Are you sure?

কুরআন »  বিবিধ

পবিত্র কুরআনে পুরুষের চার বিবাহের অপপ্রচার সম্পর্কে জবাব!

কোরআনে কেন একজন পুরুষ কে ৪ টা বিয়ের অনুমতি দিয়েছে অথচ নারীকে দেয়নি। এটা কী নারীর প্রতি অবিচার নয়?আর একজন পুরুষের চারটি বিবাহের যৌক্তিকতা কতটুকু?

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই ও বোনেরা। আল্লাহ্ তা'আলার দয়া শান্তি বর্ষিত হোক।আজকে আমরা ইসলামের বিরুদ্ধে একটি ভুল ধারণার অবসান ঘটাতে যাচ্ছি ইনশাআললাহ।আর একই সাথে ইসলাম যে কতটা বাস্তবিক ধর্ম এবং সেই সাথে ইসলাম যে মানবতার জটিল জটিল সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে সেই বিষয়টি যথার্থ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ এবং যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিব ইনশাআললাহ।অনেকেই বুঝতে পারে না ইসলাম কিভাবে মানবতার সমাধান হয়?আর এখানে সেটাই প্রমাণ করব যে একমাত্র মানবতার পরিপূর্ণ সমাধান হলো ইসলাম।আজকে আলোচনা করব কোরআনে কেন একজন পুরুষ কে ৪ টা বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে অথচ নারীকে তা দেওয়া হয় নাই ,আর এটা কী নারীদের ছোট করা হয় না এবং পুরুষের সমতুল্য অধিকার নারীকে দেওয়া হয় নাই।

আর এই বিষয়টি নিয়ে ইসলাম বিদ্বেষী অমুসলিম সহ নাস্তিকদের অভিযোগের সীমা থাকে না। আর এটা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ কমন প্রশ্ন। যাই হোক প্রশ্নটার মধ্যে যুক্তিও রয়েছে। আর যারা ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন তাদের বলি:-"আপনারা সাময়িকের জন্য ইসলাম কে একটু দূরে সরিয়ে রাখেন। একমাত্র ইসলাম ব্যতীত অন্যান্য সকল ধর্মের ধর্মীয় কিতাবগুলো পড়েন। এইসব ধর্মগ্রন্থ গুলো পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন,"যতগুলো ইচ্ছা তত বিবাহ করতে পারবেন আপনি অর্থাৎ বিবাহের ক্ষেত্রে কোন সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে কোন দিক-নির্দেশনা নেই এসব অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ গুলোতে।এই পৃথিবীতে একটি মাত্র ধর্মীয় গ্রন্থ রয়েছে,যেটা বলছে ১ টা বিবাহ করো।" আর সেটা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ ও চুড়ান্ত আসমানী কিতাব মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন। এবার আসি মূল কথায়। বিবাহের ক্ষেত্রে মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআনে সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৩

وَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تُقْسِطُوا۟ فِى ٱلْيَتَٰمَىٰ فَٱنكِحُوا۟ مَ طَابَ لَكُم مِّنَ ٱلنِّسَآءِ مَثْنَىٰ وَثُلَٰثَ وَرُبَٰعَ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا۟ فَوَٰحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُكُمْ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰٓ أَلَّا تَعُولُوا۟

আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।"

বিঃদ্রঃ এই আয়াতে বিবাহের ক্ষেত্রে কিছু শর্তারোপ করা হয়েছে)
আর সহীহ বোখারির হাদিস নং ৫০৯৮ তে বলা হয়েছে, ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ‘যদি তোমরা ভয় কর ইয়াতীমদের মধ্যে পূর্ণ ইনসাফ কায়িম করতে পারবে না’– (সূরা আন্‌-নিসা ৪/৩) – এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ আয়াত ঐ সমস্ত ইয়াতীম বালিকাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যাদের অভিভাবক তাদের সম্পদের লোভে বিয়ে করে। কিন্তু তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এবং তাদের সম্পত্তিকে ইনসাফের সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করে না। তার জন্য সঠিক পন্থা এই যে, ঐ বালিকাদের ছাড়া মহিলাদের মধ্য থেকে তার ইচ্ছা অনুযায়ী দু’জন অথবা তিনজন অথবা চারজনকে বিয়ে করতে পারবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৭)

এখানে আরও বলা হয়েছে, "যদি তোমার স্ত্রীদের মধ্যে সুসমাধিকার/সুসম ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারো, তাহলে তোমার পছন্দ মতো বিবাহ করো ২,৩ অথবা ৪ জন। এখানে সর্বোচ্চ ৪ জন কিন্তু তার বেশির কথা বলা হয় নাই। তবে ৪ জন স্ত্রী বা একাধিক স্ত্রী বিবাহের পূর্ব শর্ত হচ্ছে :-"সব স্ত্রীদের মধ্যে সুসমাধিকার/সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা।"আর এই আয়াতটি দেখিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে আরোপিত অভিযোগ দূর করা হয়।কিন্তু এই আয়াতটা যদি গভীরভাবে দেখেন তাহলে " আপনাকে একটি বিবাহের প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে/উৎসাহিত করা হয়েছে।"তবে যদি একাধিক বিবাহ করতে চান তাহলে স্ত্রীদের মধ্যে সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রথম স্ত্রী কে যদি ৫ লক্ষ টাকা দেন মোহর দিয়ে বিবাহ করতে হয় তাহলে দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় স্ত্রী কেও ৫ লক্ষ টাকা দেন মোহর দিয়ে বিবাহ করতে হবে অর্থাৎ স্ত্রীদের মধ্যে সমানাধিকার সুসমান ভাবে নিশ্চিত করতে হবে।প্রথম স্ত্রীর নামে যদি একটি ফ্ল্যাট দেন তাহলে দ্বিতীয় তৃতীয় স্ত্রীদের নামেও একটি ফ্ল্যাট দিতে হবে।আপনি নিজে যা খাচ্ছেন প্রত্যেক টা স্ত্রীদেরও একই খাবার খাওয়াতে হবে। অর্থাৎ এক কথায় যখধ সমস্ত আচারণগত দিক থেকে সমস্ত বিষয়ে স্ত্রীদের মধ্যে সমানাধিকার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন তখনই আপনি একাধিক স্ত্রী বিবাহ করতে পারবেন বলে কোরআন জানিয়ে দিয়েছে।এসব শর্ত বহিভূর্ত কখনোই আপনি একাধিক বিবাহ করতে পারবেন না কোরআন অনুযায়ী। কেননা একাধিক বিবাহ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কোরআনের এসব শর্ত মেনে চলতে হবে অন্যথায় নয়।আর এই আয়াতটা কিন্তু শেষ নয়।এই আয়াতের সংশ্লিষ্ট আরেকটা আয়াত রয়েছে মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআনের সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ১২৯

وَلَن تَسْتَطِيعُوٓا۟ أَن تَعْدِلُوا۟ بَيْنَ ٱلنِّسَآءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ فَلَا تَمِيلُوا۟ كُلَّ ٱلْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَٱلْمُعَلَّقَةِ وَإِن تُصْلِحُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا

তোমার চাইলেও কখনো নারীদের (তোমাদের স্ত্রীদের) কে যথাযথ ন্যায়বিচার করতে পারবে না, যদিও এর আকাঙ্ক্ষী হও।তবুও একজনের প্রতি পুরোপুরি ঝুঁকে পড়ে আরেকজন কে ঝুলন্ত অবস্থায় ফেলে রেখ না।আর যদি তোমরা সৎ কর্ম কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তাহলে (জেনে রেখো) অবশ্যই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল দয়ালু।"

▪︎ এখানে লক্ষণীয় যে উপরের আয়াতে বলা হয়েছে:-"তোমরা চাইলেও কখনো নারীদের (তোমাদের স্ত্রীদের) কে যথাযথ ন্যায়বিচার করতে পারবে না, যদিও এর আকাঙ্ক্ষী হও অর্থাৎ স্ত্রীদের মধ্যে সমানাধিকার এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা খুবই কঠিন কাজ যা প্রায়ই অসম্ভব।এরপরের লাইনে বলা হয়েছে:-"তবুও একজনের প্রতি পুরোপুরি ঝুঁকে পড়ে আরেকজন কে ঝুলন্ত অবস্থায় ফেলে রেখ না"-অর্থাৎ একজন কে বাদ দিয়ে আরেকজনের প্রতি বেশি ঝুঁকে যেও না। তাহলে সূরা নিসার ৩ নং আয়াত এবং ১২৯ নং আয়াত দুটো একত্রিত করে তারপরেই জাস্টিফাই করতে হবে অন্যথায় ভুল বুঝবেন।অর্থাৎ সূরা নিসার ৩ নং আয়াত শর্তসাপেক্ষে বলেছে :-"যদি সুবিচার এবং সমানাধিকার নিশ্চিত করতে পারো তাহলে একের অধিক বিবাহ করতে পারবে।আর একই সূরার ১২৯ নং আয়াত বলছে:-"স্ত্রীদের মধ্যে সমানাধিকার এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা খুবই কঠিন কাজ যা প্রায়ই অসম্ভব এবং একের অধিক বিবাহ করলে একজন কে বাদ দিয়ে আরেকজনের প্রতি বেশি ঝুঁকে যেও না। কারণ একজন কে ছেড়ে আরেকজনের প্রতি বেশি ঝুঁকে গেলে এটা স্ত্রীদের মধ্যে সমানাধিকার এবং ন্যায়বিচার হবে না। ফলে এটা কোরআনের নির্দেশ এবং শর্তকে অমান্য করা হবে,যার ফলস্বরূপ গোনাহ হবে। আর এখানে আলোচিত বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায় যে ইসলাম একটি বিবাহের প্রতি উৎসাহ দিয়েছে এবং বহু বিবাহের প্রতি শর্তারোপ করে ভীতি প্রদর্শন করছে।আরো একটা জিনিস দেখতে পাই ইসলামে ৪ টা অর্থাৎ বহু বিবাহ একজন পুরুষের জন্য বাধ্যতামূলক নয় যে এটা করতেই হবে বরং কোন পুরুষ এসব শর্তসাপেক্ষে করতে পারবে।আর ইসলাম এক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক না করে কেবলমাত্র অনুমতি রেখে দিয়েছে।তাহলে একটা আয়াত দিয়ে ইসলাম কে জাস্টিস না করে এসব বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট মূলক আয়াতগুলো একত্রিত করে দেখতে হবে। আর আমাদের প্রিয় নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাঃ সহীহ হাদিসে বলেছেন:-"

"যে ব্যক্তির দুই জন স্ত্রী আছে, কিন্তু তার মধ্যে এক জনের দিকে ঝুঁকে যায়, এরূপ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন অর্ধদেহ ধসা অবস্থায় উপস্থিত হবে।"(আহমেদ ২/৩৪৭; আসবে সুনান; হাকিম ২/১৮৬) ইবনে হিব্বান ৪১৯)

বলা হয়ে থাকে যে, ইসলাম বহু বিবাহ বৈধ করেছে। আসলে ইসলাম বহু বিবাহের একটা সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে, যে কেউ চারটির বেশি বিবাহ করতে পারবে না। কারণ সে যুগে এমনকি আজ থেকে এক দেড়শ বছর আগে এই ভারতেই অনেক মানুষ ৩০-৫০-৮০ এমনকি ১০০ আরো বেশি বিবাহ করত! বিশ্বাস না হলে ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘'বহু বিবাহ'’ ও ''বাল্য বিবাহ’' বই দুটি পড়ে দেখতে পারেন। আপনি যদি রোম সাম্রাজ্যের, গ্রীক সাম্রাজ্যের অথবা পৃথিবীর যে কোনো ইতিহাস পড়েন তাহলে দেখবেন যে,সে যুগে মানুষ অনেক স্ত্রী রাখত। সে জন্য ডেভেন্পর্ট বলেছেন যে:-"মুহাম্মদ (সাঃ) বহু বিবাহকে সীমার বাধনে বেধে ছিলেন।”

ইসলাম চারটি বিবাহকে বৈধ বলেছে এবং একটি বিবাহ করতে উপদেশ দিয়েছে। সকল ধর্মেই বহু বিবাহ বৈধ। কিন্তু কোনো সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। অর্থা আপনি যত ইচ্ছা বিয়ে করতে পারেন কোনো আসুবিধা নেই। পাশ্চাত্যের বিখ্যাত দার্শনিক লিটনার তার "মহামেদানিসম” বই-এ লিখেছেন, "অপরিমিত বহু বিবাহ প্রথাকে মুহাম্মদ (স) রুখে দিয়ে ছিলেন।” তিনি আরো লিখছেন, “মুহাম্মদ (স) এর আইনের উত্সাহ কিন্তু স্পষ্টতই একটি বিবাহের পক্ষেই।”

• আর আল্লাহ একটা বিবাহের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন তবে বহু বিবাহের অনুমতি রেখে দিয়েকেন তাও শর্তসাপেক্ষে এবং বহু বিবাহের প্রতি তিনি ভীতি প্রদর্শন করেছেন।তাহলে এখানে একটা প্রশ্ন আসতে পারে,ইসলাম বহুবিবাহের অনুমতি দিল কেন?আল্লাহ্ চাইলেই মাত্র ১ টা বিবাহের কথা বলতে পারতেন কিন্তু তিনি একটা বিবাহের সাথে কেন বহুবিবাহের অনুমতি রেখে দিয়েছেন?সমস্যা নেই এটারও বাস্তবিক এবং যৌক্তিক কারণ দেখাব ইনশাআললাহ। আপনারা যদি নির্ভরযোগ্য রেফারেন্স ভিত্তিক বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া তে যান তাহলে দেখতে পাবেন পুরো পৃথিবী তে:-"পুরুষ অপেক্ষা নারীর সংখ্যা অনেক বেশি। "এই হিসাবে শুধু নিউইয়র্কে পুরুষ অপেক্ষা নারীর সংখ্যা ১০ লক্ষ্য বেশি।আমেরিকায় শুধু পুরুষ অপেক্ষা নারীর সংখ্যা ৭৮ লক্ষ বেশি। জার্মানি তে নারীর সংখ্যা পুরুষ অপেক্ষা ৫০ লক্ষ বেশি। রাশিয়ায় পুরুষ অপেক্ষা নারীর সংখ্যা ৯০ লক্ষ বেশি।আর এইভাবে পুরো পৃথিবীর পরিসংখ্যান জানলে দেখবেন পুরুষ অপেক্ষা নারীর সংখ্যা অনেক গুণে বেশি।এখন প্রশ্ন হলো:-"পুরুষ অপেক্ষা নারীর সংখ্যা বেশি কেন?"এরও অনেকগুলো কারণ আছে।
• প্রথম কারণ হচ্ছে ,যদি মেডিকেল ভাবে একজন পুরুষ এবং মহিলার দৈহিক গঠনে অথবা রোগ প্রতিরোধ থেকে বিবেচনা করেন,তাহলে দেখবেন যে একজন পুরুষ অপেক্ষা নারীর প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। এবং দৈহিক ভাবেও (অভ্যন্তরীণ বিষয়ে) নারীরা পুরুষ অপেক্ষা বেশি শক্তিশালী হয় ।হয়তো সাময়িকভাবে বিভিন্ন বল-শক্তি তে পুরুষের শক্তি নারী অপেক্ষা বেশি থাকলে নারীর ভেতরে রয়েছে পুরুষ অপেক্ষা বেশি রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা।
• দ্বিতীয়ত নারী অপেক্ষা পুরুষ ধূমপায়ী সবচেয়ে বেশি। ধূমপান জনিত কারণে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পুরুষ মারা যায়। এই ধূমপানের কারণে যতজন মানুষ মারা যায় তার মধ্যে পুরুষ কতজন আর নারী কতজন?এর পরিসংখ্যান দেখলেই তা বোঝা যায় যে নারী অপেক্ষা পুরুষের অধিক ধূমপান করার কারণে পুরুষের পারসেন্ট কমে যাচ্ছে।
• তৃতীয় বিভিন্ন দুর্ঘটনায় অর্থাৎ রোড অ্যাক্সিডেন্টের মত দুর্ঘটনাতে যে মানুষ গুলো মারা যায় তার অধিকাংশ সংখ্যা হলো পুরুষ।
• চতুর্থত বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় যারা তাদের অধিকাংশ হচ্ছে পুরুষ। আর এটা হয় নারী অপেক্ষা পুরুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বলে যার কারণে পুরুষেরা বেশি দুরারোগ্য ব্যাধি তে ভোগে।
• এরপর হার্ট অ্যাটাক অথবা স্টোক বা ক্যান্সারের মত বড় মরণব্যধি রোগে ভোগে তার অধিকাংশ সংখ্যা পুরুষ। কারণ পুরুষ আর নারীর মধ্যে HDL এবং LDL এর মধ্যে একটি ব্যপার আছে।যাই হোক এদিকে যাচ্ছি না।
• এরপর যদি দেখেন বিভিন্ন নেশাকর দ্রব্য মাদক সহ বিভিন্ন অ্যালকোহল সেবন করে তার মধ্যে অধিকাংশ পুরুষ।আর এসব নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবনের জন্য পৃথিবীর থেকে অনেক পুরুষ মারা যায়। আর এরকম আরো অনেক কারণ রয়েছে যাতে অধিকাংশ পুরুষের পারসেন্টেজ বেশি নারীর তুলনায়। আর এসব কারণেই পুরুষের সংখ্যা হয়ে যায় অনেক কম এবং নারীর সংখ্যা হয়ে যায় অনেক বেশি।
তবে জন্মের দিকে যদি দেখেন তাহলে ছেলে শিশু এবং মেয়ে শিশু সমান অনুপাতে জন্ম নেয়। কিন্তু এসব শিশু গুলো বড় হওয়ার সাথে সাথে পুরুষের সংখ্যা যায় কমে আর নারীর সংখ্যা হয়ে যায় অনেক বেশি। এই কারণে উপরোল্লিখিত যেই হিসেবটা দেখিয়েছি তার জন্য পুরো পৃথিবীতে পুরুষের সংখ্যা কম এবং নারীর সংখ্যা অনেক বেশি। এখন একটা উদাহরণ দেই। আমেরিকার তে পুরুষের সংখ্যা নারী অনেক্ষা ৭৮ লক্ষ বেশি। আর এই আমেরিকায় যতপুরুষ আছে ধরে নেন তাদের সবাই একটা করে বিবাহ করে ফেলেছে। এখন প্রত্যেকটি পুরুষ একটা করে বিবাহ করার পরে আর কত লক্ষ নারী অবশিষ্ট থাকবে?নিশ্চয়ই যেই ৭৮ লক্ষ অতিরিক্ত আছে।এখন প্রশ্ন হলো প্রত্যেক টা পুরুষ একটা করে বিবাহ করলে এই অতিরিক্ত ৭৮ লক্ষ নারীর কী হবে?এখানে এই ৭৮ লক্ষ নারীর জন্য দুইটি পথ খোলা আছে:
i) হয় সে এমন একজন পুরুষ কে বিবাহ করবে যার আগে থেকে একটা স্ত্রী আছে অথবা
ii) দ্বিতীয় পথ খোলা আছে সেটা হলো তারা জনগণের সম্পত্তি হয়ে যাবে।হয়তো এসব মহিলাদের স্বামীর অভাবে হতে হবে দেহ ব্যবসায়ী অথবা পতিতা/বেশ্যাবৃত্তি করতে হবে তাকে। আর এইভাবে উক্ত মহিলা হবে জনগণের সম্পত্তি (Public Property).
আর এই দুইটি রাস্তার/উপায়ের মধ্যে প্রথমটাই সবচেয়ে উত্তম,সে এমন একজন পুরুষ কে বিবাহ করবে যার আগে থেকে একটা স্ত্রী আছে।"তাহলে বুঝতে পারছেন ইসলাম হলো বাস্তবিক ভাবে মানবতার পরিপূর্ণ সমাধান। ইসলাম পুরো পৃথিবীর সম্পর্কে বিবেচনা করে এই নিয়ম টা দিয়েছে।কারণ এই সমগ্র মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ্ তা'আলা এই পৃথিবীর সম্পর্কে ভালো ভাবে অবগত আছেন।তিনি একটা বিবাহের প্রতি উৎসাহ করেছেন কিন্তু একটা বিবাহের পরে আরেকটা বিবাহ করা নিষিদ্ধ করে দেননি বরং অনুমতি রেখে দিয়েছেন ।আর এই অনুমতি টা কখন প্রযোজ্য হবে?যখন পরিস্থিতি টা বর্তমান সময়ের মতো।
এবার একটু বাংলাদেশের কথা চিন্তা করা যাক।ধরেন বাংলাদেশে এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হল যেখানে পুরুষের থেকে নারীর সংখ্যা অনেক বেশি এবং নারীদের বিবাহ দেওয়ার মতো কোন পুরুষ অবশিষ্ট নেই। ঠিক এই সময়ে যে সমস্ত নারীদের বিবাহ হচ্ছে না বা বিবাহ দেওয়ার মতো কোন পাত্র নেই তখন এই নারীরাই ইসলামের অবমাননা করবে।তখন তারা কী বলতে পারে জানেন?হয়তো এটাই বলবে:-" ইসলাম যদি মানবতার পরিপূর্ণ সমাধান হয় তাহলে আমাদের ক্ষেত্রে কেন সমাধান রাখেনি?"তখন তারাই আবার ইসলামের বিপক্ষে চলে যাবে যে ইসলাম কেন নারীদের জন্য কোন সমাধান রাখল না?ইসলাম যদি বহুবিবাহের নির্দেশ দিয়ে রাখতো তাহলে আমাদের জন্য একটা সমাধান হতো।আর তখন এই সমস্ত মহিলাই ইসলামের বিরুদ্ধাচরণ করবে।কিন্তু ইসলাম সেরকম কোন জায়গায় অযৌকক্তিক ত্রুটি রাখেনি।ইসলাম একটা বিবাহের প্রতি উৎসাহ দিয়েছে কিন্তু বহুবিবাহের অনুমতি রেখেছে তাও ভীতি প্রদর্শন করার মাধ্যমে যেটা আমরা সূরা নিসার ৩ নং আয়াত এবং ১২৯ নং আয়াতের মধ্যে দেখেছি।তাহলে এবার পুরো বিষয়টি ভেবে দেখেন।ইসলাম হলো পুরো মানবজাতির জন্য একমাত্র পরিপূর্ণ সমাধান। পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মে এত সুন্দর সমাধান কোথাও পাবেন না।