বিষয় : দুই দরিয়ার মিলন সংক্রান্ত আয়াতসমূহের তাফসির
লেখক : আবুজাফার মুহাম্মাদ ইবনু জারির আততাবারী
অনুবাদক : সামিউল হাসান তবিব আলইনফিরাদী
[আবুজাফার মুহাম্মাদ ইবনু জারির আততাবারী কর্তৃক রচিত গ্রন্থ "জামিউল বায়ান আন তাওইলি আইল কোরআন"(হিজর) এর 22 নং খণ্ডের 199 থেকে 204 নং পৃষ্ঠা এবং 17 নং খণ্ডের 471 থেকে 476 নং পৃষ্ঠা এবং 18 নং খণ্ডের 102 নং পৃষ্ঠা হতে উল্লেখকৃত]
এক. সূরা আররহমান এর আয়াত 19-22 প্রসঙ্গে,
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
مرج البحرين يلتقيان ۞ بينهما برزخ لا يبغيان ۞
আল্লাহর বক্তব্য {مرج البحرين يلتقيان}। তিনি তাআলা বলছেন যে, মাগ্বরিবদ্বয় এবং মাশরিক্বদ্বয় এর রব্ব একে অপরের সহিত সাক্ষাতকারী দুইটি সমুদ্রকে مرج করেছেন। আল্লাহর বক্তব্য {مرج}
দ্বারা বুঝানো হয়েছে এই যে, তিনি প্রেরণ করেছেন এবং যেতে দিয়েছেন। যেমন তাদের [1] বক্তব্য, অমুক তার গৃহপালিত পশুকে مرج করল, অর্থাৎ সে সেটাকে ত্যাগ করল এবং মুক্ত করে দিল।
যেই সমুদ্রদ্বয়ের কথা আল্লাহ জাল্লা ছানাউহু এই আয়াতটিতে উল্লেখ করেছেন, সেই সমুদ্রদ্বয় দ্বারা কোন কোন সমুদ্র উদ্দেশ্য, তা নিয়ে আহলুল ইলম মতভেদ করেছেন। তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন যে : এগুলো হচ্ছে এমন দুইটি সমুদ্র, যার একটি আকাশে এবং অপরটি ভূমিতে। এবং অন্যান্যরা বলেছেন যে : এর দ্বারা রোম এর সমুদ্র এবং ফারিস এর সমুদ্র উদ্দেশ্য।
আমার দৃষ্টিতে এক্ষেত্রে অধিক সঠিক মত হচ্ছে তাঁদের মতটি যারা বলেছেন যে এর দ্বারা আকাশের সমুদ্র [2][3][4][5] এবং ভূমির সমুদ্র বুঝানো হয়েছে। এবং এ কারণেই আল্লাহ জাল্লা ছানাউহু বলেছেন يخرج منهما اللؤلؤ و المرجان এবং اللؤلؤ ও المرجان নির্গত হয় ভূমির সমুদ্রের ঝিনুকগুলো হতে আকাশের পানির ফোঁটার [6]কারণে, আর এটা জানা কথা যে তা হচ্ছে ভূমির সমূদ্র এবং আকাশের সমুদ্র।
আল্লাহর বক্তব্য {بينهما برزخ لا يبغيان}। তিনি তাআলা বলছেন যে, তাদের মাঝে আছে বাধা ও দূরত্ব, তারা একে অপরকে বিকৃত করেনা, অন্যথায় একটা আরেকটার উপর بغي করত। এবং এমন যেকোনোকিছু যা অপর দুইটি জিনিসের মাঝে বিদ্যমান তা ই আরবদের নিকট برزخ, দুনিয়া এবং আখিরাত এর মাঝে যা আছে তাও برزخ।
আল্লাহর বক্তব্য {لا يبغيان} এর অর্থ প্রসঙ্গে আহলুল ইলম মতভেদ করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন যে এর মানে হচ্ছে এই যে : তারা একে অপরের উপর بغي করেনা [7]। এবং অন্যান্যরা বলেছেন যে এর মানে হচ্ছে এই যে : তারা মিশ্রিত হয়না। অন্যান্যরা বলেছেন যে এর মানে হচ্ছে এই যে : তারা মানুষদের উপর بغي করেনা [8]। অন্যান্যরা বলেছেন যে এর মানে হচ্ছে এই যে : তারা মিলিত হতে পারেনা।
আমার দৃষ্টিতে এক্ষেত্রে অধিক সঠিক মত হচ্ছে এটা বলা যে : নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটিতে উল্লেখকৃত সমুদ্রদ্বয়ের ক্ষেত্রে এই গুণ বর্ণনা করেছেন যে তারা بغي করেনা। তাদের উক্ত গুণ কোন কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ও কোন কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না তা তিনি সুনির্দিষ্ট করে দেন নি, বরং তিনি সাধারণ অর্থে তাদের সম্পর্কে এ বিষয়টি বর্ণনা করেছেন, সুতরাং সঠিক হচ্ছে সাধারণ অর্থে বলা যেমনটা আল্লাহ জাল্লা ছানাউহু বলেছেন, অর্থাৎ বলা হবে যে : তারা কোনো ক্ষেত্রেই بغي করেনা, এবং তারা একে অপরের উপরও بغي করেনা, এবং আল্লাহ তাদের জন্য যেই সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা তারা অতিক্রম করেনা।
…[9]
দুই. সূরা আলফুরক্বান এর আয়াত 53 প্রসঙ্গে,
আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে,
وهو الذي مرج البحرين هذا عذب فرات وهذا ملح أجاج و جعل بينهما برزخا و حجرا محجورا۞
আল্লাহর তাআলার বক্তব্য {وهو الذي مرج البحرين هذا عذب فرات وهذا ملح أجاج و جعل بينهما برزخا و حجرا محجورا} প্রসঙ্গে আলোচনা।
আল্লাহ তাআলা বলছেন যে : তিনিই আল্লাহ যিনি দুই দরিয়াকে মিশ্রিত করেছেন, এবং একটাকে আরেকটার মধ্যে إمراج করেছেন, এবং একটাকে আরেকটার মধ্যে إفاضة করেছেন। [10][11]
এবং المرج এর মূল হচ্ছে الخلط (মিশ্রিতকরণ), তাছাড়া التخلية (মুক্তিদান বা খালিকরণ) এর জন্যও বলা হয় مرج। কেননা যখন কোনো ব্যক্তি কোনোকিছুকে মুক্ত করে দেয় অতঃপর তা গিয়ে অন্য কোনোকিছুর সহিত মিশ্রিত হয়, তখন মনে হয় যে সে যেন জিনিসটাকে مرج করেছে, উদাহরণস্বরূপ নবী (সা) হতে বর্ণিত একটি বর্ণনা যেখানে তিনি (সা) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রা) কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে : كيف بك يا عبد الله إذا كنت في حثالة من الناس قد مرجت عهودهم و أماناتهم و صاروا هكذا و شبك بين أصابعه।
এখানে তিনি (সা) তাঁর বক্তব্য "مرج হয়েছে " দ্বারা বুঝিয়েছেন যে : "মিশ্রিত হয়েছে "।
এবং এ অনুযায়ী ই আল্লাহর বক্তব্য {في أمر مريج} অর্থাৎ مختلط।
গৃহপালিত পশুরা যেই ঘাসবিশিষ্ট মাঠে ঘুরে বেড়ায় সেই মাঠকেও এ অনুযায়ী [12] مرج বলা হয়, কেননা সেখানে গৃহপালিত পশুদের মিশ্রণ তৈরি হয়। এবং বলা হয় যে, আপনি আপনার গৃহপালিত পশুকে مرج করেছেন, অর্থাৎ : আপনি তাকে মুক্ত করে দিয়েছেন, ফলে সে যেখানে ইচ্ছা সেখানে গিয়েছে।
এবং এ অনুযায়ী ই আররাজিয এর বক্তব্য : رعی بها مرج ربيع ممرجا।
এবং আল্লাহর বক্তব্য {هذا عذب فرات}। আলফুরাত মানে হল অত্যন্ত মিষ্টি হওয়া, বলা হয় যে এটা ফুরাত পানি, অর্থাৎ অত্যন্ত মিষ্টি।
এবং আল্লাহর বক্তব্য {وهذا ملح أجاج}, তিনি বলছেন যে : এটা তিক্ত লবণাক্ত।
অর্থাৎ, নদীসমূহ এবং বৃষ্টিসমূহ এর পানি সুমিষ্ট ফুরাত এবং সমুদ্রসমূহের পানি তিক্ত লবণাক্ত।
নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) এর দ্বারা বুঝিয়েছেন যে ইহা তাঁর সৃষ্টির জন্য তাঁর পক্ষ হতে নিয়ামত, এবং তাঁর ক্ষমতার মহত্ব, তিনি মিষ্টি দরিয়ার পানিকে তিক্ত লবণাক্ত দরিয়ার পানির সহিত মিশ্রিত করেন, অতঃপর তিনি (আল্লাহ) নিজ ফায়সালা এবং কুদরত এর দ্বারা লোনাকে বাধা প্রদান করেন, যাতে তা মিষ্টির মিষ্টতাকে বিকৃত করতে এবং নষ্ট করতে না পারে। যদি এমনটা না হত, তাহলে লোনা কর্তৃক মিষ্টিকে দূষিতকরণ আবশ্যক হয়ে যেত এবং উভয় দরিয়াই লবণাক্ত হয়ে যেত, ফলে পানির প্রয়োজন দেখা দিলে মানুষ পানযোগ্য পানি পেত না। তাই আল্লাহ জাল্লা ছানাউহু বলেছেন {وجعل بينهما برزخا} অর্থাৎ একটি বাধা যা উভয় দরিয়াকে একে অপরকে দূষিত করা হতে বিরত রাখে। {وحجرا محجورا} তিনি বলছেন যে, এবং তিনি (আল্লাহ) উভয় দরিয়াকে একে অপরের জন্য নিষিদ্ধ ও হারাম করে দিয়েছেন, যাতে তারা একে অপরকে বিকৃত করতে এবং নষ্ট করতে না পারে।
নিশ্চয়ই আমরা সেই মতটিকে পছন্দ করেছি যা আমরা আল্লাহর বক্তব্য {وجعل بينهما برزخا و حجرا محجورا} এর ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে পছন্দ করেছি। আমরা সেই মতটি পছন্দ করিনি, যা বলেছেন তাঁরা, যারা কিনা বলেছেন যে : এর মানে হচ্ছে এই যে, তিনি (আল্লাহ) দুই দরিয়ার মাঝে মাটির তৈরি অথবা শুষ্কতার তৈরি একটি বাধা স্থাপন করেছেন,কেননা আল্লাহ তাআলা আয়াতটির শুরুর দিকে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি দরিয়াদ্বয়কে مرج করেছেন, এবং আরবদের কথাতে المرج হচ্ছে الخلط (মিশ্রিতকরণ), যা আমি পূর্বে স্পষ্ট করেছি। যেই ব্যবধানটি মিষ্টি ফুরাত দরিয়া এবং তিক্ত লবণাক্ত দরিয়া এর মাঝে বিদ্যমান আছে, তা যদি মাটি অথবা শুষ্কতা হত, তাহলে সেখানে উক্ত দরিয়াদ্বয়ের مرج হত না, অথচ তিনি জাল্লা ছানাউহু জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি দরিয়াদ্বয়কে مرج করেছেন।
নিশ্চয়ই আমরা তাঁর (আল্লাহর) কুদরতটি সম্পর্কে জেনেছি, যা হচ্ছে এই যে, দরিয়াদ্বয়ের উভয় কর্তৃক একে অপরের সহিত মিশ্রিত হওয়া সত্ত্বেও, তিনি (আল্লাহ) এই তিক্ত লবণাক্ত কে, এই মিষ্টি ফুরাত কে দূষিত করে দেওয়া হতে বিরত রাখেন। পক্ষান্তরে, যদি দরিয়াদ্বয়ের উভয়ে একে অপর হতে কিছুটা দূরত্বে দুইটি পৃথক পৃথক স্থানে অবস্থান করত, তাহলে সেখানে কোনো مرج সংঘটিত হত না।
আর সেখানে সেসব আজব জিনিসগুলোর কিছুই নেই, যেগুলো মানুষরা উল্লেখ করে, এবং যেগুলো সম্পর্কে এমনকিছু মানুষরা অবহিত করে, যারা কিনা এ প্রসঙ্গে অজ্ঞ।
তিন. সূরা আননামাল এর আয়াত 63 প্রসঙ্গে,
আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে,
…وجعل بين البحرين حاجزا…
এবং তিনি (আল্লাহ) দুই দরিয়ার মাঝে বাধা সৃষ্টি করেছেন, অর্থাৎ মিষ্টি ও লবণাক্ত এর মাঝে, যাতে তারা একে অপরকে দূষিত করতে না পারে। [13]
অনুবাদক কর্তৃক প্রদানকৃত টীকা:
[1]অর্থাৎ, আরবদের।
[2]আরবি ভাষায় بحر (সমুদ্র) শব্দটির প্রকৃত অর্থ হচ্ছে "প্রচুর পরিমাণ পানি"।
দেখুন :- তাজুল উরুস (10/110), আলক্বামুসুল মুহিত (পৃ/346)
[3]আততাবারী স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এই আকাশের সমুদ্র হচ্ছে এমনকিছু যা থেকে বৃষ্টির পানি আসে। দেখুন :- তাফসিরুত তাবারী (হিজর,22/201 ও 208 )
[4]মেঘ থেকে বৃষ্টির পানি আসে এবং মেঘকে আকাশে বিদ্যমান প্রচুর পরিমাণ পানি হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
[5]উপর্যুক্ত 2, 3 এবং 4 নং টীকার উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, আকাশের সমুদ্র মানে হচ্ছে মেঘ। মেঘ এবং সমুদ্র পানিচক্রের মাধ্যমে একে অপরের সহিত মিলিত হয় কিন্ত তাদের মাঝে রয়েছে দূরত্ব ও ব্যবধান যা তারা কখনোই অতিক্রম করেনা।
[6]অর্থাৎ, বৃষ্টির পানির ফোঁটার।
[7]এক্ষেত্রে, بغي মানে হচ্ছে : অন্যায়, জুলুম, বিদ্রোহ, বাড়াবাড়ি …ইত্যাদি।
[8]অর্থাৎ, ভূমিতে এসে মানুষদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়না।
[9]সূরা আররহমান (সুরা নং 55) এর আয়াত নং 22 এ বলা হয়েছে যে,
يخرج منهما اللؤلؤ و المرجان
কিন্ত আমরা জানি যে, আকাশের সমুদ্র বা মেঘ থেকে কখনো اللؤلؤ বা المرجان নির্গত হয়না, বরং তা নির্গত হয় শুধুমাত্র ভূমির সমুদ্র থেকে, তাহলে উক্ত আয়াতটিতে কেন منهما বলা হল?
এ প্রশ্নটির উত্তরস্বরূপ এবং উক্ত আয়াতটির ব্যাখ্যাস্বরূপ আততাবারী যা বলেছেন তার মর্ম নিম্নরূপ,
"ভূমির সমুদ্র থেকে ঝিনুক (صدف) নির্গত হয়, এবং বৃষ্টির পানির ফোঁটার কারণে ঝিনুক তার মুখ খোলে, ফলে ঝিনুকের মুখে বিদ্যমান اللؤلؤ বা المرجان প্রকাশিত হয়, আর এ বিষয়টি বুঝানোর জন্যই উক্ত আয়াতটিতে منهما বলা হয়েছে। " (ক)
তবে উক্ত প্রশ্নটির একটি বিকল্প উত্তরও আছে, যা নিম্নরূপ,
"এক্ষেত্রে منهما এর প্রয়োগ সঠিক হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য সমুদ্রদ্বয়ের উভয়টি হতে اللؤلؤ বা المرجان নির্গত হওয়াটা জরুরি নয় বরং সমুদ্রদ্বয়ের কোনো একটি হতে اللؤلؤ বা المرجان নির্গত হলেই যথেষ্ট হবে, কেননা এক্ষেত্রে منهما দ্বারা من أحدهما উদ্দেশ্য হওয়াটা আরবি ভাষার নিয়ম অনুযায়ী বৈধ, গ্রহণযোগ্য এবং সঠিক।" (খ)
(ক) তাফসিরুত তাবারী (হিজর, 22/201 ও 208)
(খ) দেখুন : তাফসিরু ইবনে কাসির (দারু তাইয়িবাহ, 7/493), তাফসিরুল কুরতুবী (দারুল কুতুবিল মাসরিয়াহ, 17/163), তাফসিরুস সামআনী (দারুও ওয়াতান, 5/327),মাআনিয়ুল কোরআন ওয়া ইরাবুহু লিলজ্জাজায (আলিমুল কুতুব, 5/100), আলহুজ্জাতু লিলক্বোরাইস সাবআহ লিলফারিসী (দারুল মা'মুন,4/11), আহকামুল কোরআন লিলজাসসাস (দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, 3/553) … ইত্যাদি ইত্যাদি।
[10]এক্ষেত্রে إمراج মানে হচ্ছে "মিশ্রিত করা"।
[11]এক্ষেত্রে إفاضة মানে হচ্ছে : ঢেলে দেওয়া, প্রবাহিত করা, কানায় কানায় পূর্ণ করা, ভরে দেওয়া, পরিপূর্ণ করা, ছড়িয়ে পড়া, ধাবিত হওয়া, ছুটে যাওয়া।
[12]অর্থাৎ المرج এর الخلط অর্থটি অনুযায়ী।
[13]অর্থাৎ, সমুদ্র (যা কিনা লবণাক্ত) এবং নদী (যা কিনা মিষ্টি) একে অপরের সহিত মিলিত এবং মিশ্রিত হয়, কিন্ত তা সত্ত্বেও নদী লবণাক্ত হয়ে যায়না, এমনটা হওয়ার কারণ হচ্ছে উক্ত আয়াতটিতে বর্ণিত বাধা।