Are you sure?

ইতিহাস »  বিবিধ ইতিহাস

সাম্রাজ্যবাদঃ একটি বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ

Table of Content

ভূমিকা

সাম্রাজ্যবাদ

সংজ্ঞা

লেনিন

ইসলামি রাজ্যবিস্তার

অভিযোগ

জোরপূর্বক ধর্মান্তর

শোষণ

যুদ্ধ

স্থানীয় বাণিজ্য ধ্বংস

শান্তিবাদ

ইসলামি রাজ্যবিস্তারের উদ্দেশ্য

মানুষের মুক্তি

আল্লাহর সার্বভৌমত্ব

দ্বীনকে বিজয়ী করা

অরাজকতা দূর করা

কাফিরদের অপদস্থ করা

আন্তর্জাতিকতাবাদ

যৌক্তিকতা

জাতীয়তাবাদ

পুঁজিবাদ

প্রকৃতিবাদ

অস্তিত্ববাদ

মার্ক্সবাদ

অন্যান্য

খণ্ডন

উদারবাদের ধোঁকা

নৈরাজ্যবাদীদের ভাঁড়ামি

ডুগিনবাদের বাস্তবতা

শান্তিবাদের অসাড়তা

সুফল

অর্থনৈতিক

শাসকের উপকার

পুঁজি বৃদ্ধি

কাঁচামালের যোগান

শাসিতের উপকার

প্রতিবেশীদের উপকার

অর্থব্যবস্থা

বাজার দখল

বাণিজ্যের বিকাশ

কৃষির প্রসার

অবকাঠামোগত উন্নয়ন

শিল্পায়ন

শহরায়ন

সামাজিক উন্নয়ন

রাষ্ট্রব্যবস্থা

আইন ব্যবস্থা

সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধন

শিক্ষার প্রসার

কারুশিল্প

উপাসনালয়ের সংরক্ষণ

তাওহীদের প্রসার

সভ্যতার জনক

জাতির জনক

কালোডাক

ইসলামি রাজ্যবিস্তার বনাম পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ

ইসলামে স্বাধীনতার ধারণা

উদারবাদে স্বাধীনতার ধারণা

ভিত্তিগত তফাৎ

উপসংহার

 

ভূমিকা

আল্লাহর নামে শুরু করছি, তার প্রশংসা করছি, তার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি এবং তারই পথপ্রদর্শন কামনা করছি। রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক তার সম্মানিত রাসূল হজরত মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর।

বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা বলেন: “এবং হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২১৬]

তিনি নিজ কর্তৃত্বে কাউকে শরীক করেন না”। [সূরা কাহফ ২৬]

রব্বুল আলামীন বলেন, “বল, ‘...যাঁর শাসন-কর্তৃত্বে কোন অংশীদার নেই..."[আল কুরআন ১৭:১১১]

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে খলীফা করেছেন"[ সূরা আনয়াম ১৬৫, ফাতির ৩৯]

তিনি আরও বলেন, "তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে থাক; যতক্ষণ না ফিতনা (শিরক) দূর হয়"[সূরা আনফাল ৩৯]

সমসাময়িক কালে উম্মাহ উদারনীতিবাদ দ্বারা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে যে হুমকির শিকার হয়েছে তা সামাল দিতে গিয়ে দ্বীনের ব্যাপক বিকৃতি সাধন করেছে কিছু দা'ঈ ভাইয়েরা। মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে, রাষ্ট্র ও আইনের দর্শনের ব্যাপারে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি হীনমন্যতা লক্ষ্য করা গেছে। তবে সম্প্রতি বলিষ্ঠ দা'ঈদের প্রয়াসে এখন উজ্জ্বল আশার আলো অবলোকন করা যাচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ, যোগ্য ভাইয়েরা উদারনীতিবাদের চোখে চোখ রেখে প্রশ্নের আঙুল তুলতে সক্ষম। সময়ের দীর্ঘ পরিক্রমায়, বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেডের বিরুদ্ধে চলমান তপ্ত কলম যুদ্ধে এই অধমের সামান্য অবদান রাখার সুযোগ হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। রব্বুল আলামীনের ইচ্ছায়, ঘটনাচক্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কিছু দুর্লভ আলোচনা আমার হস্তগত হলে, বিকৃতির শিকার একটি মজলুম আমলের পক্ষে কলম ধরার বাসনা জেগে উঠলেও দীর্ঘদিন থেকে শুরুটা হয়ে উঠছিল না। অবশেষে ব্যস্ততার মাঝেই অসমাপ্ত গবেষণার কাজে হাত দিলাম। ফলশ্রুতিতে, লেখাটি হয়তো প্রকাশের পরেও বহুবার সম্পাদিত হবে।

শিরোনাম ও সূচিপত্র থেকে এটা স্পষ্ট যে, আমি ইসলামি রাজ্যবিস্তারের [Expansionism] পক্ষে; আরও সহজ ভাষায়, কাফির রাষ্ট্র আক্রমণ ও দখলের যৌক্তিকতা নিয়ে কথা বলব। তবে সমসাময়িক যেহেতু সাম্রাজ্যবাদ শব্দটির সঙ্গে মানুষ অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, সেহেতু কোথাও কোথাও তা রাজ্যবিস্তারের পরিবর্তে বেশি ব্যবহৃত হতে পারে।

প্রকৃতি বিজ্ঞানের গবেষণার মত রাষ্ট্রবিজ্ঞান পঠিত হয় না। মানে, এখানে কোন পরীক্ষাগারে প্রাপ্ত ফলাফল নিয়ে আমি কথা বলব না। বরং আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গি যুক্তির আলোকে উপস্থাপন করব এবং ইতিহাসের আলোকে আমার বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ পেশ করার চেষ্টা করব।

আমি এখানে যেসব রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর উদ্ধৃতি দিব, তাদের সকলেই অমুসলিম। কারণ মুসলিমদের কখনও কোন রাষ্ট্রবিজ্ঞান আবিষ্কার করার প্রয়োজন হয় নি। ইসলামের সূচনা-ই হয়েছে নতুন ঐশী রাজনৈতিক দর্শন প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে। এখানে কোন সংযোজন-বিয়োজনের দরকার নেই। যদি দরকার হত, তবে প্রয়োজনীয়তা-ই উদ্ভাবনের জনক বিধায় অগণিত মুসলিম দার্শনিকের আগমন হত এবং আমি তাদের উদ্ধৃতি দিতা। অতএব, স্বাভাবিকভাবেই, আমি উদ্ধৃত রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সঙ্গে সকল ব্যাপারে একমত নই। তাই আমি শুধু আমার মূল বক্তব্যের ব্যাপারে জবাবদিহি করব, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের কিংবা সংযুক্ত ভিডিও নির্মাতাকে নয়।

এসব দার্শনিকদের উদ্ধৃতি দেয়ার উদ্দেশ্য এই যে, ধর্ম ভিত্তিক গবেষণা না করেও একই উপসংহারে উপনীত হওয়া সম্ভব বলে প্রমাণ করা; অর্থাৎ নাস্তিকরা তথা উদারবাদীরা আমাদের চেয়ে উচ্চ নৈতিক ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয়, বরং বিতর্কের বিষয়বস্তু শুধু রুচির ভিন্নতা মাত্র; পাশাপাশি, নিজের অবস্থানকে মজবুত করা।

আগামী দিনের মুসলিম বিশ্বনেতাদের নিকট এই নিবন্ধ পেশ করা গেলে আশা করি, রচনাটি তাদের অনেকের বোধোদয় ঘটাবে। বর্তমানের রাষ্ট্রনেতাদের নিকটেও এটা পৌঁছে দিতে পারলে ব্যাপক কল্যাণ হতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।

সাম্রাজ্যবাদ

সংজ্ঞা

লেনিনের মতে, সাম্রাজ্যবাদ একটি নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক পর্যায়কে প্রতিনিধিত্ব করে, যেখানে পুঁজির প্রবাহকে একটি নির্দিষ্ট জাতি-রাষ্ট্রের কাছে প্রবাহিত করা যায় না এবং পুঁজি তার আশ্রয়দাতা থেকে বাইরের দিকে প্রবাহিত হয়, সম্পদ আহরণের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে কম প্রভাবশালী জাতিগুলোকে দখল করে এবং সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহের মাঝে একচেটিয়া অর্থনৈতিক আধিপত্য সৃষ্টি করে।

লেনিন

সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে লেনিনের সংজ্ঞাটি অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট, এবং এটি একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার ছাড়া অন্য কোনো প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ করে না; আর উদ্দেশ্যমূলকভাবে "বৃত্তাকার যুক্তি"-র উপর প্রতিষ্ঠিত। এই সংজ্ঞা অনুসারে, আগ্রাসন, সামরিক আক্রমণ বা ধ্বংসাত্মক যে কোনো কাজ "সাম্রাজ্যবাদ" নয় যদি না বুর্জোয়ারা [মধ্যবিত্ত] তা করে, কারণ শুধুমাত্র বুর্জোয়ারাই পুঁজি রপ্তানি করতে পারে। এটি সর্বহারা [প্রলেতারীয়] রাষ্ট্রকে সমালোচনা থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত অস্ত্র মাত্র, এর বেশি কিছু নয়। এই প্রেক্ষাপটে, একই ভাবে ডানপন্থিরা বিশ্বায়ন বিরোধীতাকে বাগ্মিতার একটি হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে এবং তারপর ঠিকই স্বাধীনতাবাদী [লিবার্টারিয়ান] "আইন র‍্যান্ড"-এর [এলিস ও'কনোর] মুক্ত বাণিজ্যের কথা বলে।

পাশাপাশি লেনিনের সংজ্ঞা নীতিবাদী মূল্যবোধ ভিত্তিক ফলাফলবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ; অথচ ফলাফলবাদীরা বিশ্বাস করে যে ফলাফলের উপর কর্মের ভালমন্দ নির্ভর করে, কতটা বর্বরভাবে কর্ম সম্পাদিত হল তা মুখ্য নয়। অতএব, মার্ক্সবাদীরা মূলত নৈতিকতায় বিশ্বাস-ই করে না, কারণ নৈতিকতা শাসক শ্রেণির সৃষ্টি।i সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা হল ভাঁওতাবাজি; রাজনীতিতে প্রোপাগান্ডা চালানোর জন্য ব্যবহৃত শব্দালঙ্কার। [দেখুন মার্ক্সবাদ অংশ]

বস্তুত, ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে গোষ্ঠীর যেকোন কাজ-ই সাম্রাজ্যবাদ; এই আলোচনায় সাম্রাজ্যবাদ বলতে, আমি সমসাময়িক কালে এটাই বুঝাব।

ইসলামি রাজ্যবিস্তার

আমার মতে, ইসলামি রাজ্যবিস্তার [Expansionism] হল- মুসলিম নেতার অধীনে উম্মাহ কর্তৃক মানুষকে মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্তি ও দ্বীনকে বুলন্দ করার উদ্দেশ্যে 'যুক্তিতর্ক বর্জিত শরীয়াহ' মোতাবেক পরিচালিত দাওয়াতি, সামরিক বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যার ফলশ্রুতিতে দারুল হারব যথাক্রমে একটি দারুল ইসলাম, দারু আহলিজ জিম্মাহ বা অস্থায়ী দারুল সুলহ-তে পরিণত হয়।

অভিযোগ

জোরপূর্বক ধর্মান্তর

 

খিলাফাতের বিরুদ্ধে উপস্থাপিত সবচেয়ে হাস্যকর যুক্তি হল জোরপূর্বক ধর্মান্তরের অভিযোগ। অথচ জোর করে কাউকে মুসলিম বানানো যায় না; মুনাফিক বানানো যায়, যা নিজেই আরেকটা বোঝা। ইসলামি খিলাফাতে যে, জোরপূর্বক ধর্মান্তর করা হয় না, এটা কাফির বুদ্ধিজীবীরাও স্বীকার করে। তবে তারা অজুহাত দেখায় যে, মুসলিমরা তা করে নি রাজস্ব সংকটের ভয়ে! এমন যেন যে, জিযিয়া থেকে প্রচুর রাজস্ব আসে!

Islam was regarded as principally an Arab religion, and the authorities, who realized that this would deprive them of much-needed tax revenue, did not encourage conversion...10 per cent of the conversion process was completed when the ‘Abbāsids came to power in 750,ii this figure rose to around 80 percent between the late ninth and tenth centuries in Iraq, Iran, and Syria. In Spain and Tunisia, the conversion was achieved later,iii because of the later date of conquest.

 

ইসলামকে প্রধানত একটি আরব ধর্ম হিসাবে গণ্য করা হত, এবং যারা বুঝতে পেরেছিল যে এটি [ধর্মান্তর] তাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করবে, তারা ধর্মান্তরকে উত্সাহিত করে নি... 'আব্বাসীদের ক্ষমতায় আসার সময় ধর্মান্তর প্রক্রিয়ার 10 শতাংশ সম্পন্ন হয়েছিল। 750 সালে, ইরাক, ইরান এবং সিরিয়ায় নবম এবং দশম শতাব্দীর শেষের দিকে এই সংখ্যাটি প্রায় 80 শতাংশে উন্নীত হয়। স্পেন এবং তিউনিসিয়ায়, দেরিতে বিজিত হওয়ায় ধর্মান্তর আরও পরে হয়েছিল।iv

 

Forced conversion was fairly uncommon, and religious change was driven far more by factors such as intermarriage, economic self-interest, and political allegiance.

 

জোরপূর্বক ধর্মান্তর মোটামুটি অস্বাভাবিক ছিল, এবং ধর্মীয় পরিবর্তন আন্তঃবিবাহ, অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং রাজনৈতিক আনুগত্যের মতো কারণগুলির দ্বারা অনেক বেশি বেগবান হয়েছিল।v

 

দেখা যাচ্ছে যে, সালাফরা রাজ্য বিজয়ের বহু পরে অধিবাসীরা ইসলাম গ্রহণ করেছে। কেউ জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করে নি।

শোষণ

আমেরিকার শোষণেরvi ব্যাপারে অন্ধত্ব প্রকাশ করে জিযিয়া নিয়ে জুজুর ভয় দেখানো ইসলামবিদ্বেষীদের আরেকটি কৌশল যা অতি চর্বণে তিক্ত হয়ে গেছে। জিযিয়া নিয়ে মিনার ভাইয়ের লেখা পড়লেই তা সত্যান্বেষীদের জন্য যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।

জিযিয়ার দ্বারাও শোষণ হত না। আব্দুল মালিকের সময়ে [৭ম শতাব্দীর শেষ দিকে], রাজস্ব সম্পদ কিয়দংশ দামাস্কাসের কেন্দ্রীয় খেলাফাতের নিকটে প্রেরিত হত। বাকিটা স্থানীয় জনগণের জন্যে ব্যয় হতvii যদি স্থানীয় কাফিরদের পেছনেই সেই সম্পদ ব্যয় হয়, তাহলে সেটা শোষণ হল কিভাবে?

যুদ্ধ

আরেকটি আবেগীয় আবেদন হল, রাজ্যবিস্তারের ফলে যুদ্ধ লেগে যায়, এতে অনেক মানুষ মারা যায় ইত্যাদি। এজন্য তারা 'রক্তাক্ত প্রান্তরে'র মত নাটকও পাঠ্যবইয়ে দিয়ে বাচ্চাদের মগজধোলাই করছে। এসব আসলে আবেগের কথা, যুক্তি নয়। তবুও আমাদের চিন্তার উপর আবেগের বিশেষ প্রভাব থাকায়, বিষয়টা সমালোচনায় আনতেই হচ্ছে। তবে এটা নিয়ে পৃথক নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে ইনশাআল্লাহ। সত্য বলতে, বহু ক্ষেত্রে ইসলামি বিস্তারবাদে কাফিরদের পক্ষ থেকে কোন বাধা পাওয়া যায় নি, তারা আত্মসমর্পণ করায় যুদ্ধ হয় নি।

Islam’s advocacy of tolerance of People of the Book was immensely appealing to minorities continuously persecuted by Byzantine imperial authorities, and resulted in many cities in the Levant simply surrendering to the Arabs.v

 

আহলে কিতাবের প্রতি ইসলামের সহনশীলতা, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যবাদী কর্তৃপক্ষের দ্বারা ক্রমাগত নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল এবং এর ফলে লেভান্টের অনেক শহর সহজেই আরবদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল।

স্থানীয় বাণিজ্য ধ্বংস

ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদ দেখে মনে হতেই পারে বিস্তারবাদের ফলে একইভাবে স্থানীয় শিল্প ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। কিন্তু ইসলামি বিস্তারবাদে তা দেখা যায় না।

ইসলামের উত্থানের পর, খ্রিস্টান এবং জরথুষ্ট্রীয় অভিজাতরা উৎপাদন ও খুচরা বিক্রেতার সাথে জড়িত ছিল, যেমন মদ, তেল, সিরামিক বা ধাতুর বৃহৎ আকারে উৎপাদনের সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে খ্রিস্টান সন্ন্যাসীদের ক্রমাগত ভূমিকা পালন দ্বারা তা প্রমাণিত হয়।viii 1234 সালের একটি উপাখ্যান অনুযায়ী, 'আব্দ আল-মালিক বিন মারওয়ানের (685-705) শাসনামলে এডেসার জ্যাকোবাইট থেকে বুর্জোয়া লেখক অ্যাথানাসিয়াস বার গুমোয়ে-এর জীবনী গ্রন্থও আরব-মুসলিম বিজয়ের পর শহরগুলির অর্থনীতিতে শহুরে স্থানীয় অভিজাতদের নিরবচ্ছিন্ন প্রভাবের কথা প্রমাণ করে।[v ৩৪ পাতা] উমাইয়াদের আমলে ইহুদিরা বিদেশে বাণিজ্যিক কাফেলা প্রেরণ করত। [v ২৪৫ পাতা] দেখুন বাণিজ্যের বিকাশ অংশ। এত ব্যবসায়িক স্বাধীনতা থাকার পরেও স্থানীয় শিল্প ধ্বংস হয় কিভাবে?

এখানে বলা প্রয়োজন যে, কিছু শিল্প অবশ্যই বিলুপ্ত হবে। যেমনঃ কারখানায় উৎপাদিত কাপড়ের কাছে চরকায় সুতো কেটে বানানো খাদি কাপড় পরাজিত হবে, এটাই বাস্তবতা। মহাত্মা গান্ধীর মত জাতীয়তাবাদ দেখিয়ে ফরমালিন দিয়ে পরিত্যক্ত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করার কোন মানে হয় না।

শান্তিবাদ

উদারনীতিতে চূড়ান্ত ভণ্ডামি সেই বৈশিষ্ট্যে পাওয়া যায় যাকে আমরা শান্তিবাদ বলি, যা রাজনীতিতে 'বন্ধু-শত্রুর ধারণা' অস্বীকার করে। এই ধারণা ছাড়া সব সামাজিক সংহতি ভেঙ্গে পড়বে, কারণ শত্রু বিলীন হলে 'বন্ধু' ধারণার অস্তিত্বও থাকবে না। 'বন্ধু-শত্রুর ধারণা' তাই সভ্যতার ভিত্তি। শান্তিবাদ একটা হাতিয়ার ছাড়া আর কিছুই নয়। শান্তিবাদ উদারবাদীদের সাম্রাজ্যবাদকে আড়াল করার জন্য উদারতাবাদের উপর একটি মুখোশের ন্যায় কাজ করে। এই কারণে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো আমার দৃষ্টিতে পাগলামি। বিস্তারিত জানতে পড়ুন ফাহমিদ উর রহমান রচিত 'সাম্রাজ্যবাদ' বইটি।

ইসলামি রাজ্যবিস্তারের উদ্দেশ্য

মানুষের মুক্তি

ইসলাম মানুষকে মানুষের দাসত্ব থেকে এক আল্লাহর দাসত্বে নিয়ে আসে। এটাই প্রকৃত মুক্তি। আল্লামা ইকবাল যেমনটি বলেছেন,

এক কাতারে দাঁড়িয়েছে মাহমুদ ও আয়ায

না কেউ দাস রয়েছে, না আছে কেউ মুনিব।’

আল্লামা শিরবিনী (রহঃ) (৯৭৭ হি.) লিখেন:

 

إذا المقصود بالقتال إنما هو الهداية وما سواها من الشهادة ، وأما قتل الكفار فليس بمقصود حتى لو أمكن الهداية بإقامة الدليل بغير جهاد كان أولى من الجهاد

"কিতালের উদ্দেশ্য হচ্ছে কেবলই হেদায়েত, আর এছাড়াও (আল্লাহর দরবারে) সাক্ষ্যপ্রদাণ। আর কাফিরদের হত্যা কোন উদ্দেশ্য নয়। এমনকি যদি জিহাদ ছাড়াই দলীল প্রমাণের দ্বারা হেদায়েত লাভ সম্ভব হয়, তবে এটা জিহাদের চাইতেও উত্তম।”ix

 

[যুদ্ধ সংক্রান্ত নিবন্ধে আরেকটু বিস্তারিত শার'ঈ দলিল থাকবে ইনশাআল্লাহ।]

আল্লাহর সার্বভৌমত্ব

ভূমিকায় এর পক্ষে দলিল পেশ করা হয়েছে। মুসলিমরা দুনিয়ায় আল্লাহর প্রতিনিধি। তাই দুনিয়ায় আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব মুসলিমদের।

দ্বীনকে বিজয়ী করা

দ্বীনকে সকল ক্ষেত্রে বিজয়ী করা মুমিনের কর্তব্য, যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও পরিব্যাপ্ত। সুতরাং দ্বীনকে এমন অবস্থায় নিয়ে যেতে হবে যেন কাফির-মুশরিকরা চোখ রাঙানোর সাহস না পায়; অন্ততপক্ষে দ্বীন এতটুকু বিজয় লাভ করে যা তারা অপছন্দ করে

আল্লাহ বলেন, "তিনিই সে সত্তা যিনি তার রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, যেন তিনি আর সব দ্বীনের উপর একে বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে"[কুরআন ৯:৩৩]

অতএব যখন তোমরা অবিশ্বাসীদের সাথে যুদ্ধে মোকাবিলা কর,...যে পর্যন্ত না যুদ্ধ তার অস্ত্ররাজি নামিয়ে ফেলে"[কুরআন ৪৭:]

জিওভানি জেনটাইল তার 'Genesis and Structure of Society' বইতে সাম্রাজ্যবাদের লক্ষ্যগুলি এভাবে বর্ণনা করেছেন:

 

The enemy must be placed in a position in which he can no more offend...He must therefore survive to set the seal on our victory by his recognition”.

শত্রুকে অবশ্যই এমন অবস্থানে রাখতে হবে, যেখানে সে আর আমাদের অপমান করতে পারবে না…তাই তার স্বীকৃতির মাধ্যমে আমাদের বিজয়ে সিলমোহর স্থাপন করার জন্য তাকে অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে।"

অরাজকতা দূর করা

আল্লাহ তা'আলা বলেন, "আল্লাহ যদি মানব জাতির একদলকে অন্য দল দ্বারা দমন না করতেন, তাহলে নিশ্চয় পৃথিবী (অশান্তিপূর্ণ ও) ধ্বংস হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতি অনুগ্রহশীল।[সূরা বাক্বারাহ ২৫১]

কাফিরদের অপদস্থ করা

আল্লাহ বলেন, তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। তোমাদের হাতে আল্লাহ্‌ তাদেরকে শাস্তি দেবেন, তাদেরকে অপদস্থ করবেন, তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন এবং মুমিন সম্প্রদায়ের চিত্ত প্রশান্তি করবেন [সূরা আত তাওবাহ ১৪]

অর্থাৎ তারা শক্তির গর্বে মাতোয়ারা হয়ে গিয়েছে। পরাজয়ের দ্বারা তাদের অপদস্থ হবে। [ফী যিলাযিল কুরআন]

আযাবের দ্বারা ধ্বংস করার চেয়ে মুসলমানদের হাতে পরাজিত হলে বেশি অপদস্থ হয় এবং নেককারদের মর্যাদা বাড়ে। [তাফসীরে ওসমানী ২য় খণ্ড]

আন্তর্জাতিকতাবাদ

রাজ্যবিস্তারের ফলে ভূখণ্ডসমূহ সুসংহত আন্তর্জাতিকতাবাদের দিকে এগিয়ে যায়। সোভিয়েতের কমেকন ও ওয়ার'স প্যাক্ট এর অন্যতম প্রমাণ। ইসলামের খিলাফাতের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে বিস্তারবাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

 

আর্নল্ড টোয়েনবী লিখেছেন, "ইসলামী সমাজের ক্ষেত্রে বলা যায়, আমরা সম্ভবতঃ প্যান-ইসলামী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটা বিশ্বজনীন রাষ্ট্রীয় মতবাদের অঙ্কুরোদগমের আশা করতে পারি"x

 

[উল্লেখ্য, এই কথাগুলো টোয়েনবী প্রশংসা করার জন্য বলে নি। সে মূলত পশ্চিমাদের সতর্ক করছিল যে, পশ্চিমা সভ্যতা অধিকাংশ সংস্কৃতিকে কোণঠাসা করে ফেললেও ইসলামের মধ্যে এখনো ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি আছে।]

যৌক্তিকতা

জাতীয়তাবাদ

বামপন্থী থেকে জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে একটি সাধারণ প্রবণতা হল সাম্রাজ্যবাদ এবং উপনিবেশবাদ বিরোধিতার ব্যাপারে ধর্মান্ধের মত আনুগত্য, এসব তাদের প্রচারণা এবং নান্দনিকতা থেকে বুঝা যায়। "জাতীয় মুক্তি" এবং মার্কসবাদ দ্বারা গৃহীত অন্যান্য কাল্পনিক আদর্শের অতিরঞ্জিত নৈতিকতাবাদী কারণ উদ্ধৃত করা, এমনকি উদারতাবাদকে অস্ত্র বানিয়ে তারা সাম্রাজ্যবাদের উপযোগিতাকে উপেক্ষা করে; বিশেষ করে, এটি আশ্রয়দাতা জাতির অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উপকারী, এমন যুক্তির ঐতিহাসিক ব্যবহারকেও স্বীকার না করা; অথচ এই যুক্তির আদর্শ, আত্মসম্মানবোধ থাকা জাতীয়তাবাদীদের মাঝে রাজত্ব করার কথা ছিল। আর জাতীয়তাবাদ তো বাংলাদেশের সাংবিধানিক মূলনীতি, যা ৮ম অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে। উন্নত সভ্যতার ধারক হলে, তার বাহকও হওয়া চাই। প্রকৃত বিবেকবান মানুষ মাত্রই তা অন্যদের কাছে সেই আলো নিয়ে যাবে। যেমনটা জুলে ফেরি ও রুডইয়ার্ড কিপলিং বলেছেন।

মূলত অন্যান্য মতবাদের চেয়ে জাতীয়তাবাদ সাম্রাজ্যবাদী হবার ক্ষমতা বেশি রাখে। twenty years’ crisis 1919-1939 [1964 edition] বই অনুযায়ী, ই এইচ কার মনে করেন, সমগোত্রীয়তার মনোভাব অতি সহজে সাম্রাজ্যবাদে রূপ নিতে পারে, যদি তারা পেশীশক্তির উপর নির্ভর করে।

উল্লেখ থাকে যে, জাতীয়তাবাদ হল প্রাকৃতিক দেশাত্ববোধের উপর নির্মিত একটি অপবৈজ্ঞানিক ঔপনিবেশিক কৃত্তিম ধারণা যা ঔপনিবেশিক সূত্রে আমরা পেয়েছি।

পিডিএফঃ ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ

পুঁজিবাদ

সাম্রাজ্যবাদ বিশ্ববাজারে সাম্রাজ্যবাদী দেশের জন্য উপলব্ধ মুনাফার যোগান বাড়িয়ে দেয়। পুঁজিবাদ সাম্রাজ্যবাদের জন্য অর্থনৈতিক ভিত্তি, সস্তা কাঁচামাল এবং পণ্য আমদানি এবং পুঁজি-সমৃদ্ধ এলাকা থেকে পুঁজি-দরিদ্র অঞ্চলে পুঁজি রপ্তানির সুবিধা দেয় (নিম্ন মজুরি, কম পরিবেশগত এবং সামাজিক নিয়ন্ত্রণ, দূর্বল আইনি ব্যবস্থা থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য)। সাম্রাজ্য বিস্তার কারো পণ্যের জন্য বিশেষ সুবিধাযুক্ত বাজার তৈরি করার একটি ভাল উপায়। পুঁজি বৃদ্ধি পেলে, তা বিদেশি বাজারে প্রবেশ করতে চাইবে। যেহেতু পুঁজিবাদ, তার প্রকৃতিগতভাবে, সম্প্রসারণশীল, তাই টিকে থাকার জন্য এটি অবশ্যই প্রসারিত হবে। তাই পুঁজিবাদ অনিবার্যভাবে সাম্রাজ্যবাদী।

প্রকৃতিবাদ

যেহেতু নাস্তিকদের মতে, কোন কিছু প্রকৃতিতে দেখা গেলেই তা ভাল কাজ, আর তাই পায়ুকামীরা ভাল কাজ করছে। সেই একই যুক্তিতে, সাম্রাজ্যবাদ ভাল কাজ। কারণ এই কাজ আমাদের চাচাতো ভাইয়েরা নিয়মিত করে। এখানে ঐতিহাসিক 'গম্বে শিম্পাঞ্জি যুদ্ধ' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল সম্পদ ও এলাকা দখল কেন্দ্র করে। বিজ্ঞানী গুডাল [Goodall] American Journal of Physical Anthropology-তে এই ব্যাপারে লম্বা গবেষণা প্রকাশ করেছে।

 

 

Do other animals go to war? Since our close relative the chimpanzee is often thought of as war-like, we took the question to Nicholas E. Newton-Fisher, a primate behavioral ecologist at the University of Kent.

Newton-Fisher says by email to National Geographic;

It probably depends on the definition of war, there’s good evidence that chimpanzees conduct deliberate raids on neighbouring communities, and that this can lead to annexation of territory. For instance, during a ten-year study of a chimp family in Uganda's Kibale National Park, the primates killed or injured 18 chimps from other groups and took over their land.”

 

অন্য প্রাণীরা কি যুদ্ধে যায়? যেহেতু আমাদের নিকটাত্মীয় শিম্পাঞ্জিকে প্রায়শই যুদ্ধবাজ মনে করা হয়, তাই আমরা প্রশ্নটি নিকোলাস ই. নিউটন-ফিশারের কাছে করেছিলাম, তিনি কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাইমেটের আচরণগত পরিবেশবিদ"। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে ই-মেলের মাধ্যমে নিউটন-ফিশার বলেছেন; "এটি সম্ভবত যুদ্ধের সংজ্ঞার উপর নির্ভর করে, এর ভাল প্রমাণ রয়েছে যে, শিম্পাঞ্জিরা প্রতিবেশী সম্প্রদায়ের উপর ইচ্ছাকৃত অভিযান পরিচালনা করে এবং ভূমি দখল করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, উগান্ডার কিবালে ন্যাশনাল পার্কে একটি শিম্প পরিবারের দশ বছর যাবত পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, প্রাইমেটরা অন্যান্য গোষ্ঠীর 18 জন শিম্পকে হত্যা বা আহত করেছিল এবং তাদের জমি দখল করেছিল।"xi

 

অস্তিত্ববাদ

গোষ্ঠী টিকে থাকতে চায়। টিকে থাকা সুনিশ্চিত করার উপায় হল শক্তিশালী হয়ে ওঠা, যা রাজ্যবিস্তারের দ্বারা সহজে সম্পন্ন করা যায়। যেমন- নয়া উপনিবেশবাদ নতুন নতুন রাষ্ট্রে ধনতন্ত্রকে জিইয়ে রেখে সমাজতন্ত্রের গতি রোধ করতে চায়।

খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, প্রতিটি মানুষ তার গোষ্ঠীর শুধু সংরক্ষণ নয়, বরং বিস্তার চায়। এটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আরও স্পষ্ট, যেখানে রাজনৈতিক দলসমূহ তাদের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে আক্রমণ করা অশেষ পুণ্যের কাজ বলেই আমরা জানি।

মার্ক্সবাদ

মার্ক্স নিজে সাম্রাজ্যবাদের উপকারিতা স্বীকার করেছেন।xii মার্কসের লেখা The British Rule In India from 10th June 1853-তে এটি স্পষ্ট করা হয়েছে। মার্কস লিখেছেন:

England, it is true, in causing a social revolution in Hindustan, was actuated only by the vilest interests, and was stupid in her manner of enforcing them. But that is not the question. The question is, can mankind fulfill its destiny without a fundamental revolution in the social state of Asia? If not, whatever may have been the crimes of England she was the unconscious tool of history in bringing about that revolution."

 

এটা সত্য যে, ইংল্যান্ড শুধু জঘন্য স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল এবং সেগুলি প্রয়োগ করার পদ্ধতিতে বোকার মত আচরণ করেছিল; ফলে তা হিন্দুস্তানে একটি সামাজিক বিপ্লব ঘটিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন সেটা নয়। প্রশ্ন হল, এশিয়ার সামাজিক রাষ্ট্রে মৌলিক বিপ্লব ছাড়া কি মানবজাতি তার ভাগ্য পূরণ করতে পারবে? যদি তা না হয়, ইংল্যান্ডের অপরাধ যাই হোক না কেন, ইংল্যান্ড বিপ্লব ঘটাতে ইতিহাসের অচেতন হাতিয়ার ছিল।"[উদ্ধৃতির পূর্বের অংশ]

 

তিনি বলেন যে ভারতে ব্রিটিশ প্রভাব তাদের সমাজের মধ্যে একটি বিপ্লব ঘটাচ্ছে, যা মার্কসীয় তত্ত্বের মতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, যাকে মার্ক্স স্পষ্টতই ইতিবাচক হিসাবে দেখেন। তাদের দৃষ্টিতে, উত্পাদনশীল শক্তির বিবর্তনের মাধ্যমে একটি প্রদত্ত অঞ্চলে, সর্বহারা শ্রেণীর বিস্তারের মাধ্যমে শ্রেণী বৈরিতা তীব্রতর হবে, যা ঐতিহাসিক বস্তুবাদ অনুযায়ী, উৎপাদনের বুর্জোয়া পদ্ধতিকে উল্টে দেওয়ার এক ধাপ কাছাকাছি

শিল্পায়নের ফলে আধুনিক শিল্প কেন্দ্র গঠন ও যন্ত্রপাতির আবিষ্কারের দ্বারা বৃহৎ সর্বহারা শ্রেণির জন্ম হয়, যা পুঁজিকে শ্রমে রূপান্তর করে। এতে আমলাতন্ত্র শক্তিশালী হয়। তাই 'শক্তির সভ্যতা'র গোড়া পত্তন হয়, হোক তা অভিজাত বা সর্বহারা কেন্দ্রিক।

অন্যান্য

  • ইতিহাসের সেরা বিজেতারা সাম্রাজ্যবাদী ছিলেন। যেমনঃ আলেকজান্ডার, নেপোলিয়ন।

  • পৃথিবীর সকল ভূখণ্ড-ই অপহৃত ভূখণ্ড। সুতরাং, নতুন করে দখল করলে সমস্যা কোথায়?

  • যদি আপনি বলেন যে, অমুক রাষ্ট্র সাম্যবাদ থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছে। তাহলে তা অভ্যন্তরীণ দখল বা বিস্তারবাদ ব্যতীত কি সম্ভব হয়েছে?

  • আপনি যদি রাজ্য বিস্তার না করেন বা আন্তর্জাতিক মহলে আপনার প্রভাব বিস্তার না করেন, তাহলে অন্য কেউ এসে সেই একই কাজ করবে এবং আপনার উপরে তার মূল্যবোধ চাপিয়ে দিবে। টোয়েনবী মনে করতেন, ইতিহাসের এক পর্যায়ে কোন সভ্যতা শক্তিপ্রয়োগে রাজনৈতিক একত্রীকরণে বিশ্বাসী একটা বিশ্বজনীন রাষ্ট্রের কাছে নত হয়।xiii

  • রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠত্ব রাজ্য বিস্তারের দ্বারাই প্রকাশ পায়, আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিই ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তা।

  • রাজনীতির উদ্দেশ্য-ই শক্তি অর্জন, তাই রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে তদ্রূপ। ফলশ্রুতিতে রাষ্ট্র মাত্র-ই বিস্তারবাদী।

খণ্ডন

উদারবাদের ধোঁকা

কথিত উদারবাদীরা নিজেদের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দাবি করলেও সাম্রাজ্যবাদ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে নি। পশ্চিমারা বিশ্ব জুড়ে সর্বত্র পুঁজি রপ্তানি করে সাম্রাজ্যবাদ ছড়াচ্ছে। এমনকি প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী দ্বারাও এটি করা হয়। বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদের নীতিতে কৌশল গ্রহণ করা হয়। ফ্রেডরিক লিস্ট উদারনীতির সমালোচনা করতে যা বলেছেন, তার অনেক পয়েন্টের মধ্যে একটি হল এটা। উদারবাদের বৈদেশিক আদর্শিক হুমকির [যেমনঃ ভিন্ন দেশে অনুদারবাদ, ফ্যাসিবাদ, মৌলবাদ] বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন; অভ্যন্তরীণভাবে রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের কোমল সর্বগ্রাসী প্রাতিষ্ঠানিক সেন্সরশিপ দ্বারা আগ্রাসন; অন্য গোষ্ঠীকে অস্বীকার [group negation] করে গোষ্ঠীর ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের প্রক্রিয়ায় 'ক্ষমতার রাজনৈতিক ব্যবস্থা' সৃষ্টি করছে, যেমনটা স্মিট দাবি করেছিলেন।

এখন চাইনিজরা আমেরিকার সঙ্গে এটা করছে [:০০ – ১:১৮]

 

 

এই হল, উস্তাদ দানিয়েল হাকিকাতজু ও আব্দুল্লাহ আল আন্দালুসি [হাফিঃ]-এর সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত হওয়া লিবটার্ড ভশের স্বীকারোক্তি

নৈরাজ্যবাদীদের ভাঁড়ামি

এক নৈরাজ্যবাদীর সঙ্গে একদিন আলাপ হচ্ছিল। সে দাবি করল যে, রাষ্ট্রের ধারণা হল কৃত্তিম। মানুষকে সম্প্রদায় ভিত্তিক বাস করতে হবে। আমি বললাম, সেই সম্প্রদায় অস্থায়ী, কারণ কোন একক নেতৃত্বের অধীনে পরিচালিত দল প্রয়োজন বোধ করলে নৈরাজ্যবাদীদের ভূখণ্ড দখল করে নিবে। আপনি যতদিন স্বাধীনভাবে থাকবেন, ততদিন আপনি শুধু আপনার ভূখণ্ড ও সম্পদের উপর অন্য প্রতাপশালী সরকারের অনাসক্তির কারণে স্বাধীন থাকবেন। এটা মূলত তাদের কৃপা মাত্র। কিন্তু কে শোনে কার কথা? সে এরপর আবেগের খেলা খেলতে শুরু করল যে, 'অন্য দেশ আক্রমণ করা খারাপ কাজ'। আমি বললাম, যে দেশ পায়ুকামীদের হত্যা করে, তাদের তুমি নিরাপদে ছেড়ে দিবে? তুমি তো মানবাধিকারের একনিষ্ঠ রক্ষাকর্তা বলেই আমি জানি। সে জবাব দিল যে, বাইরের দেশের পায়ুকামীদের বাচাতে সে ঐ দেশের অভ্যন্তরীণ পায়ুকামীদের একতাবদ্ধ করবে ও সমর্থন জানাবে। আমি বললাম, তোমার এমন সমর্থন ওদের কি উপকারে আসবে যদি ওরা ওদের প্রাণ বাঁচাতে না পারে? সে তখন বলল যে, সে আত্মরক্ষাকারী পায়ুকামীদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করবে। আমি বললাম, তাহলে তোমার সাথে ওবামা-র তফাৎ কোথায়? লিবিয়াতে সাম্রাজ্যবাদীরা তো গাদ্দাফী বিরোধীদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল। তুমি নিজেও তো তাহলে সাম্রাজ্যবাদী।

পরবর্তীতে সে আর উল্লেখযোগ্য জবাব দেয় নি। আর জবাব দেয়ার মত কিছু নেইও। নৈরাজ্যবাদ হল বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অলস এবং বাস্তবতা বর্জিত ঘরকুনো কল্পনাবিলাসী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের একটা স্বপ্নরাজ্য মাত্র। কোন ভূখণ্ডে আমার মতাদর্শের লোকদের আধিপত্য বিস্তারে সাহায্য করা কি রাজ্যবিস্তার নয়? তারা তো এক হিসাবে আমার-ই লোক, আমার সহযোদ্ধা, বন্ধু ও কল্যাণকামী। নৈরাজ্যবাদের মত হাস্যকর মতাদর্শ জনপ্রিয়তা লাভের পিছনে সম্ভবত নোয়াম চমস্কি-র মত লোকের রহস্যময়ী বক্তব্যসমূহ দায়ী।

কেউ কেউ দাবি করতে পারেন যে, পায়ুকামীদের হত্যার উদাহরণ দিয়ে আমি যে মাইন্ড গেইম খেলেছি তা যথাযথ নয়, একটা এক্সট্রিম উদাহরণ দিয়েছি মাত্র। কিন্তু আমার উদ্দেশ্য এটা বুঝানো যে, যদি পায়ুকামীদের হত্যা করতে দেখে একজন নাস্তিক মুসলিম ভূখণ্ড দখল করতে বৈধতা পেয়ে যায়; স্যাম হ্যারিস পারমাণবিক বোমা দ্বারা মধ্যপ্রাচ্য ভস্মীভূত করার যৌক্তিকতা পেয়ে যায়;xiv তাহলে একজন মুসলিম কেন পায়ুকামীদের হত্যা করে না এমন রাষ্ট্র দখল করার বৈধতা পাবে না? আমরা তো শুধু আলাদা মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আপনার কাছে পায়ুকামীদের বাঁচানো নৈতিকতা, আমার কাছে তাদের হত্যা করা নৈতিকতা। আমাদের মধ্যে তফাৎ কোথায়? এই প্রশ্নের জবাব, আমার পক্ষ থেকে হল, 'তাওহীদ আর কুফর'। এটাই রাজনীতিতে 'বন্ধু-শত্রুর ধারণা'[বিস্তারিত যুদ্ধ বিষয়ক রচনায় থাকবে ইনশাআল্লাহ]

ডুগিনবাদের বাস্তবতা

আমি আগেই বলেছি, গোষ্ঠীর সহিংসতার বিরুদ্ধে আবেগপূর্ণ নৈতিকতা দেখানো একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার ছাড়া আর কিছুই নয়। আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লেনিনের দৃষ্টিভঙ্গি কেবল প্রচারণার অংশ, যার উদ্দেশ্য হল- ভিন্ন গোষ্ঠীকে [পুঁজিবাদ] অস্বীকার করাকে বৈধতা দেয়া। সাম্রাজ্যবাদ নিজেই সহজাতভাবে সর্বজনীন।

ডুগিনের মত নৃতাত্ত্বিক বহুত্ববাদীরাxv, যে 'সভ্যতা মণ্ডলে'র ধারণা পোষণ করে তা আংশিক সত্য; উসমানীদের তুরস্কে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির মুসলিমদের সহাবস্থান করতে দেখা যায়। তবে সাংস্কৃতিক মিল আছে; কিন্তু ধর্ম, মতাদর্শ এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থের ভিন্নতা সত্বেও জাতিগুলো একত্রে কাজ করবে এমন ধারণা বেশ হাস্যকর। যেমনঃ পোল্যান্ড একটি স্লাভিক জাতি, যা রাশিয়ানরা একীভূত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু মৌলিকভাবে ক্যাথলিক এবং অর্থোডক্স মজ্জায় পার্থক্য রয়েছে। খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত হলে, একইভাবে সুন্নিরা শীয়াদের বা শিয়ারা সুন্নিদের আগ্রাসন করবে; সহাবস্থান করবে না। সারা বিশ্ব সুন্নিরা দখল করে নিলেও মুনাফিক থাকবে; সংঘাত-ই রাষ্ট্রের প্রকৃতি।

শান্তিবাদের অসাড়তা

Albert Weisbord রচিত Offshoots of Liberalism: Pacifism বইটি শান্তিবাদের অবাস্তবতা নিয়ে একটি ভাল সারাংশ উল্লেখ করেছে-

When middle classes turned to pacifism, the working classes turned to anti-militarism. Proletarian Anarchism, Syndicalism, and revolutionary Socialism turned violently against capitalist war. After all, these groups furnished the chief regiments of cannon fodder and feared warfare more than any other.

Their anti-war activity was only part of the general struggle for emancipation of the working class.

None of these groups, however, could escape from theories of pacifism. They were not able to understand the laws of social dynamics. The Anarchists turned to Tolstoyan pacifism while they built dreams of mutual aid co-operatives, or they adopted the Liberal methods of individual objection. The Syndicalists proposed the general strike as a method of stopping war, as though the peaceful diluted economic action of their general strike could liquidate at the start the terrific concentrated political violence of war. The parliamentary Socialists adopted the theory that war can be stopped by the ballot-box and by theories of international cooperation and total disarmament. Later on, the degenerated Communists of the Stalinist variety would propose on the rostrum of the Disarmament Conferences the old pacifist utopia of universal disarmament as the “cure” for war.

Like Liberalism, all of these proletarian movements prove bankrupt in stopping the all-consuming development of militarism and war.”

যখন মধ্যবিত্তরা শান্তিবাদের দিকে ঝুঁকেছে, তখন শ্রমিক শ্রেণী সমর-বিরোধীতার দিকে ঝুঁকছে। সর্বহারা নৈরাজ্যবাদ, সিন্ডিকালিজম এবং বিপ্লবী সমাজতন্ত্র পুঁজিবাদী যুদ্ধের বিরুদ্ধে হিংস্র হয়ে উঠেছিল। সর্বোপরি, এই দলগুলি নিজেদের কামানের প্রধান খাদ্যে পরিণত করেছিল এবং অন্য সবকিছুর তুলনায় যুদ্ধকে বেশি ভয় করেছিল।

তাদের যুদ্ধবিরোধী কার্যকলাপ ছিল শ্রমিক শ্রেণীর মুক্তির সাধারণ সংগ্রামের অংশ মাত্র।

যাইহোক, এই গোষ্ঠীগুলির কোনটিই শান্তিবাদের তত্ত্ব প্রচারণা থেকে পালাতে পারেনি। তারা সামাজিক গতিবিদ্যার নিয়ম বুঝতে সক্ষম ছিল না। নৈরাজ্যবাদীরা টলস্টোয়ান শান্তিবাদেরxvi দিকে তখনই ঝুঁকে পড়েছিল, যখন তারা পারস্পরিক সাহায্য সহযোগিতার স্বপ্ন বুনছিল, অথবা উদারবাদীদের মত ব্যক্তির আপত্তি জানানোর পদ্ধতি গ্রহণ করেছিল। সিন্ডিকালিস্টরা [সমাজতন্ত্রী শ্রমিক আন্দোলন] সাধারণ ধর্মঘটকে যুদ্ধ থামানোর একটি পদ্ধতি হিসাবে প্রস্তাব করেছিল; মনে হয় যেন তাদের সাধারণ ধর্মঘটের শান্তিপূর্ণ ক্ষীণ অর্থনৈতিক পদক্ষেপ, যুদ্ধের ভয়ঙ্কর ঘনীভূত রাজনৈতিক সহিংসতাকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করতে পারে! সংসদীয় সমাজতন্ত্রীরা এই তত্ত্ব গ্রহণ করেছিলেন যে, ব্যালট-বাক্সের মাধ্যমে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের তত্ত্ব দ্বারা যুদ্ধ বন্ধ করা যেতে পারে। পরবর্তীতে, স্টালিনবাদ জাতের কমিউনিস্টরা নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনের বেদিতে সর্বজনীন নিরস্ত্রীকরণের পুরানো শান্তিবাদী ইউটোপিয়াকে যুদ্ধের "নিরাময়" হিসাবে প্রস্তাব করবে।

লিবারেলিজমের মতো, এসকল সর্বহারা আন্দোলন সামরিকবাদ এবং যুদ্ধের সর্বগ্রাসী বিকাশকে থামাতে দেউলিয়া প্রমাণিত হয়।"

 

কার্ল্টন হেইসের মতে, মানবতাবাদ, জাকবীয়, ঐতিহ্যবাদ, উদারবাদ ও অবিচ্ছেদবাদ; কোনকিছুই তাত্ত্বিকভাবে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধী না।xvii

সুফল

উপরের সকল অনুচ্ছেদে আমি দেখিয়েছি, অদ্যাবধি প্রস্তাবিত কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থা-'বন্ধু-শত্রুর ধারণা'কে নিশ্চিহ্ন করতে পারে নি। একটি রাশিয়ান ন্যারোড থেকে জার্মান লেবেনসরাম বা ম্যানিফেস্ট ডেসটিনির আমেরিকান স্বপ্ন বা পুনর্জীবনের চীনা মিশন, খুব বেশি আলাদা কিছু নয়। এই অংশে আমি শুরুতে ইউরোপীয়দের সাম্রাজ্যবাদের উদাহরণ দিব, যেখানে আমি তাদের সাম্রাজ্যবাদের কিছু প্রমাণিত সুফল তুলে ধরার পাশাপাশি ঘটিতব্য ছিল এমন সুফলের বর্ণনা দিব এবং ইসলামের মাহাত্ম্য উল্লেখ করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। বলে রাখা ভাল, ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদ ব্যাপকভাবে অধিকার হরণকারী। আমি এখানে তাদের লাগামহীন উগ্রতার পক্ষ নিচ্ছি না। শুধু সাম্রাজ্যবাদের ইতিবাচক শক্তি নিয়ে আলোচনা করাই এখানে মুখ্য।

অর্থনৈতিক

শাসকের উপকার

পুঁজি বৃদ্ধি

সাম্রাজ্যবাদ নিঃসন্দেহে পুঁজি বৃদ্ধি করে, যদি তা না করত, তবে বণিক শ্রেণি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করত। তাছাড়া নতুন বাজার ও কাঁচামাল সহজে পাওয়া যায়। সুতরাং শাসক রাষ্ট্রের জন্য সাম্রাজ্যবাদ উপকারী তাতে সন্দেহ নেই।

কাঁচামালের যোগান

  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইতালী নতুন সম্পদ অর্জনের জন্য দেশ দখল করতে শুরু করে, যা ইতালির শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজন ছিল, যেহেতু মার্শাল পরিকল্পনার আগ পর্যন্ত ইতালি অর্থনৈতিকভাবে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশের চেয়ে পিছিয়ে ছিল, তাদের প্রকৃতপক্ষে শতভাগ শিল্পায়ন এবং ইউরোপের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ এবং অর্থায়ন নিশ্চিত করার রাস্তার প্রয়োজন ছিল।

    তাই তারা বলকান অঞ্চলগুলিতে রাজ্য সম্প্রসারণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যেখানে লোহা, কার্বন এবং তামার মতো কাঁচামালের পাশাপাশি কাঠের মজুদ এবং উল্লেখযোগ্য গবাদি পশুর পাল, যা পশুসম্পদ সরবরাহ করার জন্য দরকারী ছিল। ভূমি দখলের ফলে ইতালি এই সম্পদগুলি ব্যবহার করতে সক্ষম হত, এই প্রক্রিয়ায় সেই ভূখণ্ডগুলোও উন্নত হত, যেখান থেকে সম্পদ আহরণ করা হত।

  • ডেভিড ল্যান্ডেস, একজন আমেরিকান ইতিহাসবিদ এবং অর্থনীতিবিদ। ল্যান্ডস তার "দ্য ওয়েলথ অ্যান্ড পোভার্টি অফ নেশনস" বইয়ে যুক্তি দেখিয়েছেন যে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো নির্দিষ্ট কিছু দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাম্রাজ্যবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি যুক্তি দেন যে সাম্রাজ্যবাদ আধুনিকীকরণ, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে

    যদিও জাপান, তার ধ্বংসাত্মক প্রকৃতির কারণে সাম্রাজ্যবাদের একটি খুব বিতর্কিত উদাহরণ, তবু জাপানি সাম্রাজ্যবাদ পরাধীন ভূমিগুলির ব্যাপক প্রসারণ এবং বিকাশ দেখতে পেত।

    ইম্পেরিয়াল জাপানি সেনাবাহিনী, অধিকৃত অঞ্চলগুলির উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চেয়েছিল, তাই তারা একটি বেসামরিক সরকার ব্যবহার করতে চেয়েছিল যা সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ ত্যাগ করার জন্য চাপ দেবে না। যখন সেনাবাহিনী কট্টর ছিল, বেসামরিক সরকার ততটা কট্টর ছিল না এবং জাপানি জাইবাতসুকে [বাণিজ্যিক দল] সম্পদের জন্য জাপানের ভয়াবহ ক্ষুধা মেটাতে চীন এবং পূর্ব এশিয়ার অনাহরিত সম্ভাবনায় প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করার সুযোগ দিত। যেমন তেল, লোহা এবং তামা, মূলত একটি সঠিক শিল্প অর্থনীতি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সংস্থান, যা জাপানের হয় অভাব ছিল বা অভ্যন্তরীণভাবে ছোট ছোট এলাকায় পুঞ্জিভূত হয়ে আটকে ছিল।

    তবে সেনাবাহিনী দ্বারা জনগণকে আতঙ্কিত করা এবং বিদেশী সংস্থানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা বুদ্ধিমান পদক্ষেপ ছিল না।

  • ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেনিনগ্রাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি ছাড়াও সোভিয়েত কর্তৃক ফিনল্যান্ড দখলের কারণ ছিল ৩য় পঞ্চবার্ষিকীর কোটা পূরণ করতে বুলেট তৈরির তামা-র যোগান নিশ্চিত করা।

পিডিএফঃ ইসলাম কমিউনিজম ও পুঁজিবাদ

শাসিতের উপকার

বিজয়ী রাষ্ট্র বিজিত রাষ্ট্রে বিনিয়োগ করে, ব্যবসা পরিচালনা করে, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে।

প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশগুলিতে, বিশেষ করে আফ্রিকার উত্তরে, আলজেরিয়া এবং মরক্কোতে, ফরাসিরা কৌশলগত মূল্যের কারণে এই অঞ্চলগুলিতে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করেছিল এবং আভ্যন্তরীণভাবে সম্পদের বড় বৈষম্য থাকা সত্ত্বেও, আজ আলজেরিয়া সবচেয়ে ধনী অ-দ্বীপ রাষ্ট্র, আফ্রিকান দেশ, এবং একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক শক্তি যা ভূমধ্যসাগর এবং আফ্রিকার বাকি অংশে তাদের প্রবেশাধিকার দ্বারা উপকৃত হচ্ছেতবে ফ্রান্সের পরিচালিত গণহত্যা মোটেও সমর্থনযোগ্য না।xviii

উপনিবেশবাদের পক্ষে পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ব্রুস গিলি-The Case for Colonialism নিবন্ধ লিখেছেন। গিলির মতে, উপনিবেশবাদ বিজয়ী এবং বিজিত উভয় জাতির জন্য বস্তুনিষ্ঠভাবে উপকারী ছিল।xix

খিলাফাতকালঃ the Arabs had a healthy respect for the mores of the sedentary imperial lands they conquered and sought to perpetuate and appropriate them rather than cast them aside.[xxxii]

 

আরবরা যে বসতিপূর্ণ সাম্রাজ্যিক ভূমি জয় করেছিল তার প্রতি তাদের একটি সুস্থ সম্মান ছিল এবং সেগুলিকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে তাদের স্থায়ী ও উপযুক্ত করার চেষ্টা করেছিল।[৫৭ পাতা]

 

পঞ্চম থেকে নবম শতাব্দীতে পশ্চিম ইউরোপে দারিদ্র্য ছড়িয়ে পড়েxx। কিন্তু বিস্তারবাদী উমাইয়া (661-750) এবং 'আব্বাসী (750-1258) খিলাফতের আধিপত্যের অধীনে নিকট প্রাচ্য উল্লেখযোগ্য সমৃদ্ধি অর্জন করেছিল এবং ইউরেশিয়ার অন্যতম ধনী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছিল।xxi গজিরার উমাইয়া গভর্নর মাসলামা [৭০৮-]-এর জমিতে বুওয়াইলিস, কাসিরীন, সিফফীন ও আবিদীন গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষকরা কাজ করত, এভাবে তাদের কর্মস্থানের সৃষ্টি হয়েছিল।।xxii

প্রতিবেশীদের উপকার

প্রতিবেশী দেশগুলোও উপকৃত হয়। যেমন ইথিওপিয়া, যা অন্যান্য আফ্রিকান দেশ থেকে বেশিদিন স্বাধীন ছিল, ইউরোপীয়দের সাথে ব্যবসা করে অন্যান্য আফ্রিকান দেশ থেকে তুলনামূলক বেশি অগ্রসর হয়েছিল। ইউরোপীয়রা এই শিল্প এবং প্রযুক্তিগুলি বিকাশ করতে সক্ষম হয়েছিল, যা ইথিওপিয়ানরা তাদের নিজস্ব ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করেছিল।

খিলাফাতকালঃ মধ্য-ইউরোপের ফ্র্যাংকসরা পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় লেভান্ত অঞ্চল থেকে আমদানি বাণিজ্য শুরু করলে বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয়। ফলশ্রুতিতে, পশ্চিম থেকে নিট স্বর্ণ ভাণ্ডার প্রাচ্যে চলে আসে, যা পশ্চিম ইউরোপে দারিদ্র্যের সূচনা করে। মুসলিম রাজ্য ভূমধ্যসাগরের সীমানা অবধি পৌঁছে গেলে এই সমস্যার সমাধানের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। তন্মধ্যে একটি হল, গীর্জার স্বর্ণকে মুদ্রায় রূপান্তর করে ক্যারোলিংগিয়ান ইউরোপের সাথে বাণিজ্যের সূত্রপাত করা। ফলশ্রুতিতে, সম্পদের ভারসম্য সৃষ্টি হয়।xxiii

অর্থব্যবস্থা

শাসক রাষ্ট্র শাসিতের জন্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রণয়ন করে। উদাহরণস্বরূপঃ যদি ব্রিটিশ দ্বারা শাসিত হন, তাহলে পুঁজিবাদ; চীন যদি তাইওয়ান দখল করে নেয়, তাহলে আধা সমাজতন্ত্র দ্বারা অর্থনীতি পরিচালিত হবে।

ইসলাম আসার আগে ভারতবর্ষে খুব সম্ভবত চাণক্য অর্থশাস্ত্র প্রচলিত ছিল। ইসলাম এই প্রাচীন ব্যবস্থা উৎখাত করে ইসলামি অর্থব্যবস্থা প্রণয়ন করে। এতে ভারত ব্যাপক সমৃদ্ধি লাভ করে। আওরঙ্গজেবের আমলে পুরো বিশ্বের মোট জিডিপি-র অর্ধেকের কাছাকাছি শুধু ভারত থেকেই আসতো।

বাজার দখল

জাপানি সাম্রাজ্যবাদের লক্ষ্য ছিল, পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতি জোরপূর্বক জাপানের বাজারের সাথে যুক্ত করা, এভাবে জাপান তার সাম্রাজ্য পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সংস্থান এবং আয়ের প্রবাহ থেকে অত্যন্ত উপকৃত হত, যেখানে পরাধীন জনগণ টোকিও-র অনুগত বেসামরিক সরকারের অধীনস্থ হয়ে থাকত। এটা অবকাঠামো এবং অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য তাদের অর্থনীতিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ইয়েন যোগান দিত।

অধিকন্তু তারা একটি ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেছিল, যা হিডেকি তোজোর মত লোকেদের দ্বারা WW2 চলাকালে ও WW2 এর পরে Inejiro Asanuma দ্বারা প্রচারিত হয়েছে; এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সমস্ত পশ্চিমা পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে পূর্ব এশিয়া থেকে বিতাড়িত করা এবং এভাবে জাপানকে পশ্চিমা আধিপত্য থেকে রক্ষা করা।

খিলাফাতকালঃ কনস্টান্টিনোপল দখলের পরে, উসমানীরা ধীরে ধীরে এশিয়ায় ইউরোপীয় বণিকদের যাতায়াত সংকুচিত করে আনে। ফলশ্রুতিতে, কুফফার গোষ্ঠী ব্যাপক লোকসানের মুখোমুখি হয়। এশিয়ায় বাণিজ্যের সহজ রাস্তা খুঁজতে ইউরোপীয়রা এতটাই বেপরোয়া হয়ে ওঠে যে, অথৈ আটলান্টিক মহাসাসগরে কলম্বাস অন্ধের মত জাহাজ নিয়ে যাত্রা করতে বাধ্য হয়েছিল।

বাণিজ্যের বিকাশ

আফ্রিকায় ইতালীয় উচ্চাকাঙ্ক্ষার ফলেও বাণিজ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি হত, কারণ তারা আফ্রিকা মহাদেশের বিশাল সমৃদ্ধ সম্পদ আহরণ করে তাদের শিল্পায়নকে আরও অর্থায়নের জন্য অঞ্চলগুলিকে উন্নত করতে চেয়েছিল, যা মহাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে আরও সুবিধা প্রদান করে।

খিলাফাতকালঃ The Muslim conquests seem thus to have generated an economic unit, but within a system that remained, in fact, quite regionally segmented and autonomous. It brought together regions with distinctive identities, where local exchange of subsistence goods and powerful emporia developed extensively from the early eighth century. The Near East became in early Islam a gateway between these Islamized areas that various trading diasporas interconnected with.

 

মুসলিম বিজয়গুলি এভাবে একটি অর্থনৈতিক একক তৈরি করেছে বলে মনে হয়; তবে এমন একটি ব্যবস্থার মধ্যে, যা প্রকৃতপক্ষে আঞ্চলিকভাবে বিভক্ত এবং স্বায়ত্তশাসিত ছিল। এটি স্বতন্ত্র পরিচয়ধারী অঞ্চলগুলিকে একত্রিত করেছে, যেখানে স্থানীয়ভাবে জীবিকা নির্বাহের দ্রব্যের বিনিময় এবং শক্তিশালী বাজার অষ্টম শতাব্দীর শুরু থেকে ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছিল। নিকটপ্রাচ্য ইসলামিক অঞ্চলগুলির মধ্যে বিভিন্ন অভিবাসী ব্যবসায়ীদের আন্তঃসম্পর্কযুক্ত করার একটি প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছিল।[v, পাতা ৩০]

 

রাক্কা ও হিমস থেকে রুসাফায় বাণিজ্যিক কাফেলা আসত। এটাই ছিল রুসাফার খ্রিস্টানদের প্রধান আয়ের উৎস।xxiv

কৃষির প্রসার

সাম্রাজ্যবাদের ফলে শিয়ায় তুলা, রাবার, মসলা, চা, পাট এবং উন্নত হর্টিকালচারের আবির্ভাব ঘটে।

পশ্চিম আফ্রিকার ফরাসি উপনিবেশ, ক্রমবর্ধমান উৎপাদনশীল হারে সম্পদ আহরণের জন্য ফরাসি ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষের অগ্রাধিকার লক্ষ্য করেছিল। ইউরোপ থেকে তাদের অর্থায়ন [তহবিল?] ব্যবহার করে, উপনিবেশগুলিকে ঔপনিবেশিক অর্থনীতির মধ্যে অংশগ্রহণ এবং প্রতিযোগিতাকে উত্সাহিত করার একটি পদ্ধতি হিসাবে উপহার দিয়ে তাদের চিনাবাদাম এবং তুলা উৎপাদনের প্রসার ঘটায়। যেসব এলাকায় সবজি জন্মাতে পারে, ফরাসিরা সেখান থেকে অন্যান্য অঞ্চলে অভিবাসনকে উৎসাহিত করেছিল যেখানে সামগ্রিক ঔপনিবেশিক অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য মজুরি দেওয়া যেতে পারে।

খিলাফাতকালঃ মুসলিমরা ইরাক-সিরিয়া দখলের পরে অধিবাসীদের রোমান সেচ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।xxv গজিরার উমাইয়া গভর্নর মাসলামা [৭০৮-] কৃষিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছিলেন।xxvi তিনিও রোমান সেচ প্রযুক্তির ব্যবহার করলে স্থানীয় খ্রিস্টানরা তা সমর্থন করে।xxvii

অবকাঠামোগত উন্নয়ন

ভারতবর্ষে রেল লাইন স্থাপন এর অন্যতম উদাহরণ। দক্ষিণ আফ্রিকায়, ব্রিটিশরা স্বর্ণ ও হীরার খনিগুলিতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছিল এবং এই মূল্যবান সম্পদগুলির পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন করে প্রচুর সংখ্যক খনি, রাস্তা, রেলপথ এবং বন্দর তৈরি করেছিল। ফলস্বরূপ, দক্ষিণ আফ্রিকা, কয়েক দশকের ব্রিটিশ রাজত্ব এবং বিনিয়োগের কারণে সমগ্র মহাদেশের অন্যতম আধুনিক আফ্রিকান দেশ।

খিলাফাতকালঃ খ্রিস্টান অধ্যুষিত বায়সানে বাণিজ্যিক নগরী স্থাপন তার একটি নিদর্শন।xxviii হিশাম বিন আব্দুল মালিক রুসাফাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেন, বাজার স্থাপন করেন।

শিল্পায়ন

দখলকৃত দেশে নতুন শিল্প গড়ে ওঠে। যেমনঃ ভারতে পাট ও বস্ত্রশিল্প গড়ে উঠেছিল। গোটা এশিয়ায় শিল্প যাত্রা এভাবেই শুরু হয়েছিল। নাস্তিকদের চোখে বিদেশী আক্রমণকারী মোগলরা ঢাকাই মসলিনের পৃষ্টপোষক হলেও, একথা সর্বজনবিদিত যে, সভ্য ব্রিটিশরা মসলিন শিল্পকে ধ্বংস করেছে।

গ্রীসে, ইতালির পরিকল্পনা ছিল তার অনুন্নত ইস্পাত শিল্পকে ব্যাপকভাবে বিকশিত করার, যা গ্রীসের উন্নয়নের পাশাপাশি ইতালিকে শিল্পায়নের সুযোগ দেবে, যাতে তারা একটি বৃহত্তর শক্তি থেকে বর্ধিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ থেকে উপকৃত হতে পারে। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত বেশকিছু দেশে আক্রমণ করে নিজেদের শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করেছিল এবং উৎপাদনশীল শক্তি প্রস্তুত করেছিল।

খিলাফাতকালঃ প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হলে ইহুদি কৃষকরা শহরে চলে আসে এবং কারুশিল্পে কাজ করা শুরু করে।xxix এভাবে ৮ম থেকে ১০ম শতাব্দী অবধি বাগদাদে দেশান্তর হওয়া ইহুদিরা শক্তিশালী সম্প্রদায় হয়ে ওঠে এবং কারখানা, গণ গোসলখানা, জলপাই পেষণ কারখানা, সরাইখানা ও চুলা-র ব্যবসা শুরু করে।xxx

মুসলিম শাসনামলে মৃৎ শিল্প, কাচ শিল্প, স্ত্র শিল্প, তেল কারখানা ও পানিচালিত কারখানার বিকাশ ঘটে। [v, ৪র্থ অধ্যায়] বাংলায় পড়ুন ডঃ মোঃ রফিকুল আলমের 'ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি'

শহরায়ন

পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ইউরোপীয়রা উন্নত শহর প্রতিষ্ঠা করে, যা স্বাধীনতা-উত্তর আফ্রিকার অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করেছিল। সোভিয়েত বাল্টিক দখল করেছিল নৌ-বন্দর অর্জনের উদ্দেশ্যে, কারণ লেনিনগ্রাদ অধিকাংশ সময় বরফে আচ্ছাদিত থাকত।

খিলাফাতকালঃ আব্বাসীরা পারস্যের নগর পরিকল্পনা নীতি ব্যবহার করত।

With the rise of the ‘Abbasids, Persian concepts of city planning were added to the pot and a mature urban model began to emerge...Such descriptions show that in terms of size and facilities, cities in the ‘Abbasid era did not compare badly with their antique predecessors, and they greatly outstripped their medieval European counterparts. Only in China were there cities to rival those of Islam in wealth, size and sophistication.

 

এই ধরনের বর্ণনাগুলি দেখায় যে, আকার এবং সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে, 'আব্বাসী যুগের শহরগুলি তাদের প্রাচীন পূর্বসূরীদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে খারাপ ছিল না এবং তারা তাদের মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় সমকক্ষদের ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সম্পদ, আয়তন ও পরিশীলিততায় ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো শহর কেবল চীনেই ছিল।[xxvi, ৫৬ পাতা]

সামাজিক উন্নয়ন

রাষ্ট্রব্যবস্থা

শাসক রাষ্ট্র শাসিতের জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রণয়ন করে। উদাহরণস্বরূপঃ রাশিয়া যদি ইউক্রেন দখল করে নেয়, তাহলে সেখানে উদারবাদের মৃত্যু হবে; আবার ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের সংবিধান যুক্তরাষ্ট্র লিখে দিয়েছিল।

ইসলামপূর্ব যুগে উন্নত সরকার ব্যবস্থা ছিল না। মোড়ল বা পঞ্চায়েত নিয়ন্ত্রিত সমাজের প্রচলন ছিল- এই সামাজিক ব্যবস্থা সম্ভবত ঐতিহ্যে আবদ্ধ থাকত এবং অনুন্নত আঞ্চলিক ব্যবস্থার অধীনে আধুনিক রূপ লাভ করত না। কারণ সামাজিক প্রযুক্তিগুলি একটি ভিন্ন সভ্যতা এবং চিন্তাধারা থেকে উদ্ভূত হয়েছে।

পিডিএফঃ রাসূল স. এর সরকার কাঠামো

ইসলামে রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার মূলনীতি

আল- কুরআনে রাষ্ট্র ও সরকার

আইন ব্যবস্থা

শাসক রাষ্ট্র শাসিতের জন্য আইন ব্যবস্থা প্রণয়ন করে। উদাহরণস্বরূপঃ ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের সংবিধান যুক্তরাষ্ট্র লিখে দিয়েছিল।

ইসলাম পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম আধুনিক লিখিত সংবিধানের প্রণয়ন করে। আজও মুহাম্মাদ [সাঃ]-কে পশ্চিমা বিশ্ব শ্রেষ্ঠ আইন প্রণেতা মনে করে।xxxi

সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধন

জোর করে স্থানীয় সংস্কৃতির পরিবর্তন করা ইসলামের স্বভাব নয়। বরং প্রজার বৈশিষ্ট্য হল, সে সম্রাটের সংস্কৃতিকে আভিজাত্যের প্রতীক মনে করে তা অনুসরণের ইচ্ছা করবে। ফলশ্রুতিতে, আঞ্চলিক সংস্কৃতিতে কিছু পরিবর্তন আসে। যেমনঃ মুসলিমরা ইউরোপে কফি পানের প্রচলন করেছিল।

কিছু ক্ষেত্রে জোরপূর্বক সাংস্কৃতিক পরিবর্তন করা মানবতার দাবি। যেমনঃ প্রাচীন হিন্দু সমাজে প্রচলিত সতীদাহ ও কাপালিক কর্তৃক নরবলি দেয়ার প্রথা বন্ধ করা ঈমানের দাবি।

শিক্ষার প্রসার

ইংরেজরা উপমহাদেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে, কারণ প্রশাসন পরিচালনার জন্য জনবলের দরকার ছিল। এভাবে শিক্ষার বিকাশ ঘটে।

তবে একটা লক্ষণীয় তফাৎ হল, মুসলিম শাসন আমলে হিন্দু ধর্মের মাঝে হিন্দুবিদ্বেষীদের কথা জানা যায় না, যেমনটা ব্রিটিশ শাসনের সময়ে দেখা যায়। ব্রিটিশদের শিক্ষা ব্যবস্থা-ই হিন্দুদের মাঝে 'ইয়ং বেঙ্গল'-এর আবির্ভাব ঘটায়, যার সদস্যরা গোমাংস ভক্ষণ করত এবং নারীলোভী-মদ্যপ ছিল। মাইকেল মধুসূদন দত্ত সম্ভবত ইয়ং বেঙ্গল-কে উদ্দেশ্য করে 'একেই কি বলে সভ্যতা' রচনা করেন। উল্লেখ থাকে যে, মাইকেল নিজেও একজন প্রাক্তন ইয়ং বেঙ্গল সদস্য।

এই বাস্তবতা স্বীকার করতে হবে যে, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রভাব ছাড়া জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার হয়তো কখনো ঘটত না, কিংবা অন্তত দীর্ঘকাল পরে হত।

খিলাফাতকালঃ the patronage which the ‘Abbasid courts at Baghdad and Samarra offered to scholars, artists, poets and many others ensured that Iraq exported cultural, architectural and intellectual models across the dar al-islam even after the ‘Abbasids’ political fortunes faltered…

 

বাগদাদ এবং সামারার আব্বাসীয় আদালত পণ্ডিত, শিল্পী, কবি এবং আরও অনেককে যে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল, তা ইরাকে দার আল-ইসলামের নানা প্রান্ত থেকে সাংস্কৃতিক, স্থাপত্য এবং বুদ্ধিবৃত্তিক মডেল রপ্তানি করেছে, এমনকি 'আব্বাসীদের' রাজনৈতিক ভাগ্য নষ্ট হওয়ার পরেও।xxxii

কারুশিল্প

খিলাফাতকালঃ it is somewhat ironic that the roots of this so-called Christian architecture of the Catholic faith are actually grounded in the Abbasid caliphate and the Islamic Golden Age.

 

এটা কিছুটা বিদ্রূপাত্মক যে, ক্যাথলিক বিশ্বাসের এই তথাকথিত খ্রিস্টান স্থাপত্যের [গোথিকের] শিকড় আসলে আব্বাসীয় খিলাফত এবং ইসলামী স্বর্ণযুগে নিহিত।xxxiii

 

During the Islamic Golden Age, great calligraphers were more famous and more richly rewarded than any other type of artist.

 

ইসলামের স্বর্ণযুগে, দক্ষ ক্যালিগ্রাফাররা অন্য যেকোনো ধরনের শিল্পীর চেয়ে বেশি বিখ্যাত এবং অনেক বেশি পুরস্কৃত ছিলেন।

 

Lusterware is a technique allowing a luster glaze to be painted onto an already decorated ceramic surface before being fired in a kiln for a second time… The technique became highly prized, spreading across the Muslim world before eventually being discovered and copied by Western potters.

 

লাস্টারওয়্যার হল এমন একটি কৌশল যা একটি উজ্জ্বল চকচকে প্রলেপ একটি ইতিমধ্যে সজ্জিত সিরামিক পৃষ্ঠের উপর আঁকা হয়, ভাটিতে দ্বিতীয়বার পোড়ানোর আগে।...পশ্চিমা কুমোরদের দ্বারা আবিষ্কৃত এবং অনুলিপি করার আগে এই কৌশলটি মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং অত্যন্ত মূল্যবান হয়ে ওঠে।

উপাসনালয়ের সংরক্ষণ

কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে, "আল্লাহ যদি মানব জাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে বিধ্বস্ত হয়ে যেত খ্রিষ্টান সংসার-বিরাগীদের উপাসনা স্থান, গীর্জা, ইয়াহুদীদের উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ; যাতে অধিক স্মরণ করা হয় আল্লাহর নাম"[সূরা হাজ্জ্ব ৪০]

 

উসমানীরা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রীক গীর্জাকে ক্ষতিপূরণ দিত।

 

অন্যদিকে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে র‍্যালফ নাদেরের নিবন্ধ থেকে কিঞ্চিৎ অংশ-

The recent raid on the Abu Hanifa mosque in Baghdad for suspected insurgents pushes the threshold and expands the arenas of unbridled discretion. Even an official dispatch by the American Forces Information Services quoted a senior defense official in Baghdad regarding the raid that was staged after Friday prayers as saying it “could have been timed better,” adding “We still have after-action critiquing to do”.

There is the additional provocation to many Muslims of U.S. forces or directed forces using the seized Mosques as military occupation public address systems replacing the historic daily call to prayer by muezzins.”xxxiv

আমেরিকা কর্তৃক ফাল্লুজাহ-তে মসজিদ ধ্বংসের প্রমাণ[পড়ুন- ইসলামি রাষ্ট্রে ধর্মপালনের অধিকার]

তাওহীদের প্রসার

যদিও ইসলাম জোরপূর্বক ধর্মান্তরের দ্বারা প্রচার হয় নি, তবে বিস্তারবাদের ফলে মুসলিমদের পক্ষে এমন উপায়ে কাফিরদের সংস্পর্শে আসা সহজ হয়েছে যে, উল্টো নিজের ঈমান ধ্বংসের ঝুঁকি ছিল না। মার্কসের লেখা The British Rule In India from 10th June 1853-তে এটি স্পষ্ট করা হয়েছে। মার্কস লিখেছেন:

We must not forget that these idyllic village-communities, inoffensive though they may appear, had always been the solid foundation of Oriental despotism, that they restrained the human mind within the smallest possible compass, making it the unresisting tool of superstition, enslaving it beneath traditional rules, depriving it of all grandeur and historical energies. We must not forget the barbarian egotism which, concentrating on some miserable patch of land, had quietly witnessed the ruin of empires, the perpetration of unspeakable cruelties, the massacre of the population of large towns, with no other consideration bestowed upon them than on natural events, itself the helpless prey of any aggressor who deigned to notice it at all. We must not forget that this undignified, stagnatory, and vegetative life, that this passive sort of existence evoked on the other part, in contradistinction, wild, aimless, unbounded forces of destruction and rendered murder itself a religious rite in Hindustan. We must not forget that these little communities were contaminated by distinctions of caste and by slavery, that they subjugated man to external circumstances instead of elevating man the sovereign of circumstances, that they transformed a self-developing social state into never changing natural destiny, and thus brought about a brutalizing worship of nature, exhibiting its degradation in the fact that man, the sovereign of nature, fell down on his knees in adoration of hanuman, the monkey, and Sabbala, the cow.”

আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে এই আদর্শিক গ্রাম-সম্প্রদায়গুলি, যদিও তারা আক্রমণাত্মক নয় বলে মনে হতে পারে, তবে সর্বদাই প্রাচ্যের স্বৈরতন্ত্রের[!!!] শক্ত ভিত্তি ছিল, তারা মানুষের মনকে সম্ভাব্য ক্ষুদ্রতম পরিধির মধ্যে সীমিত করেছিল, এটিকে কুসংস্কারের অপ্রতিরোধ্য হাতিয়ারে পরিণত করেছিল, এটিকে ঐতিহ্যগত নিয়মের অধীনে দাসে পরিণত করেছিল, এটিকে সমস্ত মহিমা এবং ঐতিহাসিক শক্তি থেকে বঞ্চিত করেছিল। দুঃখজনক ভূখণ্ডে মনোযোগ দিয়ে আমাদের সেই বর্বর অহংবোধকে ভুলে যাওয়া উচিত নয় যা নিঃশব্দে সাম্রাজ্যের ধ্বংস প্রত্যক্ষ করেছিল, অকথ্য নিষ্ঠুরতার সংঘটন, বৃহৎ শহরের মানুষদের গণহত্যা, প্রাকৃতিক ঘটনা ছাড়া যার উপর কোন বিবেচনার আশীর্বাদ আসে নি, সে নিজেই যে কোনও অনুগ্রহশীল সর্বদ্রষ্টা আগ্রাসীর অসহায় শিকার। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, এই অমার্জিত, স্থবির এবং নিরামিষভোজী, নিষ্ক্রিয় জীবন তার বিপরীতে, বন্য, লক্ষ্যহীন, ধ্বংসের সীমাহীন শক্তি এবং হত্যাকে হিন্দুস্তানে একটি ধর্মীয় আচার হিসাবে পরিণত করতে আহ্বান করেছে। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, এই ছোট সম্প্রদায়গুলি বর্ণপ্রথা এবং দাসত্ব দ্বারা কলুষিত হয়েছিল, তারা মানুষকে পরিস্থিতির রাজা বানানোর পরিবর্তে বাহ্যিক পরিস্থিতির প্রজা বানিয়েছিল, তারা একটি স্ব-উন্নয়নশীল সামাজিক রাষ্ট্রকে অপরিবর্তনশীল প্রাকৃতিক ভাগ্যে রূপান্তরিত করেছিল, এবং এভাবে প্রকৃতির রাজা মানুষকে বানর হনুমান বা সাব্বালা গাভীর সামনে অবনত করার দ্বারা নৃশংস প্রকৃতিপূজা ও অবক্ষয় প্রদর্শন করেছিল।"

উল্লেখ্য যে মার্কস যখন নিবন্ধের এই অংশগুলো লিখেছিলেন, তখন ইংরেজরা কতটা খারাপ এবং শোষক সে সম্পর্কে জনগণের সৌজন্যতাবোধে নাড়া দেয়ার জন্য তিনি আগে থেকেই প্রচুর নৈতিকতাবাদী বক্তব্য ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে শুধু অলংকারসমৃদ্ধ অনুরোধ ছাড়া আর কিছুই নেই, যেহেতু মার্কসবাদীরা স্পষ্টতই নৈতিকতার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে; কারণ নৈতিকতা পুঁজিবাদী কাঠামোর একটি সৃষ্টি, যা পুঁজিবাদ বজায় রাখতে সহায়তা করে। মার্কসও খোলাখুলিভাবে প্রথাগত ভারতীয় সংস্কৃতিকে স্বৈরাচারী এবং আদিম রহস্যবাদে পূর্ণ বলে উপহাস করেন এবং সমালোচনা করেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল শেষ অংশে তিনি যা লিখেছেন তা, সেটা আমরা আগে উল্লেখ করেছিলাম

আমি এখানে যা বুঝাতে চাইছি তা হল, মার্ক্সের চোখে, হিন্দু ধর্ম মানুষকে অসম্মানিত করেছে, এজন্য ইংরেজদের মত শাসক তাদের প্রয়োজন আছে। আমরাও একই কথা মনে করি; আর একারণেই রাজ্যবিস্তার করি, যেন শিরক থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়া সহজ হয়।

সভ্যতার জনক

সভ্যতা হল তা, যা ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করতে পারে। নতুবা সে ইতিহাসের অবহেলিত ও উপেক্ষিত চরিত্র। ক্ষমতার প্রয়োগও বিপরীতভাবে সভ্যতার জন্ম দেয়। তারা পরস্পরের চালিকাশক্তি। তাই রাজ্যবিস্তার সভ্যতার অগ্রদূত। আর্নল্ড টোয়েনবি কিংবা রুডইয়ার্ড কিপলিং আপনাকে তা ব্যাখ্যা করবে। এছাড়াও René Girard, Eric Gans Adam Katz রাজ্যবিস্তারকে সংস্কৃতি ও ভাষার জনক হিসাবে দেখেন।

দেখুন ডঃ মুহাম্মদ ইব্রাহীম খলিলের 'ইসলামি সভ্যতা'

জাতির জনক

হানস কোন মনে করতেন, সাম্রাজ্যবাদের মাঝে সংহতির শক্তি আছে। সাম্রাজ্যবাদের ফলে ইউরোপ ও এশিয়ার সেতুবন্ধন হয়েছিলxxxv

রাজ্যবিস্তারের ফলে নতুন জাতির উদ্ভব হতে পারে। যেমনঃ আমেরিকা মহাদেশে ইউরোপীয়দের উপনিবেশের ফলে আমেরিকান জাতির উদ্ভব; প্রাচীন পৌত্তলিক প্রুশিয়ায় ক্রুসেডারদের অভিযানের ফলে কালক্রমে আধুনিক জার্মানির উদ্ভব। আর ইসলামের উদাহরণ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। পৃথিবী জুড়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে রেখেছে। অটোমান সাম্রাজ্য, একটি বহুজাতিক রাষ্ট্র ছিল যাতে তুর্কি, আরব, কুর্দি এবং অন্যান্য অনেক গোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত ছিল। উসমানীয় সাম্রাজ্য ইসলামী আইন ও প্রতিষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল, যা এর বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সাধারণ পরিচয় ও উদ্দেশ্যের বোধ তৈরি করতে সাহায্য করেছিল।

কালোডাক

এই পর্যায়ে এসে কোন ইসলামবিদ্বেষী ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলের জন্য বলতে পারে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনের উপরে, ভারত কাশ্মীরের উপরে, চীন উইঘুরদের উপরে সাম্রাজ্যবাদ চাপিয়ে আমাদের ওষুধ আমাদের উপরে প্রয়োগ করছে।

দুঃখজনকভাবে এই অহেতুক প্রশ্ন তাদের দৃষ্টিতে খুবই যৌক্তিক। এই প্রশ্নের উত্তর দুটি। প্রথম জবাব, উস্তাদ আব্দুল্লাহ আন্দালুসী [হাফিঃ] লিখেছেন,

The basis behind this question, is actually a faulty assumption. The assumption is, that our criticism of the Zionist movement is simply their take over of an area of land within the Muslim world. This is not the case...The issue at hand, that we must raise and contend for all mankind to witness, is the injustice perpetrated by the Zionist regime against indigenous Palestinians, removing them from their homes, destroying their homes, killing them, harassment, building walls, cutting off or controlling their supplies, torture etc etc...To illustrate this, Muslims tend not to raise issue with Singapore, even though Singapore was created by British colonialism and the transfer of significant quantities of Chinese labourers. The difference between ‘Israel’ and Singapore, is that Singapore wasn’t created by kicking out Malays off the land, or bringing in a number of Chinese who had the intent to create a nation-state for their ethnic group (they were simply labourers that the British brought in, whose descendants were made citizens in a new state after the fact). Singapore stands today as an independent state with a majority Chinese demographic.”

এই প্রশ্নের ভিত্তি আসলে একটি ত্রুটিপূর্ণ অনুমান. অনুমানটি হল, ইহুদিবাদী আন্দোলনের প্রতি আমাদের আপত্তি হল - তারা মুসলিম বিশ্বের একটি ভূখণ্ড দখল করছে এটা। ব্যাপারটা এমন নয়... যে বিষয়টি আমাদের সামনে উত্থাপন করতে হবে এবং সমস্ত মানবজাতিকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য লড়াই করতে হবে, তা হল আদিবাসী ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত অবিচার, তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে দেওয়া, তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করা, তাদের হত্যা করা, হয়রানি করা, দেয়াল নির্মাণ, তাদের রসদ সরবরাহ বন্ধ করা বা নিয়ন্ত্রণ করা, নির্যাতন ইত্যাদি ইত্যাদি... এটা বোঝানোর জন্য, মুসলিমরা সিঙ্গাপুরের সাথে ইস্যু উত্থাপন করে না, যদিও সিঙ্গাপুর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণে চীনা শ্রমিকদের স্থানান্তর দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল। 'ইসরায়েল' এবং সিঙ্গাপুরের মধ্যে পার্থক্য হল যে সিঙ্গাপুর মালয়দের ভূমি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে বা তাদের জাতিগত গোষ্ঠীর জন্য একটি জাতি-রাষ্ট্র তৈরির অভিপ্রায়ে কিছু সংখ্যক চীনাদের নিয়ে এসে দ্বারা তৈরি হয়নি। (তারা কেবল শ্রমিক ছিল যাদের ব্রিটিশরা এনেছিল, যাদের বংশধরদেরকে নতুন রাষ্ট্রে নাগরিক করা হয়েছিল)। সিঙ্গাপুর আজ সংখ্যাগরিষ্ঠ চীনা জনসংখ্যার সাথে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে দাঁড়িয়েছে.”xxxvi

দ্বিতীয় জবাব, উস্তাদ দানিয়েল হাকিকাতজু নাস্তিক আরন রা-এর সঙ্গে বিতর্কের সময় প্রশ্ন-উত্তর পর্বে ভারতে মুসলিম নিপীড়ন নিয়ে দিয়েছিল যে, সাম্রাজ্যবাদের ব্যাপারে আমার আপত্তি শুধু তাওহীদ নিয়ে। আমি সেই জবাবকে নিজের ভাষায় আরেকটু বিস্তৃত করেছি পরের অংশে।

ইসলামি রাজ্যবিস্তার বনাম পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ

এখন প্রশ্ন হতে পারে যে, কাফিরদের সাম্রাজ্যবাদের ফলে যদি একই সুফল পাওয়া যায়, তাহলে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব কিসে? পড়ুনঃ মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কি হারালো?

ইসলামে স্বাধীনতার ধারণা

সাইয়েদ ওয়াজেহ রশিদ নদভি বলেন, "ইসলামে স্বাধীনতার ধারণা এক আল্লাহর নিঃশর্ত দাসত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মূলত এক আল্লাহর দাসত্বের মাধ্যমে মুমিন পৃথিবীর অন্য সব দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে যায়।

সে জীবন, সম্মান-খ্যাতি, ধন-সম্পদের মোহ থেকে স্বাধীন হয়ে যায় এবং নিজের ইচ্ছা ও প্রবৃত্তিকে আল্লাহর ইচ্ছাধীন করে দেয়। মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ‘জীবন’ মুমিনের দৃষ্টিতে আল্লাহ প্রদত্ত আমানত। এ জন্য আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী জীবনযাপন করা এবং তাঁর সন্তুষ্টির জন্য জীবন উৎসর্গ করা তার কাছে সম্মান ও সৌভাগ্যের বিষয়"xxxvii

আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা ভোগ এবং স্বেচ্ছাচারিতা এক কথা নয়

উদারবাদে স্বাধীনতার ধারণা

ভিত্তিগত তফাৎ

ইসলামী বিজয় ও সাম্রাজ্যবাদ (জোরপূর্বক আধিপত্য বিস্তার) দুটি পরস্পরবিরোধী জিনিস। ইসলামের বিজয়যাত্রা মানুষকে দাসত্ব থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য। পারস্যের সেনাপতি রুস্তমের সামনে রিবয়ি ইবনে আমের (রা.) যেমনটি বলেছিলেন—‘আল্লাহ আমাদের পাঠিয়েছেন যেন আমরা তাঁর বান্দাদের মানুষের দাসত্বের থেকে মুক্ত করে কেবল তাঁর দাসত্বের দিকে এবং পৃথিবীর সংকীর্ণতা থেকে ইসলামের ন্যায়বিচারের দিকে নিয়ে যাই।’

ইসলাম মানুষের দাসত্ব ও তাদের প্রতি দাসসুলভ আচরণকে অভিশাপ মনে করে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) মিসরের শাসক আমর ইবনুল আস (রা.)-এর ছেলের আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, তোমরা কবে মানুষকে দাসে পরিণত করলে, অথচ তার মা তাকে স্বাধীন হিসেবে জন্ম দিয়েছিল।’ বিপরীতে সাম্রাজ্যবাদ মানুষকে দাসত্বের শিকলে বাঁধতে চায়। তারা মানুষের চিন্তা-ভাবনার স্বাধীনতা, শিক্ষা-সংস্কৃতির স্বাধীনতা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, ব্যক্তির গোপনীয়তা রক্ষার স্বাধীনতা, ধর্মপালনমূল্যবোধের স্বাধীনতা হরণ করে। সর্বগ্রাসী দাসত্বে দেশ ও জাতির সমূহ সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে যায় এবং স্থায়ী হয় সাম্রাজ্যবাদী শাসন।

 

উপসংহার

ইতিহাস জুড়ে অনেক সাম্রাজ্য নিঃসন্দেহে পরাধীন জনগোষ্ঠীর সাথে মোকাবিলা করার সময় নৃশংস এবং ধ্বংসাত্মক পন্থা প্রয়োগ করেছে, কখনও কখনও অন্যদের তুলনায় কম ন্যায়সঙ্গতভাবে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদকে এমন পদ্ধতিতেও বাস্তবায়িত করা যেতে পারে যা পরাধীন সমাজের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সামাজিক কাঠামো এবং মঙ্গলকে সম্মান করে, রক্ষা করে এবং এমনকি উন্নত করে, যদি না অতিরিক্ত ঘৃণ্য কিছু থাকে। যেমনঃ নরবলি, সতীদাহ ইত্যাদি

সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে 'নিপীড়ন' এবং 'সাংস্কৃতিক গণহত্যা'র নৈতিকতাবাদী আপত্তিগুলি সামান্য-ই বিতর্কের যোগ্য। সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের জন্য বিজিত গোষ্ঠীগুলিকে ধ্বংস করার অন্তর্নিহিত ও অবিচ্ছেদ্য প্রয়োজনীয়তা নেই, যদিও আপত্তিকারীগণ এভাবে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করে থাকআমরা দেখিয়েছি যে, কেউ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী নৈতিক যুক্তি দিতে পারে না, যদি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তার অধীনস্থ জাতিগুলির সাথে আইনতভাবে সাম্রাজ্যের মূল জনসংখ্যার মত মুটামুটি একই আচরণ করে, আর ইসলাম এই ব্যাপারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এক্ষেত্রে The imam of the christians বইটি দেখা যেতে পারে। সেখানে যিম্মি খ্রিস্টানদের সাথে মুসলিমদের রাজনৈতিক সহাবস্থানের চিত্র তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ব্যতিক্রম এই যে, যেহেতু পরাজিতরা একটি ভিন্ন গোষ্ঠী, সেহেতু রাষ্ট্র কিছু বিচ্ছিন্নতার সম্মুখীন হতে পারে। যেমনঃ বলকান অঞ্চলে শাসন ব্যবস্থা তুলনামূলক কঠোর ছিল, কারন সেখানে নিয়মিত বিদ্রোহ লেগে থাকত।

সর্বোপরি, সাম্রাজ্যবাদের উপর আপত্তি সকল ঐতিহাসিক, জৈবিক, ধর্ম, সভ্যতা এবং নীতি-বিরোধী। ইসলামের সম্প্রসারণবাদকে খারাপ মনে করার এবং সেকারণে মুসলিম হিসাবে হীনমন্যতার কোন কারণ নেই। বরং আপনার উচিত ইসলামি বিস্তারবাদকে মজবুত করার জন্য শ্রম দেয়। আজ যেসব NPC, normie আপনাকে অপমানের চেষ্টা করছে, তারাই পরাজিত হলে স্যালুট ঠুকবে। এটাই মনস্তাত্বিক ও বস্তুগত বাস্তবতা।

আল্লাহ অধিক জানেন।

 

Endnote

 

i The incoherence of Marxist ethics (2021) YouTube. Keith Woods. Available at: https://youtu.be/Smtv4qIEWz0 (Accessed: January 8, 2023).

ii BULLIET, R. (1979) Conversion to Islam in the Medieval Period: An Essay in Quantitative History (Cambridge MA: Harvard University Press) 44–6; MORONY, M. (1990) ‘The Age of Conversions: A Reassessment’, in M. Gervers and R. J. Bikhazi (eds.) Conversion and Continuity. Indigenous Christian Communities in Islamic Lands (Toronto: Pontifical Institute of Mediaeval Studies) 135–50

iii BRETT, M. (1973) ‘The Spread of Islam in Egypt and North Africa’, in M. Brett (ed.) Northern Africa: Islam and Modernization (London: Cass) 1–12; LAPIDUS, I. (1972) ‘The Conversion of Egypt to Islam’, Israel Oriental Studies 2: 248–62.

iv Bessard, F. (2020) “The Historical Context,” in Caliphs and merchants: Cities and economies of power in the Near East (700-950). 1st edn. Oxford, UK: Oxford University Press, pp. 18–19.

v Sahner, C.H.C. (2018) How did the christian Middle East become predominantly Muslim?, University of Oxford. Available at: https://www.ox.ac.uk/news/arts-blog/how-did-christian-middle-east-become-predominantly-muslim (Accessed: January 25, 2023).

vi a) Times, G. (2022) Indentured by hegemony - US builds slavery empire by exploiting other countries, Global Times. Available at: https://www.globaltimes.cn/page/202207/1269931.shtml (Accessed: January 10, 2023). b) Hudson, M. (2021) The neoliberal exploitation under a super-imperialism lense: Michael Hudson an invisible empire, Michael Hudson | On finance, real estate and the powers of neoliberalism. Available at: https://michael-hudson.com/2021/11/the-neoliberal-exploitation-under-a-super-imperialism-lense/ (Accessed: January 10, 2023).

vii উমাইয়াদের শাসনামলে, আল-তাবারি বলেছেন যে, অবশিষ্টাংশ স্থানীয় দেওয়ানের প্রাদেশিক আর্থিক কর্মকর্তারা দামেস্কে পাঠিয়েছিলেন - 722-3 সালে, উদাহরণস্বরূপ, মদিনার দেওয়ানের দায়িত্বে থাকা অফিসার ইবনে হুরমুজ প্রতি বছর আরবের স্থানীয় বার্ষিক রাজস্বের অবশিষ্ট অংশ খলিফা ইয়াজিদ বিন আবদ আল-মালিককে (৭২০-) ফেরত দিতেন। প্রাদেশিক গভর্নররা স্থানীয় অভিজাতদের কাছে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে পারতেন, যেমনটি ছিল অষ্টম শতাব্দীর প্রথম দিকের ইফ্রিকিয়ায়। খলিফা দ্বিতীয় উমর (717-20) প্রতি বছর ইফ্রিকিয়ার আর্থিক রাজস্ব দশজন বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দলের কাছ থেকে পেতেন, যারা শপথের অধীনে নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন যে স্থানীয় সৈন্যরা তাদের পেনশন ('আটা') এবং শিশুরা তাদের খাবার পাচ্ছে। AL-ṬABARĪ, Secunda Series (1964) 1450; KENNEDY, H. (1995) ‘The Financing of the Military in the Early Islamic State’, in A. Cameron (ed.) The Byzantine and Early Islamic Near East. States, Resources and Armies 3 (Princeton: Darwin Press) 376.

viii HARRAK A. (1999) The Chronicle of Zuqnīn (Toronto: Pontifical Institute) 192. জুকনিন গজিরাতে কার্টমিন মঠের সন্ন্যাসী আইজ্যাকের কথা উল্লেখ করেছেন, যিনি অষ্টম শতাব্দীর শেষভাগে আল-মানসুরের রাজত্বকালে রৌপ্য ও সোনার রসায়ন অনুশীলন করছিলেন।

ix মুগনীল মুহতাজ, /১২০

xA study of history, Vol 1, p. 241

xi Langley, L. (2021) Do animals go to war?, Animals. National Geographic. Available at: https://www.nationalgeographic.com/animals/article/160130-animals-insects-ants-war-chimpanzees-science (Accessed: January 11, 2023).

xii Kohn, M. and Reddy, K. (2023) Colonialism, Stanford Encyclopedia of Philosophy. Stanford University. Available at: https://plato.stanford.edu/entries/colonialism/ (Accessed: January 19, 2023).

xiiiA study of history, Vol 2, p. 312-313

xivHarris has no sense of how dangerous it is, given the strength of U.S. military power and the country’s track record of self-interested aggression, to produce thought experiments that equate “necessary and limited self-defensive action” with “erring on the side of genocidal nuclear warfare.”...with Harris: If you say that we would only be justified in nuking an aggressively violent nuclear-armed Muslim country, but elsewhere you suggest that Islam is inherently aggressively violent, it is not wrong for critics to argue that you have produced a justification for mass murdering Pakistanis at will. Massey, E. and Robinson, N. j. (2018) Being mr. reasonable ❧ current affairs, Current Affairs. Available at: https://www.currentaffairs.org/2018/10/being-mr-reasonable (Accessed: 14 June 2023).

xvএথনোপ্লুরালিজম হল একটি রাজনৈতিক ধারণা যা সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মূল্য দেয় এবং একটি সমাজের মধ্যে বিভিন্ন জাতিগত ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহাবস্থানের উপর জোর দেয়। নৃতাত্ত্বিকতাবাদীরা যুক্তি দেখান যে বিভিন্ন গোষ্ঠীকে তাদের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক পরিচয় বজায় রাখার অনুমতি দেওয়া উচিত এবং রাষ্ট্রের উচিত বহুসংস্কৃতিবাদ এবং বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মানের প্রচারের মাধ্যমে এটি সহজতর করা। নৃতাত্ত্বিকতাবাদ অগত্যা পৃথক জাতি-রাষ্ট্রের সৃষ্টি বা একটি গোষ্ঠীর উপর অন্য গোষ্ঠীর বিশেষাধিকারকে বোঝায় না, বরং একটি আরও সুরেলা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ তৈরি করতে চায় যা মানুষের মাঝে বৈচিত্র্যকে মূল্য দেয় এবং উদযাপন করে।

xviশান্তিবাদ এবং অহিংসার প্রতি টলস্টয়ের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা তার স্বতন্ত্র এবং সম্ভবত খ্রিস্টধর্মের আদর্শিক ব্যাখ্যা থেকে উদ্ভূত। টলস্টয় তার উপন্যাস 'আনা কারেনিনা' প্রকাশের পর গভীর ব্যক্তিগত সঙ্কটের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন এবং সান্ত্বনার জন্য খ্রিস্টধর্মের দিকে ঝুঁকেছিলেন। খ্রিস্টধর্মের প্রতি টলস্টয়ের আগ্রহ ছিল মূলত নৈতিক এবং মানবতাবাদী, স্পষ্টতই ধর্মীয় নয়।

xviiThe historical evolution of modern nationalism, 1931, p. 308.

xviii Pasa, D. (2023) The Algerian genocide: How France killed millions of Muslims, Muslim Skeptic. Available at: https://muslimskeptic.com/2021/07/04/algerian-genocide-france/ (Accessed: 14 June 2023).

xixGilley, B. (2018) The case for colonialism, NAS. Available at: https://www.nas.org/academic-questions/31/2/the_case_for_colonialism (Accessed: January 19, 2023).

xx WARD-PERKINS, B. (2005) The Fall of Rome and the End of Civilization (Oxford: Oxford University Press) 88–120; HEATHER, P. (2000) ‘State, Lordship and Community in the West (c. A.D. 400-600)’, in The Cambridge Ancient History: Late Antiquity, Empire and Successors 14 (Cambridge: Cambridge University Press) 437–51.

xxi LAVAN, L. (2012) ‘From polis to emporion? Retail and Regulation in the Late Antique City’, in C. Morrisson (ed.) Trade and Markets in Byzantium (Washington DC: Dumbarton Oaks Publications) 365–6.

xxii AL-BALĀḎ URĪ (1866) 151.

xxiii LOMBARD, M. (1947) L’Or Musulman au Moyen Age (Paris: Annales ESC).

xxivMADELUNG, W. (1986) ‘Apocalyptic Prophecies in Ḥ imṣ in the Umayyad Age’, Journal of Semitic Studies 31(2): 141–85. YĀQŪT (1957) Mu‘ǧam al-buldān 3 (Beirut: Dār Ṣādir) 47–8. SHAHID, I. [1995] (2002) Byzantium and the Arabs in the Sixth Century (Washington DC: Dumbarton Oaks) 342. AL-BALĀḎ URĪ (1866) 179. MEINECKE, M. (1995) ‘Raqqa on the Euphrates: Recent Excavations at the Residence of Hārūn al-Rašīd’, in S. Kerner (ed.) The Near East in Antiquity 2 (‘Ammān) 17–32; ROBINSON, Ch. (2003) ‘Ar-Raqqa in the Syriac Historical Tradition’, in S. Heidemann (ed.) Raqqa, Die Islamische Stadt, 2 (Mainz: Von Zabern) 81–5; HEIDEMANN, S. (2006) ‘The History of the Industrial and Commercial Area of ‘Abbāsid al-Raqqa, called al-Raqqa al-Muḥtariqa’, BSOAS 69: 33–52; HENDERSON, J., CHALLIS, K., O’HARA, S., McLOUGHLIN, S., GARDNER, A., PRIESTNALL, G. (2002) ‘The Raqqa Ancient Industry Project’, Antiquity 76: 33–4.

xxv WICKHAM, C. (2005) 241; KENNEDY, H. (2011) ‘Great Estates and Elite Lifestyles in the Fertile Crescent from Byzantium and Sasanian Iran to Islam’, in A. Fuess, J.-P. Hartung (eds.) Court Cultures in the Muslim World: Seventh to Nineteenth Centuries, (London: Routledge) 54–79; (2014) ‘Landholding and Law in the Early Islamic State’, in J. Hudson, A. Rodriguez (eds.) Diverging Paths? The Shapes of Power and Institutions in Medieval Christendom and Islam (Leiden: Brill) 159–81.

xxvi AL-BALĀḎ URĪ (1866) 284. IBN HAWQAL (1939) Kitāb sūrat al-ar d (Leiden: Brill) 242–3.

xxvii MORONY, M. G. (1991) ‘The Aramaean Population in the Economic Life of Early Islamic Iraq’, ARAM 3/1–2: 1–6. উদাহরণ স্বরূপ, হাসান আল-নাবাতির উদাহরণ দেখুন, বসরার একজন খ্রিস্টান মাওলা যিনি আল-ওয়ালিদ প্রথম (৭০৫-১৫) এবং হিশামের (৭২৪-৪৩) শাসনামলে জলাভূমি নিষ্কাশনের মাধ্যমে আল-হাজ্জাজের জন্য ইরাকের নিচু জমিগুলো পুনরুদ্ধার করেছিলেন। হিশামের খেলাফতকালে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। AL-BALĀḎ URĪ (1866) 151.

xxviiiFOERSTER, G., TSAFRIR, Y. (1994) ‘From Scythopolis to Baysān, Changing Concepts of Urbanism’, in G. R. D. King and A. Cameron (eds.) The Byzantine and Early Islamic Near East 2 (Princeton: Darwin Press) 101–5.

xxix BOTTICINI, M., ECKSTEIN, Z. (2005) ‘Jewish Occupational Selection: Education, Restrictions, or Minorities?’, The Journal of Economic History 65(4): 922–48.

xxx MANN, J. (1919) ‘The Responsa of the Babylonian Geonim as a Source of Jewish History’,the Jewish Quarterly Review 10: 320–1.

xxxiHaq, Z. (2013) Quran quote ripples at Harvard | Latest News Delhi - Hindustan Times, hindustantimes. hindustantimes. Available at: https://www.hindustantimes.com/delhi/quran-quote-ripples-at-harvard/story-iqS2g3IGANc67DlTn1uVFL.html (Accessed: January 25, 2023).

xxxiiBennison, A.K. (2014) “1,” in The Great Caliphs: The Golden Age of the 'Abbasid Empire. Yale University, p. ii.

xxxiiiGearon, E. (2017) “18, 22,” in The History and Achievements of the Islamic Golden Age. THE GREAT COURSES, pp. 151,180, 183.

xxxivNader, R. (2004) Stop destroying the mosques of Iraq, CounterPunch.org. CounterPunch. Available at: https://www.counterpunch.org/2004/12/10/stop-destroying-the-mosques-of-iraq/ (Accessed: January 6, 2023).

xxxv The idea of nationalism, (1948), p. 21

xxxvi Andalusi, A. al (2021) Are Muslims hypocritical to criticise Israel when Caliph Umar (RA) conquered the land from the Romans?, Abdullah al Andalusi. Available at: https://abdullahalandalusi.com/2021/06/01/are-muslims-hypocritical-to-criticise-israel-when-caliph-umar-ra-conquered-the-land-from-the-romans/ (Accessed: 09 May 2023).

xxxvii রশিদ সাইয়েদ ওয়াজেহ (2020) রাজ্য বিস্তার ও ইসলামীবিজয়ের পার্থক্য: কালের কণ্ঠ, Kalerkantho. কালের কণ্ঠ. Available at: https://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2020/11/27/979773 (Accessed: January 1, 2023).