Are you sure?

তুলনামূলক ধর্মতত্ব »  বিবিধ

আর্য সমাজদের বেদের অনুবাদে জালিয়াতি

সনাতন ধর্ম পৃথিবীর প্রাচীন ধর্মগুলোর একটি। এই ধর্মের সবথেকে প্রাচীন ও প্রধান ধর্মগ্রন্থ  হলো বেদ। বেদ ৪টি।

১.ঋগবেদ

২.যজুর্বেদ

৩.সামবেদ 

৪.অথর্ববেদ

এখন এগুলো মূলত সংস্কৃত ভাষা থেকে অনুবাদ করা হয়ে থাকে। তো আজ পর্যন্ত প্রচুর সনাতন পণ্ডিতরা  বিভিন্ন ভাষায় এই বেদগুলোর অনুবাদ করেছেন। 

কিন্তু গত কিছুবছর ধরে একটা কথা মহামারীর আকার ধারণ করেছে যে বর্তমানে থাকা বেদের প্রায় সব অনুবাদ নাকি বিকৃত অনুবাদ। আর এজন্যই নাকি বেদে বৈজ্ঞানিক ভুল, বৈপরীত্য, গরুর মাংস খাওয়ার বিধান, অমানবিকতা ইত্যাদি  এসব পাওয়া যাচ্ছিলো। মূলত এই কথাটা রটিয়ে বেড়াচ্ছে আর্য সমাজের লোকেরা।

তো কারা এই ভুল অনুবাদ করেছে। তার জবাবে তারা বলছে বাংলা অনুবাদে (রমেশচন্দ্র দত্ত, মহিধর, ড. অলোক কুমার সেন,শ্রীযুক্ত দূর্গাদাস লাহিড়ী, রাম গোবিন্দ ত্রিবেদী)  ইংরেজী অনুবাদে ( T.H Griffith, Max muller,Macdonell)  সহ আরও অনেকে। তাদের দাবি এসব অনুবাদকেরা নাকি মিথ্যা অনুবাদ করেছে। 

যাই হোক কারা মিথ্যা অনুবাদ করেছে তা আমরা কিছুক্ষণ পরেই দেখবো। তার আগে দেখি যে তারা কাদের অনুবাদ সঠিক বলে।  তাদের দাবি মতে ১৮৫০ সালের আগে বেদের কোনো সঠিক অনুবাদ ই ছিলো না। প্রথম বেদের সঠিক ভাষ্য করে দয়ানন্দ সরস্বতী। তার আগে করা সায়নাচার্য এর ভাষ্য ও নাকি সঠিক নয়। এছাড়া ২১ শতাব্দীর কিছু অনুবাদক রয়েছে যাদের অনুবাদ সঠিক।তারা হলেন -

 পন্ডিত জয়দেব শর্মা 

২. পন্ডিত হরিশরণ সিধান্তলংকার 

৩. পন্ডিত দেবীচাঁদ  

৪.মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী  

৫.স্বামী ব্রহ্মমুনি পরিব্রাজক বিদ্যামার্তুন্ডু 

৬. ড. তুলশিরাম শর্মা 

৭. তুলসিরাম দাস

সহ আর কিছু অনুবাদক।

 এরাই সঠিক অনুবাদ করেছে। আর বাকি সবাই ভুল করেছে। মানে এতজন হিন্দু পন্ডিত সবাই ভুল অনবাদ করেছে আর ২১ শতাব্দীর কিছু অনুবাদকরাই ঠিক অনুবাদ করেছে? এর থেকে হাস্যকর আর কি ই বা হতে পারে।

তাদের দাবি খ্রিষ্টানরা যখন ভারত উপমহাদেশে আসে তখন  তারা হিন্দুদের খ্রিষ্টান বানানোর জন্য বেদের ভুল অনুবাদ করে।যার মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় হলো max muller. ইনি নাকি বেদের ভুল অনুবাদ করে হিন্দুদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন। অথচ এই খ্রিষ্টানরাই যখন হিন্দুধর্ম নিয়ে প্রশংসা করে তখন তারা নেচে ওঠে।

স্বামী বিবেকানন্দ এই ম্যাক্স মুলারের অনুবাদ নিয়ে প্রশংসা করেছেন।এমনকি তাকে বেদের বিখ্যাত ভাষ্যকার সায়ানাচার্যের অবতার বলে মনে করেছিলেন।

সায়ানাচার্য ছিলেন 14 শতকের পণ্ডিত, মহিধর  ছিলেন 16 শতকের পণ্ডিত, ইয়াস্কা ছিলেন খ্রিস্টপূর্ব 5 শতকের। যেহেতু এদের অনুবাদে বেদের ভ্রান্ততা প্রকাশ পায় তাই তারা এদের অনুবাদকে জাল বলে উড়িয়ে দেয়।

পন্ডিতরা সবাইকে ভুল জানিয়েছে। এত বছর ধরে কেও বেদের সঠিক ভাষ্য করতে পারেনি।পেরেছে ২১ শতাব্দীর আর্য সমাজীরা।তারাই ঠিক আর সবাই ভুল। তো যারা বেদের সঠিক কথা বুঝতেই পারবনি তাদের কাছে বেদ পাঠিয়ে কি লাভ ঈশ্বরের। ২১ শতাব্দীর লোকদের কাছে পাঠালেই তো হতো যারা বেদের সঠিক বিষয়গুলো বুঝতে পারবে।

আচ্ছা তর্কাখাতিরে যদি এটা ধরেও নেই তো দেখি কতটা সঠিক অনুবাদ করে আর্য সমাজীরা। আমার কথা এটা নয় যে আর্য সমাজীরা সব ভুল অনুবাদ করে কিন্তু তারা সমস্যা দেখলেই উলটা পালটা অনুবাদ করে।তারই কিছু নমুনা দেখা যাক।

স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী যাকে নিয়ে আর্য সমাজীদের এত গর্ব তার অনুবাদ কতটা গ্রহণীয় তা এই প্রমাণ দাড়াই স্পষ্ট। 

 

 দয়ানন্দ সরস্বতীর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থ সত্যার্থ প্রকাশের সপ্তম সমুল্লাসে মনু সংহিতার ১ম অধ্যায়ের ২৩ নং মন্ত্রের উল্লেখ আছে। এই মন্ত্রের উল্লেখে কোন সমস্যা নেই, সমস্যা আছে এর অনুবাদে। মন্ত্রটি হলোঃ

অগ্নিবায়ুরবিভ্যস্ত্ত ত্রয়ং ব্রহ্ম সনাতনম্।

দুদোহ যজ্ঞসিদ্ধ্যর্থমৃগযজুঃসামলক্ষণম্।।

এর অনুবাদে দয়ানন্দ লিখেছেন -- "পরমাত্মা আদি সৃষ্টিতে মনুষ্য উৎপন্ন করিয়া অগ্নি প্রভৃতি চার মহর্ষিদের দ্বারা ব্রহ্মাকে চারবেদ শিক্ষা দিয়েছিলেন, আর ব্রহ্মা, অগ্নি, বায়ু, আদিত্য এবং অঙ্গিরার নিকট হইতে ঋক, যজুঃ, সাম এবং অথর্ববেদ শিক্ষা লাভ করিয়াছিলেন।"

                  ----[সত্যার্থ প্রকাশ, মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী, সপ্তম সমুল্লাস, পৃঃ ১৮০, আর্য সমাজ কলকাতা, ত্রয়োদশ সংস্করণ- নভেম্বর ২০১৯] 

অথচ মানবেন্দু বন্দোপাধ্যায়ের ভাষ্যে মনুসংহিতার এই মন্ত্রের অনুবাদ দেওয়া আছে এরকম -- "সেই ব্রহ্মা যজ্ঞসমূহ সম্পাদনের জন্য অগ্নি, বায়ু ও সূর্য এই তিনটি দেবতা থেকে যথাক্রমে ঋক, যজুঃ ও সামসংজ্ঞক সনাতন তিনটি বেদ দোহন করেছিলেন।"

                 ----[মনুসংহিতা, প্রথমোহধ্যায়, ২৩ নম্বর মন্ত্র, মানবেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, সংস্কৃত পুস্তক ভান্ডার]

তিনি যজ্ঞকর্ম সিদ্ধির জন্য অগ্নি থেকে সনাতন ঋগবেদ,বায়ু থেকে যজুর্বেদ, ও সূর্য থেকে সামবেদ উদ্ধার করিলেন। 

(মনুসংহিতা, প্রথমঅধ্যায়, ২৩ নম্বর মন্ত্র চৈতালী দত্ত)

যেখানে অন্যান্য অনুবাদকেরা  বলছে (অগ্নিবায়ুরবিভ্যস্ত্ত ত্রয়ং ব্রহ্ম)৩ দেবতার কথা, সেখানে দয়ানন্দ লিখেছে ৪ মহর্ষির কথা ,(অঙ্গিরা ফ্রি) যেখানে অন্যান্য অনুবাদকেরা  বলছে (যজ্ঞসিদ্ধ্যর্থমৃগযজুঃসামলক্ষণম্) ৩ বেদের কথা সেখানে দয়ানন্দ বলছেন ৪ বেদের কথা। কিন্তু আশ্চর্যের কথা এই যে মন্ত্রে কোথাও অথর্ববেদের কথাই নেই।

 

তাও এখনও হিন্দুরা স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর অনুবাদে ভরসা করবে।

 

এবার আসি তুলশিরাম শর্মার অনুবাদে।

 अपां फेनेन नमुचेः शिर इन्द्रोदवर्तयः |

 विश्वा यदजयः सप्रधः ||

 আপাম ফেনেনা নমুচেঃ শ্রী ইন্দ্রোদবর্তয়ঃ।  বিশ্ব যদজয় স্প্রধাঃ।

 Rigbeda 8:14:13

When you fight out the adversaries of life and

humanity, you crush the head of the demon of drought and famine with the sea mist and the cloud

 Dr.Tulsiram. 

 

 अपां फेनेन नमुचेः शिर इन्द्रोदवर्तयः |

 विश्वा यदजयः सप्रधः ||

 আপাম ফেনেনা নমুচেঃ শ্রী ইন্দ্রোদবর্তয়ঃ।  বিশ্ব যদজয় স্প্রধাঃ।  Yajurveda 19.71 

Indra,rular,commander, like the foam og the sea, like the vapours of water in the sky,rise and expand and break the head of the powers which hoard the wealth of the land like the cloud hoarding the waters.Conquer the forces which stand in oppositon out of sheer jealousy.    Dr.Tusliram..

 

এখানে একই মন্ত্র দুই বেদের দুই জায়গায় হুবহু থাকলেও এক অনুবাদকের পুরোপুরি ই ভিন্ন অনুবাদ। এবার আপনারাই ভাবুন এত ডাবল স্ট্যান্ডার্ড যারা করে তাদের অনুবাদ নাকি authintic.

এবার দেখি T.H Griffith এই মন্ত্রের কি অনুবাদ করেছে।

 Rigveda 8.14.13 With waters' foam thou torest off, Indra, the head of Namuci Subduing all contending hosts. 

Yajurveda 19.71 Indra, with waters’ foam didst thou wrench off the head of Namuchi,Subduing all contending hosts.

গ্রিফথ এখানে তার অনুবাদ প্রায় ঠিকই রেখেছে।কিন্তু ওদিকে তুলশিরাম তো গোটা অনুবাদটাই change করে দিয়েছে।এখন আপনারাই ভাবুন তুলসিরাম নাকি গ্রিফথ কার অনুবাদ বিশ্বস্ত।

 

अस्येदु मातुः सवनेषु सद्यो महः पितुं पपिवाञ्चारर्वन्ना |

 मुषायद विष्णुः पचतं सहीयान विध्यद वराहन्तिरो अद्रिमस्ता ||

 Rig Veda 1.61.7 “In the yajnic programmes of this Indra, lord of rule and power who measures everything to size, Vishnu, the great sun pervading everything with its light, drinks up the delicious holy foods prepared and sent up sanctified from the yajna, and then, challenging the mountainous cloud hoarding up the wealth of the same yajnic foods in the form of vapours, breaks up the cloud and throws it down (realising the showers of rain).” Tr. Tulsi Ram

 

Atharva Veda 20.35.7 “Only under this creating powers of God’s operations the sun always drinking great powerful drink of herbs and the nice corns and stealing the substances under process of ripening, become powerful and hurling the thunder-bolt pierces through the Varah, cloud whose feeder is water.” Tr. Acharya Vaidyanath Shastri

 

Rig Veda 1.61.7 “He alone deserves to be the commander of an army who appoints deserving persons on all posts and pervading in or being well-versed in all sciences and possessing wealth, quickly quaffs the soma and well-cooked good food, who destroys his enemies as the sun pierces the vast cloud mountain like with his rays, making it to fall down, being endowed with the power of endurance and hurling the thunderbolt or powerful weapons.” Tr. Achara Dharmadev Vidyamartanda

 

শক্তির অধিপতি, যিনি সমস্ত কিছুকে আকারে পরিমাপ করেন, বিষ্ণু, মহান সূর্য তার আলো দিয়ে সবকিছুকে পরিব্যাপ্ত করে, যজ্ঞ থেকে প্রস্তুতকৃত এবং পবিত্র করা সুস্বাদু পবিত্র খাবার পান করেন  এবং তারপর, পাহাড়ী মেঘকে চ্যালেঞ্জ করে একই যজ্ঞিক খাদ্যের সম্পদ বাষ্পের আকারে জমা করে, মেঘ ভেঙ্গে নিচে ফেলে দেয় (বৃষ্টির বর্ষণ উপলব্ধি করে)।  তুলসী রাম

 

 ঋগ্বেদ ১:৬১:৭ “তিনিই এমন একটি সেনাবাহিনীর সেনাপতি হওয়ার যোগ্য যিনি সমস্ত পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ করেন এবং সমস্ত বিজ্ঞানে পারদর্শী এবং ধনসম্পত্তির অধিকারী হন, দ্রুত সোম এবং ভাল রান্না করা ভাল খাবারকে বিভ্রান্ত করেন, যিনি  তার শত্রুদের ধ্বংস করে যেমন সূর্য তার রশ্মির মতো বিশাল মেঘের পর্বতকে বিদ্ধ করে, এটিকে পতিত করে, ধৈর্যের শক্তিতে সমৃদ্ধ হয় এবং বজ্র বা শক্তিশালী অস্ত্র নিক্ষেপ করে।"    আচারা ধর্মদেব বিদ্যামর্তন্ড

 

 অথর্ববেদ ২০:৩৫:৭ “শুধুমাত্র ঈশ্বরের কর্মের এই সৃষ্টি শক্তির অধীনে সূর্য সর্বদা ভেষজ এবং সুন্দর ভুট্টা থেকে দুর্দান্ত শক্তিশালী পানীয় পান করে এবং পাকার প্রক্রিয়াধীন পদার্থ চুরি করে, শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং বরাহ, মেঘের মধ্য দিয়ে বজ্র-বোল্ট বিদ্ধ করে  যার ফিডার পানি।"    আচার্য বৈদ্যনাথ শাস্ত্রী।

 

দেখুন কতটা বিপরীত অনুবাদ করেছে দুইজন।এরপরও এরাই ঠিক।

 

এবার আসি গ্রিফথ এর অনুবাদে

 

Rigveda 1.61.7

As soon as, at libations of his mother, great Vishnu had drunk

   up the draught, he plundered.

  The dainty cates, the cooked mess; but One stronger transfixed

   the wild boar, shooting through the mountain

 

  Atharvaveda 20.35.7

As soon as, at libations of his mother, great Vishnu had drunk

   up the draught, he plundered.

  The dainty cates, the cooked mess; but One stronger transfixed

   the wild boar, shooting through the mountain.

গ্রিফথ তার অনুবাদ দুই যায়গায়ই একই রেখেছে।

 

अग्निं होतारं मन्ये दास्वन्तं वसुं सूनुं सहसो जातवेदसं विप्रं न जातवेदसम |

य ऊर्ध्वया सवध्वरो देवो देवाच्या कर्पा |

घर्तस्य विभ्राष्टिमनु वष्टि शोचिषाजुह्वानस्य सर्पिषः 

Rig Veda 1.127.1 “O girl, As I regard my husband the person who is well-performer of the Yajna with lofty knowledge and reverential devotion. Who shines like fire with the splendour of the Ghee (Clarified butter) put in the fire, who is munificent or a liberal donor, accepter of what is given with love and reverence, who knows all that exists like a sage who is endowed with wisdom, who is the son of A strong man and observer of Brahmacharya, so thou shouldst also accept or choose such a virtuous person as thy husband.” Tr. Acharya Dharma Deva Vidya Martanda

এই মন্ত্রটি আবার রয়েছে যজুর্বেদ ১৫.৪৭ এ। তাতে অনুবাদ করেছে,

 

Yajur Veda 15.47 “He, who with his superior knowledge, deserves harmlessness, is fit to be honoured by the learned, is powerful in deeds, is imbued with noble qualities, and displays diverse kinds of lustre, with extreme lovliness, by performing Havan, using ghee and water, him do I honor. He is the giver of happiness, the knower of all created objects, charitably disposed like the son of a great man, giver of gifts, foremost amongst the wise, and a trustworthy, highly learned person, brilliant like fire.” Tr. Devi Chand

 

ঋগ্বেদ ১:১২৭:১ “হে কন্যা, আমি আমার স্বামীকে সেই ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করি যিনি উচ্চ জ্ঞান ও ভক্তিভরে যজ্ঞের সুচারু।  যিনি অগ্নিতে ঢোকানো ঘি (পরিষ্কারকৃত মাখন) এর বৈভবের সাথে আগুনের মতো জ্বলে ওঠেন, যিনি দানশীল বা উদার দাতা, যিনি প্রেম ও শ্রদ্ধার সাথে যা দেওয়া হয় তা গ্রহণকারী, যিনি জ্ঞানে সমৃদ্ধ ঋষির মতো বিদ্যমান সবকিছু জানেন।  যিনি একজন শক্তিশালী পুরুষের পুত্র এবং ব্রহ্মচর্য পালনকারী, তাই তোমারও উচিত তোমার স্বামীর মত একজন গুণী ব্যক্তিকে গ্রহণ করা বা বেছে নেওয়া।”   আচার্য ধর্ম দেব বিদ্যা মার্তন্ড

 

 যজুর্বেদ ১৫:৪৭ “যিনি তার উচ্চতর জ্ঞানের দ্বারা নিরীহতার যোগ্য, বিদ্বানদের দ্বারা সম্মানিত হওয়ার যোগ্য, কর্মে শক্তিমান, মহৎ গুণাবলী দ্বারা আচ্ছন্ন এবং হবন পালনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের দীপ্তি প্রদর্শন করেন,  ঘি-জল ব্যবহার করে তাকে সম্মান করি।  তিনি সুখের দাতা, সমস্ত সৃষ্ট বস্তুর জ্ঞানী, মহাপুরুষের পুত্রের মতো দানশীল, দানদাতা, জ্ঞানীদের মধ্যে অগ্রগণ্য, এবং বিশ্বস্ত, উচ্চ জ্ঞানী, আগুনের মতো উজ্জ্বল।"   দেবী চাঁদ। 

 

গ্রিফথ অনুবাদ করেছেন

 

Rig Veda 1.127.1. “AGNI I hold as herald, the munificent, the gracious, Son of Strength, who knoweth all that live, as holy Singer, knowing all, Lord of fair rites, a God with form erected turning to the Gods, He, when the flame hath sprung forth from the holy oil, the offered fatness, longeth for it with his glow.” Tr. Ralph T.H. Griffith

 

Yajur Veda 15.47 “Agni I hold as Herald, the munificent, the gracious Son of Strength who knoweth all that live, as holy singer knowing all; Lord of fair rites, a God with form erected, turning to the Gods, He, when the flame hath sprung forth from the sacred oil, the offered fatness, longeth for it with his glow.” Tr. Ralph T.H. Griffith

 

ঋগ্বেদ ১:১২৭:১:  “অগ্নিকে আমি সূচনাকারী হিসাবে ধারণ করি, মহিমান্বিত, করুণাময়, শক্তির পুত্র, যিনি জীবিত সকলকে জানেন, পবিত্র গায়ক হিসাবে, সকলকে জানেন, ন্যায়পরায়ণ আচারের প্রভু, ঈশ্বরের দিকে মুখ করে দাঁড় করানো এক ঈশ্বর, তিনি, যখন শিখা  পবিত্র তেল থেকে উত্থিত হয়েছে, নিবেদিত চর্বি, তার দীপ্তির সাথে এটির জন্য আকাঙ্ক্ষিত।"   রালফ টি.এইচ.  গ্রিফিথ

 

যজুর্বেদ ১৫:৪৭ “অগ্নিকে আমি হেরাল্ড হিসাবে ধারণ করি, মহিমান্বিত, শক্তির করুণাময় পুত্র যিনি জীবিত সকলকে জানেন, সকলকে জানেন পবিত্র গায়ক হিসাবে;  ন্যায্য আচার-অনুষ্ঠানের প্রভু, ঈশ্বরের আকৃতির সঙ্গে, ঈশ্বরের দিকে মুখ ফিরিয়েছেন, তিনি, যখন পবিত্র তেল থেকে অগ্নিশিখা ফুটে উঠেছে, নিবেদিত চর্বি, তার দীপ্তির সাথে তার জন্য আকাঙ্ক্ষা করছে।"   রালফ টি.এইচ.  গ্রিফিথ

এখন আপনারাই বলুন আমরা কেনো গ্রিফথের অনুবাদ মানবো না। যার অনুবাদে এতটা মিল রয়েছে একই মন্ত্রের ভিন্ন জায়গায়।

Rig Veda 1.26.4 “O venerable God, destroyer of evil forces, pleasant law-giver, may you live in our inner-self, even as you grace other external human endeavours.” Tr. Svami Satya Prakash Saraswati

 

Rig Veda 1.26.4 “O men, sit down on your various seats which are pleasant as cultured men who are destroyers of internal and external foes or diseases, well versed in various science, friendly to all and dispensers of justice do in assemblies, so you should also do.” Tr. Acharya Dharma Deva Vidya Martanda

 

 ঋগ্বেদ ১:২৬:৪ "হে পূজ্য ভগবান, অশুভ শক্তির বিনাশকারী, আনন্দদায়ক আইনদাতা, আপনি আমাদের অন্তরে বাস করুন, যেমন আপনি অন্যান্য বাহ্যিক মানবিক প্রচেষ্টাকে অনুগ্রহ করেন।"   স্বামী সত্য প্রকাশ সরস্বতী

 

 ঋগ্বেদ ১:২৬:৪ “হে পুরুষগণ, আপনার বিভিন্ন আসনে বসুন যা সংস্কৃতিবান পুরুষের মতো মনোরম, যারা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক শত্রু বা রোগের নাশক, বিভিন্ন বিজ্ঞানে পারদর্শী, সকলের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ এবং ন্যায়বিচারকারীরা সমাবেশে করে, তাই  তোমারও করা উচিত।"  আচার্য ধর্ম দেব বিদ্যা মার্তন্ড

 

এখানে দেখাই যাচ্ছে একেকজন অনুবাদক একেকটা অনুবাদ করছে। ঈশ্বর নিশ্চয়ই এত কিছু বোঝায়নি একটা মন্ত্র দিয়ে। এছাড়া তারা নিজেদের সুবিধামত যে অনুবাদ করেছে তা স্পষ্ট হয় এক মন্ত্রের ভিন্ন অনুবাদ ভিন্ন জায়গায় থাকার কারণে। মূলত এখানেই তারা ধরা পড়ে গিয়েছে। 

 

চিন্তা করুন একবার একজনের অনুবাদের  সাথে অন্যজনের অনুবাদের সামান্য মিল নেই এই মন্ত্রগুলোতে। তারা যে অনুবাদে নিজেদের মনের মাধুরী মিশিয়ে অনুবাদ করেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

অন্যদিকে গ্রিফথ যে নিজের অনুবাদে কোনো কারচুপি করেনি তা উপরেই প্রমাণিত। আর এজন্যই তিনি বর্তমান হিন্দুদের কাছে এতটা কুখ্যাত। তার অনুবাদে যে বেদের অশ্লীলতা,ভুল,বৈপরিত্য প্রকাশ হয় তাই তার অনুবাদ সঠিক নয়। শুধু তিনিই নন যাদের অনুবাদে বেদের ভ্রান্ততা প্রকাশ পায় তাদের অনুবাদই ঠিক না। শুধু ২১ শতাব্দীর অনুবাদকদেরই অনুবাদ ঠিক আর হাজার বছর ধরে কেও বেদের কথা বুঝতেই পারেনি। তারা কেওই নিরুক্ত মেনে অনুবাদ করেনি।করেছে শুধু ২১ শতাব্দীর তাও আবার সবাই নয় শুধু আর্য সমাজের অনুবাদকরা। 

 

২১ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ play boys এরা।

 

Author: Br. Sk Shakib