Are you sure?

বিজ্ঞান »  ইসলাম ও বিজ্ঞান বিবিধ »  ইসলাম বিদ্বেষীদের অপনোদন কুরআন »  বিজ্ঞান দর্শন »  কুযুক্তি

ফরায়েজ নিয়ে বিভ্রান্তির নিরসন ।

💠ফরায়েজ বিদ্যাঃ
 ইসলামী শাস্ত্র অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি উত্তরাধীকারীদের মাঝে নির্ধারিত অংশ অনুযায়ী ভাগ দেওয়াকে ফরায়েজ বলে।

১৪০০ বছর ধরে ইসলামী এই শাস্ত্র অনুযায়ী উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তির বন্টন করা হচ্ছে। এত বছর ধরে মুসলমানরা সম্পত্তির বন্টন করে আসছে, তারা কোনো গাণিতিক ভুল পেল না? 

বিদ্বেষীরা দুইটি আয়াত দিয়ে যুক্তি প্রদান করেছে।তাদের দাবি করা আয়াতসমূহ নিচে উল্লেখ করছিঃ

💠An-Nisa' 4:11
يُوصِيكُمُ ٱللَّهُ فِىٓ أَوْلَٰدِكُمْۖ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ ٱلْأُنثَيَيْنِۚ فَإِن كُنَّ نِسَآءً فَوْقَ ٱثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَۖ وَإِن كَانَتْ وَٰحِدَةً فَلَهَا ٱلنِّصْفُۚ وَلِأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَٰحِدٍ مِّنْهُمَا ٱلسُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُۥ وَلَدٌۚ فَإِن لَّمْ يَكُن لَّهُۥ وَلَدٌ وَوَرِثَهُۥٓ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ ٱلثُّلُثُۚ فَإِن كَانَ لَهُۥٓ إِخْوَةٌ فَلِأُمِّهِ ٱلسُّدُسُۚ مِنۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِى بِهَآ أَوْ دَيْنٍۗ ءَابَآؤُكُمْ وَأَبْنَآؤُكُمْ لَا تَدْرُونَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ لَكُمْ نَفْعًاۚ فَرِيضَةً مِّنَ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا۝
(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)
আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, এক ছেলের জন্য দুই মেয়ের অংশের সমপরিমাণ। তবে যদি তারা দুইয়ের অধিক মেয়ে হয়, তাহলে তাদের জন্য হবে, যা সে রেখে গেছে তার তিন ভাগের দুই ভাগ; আর যদি একজন মেয়ে হয় তখন তার জন্য অর্ধেক। আর তার মাতা পিতা উভয়ের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ সে যা রেখে গেছে তা থেকে, যদি তার সন্তান থাকে। আর যদি তার সন্তান না থাকে এবং তার ওয়ারিছ হয় তার মাতা পিতা তখন তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ। আর যদি তার ভাই-বোন থাকে তবে তার মায়ের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ। অসিয়ত পালনের পর, যা দ্বারা সে অসিয়ত করেছে অথবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের মাতা পিতা ও তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্য থেকে তোমাদের উপকারে কে অধিক নিকটবর্তী তা তোমরা জান না। আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
(Nearby English Translation)
Allah instructs you concerning your children: for the male, what is equal to the share of two females. But if there are [only] daughters, two or more, for them is two thirds of one's estate. And if there is only one, for her is half. And for one's parents, to each one of them is a sixth of his estate if he left children. But if he had no children and the parents [alone] inherit from him, then for his mother is one third. And if he had brothers [or sisters], for his mother is a sixth, after any bequest he [may have] made or debt. Your parents or your children - you know not which of them are nearest to you in benefit. [These shares are] an obligation [imposed] by Allah . Indeed, Allah is ever Knowing and Wise.

উক্ত আয়াতের বন্টনগুলো নিম্নরুপঃ
১.একজন পুরুষ পাবে দুইজন নারীর সমান।
২.শুধু মেয়ে সন্তান দুই এর অধিক হলে তারা পাবে সম্পত্তির ২/৩ অংশ।
৩.মেয়ে একজন হলে সে পাবে সম্পত্তির অর্ধেক।
৪.মৃতের পুত্র থাকলে মা-বাবা প্রত্যেকে পাবে ১/৬ অংশ।
৫.পুত্র না থাকলে মাতা পাবে ১/৩ অংশ।
৬.মৃতের কয়েকজন ভাই থাকলে মা পাবে ১/৬ অংশ।

এবার দ্বিতীয় আয়াতটি দেখিঃ

💠An-Nisa' 4:12
وَلَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ أَزْوَٰجُكُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّهُنَّ وَلَدٌۚ فَإِن كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَۚ مِنۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِينَ بِهَآ أَوْ دَيْنٍۚ وَلَهُنَّ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌۚ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ ٱلثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُمۚ مِّنۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَآ أَوْ دَيْنٍۗ وَإِن كَانَ رَجُلٌ يُورَثُ كَلَٰلَةً أَوِ ٱمْرَأَةٌ وَلَهُۥٓ أَخٌ أَوْ أُخْتٌ فَلِكُلِّ وَٰحِدٍ مِّنْهُمَا ٱلسُّدُسُۚ فَإِن كَانُوٓا۟ أَكْثَرَ مِن ذَٰلِكَ فَهُمْ شُرَكَآءُ فِى ٱلثُّلُثِۚ مِنۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصَىٰ بِهَآ أَوْ دَيْنٍ غَيْرَ مُضَآرٍّۚ وَصِيَّةً مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَلِيمٌ۝
(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)
আর তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীগণ যা রেখে গেছে তার অর্ধেক, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তারা যা রেখে গেছে তা থেকে তোমাদের জন্য চার ভাগের এক ভাগ। তারা যে অসিয়ত করে গেছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর স্ত্রীদের জন্য তোমরা যা রেখে গিয়েছ তা থেকে চার ভাগের একভাগ, যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে তাহলে তাদের জন্য আট ভাগের এক ভাগ, তোমরা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে। তোমরা যে অসিয়ত করেছ তা পালন অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর যদি মা বাবা এবং সন্তান-সন্ততি নাই এমন কোন পুরুষ বা মহিলা মারা যায় এবং তার থাকে এক ভাই অথবা এক বোন, তখন তাদের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের একভাগ। আর যদি তারা এর থেকে অধিক হয় তবে তারা সবাই তিন ভাগের এক ভাগের মধ্যে সমঅংশীদার হবে, যে অসিয়ত করা হয়েছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। কারো কোন ক্ষতি না করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে অসিয়তস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
(Nearby English Translation)
And for you is half of what your wives leave if they have no child. But if they have a child, for you is one fourth of what they leave, after any bequest they [may have] made or debt. And for the wives is one fourth if you leave no child. But if you leave a child, then for them is an eighth of what you leave, after any bequest you [may have] made or debt. And if a man or woman leaves neither ascendants nor descendants but has a brother or a sister, then for each one of them is a sixth. But if they are more than two, they share a third, after any bequest which was made or debt, as long as there is no detriment [caused]. [This is] an ordinance from Allah, and Allah is Knowing and Forbearing.

১.সন্তান না থাকলে স্বামী তার স্ত্রীর সম্পত্তির ১/২ অংশ পাবে।
২.সন্তান থাকলে পাবে ১/৪ অংশ।
৩.সন্তান না স্ত্রী তার স্বামীর সম্পত্তির পাবে ১/৪ অংশ।
৪. সন্তান থাকলে পাবে ১/৮ অংশ।
৫.পিতা,পুত্র,স্ত্রী না থাকলে যদি এক ভাই-এক বোন থাকে,তারা পাবে ১/৬ অংশ।
৬.তারা ততোধিক হলে পাবে ১/৩ অংশ।

উপরের সকল শর্ত থেকে আমরা দেখলাম যে, সম্পত্তির এ বন্টনগুলো একেক শর্তের ক্ষেত্রে একেক রকম। সবগুলো একে অপরটির সাথে সম্পর্কিত নয়। যেমনঃ মেয়ে সন্তান দুয়ের অধিক হলে এবং পিতা-মাতা থাকলে, মেয়ে সন্তানেরা পাবে ২/৩ অংশ এবং মা-বাবা প্রত্যেকে ১/৬ অংশ করে অর্থ্যাৎ (১/৬+১/৬)=১/৩। তাহলে মোট দাড়ায় (২/৩+১/৩)=১ অংশ। এখানেই কিন্তু প্রসঙ্গ শেষ। সম্পত্তির বন্টনের এই নির্দেশ কুরআন যা বলছে সেই অনুসারে দুয়ের অধিক মেয়ে সন্তান ও মা-বাবার ক্ষেত্রেই কেবল এই শর্ত কার্যকর হবে।

কিন্তু সূরা নিসা ১১ আয়াতের ২ ও ৪ শর্ত এবং সূরা নিসার ১২ আয়াতের ৪ নং শর্ত কে এক জায়গায় করলে একটি গাণিতিক গোলযোগ বের হবে বলে মনে হবে। হিসাবটি এরুপ (২/৩+১/৩+১/৮)=২৭/২৪>১ অংশ। এটি গাণিতিক ভুল নয়। কারণ হিসাবটি (২/৩+১/৩)=১ অংশ এখানেই শেষ হয়ে গিয়েছে।

সূরা নিসা ১১ আয়াতের ২ নং শর্তে দুইয়ের অধিক মেয়ে সন্তানের থাকার কথা বলা হচ্ছে। অথচ নিসা ১২ আয়াতে দুইটি শর্তে এক জায়গায় সন্তান থাকার শর্ত আছে, আরেক জায়গায় না থাকার শর্ত দেওয়া হয়েছে। অথচ নিসা ১১ আয়াতে কোথাও সন্তান না থাকার প্রসঙ্গ আসে নি কেবলমাত্র ৫ নং পয়েন্ট ছাড়া, যেখানে বলা হচ্ছে মৃত ব্যক্তির সন্তান না থাকলে মৃত ব্যক্তির মা পাবে ১/৩ অংশ।এখানে স্ত্রীর প্রসঙ্গ নেই। অথচ সূরা নিসার ১২ আয়াত আর ১১ আয়াত এক জায়গা করে গাণিতিক ভুল বের করা হলো।

সুতরাং আমাদের কাছে স্পষ্টত হলো এখানে কোন গাণিতিক ভুল নেই। ১৪০০ বছর ধরে এই পদ্ধিতে সম্পত্তির বন্টন চলে আসছে, কোথায় কেউ তো বলল না, কুরআন অনুযায়ী সম্পত্তির হিসাব করা যাচ্ছে না! এতে গাণিতিক ভুল আছে?
নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।

এখানে একেক অবস্থায় একেকভাবে বণ্টন দেখা যাবে। এখানে এই লিঙ্কে ( http://inheritance.ilmsummit.org/projects/inheritance/testcasespage.aspx ) সেই বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যাবে। ইসলামী আইনে ফারায়েজ (فرائض) হচ্ছে একটি ব্যাপক অঙ্গন। বলা হয় এটি ইসলামী জ্ঞানের অর্ধেক। এটি বিশেষজ্ঞ বিষয়। আলোচ্য প্রসঙ্গে 4:11/4:11 আয়াত ফারায়িদের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত বিষয় নয় বরং এতে সম্পদে মেয়েদের এবং স্ত্রীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয় এসেছে। এখানে আরবের প্রচলিত আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। অংক কষার নিয়ম আগেই ছিল এবং সেই নিয়মেই পরিবর্তনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হিসাবে, মূল অধিকারীদের ক্যাটাগরি বা ক্ষেত্র স্থির করা, অর্থাৎ অংশের সমষ্টিকে নির্ধারণ করা, এই নীতির ভিত্তিতে যে, সমষ্টি যদি ১ এর ঊর্ধ্বে ওঠে, তবে অংশগুলোকে আনুপাতিকভাবে কমিয়ে ১ করা হবে এবং বিতরণ করা হবে। এর উপরে সাহাবা রা:গণ একমত হয়েছেন এবং  এই সিস্টেম এখনো কাজ করে। উপরে দেয়া লিঙ্কে সেই নিয়মই কাজ করছে। 

রাসুলুল্লাহ(স) বলেছেন,আমার উম্মতের মাঝে ফারায়েজ শাস্ত্রে সর্বাধিক জ্ঞানী হলো যায়েদ বিন সাবিত(রা) [সুনানে ইবনে মাজাহ/১৫৪, তিরমিযি/৩৭৯০-৩৭৯১]।

এছাড়া হযরত আলী(রা)ও একদা জুমুআর নামাজের খুতবা দেয়ার সময় যায়েদ বিন সাবিত(রা) এর মতেরই অনুরূপ ফতোয়া প্রদান করেন [ইবনু শু'বাহ,খন্ড:০৩,পৃ:১৯,রেওয়ায়েত নং-৩৪]।

আমীরুল মুমিনীন উমর(রা)সহ প্রায় সকল সাহাবিই তাঁদের ইজতিহাদটি সমর্থন করেন এবং সাহাবাগণের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ইজতিহাদটি ইজমা হিসেবে সাব্যস্ত হয়ে যায় [আহকামুল কুরআন লি ইবনুল আরাবি,খন্ড:০১,পৃ:৪৫৭]

এটি ফারায়েজ শাস্ত্রে "আঊল নীতি" নামে প্রসিদ্ধ।

◼️২ কন্যা,পিতা-মাতা ও স্ত্রী একসাথে বিদ্যমান থাকলে আঊল নীতির মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পত্তির জন্য নির্ণীত বিধান:

স্ত্রী পাবে = ৩/২৭ অংশ

পিতা পাবে = ৪/২৭ অংশ

মাতা পাবে = ৪/২৭ অংশ

কন্যাগণ একত্রে পাবে = ১৬/২৭ অংশ

অংশগুলোর যোগফল কখনোই ১ এর বেশি হবে না।

প্রমাণ = (৩/২৭+৪/২৭+৪/২৭+১৬/২৭) = ২৭/২৭ = ১।

অর্থাৎ সকল সম্পত্তিই পূর্ণরূপে বণ্টিত হয়ে যায়।

উক্ত ইজতিহাদটি আন্দাজে করা হয় নি।বরং এমনভাবে করা হয়েছে,যাতে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ওয়ারীসগণের প্রাপ্য অংশ কুরআন যা নির্ধারণ করে দিয়েছে,নতুন পরিস্থিতিতে আঊল নীতি প্রয়োগেও ওয়ারীসগণের প্রাপ্য অংশ তার কাছাকাছি থাকে এবং যোগফল ১ হয়।সেইসাথে পরস্পরের সাপেক্ষে প্রাপ্ত অংশের অনুপাতও যাতে একই থাকে।

◼️আঊল নীতি প্রয়োগে কি কুরআনে গাণিতিক ভুল আছে সাব্যস্ত হয়?

আঊল নীতি প্রয়োগে কুরআনের বিধানও লঙ্ঘিত হয় না,কুরআনে গাণিতিক ভুল আছে এটাও সাব্যস্ত হয় না।কারণ ২ কন্যা, পিতা-মাতা ও স্ত্রী একসাথে বিদ্যমান থাকলে বিধান কি হবে তা কুরআনে উল্লেখ নেই।সাহাবিগণ আঊল নীতির মাধ্যমে বিধান নির্ধারণ করেছেন।এটাকে কুরআনের ভুল বলা চলে না।কুরআন যা বলেইনি,তা ভিন্ন পরিস্থিতির আয়াত থেকে জোড়াতালি মেরে কুরআনের উপর চাপিয়ে দিয়ে তথাকথিত 'ভুল' বের করা সত্যিই হাস্যকর। যেমন: কুরআনে সালাত,যাকাত,রোযা ইত্যাদি বিধান পালন করতে বলা হয়েছে,কিন্তু এগুলো পালনের নিয়ম বিস্তারিতভাবে বলা হয় নি।রাসুল(স) সুন্নাহর মাধ্যমে বিস্তারিত নিয়ম শিখিয়েছেন।এগুলোকে কুরআনের 'ভুল' বা 'গাণিতিক ভুল' দাবি করার কোনোই সুযোগ নেই।

ইমাম আবু হানিফা(রহ.) বলেন,

"আমি কুরআনের উপর নির্ভর করি।কুরআনে যা পাই না,তার জন্য রাসুলুল্লাহ(স) এর সুন্নাতের উপর নির্ভর করি।যদি কোনো বিষয় কুরআন ও সুন্নাহতেও না পাই,তাহলে আমি সাহাবিগণের মতামত ও শিক্ষার উপরে নির্ভর করি।তাঁদের মতামত ও শিক্ষার বাইরে যাই না।"  [আল ইন্তেকা'-ইবনে আব্দুল বারর,পৃ: ১৪২-১৪৩]

এছাড়া খোদ কুরআনেই সাহাবাগণের ইজমাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে ও তাঁদের সম্পর্কে প্রশংসা করা হয়েছে [কুরআন ৪২/৩৮, ৯/১০০, ৫৭/১০, ৪৯/৭, ৪৮/১৮, ৫৯/১০ ইত্যাদি ]।

আইন পড়াশুনা না করে, চায়ের দোকানে বসে, আইনের উপর ঝগড়া করা যেমন হাস্যকর তেমনি ফারায়িদ বিষয়ে না জেনে তর্ক-বিতর্ক করাও একই পর্যায়ের। হাজার বছর ধরে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আমলাগণ এই অঙ্গনে চাকুরী করেছেন, বিশেষজ্ঞ আইনবিদরা কাজ করেছেন, এরা ম্যাথমেটিশানও ছিলেন। এমন ধরণের একটি বিষয়কে কিছু অত্যুৎসাহী নাস্তিক, খৃষ্টিয়ান, হিন্দু বা অন্যদের কাছ থেকে গিলে যখন রাস্তাঘাটে, ফেসবুকে, ব্লগে ইতাদিতে প্রশ্ন করে বেড়ায়, তখন তাদের মূর্খতাই হাস্যকর দেখায়। এটা যে যেকোনো লোকের বিষয় নয় এবং কোনো নাস্তিকের মাথায় শিং গজিয়ে উঠলে তাকে যে বিশেষজ্ঞের সাথে গিয়ে আলোচনা করতে হবে –এই সাধারণ জ্ঞানটিও আসে না। ৩ মেয়ে, মা-বাপ, স্ত্রী –এই প্রশ্নটি নাস্তিকদের সাইটে গত কয়েক বছর ধরে তাদের নিজেদের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। তারা এখানে সেখানে গিয়ে এই টেক্সট কোট করে আসছে। 

কৃতজ্ঞতা: সদালাপ ব্লগ । -রিজভী আহমেদ খান