Are you sure?

বিবিধ »  বিবিধ

যিহুদা নাকি প্রিয় শিষ্য সারজাস অথবা যিশু কি প্রকৃত ক্রুশবিদ্ধ?

যিহুদা নাকি প্রিয় শিষ্য সারজাস অথবা যিশু কি প্রকৃত ক্রুশবিদ্ধ?

জবাব: এই প্রশ্নের জবাব তিন জায়গা থেকে নেয়া হবে তা হলো:

i) তাফসির।

ii) বার্নাবাস বাইবেল।

iii) চার্চ প্রদত্ত বাইবেল।

এবার আলোচনা-

তাফসির

আল্লাহ বলেন: ইহুদিরা বলে "নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর রসুল মরিয়মের পুত্র ঈসাকে হত্যা করেছি" তাদের এই উক্তি কেবল তাদের জন্য। তবে তারা তাকে হত্যা করেনি, ক্রুশবিদ্ধও করেনি, কেবল তাদের জন্য সদৃশ করা হয়েছিলো আর যারা এই বিষয়ে মতভেদ করেছিল তারা সন্দেহে পড়েছিল। শুধু অনুমান ব্যতীত কোন জ্ঞানই ছিল না। এটা নিশ্চিত যে তারা তাকে হত্যা করেনি। (সূরা নিসা ৪:১৫৭)

উক্ত আয়াতে-তাফসীর ফাতহুল মাজীদ:

ঈসার এর মত আকৃতবিশিষ্ট লোকটিকে হত্যা করার পর ইহুদিদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। তাদের একদল বলল তারা ঈসাকে হত্যা করেছে । অন্যদল বলল ক্রূশবিদ্ধ লোকটি ঈসা নয়। অন্যদল বলল তারা ঈসাকে আসমানে উর্ধধগমনে দেখেছে। এজন আল্লাহ বলেন: তারা সংশয়যুক্ত অনুমান ব্যতীত কোন জ্ঞানই ছিলোনা। এটা নিশ্চিত তারা তাকে হত্যা করেনি।

তাফসীর ইবনে কাসির:

(৪:১৫৫-১৫৯ নং আয়াত বিশ্লেষন) ইহুদি অত্যাচার-অপবাদেঈসা (যিশু)জীবন দুর্বিষহ। তারা তাকে হত্যা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠল। হত্যার উদ্দেশ্যে জনগনের কানভারি করতে লাগল।ফলে প্রত্যহ হট্টোগোল ও অশান্তি বিরাজ করছিল।বাদশাহ বায়তুল মুকাদ্দাসে অবস্থানরত স্বীয় শাসনকর্তা নিকট নিদের্শনামা প্রেরন করে যে যেন ঈসাকে গ্রেফতার আর তাকে শুলে চড়িয়ে দেয় এবং মস্তকোপারি কাটার মুকুট পরিয়ে দেয় এবং এভাবে যেন জনগনকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করে। বাদশাহ এ নির্দেশনামা পাঠ করে ঐ শাসনকর্তা ইহুদিদের একটি দলকে সংগে নিয়ে ঐ ঘরটিতে অবরোধ করে সেখানে ঈসা অবস্থানরত ছিলেন। সেখানে তার সংগে বারো জন বা তেরো জন অথবা খুব বেশি হলে সতেরো জন শিস্য ছিল।শুক্রবার আসরে পর পর ইহূদিরা ঐ ঘরটি অবরোধ করে এবং শনিবার পর্যন্ত অবরোধ স্থায়ী হয়।যখন ঈসা অনুভব করে এরাই তারা যারা জোর করে ঘরে প্রবেশ করবে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে,না হয় তাকে বাইরে যেতে হবে। এ সময় শিষ্যদের বলেন: তোমাদের মধ্যে কে এটা পছন্দ করবে যে তার উপর আমার চেহারা অনুরুপ হয়ে যাবে,এতে আল্লাহ আমাকে মুক্তি দিবেন?আমি তার জন্য জন্য জান্নাতে জামিন হচ্ছি। এককথা শোনামাত্রই এক নব্য যুবক (সারজাস) বলেউঠল-আমি এতে রাজি আছি।আবারো সহচরদের বলেন:

তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছে যারা আমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে কিন্তু বারো বার কুফরি করবে।পুনরায় বলেনঃ তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে যে পছন্দ করে আমার মত আকঅর করে দেয়া হবে এবং জান্নাতে আমার বন্ধু হবে। ঈসার ভবিষৎবাণী হিসেবে শিস্যরা কেউ কেউ বারো বার কুফরি করে এমনকি তিনটি দলে ভাগ হয়ে যায়।যথা:

1) ইয়াকুবিয়্যাহ 2) নাসতুরিয়াহ। 

3) মুসলমান।ইয়াকুবিয়্যাহ বলে-স্বয়ং আল্লাহ আমাদের মাঝে অবস্থান করেছিলেন,তার ততদিন ইচ্ছা আমাদের সাথে ছিলেন। নাসতুরিয়াহ বলে-আল্লাহর পুত্র আমাদের মাঝে ছিলেন,তার ততদিন ইচ্ছা আমাদের সাথে ছিলেন। মুসলমানরা বলে-ঈসা আল্লাহর বান্দা,তার ততদিন ইচ্ছা আমাদের সাথে ছিলেন। ইয়াকুবিয়্যাহ এবং নাসতুরিয়াহ প্রভাবশালী হওয়ায় মুসলমান দলটি প্রতি অত্যাচার ও দলিত করে ফলে তারা দুর্বল হয়।অবশেষে আল্লাহ তার শেষ নবি (স.)। প্রেরন করে ঐ মুসলমানদের প্রকৃতধর্ম ইসলামকে জয়যুক্ত করলেন। ঈসা মৃত্যুর ভয়ে এতটাই বেদনাগ্রস্ত তিনি বলেন: হে আল্লাহ! কারো মাধ্যমে যদি আমার মৃত্যুকে সরিয়ে দেন খুব ভাল হয়। ভয়ের কারনে তার শরীরে রক্ত ফুটে বের হয়। তার বারো জন শিষ্য বা সাহাবিগনের তালিকা:

  • ১)  ফারতুস(পিতর)।
  • ২) ইয়াকুবাস(যাকোব)।
  • ৩) অয়লা ওয়ানাস(বার্নাবাস)।
  • ৪) আনদ্রা ইয়ায়(এনড্রুয়)।
  • ৫) ফাইনাসা ইবনে ইয়ালামা (ফিলিপ)।
  • ৬) মুনতা (শিমোন)।
  • ৭) মাস (থোমাস)।
  • ৮) ইয়াকুব ইবনে হালকা। (আলফেয়ের পুত্র যাকোব)।
  • ৯) নাদ (বার্থলময়)।
  • ১০) আসীস(জেমস)।
  • ১১)কাতাবিয়া (যোহন/ইয়াহিয়া)।
  • ১২) নাইউদাসরাক রিয়াইঊতা। (ইস্করীয় পুত্র যিহুদা/জুডাস)

[বিদ্রঃতালিকা আংশিক মিল পাবেন চার্চপ্রদত্ত বাইবেল প্রেরিত ১:১৩]। আর কেউ কেউ বলেন যে তেরোজন আর একজন নাম হলো সারজাস।যিনি হযরত ঈসার এর শুভ সংবাদ পরিপ্রেক্ষিত তার স্থলে শুলবিদ্ধ হতে সম্মত হয়েছিলেন।যখন ঈসাকে আকাশে জীবিত তুলে নেয়া এবং অবশিষ্ট ইহুদিদের হাতে বন্দি হন তখন তাদের গননায় একজন কম দেখা যায়। তখন তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ঐ দলটি যখন ঈসা ও শিষ্যদের আক্রমন চালায় ও তাদের গ্রেফতার করার ইচ্ছা করে তখন তারা ঈসাকে চিনতে পারেনি।সে সময় লাইঊদাসরাক রিয়াইউতা ইহুদি গুরুদের কাছে ত্রিশটি রৌপ্যমুদ্রা গ্রহন করে আর তাদেরকে বলেছিল-আমি যাচ্ছি সর্বপ্রথম।গিয়ে যে লোকটিকে আমি চুম্বন দিব।তোমরা বুঝে নিবে উনি ঈসা।অতঃপর যখন এ লোকটি ভেতরে প্রবেশ করে তখন আল্লাহ ঈসাকে উঠিয়ে নিয়ে ঈসা অনুরুপ চেহারা সারজাসকে করে দিলেন। এহেন পাপকার্যে লজ্জিত হয়ে লাইউদাসরাক রিয়াইউতা ফাসিতে আত্নহত্যা করে।এভাবে খৃস্টানদের মাঝে সে অভিশপ্ত।আবার কেউ কেউ বলেনঃ ক্রুশবিদ্ধের প্রকৃত লোকটির নাম লাইঊদাসলাক রিয়াইউতা।ঐ ঘরে প্রবেশ করে ঈসাকে আকাশে তুলে নেয়া হলে সেই ঘাতক লাইউদাসলাক রিয়াইউতার চেহারা ঈসার অনুরুপ হয়। কাজেই লোকেরা ধরে নেয়। সে বহুবার চিৎকার করে বলে-আরে আমি ঈসা নই। আমি তোমাদের লোক।আমিই তো ঈসাকে চিনিয়েছিলাম।কিন্ত কে শুনবে।অবশেষে তারা তাকে ক্রুশবিদ্ধ করালো।এখন প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই ভাল জানেন ঈসার সাদৃশ্যযুক্ত লোকটি মুমিন সারজাস নাকি মোনাফেক শিষ্য লাইউদাসরাক রিয়াইউতা।

হযরত মুজাহিদ (র:) বলেন: ঈসার এর চেহারা সাদৃশ্য যার উপর আনা হয়েছিল কেবল তাকে ইহূদিরা শুলবিদ্ধ করেছিল। ঈসাকে আল্লাহ জীবিত অবস্থায় আকাশে তুলে নেন।

[বিদ্র: ক্রুশবিদ্ধের সময় শিষ্যদের পালিয়ে যাওয়া এবং অন্যান্য অংশ চার্চপ্রদত্ত বাইবেলে মিল রেখে প্রকৃত ব্যাখ্যা এই তাফসিরে পাবেন কে ক্রূশবিদ্ধ।তাফসীর ইবনে কাসিরে ঈসা উর্ধধগমনে ঘটনা বড় হওয়ায় সংক্ষিপ্ত আকারে সাজিয়ে পোষ্টে মুলবক্তব্য উস্থাপন করেছি]

আল্লাহ বলেন, হে মরিয়মের পুত্র ঈসা! আমি তোমাকে গ্রহন করব ও আমার নিকট ঊত্তোলন করব। আর সেই সাথে অবিশ্বাসীদের হতে তোমাকে পবিত্র করব।(৩:৫৫)

পরন্ত আল্লাহ তাকে নিজের দিকে তুলেন (জীবিত অবস্থায়) এবং আল্লাহ পরাক্রান্ত মহাজ্ঞানী (৪:১৫৮) (৪:১৫৮) এজন্য নবি (স.) বলেন: যার হাতে আমার প্রান!সেই সত্তার শপথ।অবশ্যই মরিয়মের পুত্র ঈসা।তোমাদের মাঝে ন্যায়পরায়ন শাসক হিসেবে অবতরন করবেন। ক্রুশ ভেংগে ফেলবেন, শুকর নিধন করবেন, জিযিরা কর বাতিল করবেন, ধন-সম্পদের পরিমান এত বেশি হবে যে নেয়ার মত কেউ থাকবেনা। সেই একটি সেজদা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার চাইতেও উত্তম হবে। এই হাদিস বর্ননায় সাহাবি আবু হুরাইরাহ (রা:)বলেন: তোমরা ইচ্ছা করলে কোরানের এ আয়াত তেলাওয়াত করতে পারো- আহলে কিতাবীদের মধ্যে প্রত্যেকে নিজের মৃত্যুর আগে ঈসাকে বিশ্বাস করবেই এবং কিয়ামতের দিন ঈসা তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে।(৪:১৫৯) [সহিহ বুখারী হাঃ ৩৪৪৮]। ঈসা নিজেকে বাচানো জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন।আল্লাহ তাকে বাচাবেন এবং তার ঘাতকশিষ্য যিহুদা শত্রুকে শাস্তি দিবেন এই ব্যাপারে পুরাতন বিধানে ভবিষতবানী বলা আছে। সামসংগীত অধ্যায় ৯১:

১) গুপ্ত আশ্রয় লাভের জন্য পরাতপরের কাছে যেতে পারো।সুরক্ষার জন্য তুমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে যেতে পারো (প্রার্থনায় যামও)।

২) আমি প্রভুকে বলেছি: আপনি আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল,আপনি আমার দুর্গ।হে আমার ঈশ্বর আমি আপনাকে বিশ্বাস করি।

৩) ভয়ংকর ব্যধি (কুষ্ঠ,শ্বেত প্রভৃতি) ও গুপ্ত বিপদ(ক্রুশ) থেকে ঈশ্বর তোমাকে রক্ষা করবেন।

৪) নিরাপত্তার জন্য তুমি ঈশ্বরে কাছে যাও।যেমন পাখি তার নিজের ডানা মিলে শাবকদের রক্ষা করে।তেমনিভাবে ঈশ্বর রক্ষা করবেন।তোমাকে রক্ষা করার জন্য ঈশ্বর হবেন ঢাল ও প্রাচীরের মত।

৫) রাতে তোমার ভয়ের কিছু থাকবেনা।দিনে বেলাতে শত্রুর ভয় পাবেনা।

৬) নিশাকালে যে অসূখ আসবে তাকে ভয় পাবেনা কিংবা দিনে ভয়ংকর অসুস্থতা আসলে তাকেও ভয় পাবেনা।

৭) তুমি ১০০০ শত্রুকে পরাজিত করবে।তোমার ডানহাত শত্রুদের সৈন্য (রোমান সৈন্য)পরাজিত করবে।শত্রুরা তোমাকে স্পর্শ করতে পারবেনা।

৮) লক্ষ্য করে দেখবে যে ঐ দুষ্ট লোকদের শাস্তি দিয়েছি। [যিহুদা ও ঘাতকদের]

৯) কিন্ত কেন?কারন তুমি ঈশ্বরের প্রতি আস্থা রাখো।

কেননা পরাত তুমি আমাকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল রুপে গ্রহন করেছো।

১০) তোমার কোন অমংগল হবেনা।তোমার গৃহে ব্যধি থাকবেনা।

১১) ঈশ্বর তার দুতদের আজ্ঞা দিবেন এবং তুমি যেখানেই যাবে তারা তোমাকে রক্ষা করবেন।

১২) তোমার পা যাতে পাথরে হোচট না খায় সেই জন্য ওদের হাত তোমাকে ধরবে।

১৩) বিষধর সাপ এমনকি সিংহের ওপর তুমি হেটে যেতে পারবে।

১৪) প্রভু বলেনঃ যদি কোন ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে এবং আমাকে বিশ্বাস করে আমি তাকে রক্ষা করব।আর আমার অনুগামিদের যারা আমার উপসনা করে আমি তাদের রক্ষা করব।

১৫) আমার অনুগামীরা সাহায্যের জন্য আমাকে ডাকবে আমি তাদের ডাকে সাড়া দিব।যখন তারা সমস্যায় পড়বে তখন আমি ওদের সংগে থাকব,আমি ওদের রক্ষা করব এবং সম্মান দিব।

১৬) আমি আমার অনুগামিদের দীর্ঘজীবন(স্বর্গ)দিব।আমিই ওদের রক্ষা করব। [বিদ্র: পূরাতন নিয়মের এই ভবিষতবানী বার্নাবাসে বাইবেলে প্রকাশিত এবং চার্চপ্রদত্ত বাইবেলে আলোকে ঈশ্বর মিথ্যাবাদি বলে

প্রমানিত] স্যার আফজাল চৌধুরী অনুদিত বার্নাবাস বাইবেলে-পৃ: ২৪০এর অনুচ্ছেদ ২১৫ বলা: জুডাস (যিহূদা) সেনাদের সহ যখন ঈসার কাছে আসছিল। বহু জনগনের ধধনি শুনে আতংকিত হয়ে ঘরে যান। তিনি ঘরে এসে দেখেন ১১জন শিস্য ঘূমে। আল্লাহ তার বান্দার বিপদ দেখে তখন তার দূতবৃন্দ জিব্রায়েল, মিকাইয়েল, আজরাইল ও ইস্রাফিলকে আদেশ দিলেন ঈসাকে দুনিয়ার মধ্য থেকে তুলে নিয়ে আসার জন্য। পবিত্র দুতগন আবিভুত হয়ে ঘরে দক্ষিনমুখি জানালা দিয়ে ঈসাকে বের করে নিয়ে চলে গেলেন।তারা তাকে তৃতীয় আসমানে ফেরেশতাদের (দুতদের)সাথে রাখলেন।যারা সারাক্ষন আল্লাহর প্রশংষায় মগ্ন।

২১৬নংঅনুচ্ছেদে: জুডাস মহাবেগে সেই কামরায় গিয়ে প্রবেশ করে সেখান থেকে ঈসাকে ঊত্তোলন করা হয়ে গেছে। শিষ্যরা তখনও নিদ্রিত।আর তখনই আল্লাহর কুদরতে কাজটি সম্পন্ন হলো। এমনভাবে জূডাস রুপান্তরিত হলো যে কন্ঠ ও চেহারা সে মিলে গেল অবিকল ঈসার আর তা নিখুত আমরা তাকে ঈসা বলে বিশ্বাস করলাম। আর সে নিদ্রা থেকে জাগ্রত করে বলে-ওস্তাদ!কই? এতে আমরা অবাক হয়ে বললাম-হুজুর!আপনি ত আমাদের ওস্তাদ।তবে আপনি কি আমাদের ভুলে গেছেন? সে হেসে বলল-কি আহম্মক তোমরা!আমি যে জুডাস ইষ্কারিও তা চিনতে পারছোনা?আর যখন একথা বলতে ছিল সৈন্যরা কামরায় প্রবেশ করলো,জুডাসকে কাঠে হাত বাধালো কারন সে তখন ঈসার প্রতিরুপ। আমরা জুডাসে কথা শুনতে শুনতে সৈন্যদের ভীড় জমে গেলে আমরা যেভাবে পারি তখন পালিয়ে গেলাম।তারা তাকে ক্রুশবিদ্ধ করালো।

'চার্চ প্রদত্ত বাইবেল:

প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা যিশুকে হত্যা ষড়যন্ত্রের উপায় খুজতে লাগল।কারন তারা লোকদের ভয় করত।(লুক22:2) এই সময় যিহুদা যে ছিল যিশুর ১২জন শিষ্যের মধ্যে একজন,যাকে "যিহুদা ঈস্করিয়োতীয়"বলাহত। যিহুদার মনে ভেতর শয়তান ঢুকলো। (লুক22:3) যিহুদা কেমন করে যিশুকে ধরিয়ে দিবে সে বিষয় পরামর্শ করতে প্রধান যাজকদের মন্দিরে রক্ষীদের পদস্থ কর্মচারীদের কাছে গেলো। (লূক22:4)

যিহুদা যাজকদের বলল:

যিশুকে ধরিয়ে দিলে আমাকে কি দিবেন? (মথি 26:14-15) এতে যাজকরা যিহুদা কথা শোনে খুব খূশি হলো তাকে ৩০টি রৌপ্য মুদ্রা দিতে রাজি হলো(মথি 26:15-16,লুক22:5-6) যিহুদা রাজি হয় যখন ভীড় থাকবেনা সে সময় ধরিয়ে দেবার সুযোগ খুজতে লাগল(লুক 22:5-6, মথি 26:15-16)। 

নিস্তার পর্বে ভোজন:

যিশুঃ আমি সত্যি তোমাদের বলছি,তোমাদের একজন আমাকে শত্রূদের হাতে ধরিয়ে দিবে।আর এখন আমার সাথে আহার করছে। (মার্ক 14:18, যোহন13:21) (লুক 22:21-22)। শিষ্যরা দুঃখেসহিত বলল: গুরু সে কে?(মার্ক14:19,লুক 22:23,যোহন 13:25) যিশু তখন বলল, সে এই ১২জনের মধ্যে ১জন। (মার্ক14:20) যে আমার সাথে পাত্রে হাত ডূবাবে সে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিবে। (মথি26:23) যিশু পাত্রে হাত ডুবিয়ে শিমোন ঈস্করিয়তির পুত্র যিহুদাকে দিলেন।(যোহন13:26) রুটির টূকরা নেবার পরে শয়তান যিহুদা ভেতর ঢুকলো।যিহূদা পাত্রে হাত ডূবাল। যিশু বলেন: যা করবে জলদি (যোহন13:27) [note:যিশু ক্রূশে নিজের আত্নত্যাগে খুশি নন। নিচে তার প্রমান] যিশু বলল, শাস্ত্রে যেভাবে লেখা আছে মানবপুত্র সেভাবে যেতে হবে। আফসোস! ঘৃনিতসেই যে তাকে শত্রুদের হাতে তূলে দিবে।সেই লোকের জন্ম না হওয়া পক্ষে ভাল ছিল। (মার্ক14:21, মথি 26:24) যে যিশুকে শত্রূর হাতে তূলে দিবে সে যিহুদা বলল: গুরু!সে নিশ্চয় আমি? যিশু: তুমি ঠিক বলছো। (মথি26:25) যিশু রূটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে টূকরো টুকরো করে শিষ্যদের বলেন: এই নাও,আমার দেহ খাও। (মার্ক 14:22, মথি26:26, লূক22:19)। পিতর:"গুরূ!আপনার সাথে যদি মরতে ও জেলে যেতে হয় তবুও যাব,অস্বীকার করব না।"বাকি সবাই একই শপথ করল। (মার্ক14:31,

মথি 26:35)। তখন গেতিশমানী নামে এক জায়গায় শিষ্যদের ইংগিত করে: যিশু যতক্ষন আমি প্রার্থনা করি ততক্ষন তোমরা এখানে জেগে থাকো (মার্ক 14:32, মথি26:36)। পরে তিনি পিতার ও যোহন সাথে নিয়ে গেলে সেসময় ব্যথায় মন ভেংগে গেল (মার্ক 14:33 মথি 26:37) এদের দিকে ইংগিত করে-যিশু: আমার প্রাণ মৃত্যু ঊদ্বগে আচ্ছন্ন। তোমরা এখানে জেগে থাকো (মার্ক14:34, মথি 26:38)। এরপর যিশু কিছূদূর যাবার পর ঊপুড় প্রার্থনা করেন। আর তিনি বললেন-হে পিতা! যদি সম্ভব হয়,এই দূঃসময়ে এই পাত্র দুরে সরে যাক (মার্ক 14:35-36 মথি 26:39)। কেননা আমার রক্তের দ্বারা নতুন ব্যবস্থা আসবে তার চিহ্ন এই পাত্র। (লূক 22:20 মার্ক 14:24) যিশু পুনরায় বলেনঃ হে পিতা!তোমার পক্ষে সম্ভব,এই পাত্র দূরে সরে দাও অর্থাৎ আমাকে এসব থেকে বাচাও। আমি যা চাই তা নয়।আমার নয় বরং তোমার ইচ্ছা পূরন হোক (মার্ক 14:36, মথি26:39) যিশু বলেন: তোমরা এখনো ঘূমাচ্ছো, বিশ্রাম নিচ্ছো?যথেস্ট হয়েছে।দেখ মানবপূত্রকে পাপিদের হাতে তূলে দেয়া হবে (মার্ক14:41,মথি26:44-45) তিনি আরো বলেন: উঠো। চলো যাই। ঐ দেখ আমার সাথে যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সে আসছে।

(মার্ক 14:42 মথি 26:46)। যিশু কথা চলাকালীন তখন সেই বিশ্বাসঘাতক যিহুদা এলো যে ১২বারো জন শিষ্য মধ্যে একজন।তার সাথে অনেক সৈন্য তালোয়ার লাঠি নিয়ে আসলো যাদেরকে প্রধান যাজক ও ইহুদি নেতাদের পাঠিয়েছে। (মার্ক14:43, মথি 26:47) যিহুদা সংকেত দিয়ে বলেঃ আমি যাকে চুমু দিব তোমরা তাকে ধরবে আর পাহারা দিয়ে নিয়ে যাবে।(মার্ক14:44 মথি26:49) সে উপস্থিত হয়ে যিশুর কাছে গিয়ে "গুরু"বলে তাকে চুমু দিল। (মার্ক14:45 মথি26:49) তখন ঐ সৈন্যরা যিশুকে গ্রেফতার করল (মার্ক14:46) তখন যিশুর শিষ্যরা যিশুকে ফেলে পালিয়ে গেল

(মার্ক14:50)'। যিহুদা যাজকের কাছে দাবি করে যিশু নিরপরাধ। (মথি27:4) পরে যিহুদা ফাসিতে আত্নহত্যা করে। (মথি27:5) যিশু পিলাতের কাছে দাবি করে যে যিশুকে ধরিয়ে দিয়েছে সে (যিহুদা) বড় পাপে পাপি। (যোহন19:11) পিলাত জনগনে রায়ে বারাব্বাকে ছেড়ে দিয়ে চাবুক মেরে যিশুকে ক্রুশে দিলেন। (মথি27:26) ক্রুশে যিশু বলেন: হে প্রভু হে প্রভু!কেন আমাকে পরিত্যাগ করলে? (মথি ২৭:৪৬,মার্ক ১৩:৩৪) পরে সৈন্যদের একজন তার পাজরে বর্শা দিয়ে খোচা দিল এতে রক্ত ও পানি (ঘাম) বের হলো। (যোহন ১৯:৩৪) দেখূন যিশু মহান ঈশ্বর কাছে প্রার্থনায় ক্রুশের পাত্র দুরে সরার আহবান করে নিজেকে বাচাতে চেয়েছেন অথচ ঈশ্বর তাকে ক্রুশে রক্ষা না করে পরিত্যাগ করেছেন যিশুকে। ঈশ্বর বলেন: যদি কোন ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে এবং আমাকে বিশ্বাস করে আমি তাকে রক্ষা করব আর আমার অনুগামিদের যারা আমার উপসনা করে আমি তাদের রক্ষা করব।(সামসংগীত ৯১:১৪) অথচ বাস্তবে যিশুর বেলায় খাটেনি, ঈশ্বর যিশুকে না বাচিয়ে বরং পরিত্যাগ করেছে ক্রুশের ঘটনায় যিশুর মুখে প্রমান। এতে মহান ঈশ্বর মিথ্যাবাদি বলে গন্য হয়! যিশু মালি বেশে মরিয়মকে বলেন: হে নারী কাদছো কেন? কাকে খুজছো? (যোহন 20:15)মরিয়ম বলল-আমার ওস্তাদকে। (যোহন 20:16)। যখন মরিয়ম যিশুকে চিনতে পেলো স্পর্শ করতে চাইলে-যিশু বলেন: আমাকে ধরবেনা।কারন এখনো পিতার কাছে যাইনি।তুমি বরং আমার ভাইদের কাছে গিয়ে বলো যিনি আমার পিতা, তোমাদেরও পিতা,আমার প্রভু,তোমাদেরও প্রভু আমি এখন তার কাছে যাচ্ছি (ঊধ্ধগমন) (যোহন ২০:১৭) তখন মরিয়ম শিষ্যদের সুসংবাদ দিলেন যিশু বেচে আছেন আর যিশু তাকে এসব বলেছেন। (যোহন ২০:১৮) এরপর যিশু গালিলে যান শিষ্যদের সাথে দেখা করতে-শিষ্যদের বলেনঃ তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। (লুক 24:36) শিষ্যরা অশুভ আত্না ভেবে ভয় পেলো। (লুক 24:37) যিশু বলেনঃতোমরা কেন অস্থির হচ্ছো?আর কেন তোমাদের সন্দেহ জাগছে? (লুক 24:39)আমার হাত ও পা দেখো।দেখ ছুয়ে এটা আমি,আত্নার হাড়মাংস থাকেনা অথচ আমার আছে। (লুক 24:39) এই কথা বলে যিশু নিজের হাত পা দেখালেন(লুক 24:40)কিন্ত তারা এতটাই অবাক ও আনন্দিত বিশ্বাস করতে পারছিল না। যিশু তাদের বলেনঃ তোমাদের কাছে কি কোন খাবার আছে? (লুক 24:41) তারা তাকে একটু ভাজা ও মধু দিলেন। (লুক24:42) তিনি তাদের সামনে খেলেন  (লুক24:43)' পাপ বহনেপলের পুনরুদ্ধিত সূত্র: যে দেহ মাটিতে কবর দেয়া সেটা জৈবিক দেহ,যেটি পুনরুদ্ধিত সেটি আত্নিক দেহ( আত্না)[১ম কারিন্থীয় 15:44] আত্নার কোন হাড়মাংস থাকেনা[লুক 24:39]

পুনরুদ্ধিত সূত্র যাচাইকরণ

  • 1) যিশু ক্রুশে আহত এজন্য ব্যথা পাবার আশংকায় মরিয়মকে বললেন-আমাকে ধরবেনা,আমি আমার পিতার কাছে যাইনি অর্থাৎ মারা যাইনি(যোহন 20:17)
  • 2) যিশু পা ভাংগা হয়নি। (যোহন19:33) একজনমৃতের কাছে হাতপায়ের মুল্য নেই। ঘটনায় ক্রুশে আহত হয়ে যিশু বেহুশ অবস্থায় জীবিত। সৈন্যরা তাকে মৃত মনে করলো।তাই পা ভাংগেনি।
  • 3) শিষ্যরা ভয় পেল যিশু মারা গেছে আর যাকে দেখছে সে যেন অশুভ আত্না। (লুক24:36)

যিশু ক্রুশে আহত হয়েও জীবিত সেটা প্রমান দেখাতে তিনি নিজের হাতপা দেখালেন(লুক24:39-40)তাদের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে যিশু তাদের সামনে ভাজা মাছ ও মধু খেলেন। (লুক24:42-43)। অতএব পুনরুদ্ধিত সুত্রের আলোকে দেখা গেলো যিশুর দেহ আত্নিক দেহ নয়,অবশ্যই রক্তমাংসে জীবিত।সুতরাং যিশু পুনরুদ্ধিত হননি। ধর্মবাচাতে পল বলেনঃ যদি বিশ্বাস না করো যিশু তোমাদের পাপের বোঝা নিয়ে মারা যায়নি বা পুনরদ্ধিত হননি তাহলে তোমাদের বিশ্বাসও মুল্যহীন,তোমাদের ধর্মপ্রচারও মুল্যহীন(১ম কারিন্থীয় ১৫:১৪) অর্থাৎ পুনরুদ্ধিত না হলে ক্রুশফিকশনের মুল্য নেই। ফলে খৃস্টানধর্ম বলে কিছু থাকবেনা,বাইবেলের দাম এক পয়সাও হবেনা।কেবল যা থাকবে বিধিনিষেধমাত্র। অতএব যিশু পুনরুদ্ধিত হয়নি,খৃস্টানধর্ম অবাস্তব।

চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত:

উপরে তাফসীর,বার্নাবাস বাইবেল থেকে জানতে পারি ঈসা কুশবিদ্ধ হয়নি,মারাও যায়নি। অপরদিকে চার্চ প্রদত্ত বাইবেল থেকে জানতে পারি ঈসা (যিশু) ক্রুশেআহত তবে মারা যায়নি।