Are you sure?

কুরআন »  বিবিধ

মূসা আঃ এর নাম ও কুরআনের মুযিজা

হযরত মূসা আঃ কে হিব্রু ভাষায় ‘মুশেহ’ বলা হয়... মূসা বলা হয় না। ইহুদিরা বলে থাকে মূসা শব্দটি হিব্রু। কিন্তু আমরা মুসলিমরা বলি মূসা শব্দটি হিব্রু নয়। এটা হিব্রু শব্দ হতে পারে না।

কারন হলোঃ- মূসা আঃ মিশরে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। বড় হয়েছেন ফেরাউনের প্রাসাদে, ফেরাউনের পালক সন্তানের মতো করে। তাহলে বলুন তো, ফেরাউনের প্রাসাদে বড় হওয়া ছেলেটির নাম ফেরাউন নিজে রাখবেন নাকি ফেরাউনের চাকর-বাকরেরা রাখবেন?

অবশ্যই ফেরাউন রাখবেন। আর ফেরাউনের দেশ ছিল মিশর, ভাষা ছিল মিশরীয়। তাই মূসা নামটি মিশরীয়-ই হবে, হিব্রু নয়।

তবে বিস্ময়ের বিষয় হলো; রাসূল (ﷺ) এর জন্মের প্রায় ৩০০০ বছর পূর্বে মিশরীয় ভাষা বিলুপ্ত হয়েছিল। তখন কেউ মিশরীয় ভাষা জানত না। সুতরাং রাসূল (ﷺ) এর সময়ে কেউ যদি জিজ্ঞেস করত ‘মূসা’ অর্থ কী? কেউ বলতে পারত না। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক্স ভাষা আবিস্কারের দরুন আমরা তা জানতে পেরেছি।

‘মূসা’ শব্দটি মিশরীয় ভাষায় বলা হয় ‘নতুন জন্মপ্রাপ্ত’। এবার দেখে নিই কুরআন কি বলে? সূরা কাসাসে মুসা আঃ এর সম্পর্কে আল্লাহ্ সুবাহানাহু ওয়াতা'আলা বলেছেন:

Al-Qasas 28:9
وَقَالَتِ ٱمْرَأَتُ فِرْعَوْنَ قُرَّتُ عَيْنٍ لِّى وَلَكَۖ لَا تَقْتُلُوهُ عَسَىٰٓ أَن يَنفَعَنَآ أَوْ نَتَّخِذَهُۥ وَلَدًا وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ

তাকে হত্যা করো না। এ আমাদের উপকারে আসতে পারে অথবা আমরা একে ‘সদ্য ভুমিষ্ট’ হিসেবে গ্রহণ করতে পারি...।"

লক্ষ্য করেছেন? আল্লাহ কুরআনে ‘মূসা’ শব্দের অনুবাদ করেছেন "ওয়ালাদান- وَلَدًا" বা ‘নতুন জন্মপ্রাপ্ত শিশু’ হিসেবে। অর্থাৎ ‘মূসা' = নতুন জন্মপ্রাপ্ত শিশু'।

সুবহানআল্লাহ, কুরআন বহু আগেই মুসা নামের অর্থ জানিয়ে দিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, কুরআন তো সেই মহান রবের কালাম যিনি মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞ। কুরআন তখন এর নিঁখুত বর্ণনা করেছে যখন মিশরীয় ভাষা ছিল মৃত। হযরত আছিয়া আঃ ফেরাউন-কে বলেছিল, "আমরা একে ‘মুসা’ বা ‘ওয়ালাদান’ বা ‘সদ্য ভুমিষ্ট’ হিসেবে গ্রহণ করে নিতে পারি।"

আল্লাহ ঠিক মিশরীয় শব্দের আরবী অনুবাদ ব্যবহার করেছেন কুরআনে। অথচ সেই ভাষা তখন কেউই জানত না !!!

আসিয়া আঃ মূসা নামে ডেকেছিলেন তাঁকে। আর কুর’আন সেই নামের অর্থেই ডেকেছে আরবীতে অথচ তখন ঐ ভাষা ছিল বিলুপ্ত। কী সুন্দরভাবেই না আল্লাহ তাঁর বাণীর অলৌকিকতা প্রকাশ করেন!

আর যারা কুরআনকে বিশ্বাস করেন না, যারা বলে থাকেন যে, নবী ﷺ কুরআন নিজে রচনা করেছেন এটা জাস্ট তাদের জন্য শক্তিশালী একটা প্রমাণ, যদি তারা বুঝে থাকে। কুরআন যে সত্য, এর বাণীও যে আল্লাহ্ থেকে পাওয়া তার জ্বলন্ত উদাহরণ এটা। কাজেই যারা আসলেই নির্বোধ, তারাই কেবলমাত্র অস্বীকার করে যাবে সত্যকে। আর আল্লাহ্ এভাবেই সত্যকে উন্মোচিত করে থাকেন।

Source:
।।মূসা আঃ এর নাম ও কুরআনের মুযিজা।।
- উস্তাদ নোমান আলী খানের লেকচার অবলম্বনে