Are you sure?

তুলনামূলক ধর্মতত্ব »  বিবিধ

বাইবেলের কোন বই কে লিখেছে এবং বিকৃত বাইবেল সংকলনের ইতিহাস

Old Testament (Torah)
Old Testament এর প্রথম ৫ টি বইকে ইহুদিরা বলে (Torah) যা বাংলায় বলা হয় তাওরাত। এই বই গুলো ইহুদি খ্রিস্টানদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুুযায়ী তাদের ভাববাদী মোশি লিখেছে৷
মোশির লিখা ৫ টি বই যথাক্রমে :-
1. Genesis . বাংলাতে (আদিপুস্তক)
2. Exodus. বাংলাতে (যাত্রাপুস্তক)
3. Leviticus . বাংলাতে ( লেবীয় পুস্তক)
4. Numbers. বাংলাতে (গণণা পুস্তক)
5. Deuteronomy.  বাংলাতে (দ্বিতীয় বিবরণ)
এগুলোকে খ্রিস্টান ও ইহুদিরা মনে করে মোশি লিখেছে। এই ৫ টি বইয়ের নাম Torah বা তাওয়াত।
মোশির লিখা তাওরাত সংকলন :-
মোশির নামে প্রচারিত (Torah) তাওরাত এর বই গুলো যে মোশির নিজ হাতে লিখিত বা সংকলিত সে বিষয়ে কোন প্রমাণ নেই ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছে৷
ভাববাদী দাউদ এর বংশের শাসক যোশিয়া বিন আমোন (Josiah,son of Amon) খ্রীস্টপূর্ব ৬৪১ সালের কাছাকাছি সময়ে ইহুদি রাজ্যের (যুডাহ প্রদেশের) শাসনভার গ্রহণ করেন। তার রাজ্যত্ব গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত (Torah বা তাওরাত) এর কোন প্রসিদ্ধ বা প্রচলন পাওয়া যায় না ৷ তার সিংহাসন আরোহণের ১৮ বছরে (Torah বা তাওরাতের) সে কপিটি পাওয়া গিয়েছিল যা মোটেও নির্ভরযোগ্য ছিলো না । কয়েক বছর পরে খ্রীস্টপূর্ব ৫৮৮ বা ৫৮৬ অব্দে যখন ব্যাবিলন সম্রাট নেবুকাদনেজার(Nebuchadnezzer) বা বকত নসর যেরুযালেম নগরী ও ইহুদি রাজ্য ধব্বংস করে সকল ইহুদিদের বন্দি করে ব্যাবিলনে নিয়ে যায়। তখন ওই অনির্ভরযোগ্য ও সুত্রবিহীন কপিটির প্রায় পুরোটুকু হারিয়ে যায়। নেবুকাদনেজারের এই ঘটনার মধ্য দিয়ে Torah বা Old Testament এর পূর্বের সকল বই পৃথিবী থেকে বিলীন হয়ে যায়। ইহুদিদের ধারণা অনুযায়ী প্রায় ১শতাব্দী পরে ভাববাদী Ezra বাংলাতে ইয্রা বা ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী নাম নবী উযাইর (আঃ)  তিনি পূনরায় Old Testament এর সকল বই নিজের পক্ষ থেকে লিখেন। খ্রি.পূ. ১৬৮ অব্দে সিরিয়ার গ্রিক শাসক চতুর্থ এন্টিয়ক(Antiochus Epiphanes) জেরুজালেম ও ইহুদিদের রাজ্য পূনরায় ধব্বংস করে এবং Solomon বা ভাববাদী সোলাইমানের মসজিদটি ধব্বংস করে সেখানে গ্রীক প্রতিমা-মন্দির স্থাপন করেন। এই ঘটনার পরে ভাববাদী Ezra বা ইয্রার লিখা Torah বা তাওরাতের কপিগুলো এবং এর অধিকাংশ উদ্ধতি বিনষ্ট হয়ে যায়৷
এখন যে Torah বা তাওরাতকে ইহুদি ও খ্রিস্টানরা নিজেদের ধর্মগ্রন্থ বলে সেগুলো কে লিখেছে কোথা থেকে এসেছে তা কোন খ্রিস্টান বা ইহুদিই বলতে পারে না । 
তারপরেও খ্রিস্টান ও ইহুদিরা দাবি করে মোশির বর্তমান Torah বা তাওরাত ভাববাদী Ezea ইয্রা ওহি বা ইলহামের (Divine Inspiration) মাধ্যমে Torah বা তাওরাত লিখেছিল
আসুন তাদের এই দাবি ভুল প্রমানিত করি :
উপরে আমরা দেখেছি Ezra বা ইয্রা নতুুুন করে একবার Torah তাওরাত লিখেছিল। কিন্তু সে Torah বা তাওরাতও বিলুপ্ত হয়ে যায়। বাইবেল অনুযায়ী এই Ezra বা ইয্রাই হগর ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয় এই দুইজনকে নিয়ে বাইবেলের ১বংশাবলি ইংরেজিতে 1Chronicles ও ২য় বংশাবলি ইংরেজিতে 2 Chronicles রচনা করে। এই বই মূলত ৩ জন ভাববাদীর লেখা। অথচ এই বই গুলোতে Torah বা তাওরাতের বিবরণের মধ্যে বৈপরিত্য রয়েছে। এই Torah বা তাওরাত কিন্তু Ezra লিখেছিল আবার  এই Ezra ইয্রাই 1Chronicles ও 2Chronicles লিখেছিল। তাহলে এইজন ব্যক্তির বইয়ের লেখা কী করে অন্য বইয়ে বদলে যায়? 
দেখুন, 
ইয্রা Torah -তে লিখেছে,  (Revised Standard Version) 
Genesis 46:21
 And the sons of Benjamin: Bela, Becher, Ashbel, Gera, Na′aman, Ehi, Rosh, Muppim, Huppim, and Ard.
21. বিন্যামীনের পুত্ররা হল বেলা, বেখর, অস্বেল, গেরা, নামন, এহী, রোশ, মুপ্পীম, হুপ্পীম ও অর্দ|(আদিপুস্তক 46:21) (Genesis 46:21) এখানে বিন্যামীনের ৯ জন পুত্রের কথা বলা হয়েছে।
ইয্রা বংশাবলি মানে 1, 2Chronicles তে লিখেছে,
 1 Chronicles 7:6
Descendants of Benjamin The sons of Benjamin: Bela, Becher, and Jedi′a-el, three. 
6. বেলা, বেখর ও য়িদীযেল নামে বিন্যামীনের তিন পুত্র ছিল|(বংশাবলি ১ 7:6) (1Chronicles 7:8) এখানে বিন্যামীনের ৩ জন পুত্রের কথা বলা হয়েছে।  
1 Chronicles 8:1 
Descendants of Benjamin Benjamin was the father of Bela his first-born, Ashbel the second, Ahar′ah the third. 
1. বিন্যামীনের প্রথম পুত্র বেলা, দ্বিতীয় পুত্র অস্বেল,(বংশাবলি ১ 8:1)
এখানে ২য় পুত্র অম্বেল অথচ Torah তে আদিপুস্তক 46:21 এ বলা হয়েছে অম্বেল ৩য় পুত্র। 
একজন ব্যক্তির লেখা দুই বইয়ে তার দুরকম কথা। এটা কতটা হাস্যকর।  এ থেকেই বুঝা যায় Ezra ইয্রার লেখা Torah তখনই বিলীন হয়ে গিয়েছিল। আর সংকলন হয়নি। উপরের আলোচনা থেকে প্রমানিত হলো যে, বর্তমানে বাইবেলের অন্তর্ভুক্ত  Torah বা তাওরাত মোশি প্রদত্ত লিখা ৫ টি বই নয় এবং ইয্রা লিখিত Torah বা তাওরাতও নয়। এগুলোকে বিকৃত করা হয়েছে।
মোশির ৫টি বইয়ের পরেই বাইবেলে আছে -
(The book of Josuhua =যোশুয়া)
প্রথমেই যে কথা উল্লেখ করা দরকার তা হলো, এখন পর্যন্ত ইহুদি বা খ্রিস্টানরা নিশ্চিত ভাবে জানে না ,যে এই বইয়ের লেখক কে। 
এই বইয়ের বিষয়ে তাদের ৫ টি মত রয়েছে :-
১. গ্রেহার্ড, ডিওডিটি, হিউট ,প্যাট্রিক, টামলাইন, ড. কেরি প্রমুখ বলেন যে এই বইটি মোশির শিষ্য যিহোশুয়ের লিখিত।
২. ড. লাইট ফিট বলেন, বইটি (হারোণের পুত্র) পিনহস কর্তৃক লিখিত। 
৩. কালোন বলেন, বইটি (হারোণের পুত্র,পীনহসের পিতা) ইলিয়াসর কতৃক লিখিত।
৪. ভ্যান্টল বলেন , বইটি স্যামুয়েল দ্বারা রচিত। 
৫. হেনরি বলেন বইটি যিরমিয় দ্বারা রচিত৷ যিহোশুয় এবং যিরমিয়র মধ্যে সময়ের ব্যবধান হল কমবেশী প্রায় ৮৫০ বছর। 
এই মতভেদই প্রমান করে যে বইটি বিকৃত। এর সঠিক সংকলন হয়ন।
(The Book Of Judge = বিচারকচরিত)
এই বইটি নিয়ে ইহুদি-খ্রিষ্টানদের মতভেদ খুব বেশী । এর রচয়িতা এবং রচনকাল নিয়ে কিছুই জানা যায় না।
১. খ্রিস্টানদের কেউ বলে, এর রচয়িতা (হারোণের পুত্র) পিনহস। 
২. তাদের কেউ বলে ,এর রচয়িতা রাজা হিষ্কিয়(Hazekiah) উপরের দুইটি মত অনুযায়ী বইটি ঐশ্বরিক (Divine Inspiration) এর ভিত্তিতে লেখা হয়নি। এর কারণ এই দুই ব্যক্তি কোন ভাববাদী ছিলেন না। ৩. তাদের কারো মতে এই বইয়ের রচয়ীতা যিরমিয়।
৪. কারো মতে এই বইয়ের রচয়িতা যিহিস্কেল আবার কারো মতে ইয্রা। 
উল্লেখ্য যে , ইয্রা ও পিনহসের মধ্যে সময়ের দূরত্ব ৯০০ বছরেরও বেশী। 
(The Book Of Ruth = রুথ)
এই বই নিয়েও মতভেদ রয়েছে৷
১. তাদের কেউ বলে যিহূদার রাজা হিস্কিয়(Hezekiah) এই বই লিখেছে। 
২. তাদের কেউ বলে এর রচয়িতা ইয্রা ৷ তবে বেশীরভাগ ইহুদি ও খ্রিস্টান বলে এটি স্যামুয়েল ভাববাদী লিখেছে। 
১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে মুদ্রিত ক্যাথলিক হেরাল্ডের ৭ম খন্ডের ২০৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে স্টারবুর্গে মুদ্রিত বাইবেলের ভূমিকায় লেখা আছে যে, রুথের বিবরণটি একটি ঘরোয়া কাহিনী। অর্থাৎ এগুলো অনির্ভরযোগ্য গল্প ও অসত্য কাহিনি ।
(1Samuel, 2Samuel= ১স্যামুয়েল,২স্যামুয়েল)
লেখক :- নাথন ভাবভাদী ও গাদ। 
(1Kings, 2Kings = ১রাজবলি,২রাজবলি)
লেখক :- যেরিমিয়া। 
(1Chronicles, 2Chronicles= ১বংশাবলী, ২বংশাবলী)
লেখক :- Ezra বা ইয্রা,হগর ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয়।
 (Nehemiah= নেহেমিয়া)
নেহেমিয়া বইয়ের ব্যাপারে মতভেদ আছে। অধিকাংশ খ্রিস্টান মনে করে যে বইটি নেহেমিয়া লিখেছে। কিন্তু অন্যান্য খ্রিস্টান পন্ডিতদের মতে বইটি Ezra ইয্রা লিখেছে।
যদি বইটি নেহেমিয়া লিখে থাকে তবে বইটি মানব রচিত বই।  কারণ নেহেমিয়া কোন ভাববাদী ছিলো না। সে ছিলো গভর্নর। 
(The Book of Ezra = এস্তার)
ইস্টেরের বিবরণ নামে প্রচারিত বই নাম ও রচনাকাল নিয়ে কিছুই জানা যায় না।কেউ-কেউ বলেন, ইয্রার যুগ থেকে শিমোনের যুগ পর্যন্ত মন্দিরের পুরোহিত-পণ্ডিতগণ বইটি রচনা করে। 
(The book Of Job = যোব)
এই বইটি নিয়ে ২৪ প্রকারের মত ভেদ আছে। এই বইয়ের সংকলনের অবস্থা খুব খারাপ। ইহুদি ধর্মের প্রখ্যাত ধর্মগুরু পন্ডিত রাব্বি মমানিডিম, মিকাইলস, লেকারক, স্মলার, স্টক ও অন্যান্য খ্রিস্টান ধর্ম গুরু মনে করে যে এই বইটি কাল্পনিক মিথ্যা কাহিনি। ইয়োব নামে কোন ভাববাদী ছিল না। ৫ম শতকের পাদ্ররী থিয়োডর এই বইটির অত্যন্ত নিন্দা করেন। 
আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারেনি যে এই বইটি কে রচনা করেছে ।
(Pslms = গীতসংহীতা)
গীতসংহীতা বা দাউদের যাবুর নামের এই বইয়ের অবস্থা অনেকটা ইয়োবের মতো। কোন নির্ভরযোগ্য উৎস বা সূত্র প্রমানিত হয়নি যে এই বইটির রচয়িতা অমুক। গীতসংহীতার ১৫০ টি অধ্যায় কোন যুগে সংকলন হয়েছে তা কেউ আজ পর্যন্ত বলতে পারেনি। মনে করা হয় ৭১টি অধ্যায় দাউদের রচিত। ৮৮ নং অধ্যায় হেমন্দের রচিত । ৮৯ নং অধ্যায় এথনের রচিত। ৭২ ও ১২৭ নং অধ্যায় সলোমনের রচিত। ৭৩-৮৩ পর্যন্ত আসফের রচিত । আবার কেউ-কেউ বলে ৭৪ ও ৭৯ নং অধ্যায় আসফের রচিয়ত নয় । ১১টি অধ্যায় যযথাক্রমে ৪২,৪৪-৪৯,৮৪,৮৫,৮৬,৮৮ কোরহ-সন্তানদের রচিত ।
ক্যামিথ বলেন, দাউদ শুধু মাত্র ৪৫ টি অধ্যায় নিজে রচয়িত করেছে। বাকি ১০৫ অন্য কারো রচনা করা। একেক জনের একেক মতামত । এই গীতসংহীতা সংকলনের অবস্থা খুবই খারাপ। 
অপরদিকে অধ্যায়গুলো সংকলন করার বিষয়েও অনুরুপ মতভেদ রয়েছে। কেউ-কেউ বলেন, দাউদের যুগে এগুলো সংকলন হয়েছে।কেউ বলেন যিহূদার রাজা হিস্কিয়ের(Hezekiah) যুগে তার কতিপয় প্রিয় মাত্র এগুলোর সংকলন করেন। অন্য অনেকে বলে এগুলো বিভিন্ন যুগে সংকলিত হয়েছে ।
(The Proverbs =  প্রবচন)
ধারণা করা হয় এটা শলোমন লিখেছে। কেউ-কেউ দাবি করেন যে, এই বইটি পুরোটায় শলোমন রচনা করে। এই দাবি বাতিল। নিম্নের বিষয়গুলো এই দাবির অসারতা প্রমাণ করে।
১. ভাষা ও উপস্থাপনাভঙ্গির পার্থক্য ।
২. একই অনুচ্ছেদ বা পরিচ্ছেদের বারংবার উল্লেখ।
৩. এই বইয়ের শেষ দুই অধ্যায়: ৩০ অধ্যায়ের প্রথম আয়াত ও ৩১ অধ্যায়ের প্রথম আয়াত প্রমাণ করে যে , বইটি শলোমনের কথা নয়৷
যদি ধরে নেওয়া হয় যে, এই বইটির কিছু অংশ 
শলোমন লিখেছে ,তাহলে বাহ্যিক অবস্থার আলোকে ধরা যায় যে, শেষের এই দুইটি অধ্যায় বাদে ২৯টি অধ্যায় তার রচিত। এই ২৯টি অধ্যায়ও তার যুগে লেখা হয়নি ।অন্তত শেষ ৫টি অধ্যায়। অর্থাৎ ২৫ থেকে ২৯ অধ্যায় যিহুদা রাজ্যের রাজা হিস্কিয়ের(Hezekiah) লোকেরা লিখেছিল। ২৫ অধ্যায়ের প্রথম ১ম আয়াতে তা স্পষ্ট করে লেখা হয়েছে। শলোমনের মৃত্যুর ৩৭৫ বছর পরে এই লেখক বা সংকলনের কর্মটি সংঘটিত হয়। 
কেউ-কেউ বলেন, এই বইটির ১ম থেকে ৯টি অধ্যায় শলোমনের রচিত নয় ৷ দ্বিতীয় বিভ্রান্তির অপনোদনে বাইবেল ভাষ্যকার আদম ক্লার্কের কথা থেকে তা বুঝা যায় । এই বইয়ের ৩০ নং অধ্যায় আগুরের রচিত। ৩১ নং অধ্যায়টি লমুয়েলের রচিত। বাইবেল ভাষ্যকরগণ এখনো পর্যন্ত জানতে পারেনি এই দুই ব্যক্তির পরিচয়। তা কে ছিলেন। কোথায় ও কোন যুগে তারা বসবাস করতেন। তারা ভাববাদী ছিলেন কী না ইত্যাদি । তবে খ্রিস্টানরা অনুমানের উপর বলে থাকে এরা ভাববাদী ছিলো। 
(Ecclesiastes = উপদেশক)
এই উপদেশক নামের বইটির ব্যাপারেও মতভেদ ব্যাপক। কেউ-কেউ বলেছেন এই বইটি শলোমনের রচিত। প্রসিদ্ধ ইহুদি ধর্মবেত্তা রাব্বি কামজি বলেন, বইটি রচনা করেন যিশাইয়। ইহুদি তালমুদ বিশেষজ্ঞ পন্ডিতগণ বলেন, বইটি রাজা হিস্কিয় রচনা করেছে। ক্রোটিস বলেন, (শল্টিয়েলের পুত্র)সরুব্বাবিলের নির্দেশে তার পুত্র আবিহুদকে শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে জনৈক ব্যাক্তি বইটি রচনা করেছেন। খ্রিস্টান ধর্মবেত্তা পন্ডিত জিহান এবং কতিপয় জার্মান পন্ডিত বলেন ,ইসরায়েলীয়গণ ব্যাবিলনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া পরে এই বইটি রচিত হয়। যারকিল বলেন ,এন্টিয়কাস ইফানস(Antiochus Epiphanes) এর সময়ে বইটু রচনা করা হয়। 
(The Song of Solomon = পরমগীত)
পরমগীত বা শলোমনের পরমগীত নামে পরিচিত বইটির অবস্থা খুবই করুণ । খ্রিস্টানদের কেউ-কেউ বলেন ,বইটি শলোমন অথবা তার কোনো সমসাময়িক ব্যাক্তির রচিত। ড.কেনিকাট ও অন্য কতিপয় আধুনিক গবেষক বলেন, বইটি শলোমনের রচনা করা একেইবারেই ভুল। এই বইটি শলোমনের মৃত্যুর অনেক পরে রচিত হয়েছে। খ্রিস্টীয় ৫ম শতকের প্রসিদ্ধ খ্রিস্টান পাদরি থিয়োডর এই বইটি ও ইয়োবের বিবরণ এই দুটি বইয়ের অন্তত নিন্দা করেছেন। সিমন ও লি ক্লার্ক এই দুইটি বইয়ের বিশুদ্ধতা স্বীকার করতেন না। ওয়াস্টন বলেন, এই বইটি অশ্লীল গানের সমষ্টি। তাই কাজেই বইটিকে পবিত্র বাইবেলের থেকে বাদ দেয়া উচিৎ। আরো কিছু আধুনিক গবেষক এ কথা সমর্থন করেছেন। স্মিলর বলেন, সুস্পষ্টত বোঝা যায় যে, বইটি জাল-বানোয়াট৷ ক্যাথলিক ওয়ার্ড বলেন, ক্যাসটিলো এই বইটি Old Testament থেকে বাদ দিতে নির্দেশ দেন। কারণ বইটি নোংরা অপবিত্র গানের সমাহার মাত্র।  
(Isaiah = যিশাইয় বা ইসাইয়া)
খ্রিস্টানদের মত অনুযায়ী এই বই যিশাইয় ভাববাদী লিখেছে৷ 
ক্যাথলিক কার্কন ও প্রটেস্ট্যান্ট ওয়ারেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয় এবং এই বিতর্ক ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে আকবারাবাদে মুদ্রিত হয়।ক্যাথলিক কার্কন এই বিতর্কের দ্বিতীয় বইয়ে লিখেছে, প্রসিদ্ধ জার্মান পন্ডিত স্টাহেলন বলেছেন, যিশাইয় ভাববাদীর বইয়ের ৪০ অধ্যায় থেকে ৪৬ অধ্যায় পর্যন্ত পদ গুলো কোন মতেই যিশাইয় ভাববাদীর রচনা হতে পারে না। অর্থাৎ যিশাইয়র নামে প্রচারিত ৬৬ অধ্যায়ের বইয়ে ২৭ টি অধ্যায় যিশাইয়র রচিত নয়।
(Jeremiah = যেরেমিয়া)
ধারণা করা হয়,এই বইটি যেরেমিয়া ভাববাদী লিখেছে। যেরেমিয়া ভাববাদীর বইয়ের ৫২ অধ্যায়টি কোন অবস্থাতেই যেরেমিয়ার রচিত না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চয়তার কারণ হলো ৫১ অধ্যায়ের সর্বশেষ ৬৪ নং পদের শেষে নিম্নের বাক্যটি রয়েছে:
১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দে মুদ্রিত বাইবেলের ভাষা:
(এখানে শেষ হল যেরেমিয়ার বাক্যবলি)
১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দে মুদ্রিত বাইবেলের ভাষা:
(এই স্থান পর্যন্ত পূর্ণ হল যেরেমিয়ার বাক্যবলি)
১৮৪৪ সালে মুদ্রিত আরবি বাইবেলের ভাষা
(এই পর্যন্ত যেরেমিয়ার বাক্য)
দ্বিতীয়, ১০ অধ্যায়ের ১১ পদে বিষয় হল এমন যে, এই পদটি কাসডীয় ভাষায় লেখা। অতচ অবশিষ্ট পুরো বাইবেল হিব্রু ভাষায় লেখা। কে বইয়ের মধ্যে এসব সংযোজন করেছে তা জানা যায় না। 
(Lamentations= বিলাপ-গাথা)
ধারণা করা হয় এই বইটি যেরেমিয়া ভাববাদী লিখেছে।
(Ezekiel = এজেকিয়েল)
এই বইটা নিয়ে খুব বেশী মতভেদ। একে জনের একেক মতামত এই বইটি নিয়ে। তবে এখন পর্যন্ত কেউই বিশুদ্ধভাবে প্রমাণ দিয়ে বলতে পারেনি যে,বইটি অমুখ লিখেছে৷
(Book Of Daniel = দানিয়েল)
থিয়োডোশানের গ্রিক অনুবাদে, ল্যাটিন অনুবাদে ও রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সকল অনুবাদে ৩ টি গান রয়েছে। অনুরুপভাবে বাইবেলের এ সকল সংস্করণে দানিয়েলের বইটির শেষ ১৩ ও ১৪ অধ্যায় রয়েছে। রোমান ক্যাথলিকরা এই গান তিনটি ও অধ্যায় দুইটিকে ঐশ্বরিক বইয়ের অংশ হিসেবে বিশ্বাস করেন।কিন্তু প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টানরা এগুলোকে জাল ও মিথ্যা বলে গণ্য করে। তাদের বাইবেলে এগুলো নেই। 
(Hosea = হোসেয়া)
লেখক :- হোসেয়া। 
(Joel = যোয়েল)
লেখক :- যোয়েল।
(Amos = আমোস)
লেখক :- আমোস। 
(Obadiah = ওবাদিয়া)
লেখক :- এই বইয়ের লেখক নিয়ে হাজার মতভেদ আছে।  তবে অনেক খ্রিস্টানরাই বলে এটা ওবাদিয়া লিখেছে । এই বইটা নিয়ে বেশী কিছু জানা যায় না। 
(Jonah = জোনা)
এই বইটা কোথা থেকে এসেছে কে লিখেছে তা আজও রহস্য। কেউ জানে না এই বইটা কে লিখেছে। এই বইটা নিয়ে মতভেদ আছে অনেক। এই বই সম্পর্কে যা বলা হয় তার পুরোটায় অনুমান করে বলা হয়।
(Micah = মিখা)
লেখক :- ভাববাদী লিখা।
(Nahum = নাহুম)
লেখক:- ভাববাদী নাহুম।
( Habakkuk = হাবাকুক)
ধারণা করা হয় বইটি হাবাকুক লিখেছে। তবে এই বইটি জেরুজালেমে অনেক দেরিতে লিখা হয়েছে। বই সম্পর্কে খুব একটা জানা যায় না ।
(Zephaniah = জেপানিয়া)
লেখক: বইটি হিস্কিয় ও আরামিয়ার ছেলে গদলিকাহ লিখেছে বলে ধারণা করা হয়।
(Haggai = হগয়)
এই বইটি কোথা থেকে এসেছে কে লিখেছে এ বিষয়ে কিছুই জানা যায় না। বইটি যার সম্পর্কে লিখা তার সম্পর্কেও কিছু যানা যায় না। 
(Zechariah = জাখারিয়া)
এই বইয়েও একই অবস্থা। তবে অধিকাংশ খ্রিস্টান স্কলারদের মতে বইটি এজেকিয়েল লিখেছে বলা তাদের বক্তব্য। তবে তারা এ বিষয়ে কোন বিশুদ্ধ প্রমান উপস্থিত করতে পারে না। 
(Malachi = মালাখি)
এই বইয়ের অবস্থা খুবই করূন। অন্যান্য বইতো ইহুদি খ্রিস্টানরা অনুমান করে বলতে পারে যে অমুখ লিখেছে । কিন্তু বই যে কে লিখেছে তা আজও রহস্য। কোথা থেকে এসেছে এই বই? কে লিখেছে এই বই তা কেউই জানে না। 
এই হলো বাইবেলের Old Testament বা পুরাতন নিয়ম এর অবস্থা। বাইবেল যে বিকৃত কিতাব তার আর আশা করি বলতে হবে না।
ইনশাআল্লাহ!! পর্ব দুইয়ে আমরা জানবো New Testament বা নতুন নিয়মের বই গুলো কে লিখেছে। 
(বাইবেল বিকৃত প্রমাণিত)
Reference :
  • (i) Ezharul Haque (খন্ড 1)। 
  • (ii) Ezharul Haque (খন্ড 2)
  • (iii) Wikipedia.
  • (iv) The New Encyclopedia Britannia, 15th Edition, vol,-2, Biblical Literature, pp883, 932-935. 
  • (v) Oxford Illustrated History Of Christianity, page 351-353. 
  • (vi) James,Hastings Encyclopedia of Religion and Ethics, Volume , page-445.
  • (vii) James,Hastings Encyclopedia of Religion and Ethics, Volume , page-453, 454
  • (viii) Ahmed Deedat, The Choice, Vol-2 (Is The Bible God's Word?)