Are you sure?

তুলনামূলক ধর্মতত্ব »  বিবিধ

৯ম পর্ব:[ ৫ ] নং বৈশিষ্ট্য: সেই সত্যের আত্মা সকল বিষয়ে মানুষকে শিক্ষা দিবেন" (যোহন ১৪:২৬)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম 

৯ম পর্ব 

খ্রিস্টান বনাম মুসলিম সংলাপ:

বিষয়:যীশু তথা ঈসা আঃ কতৃক বিঘোষিত সাহায্যকারী কে পবিত্র আত্মা নাকি শেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাঃ?

আলোচনা:[ ৫ ] নং বৈশিষ্ট্য: সেই সত্যের আত্মা সকল বিষয়ে মানুষকে শিক্ষা দিবেন" (যোহন ১৪:২৬)

\________________________________________/

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহিওয়া বারাকাতাহু। প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ আজকে আমরা আলোচনা করব যীশুর বর্ণিত ভবিষ্যদ্বাণী গুলোতে "উক্ত সাহায্যকারীর"- সম্পর্কে যেসব শর্ত বা বৈশিষ্ট্যের কথা তিনি উল্লেখ করেছিলেন তার ৫ম শর্ত নিয়ে। আর এই ৫ম শর্ত কার দ্বারা পরিপূর্ণ হয়েছে সেটা ব্যাখ্যা করব এই পর্বে ইনশাআললাহ।তবে হ্যাঁ যারা ৮ম পর্ব পড়েননি তারা উক্ত লিংক থেকে পড়বেন ১-৫ টি বৈশিষ্ট্যের সম্পর্কে :এখানে ক্লিক করুন 

https://www.facebook.com/104635704800056/posts/120606269869666/

 

যাই হোক মূল আলোচনায় আসি। খ্রিস্টানদের তথাকথিত "কল্পিত পাক-রুহ" কি শিক্ষা দিয়েছেন?কিছুই না।অথচ আমাদের প্রিয় রাসূল সাঃ নিজেই বলেছেন:-"নিশ্চয়ই আমি শিক্ষকরুপে প্রেরিত হয়েছি। "(সুনানে ইবনে মাজাহ,১ম খন্ড,অধ্যায়-১৭, হাদিস নং-২২৯)।ইব্রাহিম আঃ ও ইসমাইল আঃ যখন কাবা শরিফের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন ,তখন দুআ করলেন:-"সূরা আল বাকারা (البقرة), আয়াত: ১২৯

 

رَبَّنَا وَٱبْعَثْ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُوا۟ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ

 

অর্থঃ হে পরওয়ারদেগার! তাদের (আরবদের) মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুণ যিনি তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হেকমত #"শিক্ষা_দিবেন" এবং তাদের পবিত্র করবেন ।নিশ্চয়ই তুমিই পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা।"

 

হযরত ইব্রাহিম আঃ ও তাঁর পুত্র হযরত ইসমাইল আঃ এর সম্মিলিত দোআর উত্তরে মহান আল্লাহ্ বলেছেন:-" সূরা আল-জুমুআ (الجمعة), আয়াত: ২ তে বলেছেন:-

 

هُوَ ٱلَّذِى بَعَثَ فِى ٱلْأُمِّيِّۦنَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُوا۟ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتِهِۦ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا۟ مِن قَبْلُ لَفِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ

 

অর্থঃ তিনিই নিরক্ষরদের (আরবদের)মধ্য থেকে তাঁর একজন রসূল (মুহাম্মদ সাঃ কে)প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং "শিক্ষা দেন" কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।"সত্যের আত্মা মুহাম্মদ সাঃ এর উপরে অবতীর্ণ সর্বপ্রথম ওহী হলো:-" পড়,জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা কর,মৌখিকভাবে,কলম ও লেখার মাধ্যমে। (কোরআন ৯৬:১-৪ দ্রষ্টব্য)।

 

তিনি [মুহাম্মদ সাঃ] বলেছেন:-"জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরজ অর্থাৎ বাধ্যতামূলক "(সুনানে ইবনে মাজাহ,মিশকাত শরীফ,মুশকিলাতুল বিকার,তালীকুল রগীব ইত্যাদি গ্রন্থ)।মুহাম্মদ সাঃ এর উপর অবতীর্ণ কোরআন"মানুষকে সকল বিষয় শিক্ষা দিয়েছে"(কোরআন ৩:৭; ১১:১; ৪১:৩) ।

 

• ১-ঈসা আঃও ইব্রাহিম আঃ এর ঘটনা শিক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাননি।সত্যের আত্মা মুহাম্মদ সাঃ তা #শিক্ষা" দিয়ে গেছেন যখন ইব্রাহিম আঃ তাঁর পিতা ও তাঁর জাতিকে বললেন,এ মূর্তিগুলো কী, যাদের তোমরা পূজারী হয়ে বসে আছ?তারা বললঃ আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এদের পূজা করতে দেখেছি।সে বললঃ তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষরাও রয়েছ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে।

তারা বললঃ তুমি কি আমাদের নিকট সত্য এনেছ, নাকি তুমি কৌতুক করছ?সে বললঃ না, তোমাদের রব তো আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রব, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন এবং এই বিষয়ে আমি অন্যতম সাক্ষী।শপথ আল্লাহর! তোমরা চলে গেলে আমি তোমাদের মূর্তিগুলি সম্বন্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা অবলম্বন করব।অতঃপর সে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল মূর্তিগুলিকে, তাদের বড় (প্রধান) মূর্তিটি ব্যতীত, যাতে তারা তার দিকে ফিরে আসে।তারা বললঃ আমাদের উপাস্যগুলির প্রতি এরূপ করল কে? সে নিশ্চয়ই জালিম। কেহ কেহ বললঃ আমরা এক যুবককে ওদের সমালোচনা করতে শুনেছি, তাকে বলা হয় ইবরাহীম।তারা বললঃ তাকে উপস্থিত কর লোক সম্মুখে, যাতে তারা সাক্ষ্য দিতে পারে।তারা বললঃ ইবরাহীম! তুমিই কি আমাদের উপাস্যগুলির উপর এরূপ করেছ?সে বললঃ সে’ই তো এটা করেছে, এইতো এদের প্রধান। এদেরকে জিজ্ঞেস কর যদি এরা কথা বলতে পারে।তখন তারা মনে মনে চিন্তা করে দেখল এবং একে অপরকে বলতে লাগলঃ তোমরাইতো সীমালংঘনকারী অর্থাৎ বে-ইনসাফ। অতঃপর তাদের মাথা নত হয়ে গেল এবং তারা বললঃ তুমিতো জানই যে, এরা কথা বলেনা।সে বললঃ তাহলে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদাত কর যারা তোমাদের কোন উপকার করতে পারেনা, ক্ষতিও করতে পারেনা?ধিক তোমাদেরকে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদাত কর তাদেরকে! তোমরা কি বুঝবেনা?তারা বললঃ তাকে পুড়িয়ে দাও এবং সাহায্য কর তোমাদের দেবতাগুলিকে, যদি তোমরা কিছু করতে চাও।আমি [আল্লাহ্] বললামঃ হে আগুন! তুমি ইবরাহীমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।তারা তার (ইব্রাহিম আঃ) ক্ষতি সাধনের ইচ্ছা করেছিল। কিন্তু আমি (আল্লাহ্) তাদেরকে করে দিলাম সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত। (কোরআন ২১:৫১-৭০)।

 

• ২)-ঈসা আঃ সুলাইমান আঃ এর ঘটনাও "শিক্ষা" দেওয়ার সুযোগ পাননি। সত্যের আত্মা মুহাম্মদ সাঃ তা "শিক্ষা " দিয়ে গেছেন:-"সুলাইমানের সামনে সমবেত করা হল তার বাহিনীকে, জিন, মানুষ ও পক্ষীকুলকে এবং তাদেরকে বিন্যস্ত করা হল বিভিন্ন বুহ্যে।যখন তারা পিপীলিকা অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌঁছল তখন এক পিপীলিকা বললঃ হে পিপীলিকা বাহিনী! তোমরা তোমাদের গৃহে প্রবেশ কর, যেন সুলাইমান এবং তার বাহিনী তাদের অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে পদতলে পিষে না ফেলে।

সুলাইমান ওর উক্তিতে মৃদু হাস্য করল এবং বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার মাতা-পিতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তজ্জন্য এবং যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি, যা আপনি পছন্দ করেন এবং আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের শ্রেণীভুক্ত করুন।সুলাইমান পক্ষীকুলের সন্ধান নিল এবং বললঃ ব্যাপার কি, হুদহুদকে দেখছিনা যে! সে অনুপস্থিত না কি?সে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে না পারলে আমি অবশ্যই তাকে কঠিন শাস্তি দিব অথবা যবাহ করব।অনতি বিলম্বে হুদহুদ এসে পড়ল এবং বললঃ আপনি যা অবগত নন আমি তা অবগত হয়েছি এবং ‘সাবা’ হতে সুনিশ্চিত সংবাদ নিয়ে এসেছি।আমি এক নারীকে দেখলাম যে তাদের উপর রাজত্ব করছে; তাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে এবং তার আছে এক বিরাট সিংহাসন।আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম, তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সাজদাহ করছে; শাইতান তাদের কার্যাবলী তাদের নিকট শোভন করেছে এবং তাদেরকে সৎ পথ হতে নিবৃত্ত করেছে; ফলে তারা সৎ পথ প্রাপ্ত হয়না - 

তারা নিবৃত্ত রয়েছে আল্লাহকে সাজদাহ করা হতে, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর লুকায়িত বস্তুকে প্রকাশ করেন, এবং যিনি জানেন যা তোমরা গোপন কর এবং যা তোমরা প্রকাশ কর।আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই। তিনি মহাআরশের অধিপতি। [সাজদাহ]।সুলাইমান বললঃ আমি দেখব, তুমি [হুদহুদ পাখি] সত্য বলেছ, না কি তুমি মিথ্যাবাদী?তুমি যাও আমার এই পত্র নিয়ে এবং এটা তাদের নিকট অর্পন কর; অতঃপর তাদের নিকট হতে দূরে সরে থেক এবং লক্ষ্য কর তাদের প্রতিক্রিয়া কি?সেই নারী [বিলকীস] বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমাকে এক সম্মানিত পত্র দেয়া হয়েছে।ইহা সুলাইমানের নিকট হতে এবং ইহা দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে।অহমিকা বশে আমাকে অমান্য করনা, এবং আনুগত্য স্বীকার করে আমার নিকট উপস্থিত হও।সেই নারী বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমার এই সমস্যায় তোমাদের অভিমত দাও; আমি যা সিদ্ধান্ত নিই তাতো তোমাদের উপস্থিতিতেই নিই।তারা বললঃ আমরাতো শক্তিশালী ও কঠোর যোদ্ধা; তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আপনারই। কি আদেশ করবেন তা আপনি ভেবে দেখুন।সে বললঃ রাজা-বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে তখন ওকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং সেখানকার মর্যাদাবান ব্যক্তিদেরকে অপদস্থ করে; এরাও এ রূপই করবে।আমি তাদের নিকট উপঢৌকন পাঠাচ্ছি, দেখি দূতেরা কি বার্তা নিয়ে ফিরে আসে!

অতঃপর যখন দূত সুলাইমানের নিকট এলো তখন সুলাইমান বললঃ তোমরা আমাকে ধন-সম্পদ দিয়ে কি সাহায্য করবে? আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন তা তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা হতে উৎকৃষ্ট। অথচ তোমরা তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে আনন্দ বোধ করছ।তাদের নিকট ফিরে যাও, আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে নিয়ে আসব এক সৈন্যবাহিনী যার মুকাবিলা করার শক্তি তাদের নেই। আমি অবশ্যই তাদেরকে সেখান হতে বহিস্কার করব লাঞ্ছিতভাবে এবং তারা হবে অপমানিত।সুলাইমান আরও বললঃ হে আমার পরিষদবর্গ! তারা আমার নিকট এসে আত্মসমর্পন করার পূর্বে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমার নিকট নিয়ে আসবে?এক শক্তিশালী জিন বললঃ আপনি আপনার স্থান হতে উঠার পূর্বে আমি ওটা আপনার নিকট এনে দিব এবং এ ব্যাপারে আমি অবশ্যই ক্ষমতাবান, বিশ্বস্ত।কিতাবের জ্ঞান যার ছিল সে বললঃ আপনি চোখের পলক ফেলার পূর্বেই আমি ওটা আপনাকে এনে দিব। সুলাইমান যখন ওটা সামনে রক্ষিত অবস্থায় দেখল তখন সে বললঃ এটা আমার রবের অনুগ্রহ যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, আমি কৃতজ্ঞ না অকৃতজ্ঞ; যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে তা করে তার নিজের কল্যাণের জন্য এবং যে অকৃতজ্ঞ হয় সে জেনে রাখুক যে, আমার রাব্ব অভাবমুক্ত, মহানুভব।সুলাইমান বললঃ তার সিংহাসনের আকৃতি বদলে দাও; দেখি সে সঠিক দিশা পায়, না কি সে বিভ্রান্তের অন্তর্ভুক্ত হয়।ঐ নারী যখন এলো, তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলঃ তোমার সিংহাসন কি এইরূপই? সে বললঃ এটাতো যেন ওটাই; আমাদেরকে ইতোপূর্বেই প্রকৃত জ্ঞান দান করা হয়েছে এবং আমরা আত্মসমর্পনও করেছি।আল্লাহর পরিবর্তে সে যার পূজা করত তা’ই তাকে সত্য হতে নিবৃত করেছিল, সে ছিল কাফির সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।তাকে বলা হলঃ এই প্রাসাদে প্রবেশ কর। যখন সে ওটা দেখল তখন সে ওটাকে এক গভীর জলাশয় মনে করল এবং সে তার উভয় পায়ের গোছা অনাবৃত করল। সুলাইমান বললঃ স্বচ্ছ স্ফটিক মন্ডিত প্রাসাদ। সেই নারী বললঃ হে আমার রাব্ব! আমিতো নিজের প্রতি যুল্‌ম করেছিলাম, আমি সুলাইমানের সাথে জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন করছি।(পবিত্র কোরআন ২৭:১৭-৪৪)।"প্রসঙ্গত:উল্লেখ্যযে,হুদহুদ পাখি ও পিঁপড়ে দাওয়াতের কাজ করছিল। তাদের এ কাজ আল্লাহ্ পাকের কাছে এতটাই পছন্দনীয় হলো যে-তিনি তাদের বিষয় কোরআনে সন্নিবেশ করে দিলেন।কিয়ামত পর্যন্ত মানুষ তেলাওয়াত করতে থাকবে।

 

• ৩)ঈসা আঃ লুত আঃ এর ঘটনা" শিক্ষা "দিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাননি। সত্যের আত্মা মুহাম্মদ সাঃ তা" শিক্ষা" দিয়ে গেছেন।মহান আল্লাহ্ পবিত্র আল কোরআনে বলেছেন:-"وَ لَمَّاۤ  اَنۡ جَآءَتۡ رُسُلُنَا لُوۡطًا سِیۡٓءَ بِہِمۡ وَ ضَاقَ بِہِمۡ ذَرۡعًا وَّ قَالُوۡا لَا تَخَفۡ وَ لَا تَحۡزَنۡ ۟ اِنَّا مُنَجُّوۡکَ وَ اَہۡلَکَ  اِلَّا امۡرَاَتَکَ  کَانَتۡ  مِنَ  الۡغٰبِرِیۡنَ ﴿۳۳﴾

 

এবং যখন আমার প্রেরিত মালাইকা/ফেরেশতারা লূতের নিকট এলো তখন তাদের জন্য সে বিষণ্ণ হয়ে পড়ল এবং নিজেকে তাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করল। তারা বললঃ ভয় করনা, দুঃখও করনা; আমরা তোমাকে ও তোমার পরিবারবর্গকে রক্ষা করব, তোমার স্ত্রী ব্যতীত; সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।"

 

اِنَّا مُنۡزِلُوۡنَ عَلٰۤی اَہۡلِ ہٰذِہِ  الۡقَرۡیَۃِ رِجۡزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ ﴿۳۴﴾

 

আমরা এই জনপদবাসীর উপর আকাশ হতে শাস্তি নাযিল করব, কারণ তারা ছিল পাপাচারী।

وَ لَقَدۡ تَّرَکۡنَا مِنۡہَاۤ  اٰیَۃًۢ  بَیِّنَۃً  لِّقَوۡمٍ یَّعۡقِلُوۡنَ ﴿۳۵﴾

 

আমি [ আল্লাহ্] বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য এতে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রেখেছি।"(পবিত্র কোরআন ২৯:৩৩-৩৫)।"

 

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ ২৩ বছর নবুয়তী জীবনে "সমস্ত বিষয় " তাঁর উম্মত কে "শিক্ষা দিয়ে "গেছেন।

তাঁর দেওয়া শিক্ষা সর্বদাই জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার প্রতি উৎসাহ দিয়েছে। অথচ পাক-রুহের সাক্ষী গোপালেরা বিজ্ঞান সাধকদের উপর অতীতে অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে। তার একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ গ্যালিলিও। সত্যময় আত্মা হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উপরে অবতীর্ণ কোরআন বিজ্ঞান চর্চায় আহ্বান জানিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি,কোরআনে বিজ্ঞানসম্মত বক্তব্য ও বিশ্লেষণ আধুনিক বিজ্ঞানের সুপ্রতিষ্ঠিত সত্যের সাথে পরিপূর্ণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কোরআনের এই সমস্ত বিজ্ঞান সংক্রান্ত বক্তব্যের সাথে তুলনা করা যেতে পারে এমন কোন বাণী বা বক্তব্য পাক-রুহের দাবিদারদের কোন কিতাবেই খুঁজে পাওয়া যায় না। সত্যময় আত্মা হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নবী জীবনের ২৩ বছরের ব্যাপীয়ে শিক্ষা অর্থাৎ পবিত্র আল কোরআন ও তাঁর দশ লক্ষ হাদিসে পরিবার-পরিজন, সামাজিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিকসহ সকল বিষয়ে মানুষকে শিক্ষা দিয়ে গেছেন। রান্নাঘর থেকে শুরু করে রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত আর ব্যবসা থেকে যুদ্ধবিদ্যা ও রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয় পর্যন্ত তিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন ।তাঁর দেওয়া শিক্ষা এমনই ব্যাপক যে,মানুষের দৈহিক ও আত্মিক উভয় দিকেরই সুষ্ঠু বিকাশের বিধানাবলী থেকে শুরু করে পারিবারিক নিয়ম-শৃঙ্খলা,সামাজিক সংগঠন ও দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রেও সর্বোত্তম ও সর্বযুগে সমভাবে প্রযোজ্য। দৃষ্টান্ত স্বরূপ:-" সকল বিষয়ে মানুষকে শিক্ষা দিয়ে সত্যময় আত্মা একটি বর্বর,নিরক্ষর,তদানীন্তন আরবজাতিকে জ্ঞানে-গুণে-মানে-রুচি-সভ্যতায় ও সংস্কৃতিতে এত অল্পকালের মধ্যে এমন পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন যে, যাঁর দৃষ্টান্ত সৃষ্টির পর থেকে এই পর্যন্ত আর দ্বিতীয়  কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায় না। আল্লাহ্ বলেছেন:-"সূরা আল আনআম (الانعام), আয়াত: ৩৮

 

وَمَا مِن دَآبَّةٍ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا طَٰٓئِرٍ يَطِيرُ بِجَنَاحَيْهِ إِلَّآ أُمَمٌ أَمْثَالُكُم مَّا فَرَّطْنَا فِى ٱلْكِتَٰبِ مِن شَىْءٍ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّهِمْ يُحْشَرُونَ

 আমি (মহান আল্লাহ্) কোন কিছুই লিখতে ছাড়িনি অর্থাৎ বাদ দেইনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে।