপর তার কুপ্রভাব: ৩১।