Are you sure?

বিজ্ঞান »  ইসলাম ও বিজ্ঞান

পর্ব ৪://চাঁদের আলো হলো প্রতিফলিত আলো!

কোরআনে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি পর্ব:-৪

আলোচনা:চাঁদের আলো হলো প্রতিফলিত আলো!

\_________________________________/

প্রাচীন সভ্যতাগুলো বিশ্বাস করত যে,চাঁদ নিজেই নিজের আলো ছড়ায় কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান আজ আমাদের বলে যে,চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই বরং চাঁদের যে আলো তা হলো প্রতিফলিত আলো (Reflection Light)।আর মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন ১৪০০+ বছর আগে থেকেই এই সত্য বৈজ্ঞানিক তথ্যটি আমাদের কে জানিয়ে দিয়েছে সূরা আল ফুরকান (الفرقان), আয়াত: ৬১-তে

 

تَبَارَكَ ٱلَّذِى جَعَلَ فِى ٱلسَّمَآءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَٰجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا

 

অর্থঃকত কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য (প্রদীপ) ও দীপ্তিময় চন্দ্র।"

 

কোরআনে সূর্যের জন্য আরবি প্রতিশব্দ হলো (الشَّمْسَ)"সামস্"।আবার সূর্য কে উল্লেখ করা হয়েছে (السراج)"সিরাজ"-বলে যার অর্থ হলো"মশাল"-অথবা "ওয়াহাজা "অর্থাৎ ( الشَّمْسَ) -বলে যার অর্থ "প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ "-(যার নিজের আলো আছে) বা( ضِيَا۬ءً) "দিয়া"-হিসেবে যার অর্থ "তেজস্কর"।আর এই তিনটি বর্ণণাই সূর্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য/যথোচিত ও মানানসই।যেহেতু এটা অন্তর্দহনে তীব্র তাপ ও আলো উৎপাদন করে।"চাদের"-জন্য আরবি প্রতিশব্দ হলো (الْقَمَرَ )"কামার" -যা কোরআনে( الْقَمَرَ) "মুনীর"-শব্দ দ্বারা প্রকাশ করেছে।"মুনীর"-হলো সেই বস্তু যা "নূর"-বা আলো দেয়।আবার কোরআনের বর্ণনা চাঁদের বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যায়। চাঁদের বৈশিষ্ট্য হলো:-"চাঁদ নিজে কোন আলো দেয় না বরং এটা একটা নিষ্ক্রিয় বস্তু যা প্রতিফলিত করে সূর্যের আলোকে।"সমগ্র কোরআনে একবারের জন্য হলেও চাঁদ কে (السراج) "সিরাজ "বা "(وهاج) ওয়াহহাজা"-বা "(ضِيَا۬ءً)দিয়া"-হিসেবে অথবা সূর্য কে (نُوْرً) "নূর"-বা (الْقَمَرَ) "মুনীর"-হিসেবে উল্লেখ করা হয় নাই।এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে মহিমান্বিত আল-কোরআন "চাঁদ ও সূর্যের "-আলোর প্রকৃতির মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে।এরূপ আয়াত সূরা ফুরকানের ৬১ নং এবং সূরা নূহের ১৬ নং এ উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং চাঁদের আলো প্রতিফলিত আলো, যা বর্তমান বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে অথচ কুরআন তা ১৪০০ বছর পূর্বে বলে দিয়েছে (পবিত্র কোরআন ১০:৫ এর তাফসীরে ফাতহুল মাজীদে বিদ্যমান)।

 

সূর্য ও চন্দ্রের আলোর প্রকৃতি সম্পর্কে নিন্মে বর্ণিত আয়াতগুলো গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন যা মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআনে এরশাদ হয়েছে সূরা ইউনুস (يونس), আয়াত: ৫

 

هُوَ ٱلَّذِى جَعَلَ ٱلشَّمْسَ ضِيَآءً وَٱلْقَمَرَ نُورًا وَقَدَّرَهُۥ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوا۟ عَدَدَ ٱلسِّنِينَ وَٱلْحِسَابَ مَا خَلَقَ ٱللَّهُ ذَٰلِكَ إِلَّا بِٱلْحَقِّ يُفَصِّلُ ٱلْءَايَٰتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ

 

অর্থঃ তিনিই সে মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সুর্যকে তেজস্কর [উজ্জল আলোকময়] আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ জ্যোতির্ময় [আলো বিতরণকারীরূপে] এবং অতঃপর নির্ধারিত করেছেন এর জন্য মনযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব। আল্লাহ এই সমস্ত কিছু এমনিতেই সৃষ্টি করেননি, কিন্তু যথার্থতার সাথে। তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণসমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান আছে।"

 

তাই দেখা যায় যে,মহিমান্বিত ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন ও বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান সূর্য ও চাঁদের আলোর প্রকৃতির মধ্যে বিরাজমান পার্থক্যের ব্যপারে সম্পূর্ণভাবে একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে।