Are you sure?

দর্শন »  নাস্তিক্যবাদ

নাস্তিকরা সমকামিতায় লিপ্ত হলে ইসলামের সমস্যা কোথায়?

নাস্তিকদের অভিযোগ- সমকামিতায় লিপ্ত হলে আপনার সমস্যা কী? আপনার ধর্মের সমস্যা কোথায়? সমকামিতার বিরুদ্ধে আপনি কেন কথা বলবেন? আপনার তাতে কী? 

এ অভিযোগের জবাব- নাস্তিকরা সকল অনৈতিক কাজকে বৈধ বানাতে চায়। তারা সমকামিতার পক্ষে স্লোগান দিবে। সমকামিতা মানুষের জন্য কতটুকু ক্ষতিকর তা এই নির্বোধরা জানে না। একজন মানুষকে সমকামিতা ধব্বংসের দিকে নিয়ে যায়। একটি সভ্য সমাজকে ধব্বংস করে দিতে সমকামিতার মতো জঘন্য অশ্লীল কাজই যথেষ্ট। এই লেখাতে সমকামিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। সমকামিতার ক্ষতিকর দিক এবং এটি কী করে একটা সমাজকে ধব্বংস করে দেয় তা তুলে ধরবো। 

সমকামিতার সংঙ্গা -  সমকামি বলা হয় ঐ সকল পুরুষদের যারা পায়ুপথে পুরুষে-পুরুষে সঙ্গম করে। পুরুষে-পুরুষে বিবাহ করে। একজন নারী অপর একজন নারীকে বিবাহ করে। একই লিঙ্গের কাউকে বিবাহ করে যারা নিজেদের যৌন চাহিদা পূরণ করতে চাই তাদের সবাইকে সমকামি বলে। 

যেসব ধর্মে সমকামিতা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বা হারাম 

● ইসলাম 

ইসলামে অত্যন্ত কঠোরভাবে সমকামিতাকে নিষিদ্ধ হারাম করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা সমকামিতার মতো একটি জঘন্য পাপের কারণে একটি পুরো জাতিকে খুবই ভয়াবহ-ভাবে ধব্বংস করে দিয়েছিলেন। [1] সমকামিতা ইসলামে অত্যন্ত ঘৃণিত ও জঘন্য কাজ। সমকাম একটি মারাত্মক গুনাহ্’র কাজ। যার ভয়াবহতা কুফরের পরই। হত্যার চাইতেও মারাত্মক। বিশ্বে সর্বপ্রথম লূত (আ.) এর সম্প্রদায় এ কাজে লিপ্ত হয় এবং আল্লাহ্ তা‘আলা তাদেরকে এমন শাস্তি প্রদান করেন যা ইতিপূর্বে কাউকে প্রদান করেননি। তিনি তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন। তাদের ঘরবাড়ি তাদের উপরই উল্টিয়ে দিয়ে ভূমিতে তলিয়ে দিয়েছেন। অতঃপর আকাশ থেকে পাথর বর্ষণ করেছেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«وَلُوْطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَتأْتُوْنَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُمْ بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِّنَ الْعَالَمِيْنَ، إِنَّكُمْ لَتَأْتُوْنَ الرِّجالَ شَهْوَةً مِّنْ دُوْنِ النِّسآءِ، بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُوْنَ»

‘‘আর আমি লূত (আ.) কে নবুওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছি। যিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন: তোমরা কি এমন মারাত্মক অশ্লীল কাজ করছো যা ইতিপূর্বে বিশ্বের আর কেউ করেনি। তোমরা স্ত্রীলোকদেরকে বাদ দিয়ে পুরুষ কর্তৃক যৌন উত্তেজনা নিবারণ করছো। প্রকৃতপক্ষে তোমরা হচ্ছো সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়’’। [2]

আল্লাহ্ তা‘আলা উক্ত কাজকে অত্যন্ত নোংরা কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন:

«وَلُوْطًا آتَيْنَاهُ حُكْمًا وَّعِلْمًا، وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْقَرْيَةِ الَّتِيْ كَانَتْ تَعْمَلُ الْـخَبَائِثَ، إِنَّهُمْ كَانُوْا قَوْمَ سَوْءٍ فَاسِقِيْنَ»

‘‘আর আমি লূত (আ.)-কে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়েছি এবং তাঁকে উদ্ধার করেছি এমন জনপদ থেকে যারা নোংরা কাজ করতো। মূলতঃ তারা ছিলো নিকৃষ্ট প্রকৃতির ফাসিক সম্প্রদায়’’। [3]

আল্লাহ্ তা‘আলা অন্য আয়াতে সমকামীদেরকে যালিম বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন:

«قَالُوْا إِنَّا مُهْلِكُوْا أَهْلِ هَذِهِ الْقَرْيَةِ، إِنَّ أَهْلَهَا كَانُوْا ظَالِمِيْنَ»

’’ফেরেশ্তারা ইব্রাহীম (আ.) কে বললেন: আমরা এ জনপদবাসীদেরকে ধ্বংস করে দেবো। এর অধিবাসীরা নিশ্চয়ই জালিম’’। [4]

লূত (আ.) এদেরকে বিশৃঙ্খল জাতি হিসেবে উল্লেখ করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«قَالَ رَبِّ انْصُرْنِيْ عَلَى الْقَوْمِ الْـمُفْسِدِيْنَ»

‘‘লূত (আ.) বললেন: হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে এ বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাহায্য করুন’’। [5]

ইব্রাহীম (আ.) তাদের ক্ষমার জন্য জোর সুপারিশ করলেও তা শুনা হয়নি। বরং তাঁকে বলা হয়েছে:

«يَآ إِبْرَاهِيْمُ أَعْرِضْ عَنْ هَذَا، إِنَّهُ قَدْ جَآءَ أَمْرُ رَبِّكَ، وَإِنَّهُمْ آتِيْهِمْ عَذَابٌ غَيْرُ مَرْدُوْدٍ»

‘‘হে ইব্রাহীম! এ ব্যাপারে আর একটি কথাও বলো না। (তাদের ধ্বংসের ব্যাপারে) তোমার প্রভুর ফরমান এসে গেছে এবং তাদের উপর এমন এক শাস্তি আসছে যা কিছুতেই টলবার মতো নয়’’। [6]

যখন তাদের শাস্তি নিশ্চিত হয়ে গেলো এবং তা ভোরে ভোরেই আসবে বলে লূত (আ.) কে জানিয়ে দেয়া হলো তখন তিনি তা দেরী হয়ে যাচ্ছে বলে আপত্তি জানালে তাঁকে বলা হলো:

«أَلَيْسَ الصُّبْحُ بِقَرِيْبٍ»

‘‘সকাল কি অতি নিকটেই নয়?! কিংবা সকাল হতে কি এতই দেরী?!’’  [7]

আল্লাহ্ তা‘আলা লূত (আ.) এর সম্প্রদায়ের শাস্তির ব্যাপারে বলেন:

«فَلَمَّا جَآءَ أَمْرُنَا جَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهَا حِجَارَةً مِّـنْ سِجِّيْلٍ مَّنْضُوْدٍ، مُسَوَّمَةً عِنْدَ رَبِّكَ، وَمَا هِيَ مِنَ الظَّالِمِيْنَ بِبَعِيْدٍ»

‘‘অতঃপর যখন আমার ফরমান জারি হলো তখন ভূ-খন্ডটির উপরিভাগকে নিচু করে দিলাম এবং ওর উপর ঝামা পাথর বর্ষণ করতে লাগলাম, যা ছিলো একাধারে এবং যা বিশেষভাবে চিহ্নিত ছিলো তোমার প্রভুর ভান্ডারে। আর উক্ত জনপদটি এ যালিমদের থেকে বেশি দূরে নয়’’। [8]

আল্লাহ্ তা‘আলা অন্য আয়াতে বলেন:

«فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُشْرِقِيْنَ، فَجَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّنْ سِجِّيْلٍ، إِنَّ فِيْ ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّلْمُتَوَسِّمِيْنَ، وَإِنَّهَا لَبِسَبِيْلٍ مُّقِيْمٍ، إِنَّ فِيْ ذَلِكَ لَآيَةً لِّلْمُؤْمِنِيْنَ»

‘‘অতঃপর তাদেরকে সূর্যোদয়ের সময়ই এক বিকট আওয়াজ পাকড়াও করলো। এরপরই আমি জনপদটিকে উল্টিয়ে উপর-নীচ করে দিলাম এবং তাদের উপর ঝামা পাথর বর্ষণ করলাম। অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে পর্যবেক্ষণশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য। আর উক্ত জনপদটি (উহার ধ্বংস স্তূপ) স্থায়ী (বহু প্রাচীন) লোক চলাচলের পথি পার্শ্বেই এখনও বিদ্যমান। অবশ্যই এতে রয়েছে মু’মিনদের জন্য নিশ্চিত নিদর্শন’’। [9]

 সমকামিতার মতো জঘন্য অশ্লীল পাপের কারণে আল্লাহ তা'য়ালা পুরো একটি জাতিকে ধব্বংস করে দেন। ইসলামে সমকামিতা কী ভয়াবহ পাপ তা চিন্তা করুন। সমকামিতা অত্যন্ত ঘৃণিত এবং জঘন্যতম কাজের একটি। 

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:لَعَنَ اللهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ، لَعَنَ اللهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ، لَعَنَ اللهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ.                                                           ‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা সমকামীকে লা’নত করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা সমকামীকে লা’নত করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা সমকামীকে লা’নত করেন’’। [10]                                                                  আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: مَلْعُوْنٌ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ، مَلْعُوْنٌ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ، مَلْعُوْنٌ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ. ‘‘সমকামীরাই অভিশপ্ত সমকামীরাই অভিশপ্ত। সমকামীরাই অভিশপ্ত’’। [11]               

বর্তমান যুগে সমকামের বহুল প্রচার ও প্রসারের কথা কানে আসতেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সে ভবিষ্যদ্বাণীর কথা স্মরণ এসে যায় যাতে তিনি বলেন:إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَى أُمَّتِيْ عَمَلُ قَوْمِ لُوْطٍ.                             ‘‘আমি যে কুকর্মটি আমার উম্মাতের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সর্বাধিক ভয় করি তা হল লূত সম্প্রদায়ের কুকর্ম।’’। [12]

উপরের উক্ত লেখা থেকে এটা পরিষ্কার যে, সমকামিতা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ হারাম। কোন মুসলিম কখনো সমকামি হতে পারে না। কখনো এই অশ্লীল পাপ-কারীদেরকে সমর্থন করতে পারে না। ইসলামে সমকামিতা অত্যন্ত বড় ধরনের একটি অন্যায় ও জঘন্যতম পাপ। 

● খ্রিস্টান 

ইসলামের মতো খ্রিষ্টানধর্মেও সমকামিতা নিষিদ্ধ। কোন খ্রিস্টান সমকামি হতে পারবে না৷ কারণ বাইবেলে সমকামিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে পুরাতন-নতুন দুই নিয়মেই। বাইবেলের নতুন নিয়মে বলা হয়েছে: 

লোকেরা ঐসব মন্দ কাজে লিপ্ত ছিল বলে ঈশ্বর তাদের ছেড়ে দিলেন ও তাদের লজ্জাজনক অভিলাষের পথে চলতে দিলেন৷ নারীরা পুরুষের সঙ্গে স্বাভাবিক সঙ্গম ত্যাগ করে নিজেদের মধ্যে যৌন সংঙ্গমে লিপ্ত হয়েছে। ঠিক একইভাবে পুরুষরাও স্ত্রীদের সঙ্গে স্বাভাবিক সঙ্গম ছেড়ে দিয়ে অপর পুরুষের জন্য লালাযিত হয়ে লজ্জাকর কাজ করেছে; আর এই পাপ কাজের শাস্তি তারা তাদের শরীরেই পেয়েছে৷ [13] 

সমকামিতা সম্পর্কে বাইবেলে আরো বর্ণিত আছে যে,

যারা যৌন পাপে পাপী, সমকামী, যারা দাস বিক্রির ব্যবসা করে, যারা মিথ্যা বলে, যারা মিথ্যা শপথ করে দোষারোপ করে ও যারা কোন না কোনভাবে ঈশ্বরের সত্য শিক্ষার বিরোধিতা করে, বিধি-ব্যবস্থা তাদের জন্য দেওয়া হয়েছে৷ [14]

 বাইবেলের নতুন নিয়মে সমকামিতা নিষিদ্ধ। কোন খ্রিস্টান সমকামী হলে বা সমকামিদের সাপোর্ট করলে সে বাইবেল বিরোধী কাজ করবে। 

ইহুদি 

ইহুদি-ধর্মে অত্যন্ত কঠোরভাবে সমকামিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাইবেলের পুরাতন নিয়ম বা তানাখে সমকামিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে-

“একজন পুরুষের অন্য একজন পুরুষের সঙ্গে স্ত্রীলোকের ন্যায় যৌন সম্পর্ক অবশ্যই থাকবে না। তা হলো ভযঙ্কর পাপ। [15] “যদি কোন পুরুষের অন্য এক পুরুষের সঙ্গে একজন স্ত্রীলোকের মত যৌন সম্পর্ক থাকে তবে এই দুজন পুরুষ এক ভযঙ্কর পাপ কার্যে লিপ্ত। তাদের অবশ্যই যেন মেরে ফেলা হয়। তারা তাদের নিজেদের মৃত্যুর জন্য দায়ী। [16]

ইহুদি-ধর্ম অনুযায়ী সমকামিতার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কোন ইহুদি সমকামি হওয়া তো দূরে সমকামিদের সমর্থনও করতে পারবে না। তানাখ বা বাইবেলের পুরাতন নিয়মে অত্যন্ত কঠোরভাবে সমকামিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেসব ইহুদি সমকামি বা সমকামিতা সাপোর্ট করে তারা মূলত তাদের নিজেদের ধর্ম বিরোধী কাজে লিপ্ত আছে। উক্ত-লেখা পর্যন্ত পড়ে আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌছেছি যে, ৩টি ধর্মে সমকামিতা নিষিদ্ধ হারাম। উক্তি ৩টি ধর্ম হলো যথাক্রমে- ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্ম। একজন সভ্য লোক কখনোই সমকামিতাকে পছন্দ করতে পারেন না। সমকামিরা হলো নিকৃষ্ট জঘন্যতম জীব। 

সমকামিতার ক্ষতিকর দিক-সমূহ 

রোগের সংখ্যা-

  • এইচআইভি এইডস।
  • সিফিলিস। 
  • গনোরিয়া।
  • হেপাটাইটিস।
  • হুক ওর্ম।
  • সালমোনেলোসিস। 
  • ইনফেকশাস মনোনিউক্লিওসিস। 
  • মেনিঞ্জোকক্কেমিয়া। 
  • অ্যানাল ক্যান্সার। 
  • ভাইরাল হেপাটাইটিস টাইপ বি ও সি। 
  • শিগেলোসিস। 
  • জিয়ার্ডিয়া ল্যাম্বলিয়া ডিজিজ।
  • আইসোস্পোরিয়াসিস। 
  • পেডিকুলোসিস।
  • এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকাজাত এমিবিয়াসিস।
  • মাইক্রোস্পোরিডিওসিস। 
  • ক্ল্যামিডিয়া ইনফেকশন। 
  • ক্রিপ্টোস্পোরিডিওসিস।
  • হেপাটাইটিস। 

আরো অসংখ্য রোগ রয়েছে। নাস্তিকরা মূলত সমকামি হয়ে বা সমকামিতার হয়ে স্লোগান তুলে মূলত সমাজে এই রোগ গুলো ছড়াতে চায়। নাস্তিকদের কাজই হলো নিজের মন-খুশি মতো সমাজে অনৈতিক কাজ করা। একটা সভ্য সমাজকে মূর্খ নাস্তিকরা অসভ্য বানাতে সদা-তৎপর। 

● শারীরিক ক্ষতি 

শারীরিক ক্ষতিসাধনে সমকামী পুরুষদের যৌনসঙ্গমের প্রকৃতি চরমভাবে দায়ী। কেননা এই যৌনাচারণ শুধু সক্রিয়/পরোক্ষ নয়, পেনাইল –অ্যানাল, মাউথ-পেনাইল, হ্যান্ড –অ্যানাল এমনকি মাউথ-অ্যানাল সম্পর্ক খুবই স্বাভাবিক। মাউথ-অ্যানাল সম্পর্ক আন্ত্রিক জীবাণুর মাধ্যমে রোগ সৃষ্টি করতে খুবই সহায়ক। মলাশয়ে ক্ষত থেকে শরীরের ভেতরে জীবাণু প্রবেশ করে, এবং অ্যানো –জেনিটাল সিফিলিটিক আলসারের সৃষ্টি হয়। ব্রিটিশ গবেষক উইলকক্স বলেন, Male homosexual behaviour is not simply either ‘active’ or ‘passive,’ since penile-anal, mouth-penile, and hand-anal sexual contact is usual for both partners, and mouth-anal contact is not infrequent. Mouth-anal contact is the reason for the relatively high incidence of diseases caused by bowel pathogens in male homosexuals. Trauma may encourage the entry of micro-organisms and thus lead to primary syphilitic lesions occurring in the anogenital area. In addition to sodomy, trauma may be caused by foreign bodies, including stimulators of various kinds, penile adornments, and prostheses. [17]

অ্যানাল সেক্স যে ক্ষতিকর সে সম্পর্কে নামকরা আভা ক্যাডেল বলেছেন, Unprotected oral sex carries less risk for the transmission of STD’s than unprotected intercourse or anal sex does. অ্যানাল সেক্স, সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজের জন্য অন্য পন্থার সেক্স অপেক্ষা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। [18] অরডিনারী রিপ্রোডাক্টিভ ফিজিওলজি থেকে জানা যায়, সিমেন বা বীর্যরস ইমিউনোসাপ্রেসিভ বা দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নিরুদ্ধ বা নিগৃহীত করে, অ্যানাল রুট একেই অত্যন্ত নাজুক এবং জীবাণুর ডিপো, সেখানে ইমিউন সিস্টেম যোনীর সিস্টেমের তুলনায় এমনিতেই অনেক দুর্বল থাকে, সেই দুর্বল সিস্টেমে যদি বীর্যরসের মাধ্যমে তাকে আরো দুর্বল করে দেওয়া হয়, তাহলে জীবাণু বিনা প্রতিরোধে শরীরে প্রবেশ করে অতি সহজেই বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করবে। [19]

● আত্মাহত্যা 

সমকামীদের মধ্যে বিভিন্ন মানসিক রোগ যেমন ডিপ্রেশন, ড্রাগ এবিউজ, আত্মহত্যার প্রবণতা অত্যন্ত বেশি। আমেরিকান মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের জেনারেল সাইকিয়াট্রি আর্কাইভ ২০০০ ইস্যু থেকে জানা যায়, সমকামিতা এবং আত্মহত্যা ও অন্যান্য আবেগিক/মানসিক সমস্যাগুলোর মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ব্যাগলে ও ট্রেম্বলের রিসার্চ থেকে দেখা যায়, সমকামী ব্যক্তিদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বিষমকামীদের থেকে নিম্নপক্ষে ২ গুণ এবং উচ্চপক্ষে ১৩.৯ গুণ বেশি। কানাডায় বছরে যে কতকগুলো আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে তার মধ্যে ৩০% আত্মহত্যাকারী সমকামী। [20]

● ভয়াবহ রোগ 

১৯৮০ সালে ড: মাইকেল হেলার বলেন, সমকামী ব্যক্তিরা কলোরেকটাল ডিজঅর্ডারগুলোর ক্ষেত্রে বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের যৌনউশৃঙ্খলতা, মাল্টিপল যৌনসঙ্গী থাকা ও অতিমাত্রায় অবাধ যৌনাচার এ ব্যাপারে মেজর রিস্ক ফ্যাক্টর। প্রোক্টাইটিস বা মলাশয়ের প্রদাহ সমকামীদের মধ্যে বেশ কমন এবং এইচআইভি নেগেটিভ ব্যক্তিদের এইচআইভি পজিটিভ করণে বড় একটি প্রভাবক। শুধু তাই নয়, আমেরিকা ও ইউরোপের সমকামীদের মধ্যে ব্যাক্টেরিয়াল যৌন-রোগগুলোর সাথে-সাথে প্রোক্টাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। গনোরিয়া, সিফিলিস, সাইটোমেগালো ভাইরাস, হার্পিস, ক্ল্যামিডিয়া, লিম্ফোগ্রানুলোমা ভেনেরাম, শিগেলা ও এমিবিয়াসিস রোগ থেকে সহজেই প্রোক্টাইটিস হতে পারে। উল্লেখ্য, সমকামীদের মধ্যে এই সকল রোগের হার বিষমকামী অপেক্ষা অত্যন্ত বেশি। [21]

● সন্তান জন্ম 

সমকামিরা একটি অসভ্য সমাজ তৈরি করে। তাদের সমাজে সন্তান জন্মের হার আর কী বলবো! তাদের বেশীরভাগই বিভিন্ন সংস্থা থেকে ছেলে-মেয়েদের দত্তক নেয়। একজন প্রকৃত মা-বাবার সুখ তারা কখনোই পায় না। তাদের জন্য দত্তক নেয়া সন্তানরাও বড় হলে সমকামিতায় প্রভাবিত হয় জোর সম্ভবনা থাকে। মোট কথা তাদের নিকৃষ্ট সমাজে ছেলে-মেয়েরা অসভ্য হয়েই বড় হয়। একটি সমকামি সমাজ ব্যবস্থা একটি রাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। 

● বিবাহ 

সমকামিতা বিবাহকে নিরুৎসাহিত করে। তারা অশ্লীল পাপাচারে সব-সময় মেতে থাকে। বিবাহ প্রথাকে তারা বাদ দিতে চায়। সমকামিরা সমাজে ব্যভিচারের বীজ বপন করে দেয়। বিবাহ ছাড়াই সমকামিরা মানুষদেরকে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়াতে উৎসাহ দেয়। বর্তমানে ইউরোপ-আমেরিকার দেশ গুলোতে নারী-পুরুষ বিবাহ করার আগেই ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। বিবাহের পরিমাণ পৃথিবীতে ক্রমশই কমছে; আর ব্যভিচারের পরিমাণ বেড়েই যাচ্ছে। একটি সমাজে অশ্লীলতা ছড়াতে সমকামিরা প্রধান দায়িত্ব পালন করে। 

● গড়-আয়ু

ইন্টারনেশনাল জার্নাল ও এপিডিওলজিতে প্রকাশিত ১৯৮৭ এর শেষ দিকে এবং ১৯৯২ এর প্রথম দিকে এক জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে সমকামী ও উভকামীরা অস্বাস্থ্যকর জীবণযাপন করে এবং তাদের গড় আয়ু স্বাভাবিকের চেয়ে কম। [22] ইস্টার্ণ সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশনে প্রকাশিত “Federal distortion of the homosexual footprint” এ ড: পল ক্যামেরুন দেখিয়েছেন পুরুষ ও মেয়ের বিবাহসম্পর্ক আয়ুষ্কাল বাড়িয়ে দেয় যেখানে সমকামিদের ক্ষেত্রে আয়ুষ্কাল ২৪ বছর কম। পল ক্যামেরুন ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল, কানাডিয়ান মেডিক্যাল এসোসিয়েশন জার্নাল, পোস্টগ্রাজুয়েট মেডিক্যাল জার্নাল এর সম্পাদনা করে থাকেন। তার নিজের ৪০ টার মত আর্টিকেল আছে সমকামিতার উপর। ১৯৯০ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে ডেনমাকর্কে স্বাভাবিক যৌনাচারীর গড় আয়ু যেখানে পাওয়া গেছে ৭৪, সেখানে ৫৬১ গে পার্টনার এর গড় আয়ু পাওয়া যায় ৫১! সমকামী মহিলাদের ক্ষেত্রেও এই গড় আয়ুর হার কম, আনুমানিক ২০ বছর কম! অপরদিকে ধুমপায়ীদের ক্ষেত্রে এই আয়ুষ্কাল কমে যাবার হার মাত্র ১ থেকে ৭ বছর।

● এইডস 

সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল ও প্রিভেনশন এর মতে সমকামিদের মধ্যে এইডস নামক রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা সবচেয়ে বেশী। ২০০৬ সালে এক জরিপে দেখা গেছে ৫৬০০০ নতুন এইচআইভি আক্রান্তের মধ্যে ৫৩% গে অথবা সমকামি। তাছাড়া গে’দের মধ্যে যারা এইডসে আক্রান্ত তাদের মৃত্যু-ঝুঁকি অন্যান্য এইডস আক্রান্তদের থেকে ১৩গুন বেশী। [23]

সিফিলিস 

সমকামীতা সিফিলিস এর মত রোগ ছড়াতেও ব্যাপকভাবে দায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটাতে ২০০৮ সালে সিফিলিস ৪০ভাগ বেড়ে যাবার কারণ উদঘাটনে সমকামিতার সম্পর্ককে পাওয়া যায়। ২০০৮ সালে মিনেসোটার ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ এ ১৫৯ টি সিফিলিস এর ঘটনা পাওয়া যায়, এর মধ্যে ১৫৪টিই ঘটে পুরুষের মধ্যে এবং এর মধ্যে ১৩৪ জনই আরেকজন পুরুষের সাথে যৌনক্রিয়া করেছে বলে স্বীকার করে। [24]

 গে-জিন পাওয়ার মিথ্যা দাবী

অনেক বিজ্ঞানী গে জিন পাবার ব্যাপারে দাবীও করেছিলেন। কিন্তু দেখা যায় তাদের সেসব দাবী শেষ পর্যন্ত অসার বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। সমকামীতা যদি জিনগতই হতো তাহলে সমকামি পুরুষ ও মহিলার যমজ সন্তানদের ১০০ ভাগ সমকামি হবার কথা। অথচ যমজ সন্তানদের উপর গবেষণার চিত্র থেকে এটা ভুল বলেই প্রতীয়মান হয়। অনেক গবেষণায় আবার এভাবে দেখানো হয় যে, সমকামি সন্তান জন্মদানকারী মা সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশী উর্বর হয়। কিন্ত গবেষকরা এও স্বীকার করেছেন যে, এটা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। আর তাছাড়া সমকামিতার কারণ উদঘাটনে এই প্রচেষ্টা যদি পুনঃগবেষণা দ্বারা প্রমাণিত হয়ও তার হার খুব কম। পরে ২০০২ সালে নাফিল্ড কাউন্সিল অব বায়োএথিক্স জিন ও আচরণ নিয়ে তাদের রিপোর্টে, লিঙ্গ নির্ধারণে জিন ও জীববিজ্ঞানের গবেষণা নিয়ে সমস্যার কথা স্বীকার করে এবং গবেষণাকে সতর্কতার সাথে দেখা উচিত বলে মতামত দেন। [25]

সমকামিতা একটি মরণ-ব্যাধি ছাড়া আর কিছুই নয়। একটি সভ্য সমাজকে অসভ্য করে দিতেই একাই যথেষ্ট এই সমকামিতা। সমকামিতা একটি রোগ। এই রোগের চিকিৎসা রয়েছে। সমকামিদের চিকিৎসা করানো উচিৎ। নইতো তারা সমাজে অশ্লীলতা ছড়িতে দেবে ভয়াবহভাবে। প্রধান ও সংখ্যাগরিষ্ঠ তিনটি ধর্মেই সমকামিতা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সমকামিতা দেহে বিভিন্ন ভয়াবহ রোগ ছড়িয়ে দেয়। একটি রাষ্ট্রের জন্য সমকামিতা অত্যন্ত বড় ধরনের একটি হুমকি। এই জন্যই রাশিয়া সহ বেশ কিছু দেশ সমকামিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। নাস্তিকরা সকল অনৈতিক অশ্লীল কাজ সমাজে ছড়িয়ে দিতে চায়। এই জন্যই প্রকাশ্যে নাস্তিকরা সমকামিদের সমর্থন করে এবং তারা নিজেরাও সমকামের রোগে আক্রান্ত। সমকামিতা মানুষকে ধব্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এই জন্যই আমরা মুসলিমরা সমকামিতাকে অত্যন্ত ঘৃণিত ও জঘন্যতম কাজ বলে মনে করি। ইসলামে কঠোরভাবে সমকামিতা নিষিদ্ধ। পরিশেষে এতটুকু লিখেই লেখা শেষ করবো, মহান আল্লাহ তায়ালা কুরানের সুস্পষ্টভাবে বলেন, 

وَلَا تَقْرَبُوا۟ ٱلزِّنَىٰٓۖ إِنَّهُۥ كَانَ فَٰحِشَةً وَسَآءَ سَبِيلًا 

তোমরা অবৈধ যৌন সংযোগের নিকটবর্তী হয়োনা, ওটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ। [26]

 

 ➪ 𝙍𝙚𝙛𝙚𝙧𝙚𝙣𝙘𝙚:-