Are you sure?

তুলনামূলক ধর্মতত্ব »  খ্রিস্টান ধর্ম

আমি কেন খ্রিস্টধর্মকে মিথ্যা মনে করি

আমি কেন খ্রিস্টধর্মকে ভুল মনে করি তার সংক্ষিপ্ত একটা তালিকা। (পর্ব - ১)

 

 

 

০১। বাইবেলের লেখকের পরিচয়। 

 


ওল্ড টেস্টামেন্ট আর নিউ টেস্টামেন্টের অধিকাংশ বইয়ের লেখকের পরিচয় অজ্ঞাত। আর কিছু বই তো স্পষ্টভাবেই জাল ( ���েমন: সেকেন্ড পিটার)। ইহুদি-খ্রিস্টান উভয়েই তাদের (অধিকাংশ) বইগুলোর লেখকের পরিচয় প্রমান করতে চরমভাবে ব্যর্থ (যেমন: তোরাহ, যোশুয়া, শমুয়েল, রাজাবলী, চার গস্পেল, পিতরের চিঠি)। 

 


পলের প্রকৃত চিঠিগুলো বাদে নতুন নিয়মে অন্য বইগুলো কে/কোথায়/কবে লিখেছেন তা একেবারে অজানা। অথচ খ্রিস্টান বিশ্বাসীরা এতটাই অজ্ঞ এই পুরো ইস্যু নিয়ে যে তা হাস্যকর! উনারা মনে করেন মার্ক, মথি, যোহন, লুকের নামে প্রচলিত গস্পেলগুলো তাদের লেখা এবং তারা সর্বোচ্চ ইউসেবিয়াসের সূত্রে পাপিয়াসকে উদ্ধৃত করে তৃপ্ত। অথচ এই আর্গুমেন্টের কানাকড়ি দাম নেই একাডেমিয়াতে। 

 


 .

 


০২। আদিপাপ (Original Sin)

 


এই আক্বিদা অনুযায়ী শুরুতে মানুষ (মানে আদম আর হবা) নিষ্পাপ ছিলেন। কিন্তু ইশ্বরের আদেশ অমান্য করে নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ার মধ্য দিয়ে দুনিয়ায় পাপ, মৃত্যু ইত্যাদি নিয়ে আসেন। আর এই আদিপাপ যিশুর স্যাক্রিফাইস ছাড়া ক্ষমা সম্ভব না।

 


এই আক্বিদার সমস্যার শেষ নাই। 

 


(২.ক) অযৌক্তিক ও অমানবিক। একমাত্র খ্রিস্টানরা ছাড়া কেই আদমের জন্য পুরো মানবজাতিতে পাপী হওয়া যৌক্তিক মনে করে না। কেউ না। 

 


(২.খ) পল এই আক্বীদার প্রবর্তক। পুরাতন নিয়মে এর কোন উল্লেখ নেই। পুরাতন নিয়মে এর কোন উল্লেখ নেই। এটা কিভাবে সম্ভব এত ভাববাদী আসলেন আর কোনভাবে আদিপাপ নিয়ে একটা টু শব্দ করা প্রয়োজন মনে করলেন না?! উপরন্তু এর বিপরীতে সুস্পষ্টভাবে তাওবা আর কর্মের বিনিময়ে পাপ ক্ষমার ভুরি ভুরি উল্লেখ। 

 


(২.গ) এটা মেনে নেওয়া কঠিন যে ইশ্বর ইচ্ছা করলে বিনা স্যাক্রিফাইসে মানবজাতিকে ক্ষমা করতে পারবেন না। 

 


(২.ঘ) আদিপাপ সত্য মানে, ক্রুসিফিকশন অত্যাবশকীয়। আর ক্রুসিফিকশন সত্য মানে যিশুর আগে জন্ম নেওয়া সকল বিবলিকাল ভাববাদী আর নেককার বান্দারা নরকে যাচ্ছেন। 

 


 


লক্ষ্যনীয়ঃ

 


আর যেহেতু আদিপাপ বলে কিছু নাই, তাই আমাদের মুক্তির জন্য যিশুর ক্রুসিফাই হওয়ার কিছু নেই। ফলে, 

 


(ক) পুরাতন নিয়মে যিশুর ক্রুসিফিকশন নিয়ে কোন ভবিষ্যদ্বাণী থাকতে পারে না। 

 


(খ) যিশু তার ক্রুসিফিকশনের উপরে বিশ্বাস আনার শিক্ষা দিতে পারেন না। 

 


(গ) গস্পেলে থাকা ক্রুসিফিকশন, যিশুর গ্রেফতার হওয়া, মারা যাওয়া, ফেরত আসা ইত্যাদি স্রেইফ গস্পেল লেখককদের মনগড়া। 

 


.

০৩। ওল্ড টেস্টামেন্টকে বিকৃত করা।

 


নতুন নিয়মের ভ্রান্তির শেষ নাই (মেটাফরিকালি)। নতুন নিয়ম ভুল এবং বৈপরীত্যে ভরা। তবে বিশেষ করে লক্ষ্যণীয় হল এই ভুলগুলো। 

 


ক) যিশুকে মসীহ প্রমান করতে গিয়ে গস্পেলের লেখকেরা পুরাতন নিয়মের বিভিন্ন প্যাসেজের উদ্ধৃতি দিয়ে যা করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কখনো কনটেক্সের বিকৃতি ঘটিয়েছেন, যেকোন সাধারন প্যাসেজকে মেসিয়ানিক বলে মিথ্যাচার করেছেন। যেসব কথা বলা হয়নি তাকেও ওল্ড টেস্টামেন্টের বাক্য বলে চালিয়ে দিয়েছেন। 

 


খ) পল নিজের ধর্মতত্ত্ব প্রমান করতে ওল্ড টেস্টামেন্টের ভুল উদ্ধৃতি, আংশিক উদ্ধৃতি, ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। 

 


.

 


০৪। যিশুর জন্ম বর্ণনা (নেটিভিটি) করতে গিয়ে নানা বৈপরীত্য দেখা দেয়। 

 


যিশুর বংশতালিকা আর জন্মের বর্ণনা দিতে গিয়ে যে বিচ্ছিরি অবস্থা তা বলার মত না। (আজ্ঞে, তবে মিশনারীদের হারমোনাইজ করতে সমস্যা হয়নি। তবে তার মানে এই না যে সমস্যা আসলে নেই।)

 


লুকের বর্ণিত আদমশুমারী বাস্তবে ঘটে নি। এর কোন নন-খ্রিস্টান সোর্স থেকে সত্যায়ন নেই।

লুকের বর্ণিত কুরিনিয়ের ক্ষমতায় আসার অনেক আগে হেরোদ দা গ্রেটের মৃত্যু হয়েছে। তাহলে দুইটা ভিন্ন সময়ে যিশুর জন্ম কিভাবে হয়? 

হেরোদ কোন শিশুকে হত্যা করেনি। এর কোন প্রমান নেই। মথি নিসন্দেহে মিথ্যাবাদী। প্রমান? 

.

০৫। যিশুর ক্রুসিফিকশনের পরে জেরুশালেমে কি হয় তার বর্ণনা মথিতে। 

 


মথি তো এটাও দাবী করেছে যিশুর মৃত্যুর পরে জেরুসালেমের সব মৃত ইহুদি সেইন্টরা কবর থেকে উঠে এসেছিল। এত বড় বিষয় আর কেউ উল্লেখ করার প্রয়োজন মনে করেননি? মেনে নেওয়া যায়? আবার যিশুর মৃত্যুর পরে কয়েক ঘন্টা সারা জেরুসালেমে অন্ধকারে ঢেকে ছিল। এটাও মথির বানানো। মজার বিষয় এগুলো মথি বাদে কেউ বর্ণনা করেনি। না অন্য তিন গস্পেল না অন্য কোন এপিস্টল। 

 


.

০৬। The Synoptic Problem.

 


সিনোপটিক প্রব্লেম কি? তো বাইবেলের যে অংশটা যিশু খ্রিষ্টের পরে লেখা আর শুধু খ্রিস্টানরা ইশ্বর প্রদত্ত মনে করে সেটা হল নিউ টেস্টামেন্ট। এই নিউ টেস্টামেন্টে (নতুন নিয়ম) যে চার বইয়ে শুধু যিশু খ্রিষ্টের জীবনী নিয়ে আলোচনা করা হয় সেগুলো হল গস্পেল। যদিও খ্রিস্টানদের দাবী হল এগুলো যিশুর শিষ্য (Gospel of Matthew, Gospel of John) আর শিষ্যদের থেকে সরাসরি অন্যরা (Gospel of Mark, Gospel of Luke) লেখেছেন। এগুলো আবার একইসাথে ইশ্বর অনুপ্রাণিত। কিন্তু প্রথম তিন গস্পেল (মথি, মার্ক, লুক) একটু স্পেশাল। এই তিন গস্পেল ভাষা, ফর্মেশন, কনটেন্ট প্রায় একই। এটা হল সিনোপটিক প্রব্লেম। ইংরেজিতে চমৎকার একটা আর্টিকেল আছে। 

 


লিংক: https://bible.org/article/synoptic-problem . 

 


এইটা থেকে সিনোপটিক প্রবলেমের ধারনা পেয়ে যাবেন আশা করি। সংক্ষেপে বলতে গেলে সিনোপটিক প্রবলেম হল যে প্রথম তিন গস্পেলে অনেক সাদৃশ্য আছে। কিন্তু এই সাদৃশ্যগুলো কাকতালীয় বিষয় না বরং প্যাটার্ন। বরং এই প্যাটার্নগুলো কনক্লুসিভভাবে প্রমান করে যে এগুলো ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণায় লেখা না বরং মথি আর লুকের লেখক মার্ক থেকে সরাসরি প্লেজারাইজ করেছেন। এবং মথি আর লুকের লেখক মার্কের বিকৃতি ঘটিয়েছে নিজের বিশ্বাস প্রমানের জন্য। উদাহরণ হিসেবে ধরুন, মার্কের যিশুর তুলনামূলক বেশি মানবীয় আর কম ঐশ্বরিক। ফলে এসব জায়গায় মথি আর লুক এসব বক্তব্য পরিবর্তন করেছেন ফলে যিশুকে সেসব "ভুলের" উর্ধ্বে দেখানো যায়। যেমন মার্ক: "অমুক শহরে যিশু মিরাকেল দেখাতে পারলেন না" যা অন্য গস্পেলে এসে হয়ে গেছে "অমুক শহরে যিশু মিরাকেল করলেন না/ দেখালেন না।" প্রথম ক্ষেত্রে যিশুর ইচ্ছা আছে কিন্তু তিনি তাও করতে সক্ষম হচ্ছেন না। কিন্তু পরের বর্ণনা এমন না, এখানে যিশু সক্ষম কিন্তু স্বেচ্ছায় মিরাকেল দেখাচ্ছেন না। সামান্য পরিবর্তন, কিন্তু ইমপ্লিকেশন কত বিশাল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হল: এইসব পরিবর্তন ইচ্ছাকৃত, কাকতালীয় না। Two is a coincidence, three is a pattern. আর দুই গস্পেলের মার্ক থেকে চুরি আর মডিফাই করাই হল গস্পেলে ইশ্বরের বই না হওয়ার প্রমান। আরো প্রমান হয় যে মথি আর লুক, মার্ককে ইশ্বরের অনুপ্রাণিত মনে করতেন না। কে ইশ্বরের দেওয়া তথ্যকে বদলাতে সাহস করবে? বরং তাদের কাছে এসব বই শুধুই মানবরচিত ইতিহাস বই যা বিকৃত করতে তারা দ্বিধাবোধ করেনি। 

 


প্লাস, মথি আর লুক ইশ্বর অনুপ্রাণিত হলে মার্ক থেকে প্লেজারাইজ/চুরি/কপি করতেন না। 

 


.

 


০৭। ক্যাননাইজেশনের সমস্য।

 


যদিও সেইম সমস্যা ওল্ড টেস্টামেন্টের ক্ষেত্রেও খাটে কিন্তু শুধু নিউ টেস্টামেন্টে ফোকাস করি এক্ষেত্রে। আমাদের মুসলিমদের কাছে কুরআন যেমন, তেমনি নিউ টেস্টামেন্টে অন্তর্ভুক্ত ২৭টা বই (এটাকে ক্যানন বলে) খ্রিস্টানদের কাছে তেমন।

 


যেমন আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি যে আমাদের ধর্মগ্রন্থ সরাসরি আল্লাহ তায়ালা থেকে এসেছে এবং এর কন্টেন্ট আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক অনুমোদিত। আল্লাহর হয়ে রাসুলুল্লাহ (সা) বলে দিয়েছেন কোন আয়াত কুরআনে অন্তর্ভুক্ত হবে আর কোনগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে না। আর তার পরে খলিফা আবু বকর আর উসমান (রা) এর সময়ে গঠিত কমিটি অন্য সাহাবাদের সাথে আলোচনা করে তাদের মুসহাফ তৈরি করেছেন।খলিফা উসমান যদি মুহাম্মদ (সা) এর প্রকৃত কুরআন বিকৃত করতে চাইতেন তবে এই কমিটি তৈরী করতেন না। এই কমিটির উদ্দেশ্য ছিল সব সাহাবাদের সাথে কথা বলে সব আয়াত যে প্রকৃত পক্ষে মুহাম্মদ (সা) থেকে তথা আল্লাহ তায়ালা থেকে এসেছে কিনা তা যাচাই করে তাদের মুসহাফে অন্তর্ভুক্ত করা। এখন খ্রিস্টানরা সহমত হোক বা না হোক এসব দাবীর সাথে সেটা মূল পয়েন্ট না। বরং পয়েন্ট হল ইসলামিক থিওলজিতে তাদের ধর্মগ্রন্থ কেন ইশ্বর থেকে এসেছে তার প্রমান করে ( অন্তত থিওরিতে আরকি)। আল্লাহ থেকে রাসুলুল্লাহ থেকে সাহাবী থেকে উসমানের তৈরীকৃত মুসহাফ। এখন এর মাঝে কোন বিকৃতি হয়েছে কিনা সেটা পয়েন্ট না। বরং আমরা জানতে পারি যে বর্তমানের কুরআন যদি কোনভাবে বিকৃত না হয়ে থাকে তবে এর কনটেন্ট সরাসরি ইসলাম ধর্মের প্রবক্তা মুহাম্মদ (সা) থেকে নির্ধারিত হয়েছে। উসমানের মুসহাফ এসেছে মুহাম্মাদ (সা) এর সাহাবাদের থেকে যারা রাসুলের থেকে কুরআন পেয়েছেন। আর মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহ থেকে আদেশ পেয়েছেন কুরআনে কি থাকবে আর থাকবে না। 

 


আমি প্রমান করতে চাচ্ছি যে at least থিওরিতে ইসলামিক থিওলজি অনুযায়ী কুরআনের কনটেন্ট আল্লাহ, ইশ্বর নির্ধারন করে দিয়েছেন। এখন আমরা যদি সেইম যুক্তি নিউ টেস্টামেন্টে খাটাই তাহলে কি ফলাফল পাওয়া যায় দেখা যাক। নিউ টেস্টামেন্টের সব বই যিশুর মৃত্যু/পুনরুত্থানের পরে লেখা। ফলে কোন বই নিউ টেস্টামেন্টের ক্যাননে থাকবে তা যিশু বলে যায়নি। Book of Revelation বাদে কোন বই ঐশ্বরিক হওয়ার ইঙ্গিত পর্যন্ত দেয়না। আর গস্পেলগুলো শিষ্যদের লেখা হওয়া মানে এই না যে সেগুলো ঐশ্বরিক। সেইম লজিক খাটে পলের চিঠির ক্ষেত্রে। বরং পরের চার্চ ফাদাররা নির্ধারন করেছেন যে কোন বই ক্যাননে অন্তর্ভুক্ত হবে। যেখানে উসমান (রা) এর কমিটি নির্ধারন করেছিলেন মুহাম্মাদের (সা) সাহাবাদের থেকে, সেখানে বাইবেলের বই নির্ধারণ করেছেন শতাব্দী পরের মানুষ। প্রশ্ন হল, চার্চ ফাদাররা কোন মাপদন্ড ব্যবহার করে নির্ধারণ করেছেন যে কোন বই বাইবেলের অন্তর্ভুক্ত হবে আর কোন বই অন্তর্ভুক্ত হবে না? আসলে তাদের কাছে কোন অবজেক্টিভ স্ট্যান্ডার্ড/মাপদন্ড ছিল না। তাদের লেখাতে এরূপ কোন মানদণ্ডের উল্লেখ নেই আর বর্তমান খ্রিস্টান মিশনারীদের লেখায় যেসব কল্পিত মাপদন্ড পাওয়া যায় সেসব শর্ত নিউ টেস্টামেন্টের বইগুলো পূরন করেনা। 

 


মুলকথা, নিউ টেস্টামেন্টের বইগুলো যিশু বা ইশ্বর ঠিক করে দেননি বরং শতাব্দী পরের চার্চ ফাদাররা ঠিক করেছেন। তারা এসব বই অন্তর্ভুক্ত করেছেন তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী; কোন ঐশ্বরিক মাপদন্ড অনুযায়ী না। আবার সব চার্চ একই ক্যানন ব্যবহার করেননি। মানে এখন সবাই এই ২৭ বইকে ইশ্বর অনুপ্রাণিত মনে করলেও প্রাচীনকালে সবাই তা করতেন না। সেই না? 

 


আরো একটা পয়েন্ট, নিউ টেস্টামেন্টের শেষ বই হল রেভেলেশন বা প্রকাশিত বাক্য। প্রাচীন চার্চ ফাদাররা এই বইকে সন্দেহের চোখে দেখত, তাই একে ক্যাননের শেষে রেখেছিল। যদি খ্রিস্টান মিশনারীরা সঠিক হয় যে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড মেনে চার্চ ফাদাররা এসব বইকে বাইবেলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেন তবে এত সন্দেহ আর জাল বই বাইবেলে কিভাবে থাকতে পারে? 

 


.

 


০৮। ট্রিনিটি।

 


Okay to be honest, ট্রিনিটি সম্পর্কে সমালোচনা করতে হলে ট্রিনিটিকে আগে বুঝতে হবে। আর সত্য বলতে আমি ট্রিনিটি বুঝি না। অনেক খ্রিস্টানরা নিজেরাই স্বীকার করে যে ট্রিনিটি হল মিস্টেরি। যদি মিস্টেরি হয় তবে কেউ কিভাবে আশা করতে পারে যে অখ্রিস্টানরা ট্রিনিটিতে বিশ্বাস করতে? সরাসরি ট্রিনিটির ক্রিটিসিজম করতে সক্ষম না হলেও আমার একে নিয়ে অন্য কিছু সমালোচনা আছে।

 


(ক) জাস্ট বিকজ নিউ টেস্টামেন্টে যিশুকে বিভিন্নভাবে ডিভাইন/ইশ্বর বলা হলেও এ থেকে ট্রিনিটি প্রমান হয় না। Grow up. ট্রিনিটি যদি সত্যই বাইবেলে থাকত তবে চারশ' সাল লাগত না ট্রিনিটির অস্তিত্বে আসতে। 

(খ) মুসলিমরা মুহাম্মাদ (সা) এর সময় থেকে এক আল্লাহতে বিশ্বাস করে আসছে। আক্বীদা নিয়ে বহুত ক্যাচাল আছে কিন্তু ইশ্বরের সংখ্যা একটাই আছে ১৪০০ সাল ধরে। আচ্ছা, খ্রিস্টানদের বিশ্বাস কি প্রথম চারশ' সাল সেইম ছিল? আজকের খ্রিস্টানদের মত, যিশু কি নিজেকে ইশ্বর মনে করতেন? যিশু কি ট্রিনিটিতে বিশ্বাস করত? যিশুর শিষ্যদের কি অবস্থা? কিংবা তার পরের কয়েক প্রজন্ম? অথবা সেইন্ট পল? এরা কেই কি ট্রিনিটিতে বিশ্বাস করত? একজনও না। একজন আত্মাও ট্রিনিটিতে বিশ্বাস করেননি প্রথম কয়েক শতাব্দী? আর গস্পেল অফ যোহনে যিশুর মুখ দিয়ে যেসব কথা বলানো হয়েছে তার কোনটাই যিশু বলেননি। বরং যিশুর মুখে যোহনের লেখক এসব কথা ভরে দিয়েছেন। Don't take my word for this. যেকোন পশ্চিমা সেকুলার বাইবেল একাডেমিকের বই পড়ে দেখতে পারেন। দেখেন উনারা গস্পেল অফ যোহনকে কতখানি হিস্টোরিকাল মনে করেন। Oh it gets better, এইটা তো গেল সেকুলার একাডেমিকদের কথা। অনেক বিশ্বাসী খ্রিস্টান একাডেমিকরাও মনে করেন যোহনের গস্পেল আসলে ঐতিহাসিকভাবে সত্য না। মানে যিশু এসব কোন কিছুই বলেনি। (কিন্তু তাও সত্য এগুলো কোনভাবে 🤡।) যদিও গোড়া মিশনারীদের কাছে যোহন ধ্রুব সত্য আর ঐতিহাসিক। 

(গ) মানবিক যুক্তিতে ট্রিনিটি লজিকালি অসম্ভব। ট্রিনিটি যদি অযৌক্তিক না হত তবে অনেক খ্রিস্টান থিওলজিয়ান ট্রিনিটিকে mystery বলতেন না।