বিষয় : সবচেয়ে কম অদ্ভুত রাফিযী হাদিস।
লেখক : সামিউল হাসান তবিব আল-ইনফিরাদী।
(দ্রষ্টব্য : এই লেখাটিতে "রাফিযী" বলতে ইছনা-আশারিয়া শিয়ারা উদ্দেশ্য)
রাফিযী মুহাদ্দিস 'মুহাম্মাদ বিন ইয়াক্বুব আল-কুলাইনী' তার "আল-কাফী" গ্রন্থে বর্ণনা করেছে যে, _[1]
محمد بن يحيى، عن سعد بن عبد الله، عن إبراهيم بن محمد الثقفي، عن علي بن المعلى، عن أخيه محمد، عن درست بن أبي منصور، عن علي بن أبي حمزة عن أبي بصير، عن أبي عبد الله عليه السلام قال: لما ولد النبي صلى الله عليه وآله مكث أياما ليس له لبن، فألقاه أبو طالب على ثدي نفسه، فأنزل الله فيه لبنا فرضع منه أياما حتى وقع أبو طالب على حليمة السعدية فدفعه إليها
অনুবাদ :
আবু-আব্দিল্লাহ (আঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, "যখন নবী (ﷺ) জন্মগ্রহণ করেন, তখন তিনি কিছুদিন যাবত দুধ ব্যতীত থাকছিলেন, অতঃপর আবু-তালিব তাঁর নিজের স্তন নবীকে (ﷺ) প্রদান করেন, ফলে আল্লাহ আবু-তালিবের স্তনে দুধ নাযিল করেন এবং নবী (ﷺ) আবু-তালিবের স্তন হতে কিছুদিন যাবত স্তন্যপান করতে থাকেন, যতক্ষণ না আবু-তালিব, হালিমাহ আস-সা'দিয়াহ এর সহিত সাক্ষাত করেন এবং নবীকে (ﷺ) হালিমাহর নিকট হস্তান্তর করেন।"
* কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা :
রাফিযীদের মাঝে দুইটি প্রধান মাযহাব বিদ্যমান, যথা :-
(১) আল-আখবারিয়াহ (الأخبارية)
(২) আল-উসূলিয়াহ (الأصولية)
আল-আখবারিয়াহ মাযহাবের অনুসারীদেরকে "আখবারী"(أخباري) এবং আল-উসূলিয়াহ মাযহাবের অনুসারীদেরকে "উসূলী"(أصولي) বলা হয়।
আখবারীদের মতে, আল-কুলাইনী কর্তৃক রচিত "আল-কাফী" গ্রন্থে বিদ্যমান সকল হাদিস সহিহ। _[2]
অর্থাৎ, আখবারীদের নিকট উপর্যুক্ত হাদিসটি সহিহ।
অপরদিকে, উসূলীরা এটা বিশ্বাস করেনা যে আল-কাফীতে বিদ্যমান সকল হাদিস সহিহ, উসূলীদের মতে, আল-কাফীতে বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন মানের হাদিস বিদ্যমান যার মধ্য হতে কিছু নির্ভরযোগ্য এবং কিছু অনির্ভরযোগ্য, আল-কাফীতে বিদ্যমান কোন কোন বর্ণনা নির্ভরযোগ্য এবং কোন কোন বর্ণনা অনির্ভরযোগ্য তা নির্ণয় করার জন্য উসূলীরা রাফিযী রিজালশাস্ত্র এর উপর নির্ভর করে। আখবারীরা বিশ্বাস করে যে, আল-কাফীর ক্ষেত্রে রিজালশাস্ত্র অপ্রয়োজনীয়, অধর্তব্য এবং অবিবেচ্য।
উসূলীদের সামনে উপর্যুক্ত বর্ণনাটি উল্লেখকৃত হলে তারা বলে যে উপর্যুক্ত বর্ণনাটি নাকি যইফ। যইফ হওয়ার কারণ হিসেবে তারা বলে যে, উপর্যুক্ত বর্ণনাটির সনদে বিদ্যমান রাবী "আলী বিন আবি-হামযাহ আল-বাত্বাইনী" নাকি অনির্ভরযোগ্য।
"আলী বিন আবি-হামযাহ আল-বাত্বাইনী" এর নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে রাফিযী আলেমদের মাঝে মতভেদ এবং বিতর্ক বিদ্যমান।
অধিকাংশ রাফিযী আলেমদের মতে, আলী বিন আবি-হামযাহ আল-বাত্বাইনী একজন অনির্ভরযোগ্য রাবী।
পক্ষান্তরে, রাফিযী আলেমদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মতে, আলী বিন আবি-হামযাহ আল-বাত্বাইনী রাবী হিসেবে নির্ভরযোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য।
নিম্নে, এমন কিছু রাফিযী আলেমদের নাম উল্লেখ করা হল, যাদের নিকট আলী বিন আবি-হামযাহ আল-বাত্বাইনী রাবী হিসেবে নির্ভরযোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য।_[3][4][5][6][7][8]
(১) মুহাম্মাদ বিন ইয়াক্বুব আল-কুলাইনী
(২) আত-তাক্বী আল-মাজলিসী
(৩) আল-হির আল-আমিলী
(৪) হুসাইন আন-নুরী আত্ব-ত্ববরসী
(৫) আও-ওয়াহীদ আল-বাহবাহানী
(৬) আব্দুল্লাহ আল-মামক্বানী
(৭) রুহুল্লাহ আল-খুমাইনী
(৮) জাফার আস-সুবহানী
টীকাসমূহ :
[1]আল-কুলাইনী,আল-কাফী (1/448)
[2]আস-সুবহানী, কুল্লিয়াত ফি ইলমির রিজাল (পৃ/35)
[3]আবুল-হুদা আল-কালবাসী, সামাউল মাক্বাল ফি ইলমির রিজাল (1/395-468)
[4]জাফার আস-সুবহানী, কুল্লিয়াত ফি ইলমির রিজাল (পৃ/236)
[5]হুসাইন আন-নুরী আত্ব-ত্ববরসী, খতিমাতু মুস্তাদরাকিও-ওয়াসাইল (4/464-471)
[6]হাশিম আল-হাশিমী, হাওয়ার মাআ ফাদ্বলিল্লাহ হাওলায যুহরা (পৃ/158)
[7]আলী হুসাইন মাক্কী, বুহুস ফি ফিক্বহির রিজাল (পৃ/197)
[8]আল-কুলাইনী, আল-কাফী (1/8)