Are you sure?

ইতিহাস »  বিবিধ ইতিহাস

ফরেনসিকঃ ফেরাউনের মমি?

1।
যদি কেউ ডুবে মারা যায়, তাহলে তা নিশ্চিত হবার কিছু উপায় আছে। যেমন : চোখ, ঠোঁট এবং আঙুলের অগ্রভাগের রক্তনালি ফেটে যাওয়া, এক্সরে / সিটি স্ক্যান করে ফুসফুসে পানি পাওয়া। ভিক্টিম ডুবে যাবার সময় কিছু পানি গিলে ফেলতে পারে। সেক্ষেত্রে অন্ত্রে পানি পাওয়া যেতে পারে। এটাও সিটি স্ক্যান করে ধরা যায়। এগুলোর কোনটাই শত শত বছর পরে সনাক্ত করা যায় না।
2।
পাকস্থলীর ct scan করলে ডুবে যাওয়া ভিক্টিমের ক্ষেত্রে wydler's sign দেখে কিছু আন্দাজ করা যেতে পারে। উল্লেখ্য ফুসফুসের ct scan এর রিপোর্টে আমাদের হাতে নেই। সম্ভবত এতদিন পরে স্ক্যান করে লাভও নেই।
3।
তবে যদি নোনা পানিতে ডুবে মারা যায়, তাহলে ফুসফুসের ভেতরের গাত্রে লবণ অবশিষ্ট থাকবে। কিন্তু ঝামেলা আছে। মমি করার জন্য প্রত্যেক অঙ্গ কেটে লবণ দেয়া হত। কাজেই লবণ খুজেও লাভ নেই।
কিন্তু সাগরের পানিতে মূলত খাবার লবণ / NaCl থাকে, অন্যান্য কিছু খণিজ লবণও থাকে। মিশরীয়রা যে লবণ মমি করার কাজে ব্যবহার করত তা হল natron(মূলত সোডা অ্যাশ), এখানেও কিছু পরিমাণ খাবার লবণ, সোডিয়াম বাইকার্বোনেট থাকে। মোট কথা, ইচ্ছা করলে composition থেকেই আন্দাজ করা যায়।
4।
বুকাইলি মনে করেছিল যে, মারনেপতাহ প্রকৃৃত ফেরাউন। কারণ তার ত্বকে খাবার লবণের স্তর ছিল। তবে ফুসফুসের ভেতরে পাওয়া গেলে প্রমাণ জোরালো হত।
কিন্তু ইতিহাস একটু জটিল। বৈজ্ঞানিক প্রমাণের কথা বাদ দিলে এবং ইতিহাসের কথা চিন্তা করলে, রামসিস 2 ডুবে যাওয়া ফেরাউন বলে মনে হয়। অনেকে বলতে চান যে, রামসিস ২ -এর আরথ্রাইটিস ছিল, তাই সে কুরআনের ফেরাউন না। কিন্তু প্রাচীন মিশরীয়রা উইলো গাছের বাকল, আদা ও হলুদ দিয়ে আরথ্রাইটিসের কার্যকর চিকিৎসা করত। পাশাপাশি ব্যথানাশক হিসাবে চর্বি, মধু, অস্থিমজ্জা, ময়দা, বেকিং সোডা, জিরা ও সুগন্ধির মিশ্রণ দিয়ে তৈরি এক প্রকার ওষুধ ব্যবহার করত। এসব দিয়ে রামসিস ২-এর জন্য ঘোড়ার গাড়িতে ভ্রমণের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
আমরা এতটুকু বলতে পারি, রামসিস 2 & মারনেপতাহ উভয়ের যেকোন একজন মুসা (আ:)-এর সময়ে ডুবেছিল।