খ্রিস্টানরা দাবি করে যে, যিশু মানে ঈসা আ. নাকি আল্লাহর ঔরসজাত পুত্র (নাওযুবিল্লাহ। এটি আল্লাহর উপর এক ভয়াবহ অপবাদ। খ্রিস্টানরা দাবি করে যিশু আল্লাহর পুত্র তাই তারা যিশুর মূর্তি বানিয়ে সেটাকে পূজা করে। ইসলাম এ ব্যাপারে কী বলে?
জবাব :-
وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَٰنُ وَلَدًا
তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।
They say: "(Allah) Most Gracious has begotten a son!"
(সূরাঃ মারইয়াম, আয়াতঃ ৮৮)
لَقَدْ جِئْتُمْ شَيْئًا إِدًّا
নিশ্চয় তোমরা তো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ।
Indeed ye have put forth a thing most monstrous!
(সূরাঃ মারইয়াম, আয়াতঃ ৮৯)
تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنْشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا
হয় তো এর কারণেই এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হবে।
At it the skies are ready to burst, the earth to split asunder, and the mountains to fall down in utter ruin,
(সূরাঃ মারইয়াম, আয়াতঃ ৯০)
أَنْ دَعَوْا لِلرَّحْمَٰنِ وَلَدًا
এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান আহবান করে।
That they should invoke a son for (Allah) Most Gracious.
(সূরাঃ মারইয়াম, আয়াতঃ ৯১)
وَمَا يَنْبَغِي لِلرَّحْمَٰنِ أَنْ يَتَّخِذَ وَلَدًا
অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়।
For it is not consonant with the majesty of (Allah) Most Gracious that He should beget a son.
(সূরাঃ মারইয়াম, আয়াতঃ ৯২)
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি।
He begetteth not, nor is He begotten;
(সূরাঃ আল ইখলাস, আয়াতঃ ৩)
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্ট ভাবে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, তিনি এসব থেকে পবিত্র। আল্লাহর কোন সন্তান নেই। তিনি এক ও অদ্বিতীয় তার কোন শরীক নেই। (সূরা ইখলাস ১-৩)
>তাহলে খ্রিস্টানরা যে বলে আল্লাহর সন্তান আছে?
কুরআনে আল্লাহ পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে তার কোন পুত্র নেই। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। এটি আল্লাহর উপর একটি ভয়ংকর অপবাদ যে তারা বলে আল্লাহর সন্তান আছে। অতচ তিনি তা থেকে পবিত্র। আল্লাহর কোন সন্তান নেই। কুরআন তা সুস্পষ্ট করেছে।
> খ্রিস্টান ধর্ম অনুযায়ী ঈশ্বর একজন হলে যিশু কী করে ঈশ্বরের পুত্র হয় আবার ঈশ্বরও হয় ?
না। বাইবেল অনুযায়ীও যিশু আল্লাহর পুত্র নয়। বাইবেল সুস্পষ্ট ভাবে এক ঈশ্বরের কথা বলে। খ্রিস্টানরা দাবী করে যে, যিশু আল্লাহর পুত্র আবার ঈশ্বরও। কিন্তু বাইবেল এক ঈশ্বরের কথা বলছে -
4. “ইস্রায়েলের লোকরা শোনো! প্রভু, আমাদের ঈশ্বর হলেন একমাত্র প্রভু! (দ্বিতীয় বিবরণ 6:4)
Hear, O Israel: The Lord our God is one Lord: (King James Version) (Deuteronomy 6:4)
29. যীশু উত্তর দিলেন, ‘এটাই প্রধান! ‘শোন, হে ইস্রায়েল, আমাদের ঈশ্বর প্রভু একমাত্র প্রভু৷(মার্ক 12:29)
And Jesus answered him, The first of all the commandments is, Hear, O Israel; The Lord our God is one Lord. (King James Version) (Mark 12:29)
>যিশু ঈশ্বরের পুত্র না হলে যিশু কেন ঈশ্বরকে পিতাকে ডেকেছে ?
What the Father's word means in the Bible ?
REMEMBER THAT If you answer no, it will be against the Bible. That is, the Bible is wrong.
> আল্লাহ ব্যতীত কী কোন ঈশ্বর আছে ?
যিশু কখনো আল্লাহর পুত্র নন এবং তিনি কখনো ঈশ্বরও নন। যারা যিশুকে এসব বলে তারা এক ভয়ংকর অপবাদ দিচ্ছে আল্লাহর উপর।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ
বলুন, তিনি আল্লাহ, এক,
Say: He is Allah, the one and only;
(সূরাঃ আল ইখলাস, আয়াতঃ ১)
وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ
যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বললঃ হে বৎস, আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়।
Behold, Luqman said to his son by way of instruction: "O my son! join not in worship (others) with Allah: for false worship is indeed the highest wrong-doing." (সূরাঃ লোকমান, আয়াতঃ ১৩)
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ ۚ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল।
Allah forgiveth not that partners should be set up with Him; but He forgiveth anything else, to whom He pleaseth; to set up partners with Allah is to devise a sin Most heinous indeed. (সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৪৮)
সুতরাং এখান থেকে এটা পরিষ্কার যে আল্লাহর সাথে যারা উপাস্য সাবস্ত্য করে তারা এক ভয়াবহ পাপ কাজ করছে। তারা যদি অতি শীঘ্রই ক্ষমা না চায় তবে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।
>যিশু আল্লাহর সন্তান নন এ সম্পর্কে আল্লাহ কী কিছু বলেছেন?
হ্যাঁ আল্লাহ যিশু সম্পর্কে কুরআনে পরিষ্কার করে দিয়েছেন। সূরা মারইয়াম আয়াত ৩৪-৩৫ পর্যন্ত, পড়ুন-
ذَٰلِكَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ ۚ قَوْلَ الْحَقِّ الَّذِي فِيهِ يَمْتَرُونَ
এই মারইয়ামের পুত্র ঈসা। সত্যকথা, যে সম্পর্কে লোকেরা বিতর্ক করে।
Such (was) Jesus the son of Mary: (it is) a statement of truth, about which they (vainly) disput
مَا يَقُولُ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
আল্লাহ এমন নন যে, সন্তান গ্রহণ করবেন, তিনি পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা, তিনি যখন কোন কাজ করা সিদ্ধান্ত করেন, তখন একথাই বলেনঃ হও এবং তা হয়ে যায়।
It is not befitting to (the majesty of) Allah that He should beget a son. Glory be to Him! when He determines a matter, He only says to it, "Be", and it is.
(সূরাঃ মারইয়াম, আয়াতঃ ৩৫)
আলহামদুলিল্লাহ! যিশু আল্লাহর পুত্র নন তা সূরা মারইয়ামে আল্লাহ তাআলা তা পরিষ্কার করেছেন। যিশুকে আল্লাহর পুত্র দাবি করার কারণে স্বয়ং আল্লাহ তাদের এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। আল্লাহ এসব থেকে পবিত্র।
> যিশু ঈশ্বর নন তা কুরআনের কোথায় লেখা আছে ?
وَإِذْ قَالَ اللَّهُ يَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ أَأَنْتَ قُلْتَ لِلنَّاسِ اتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَٰهَيْنِ مِنْ دُونِ اللَّهِ ۖ قَالَ سُبْحَانَكَ مَا يَكُونُ لِي أَنْ أَقُولَ مَا لَيْسَ لِي بِحَقٍّ ۚ إِنْ كُنْتُ قُلْتُهُ فَقَدْ عَلِمْتَهُ ۚ تَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِي وَلَا أَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِكَ ۚ إِنَّكَ أَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ
যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা ইবনে মরিয়ম! তুমি কি লোকদেরকে বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে ছেড়ে আমাকে ও আমার মাতাকে উপাস্য সাব্যস্ত কর? ঈসা বলবেন; আপনি পবিত্র! আমার জন্যে শোভা পায় না যে, আমি এমন কথা বলি, যা বলার কোন অধিকার আমার নেই। যদি আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই পরিজ্ঞাত; আপনি তো আমার মনের কথা ও জানেন এবং আমি জানি না যা আপনার মনে আছে। নিশ্চয় আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাত।
And behold! Allah will say: "O Jesus the son of Mary! Didst thou say unto men, worship me and my mother as gods in derogation of Allah'?" He will say: "Glory to Thee! never could I say what I had no right (to say). Had I said such a thing, thou wouldst indeed have known it. Thou knowest what is in my heart, Thou I know not what is in Thine. For Thou knowest in full all that is hidden.
(সূরাঃ আল মায়িদাহ, আয়াতঃ ১১৬)
যিশু নিজেই কুরআনে বলে দিয়েছেন তিনি ঈশ্বর নন। খ্রিস্টানরা যিশুর অলৌকিক মোজেজা দেখে তাকে ঈশ্বর ভেবেছিল কিন্তু তিনি ঈশ্বর নন তা তিনি সুস্পষ্ট ভাবে বলে দিয়েছেন।
> বাইবেলের ঈশ্বর কেন তাহলে যিশুকে পুত্র বলে ডেকেছেন ?
বাইবেলে, ঈশ্বর মানুষকে ভালোবেসে, সন্তান বলে ডেকেছেন।
বাইবেল, সামসঙ্গীত ৮২:৬ ⬇️
- "ঈশ্বর বলেন,তোমরা সবাই ঈশ্বরের সন্তান""
বাইবেল, যাএাপুস্তুক ৪:২২-২৩ ⬇️
- ""ঈশ্বর বলেন,ইসরাইল আমার সন্তান, ইসরাইল আমার প্রথম জন্ম""
বাইবেল, যেরিমিয়া ৩১:৯ ⬇️
- "ঈশ্বর বলেন, আমি ইসরাইলের পিতা।ইফ্রায়িম আমার প্রথম সন্তান""
বাইবেল,রোমান ৮:১৪ ⬇️
- ""যারা ঈশ্বরের আত্মার সাহায্যে পরিচালিত হয়,তারাই ঈশ্বরের সন্তান""
আপনি কি জানেন,,বাইবেলে আদম,ইব্রাহিম,দাউদ, সোলোমন এমন অনেককেই ঈশ্বরের পুত্র বলে ডাকা হয়েছে?
যেমন, যীশুকেও ঈশ্বরের পুত্র বলে ডাকা হয়েছে। ভালোবেসে ঈশ্বর তার সৃষ্টি-মানুষকে পুত্র বলে ডেকেছেন বাইবেল অনুযায়ী। যদিও আমরা মুসলিমরা তা বিশ্বাস করি না এটা কেবল বাইবেল অনুযায়ী আর বাইবেল বিকৃত কিতাব।
- তো এটা পরিষ্কার যে বাইবেলের ঈশ্বর তার সৃষ্টিকে ভালোবেসে পুত্র বলে ডেকেছেন। বাইবেল অনুযায়ী আমি-আপনিও ঈশ্বরের পুত্র।
- বাইবেল এক ঈশ্বরের কথা বলে সুতরাং যিশু বাইবেল অনুযায়ীও ঈশ্বর কিংবা ঈশ্বরের ঔরজাত পুত্র নন তা প্রমাণিত ।
- কুরআন অনুযায়ীও এটা পরিষ্কার যে যিশু কোন ঈশ্বর নন কেবল আল্লাহর একজন নবী ও রাসূল।
- কুরআন অনুযায়ী এটা প্রমানিত যে আল্লাহর কোন পুত্র নেই যিশু তো পুত্র হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
আল্লাহ সবাইকে বোঝার তৌফিক দান করুক (আমিন)