Are you sure?

হাদিস »  বিবিধ

ইসলাম তো কুকুর হত্যা করতে বলে !

অজ্ঞতা:

‘মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু কুকুর কে হত্যা করতে বলে ইসলাম’ যা একটি জঘন্য কাজ। 

অজ্ঞতা প্রসূত অভিযোগের জবাব:

জড়জগৎ, জীবজগৎ ও উদ্ভিদজগৎ এই পৃথিবীর উপাদান। জড়জগৎ প্রাণহীন। উদ্ভিদজগতেও আছে ন্যূনতম প্রাণের স্পন্দন। পশুপাখির মধ্যে প্রাণের উপস্থিতির পাশাপাশি রয়েছে আহার-বিহার, বিচরণ ও সন্তান ধারণের ক্ষমতা। এসব গুণ-বৈশিষ্ট্য আছে মানুষেরও। এরই সঙ্গে মানুষের আছে বিবেক ও বোধশক্তি; জ্ঞান অর্জনের যোগ্যতা এবং সত্য-মিথ্যা পরখ করার ক্ষমতা। এ গুণেই মানুষ শ্রেষ্ঠ জীবের আসনে সমাসীন।  ইসলাম মনে করে, এই পৃথিবীতে মানুষের পরই প্রাণিজগতের স্থান।  প্রাণিজগৎকে পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দিয়ে  কুর’আনে আল্লাহ বলেন, 

وَ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا طٰٓئِرٍ یَّطِیۡرُ بِجَنَاحَیۡهِ اِلَّاۤ اُمَمٌ اَمۡثَالُکُمۡ ؕ مَا فَرَّطۡنَا فِی الۡکِتٰبِ مِنۡ شَیۡءٍ ثُمَّ اِلٰی رَبِّهِمۡ یُحۡشَرُوۡنَ  

« Bengali - Mujibur Rahman

[ ভূ-পৃষ্ঠে চলাচলকারী প্রতিটি জীব এবং বায়ুমন্ডলে ডানার সাহায্যে উড়ন্ত প্রতিটি পাখীই তোমাদের ন্যায় এক একটি জাতি, আমি কিতাবে কোন বিষয়ই লিপিবদ্ধ করতে বাদ রাখিনি। অতঃপর তাদের সকলকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে। ] 

English - Mufti Taqi Usmani

[ There is no creature moving on the earth, nor a bird flying on its two wings, but they are all communities like you. We have not missed anything in the Book. Then, to their Lord all of them shall be gathered. ] » 1

 সে হিসেবে বলা যায়, কুকুর আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি।   

কিন্তু আপ্রয়জনে কুকুর পালন এবং সমাজে বেওয়ারিস কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি মানব সমাজের জন্য ক্ষতিকর তাই পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই মালিক বিহীন ও হিংস্র কুকুর নিধন করা হয়ে থাকে  আর এতেই মানবসভ্যতার কল্যাণ রয়েছে । বিবিসির দেয়া একটি তথ্য মতে  কুকুরের কামড়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর আহত হয় দু'লাখেরও বেশি মানুষ ।  এছাড়াও ঢাকার সংক্রামক ব্যধি হাসপাতালেই প্রতিদিন ৩০০-এর বেশি কুকুরের কামড়ে আহত রোগী চিকিৎসা নেন।  আমেরিকা তে প্রতি ৭৫ সেকেন্ডে একটি  কুকুর কামড়ানোর ঘটনা ঘটে , প্রতিদিন ১০০০ মানুষ কুকুরের কামড়ে মারাত্মক আহত হয়ে জরুরি  চিকিৎসা নিতে যায়, যাদের শতকরা আশি ভাগ শিশু 2।  আমেরিকার মত উন্নত দেশের এই অবস্থা হলে,  বিশ্বব্যাপী এই পরিসংখ্যান কত ভয়াবহ এটা সহজেই অনুমেয় । তাহলে পাঠক একটু চিন্তা করুন আজ থেকে ১৪৫০ বছর আগের ভ্যাক্সিন ও অন্যান্য উন্নত প্রযুক্তি ছাড়া  আরব মরুভূমির সদ্য  বিকশিত একটি নগরীর পরিস্থিতি কেমন হতে পারে ? 
 সাধারণ নিরাপত্তার স্বার্থে রাসুল্লাহ ﷺ মদিনাতে কুকুর নিধনের আদেশ দেন , তবে সাহাবিরা এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি শুরু করলে তিনি ﷺ এ বিষয়ে যথাযথ নিয়মাবলি প্রণয়নের মাধ্যমে একটা নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি প্রদান করেন । যেমন হাদিসে নববিতে এসেছে, 

وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، سَمِعَ مُطَرِّفَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ الْمُغَفَّلِ، قَالَ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقَتْلِ الْكِلاَبِ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ مَا بَالُهُمْ وَبَالُ الْكِلاَبِ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ رَخَّصَ فِي كَلْبِ الصَّيْدِ وَكَلْبِ الْغَنَمِ وَقَالَ ‏"‏ إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي الإِنَاءِ فَاغْسِلُوهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ وَعَفِّرُوهُ الثَّامِنَةَ فِي التُّرَابِ

উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ... ইবনুল মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে বললেন, তাদের কী হয়েছে যে, তারা কুকুরের পিছনে পড়লো? তারপর শিকারী কুকুর এবং বকরীর (পাহারা দেয়ার) কুকুর রাখার অনুমতি দেন এবং বলেন, কুকুর যখন পাত্রে মুখ লাগিয়ে পান করবে তখন তা সাতবার ধুইয়ে ফেলবে এবং অষ্টমবার মাটি দিয়ে ঘষে ফেলবে। 3

হাদিসে দেখা যাচ্ছে রাসুল্লাহ ﷺ এর কুকুর হত্যার এই নির্দেশ সাময়িক ও কেবল বেওয়ারিশ কুকুরের জন্য  ছিল, 

এ বিষয়ে  কয়েকটি হাদিস ও হাদিসগুলোর প্রকৃত ব্যাখ্যা দেখে নেয়া যাক,   

হাদীস -১: 

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: خَمْسٌ لَا جُنَاحَ عَلَى من قتلَهُنّ فِي الْحل وَالْإِحْرَامِ: الْفَأْرَةُ وَالْغُرَابُ وَالْحِدَأَةُ وَالْعَقْرَبُ وَالْكَلْبُ الْعَقُورُوعن ابن عمر عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: خمس لا جناح على من قتلهن في الحل والإحرام: الفأرة والغراب والحدأة والعقرب والكلب العقور

’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হারামে কিংবা ইহরাম অবস্থায় পাঁচটি প্রাণী তথা ইঁদুর, কাক, চিল, বিচ্ছু ও হিংস্র কুকুর হত্যা করেছে, তার কোন গুনাহ হবে না। 4

ব্যাখ্যা:

 (فِى الْحَرَمِ وَالْإِحْرَامِ) ‘‘হারাম এলাকায় ও ইহরাম অবস্থায়।’’ অর্থাৎ- মক্কার হারাম এলাকায় মুহরিম ব্যক্তির জন্য হাদীসে উল্লিখিত পাঁচ প্রকার প্রাণী হত্যা করা বৈধ।

হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ এ হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, হারাম এলাকার বাইরে ইহরামবিহীন ব্যক্তির পক্ষে তা হত্যা করা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বৈধ। কেননা ইহরাম অবস্থায় কোন কিছু হত্যা করা অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও যখন তার জন্য এ প্রাণীগুলো হত্যা করা বৈধ তখন যার মধ্যে এ অবৈধতা নেই তার জন্য নিশ্চিতভাবে তা বৈধ।

ইবনু ‘উমার (রাঃ) বর্ণিত অত্র হাদীসে এগুলো হত্যা করার মধ্যে ক্ষতি নেই বলা হয়েছে যা দ্বারা এগুলো হত্যা করা বৈধতা বুঝায়। আর আয়িশাহ্ (রাঃ) কর্তৃক মুসলিমে বর্ণিত হাদীসে এগুলো হত্যা করার নির্দেশ রয়েছে যা দ্বারা বুঝা যায় যে, এগুলো হত্যা করা মুস্তাহাব; শাফি‘ঈ, হাম্বালী ও আহলুয্ যাহিরদের মতানুযায়ী তা হত্যা করা মুস্তাহাব।

অত্র হাদীসে পাঁচ প্রকার প্রাণী হত্যা করার বৈধতা বর্ণিত হয়েছে। যদিও পাঁচ সংখ্যাটি খাস, অর্থাৎ- নির্দিষ্ট সংখ্যা বুঝায় কিন্তু অধিকাংশ ‘আলিমদের মতে নির্দিষ্ট সংখ্যা উদ্দেশ্য নয়। বরং সকল প্রকার কষ্টদায়ক প্রাণীই হত্যা করা বৈধ।

(الْفَأْرَةُ) ইঁদুর। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী জমহূর ‘উলামাগণের মতে মুহরিমের জন্য ইঁদুর হত্যা করা বৈধ। একমাত্র ইব্রাহীম নাখ্‘ঈ তা হারাম বলেছেন। ‘আল্লামা ইবনুল মুনযীর বলেনঃ এ অভিমত হাদীস ও ‘উলামাগণের মতের বিরোধী। ‘আল্লামা খাত্ত্বাবী বলেন, এ অভিমত সুস্পষ্ট দলীল ও ‘আলিমদের মতের বিরোধী।

(الْغُرَابُ) ‘‘কাক’’। অর্থাৎ- সাদা-কালো ডোরাকাটা কাক। যে কাকের পিঠে ও পেটে সাদা বর্ণের পালক রয়েছে তাকেই الْغُرَابُ الْأَبْقَعْ বলা হয় আর তা হত্যা করা বৈধ।

সকল ‘আলিমগণ একমত যে, যে সমস্ত ছোট কাক শুধু শস্যদানা ভক্ষণ করে সে কাক হত্যা করা বৈধ নয়। আর তা খাওয়াও বৈধ।

(وَالْكَلْبُ الْعَقُوْرُ) ‘‘হিংস্র কুকুর। এ দ্বারা কি উদ্দেশ্য এ নিয়ে ‘আলিমদের মতপার্থক্য রয়েছে।

(১) ইমাম যুফার বলেনঃ এখানে الْعَقُوْرُ শব্দ দ্বারা নেকড়ে বাঘ উদ্দেশ্য।

(২) ইমাম মালিক বলেনঃ প্রত্যেক ঐ হিংস্রপ্রাণী উদ্দেশ্য যা মানুষের ওপর আক্রমণ চালায় যেমন- চিতা বাঘ, সিংহ, নেকড়ে বাঘ ইত্যাদি। জমহূর ‘আলিমদের অভিমতও তাই।

(৩) ইমাম আবূ হানীফা বলেনঃ (الْكَلْبُ الْعَقُوْرُ) দ্বারা কুকুরই উদ্দেশ্য তবে পাগলা বা ক্ষ্যাপা কুকুর।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেনঃ সকল ‘আলিমগণ এ বিষয়ে একমত যে, কুকুর ইহরামধারী, ইহরামবিহীন, হারাম এলাকা বা হারামের বাইরে সর্বত্র হত্যা করা বৈধ।

হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ হাদীসে উল্লিখিত পাঁচ প্রকার প্রাণী ছাড়াও কষ্টদায়ক অন্যান্য প্রাণীও হত্যা করা বৈধ। কিন্তু এ বৈধতার কারণ সম্পর্কে তারা মতভেদ করেছেন।

(১) ইমাম মালিক-এর মতে তা কষ্টদায়ক প্রাণী, তাই হত্যা করা বৈধ।

(২) ইমাম শাফি‘ঈ-এর মতে তা খাওয়া অবৈধ, তাই তা হত্যা করা বৈধ।

(৩) হানাফীদের মতে হাদীসে বর্ণিত শুধু পাঁচ প্রকার প্রাণীই হত্যা করা বৈধ। তবে সাপ হত্যা করা অন্য দলীলের ভিত্তিতে এবং নেকড়ে বাঘ কুকুরের সাথে সাদৃশ্য থাকার কারণে তা হত্যা করা বৈধ।

হারামের বাইরে মুহরিম ছাড়া অন্যদের জন্য শিকার করা হালাল। আর ভক্ষণযোগ্য প্রাণী কেবল শিকারীর জন্য শিকার করা বৈধ। আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়া তা’আলা বলেন: (وَإِذَا حَلَلْتُمْ فَاصْطَادُوا) ’’...যখন তোমরা ইহরাম মুক্ত হবে তখন শিকার করতে পার...’’- 5। আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন, (وَحُرِّمَ عَلَيْكُمْ صَيْدُ الْبَرِّ مَا دُمْتُمْ حُرُمًا) ’’...তোমরা যতক্ষণ ইহরামে থাকবে ততক্ষণ স্থলে শিকার তোমাদের জন্য হারাম...’’- ।6

এখানে আমর বা নির্দেশসূচক শব্দ দ্বারা মুস্তাহাব উদ্দেশ্য, কেননা তা (শিকার করা একটি উপার্জন এবং এর দ্বারা সৃষ্টিকুলের উপকার হয়, অতএব তা) বৈধ। আসলে এখানে মূল বিষয় হলো আল্লাহ তা’আলার কথা: (وَمَا عَلَّمْتُمْ مِنَ الْجَوَارِحِ مُكَلِّبِينَ تُعَلِّمُونَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَكُمُ اللهُ) ’’...শিকারী পশু-পাখি যাদেরকে তোমরা শিকার শিখিয়েছ আল্লাহ তোমাদেরকে যা শিখিয়েছেন তা থেকে তোমরা তাদেরকে শিখিয়ে থাক...’’- 7। অর্থাৎ তোমরা যে সকল প্রাণীকে শিকার করার উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছ যথাক্রমে কোন হিংস্র প্রাণী, পাখি, কুকুর, চিতাবাঘ, বাজ পাখিসহ অন্যান্য প্রাণী যদি শিকার করে তোমাদের জন্য বহন করে নিয়ে আসে তবে তা থেকে তোমরা খেতে পার।

 

হাদীস -2:

بَابُ ذِكْرِ الْكَلْبِ
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِقَتْلِ الْكِلَابِ إِلَّا كَلْبَ صيدٍ أَو كلب غنم أَو مَاشِيَة

وعن ابن عمر أن النبي صلى الله عليه وسلم أمر بقتل الكلاب إلا كلب صيد أو كلب غنم أو ماشية

’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিকারী কুকুর কিংবা মেষ-দুম্বা পাহারাদানকারী কুকুর অথবা গবাদিপশু পাহারায় নিয়োজিত কুকুর ছাড়া অন্যান্য সব কুকুর বধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।8

ব্যাখ্যাঃ

ইমাম আল হারামায়ন (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রাথমিক পর্যায়ে সকল কুকুর হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর এটা রহিত করা হয়। অতঃপর গাঢ় কালো কুকুর ব্যতীত অন্যান্য কুকুর হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে। অতঃপর শারী‘আহ্ এ মর্মে স্বীকৃতি দেয় যে, যে সকল কুকুরের মাঝে কোন ক্ষতির আশংকা নেই সে সব কুকুর মারা নিষেধ, চাই তা কালো হোক বা না হোক।

আর কুকুর প্রতিপালনের যে বিষয়টা রয়েছে আমাদের সিদ্ধান্ত হলো, বিনা প্রয়োজনে কুকুর পালন করা হারাম। তবে শিকারী, ক্ষেত খামার পাহারা বা সেচন কাজের জন্য কুকুর পালন করা জায়িয।

এছাড়া বাড়ী পাহারা বা প্রহরী কিংবা এ জাতীয় কাজে কুকুর প্রতিপালন করা যাবে কিনা- এ বাপারে দু’টি দিক রয়েছে।

১. হাদীসগুলোর বাহ্যিক দিক বিবেচনায় ক্ষেতের, পাহারা, সেচন কাজে ব্যবহৃত কুকুর ও শিকারী কুকুর- এ তিনটি ছাড়া কোন কাজের জন্য কুকুর প্রতিপালন জায়িয নেই।

২. হাদীসে উল্লেখিত তিনটি বিষয়ের উপর ক্বিয়াস করে কারণ বিবেচনায় জায়িয। অর্থাৎ প্রয়োজন থাকলে জায়িয এবং এটাই বিশুদ্ধ। 9

হাদীস -৩:

'النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْلَا أَنَّ الْكِلَابَ أُمَّةٌ مِنَ الْأُمَمِ لَأَمَرْتُ بِقَتْلِهَا كُلِّهَا فَاقْتُلُوا مِنْهَا كُلَّ أَسْوَدَ بَهِيمٍ

’আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কুকুর (আল্লাহর সৃষ্ট) সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে একটি সম্প্রদায় না হত, তবে আমি সমুদয় কুকুর বধ করার নির্দেশ দিতাম। তবে যেগুলো মিশমিশে কালো তোমরা সেগুলো বধ করো। 10

ব্যাখ্যাঃ

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আলোচ্য হাদীসটি আল্লাহ তা‘আলার কথার দিকে ইঙ্গিত করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘ভূপৃষ্ঠে চলমান প্রতিটি জীব এবং বায়ুমণ্ডলে দু’ ডানার সাহায্যে উড়ন্ত প্রতিটি পাখিই তোমাদের মতই এক ও একটি জাতি।’’ 11

অর্থাৎ তারা সৃজনশীল ও তাসবীহ তাহলীলে তোমাদের মতই। ‘আল্লামা খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আলোচ্য বক্তব্য দ্বারা উদ্দেশ্য হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাতিকে নিঃশেষ করা পছন্দ করেন না; কেননা পৃথিবীর প্রতিটি সৃষ্টিকুলের মাঝে আল্লাহ তা‘আলার কোন না কোন হিকমাত রয়েছে এবং রয়েছে আত্মশুদ্ধির উপমা। তিনি বলেন, ব্যাপারটা যদি এমন হয় যে, যদি কুকুর হত্যা ছাড়া কোন পথ খোলা না থাকে তাহলে গাঢ় কালো ক্ষতিকারক কুকুরগুলো হত্যা কর এবং অবশিষ্টগুলো ছেড়ে দাও যাতে তোমরা পাহারার কাজে নিয়োজিত করার মাধ্যমে উপকার গ্রহণ করতে পার। 12

হাদীস -৪:

وَعَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: خَمْسٌ فَوَاسِقُ يُقْتَلْنَ فِي الْحِلِّ وَالْحَرَمِ: الْحَيَّةُ وَالْغُرَابُ الْأَبْقَعُ وَالْفَأْرَةُ وَالْكَلْبُ الْعَقُورُ وَالْحُدَيَّا

’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পাঁচটি ক্ষতিকর প্রাণী হিল্ ও হারাম (সর্বস্থানে) যে কোন স্থানেই হত্যা করা যেতে পারে। সেগুলো হলো সাপ, (সাদা কালো) কাক, ইঁদুর, হিংস্র কুকুর ও চিল।13

ব্যাখ্যা:

حِلِّ (হিল্) এর অর্থ কয়েকটি- হালাল, মক্কার আশেপাশের সম্মানিত স্থান ব্যতীত অন্য জায়গাকে বলা হয়, ইহরাম থেকে বের হওয়ার সময়, কোন স্থানে অবতরণকারীকেও হিল্ করা হয়।

(حَرَمِ) হারাম এর অর্থ প্রত্যেক ঐ বস্ত্ত যার সংরক্ষণ করা হয়। নিষিদ্ধ, পবিত্র, পবিত্র স্থান, হেরেম, ক্যাম্পাস, যার দিক থেকে প্রতিরোধ করা হয়।

(خَمْسٌ فَوَاسِقُ) ‘‘পাঁচ প্রকার ক্ষতিকর প্রাণী।’’ পাঁচ প্রকার প্রাণীকে ফাসিক্ব বলার কারণ এই যে, অন্যান্য প্রাণীর হুকুম থেকে এ প্রাণীগুলোর হুকুম পৃথক। অর্থাৎ- অন্যান্য প্রাণী হত্যা করা হারাম, আর এগুলো হত্যা করা বৈধ অথবা এগুলো খাওয়া হারাম, অথবা এগুলো অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় ক্ষতিকারক, এর মধ্যে কোন উপকার নেই। পক্ষান্তরে অন্যান্য প্রাণী উপকারী।

‘আল্লামা তুরবিশতী বলেন,  'প্রাণীকুলের মধ্য থেকে এ পাঁচ প্রকার ক্ষতিকর প্রাণীকে অন্যান্য প্রাণী হতে পৃথক হুকুম দেয়ার কারণ এই যে, এর অপকারিতা সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা অবহিত অথবা এগুলো অন্যান্য প্রাণীর তুলনার মানুষের জন্য অধিক ও দ্রুত ক্ষতিকর। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করা হয় যে, কোন হত্যাকারী হত্যা করার পর হেরেমে আশ্রয় গ্রহণ করলে তাকে হত্যা করা বৈধ। কেননা এ প্রাণী হত্যা করা বৈধ হওয়ার কারণ হলো এগুলো ফাসিক। আর হত্যাকারীও ফাসিক্ব, তাই ঐ প্রাণীগুলোর মতো হত্যাকারীকেও হেরেমে হত্যা করা বৈধ।'

হাদীস -৫ : 

عَن عدِيِّ بنِ حاتِمٍ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَرْسَلْتَ كَلْبَكَ فَاذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ فَإِنْ أَمْسَكَ عَلَيْكَ فَأَدْرَكْتَهُ حَيًّا فَاذْبَحْهُ وَإِنْ أَدْرَكْتَهُ قَدْ قَتَلَ وَلَمْ يَأْكُلْ مِنْهُ فَكُلْهُ وَإِنْ أَكَلَ فَلَا تَأْكُلْ فَإِنَّمَا أَمْسَكَ عَلَى نَفْسِهِ فَإِنْ وَجَدْتَ مَعَ كَلْبِكَ كَلْبًا غَيْرَهُ وَقَدْ قَتَلَ فَلَا تَأْكُلْ فَإِنَّكَ لَا تَدْرِي أَيُّهُمَا قَتَلَ. وَإِذَا رَمَيْتَ بِسَهْمِكَ فَاذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ فَإِنْ غَابَ عَنْكَ يَوْمًا فَلَمْ تَجِدْ فِيهِ إِلَّا أَثَرَ سَهْمِكَ فَكُلْ إِنْ شِئْتَ وَإِنْ وَجَدْتَهُ غَرِيقًا فِي الْمَاءِ فَلَا تأكُلْ

’আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ যখন তুমি তোমার কুকুরকে (শিকারের প্রতি) লেলিয়ে দেবে, তখন আল্লাহর নাম নেবে। যদি সে শিকার ধরে তোমার জন্য রেখে দেয়, আর তুমিও শিকারকৃত জানোয়ারটিকে জীবিত অবস্থায় পেয়ে যাও, তাহলে তুমি তাকে যাবাহ করে দাও। আর যদি তুমি তাকে এমন অবস্থায় পাও যে, সে তাকে মেরে ফেলেছে, কিন্তু সে তার কোন অংশ খায়নি, তখন তুমি তা খেতে পার। আর যদি সে কিছু খেয়ে থাকে, তবে তুমি তা’ খাবে না। কেননা (তখন এটাই বুঝতে হবে যে,) সে এটা নিজের জন্য শিকার করেছে। আর যদি তুমি তোমার নিজের কুকুরের সঙ্গে অন্যের কুকুর দেখতে পাও যে, তারা শিকার ধরে তাকে মেরে ফেলেছে, তখন তা খেতে পারবে না। কেননা তুমি অবগত নও যে, তাদের উভয়ের মধ্যে কে শিকার ধরেছে বা মেরেছে। আর যখন তুমি তোমার তীর নিক্ষেপ করবে তখন আল্লাহর নাম নেবে, অতঃপর যদি (উক্ত শিকার) ন্যূনতম একদিন তোমার নিকট অদৃশ্য থাকে (এবং তুমি তাকে মৃত অবস্থায় পাও) এবং তার গায়ে একমাত্র তোমার তীরের চিহ্ন ব্যতীত অন্য কিছুর আঘাত না পাও, তখন ইচ্ছা করলে তাকে খেতে পার। কিন্তু যদি তুমি তাকে পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় পেয়ে থাকো, তখন তাকে আর খেতে পারবে না।14

ব্যাখ্যাঃ তিরমিযী, নাসায়ী ও ত্বহাবীতে সা‘ঈদ ইবনু জুবায়র (রহিমাহুল্লাহ)-এর সূত্রে ‘আদী ইবনু হাতিম  হতে বর্ণিত রয়েছে যে, যখন শিকারকৃত প্রাণী তীর দ্বারা আঘাত পাবে ও অন্য কোন হিংস্র প্রাণীর যদি চিহ্ন না পাও। আর এ মর্মে নিশ্চিত হবে যে, তোমার ছোঁড়া তীর দ্বারাই প্রাণীটি হত্যা হয়েছে, তবে তা খেতে পারবে। অন্যথায় তা খাবে না। আর জখমকৃত প্রাণী যদি পানিতে পরে যায় তবে তা খাবে না, কারণ তখন সন্দেহের সৃষ্টি হবে প্রাণীটি তীরের আঘাতে মারা গেছে, নাকি পানিতে ডোবার কারণে মারা গেছে। যদি এ মর্মে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত প্রাণী তীরের আঘাতে জখম (রক্তক্ষরণ) হয়েছে এবং মারা গেছে, অতঃপর পানিতে পরেছে, তাহলে উক্ত প্রাণী খাওয়া হালাল।

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, " যখন শিকারকৃত প্রাণী পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় পাওয়া যাবে তখন তা খাওয়া সর্বসম্মতিক্রমে হারাম হবে। আর উল্লেখিত হাদীসে শিকারীর কুকুর পাঠানোর সময় ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বলার নির্দেশ সম্পর্কে ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ শিকারীর জন্য কোন প্রাণী প্রেরণ করার সময়, পশু যাবাহ করার সময় এবং কুরবানী করার সময় ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বলতে হবে। ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বলা ওয়াজিব না সুন্নাত- এ সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ)-সহ একদল ‘উলামার মতে ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বলা সুন্নাত, স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বর্জন করলে যাবাহকৃত ও শিকারকৃত প্রাণী হালাল হবে। আর এটাই ইমাম মালিক ও আহমাদ (রহিমাহুমাল্লাহ)-এর বর্ণনা। আহলুয্ যাহিরী বলেনঃ স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বর্জন করলে উক্ত প্রাণীর গোশত খাওয়া বৈধ নয়। এটা ইবনু সীরীন ও আবূ সাওর-এর বর্ণনা। ইমাম আবূ হানীফাহ্, মালিক, সুফ্ইয়ান সাওরী ও জামহূর ‘উলামা বলেনঃ ভুলবশতঃ ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বর্জন করলে উক্ত প্রাণী ভক্ষণ বৈধ আর ইচ্ছাকৃতভাবে ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বর্জন করলে বৈধ নয়।"15

 

হানাফি মাজহাব মতে, 

‘ কুকুরের শরীর নাপাক নয়। তাই কুকুর কারো শরীর বা কাপড় স্পর্শ করলে তা নাপাক হবে না। তবে কুকুরের লালা নাপাক। কুকুর মুখ দিয়ে কারো জামা টেনে ধরলে যদি কাপড়ে লালা লেগে যায়, তবে কাপড় নাপাক হয়ে যাবে; অন্যথায় নাপাক হবে না।’  16

ইসলাম সহ আসমানি সব ধর্ম মতে কুকুরের গোশত খাওয়া হারাম। 

শিকারের জন্য রাখা কুকুর, পাহারার জন্য রাখা কুকুর মেরে ফেলা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম বা অবৈধ। পাগলা কুকুর, কষ্টদায়ক কুকুর মেরে ফেলা সব আলেমের মতে বৈধ। সাধারণ অবস্থায় থাকা কুকুর নিধন করা, মেরে ফেলা ইসলামের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয়। 17

সম্ভব হলে কুকুরকে খাবার দেওয়া, পানি দেওয়া, কুকুর কোথাও পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করা ইসলামের দৃষ্টিতে সওয়াবের কাজ। বিশুদ্ধ হাদিসে কুকুরকে পানি খাওয়ানোর কারণে ব্যভিচারী নারীকেও জান্নাত দান করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «غُفِرَ لِامْرَأَةٍ مُومِسَةٍ مَرَّتْ بِكَلْبٍ عَلَى رَأْسِ رَكِيٍّ يَلْهَثُ كَادَ يَقْتُلُهُ الْعَطَشُ فَنَزَعَتْ خُفَّهَا فَأَوْثَقَتْهُ بِخِمَارِهَا فَنَزَعَتْ لَهُ مِنَ الْمَاءِ فَغُفِرَ لَهَا بِذَلِكَ» . قِيلَ: إِنَّ لَنَا فِي الْبَهَائِمِ أَجْرًا؟ قَالَ: «فِي كُلِّ ذَاتِ كبد رطبَة أجر»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (একবার) একটি পতিতা মহিলাকে মাফ করে দেয়া হলো। (কারণ) মহিলাটি একবার একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাবার সময় দেখল সে পিপাসায় কাতর হয়ে একটি কূপের পাশে দাঁড়িয়ে জিহবা বের করে হাঁপাচ্ছে। পিপাসায় সে মরার উপক্রম। মহিলাটি (এ করুণ অবস্থা দেখে) নিজের মোজা খুলে ওড়নার সাথে বেঁধে (কূপ হতে) পানি উঠিয়ে কুকুরটিকে পান করাল। এ কাজের জন্য তাকে মাফ করে দেয়া হলো। (এ কথা শুনে) সাহাবীগণ আরয করলেন, পশু-পাখির সাথে ভাল ব্যবহার করার মধ্যেও কি আমাদের জন্য সাওয়াব আছে? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ। প্রত্যেকটা প্রাণীর সাথে ভাল ব্যবহার করার মধ্যেও সাওয়াব আছে।18

ব্যাখ্যা:

 (لِامْرَأَةٍ) মহিলাটির নাম উল্লেখ করা হয়নি সহীহুল বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় পুরুষ ব্যক্তির উল্লেখ রয়েছে এতে বুঝা যায় এগুলো মূলত দু’টি ঘটনা।

(مُوْمِسَةٍ) বানী ইসরাঈলের যিনাকারিণী মহিলা।

(كَادَ يَقْتُلُهُ الْعَطَشُ) পিপাসার কারণে মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গিয়েছিল।

হাদীসটি থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ তা‘আলা তার বিশেষ রহমাতের মাধ্যমে কিছু ভাল কাজের কারণে বান্দার কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ মার্জনা করে থাকেন বিনা তাওবাতে।

(لَنَا فِي الْبَهَائِمِ) প্রাণীকূলের প্রতি দয়াপরবশ হওয়াতে। (فِي كُلِّ ذَاتِ كبد) অর্থাৎ প্রত্যেক বস্ত্ত যাকে জীবনী শক্তি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য তিনি পান করিয়েছেন। তার জন্য যে সমূহ সাওয়াব পাবেন।

আল্লামা দাওয়ার্দী (রহঃ) বলেন, প্রত্যেক জীবিত কলিজাকে রক্ষায় যারা পান করালেন তবে তা সমস্ত প্রাণীর ক্ষেত্রে عام বা ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আবূ ‘আবদুল মালিক (রহঃ) বলেন, আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা (فِي كُلِّ كبد) এ কথাটি কিছু বস্ত্তর জন্য নির্দিষ্ট যে প্রাণীগুলো দ্বারা কোন ক্ষতি হয় না।

কেননা যেগুলোকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন যেমনঃ কাক, চিল এগুলোকে পানি পান করিয়ে সতেজ করে তাদের অনিষ্টকে বৃদ্ধি করা যাবে না।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, "হাদীসটি নির্দিষ্ট কিছু পশু প্রাণীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেগুলো হত্যার ব্যাপারে আদেশ দেয়া হয়নি। সুতরাং পানি পান করিয়ে যাওয়ার সাওয়াব হাসিল হবে এবং ইহসানের তরীকায় তাদের একটু রিযক্বের ব্যবস্থা হলো।"

আল্লামা ইবনুত্ তীন (রহঃ) বলেন, "হাদীসটিকে ব্যাপক অর্থে নিতে কোন সমস্যা নেই। অত্র হাদীসে মানুষ ও মানবতার প্রতি দয়া প্রদর্শনের ইঙ্গিত রয়েছে, কেননা একটি কুকুরকে পানি পান করিয়ে যদি ক্ষমা পাওয়া যায় তাহলে মানুষের ক্ষেত্রে সেটা তো নিঃসন্দেহে এক বিশাল সাওয়াবের কাজ হবে। অত্র হাদীস দিয়ে দলীল গ্রহণ করে তিনি আরো বলেন, যখন সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দেয়ার জন্য কোন মুসলিম পাওয়া যাবে না সে মুহূর্তে মুশরিকদেরকেও নফল সদাক্বাহ্ (সাদাকা) প্রদান জায়িয।"

  ঘরে কুকুর রাখা নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ কুকুরের ব্যাপারে ইসলামের কঠোর নির্দেশ কেবল এটাই যে শখ করে ঘরে কুকুর রাখা নিষেধ।

عَن أبي طَلْحَة قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلَا تصاوير

আবূ ত্বলহাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) সে ঘরে প্রবেশ করেন না যাতে কুকুর রয়েছে এবং সে ঘরেও না যাতে আছে (প্রাণীর) ছবি। 19

ব্যাখ্যা:

(لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ) মালাক (ফেরেশতা) প্রবেশ করে না অর্থাৎ রহমাতের মালাক হিফাযাতকারী এবং মৃত্যু মালাক নয়, কেননা তারা সার্বক্ষণিক কাজের জন্য আদিষ্ট এবং তারা সর্বদা দায়িত্ব রত থাকেন।

(بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ) যে বাড়ীতে কুকুর আছে। এখানে বাড়ী বলতে বুঝায়, যে জায়গায় মানুষ বসবাস করে, তা ঘর হোক বা তাঁবু হোক অথবা অন্য কিছু। কুকুর বলতে সব ধরনের কুকুর উদ্দেশ্য। কেননা হাদীসের বর্ণনায় অনির্দিষ্টভাবে কুকুর কথাটি এসেছে, তবে ইমাম খত্ত্বাবী এবং একদল ‘আলিমের মতে উক্ত বিধান হতে ঐ সমস্ত কুকুরকে আলাদা করা হয়েছে যাদের থাকার ব্যাপারে শারী‘আতে অনুমতি আছে। তা হচ্ছে শিকারী কুকুর, পশু চারণ এবং কৃষি খামারে নিয়োজিত কুকুর। কিন্তু ইমাম খত্ত্বাবীর নিকট গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে বাড়ীতে যে কোন ধরনের কুকুর রাখা নিষেধ।

(وَلَا تصاوير) এবং মালাক ঐ গৃহেও প্রবেশ করে না যেখানে ছবি আছে। ছবি বলতে সব ধরনের প্রাণীর ছবি উদ্দেশ্য। ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ যে ছবির কারণে বাড়ীতে মালাক প্রবেশ করে না, তা হলো যা শখের বশত সংরক্ষণ করা হারাম। আর তা হচ্ছে যে সমস্ত প্রাণীর জীবন আ��ে এমন প্রাণীর ছবি যার মাথা কেটে দেয়া হয়নি। অথবা যা অবহেলিত হয়নি বিছানা এবং বালিশের স্বভাবে।

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,"আমার নিকট গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে, যে কোন কুকুর এবং ছবি থাকলেই ঘরে মালাক প্রবেশ করবে না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খাটের নীচে একটি কুকুর ছানা মরে থাকায় জিবরীল (আ.) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘরে প্রবেশ করেনি। অথচ এক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওজর ছিল। তিনি জানতেন না। এতদসত্ত্বেও জিবরীল (আ.) গৃহে প্রবেশ করেননি। কারণ ঘরে কুকুর ছিল। ঘরে মালাক প্রবেশ না করার কারণ হচ্ছে কোন প্রাণীর ছবি থাকা। কেননা ছবির মাধ্যমে আল্লাহ ছাড়া অন্যের ‘ইবাদাত করা হয়। আর কুকুর থাকলে মালাকের ঘরে প্রবেশ না করার কারণ হলো- সে অপবিত্র জিনিস খায়। আবার কোন কোন কুকুরকে শয়তান বলা হয়েছে। যেহেতু মালাক হচ্ছে শয়তানের বিপরীত। তাই যারা কুকুর শখ করে পালন করে তাদের শাস্তি হিসেবে তাদের ঘরে মালাক প্রবেশ করে না এবং তাদের জন্য রহমাতের দু‘আ করে না। "20

আর কুকুরের লালা যেহেতু নাপাক, তাই কোনো পাত্রে কুকুর মুখ দিলে তা তিন বা সাতবার ধৌত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশের পেছনে কয়েকটি যুক্তি আছে— 

প্রথমত, 

কুকুরের মধ্যে শয়তানের কিছু প্রভাব  থাকে  ।

দ্বিতীয়ত,

কুকুর মনিবভক্ত হলেও তার মধ্যে খারাপ স্বভাব বেশি। যেমন—অন্যকে সহ্য না করা, সব সময় খেলাধুলা-দৌড়ের ওপর থাকা, পচা ও নিকৃষ্ট খাবার খাওয়া, যেখানে-সেখানে অশ্লীল কাজে লিপ্ত থাকা, মানুষকে কষ্ট দেওয়া, খাবার দেখলে লালায়িত হওয়া ইত্যাদি। ‘সঙ্গীর প্রভাবে মানুষ প্রভাবান্বিত হয়’—এর আলোকে কুকুরের সঙ্গ থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।

তৃতীয়ত,

কুকুর যাতে মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, এ জন্য কুকুরের সঙ্গ থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। কেননা কুকুরের নখ ও মুখে বিষাক্ত জীবাণু রয়েছে। কুকুরের ওপর আস্থা রাখা যায় না। যেকোনো সময় সে মানুষের ক্ষতি করতে পারে। এতে জলাতঙ্কসহ নানা রোগ হতে পারে।

চতুর্থত,

আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, নিজ ঘরে, বিছানায় কুকুর রাখলে অ্যালার্জি, ভাইরাস সংক্রমণসহ বিভিন্ন বিপত্তি ঘটতে পারে। এ বিষয়ে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. ইউসুফ কারজাভি তাঁর ‘আল-হালালু ওয়াল হারামু ফিল ইসলাম’ নামের বইয়ে কুকুর নিয়ে জার্মান ও লন্ডনের বিভিন্ন গবেষকের গবেষণা উল্লেখ করেছেন।

তাঁরা কুকুরের সঙ্গ মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে অভিমত দিয়েছেন।

তিনি লিখেছেন,

“স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বিচার করলে কুকুর পালা ও তার সঙ্গে হাস্যরসকরণে যে বিপদ মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের ওপর ঘনীভূত হয়ে আসতে পারে, তাকে সামান্য ও নগণ্য মনে করা কিছুতেই উচিত হতে পারে না। অনেক লোক নিজের অজ্ঞতার কারণে ভারি মাসুল দিতে বাধ্য হয়। তার কারণ এই যে কুকুরের দেহে এমন এমন জীবাণু রয়েছে, যা এমন রোগ সৃষ্টি করতে পারে, যা স্থায়ী এবং যা চিকিৎসা করে সারানো যায় না। কত লোক যে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন দিতে বাধ্য হয় তা গুনে শেষ করা যায় না। এসব জীবাণু মানুষের কলিজায় প্রবেশ করে। আর সেখানে নানাভাবে আত্মপ্রকাশ করে। তা অনেক সময় ফুসফুসে, ডিম্ব, তিল্লি, গুর্দা ও মস্তকের ভেতরে প্রবেশ করে। তখন এগুলোর আকৃতি অনেকটা পরিবর্তিত হয়ে যায়। এমন অবস্থা দেখা দেয় যে বিশেষজ্ঞরাও তা ধরতে ও চিনতে অক্ষম হয়ে পড়েন।  যা-ই হোক, এ জীবাণুর দরুন যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, তা দেহের যে অংশেই হোক না কেন, স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর ও মারাত্মক। এসব জীবাণুর কোনো চিকিৎসা আজ পর্যন্ত জানা যায়নি। এ করণে চিকিৎসা-অযোগ্য রোগের মোকাবিলা করার জন্য আমাদের পূর্ণশক্তিতে চেষ্টা করতে হবে। এ বিপদ থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে।  জার্মান চিকিৎসাবিদ নুললর বলেছেন, কুকুরের জীবাণুর দরুন মানবদেহে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, তার সংখ্যা শতকরা ১-এর কম নয় কিছুতেই। আর কোনো কোনো দেশে শতকরা ১২ পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ রোগ প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে, এর জীবাণুগুলোকে কুকুরের দেহ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ করে রাখা, তাকে ছড়িয়ে পড়তে না দেওয়া। ”

আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হল, কুকুরের সাথে রয়েছে পৌত্তলিক কুসংস্কারের গভীর সম্পর্ক ( এ বিষয়ে জানতে এখানে দেখুন: ইসলামের কাছে পৌত্তলিকতার পরাজয় পর্ব ৪ - কালো কুকুর ।)

রাসুল(ﷺ) কখনোই সকল কুকুরকে হত্যার নির্দেশ দেননি। তিনি শুধু মাত্র হিংস্র পাগলা কুকুর হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন যা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানও সমর্থন করে। অথচ শয়তানের অনুসারীরা হাদিসের অপব্যাখ্যা করে এনিয়ে চালায় মিথ্যাচার। 

আশ্চর্য হলেও সত্য যে বিভিন্ন দেশে কুকুরের প্রতি ধনীরা যে উদারতা দেখায়, গরিব মানুষের প্রতিও তেমন উদারতা দেখানো হয় না। কুকুর লালন-পালনের জন্য যে মানুষকে কর্মচারী হিসেবে রাখা হয়, তার জন্যও এত টাকা খরচ করা হয় না, কুকুরের জন্য যা খরচ করা হয়। প্রশ্ন জাগে, নতুন সভ্যতা কি তাহলে মানুষকে মূল্যহীন করে তুলছে?

 


  1. ⇧ আল কুরআন সূরাহ্ আল আন্‘আম ৬ : ৩৮। 
  2. ⇧ https://coloradoinjurylaw.com/blog/dog-bite-statistics/
  3. ⇧ সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫৪৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৮০। 
  4. ⇧  সহীহ : বুখারী ১৮২৮, মুসলিম ১১৯৯, নাসায়ী ২৮৩৩, আবূ দাঊদ ১৮৪৬, ইবনু মাজাহ ৩০৮৮, মুয়াত্ত্বা মালিক ১৩০২, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১৪৮২১, আহমাদ ৫১০৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৩৬২।
  5. ⇧ সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫ : ২ ।
  6. ⇧ সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫ : ৯৬ ।
  7. ⇧ সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫ : ৪ । 
  8. ⇧ সহীহ : সহীহুল বুখারী ৩৩২৩, মুসলিম (১৫৭০)-৪৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৬৪৮, নাসায়ী ৪২৭৯, আবূ দাঊদ ৭৪, তিরমিযী ১৪৮৮, ইরওয়া ২৫৪৯, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ১৯৯২১, ইবনু মাজাহ ৩২০০, দারাকুত্বনী ১১, দারিমী ২০০৬।
  9. ⇧ শারহুন নাবাবী ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫৭১/৪৬
  10. ⇧ সহীহ :  আবূ দাঊদ ২৫৩৫, তিরমিযী ১৪৮৬, ১৪৯০, ইবনু মাজাহ ৩২০৫, দারিমী ২০০৮, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১১৩৫৬, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৬৬১, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ২৪৪২, মুসনাদে আহমাদ ইবনু হাম্বাল ২০৫৬৬, নাসায়ী ৪২৮০।
  11. ⇧ সূরাহ্ আল আন্‘আম ৬ : ৩৮ ।
  12. ⇧ ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৮৪২ ।
  13. ⇧  সহীহ : বুখারী ৩৩১৪, মুসলিম ১১৯৮, নাসায়ী ২৮৮২, ইবনু মাজাহ ৩০৮৭, আহমাদ ২৪৬৬১, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৬৬৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৩৬৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৬৩৩, ইরওয়া ১০৩৬।
  14. ⇧ সহীহ : সহীহ মুসলিম ১৯২৯/৬, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৩৯০, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৩৬২০, সহীহুল জামি‘ ৩১৬, নাসায়ী ৪২৬৩, বুখারী ৫৪৮৩।
  15. ⇧ ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৪৮৪; শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ [১৯২৯]-২ ।
  16. ⇧ আল-বাহরুর রায়েক : ১/১০১; ফতোয়াতে হিন্দিয়া : ১/৪৮; আদ্দুররুল মুখতার : ১/২০৮
  17. ⇧ সূত্র : কুয়েতভিত্তিক ইসলামী বিশ্বকোষ ‘আল-মওসুআতুল ফিকহিয়্যা আল-কুয়েতিয়্যা : খ. ৩৫, পৃ. ১৩২-১৩৩
  18. ⇧ সহীহ : বুখারী ৩৩২১, মুসলিম ২২৪৫, আহমাদ ১০৬২১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৬৬৬, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪১৬৩
  19. ⇧ সহীহ : বুখারী ৫৯৪৯, মুসলিম (৫৬৩৬)-২৬, আবূ দাঊদ ৪১৫৩, তিরমিযী ২৮৪, নাসায়ী ৪২৮২, ইবনু মাজাহ ৩৬৪৯, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ৩০৫৮, মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার ৩৬১৮, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ১৯৪৮৩, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ১৯৯৫২ ।
  20. ⇧ ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৯৪৯; মিরক্বাতুল মাফাতীহ