Are you sure?

বিজ্ঞান »  ইসলাম ও বিজ্ঞান

ডিম্বাণু নিয়ে কুরআনের মুজিযা

গ্রীকরা পর্যন্ত বিশ্বাস করত না যে, সন্তান জন্মদানে নারীদের কোন অবদান আছে এরিস্টটল মনে করত যে, পুরুষের বীর্য নারীর ঋতুস্রাবের রক্তের সাথে মিশে একসময় ভ্রূণ গঠন করে। ভারতীয় বিজ্ঞানী চরক ও মহর্ষি সুশ্রুত নারীর বীর্য বলতে ‘আর্তযা রক্ত’ বুঝাতো। বিস্তারিত জাকির নায়েকের সাথে উইলিয়াম ক্যাম্পবেলের বক্তব্যে পাবেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ [সাঃ] বললেন যে, নারীর রক্ত নয়, নারীর বীর্য তথা ডিম্বাণু ভ্রূণ গঠন করেন। অবশ্য, গ্যালেন মনে করতেন যে, নারীর শুক্রাণু আছে। কিন্তু তিনি মূলত নারীর যোনি রসকে বীর্য ভেবেছিলেন, যা কিনা স্বচ্ছ বা সাদা।[i] অন্যদিকে, রাসূল [সাঃ] বলছেন যে, নারীর বীর্য [ডিম্বাণু] হলুদ।

তখন পর্যন্ত ডিম্বাণু শব্দের ব্যবহার কেউ করে নি। তাই প্রচলিত যে শব্দ ব্যবহার করে মনের ভাব অপরকে বুঝানো যাবে, সেটা করা-ই যৌক্তিক। কুরআনেও মেয়েদের ডিম্বাণু না বলে ‘শুক্রাণু’ উল্লেখ করা আছে। আল্লাহ বলেন, ‘আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি (পিতা-মাতার) মিশ্রিত শুক্রবিন্দু হতে, তাকে পরীক্ষা করার জন্য অতঃপর আমরা তাকে করেছি শ্রবণশক্তিসম্পন্ন ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন’ (দাহর ৭৬/২)

আয়াতের তাফসীর

আহসানুল বায়ানঃমিলিত শুক্র বা বীর্যবিন্দু বলতে নর-নারী উভয়ের মিশ্রিত বীর্য

তাফসীরে আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়াঃ বলাবাহুল্য এখানে নর ও নারীর মিশ্র বীর্য বোঝানো হয়েছে অর্থাৎ মানুষের সৃষ্টি পুরুষ ও নারীর দু‘টি আলাদা বীর্য দ্বারা হয়নি বরং দু‘টি বীর্য সংমিশ্রিত হয়ে যখন একটি হয়ে গিয়েছে তখন সে সংমিশ্রিত বীর্য থেকে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে অধিকাংশ তফসীরবিদ তাই বলেছেন [বাগভী; কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]

তাফসীরে ফী যিলাযিল কুরআনঃ যে বীর্য দ্বারা মানুষ সৃষ্টি হয় তা জরায়ুতে প্রবিষ্ট বীর্যের পুরুষ কোষ ও নারী ডিম্বাণুর মিশ্রণের পরেই তৈরি হয়।

মারেফুল কুরআনঃ অর্থাৎ, নর ও নারীর উভয়ের বীর্য থেকে। কারন নারীর বীর্যও ভিতরে ভিতরে তার গর্ভাশয়ে স্খলিত হয়।

তাফসীরে তাওযীহুল কুরআনঃ অর্থাৎ নর ও নারীর মিলিত উপাদান দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।

তাফসীরে ওসমানীঃ অর্থাৎ নারী-পুরুষের দুই রঙের পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।

ইবনে কাসীরঃ তিনি তাকে পুরুষ ও নারীর মিলিত শুক্রের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন এবং বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত করার পর তাকে বর্তমান রূপ ও আকৃতি দান করেছেন

তাফসীরে তাবারীঃ তিনি তাকে পুরুষ ও নারীর মিলিত শুক্রের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন এবং বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত করার পর তাকে বর্তমান রূপ ও আকৃতি দান করেছেন। (তাবারী ২৪/৮৯)

ফাতহুল মাজীদঃ আমশাজ” অর্থ : মিশ্রিত, অর্থাৎ স্বামী ও স্ত্রীর ডিম্বাণু উভয়ের সংমিশ্রণকে বুঝোনো হয়েছে

[i] Bourke, A., Carpenter, A. and Deane, S. (2002). Irish women’s writing and traditions. Vol. 4. Cork: Cork Univ. Press in assoc. with Field Day, p.343.