Are you sure?

বিজ্ঞান »  ইসলাম ও বিজ্ঞান

আকাশ এবং পৃথিবীর মধ্যে কোনটা আগে সৃষ্টি হয়েছে? এ প্রসঙ্গে ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত ব্যাখ্যাটির বিশ্লেষণ। 

বিষয় : আকাশ এবং পৃথিবীর মধ্যে কোনটা আগে সৃষ্টি হয়েছে? এ প্রসঙ্গে ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত ব্যাখ্যাটির বিশ্লেষণ। 

লেখক : সামিউল হাসান তবিব আল-ইনফিরাদী  

0. সূচিপত্র :-  

1. ভূমিকা।
2. ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত ব্যাখ্যাটিকে উল্লেখকরণ। 
3. উক্ত ব্যাখ্যাটির সহিত ইবনু আব্বাস (রা) এর সম্পৃক্ততা প্রতিষ্ঠিতকরণ। 
4. ইবনু আব্বাস (রা) এর ব্যাখ্যাটির বিশ্লেষণ। 
5. উপসংহার।
6. টীকাসমূহ। 


1. ভূমিকা :-  

আকাশ ও পৃথিবীর মধ্য হতে কোনটা আগে সৃষ্টি হয়েছে? এ প্রসঙ্গে প্রসিদ্ধ সাহাবী মুফাসসির আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) একটি ইজতিহাদভিত্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। এই লেখাটিতে, ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত সেই ব্যাখ্যাটিকে উল্লেখ করা হবে এবং উক্ত ব্যাখ্যাটিকে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হবে। 

2. ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত ব্যাখ্যাটিকে উল্লেখকরণ :-  

ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত ব্যাখ্যাটি নিম্নরূপ, _[1][2][3]  

عن ابن عباس رضي الله عنه قال : خلق الأرض في يومين، ثمّ خلق السماء، ثمّ استوى إلى السماء، فسواهن في يومين آخرين، ثمّ دحا الأرض، ودحوها أن أخرج منها الماء والمرعى، وخلق الجبال والجمال والآكام وما بينهما في يومين آخرين، فجُعلت الأرض وما فيها من شيء في أربعة أيام، وخُلقت السموات في يومين. 

অর্থ : 

ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে : তিনি (আল্লাহ) পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দুই ইয়াওমে, তারপর আকাশ সৃষ্টি করেছেন, তারপর আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেছেন এবং সেটাকে (সাত আকাশে) বিন্যাস্ত করেছেন অপর দুই ইয়াওমে, অতঃপর পৃথিবীকে দাহউন করেছেন, এবং পৃথিবীকে দাহউন করার করার অর্থ হলো তা হতে গাছপালা ও পানি উৎপন্ন করা।এবং তিনি পাহাড়-পর্বত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উঁচু উঁচু স্থান ও তাদের (আকাশ ও ভুপৃষ্ঠের) মাঝে যা আছে সৃষ্টি করেছেন অপর দুই ইয়াওমে। অর্থাৎ পৃথিবী এবং পৃথিবীর মধ্যে যা কিছু আছে তা সৃষ্টি হয়েছে চার ইয়াওমে, এবং আকাশ সৃষ্টি হয়েছে দুই ইয়াওমে। 

3. উক্ত ব্যাখ্যাটির সহিত ইবনু আব্বাস (রা) এর সম্পৃক্ততা প্রতিষ্ঠিতকরণ :-  

উপর্যুক্ত ব্যাখ্যাটিকে আল-বুখারী তাঁর "সহিহ" গ্রন্থে ইবনু আব্বাস (রা) হতে বর্ণনা করেছেন। সহিহুল-বুখারী এর কিছু নুসখাহতে ব্যাখ্যাটি ইবনু আব্বাস (রা) হতে সনদহীন মুয়াল্লাক্বরূপে বর্ণিত হয়েছে এবং সহিহুল-বুখারী এর কিছু নুসখাহতে ব্যাখ্যাটি ইবনু আব্বাস (রা) হতে নিম্নোক্ত এই সনদে বর্ণিত হয়েছে, _[4][5]  

يوسف بن عدي عن عبيد الله بن عمرو عن زيد بن أبي أنيسة عن المنهال عن سعيد بن جبير عن ابن عباس  

অর্থ : ইউসুফ বিন আদীই বর্ণনা করেছেন উবাইদুল্লাহ বিন উমার হতে, তিনি যাইদ বিন আবি-আনিসাহ হতে, তিনি আল-মিনহাল হতে, তিনি সাঈদ বিন জুবাইর হতে, তিনি ইবনু আব্বাস (রা) হতে।  

আল-বুখারীর পাশাপাশি অন্যান্য মুহাদ্দিসরাও উপর্যুক্ত এই সনদটির দ্বারা ইবনু আব্বাস (রা) হতে ব্যাখ্যাটি বর্ণনা করেছেন। 

ইউসুফ বিন আদীই ছিক্বাহ। _[6]  

উবাইদুল্লাহ বিন উমার ছিক্বাহ। _[7]  

যাইদ বিন আবি-আনিসাহ ছিক্বাহ। _[8]  

সাঈদ বিন জুবাইর ছিক্বাহ। _[9]  

আল-মিনহাল বিন উমার আল-আসাদী নির্ভরযোগ্য নাকি অনির্ভরযোগ্য? তা নিয়ে মুহাদ্দিসদের মাঝে মতভেদ বিদ্যমান। অনেক মুহাদ্দিসরা তাঁকে নির্ভরযোগ্য সাব্যস্ত করেছেন, পক্ষান্তরে কিছু মুহাদ্দিসরা তাঁর উপর জারাহ (সমালোচনা) করেছেন। 

আল-মিনহাল এর ব্যাপারে বর্ণিত হওয়া জারাহগুলো অত্যন্ত দূর্বল, অগ্রহণযোগ্য এবং তাঁর নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অযথেষ্ট।  

সুতরাং, আল-মিনহাল এর ব্যাপারে বর্ণিত হওয়া জারাহগুলো এক্ষেত্রে অবিবেচ্য ও অধর্তব্য। 

অর্থাৎ, আল-মিনহাল এর ক্ষেত্রে সঠিক মত হচ্ছে এই যে, তিনি ছিক্বাহ। 

ইবনু হাজার আল-আসক্বালানী বলেছেন যে,_[10]  

المنهال بن عمرو، تكلم فيه بلا حجة 

অর্থ : আল-মিনহাল বিন উমার এর উপর হুজ্জত (প্রমাণ) ছাড়া সমালোচনা করা হয়েছে। 

শামসুদ্দিন আয-যাহাবী, আল-মিনহালকে তাঁর ذكر أسماء من تكلم فيه وهو موثق (তাঁদের নাম উল্লেখকরণ যারা নির্ভরযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সমালোচিত) গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। _[11]  

নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী বলেছেন যে,_[12]  

المنهال بن عمرو ثقة من رجال البخاري، وفيه كلام لا يضر 

অর্থ : আল-মিনহাল বিন উমার ছিক্বাহ, আল-বুখারীর রিজালদের অন্তর্ভুক্ত, তাঁর ব্যাপারে সমালোচনা আছে তবে তা সমস্যা না। 

বাশশার আওয়াদ মারুফ এবং শুয়াঈব আল-আরনাউত বলেছেন যে,_[13]  

ثقة، فقد وثقه الأئمة: ابن معين، والنسائي، والعجلي، وذكره ابن حبان في الثقات، ولم يجرح بجرح حقيقي 

অর্থ : (আল-মিনহাল) ছিক্বাহ, তাকে ইমামরা ছিক্বাহ সাব্যস্ত করেছেন, যেমন : ইবনু মুয়াঈন, আন-নাসাঈ, আল-ইজলী, এবং ইবনু হিব্বান তাঁকে আছ-ছিক্বাত এ উল্লেখ করেছেন, এবং তিনি কোনো প্রকৃত জারাহ দ্বারা জারাহকৃত হন নি।  

ইব্রাহিম বিন আব্দুল্লাহ আল-মুদাইহাশ বলেছেন যে, _[14]  

والراجح: أنه ثقة؛ لتوثيق من ذكر، ولم يذكر بجرح قادح …ومما يؤيد توثيقه احتجاج البخاري به في «صحيحه». 

অর্থ : এবং রাজিহ (অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মত) হচ্ছে এই যে, তিনি (আল-মিনহাল) ছিক্বাহ, যাদের থেকে তাওছিক্ব (ছিক্বাহ সাব্যস্তকরণ) উল্লেখ করা হয়েছে তাঁদের তাওছিক্ব এর কারণে, এবং তাঁর ব্যাপারে কোনো সমস্যা সাব্যস্তকারী জারাহ উল্লেখ করা হয়নি … যেসব বিষয় তাঁর তাওছিক্ব কে সমর্থন করে সেসব বিষয়ের একটা হচ্ছে আল-বুখারী কর্তৃক তাঁর "সহিহ" গ্রন্থে তাঁর (আল-মিনহালের) দ্বারা ইহতিজাজকরণ।  

সুতরাং,উপর্যুক্ত সনদটি "সহিহ" অথবা "হাসান"। 

সুতরাং, উক্ত ব্যাখ্যাটির সহিত ইবনু আব্বাস (রা) এর সম্পৃক্ততা সহিহ অথবা হাসান সনদ দ্বারা প্রমাণিত এবং প্রতিষ্ঠিত। 

4. ইবনু আব্বাস (রা) এর ব্যাখ্যাটির বিশ্লেষণ :-  

এক.   

ইবনু আব্বাস (রা) এর বক্তব্য "তিনি (আল্লাহ) পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন দুই ইয়াওমে।"  

অর্থাৎ, আকাশ (سماء) সৃষ্টির পূর্বে, পৃথিবীকে (الأرض) দাহউন (دحو) না করে সৃষ্টি করা হয়েছিল।  

অদাহউনকৃত পৃথিবীর রূপ ও অবস্থা দাহউনকৃত পৃথিবীর রূপ ও অবস্থা এর চেয়ে ভিন্ন ছিল এবং দাহউনকৃত পৃথিবীতে বিদ্যমান অনেককিছুই অদাহউনকৃত পৃথিবীতে অবিদ্যমান ছিল। 

দুই. 

ইবনু আব্বাস (রা) এর বক্তব্য "তারপর তিনি (আল্লাহ) আকাশ সৃষ্টি করেছেন।"  

অর্থাৎ, পৃথিবীর অদাহউনকৃত রূপ সৃষ্টি করার পর আকাশকে (سماء) সৃষ্টি করা হয়েছিল। 

ইবনু আব্বাস (রা) এর উপর্যুক্ত এই বক্তব্যটি হতে আলোচনার যোগ্য দুইটি বিষয় পাওয়া যায়, যথা :  

(১) আরবি ভাষায় "سماء" (আকাশ) শব্দটির অর্থ কী?   

(২) ইবনু আব্বাস (রা) এক্ষেত্রে "سماء"(আকাশ) শব্দটি দ্বারা কি বুঝাতে চেয়েছেন?   

আরবি ভাষায় سماء (আকাশ) মানে হচ্ছে, উপরের দিকে বিদ্যমান যেকোনোকিছু বা সকলকিছু। _[15][16]  

ধরা যাক যে A হচ্ছে একটা شيء (কোনোকিছু) এবং B হচ্ছে A হতে ভিন্ন অপর একটা شيء (কোনোকিছু)। A যদি B এর উপরের দিকে বিদ্যমান হয় তাহলে A এর নিচে বিদ্যমান B এর সাপেক্ষে A হচ্ছে سماء (আকাশ)।_[15]  

আরবি سماء (আকাশ) শব্দটি সংক্রান্ত একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এই যে, سماء (আকাশ) শব্দটি অনেক ক্ষেত্রে তার নিজেরই বহুবচনকৃত রূপ سماوات (বহু আকাশ) এর সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।  

ইবনু আব্বাস (রা) বলেছেন যে, 

…ثمّ خلق السماء، ثمّ استوى إلى السماء فسواهن… 

অর্থ : …অতঃপর তিনি (আল্লাহ) আকাশ সৃষ্টি করেন, তারপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করে সেটাকে تسوية (তাসওইয়াহ) করেন …
 
এক্ষেত্রে, আকাশকে تسوية করা মানে হচ্ছে আকাশকে সাত আকাশে পরিণতকরণ এবং বিন্যাস্তকরণ।_[17][18] 

সুতরাং, ইবনু আব্বাস (রা) তাঁর আলোচনাধীন ব্যাখ্যাটির ক্ষেত্রে سماء (আকাশ) বলতে এমন কোনোকিছুকে বুঝিয়েছেন যাকে সাত আকাশে পরিণত করা হয়েছিল। 

কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী, সাত আকাশ (سبع سماوات) হচ্ছে ভুপৃষ্ঠ হতে উপরের দিকে বিদ্যমান সাতটি শক্ত স্তর।  

সুতরাং, আরও স্পষ্ট করে বলা যায় যে, ইবনু আব্বাস (রা) তাঁর আলোচনাধীন ব্যাখ্যাটির ক্ষেত্রে سماء (আকাশ) বলতে এমন কোনোকিছুকে বুঝিয়েছেন, যাকে ভুপৃষ্ঠ হতে উপরের দিকে বিদ্যমান সাতটি শক্ত স্তরে (অর্থাৎ সাত আকাশে) পরিণত করা হয়েছিল। 

মহাশুণ্য এমন কিছু না যাকে সাতটি শক্ত স্তরে পরিণত করা হয়েছে, যদি মহাশুণ্যকে সাতটি শক্ত স্তরে পরিণত করে দেওয়া হত তাহলে বর্তমানে মহাশুণ্যের অস্তিত্বই থাকত না। 

মহাকাশে বিদ্যমান বস্তুসমূহ (যেমন : চাঁদ, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র …ইত্যাদি) এমন কিছু না যাকে সাতটি শক্ত স্তরে পরিণত করা হয়েছে, যদি মহাকাশে বিদ্যমান বস্তুসমূহকে সাতটি শক্ত করে পরিণত করে দেওয়া হত তাহলে বর্তমানে উক্ত বস্তুসমূহের অস্তিত্বই থাকত না। 

সুতরাং, ইবনু আব্বাস (রা) এর আলোচনাধীন ব্যাখ্যাটিতে سماء (আকাশ) বলতে "মহাশুণ্য" উদ্দেশ্য না এবং "মহাকাশে বিদ্যমান বস্তুসমূহ"ও উদ্দেশ্য না। 

সাত আকাশ যা হতে সৃষ্ট, ইবনু আব্বাস (রা) এক্ষেত্রে سماء (আকাশ) বলতে তা বুঝিয়েছেন।  

তো এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই যে, সাত আকাশ কী হতে সৃষ্ট?   

উত্তর :  উক্ত প্রশ্নটির জন্য একাধিকটি সম্ভাব্য উত্তর বিদ্যমান। উক্ত সম্ভাব্য উত্তরগুলোর মধ্য হতে সবচেয়ে বেশি সম্ভাব্য দুইটি উত্তর নিম্নে উল্লেখ করা হল। 

প্রথম সম্ভাব্য উত্তর, 

"সাত আকাশ একটি মূল আকাশ হতে সৃষ্ট। একটি মূল আকাশকে সাত ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল।" _[19][20][21]  

দ্বিতীয় সম্ভাব্য উত্তর, 

"সাত আকাশ দুখান (ধোঁয়া বা এর অনুরূপ কিছু) হতে সৃষ্ট। দুখানকে সাত আকাশে পরিণত করা হয়েছিল। "_[22]  

তিন.  

ইবনু আব্বাস (রা) এর বক্তব্য "তারপর আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেছেন এবং সেটাকে (সাত আকাশে) বিন্যাস্ত করেছেন অপর দুই ইয়াওমে।"  

অর্থাৎ, সৃষ্টি করার পর আকাশকে (যা হতে সাত আকাশকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাকে) সাত আকাশে পরিণত ও বিন্যাস্ত করা হয়েছে। 

চার. 

ইবনু আব্বাস (রা) এর বক্তব্য "অতঃপর পৃথিবীকে দাহউন করেছেন, এবং পৃথিবীকে দাহউন করার করার অর্থ হলো তা হতে গাছপালা ও পানি উৎপন্ন করা।"  

অর্থাৎ, আকাশকে সাত আকাশে পরিণত ও বিন্যাস্ত করার পর পৃথিবীকে দাহউন করা হয়েছে। 

পাঁচ.  

ইবনু আব্বাস (রা) এর বক্তব্য "এবং তিনি পাহাড়-পর্বত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উঁচু উঁচু স্থান ও তাদের (আকাশ ও ভুপৃষ্ঠের) মাঝে যা আছে সৃষ্টি করেছেন অপর দুই ইয়াওমে।"  

ইবনু আব্বাস (রা) এর উপর্যুক্ত এই বক্তব্যটিতে আলোচনার যোগ্য একটি বিষয় বিদ্যমান, আর তা হচ্ছে এই যে : ইবনু আব্বাস (রা) এক্ষেত্রে "তাদের (আকাশ ও ভুপৃষ্ঠের) মাঝে যা আছে"(ما بينهما) বলতে কী বুঝাতে চেয়েছেন?   

ভুপৃষ্ঠ থেকে আরম্ভ করে মহাশুণ্যের শেষ সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত সম্পূর্ণ অঞ্চলটি এবং উক্ত অঞ্চলটিতে বিদ্যমান সকলকিছু আলোচনাধীন "ما بينهما" এর অন্তর্ভুক্ত।_[23]  

ভুপৃষ্ঠকে স্পর্শ করা অবস্থায় ভুপৃষ্ঠের উপর বিদ্যমান জিনিসগুলোও "ما بينهما" এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।_[23]  

উক্ত "ما بينهما" উক্তিটি একটি ব্যাপকার্থবিশিষ্ট উক্তি। অর্থাৎ, ما بينهما উক্তিটি সাধারণভাবে বলা হলে এর দ্বারা "ما بينهما" এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়া সবকিছুই উদ্দেশ্য হয়। 

আরবি ভাষায়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে, কোনো ব্যাপকার্থবিশিষ্ট উক্তি ব্যাপকার্থবিশিষ্ট হিসেবে ব্যবহৃত না হয়ে অপব্যাপক সংকীর্ণ সংকুচিত অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে। এমনটা যখন হয়, তখন উক্তিটির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়া সবকিছুই উদ্দেশ্য হয়না, বরং তখন উক্তিটির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়া বিষয়গুলোর মধ্য হতে একটি বা একাধিকটি সুনির্দিষ্ট বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে উদ্দেশ্য হয়। এবং এই ধরনের ব্যাপকার্থবিশিষ্ট উক্তিকে "العام الذي أريد به الخصوص" বলা হয়। 

এক্ষেত্রে, ইবনু আব্বাস (রা) "ما بينهما" উক্তিটিকে খুব সম্ভবত العام الذي أريد به الخصوص হিসেবে ব্যবহার করেছেন।এক্ষেত্রে তিনি "ما بينهما" উক্তিটি দ্বারা খুব সম্ভবত শুধুমাত্র ভুপৃষ্ঠে বিদ্যমান সবকিছুকে সুনির্দিষ্টভাবে উদ্দেশ্য করেছেন। খুব সম্ভবত, এক্ষেত্রে তিনি ما بينهما এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়া সকলকিছুকেই উদ্দেশ্য করেন নি। এবং এর প্রমাণ হচ্ছে এই যে, কিছু বর্ণনায় ما بينهما উক্তিটি ব্যবহৃত না হয়ে এর পরিবর্তে এর স্থলে "ما فيها" (ভূমিতে যা আছে) উক্তিটি ব্যবহৃত হয়েছে। _[24][25][26] 

ছয়.  

ইবনু আব্বাস (রা) এর বক্তব্য "অর্থাৎ পৃথিবী এবং পৃথিবীর মধ্যে যা কিছু আছে তা সৃষ্টি হয়েছে চার ইয়াওমে, এবং আকাশ সৃষ্টি হয়েছে দুই ইয়াওমে।" 

ইবনু আব্বাস (রা) এর উপর্যুক্ত বক্তব্যটিতে আলোচনার যোগ্য একটি বিষয় বিদ্যমান, আর তা হচ্ছে এই যে, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির ছয় ইয়াওম এর ক্ষেত্রে "ইয়াওম"(يوم) মানে কী?   

অধিকাংশ মুফাসসিরদের মতে, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির ছয় ইয়াওমের ক্ষেত্রে "ইয়াওম" শব্দটি দ্বারা আমাদের পরিচিত 24 ঘন্টার দিনের সমান সময়কাল উদ্দেশ্য।_[27]  

ধরে নিচ্ছি যে , এক্ষেত্রে ইয়াওম বলতে 24 ঘন্টার দিনের সমান সময়কাল উদ্দেশ্য হওয়ার মতটিই সঠিক। 

তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই যে, ছয় দিনে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি কি বিজ্ঞানবিরোধী?  

উত্তর :-  

ছয় দিনে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টিকে বিজ্ঞানের সহিত সাংঘর্ষিক হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায় এবং বিজ্ঞানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যায়। এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া আবশ্যক না, এবং এক্ষেত্রে এমনটা নিশ্চয়তার সহিত বলা যাবেনা, যে, ছয় দিনে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি বিজ্ঞানের সহিত সাংঘর্ষিক। বরং, এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া সম্ভব যে, ছয় দিনে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি বিজ্ঞানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ। 

সময় (الزمان) আল্লাহ কর্তৃক সৃষ্ট (مخلوق)। _[28]  

সুতরাং, আল্লাহ সময়কে নিজের ইচ্ছামত নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম।  

আধুনিক বিজ্ঞান অনুযায়ী, সময়ের প্রবাহ আপেক্ষিক। 

অর্থাৎ, একেক জনের সাপেক্ষে বা দৃষ্টিকোণ হতে সময়ের প্রবাহ একেক রকম হতে পারে। 

কোরআন-সুন্নাহতে আকাশ ও পৃথিবী ছয়দিনে সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি খুব সম্ভবত আল্লাহর দৃষ্টিকোণ হতে বর্ণিত হয়েছে।  

সুতরাং, এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া সম্ভব যে, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার জন্য, আল্লাহর দৃষ্টিকোণ হতে ছয়দিন লেগেছিল এবং আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী ছয়দিনের চেয়ে অনেক বেশি সময় লেগেছিল। 

যদি বলা হয় যে :  

"কোরআন অনুযায়ী, আল্লাহর একদিন আমাদের এক হাজার বছরের সমান। সুতরাং আল্লাহর দৃষ্টিকোণের ছয়দিন আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী ছয় হাজার বছর। অর্থাৎ সময়ের প্রবাহের আপেক্ষিকতাকে বিবেচনায় আনলে বিষয়টা দাঁড়াবে এই যে, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার জন্য আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী ছয় হাজার বছর লেগেছিল। আমাদের দৃষ্টিকোণের ছয় হাজার বছরে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে বিজ্ঞানবিরোধী।"  

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে :  

আল্লাহর একদিন আমাদের এক হাজার বছরের সমান হওয়ার বিষয়টির মানে কী? তা নিয়ে মুফাসসিরদের মাঝে মতভেদ বিদ্যমান। এ প্রসঙ্গে মুফাসসিরদের মাঝে মোট তিনটি প্রধান মত প্রচলিত আছে, যথা :_[29]  

(১) এর মানে হচ্ছে এই যে, আখিরাতে (অর্থাৎ পরকালে) 24 ঘন্টায় একদিন না হয়ে এক হাজার বছরে একদিন হবে। 

(২) এর মানে হচ্ছে এই যে, আখিরাতের আযাবের একদিন দুনিয়ার এক হাজার বছরের সমান হবে। 

(৩) এর মানে হচ্ছে এই যে, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির ছয়দিনের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকটা দিন দুনিয়ার এক হাজার বছরের সমান। (অর্থাৎ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার জন্য আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী ছয় হাজার বছর লেগেছিল) 

অধিকাংশ মুফাসসিররাই উক্ত ৩ নং মতটিকে গ্রহণ করা হতে বিরত থেকেছেন।_[27]  

সুতরাং, এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া আবশ্যক না, এবং এক্ষেত্রে এমনটা নিশ্চয়তার সহিত বলা যাবে না, যে, আল্লাহর একদিন আমাদের এক হাজার বছরের সমান হওয়ার বিষয়টি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির ছয়দিনের উপর প্রযোজ্য। বরং, এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া সম্ভব যে, আল্লাহর একদিন আমাদের এক হাজার বছরের সমান হওয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র আখিরাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির ছয়দিনের ক্ষেত্রে অপ্রযোজ্য। 

অর্থাৎ, এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া সম্ভব যে, আল্লাহর দৃষ্টিকোণের সৃষ্টির ছয়দিন আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী ছয় হাজার বছর না।  

অর্থাৎ, এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া সম্ভব যে, আল্লাহর দৃষ্টিকোণের সৃষ্টির ছয়দিন আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী এমন একটি সময়কাল, যার দৈর্ঘ্য ও ব্যাপ্তি আমাদের নিকট অনির্দিষ্ট ও অজানা। 

আল্লাহ হচ্ছেন সময়ের স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক, এবং আল্লাহই হচ্ছেন সময়ের প্রবাহের আপেক্ষিকতার স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক। 

সুতরাং, এমনটা হওয়া সম্ভব যে, আল্লাহর দৃষ্টিকোণের সৃষ্টির ছয়দিনের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকটা দিন আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী অজানা ও অনির্দিষ্ট ব্যাপ্তিবিশিষ্ট একটি সময়কাল এবং আল্লাহর দৃষ্টিকোণের আখিরাতের একদিন আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী এক হাজার বছর। 

সাত. 

সূরাতুল বাক্বারাহ এর 29 নং আয়াতে এবং সূরা ফুসসিলাত এর 9-12 নং আয়াতে ব্যবহৃত ثم শব্দটি দ্বারা যদি "তারপর" বুঝানো হয়ে থাকে, তাহলে এর মানে দাঁড়াবে এই যে, 

পৃথিবী ও পৃথিবীতে বিদ্যমান সবকিছু সৃষ্টি করার পর, আকাশকে সৃষ্টি করা হয়েছে। 

অপরদিকে, ইবনু আব্বাস (রা) এর আলোচনাধীন ব্যাখ্যাটি অনুযায়ী, 

প্রথমে পৃথিবীতে বিদ্যমান সবকিছু বা অনেককিছু ব্যতীত পৃথিবীকে সৃষ্টি করা হয়েছে, অতঃপর আকাশকে সৃষ্টি করা হয়েছে, অতঃপর পৃথিবীতে বিদ্যমান সবকিছুকে বা অনেককিছুকে সৃষ্টি করা হয়েছে। 

দেখা যাচ্ছে যে, সূরাতুল বাক্বারাহ এর 29 নং আয়াতে এবং সূরা ফুসসিলাত এর 9-12 নং আয়াতে ব্যবহৃত ثم শব্দটির অর্থ "তারপর" ধরে নেওয়ার ফলে যা পাওয়া যায় তা ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত আলোচনাধীন ব্যাখ্যাটির সহিত সাংঘর্ষিক। 

সুতরাং,ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত উপর্যুক্ত আলোচনাধীন ব্যাখ্যাটি অনুযায়ী,সূরাতুল বাক্বারাহ এর 29 নং আয়াতে এবং সূরা ফুসসিলাত এর 9-12 নং আয়াতে ��ُمّ শব্দটি "তারপর" অর্থে ব্যবহৃত হয়নি বরং "তাছাড়াও" (Moreover) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। _[30]  

5. উপসংহার :-  

আকাশ এবং পৃথিবী এর মধ্য হতে কোনটা আগে সৃষ্টি হয়েছে? এ প্রসঙ্গে ইবনু আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রদানকৃত উপর্যুক্ত ব্যাখ্যাটি এবং উক্ত ব্যাখ্যাটির বিশ্লেষণ হতে প্রাপ্ত তথ্যগুলোকে একত্রিত করে উপসংহার হিসেবে বলা যায় যে, 

সৃষ্টির প্রথম দুই দিনে, পৃথিবীর অদাহউনকৃত রূপকে (অর্থাৎ পৃথিবীর আদিরূপকে) সৃষ্টি করা হয়। গাছ-পালা, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত এবং অন্যান্য সবকিছুই (বা অনেককিছুই) পৃথিবীর  অদাহউনকৃত রূপটিতে (অর্থাৎ পৃথিবীর আদিরূপটিতে) অবিদ্যমান ছিল।  

অতঃপর, সৃষ্টির দ্বিতীয় দুই দিনে, আকাশকে সৃষ্টি করাপূর্বক সাত আকাশে পরিণত ও বিন্যাস্ত করা হয়। 

অতঃপর, সৃষ্টির তৃতীয় দুই দিনে, পৃথিবীকে দাহউন করা হয় এবং গাছ-পালা, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত এবং অন্যান্য সবকিছু (বা অনেককিছু) পৃথিবীতে সৃষ্টি করা হয়। 

মহাশুণ্য, মহাকাশ, মহাকাশে বিদ্যমান বস্তুসমূহ, এসবের কিছুই এক্ষেত্রে "আকাশ"(سماء) শব্দটি দ্বারা (খুব সম্ভবত) উদ্দেশ্য না। এক্ষেত্রে "আকাশ"(سماء) বলতে (খুব সম্ভবত) এমন কোনোকিছু উদ্দেশ্য যাকে সাত আকাশে (অর্থাৎ ভুপৃষ্ঠ হতে উপরের দিকে বিদ্যমান সাতটি শক্ত স্তরে)  পরিণত ও বিন্যাস্ত করা হয়েছিল। 

এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া সম্ভব যে, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার জন্য, আল্লাহর দৃষ্টিকোণ হতে ছয়দিন লেগেছিল এবং আমাদের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী ছয়দিনের চেয়ে অনেক বেশি সময় লেগেছিল। 

ইবনু আব্বাস (রা:) এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সূরাতুল বাক্বারাহ এর 29 নং আয়াতে এবং সূরা ফুসসিলাত এর 9-12 নং আয়াতে ثُمّ শব্দটি "তারপর" অর্থে ব্যবহৃত হয়নি বরং "তাছাড়াও" অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।


6. টীকাসমূহ :-  

[1] 
سلسلة الأثار الصحيحة أو الصحيح المسند من أقوال الصحابة والتابعين  لأبي عبد الله الداني (دار الفاروق ، الجزء الثاني ،صفحة 192 و 193) 

[2] 
المعرفة و التاريخ ليعقوب بن سفيان الفسوي (مطبعة الإرشاد ،الجزء الأول ، صفحة 527-529) 

[3] 
التسعينية لابن تيمية (مكتبة المعارف ، الجزء الأول ، صفحة 324-328) 

[4] 
قال محمد ضياء الرحمن الأعظمي في "الجامع الكامل"(دار السلام ،11/62) : 

..... هكذا ذكره الإمام البخاري معلقا في كتاب التفسير. وجاء في بعض نسخ البخاري: "قال أبو عبد الله: حدثنيه يوسف بن عدي، حدثنا عبيد الله بن عمرو، عن زيد بن أبي أنيسة، عن المنهال، بهذا". هكذا جاء أيضا في فتح الباري 

[5] 
انظر : صحيح البخاري (دار ابن كثير ، صفحة 1213) وصحيح البخاري (بتحقيق البغا ، 4/1815) و صحيح البخاري بحاشية السهارنفوري (بتحقيق تقي الدين الندوي ،9/692) و المختصر النصيح لابن أبي صفرة (بتحقيق أحمد السلوم ،4/313) و عمدة القاري لبدر الدين العيني (19/151) و الكواكب الدراري لشمس الدين الكرماني (دار إحياء التراث العربي ،18/76) و التوضيح لشرح الجامع الصحيح لابن الملقن (دار النوادر ،23/194) و منحة الباري لزكريا الأنصاري (مكتبة الرشد ،8/123) و التوشيح شرح الجامع الصحيح للسيوطي (مكتبة الرشد ،7/3015) و إرشاد الساري للقسطلاني (المطبعة الكبری الأميرية ،7/327) و فتح الباري لابن حجر (المكتبة السلفية ،8/556) و الكوثر الجاري لأحمد الكوراني (دار الإحياء التراث العربي ،8/256) و فيض الباري للكشميري (دار الكتب العلمية ،5/379) و تحفة الأشراف للمزي (بتحقيق عبد الصمد، 4/452) و غيرهم  

[6] 
تقريب التهذيب لابن حجر (دار الرشيد ، صفحة 611) 

[7] 
تقريب التهذيب لابن حجر (دار الرشيد ، صفحة 373) 

[8] 
تقريب التهذيب لابن حجر (دار الرشيد ، صفحة 222) 

[9] 
تقريب التهذيب لابن حجر (دار الرشيد ، صفحة 234) 

[10] 
هدي الساري مقدمة فتح الباري لابن حجر (المكتبة السلفية ،صفحة 464)  

[11]
ذكر أسماء من تكلم فيه وهو موثق للذهبي (مكتبة المنار ، صفحة 182) 

[12] 
سلسلة الأحاديث الصحيحة لناصر الدين الألباني (مكتبة المعارف ،6/961) 

[13] 
تحرير تقريب التهذيب لابن حجر (المحرران : بشار و الأرناؤوط ، مؤسسة الرسالة ، 3/421) 

[14] 
الأحاديث المرفوعة والموقوفة في كتاب حياة الحيوان الكبرى للدَّمِيري من بداية حرف التاء إلى نهاية حرف الجيم تخريجاً ودراسة لإبراهيم بن عبد الله بن عبد الرحمن المديهش (صفحة 1207) 

[15] 
قال أبو جعفر محمد ابن جرير الطبري في تفسيره "جامع البيان" (دار هجر ،الجزء الأول ، صفحة 388 و 389) : 

وإنما سُمِّيت السماءُ سماءً؛ لعُلُوِّها على الأرضِ، وعلى سُكَّانِها مِن خلْقِه، وكلُّ شيْءٍ كان فوقَ شيْءٍ آخرَ، فهو لما تحتَه سماءٌ. ولذلك قيل لسقفِ البيتِ سماؤُه لأنَّه فوقَه مرتفِعٌ عليه 

وقال الطبري في "تاريخ الرسل و الملوك"(دار المعارف ،1/53) : 

وكل شيء كان فوق شيء عاليا عليه فهو له سماء 

[16] 
انظر : الإبانة عن أصول الديانة لأبي الحسن الأشعري (دار الأنصار ، صفحة 107) و الإعتقاد لأبي بكر البيهقي (دار الآفاق الجديدة ، صفحة 113) و الخلافيات لأبي بكر البيهقي (الروضة ، 6/340) و التمهيد لابن عبد البر (وزارة عموم الأوقاف، 7/17) و كتاب الأربعين في صفات رب العالمين للذهبي (مكتبة العلوم والحكم، صفحة 53) و العرش للذهبي (عمادة البحث العلمي، 2/453) و نثار الأزهار في الليل والنهار لابن منظور (مطبعة الجوائب، صفحة 172) و مجموع الفتاوی لابن تيمية (مجمع الملك فهد ،12/248,15/109) ودقائق التفسير لابن تيمية (مؤسسة علوم القرآن ,2/258) والصواعق المرسلة لابن القيم (دار العاصمة ،4/1244) والهداية إلی بلوغ النهاية لمكي بن أبي طالب (مجموعة بحوث الكتاب والسنة, 1/188) و تحرير التحبير لابن أبي الأصبع (الجمهورية العربية المتحدة،صفحة 458) و تفسير القرآن لأبي المظفر السمعاني (دار الوطن، 1/53) و السراج المنير للخطيب الشربيني (مطبعة بولاق ، 2/630) و نفائس الأصول في شرح المحصول لشهاب الدين القرافي (مكتبة نزار مصطفى الباز، 2/796) و سرور النفس بمدارك الحواس الخمس لأحمد بن يوسف التيفاشي (المؤسسة العربية ،صفحة 197) و التحرير والتنوير لابن عاشور (الدار التونسية ،17/324)  و تفسير جزء عم لمحمد بن صالح العثيمين (دار الثريا، صفحة 147) وhttps://shamela.ws/book/8312/273  وغيرهم  

[17]  

قال أبو جعفر محمد ابن جرير الطبري في تفسيره "جامع البيان"(دار هجر ،24/92 و 1/464) و في "تاريخ الرسل والملوك"(دار المعارف، 1/48) : 

حدَّثني عليٌّ و حدثني المثنی ، قالا: حدثنا أبو صالحٍ، قال: حدثني معاويةُ، عن عليٍّ، عن ابن عباسٍ قولَه، حيث ذكَر خلقَ الأرضِ قبل السماءِ، ثم ذكَر السماءَ قبل الأرضِ: وذلك أن الله خلَق الأرضِ بأقواتِها مِن غيرِ أن يَدْحُوها قبل السماءِ، ثم استوى إلى السماءِ فسوَّاهنَّ سبع سماواتٍ، ثم دحا الأرضَ بعد ذلك، فذلك قولُه: ﴿وَالْأَرْضَ بَعْدَ ذَلِكَ دَحَاهَا﴾ 

قال أبو العباس جعفر بن محمد بن المعتز بن محمد بن المستغفر بن الفتح بن إدريس المستغفري النسفي في "فضائل القرآن"(دار ابن حزم ،1/316): 

أخبرنا جعفر بن محمد المكي حدثنا أبو عبد الرحمن عبد الله بن عبيد الله بن سريج حدثنا جعفر بن محمد بن الحجاج القطان حدثنا عبد الله بن جعفر الرقي حدثنا عبد الله بن عمرو عن زيد بن أبي أنيسة عن المنهال بن عمرو عن سعيد بن جبير عن ابن عباس رضي الله عنه قال :.....وأما قوله تعالى {أم السماء بناها. رفع سمكها فسواها. وأغطش ليلها وأخرج ضحاها. والأرض بعد ذلك دحاها} فإن الله تعالى خلق الأرض قبل خلق السماء في يومين ثم استوى إلى السماء فسواهن سبع سماوات في يومين آخرين ثم نزل إلى الأرض فدحاها أن أخرج منها الماء والمرعى وشق فيها الأنهار وجعل فيها الجبال والرمال والآكام والسبل وما بينهما في يومين آخرين فذلك قوله تعالى {والأرض بعد ذلك دحاها} وخلق السماء وما فيها من شيء في يومين وخلق الأرض وما فيها في أربعة أيام....... 

[18]
انظر : اجتماع الجيوش الإسلامية لابن القيم (بتحقيق زائد النشيري ، صفحة 380 و 381) والعرش للذهبي (عمادة البحث العلمي ،الجزء الثاني ،صفحة 172 و 173) وجامع الأصول في أحاديث الرسول لابن الأثير (بتحقيق عبد القادر الأرنؤوط ،2/63) والتَّحبير لإيضَاح مَعَاني التَّيسير لمحمد الصنعاني (مَكتَبَةُ الرُّشد ،الجزء الثاني ، صفحة 58و59)والاعتصام للشاطبي (دار ابن عفان، الجزء الثاني ،صفحة 825-827)والزيادة والإحسان في علوم القرآن لمحمد عقيلة (مركز البحوث والدراسات، الجزء 8 ، الصفحة 276 و 277) وغيرهم 

[19] 
 قال الطبري في تفسيره (دار هجر ، 16/256) : 

وقال آخرون: بل معنَى ذلك أن السماواتِ كانت مُرتَتِقَةٌ طبقةً، ففَتَقَها اللهُ، فجعَلها سبعَ سماواتٍ، 

[20] 
قال أبو الشيخ الأصبهاني في "العظمة"(دار العاصمة, 3/1026) 

حدثنا إبراهيم بن محمد بن الحسن، حدثنا سعيد بن أبي زيدون، حدثنا الفريابي، عن ورقاء، عن ابن أبي نجيح، عن مجاهد رحمه الله تعالى {كانتا رتقا، ففتقناهما} قال: «من الأرضين معها ست، فتلك سبع، ومن السماء ست سماوات معها، فتلك سبع سماوات، ولم تكن الأرض والسماء مماستين» 

[21] 
 قلت : سند رواية أبي الشيخ المذكورة حسن. 

إبراهيم بن محمد بن الحسن ثقة وسعيد بن أبي زيدون حسن الحديث والفريابي ثقة و ورقاء حسن الحديث وابن أبي نجيح ثقة كان يدلس عن مجاهد ولم يسمع التفسير عنه بل روی عنه التفسير بالواسطة الثقة وهو القاسم بن أبي بزة . 

انظر : إرشاد القاصي والداني إلى تراجم شيوخ الطبراني لأبي الطيب المنصوري (دار الكيان و مكتبة ابن تيمية، صفحة 72-74) والمسالك القويمة بتراجم رجال ابن خزيمة لأبي الطيب المنصوري (دار العاصمة ، الجزء الأول ، صفحة 522-526) وتقريب التهذيب لابن حجر (دار الرشيد، صفحة 515) وتحرير تقريب التهذيب لابن حجر (المحرران : بشار و الأرناؤوط، مؤسسة الرسالة،الجزء الرابع، صفحة 58-59). 

وانظر : 
https://shamela.ws/narrator/3558
https://shamela.ws/narrator/5130
https://al-maktaba.org/book/31615/26368#p1 

[22] 
جامع البيان لابن جرير الطبري (دار هجر ، 1/460) 

[23] 
قال محمد بن صالح العثيمين في "تفسير القرآن الكريم : سورة الروم"(مؤسسة الشيخ العثيمين الخيرية، صفحة 41) : 

وقوله تعالى: {وما بينهما} البينية لا تقتضي التماس، فقد يكون الشيء بين الشيئين وهو لا يمس أحدهما، فهنا الذي بين السماء والأرض لا يلزم أن يمس أحدهما، لكنه يمكن أن يمس، فعلى هذا نقول: {وما بينهما} يشمل السحاب والرياح والنجوم والشمس والقمر وغير ذلك من المخلوقات العظيمة التي لا نعلمها، وفي التنصيص على ذكر ما بين السموات والأرض دليل على أن ما بينهما أمر عظيم يقارن بنفس السموات والأرض 

 [24] 
قال أبو بكر البيهقي في "الأسماء والصفات"(مكتبة السوادي ، 2/245) :  

أخبرنا أبو الحسين محمد بن الحسين بن محمد بن الفضل القطان ببغداد، أنا عبد الله بن جعفر بن درستويه، ثنا يعقوب بن سفيان، حدثني يوسف بن عدي، ح. وأخبرنا أبو بكر أحمد بن محمد بن غالب الخوارزمي ببغداد، ثنا أبو العباس محمد بن أحمد النيسابوري، ثنا محمد بن إبراهيم البوشنجي، ثنا أبو يعقوب يوسف بن عدي، ثنا عبيد الله بن عمرو، عن زيد بن أبي أنيسة، عن المنهال بن عمرو، عن سعيد بن جبير، عن ابن عباس، رضي الله عنهما..........وأما قوله: {أأنتم أشد خلقا أم السماء بناها رفع سمكها فسواها وأغطش ليلها وأخرج ضحاها والأرض بعد ذلك دحاها} فإنه خلق الأرض في يومين قبل خلق السماء، ثم استوى إلى السماء فسواهن في يومين آخرين، ثم نزل إلى الأرض فدحاها، ودحوها أن أخرج منها الماء والمرعى وشق فيها الأنهار، وجعل فيها السبل، وخلق الجبال والرمال والآكام وما فيها في يومين آخرين فذلك قوله: {والأرض بعد ذلك دحاها} وقوله: {أئنكم لتكفرون بالذي خلق الأرض في يومين وتجعلون له أندادا ذلك رب العالمين وجعل فيها رواسي من فوقها وبارك فيها وقدر فيها أقواتها في أربعة أيام سواء للسائلين} فجعلت الأرض وما فيها من شيء في أربعة أيام وجعلت السماوات في يومين...... 

[25]  

قلت : سند رواية البيهقي المذكورة حسن. 

أبو بكر أحمد بن محمد بن غالب الخوارزمي ثقة. وأبو العباس محمد بن أحمد النيسابوري إمام حافظ وكان عارفا بالحديث والتاريخ والرجال.ومحمد بن إبراهيم البوشنجي ثقة. وأبو الحسين محمد بن الحسين بن محمد بن الفضل القطان ثقة.وعبد الله بن جعفر بن درستويه ثقة نحوي و تكلم فيه بلا حجة.ويعقوب بن سفيان ثقة. 

انظر : السَّلسَبِيلُ النَّقِي في تَرَاجِمِ شيُوخ البَيِهَقِيّ لأبي الطيب المنصوري (دار العاصمة ، صفحة 245) وسير أعلام النبلاء للذهبي (دار الحديث, الجزء الثاني عشر، صفحة 251-253) وتقريب التهذيب لابن حجر (دار العاصمة ، صفحة 819) وإِتْحَافُ المُرْتَقِي بِتَرَاجِمِ شُيُوخ البَيهَقِيّ لمحمود النحال (دار الميمان، صفحة 442) والدليل المغني لشيوخ الإمام الدارقطني لأبي الطيب المنصوري (دار الكيان، صفحة 245-246) وشذرات الذهب لابن العماد الحنبلي (دار ابن كثير ،3/322).


[26] 
قال ابن أبي نصر الحميدي في "الجمع بين الصحيحن"(دار ابن حزم ، الجزء الثاني ، صفحة 96-99) :  

عن المنهال بن عمرو عن سعيد. قال رجل لابن عباس: إني أجد في القرآن أشياء تختلف علي……(قال ابن عباس :) وخلق الأرض في يومين، ثم خلق السماء، ثم استوى إلى السماء فسواهن في يومين آخرين ثم دحى الأرض، ودحيها أن أخرج منها الماء والمرعى، وخلق الجبال والآكام وما بينهما في يومين آخرين، فخلقت الأرض وما فيها من شيء في أربعة أيام، وخلقت السموات في يومين.…………وأخرجه البرقاني من حديث يوسف بن عدي الذي أخرجه البخاري عنه بأتم ألفاظا: أن ابن عباس جاءه رجل فقال: يا ابن عباس، إني أجد في القرآن أشياء تختلف علي، فقد وقع ذلك في صدري، فقال ابن عباس: أتكذيب؟ فقال الرجل: ما هو بتكذيب، ولكن اختلاف………قال ابن عباس : ………وأما قوله: {السماء بناها رفع سمكها فسواها وأغطش ليلها وأخرج ضحاها والأرض بعد ذلك دحاها} ، فإنه خلق الأرض في يومين قبل خلق السماء، ثم استوى إلى السماء فسواهن في يومين آخرين - يعني: ثم دحى الأرض، ودحيها أن أخرج منها الماء والمرعى، وشق فيها الأنهار، وجعل فيها السبل، وخلق الجبال والرمال والآكام وما فيها في يومين آخرين، فذلك قوله: {والأرض بعد ذلك دحاها} {وقوله} (أئنكم لتكفرون بالذي خلق الأرض في يومين وتجعلون له أندادا ذلك رب العالمين وجعل فيها رواسي من فوقها وبارك فيها وقدر فيها أقواتها في أربعة أيام سواء للسائلين} ، فجعلت الأرض وما فيها من شئ في أربعة أيام، وجعلت السموات في يومين………وهكذا رواه يعقوب بن سفيان في " تاريخه " عن يوسف بن عدي كما رواه البرقاني وإنما يختلفان في يسير من الأحرف 

قال تقي الدين ابن تيمية في "التسعينية"(مكتبة المعارف ، الجزء الأول ، صفحة 321-327) و في "الفتاوی الكبری"(دار الكتب العلمية ، الجزء السادس ، صفحة 388-390) :  

وقد روى البخاري في صحيحه عن سعيد بن جبير عن ابن عباس .............وخلق الأرض في يومين، ثم خلق السماء، ثم استوى إلى السماء فسواهن في يومين آخرين، ثم دحا الأرض، ودحيها  أن أخرج منها الماء والمرعى، وخلق الجبال والآكام وما بينهما في يومين آخرين، فخلقت الأرض وما فيها من شيء في أربعة أيام، وخلقت السموات في يومين.......ورواه البرقاني في صحيحه من الطريق التي أخرجها البخاري بعينها من طريق شيخ البخاري  بعينه بألفاظه التامة أن ابن عباس جاءه رجل فقال: يا ابن عباس إني أجد في القرآن أشياء تختلف علي، فقد وقع ذلك في صدري......قال ابن عباس :.......وأما قوله: {أم السماء بناها رفع سمكها فسواها وأغطش ليلها وأخرج ضحاها والأرض بعد ذلك دحاها} فإنه خلق الأرض في يومين قبل خلق السماء، ثم استوى إلى السماء فسواهن في يومين آخرين يعني: ثم دحى الأرض، ودحيها أن أخرج منها الماء والمرعى وشق فيها الأنهار وجعل فيها السبل، وخلق الجبال والرمال والآكام وما فيها، في يومين آخرين، فذلك قوله: {والأرض بعد ذلك دحاها} ، وقوله: {أئنكم لتكفرون بالذي خلق الأرض في يومين وتجعلون له أندادا ذلك رب العالمين  وجعل فيها رواسي من فوقها وبارك فيها وقدر فيها أقواتها في أربعة أيام سواء للسائلين}  وجعلت السماوات في يومين آخرين........ 

[27]  

قال عماد الدين أبو الفداء ابن كثير الدمشقي في "البداية و النهاية"(دار هجر ، 1/27) : 

وقد اختلف المفسرون في مقدار هذه الستة الأيام على قولين فالجمهور على أنها كأيامنا هذه 

[28] 
قال أبو زكريا محيي الدين يحيى بن شرف النووي في "شرح صحيح مسلم"(دار إحياء التراث العربي, 15/3) في شرح الحديث فإن الله هو الدهر

قال العلماء وهو مجاز وسببه أن العرب كان شأنها أن تسب الدهر عند النوازل والحوادث والمصائب النازلة بها من موت أو هرم أو تلف مال أو غير ذلك فيقولون يا خيبة الدهر ونحو هذا من ألفاظ سب الدهر فقال النبي صلى الله عليه وسلم لا تسبوا الدهر فإن الله هو الدهر أي لا تسبوا فاعل النوازل فإنكم إذا سببتم فاعلها وقع السب على الله تعالى لأنه هو فاعلها ومنزلها وأما الدهر الذي هو الزمان فلا فعل له بل هو مخلوق من جملة خلق الله تعالى ومعنى فإن الله هو الدهر أي فاعل النوازل والحوادث وخالق الكائنات والله آعلم 

قال محمد بن أحمد بن سالم السفاريني الحنبلي في "لوائح الأنوار السنية ولواقح الأفكار السنية"(مكتبة الرشد,2/367) : 

وإنما الدهر هو الزمان وهو مخلوق من جملة خلق الله تعالى 

[29]
النكت والعيون لأبي الحسن علي بن محمد الماوردي (دار الكتب العلمية، 4/33)  

[30] 
قال أبو عبد الله بدر الدين محمد بن عبد الله بن بهادر الزركشي في "البرهان في علوم القرآن"(دار إحياء الكتب العربية ، الجزء الرابع ،صفحة 267-268) : 

.والحاصل أنها (ثُمَّ) للتراخي في الزمان وهو المعبر عنه بالمهلة وتكون للتباين في الصفات وغيرها من غير قصد مهلة زمانية بل ليعلم موقع ما يعطف بها وحاله وأنه لو انفرد لكان كافيا فيما قصد فيه ولم يقصد في هذا ترتيب زماني بل تعظيم الحال فيما عطف عليه وتوقعه وتحريك النفوس لاعتباره. 

*******