Are you sure?

ইতিহাস »  সিরাত

আয়িশাহ রা. হতে বর্ণিত মেয়েদের বালিগ্বাহ হওয়ার বয়স সংক্রান্ত একটি হাদিসের নির্ভরযোগ্যতা প্রসঙ্গে। 


বিষয় : আয়িশাহ রা. হতে বর্ণিত মেয়েদের বালিগ্বাহ হওয়ার বয়স সংক্রান্ত একটি হাদিসের নির্ভরযোগ্যতা প্রসঙ্গে। 

লেখক : সামিউল হাসান তবিব আলইনফিরাদী 

আয়িশাহ (রা) হতে মাওক্বুফরূপে বর্ণিত হয়েছে যে তিনি (রা) বলেছেন যে, 

إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي إمرأة 

অর্থ : যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সে পৌছায় তখন সে একজন মহিলা হয়ে যায়। 

উপর্যুক্ত এই বর্ণনাটিকে বিভিন্ন মুহাদ্দিসরা তাঁদের বিভিন্ন গ্রন্থে সনদ ব্যতীত মুআল্লাক্ব হিসেবে উল্লেখ করেছেন। [1]  

উপর্যুক্ত এই বর্ণনাটিকে হারব আলকিরামানী একটি সনদ ধরে আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেছেন, কিন্ত হারব কর্তৃক বর্ণিত উক্ত সনদটি منقطع (মুনক্বাতিঈ)। [2]  

উপর্যুক্ত এই বর্ণনাটিকে ইমাম আহমাদ বিন হানবাল একটি সনদ ধরে আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেছেন, এটা একটা প্রমাণিত তথ্য [3]। 

কিন্ত,ইমাম আহমাদ তাঁর যে গ্রন্থটিতে উপর্যুক্ত বর্ণনাটিকে সনদ ধরে আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেছেন, সে গ্রন্থটি বর্তমান পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেনি, ফলে ইমাম আহমাদের যেই গ্রন্থগুলো বর্তমানে পাওয়া যায় সেই গ্রন্থগুলোর কোথাও সেই সনদটি পাওয়া যায়না, যা দ্বারা ইমাম আহমাদ উপর্যুক্ত বর্ণনাটিকে আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেছেন। 

উক্ত মুআল্লাক্ব বর্ণনাগুলোর উপর ভিত্তি করে উপর্যুক্ত বর্ণনাটিকে সহিহ বা হাসান হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না, কারণ এগুলো সনদহীন। 

হারব কর্তৃক বর্ণিত উক্ত সনদটির উপর ভিত্তি করে উপর্যুক্ত বর্ণনাটিকে সহিহ বা হাসান হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না, কারণ উক্ত সনদটি মুনক্বাতিঈ, যা কিনা যইফ সনদের একটি প্রকার। 

ইমাম আহমাদ কর্তৃক বর্ণিত উক্ত সনদটির উপর ভিত্তি করে উপর্যুক্ত বর্ণনাটিকে সহিহ বা হাসান হিসেবে বিবেচনা করা যাবে,যদিও উক্ত সনদটি বর্তমানে অজানা।  

কেন, কিভাবে, কিসের ভিত্তিতে, কোন যুক্তিতে, ইমাম আহমাদ কর্তৃক বর্ণিত উক্ত সনদটির উপর ভিত্তি করে উপর্যুক্ত বর্ণনাটিকে সহিহ বা হাসান হিসেবে বিবেচনা করা যাবে? এ প্রশ্নের উত্তরই হচ্ছে আমার এই লেখাটির মূল আলোচনা এর বিষয়। 

এবার, মূল আলোচনা আরম্ভ করা যাক। 

কোনো ইয়াতিম মেয়ের জন্য বিবাহের চুক্তিকরণের বৈধতা সম্পর্কে উলামাদের মাঝে মতভেদ সংঘটিত হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন যে উক্ত চুক্তিটি বাতিল, কেউ কেউ বলেছেন যে উক্ত চুক্তিটি ততক্ষণ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে যতক্ষণ না মেয়েটি বালিগ্বাহ হচ্ছে বা চুক্তিটিকে প্রত্যাখ্যান করছে। এ প্রসঙ্গে ইমাম আহমাদ বলেছেন যে,মেয়েটির নিকট হতে বিয়ের জন্য সম্মতি চাওয়া হবে, যদি মেয়েটি বিয়েতে রাজি হয় তাহলে উক্ত বিয়ে যায়েয হবে।এক্ষেত্রে, ইমাম আহমাদ, আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণিত আলোচনাধীন উপর্যুক্ত বর্ণনাটির উপর নির্ভর করে এ মতটি প্রদান করেছেন।_[4]  

আবুবকর মুহাম্মাদ ইবনুল আরাবী আলমালিকী তাঁর গ্রন্থ "عارضة الأحوذي" এ বিষয়টি উল্লেখ করেছেন ,যেখানে তিনি লিখেছেন যে, _[4]  

قال أحمد إذا رضيت و هي بنت تسع سنين جاز النكاح و كان الإستئمار صحيحا لقول عائشة إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي إمرأة . 

অর্থ : এবং আহমাদ বলেছেন যে যখন একজন নয় বছর বয়সী মেয়ে বিয়েতে সম্মতি প্রকাশ করবে তখন বিয়ে যায়েয হবে এবং উক্ত সম্মতি চাওয়া সঠিক হবে, আয়িশাহ (রা) এর এই বক্তব্যের কারণে যে, যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সী হয়ে যায় তখন সে একজন মহিলা। 

স্পষ্টতই, ইমাম আহমাদ এক্ষেত্রে একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন।  

অপরদিকে, ইমাম আহমাদ আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সেসব হাদিসের উপরই নির্ভর করতেন যেসব হাদিস তাঁর দৃষ্টিতে সহিহ অথবা হাসান।[5]  

সুতরাং,ইমাম আহমাদ বিন হানবাল এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। 

কোনো একজন ইয়াতিম মেয়েকে বিয়ে দেওয়া কখন কিভাবে কী কী শর্তে যায়েয? এটি একটি বিতর্কিত মাসয়ালা। এ মাসয়ালাটির অন্তর্ভুক্ত একটি উপ-মাসয়ালা হচ্ছে এই যে, নয় বছর বয়সী ইয়াতিম মেয়েদের জন্য বালিগ্বাহদের হুকুম প্রযোজ্য হবে নাকি না? উক্ত উপ-মাসয়ালাটির
ক্ষেত্রে ইবনু কুদ্দামাহ এর সিদ্ধান্ত হচ্ছে এই যে, নয় বছর বয়সী ইয়াতিম মেয়েদের জন্য বালিগ্বাহ
দের হুকুম প্রযোজ্য হবে। এক্ষেত্রে, ইবনু কুদ্দামাহ, আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণিত আলোচনাধীন উপর্যুক্ত বর্ণনাটির উপর নির্ভর করে এ সিদ্ধান্তটি প্রদান করেছেন। _[6]  

ইবনু কুদ্দামাহ তাঁর গ্রন্থ "الكافي في فقه الإمام أحمد" এ উক্ত বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন, যেখানে তিনি লিখেছেন যে,_[6]  

وجمعنا بين الأدلة والأخبار وقيدنا ذلك بابنة تسع لأن عائشة قالت إذا بلغت الجارية تسع سنين، فهي امرأة  

অর্থ : এবং আমরা দলিলসমূহ ও বর্ণনাসমূহ এর মাঝে সামঞ্জস্যসাধন করেছি, এবং এটাকে নয় বছর বয়সী মেয়েদের দ্বারা সীমাবদ্ধ করেছি, কেননা আয়িশাহ (রা) বলেছেন যে যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সী হয়ে যায় তখন সে একজন মহিলা। 

দ্রষ্টব্য : ইমাম আহমাদ যেই সনদটি দ্বারা হাদিসটিকে আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেছেন, সেই সনদটি ইবনু কুদ্দামাহ জানতেন। [7] 

স্পষ্টতই, ইবনু কুদ্দামাহ এক্ষেত্রে একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন। 

অপরদিকে, ইবনু কুদ্দামাহ আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সেসব হাদিসের উপর নির্ভর করতেন যেসব হাদিস তাঁর দৃষ্টিতে সহিহ অথবা হাসান। [8]  

সুতরাং, ইবনু কুদ্দামাহ এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। 

আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে তাক্বিউদ্দিন ইবনু তাইমিয়াহ শুধুমাত্র সেসব হাদিসের উপর নির্ভর করতেন যেসব হাদিস তাঁর দৃষ্টিতে সহিহ অথবা হাসান। [9]  

নয় বছর এর কম বয়সী কোনো মেয়ের ক্ষেত্রে রক্ত দেখা দিলে তা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে নাকি না? এটি একটি বিতর্কিত মাসয়ালা। ইবনু তাইমিয়াহ তাঁর "شرح عمدة الفقه" নামক গ্রন্থে উক্ত মাসয়ালাটি প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি উল্লেখ করেছেন, তিনি হাদিসটির মান সম্পর্কে সরাসরিভাবে কোনো মন্তব্য করেন নি, কিন্ত উল্লেখকরণের ধরন এবং হাদিসটিকে কেন্দ্র করে ব্যক্তকৃত তাঁর কিছু কথা হতে যা বুঝা যায় তা হচ্ছে এই যে, 

(১) ইবনু তাইমিয়াহ এর দৃষ্টিতে, আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি হচ্ছে এমন একটি বর্ণনা, যা কিনা উক্ত মাসয়ালাটির ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য। 

(২) ইবনু তাইমিয়াহ এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী এবং নিশ্চিত যে, আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণিত উপর্যুক্ত আলোচনাধীন বর্ণনাটি আয়িশাহ (রা) এরই বক্তব্য। 

…[10] 

সুতরাং, ইবনু তাইমিয়াহ এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান।  

নয় বছর বয়সী কোনো মেয়ের ক্ষেত্রে রক্ত দেখা দিলে তা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে নাকি না? এই মাসয়ালাটি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে 'ইবনু আবি উমার' তাঁর "الشرح الكبير علی المقنع" নামক গ্রন্থে লিখেছেন যে,_[11]  

وثبت في حقها أحكام الحيض كلها؛ لأنه روي عن عائشة، أنها قالت: إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة 

অর্থ : এবং মেয়েটির জন্য হায়েযের হুকুমসমূহ প্রমাণিত হয়েছে, কেননা আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি (রা) বলেছেন যে, যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সী হয়ে যায় তখন সে একজন মহিলা। 

দ্রষ্টব্য : ইমাম আহমাদ যেই সনদটি দ্বারা হাদিসটি আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেছেন, সেই সনদটি ইবনু আবি উমার জানতেন। [12]  

স্পষ্টতই, ইবনু আবি উমার এক্ষেত্রে একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন। 

অপরদিকে, ইবনু আবি উমার এর সালাতুত তাসবিহ সংক্রান্ত একটি আলোচনা হতে বুঝা যায় যে আহকামের ক্ষেত্রে ইবনু আবি উমার শুধুমাত্র সহিহ এবং হাসান হাদিসকেই নির্ভরযোগ্য হিসেবে গণ্য করতেন। [13]  

সুতরাং, ইবনু আবি উমার এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। 

নয় বছয় বয়সী কোনো মেয়ের ক্ষেত্রে রক্ত দেখা দিলে তা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে নাকি না? এই মাসয়ালাটি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে 'ইবনুন নাজ্জার আলফুতুহী' তাঁর "معونة أولي النُهَى شرح المنتهى" নামক গ্রন্থে লিখেছেন যে, _[14]  

وثبت في حقها أحكام الحيض كلها؛ لأنه روي عن عائشة، أنها قالت: إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة 

অর্থ : এবং মেয়েটির জন্য হায়েযের হুকুমসমূহ প্রমাণিত হয়েছে, কেননা আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি (রা) বলেছেন যে, যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সী হয়ে যায় তখন সে একজন মহিলা। 

দ্রষ্টব্য : ইমাম আহমাদ যেই সনদটি দ্বারা হাদিসটি আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেছেন, সেই সনদটি ইবনুন নাজ্জার আলফুতুহী জানতেন। [15]  

স্পষ্টতই, ইবনুন নাজ্জার আলফুতুহী এক্ষেত্রে একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন। 

অপরদিকে, ইবনুন নাজ্জার আলফুতুহী আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সেসব হাদিসের উপরই নির্ভর করতেন যেসব হাদিস তাঁর দৃষ্টিতে সহিহ অথবা হাসান। [16]  

সুতরাং, ইবনুন নাজ্জার আলফুতুহী এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান।  

নয় বছয় বয়সী কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েটির সম্মতিকে বিবেচনায় রাখতে হবে নাকি না? এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে 'মানসুর বিন ইউনুস আলবুহুতী' তাঁর "كشاف القناع عن متن الإقناع" নামক গ্রন্থে লিখেছেন যে, [17]  

ولها إذن صحيح معتبر، نصا لما روي أحمد بسنده إلى عائشة إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة 

অর্থ : এবং নস অনুযায়ী তার (নয় বছর বয়সী মেয়ের) সম্মতি গুরুত্বপূর্ণ ও সঠিক, কারণ ইমাম আহমাদ আয়িশাহ (রা) হতে সনদ ধরে বর্ণনা করেছেন যে, যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সী হয়ে যায় তখন সে একজন মহিলা।
 
উপর্যুক্ত এই বক্তব্যটির সমার্থক বক্তব্য আলবুহুতীর অন্যান্য কিছু গ্রন্থেও পাওয়া যায়, যেমন : الروض المربع এবং المنح الشافيات। _[18]  

স্পষ্টতই, আলবুহুতী এক্ষেত্রে একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন। 

অপরদিকে, আলবুহুতীর কিছু কথা হতে বুঝা যায় যে আহকামের ক্ষেত্রে আলবুহুতী শুধুমাত্র সহিহ এবং হাসান হাদিসকেই নির্ভরযোগ্য হিসেবে গণ্য করতেন।_[19]  

সুতরাং, মানসুর আলবুহুতী এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান।  

কোনো মেয়ের বয়স ঠিক কত হওয়ার পর থেকে তাকে বিয়ে দেওয়ার সময় তার সম্মতি থাকাটা শর্ত হবে? এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে 'মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ আযযারকাশী' লিখেছেন যে,_[20]  

وإنما قيدنا ذلك ببنت تسع، لقول عائشة رضي الله عنها : إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة. رواه أحمد 

অর্থ : নিশ্চয়ই আমরা সেটাকে নয় বছরের মেয়ের দ্বারা সীমাবদ্ধ করেছি, আয়িশাহ (রা) এর এই বক্তব্যের কারণে যে, যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সী হয়ে যায় তখন সে একজন মহিলা। ইমাম আহমাদ এটা বর্ণনা করেছেন। 

স্পষ্টতই, আযযারকাশী এক্ষেত্রে একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন। 

আযযারকাশী অন্য একটি হাদিস সম্পর্কে বলেছেন যে, _[21] 
لكنه ضعيف، ولهذا لم يعتمده الإمام
অর্থ : কিন্ত তা যইফ, এবং একারণেই ইমাম (আহমাদ) এর উপর নির্ভর করেন নি।   

অর্থাৎ আযযারকাশী বিশ্বাস করতেন যে যইফ হাদিস এর নির্ভরযোগ্যতা প্রসঙ্গে ইমাম আহমাদ এর মূলনীতি হচ্ছে : আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদান করার ক্ষেত্রে যইফ এবং যইফের চেয়ে নিচু পর্যায়ের হাদিসের উপর নির্ভর না করে শুধুমাত্র সহিহ এবং হাসান হাদিসের উপর নির্ভর করা। যেহেতু আযযারকাশী ফিক্বহের মূলনীতির ক্ষেত্রে ইমাম আহমাদের অনুসারী ছিলেন, সুতরাং যইফ হাদিসের নির্ভরযোগ্যতা প্রসঙ্গে ইমাম আহমাদ এর উক্ত মূলনীতিটিই আযযারকাশীর মূলনীতি।  

অর্থাৎ, আহকামের ক্ষেত্রে আযযারকাশী শুধুমাত্র সহিহ এবং হাসান হাদিসকেই নির্ভরযোগ্য হিসেবে গণ্য করতেন।  

সুতরাং, আযযারকাশীর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান।  

নয় বছর বয়সী কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েটির সম্মতি শর্ত নাকি না? এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে 'মুস্তফা বিন সাদ আররুহাইবানী' তাঁর مطالب أولي النهی في شرح غاية المنتهي নামক গ্রন্থে বলেছেন যে,মেয়েটির সম্মতি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও সঠিক, অতঃপর আররুহাইবানী তাঁর এই বক্তব্যটির ভিত্তি উল্লেখ করতে গিয়ে উক্ত গ্রন্থটিতে লিখেছেন যে, 

ووجه تقييد ذلك ببنت تسع، ما روى أحمد عن عائشة أنها قالت: إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة. 

অর্থ : এবং এটাকে নয় বছর বয়সী মেয়ের দ্বারা সীমাবদ্ধকরণ এর কারণ হচ্ছে তা, যা ইমাম আহমাদ আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (রা) বলেছেন যে, যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সী হয়ে যায় তখন সে একজন মহিলা। 

…[22]  

স্পষ্টতই, আররুহাইবানী এক্ষেত্রে একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন। 

অপরদিকে, আররুহাইবানীর কিছু কথা হতে বুঝা যায় যে আহকামের ক্ষেত্রে আররুহাইবানী শুধুমাত্র সহিহ এবং হাসান হাদিসকেই নির্ভরযোগ্য হিসেবে গণ্য করতেন। [23]  

সুতরাং, আররুহাইবানীর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান।  

নয় বছর বয়সী কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েটির সম্মতি শর্ত নাকি না? এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে 'উসমান ইবনু জামিঈ' তাঁর "الفوائد المنتخبات في شرح أخصر المختصرات" নামক গ্রন্থে বলেছেন যে, মেয়েটির সম্মতি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও সঠিক, অতঃপর উসমান ইবনু জামিঈ তাঁর এই বক্তব্যটির ভিত্তি উল্লেখ করতে গিয়ে উক্ত গ্রন্থটিতে লিখেছেন যে, 

وخص بنت تسع لحديث أحمد عن عائشة قالت: إذا بلغت الجارية تسع سنين فهي امرأة  

অর্থ : এবং নয় বছর বয়সী মেয়েদের জন্য সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণিত ইমাম আহমাদের এই হাদিসের কারণে, যে, আয়িশাহ (রা) বলেছেন যে, যখন একজন মেয়ে নয় বছর বয়সী হয়ে যায় তখন সে একজন মহিলা। 

…[24]  

স্পষ্টতই, উসমান ইবনু জামিঈ এক্ষেত্রে একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন। 

উসমান ইবনু জামিঈ আহকাম সংক্রান্ত একটি মাসয়ালা প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে একটি হাদিসকে শুধুমাত্র যইফ হয়ার কারণেই প্রত্যাখ্যান করেছেন [25]। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, উসমান ইবনু জামিঈ, আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সেসব হাদিসের উপর নির্ভর করতেন যেসব হাদিস তাঁর দৃষ্টিতে সহিহ অথবা হাসান। 

সুতরাং, উসমান ইবনু জামিঈ এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। 

উপর্যুক্ত এই সব কথার উপসংহারস্বরূপ এটা বলা সঠিক হবে যে, ইমাম আহমাদ,ইবনু কুদ্দামাহ, ইবনু তাইমিয়াহ, ইবনু আবিউমার, ইবনুননাজ্জার, আলবুহুতী, আযযারকাশী, আররুহাইবানী এবং উসমান ইবনুজামিঈ এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। 

এবং উক্ত ৯ জন উলামাদের নিকট হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান হওয়ার উপর ভিত্তি করে এটা বলা সঠিক হবে যে, আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি ইমাম আহমাদ কর্তৃক বর্ণিত সনদটি দ্বারা সহিহ অথবা হাসান। 

আবুবকর ইবনুল আরাবী আলমালিকী তাঁর "عارضة الأحوذي" গ্রন্থে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির মান সম্পর্কে লিখেছেন যে, [26]  

وحديث عائشة لم يصح فان صح فالمراد به باحتمال الوطء لا صحة الإذن  

অর্থ : এবং আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ নয়, যদি তা সহিহ হয় তাহলে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে সহবাস সম্ভব হওয়া, সম্মতির সঠিকতা উদ্দেশ্য না। 

স্পষ্টতই, আবুবকর ইবনুল আরাবী আলমালিকী আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটিকে যইফ সাব্যস্ত করেছেন। 

ইমাম আহমাদ একটি আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন, আর স্বয়ং আবুবকর ইবনুল আরাবী নিজেই এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। [26]  

ইমাম আহমাদ, আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদাণকরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সহিহ এবং হাসান হাদিসের উপর নির্ভর করতেন, উক্ত ক্ষেত্রটিতে তিনি যইফ এবং যইফ এর চেয়ে নিচু পর্যায়ের হাদিসের উপর নির্ভর করতেন না [27]।  

অর্থাৎ ইমাম আহমাদ এর নিকট আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। 

হাদিসের মান নির্ণয়করণের ক্ষেত্রে, ইমাম আহমাদ বিন হানবাল, ইবনুল আরাবী আলমালিকী এর চেয়ে অধিক জ্ঞানী ছিলেন। তাছাড়া, আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটিকে যইফ সাব্যস্তকরণ একান্তই ইবনুল আরাবীর দৃষ্টিভঙ্গি, ইবনুল আরাবী ব্যতীত অন্য কোনো মুহাদ্দিস হাদিসটিকে যইফ সাব্যস্ত করেন নি,পক্ষান্তরে, এর বিপরীতে, ইমাম আহমাদ এর পাশাপাশি ইবনু কুদ্দামাহ এবং ইবনু তাইমিয়াহ হাদিসটিকে সহিহ অথবা হাসান হিসেবে গণ্য করেছেন। 

সুতরাং,আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির মান প্রসঙ্গে অধিক সঠিক (راجح) দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে ইমাম আহমাদ এর দৃষ্টিভঙ্গিটি, যা অনুযায়ী হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। ইবনুল আরাবী এর উক্ত যইফ সাব্যস্তকরণটি এক্ষেত্রে দূর্বল (مرجوح)।  

আহকামের ক্ষেত্রে যইফ বর্ণনা নির্ভরযোগ্য হবে নাকি না? এ প্রসঙ্গে ফক্বিহদের মাঝে দুইটি মূলনীতি প্রচলিত, যথা :-  

(১) প্রথম মূলনীতি : আহকামের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সহিহ এবং হাসান হাদিস নির্ভরযোগ্য, আহকামের ক্ষেত্রে যইফ বা যইফ এর চেয়ে নিচু পর্যায়ের কোনো হাদিস নির্ভরযোগ্য না। 

(২) দ্বিতীয় মূলনীতি : আহকামের ক্ষেত্রে, সহিহ এবং হাসান হাদিস এর পাশাপাশি কিছু শর্তসাপেক্ষে যইফ হাদিসও নির্ভরযোগ্য। 

উপর্যুক্ত প্রথম মূলনীতিটির অনুসারী ফক্বিহদের মাঝে অনেকেই এমন আছেন যারা কিনা প্রথম মূলনীতিটির অনুসারী হওয়া সত্ত্বেও বহু বার বহু আহকাম সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে বহু যইফ বর্ণনার উপর নির্ভর করেছেন। আর এটা হচ্ছে এক ধরনের তাসাহুল। 

এখন, আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান, এ দাবির পক্ষে আমার মূল যুক্তিটি নিম্নে উল্লেখ করা হল।  

" উপর্যুক্ত প্রথম মূলনীতিটির অনুসারী ৯ জন ফক্বিহ কিছু আহকাম সংক্রান্ত ফিক্বহী সিদ্ধান্ত প্রদানকরণের ক্ষেত্রে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির উপর নির্ভর করেছেন, সুতরাং উক্ত ৯ জন ফক্বিহ এর দৃষ্টিতে আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান, সুতরাং আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। "  

প্রশ্ন : উক্ত তাসাহুলের বিষয়টি কি আমার উক্ত যুক্তিটির সঠিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে?   

উত্তর : না, করে না।  

ইমাম আহমাদ, ইবনু কুদ্দামাহ এবং ইবনু তাইমিয়াহ উক্ত তাসাহুলের বিষয়টি হতে সাধারণত মুক্ত থাকতেন। এবং, আয়িশাহ (রা) এর হাদিসটির ক্ষেত্রে, শুধুমাত্র উক্ত তিনজন উলামা কর্তৃক হাদিসটিকে সহিহ বা হাসান হিসেবে গণ্যকরণই , হাদিসটিকে সহিহ বা হাসান বলার জন্য যথেষ্ট। 

অতএব, স্পষ্ট হল যে, আয়িশাহ (রা) হতে মাওক্বুফরূপে বর্ণিত উপর্যুক্ত আলোচনাধীন হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। 

সুতরাং, আয়িশাহ (রা) এর নিজ বক্তব্যের দ্বারা প্রমাণিত হল যে মুহাম্মাদ (সা) এর সাথে সংসার আরম্ভ হওয়ার সময়, অর্থাৎ ৯ বছর বয়সে, আয়িশাহ (রা) একজন বালিগ্বাহ মহিলা ছিলেন। 

টীকাসমূহ : 

[1]

مثلا : أبو عيسی الترمذي في كتابه "السنن"(بتحقيق بشار ،2/402) و أبو بكر البيهقي في كتابه "السنن الكبری"(بتحقيق محمد عطا،1/476) و أبو محمد البغوي في كتابه "شرح السنة"(المكتب الإسلامي،9/37) و غيرهم .

[2] 

قال  أبو محمد حرب بن إسماعيل بن خلف الكرماني في كتابه "المسائل" : 

حدثنا إسحاق، قال: أبنا زكريا بن عدي، عن أبي المليح، عن حبيب بن أبي مرزوق، عن عائشة -رضي الله عنها-، قالت: «إذا بلغت الجارية تسعا فهي امرأة. 

انظر : مسائل حرب الكرماني كتاب الطهارة و الصلاة (بتحقيق محمد بن عبد الله السّرَيِّع، صفحة 587، الرواية 1289) 

قلت : حبيب بن أبي مرزوق ، هو من أتباع التابعين، و عائشة من الصحابة ، فالإسناد منقطع

انظر : الثقات لابن حبان (دائرة المعارف العثمانية،6/184) و تقريب التهذيب لابن حجر (بتحقيق عوامة، صفحة 151، الراوي 1105) و تاريخ الرقة لأبي علي القشيري(بتحقيق إبراهيم صالح، صفحة 68)

[3] 

انظر : تنقيح التحقيق لابن عبد الهادي (بتحقيق سامي و الخباني، 4/324) و الشرح الكبير علی المقنع لابن أبي عمر (المنار،7/388) و المغني لابن قدامة (بتحقيق التركي و الحلو، 9/404) و الفروع لابن مفلح (بتحقيق عبد الله التركي،3/283) و المبدع شرح المقنع لابن مفلح (دار الكتب العلمية، 6/98) و الروض المربع بشرح زاد المستقنع لمنصور البهوتي (دار ركائز، 3/86) و كشاف القناع عن متن الإقناع لمنصور البهوتي (وزارة العدل،11/253) و شرح دليل الطالب لعبد الله المقدسي (بتحقيق أحمد الجماز ،3/223) و معونة أولي النهی شرح منتهی الإرادات لابن النجار (بتحقيق عبد الملك دهيش ،9/45) و العدة شرح العمدة لبهاء الدين المقدسي (دار الحديث، صفحة 393-394) و شرح الزركشي الحنبلي علی مختصر الخرقي (دار عبيكان، 5/83 ) و مطالب أولي النهی في شرح غاية المنتهی للرحيباني (المكتب الإسلامي ،5/53) و الفوائد المنتخبات في أخصر المختصرات لعثمان ابن جامع (مؤسسة الرسالة،3/281) و هداية الراغب لشرح عمدة الطالب لابن قائد (دار ركائز ، 2/414) .....إلخ 
 
[4]
عارضة الأحوذي لأبي بكر ابن العربي (دار الكتب العلمية،5/24)

[5]
الحديث الضعيف و حكم الإحتجاج به لعبد الكريم بن عبد الله الخضير (مكتبة دار المنهاج،صفحة 279)

[6]
الكافي في فقه الإمام أحمد لابن قدامة (دار الكتب العلمية،3/20)

[7] 
قال ابن قدامة في كتابه "المغني"(بتحقيق التركي و الحلو،9/404) : وقد روى الإمام أحمد  بإسناده عن عائشة، رضى الله عنها، أنها قالت: إذا بلغت الجارية تسع سنين فهى امرأة

[8]
 انظر: روضة الناظر وجنة المناظر في أصول الفقه لأبي محمد ابن قدامة (مؤسسة الريان،2/335) و الحديث الضعيف و حكم الإحتجاج به لعبد الكريم بن عبد الله الخضير (مكتبة دار المنهاج، صفحة 280)

[9] 
الحديث الضعيف و حكم الإحتجاج به لعبد الكريم بن عبد الله الخضير (مكتبة دار المنهاج، صفحة 266)

[10] 
قال ابن تيمية في كتابه "شرح عمدة الفقه"(دار عطاءات العلم و دار ابن حزم ،1/555) : 

ووجه الأول: ما ذكره البخاري عن عائشة قالت: إذا بلغت المرأة تسع سنين فهي امرأة. و رواه القاضي أبو يعلى عن ابن عمر قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: «إذا أتى على الجارية تسع سنين فهي امرأة». وفي إسناده نوع جهالة، لكنه إذا لم يكن حجة وحده، فقد أيده قول صحابي، ولولا أن التسع يمكن فيها البلوغ لما كانت امرأة ببلوغها. ولأن المرجع في ذلك إلى الموجود والعادة، ولم يعرف حيض معتاد قبل استكمال التسع، فإن ندر وجود دم، فهو دم فساد

[11]
الشرح الكبير علی المقنع لابن أبي عمر (بتحقيق التركي و الحلو، 2/385)

[12] 
الشرح الكبير علی المقنع لابن أبي عمر (بتحقيق التركي و الحلو ، 20/126)

[13] 
الشرح الكبير علی المقنع لابن أبي عمر (بتحقيق التركي و الحلو ، 4/158)

[14]
معونة أولي النهی شرح المنتهی لابن النجار الفتوحي (مكتبة الأسدي،1/422)

[15] 
معونة أولي النهی شرح المنتهی لابن النجار الفتوحي (مكتبة الأسدي،9/45)

[16] 
الحديث الضعيف و حكم الإحتجاج به لعبد الكريم بن عبد الله الخضير (مكتبة دار المنهاج، صفحة 283)

[17] 
كشاف القناع عن متن الإقناع  لمنصور البهوتي(وزارة العدل،11/253)

[18] 
 الروض المربع بشرح زاد المستقنع  لمنصور البهوتي(دار ركائز،3/86) و المنح الشافيات بشرح مفردات الإمام أحمد لمنصور البهوتي (دار كنوز إشبيليا،2/574)

[19] 
دقائق أولي النهی لشرح المنتهی لمنصور البهوتي (عالم الكتب، الجزء الأول ،صفحة 250 و 251) و كشاف القناع عن متن الإقناع لمنصور البهوتي (وزارة العدل،3/110)

[20]
شرح الزركشي الحنبلي علی مختصر الخرقي (دار العبيكان،5/83)

[21] 
شرح الزركشي الحنبلي علی مختصر الخرقي (دار العبيكان،3/581)

[22] 
مطالب أولي النهی في شرح غاية المنتهی لمصطفی بن سعد الرحيباني (المكتب الإسلامي،5/53)

[23] 
مطالب أولي النهی في شرح غاية المنتهی لمصطفی بن سعد الرحيباني (المكتب الإسلامي،1/580)

[24] 
الفوائد المنتخبات في شرح أخصر المختصرات لعثمان ابن جامع الحنبلي (مؤسسة الرسالة،3/281)

[25] 
الفوائد المنتخبات في شرح أخصر المختصرات لعثمان ابن جامع الحنبلي (مؤسسة الرسالة،4/1194)

[26] 
عارضة الأحوذي لأبي بكر ابن العربي (دار الكتب العلمية،5/24)

[27] 
الحديث الضعيف و حكم الإحتجاج به لعبد الكريم بن عبد الله الخضير (مكتبة دار المنهاج،صفحة 279)