বিষয় : সুরা তাহরিম দাসী প্রসঙ্গে নাযিল হয়নি!
লেখক : সামিউল হাসান তবিব আল-ইনফিরাদী
সুরা তাহরিম নাযিলের কারণ বা প্রেক্ষাপট কি ছিল, তা নিয়ে উলামাদের মাঝে মতভেদ ঘটেছে। এ প্রসঙ্গে উলামাদের কর্তৃক প্রদানকৃত মতামতসমূহের ভিত্তিতে উলামাদেরকে মোট ৮ টি দলে বিভক্ত করা যায়।
প্রথম দল :
তাঁদের মতে সুরা তাহরিম নাযিলের প্রকৃত কারণ হল প্রসিদ্ধ দাসীর ঘটনাটি এবং তাঁরা মধুপানের ঘটনাটির পক্ষে বা বিপক্ষে কিছু বলেন নি।
দ্বিতীয় দল :
তাঁদের মতে সুরা তাহরিম নাযিলের প্রকৃত কারণ হল প্রসিদ্ধ দাসীর ঘটনাটি এবং মধুপানের ঘটনাটি ভুল।
তৃতীয় দল :
তাঁদের মতে সুরা তাহরিম নাযিলের প্রকৃত কারণ হল মধুপানের ঘটনাটি এবং তাঁরা দাসীর ঘটনাটির পক্ষে বা বিপক্ষে কিছু বলেন নি।
চতুর্থ দল :
তাঁদের মতে সুরা তাহরিম নাযিলের প্রকৃত কারণ হল মধুপানের ঘটনাটি এবং দাসীর ঘটনাটি ভুল।
পঞ্চম দল :
তাঁদের মতে, মধুপানের ঘটনা এবং দাসীর ঘটনা, এদুইটা ঘটনা একইসাথে একাধারে সম্মিলিতভাবে একযোগে একত্রে সুরা তাহরিম নাযিলের প্রেক্ষাপট বা কারণ। এই দুইটা ঘটনাই সত্য, সঠিক ও সংঘটিত ; উভয় ঘটনাই যথার্থ কোনোটিই ভুল বা অসত্য নয়।
ষষ্ঠ দল :
তাঁদের মতে সুরা তাহরিম দাসীর ঘটনা অথবা মধুপানের ঘটনার প্রেক্ষিতে নাজিল হয়নি বরং সুরা তাহরিম এদুটি প্রসিদ্ধ কারণ হতে সম্পুর্ণ ভিন্ন অন্যকোনো কারণে নাযিল হয়েছে।
সপ্তম দল :
তাঁদের মতে, সুরা তাহরিম মধুপানের ঘটনাটি অথবা দাসীর ঘটনাটি প্রসঙ্গে নাযিল হয়েছে। অর্থাৎ, দাসীর ঘটনা এবং মধুপানের ঘটনা এদুইটি ঘটনার মধ্য হতে কোনো একটা ঘটনা হচ্ছে সুরা তাহরিম নাযিলের প্রকৃত সঠিক কারণ, তবে সেই সঠিক ঘটনাটা আসলে কোনটা তা তাঁরা নির্দিষ্ট করে দেন নি, বরং তাঁরা তাফসির পাঠকের সামনে দুটি সাম্ভাব্য মতামত উপস্থাপন করাপুর্বক পাঠককে সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা প্রদান করেছেন।
অষ্টম দল :
তাঁদের মতে রাসুল (সা) নিজের উপর "কিছু" কে হারাম করে নিয়েছিলেন, এখন সেই "কিছু" হতে পারে দাসী, হতে পারে মধু, হতে পারে দাসী এবং মধু উভয়টাই, হতে পারে অন্যকিছু। তাঁরা এক্ষেত্রে রাসুল (সা) কোন বিষয়টাকে নিজের উপর হারাম করেছিলেন সেই ব্যাপারে এইমর্মে কোনো চুড়ান্ত মন্তব্য করেন নি যে তিনি (সা) অমুক জিনিসটাকে নিজের উপর হারাম করেছিলেন।
(মতামতসমূহের ভিত্তিতে বিভিন্ন দলে বিভক্তকরণ সমাপ্ত)
এই ছিল সুরা তাহরিম নাযিলের কারণ বা প্রেক্ষাপট সম্পর্কে উলামাদের সামগ্রিক অবস্থান। উপর্যুক্ত কথাসমূহের সত্যতা যাচাই করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকলে তাফসিরগ্রন্থগুলো ঘেটে দেখতে পারেন। _[1]
আমার এই লেখাটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা প্রমাণ করে দেখানো যে সুরা তাহরিম দাসী সংক্রান্ত প্রসিদ্ধ ঘটনাটির প্রেক্ষিতে বা কারণে নাজিল হয়নি।
কাজেই এবার উক্ত মূল উদ্দেশ্যের দিকে দৃষ্টিপাতকরাপুর্বক মূল আলোচনা আরম্ভ করা যাক।
যথার্থতা নির্ণয়ের স্বার্থে কিছুক্ষণের জন্য ধরে নিলাম যে উপর্যুক্ত পঞ্চম দলের উলামারা এক্ষেত্রে ঠিক।
অর্থাৎ, দাসীর ঘটনা এবং মধুপানের ঘটনা, উভয় ঘটনাই সুরা তাহরিম নাযিলের প্রেক্ষাপট বা কারণ হিসেবে যথার্থ, সত্য, সঠিক ও সংঘটিত। যার অর্থ দাঁড়ায় এই যে, সুরা তাহরিম মোট দুইটি ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপট বা কারণের প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে। এমনটা আমি মোটেও সঠিক হিসেবে দাবি করছিনা বা নিজের পক্ষ হতে বলছিনা, বরং এমনটা আমি কিছুক্ষণের জন্য সঠিক বলে ধরে নিচ্ছি উপর্যুক্ত পঞ্চম দলের উলামাদের কর্তৃক প্রদানকৃত মতটির যথার্থতা পরীক্ষা করার স্বার্থে।
দাসীর ঘটনার ব্যাপারে মোট তিনটি সহিহ/হাসান সনদবিশিষ্ট বর্ণনা আছে, প্রথমটি আনাস (রা) হতে বর্ণিত, দ্বিতীয়টি উমার (রা) হতে বর্ণিত এবং তৃতীয়টি ইবনু আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত। এই তিনটি বর্ণনা ব্যাতিত প্রসিদ্ধ দাসীর ঘটনাটি সম্পর্কে আর যা কিছুই বর্ণিত হয়েছে তার সবই সনদ-মতনের দিক দিয়ে যইফ/যইফুন জিদ্দান/মুনকার। _[2]
উক্ত তিনটি শক্তিশালী সনদবিশিষ্ট বর্ণনাগুলোতে যা কিছুই বলা হয়েছে তার সবকিছুকে একত্রিত করে এক জায়গায় এনে মিলিত করলে দাসীর ঘটনাটির যেই বিবরণ পাওয়া যায় তা নিম্নরূপ ;
"রাসুল (সা) এর অধীনে একজন দাসী ছিল, দাসীটির পরিচয় হচ্ছে এই যে তাঁর নাম ছিল মারিয়াহ (রা) এবং তিনি রাসুল (সা) এর সন্তান ইব্রাহিম (রা) এর মাতা ছিলেন। রাসুল (সা) এই দাসীটির সহিত অর্থাৎ মারিয়াহর (রা) সহিত সহবাস করতেন। কিন্ত আয়েশাহ (রা) ও হাফসাহ (রা) এব্যাপারটা পছন্দ করলেন না, যার ফলস্বরূপ রাসুল (সা) মারিয়াহ (রা) কে নিজের উপর হারাম করে নেন। মারিয়াহ (রা) কে নিজের উপর হারাম করে নেয়ার পর রাসুল (সা) হাফসাহ (রা) কে বললেন যে 'ইব্রাহিমের মা (অর্থাৎ মারিয়াহ) যে আমার উপর হারাম তা তুমি কাওকে বলবেনা', একথা শুনে হাফসাহ (রা) মুহাম্মদ (সা) এর উদ্দেশ্যে বললেন যে 'আপনি কি এমন একটা বিষয়কে নিজের উপর হারাম করে নিচ্ছেন যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন? ' রাসুল (সা) উত্তরে বললেম 'আল্লাহর কসম আমি মারিয়াহর নিকটবর্তীও হবনা।'অতঃপর রাসুল (সা) আর কখনোওই মারিয়াহর (রা) নিকটবর্তী হন নি, পরবর্তীতে যখন হাফসাহ (রা) আয়েশাহকে (রা) এব্যাপারটা জানিয়ে দেন এবং এপ্রসঙ্গে কোরআনের আয়াত নাযিল হয় তখন রাসুল (সা) মারিয়াহর (রা) নিকটবর্তীও না হয়ার কসমটি আল্লাহর ইচ্ছায় ভঙ্গ করে নেন এবং মারিয়াহর নিকটবর্তী হয়া পুনরায় আরম্ভ করেন, উল্লেখ্য যে এখানে নিকটবর্তী হয়া বলতে আক্ষরিক অর্থই উদ্দেশ্য, এরদ্বারা সহবাস করার প্রতি ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছেনা।"
শুধুমাত্র উপর্যুক্ত এই বিবরণটিই সহিহ বা হাসান সনদবিশিষ্ট, এর বাহিরে বা এরপাশাপাশি প্রসিদ্ধ দাসীর ঘটনাটি সম্পর্কে অতিরিক্ত আর যা কিছুই বলা হয় তার সবই যইফ!
দাসীর ঘটনা এবং মধুপানের ঘটনা, উভয় ঘটনাতেই এমন একটা অংশ আছে যেখানে মুহাম্মদ (সা) তাঁর কোনো একজন স্ত্রীর নিকট একটি বিশেষ কথা বর্ণনাকরাপুর্বক সেই স্ত্রীকে উক্ত বর্ণিত কথাটি গোপন রাখতে ও কাওকে না বলতে আদেশ করেছিলেন।
দাসীর ঘটনার ক্ষেত্রে কথাটি ছিল এই যে মারিয়াহ (রা) রাসুল (সা) এর উপর হারাম।এবং এই দাসীর ঘটনাটির ক্ষেত্রে যেই স্ত্রীর নিকট উক্ত কথাটি বর্ণনাকরাপুর্বক গোপন রাখার ও কাওকে না বলার আদেশ প্রদান করা হয়েছিল সেই স্ত্রীটি হলেন হাফসাহ (রা)।
মধুপানের ঘটনার ক্ষেত্রে কথাটি ছিল এই যে রাসুল (সা) নিছকই মধু পান করেছিলেন এবং আজ থেকে উনার জন্য মধু পান করা হারাম তিনি আর কখনোওই মধু পান করবেন না। এবং এই মধুপানের ঘটনাটির ক্ষেত্রে যেই স্ত্রীর নিকট উক্ত কথাটি বর্ণনাকরাপুর্বক গোপন রাখার ও কাওকে না বলার আদেশ প্রদান করা হয়েছিল সেই স্ত্রীটি হলেন আয়েশাহ (রা) _[3]
মুহাম্মদ (সা) যখন হাফসাহ (রা) এর নিকট মারিয়াহ (রা) কে নিজের উপর হারাম করে নেয়ার ব্যাপারটি বর্ণনা করে কাওকে না জানাতে বলছিলেন ঠিক তখনিই একই সময়ে একইসাথে সেই একই মুহুর্তে তিনি (সা) আয়েশাহ (রা) কে নিজের জন্য মধু হারাম করে নেয়ার ব্যাপারটি বর্ণনা করে কাওকে না জানাতে বলছিলেন, এমনটা হয়া সম্ভব নয় বরং অসম্ভব, কেননা একজন মানুষের পক্ষে একই সময়ে একইসাথে দুজন ভিন্ন ভিন্ন ব্যাক্তিকে উদ্দেশ্য করে দুটি ভিন্ন ভিন্ন কথা বর্ণনা করা সম্ভব নয়।
সুতরাং, মারিয়াহকে (রা) হারাম নেয়ার ব্যাপারটি হাফসাহর (রা) নিকট ব্যক্ত করে কাওকে জানাতে নিষেধ করা এবং মধু হারাম করে নেয়ার ব্যাপারটি আয়েশাহর (রা) নিকট ব্যক্ত করে কাওকে জানাতে নিষেধ করা, এদুইটি ঘটনা একইসময়ে একইসাথে সংঘটিত হয়নি, বরং এদুইটি ঘটনা দুটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সংঘটিত হয়েছে, এদুটি ঘটনার কোনো একটি সংঘটিত হয়ার পর অপরটি সংঘটিত হয়েছে।
সুরা তাহরিমের তৃতীয় আয়াতে বলা হয়েছে যে,
وَإِذْ أَسَرَّ ٱلنَّبِىُّ إِلَىٰ بَعْضِ أَزْوَٰجِهِۦ حَدِيثًۭا فَلَمَّا نَبَّأَتْ بِهِۦ وَأَظْهَرَهُ ٱللَّهُ عَلَيْهِ عَرَّفَ بَعْضَهُۥ وَأَعْرَضَ عَنۢ بَعْضٍۢ ۖ فَلَمَّا نَبَّأَهَا بِهِۦ قَالَتْ مَنْ أَنۢبَأَكَ هَـٰذَا ۖ قَالَ نَبَّأَنِىَ ٱلْعَلِيمُ ٱلْخَبِيرُ
এই আয়াতটিতে একদম সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে মুহাম্মদ (সা) তাঁর কোনো একজন স্ত্রীকে "একটি" কথা বলে তা গোপন রাখতে বলেছিলেন।
যদি উভয় ঘটনাই সঠিক ও সংঘটিত হয়ে থাকে, তাহলে ব্যাপারটা হবে অনেকটা এরকম যে মুহাম্মদ (সা) একবার আয়েশাহর (রা) নিকট মধু হারাম করে নেয়ার বিষয়টি ব্যক্ত করাপুর্বক গোপন রাখতে বলেছিলেন এবং আরেকবার হাফসাহর (রা) নিকট মারিয়াহকে (রা) হারাম করে নেয়ার বিষয়টি ব্যাক্ত করাপুর্বক গোপন রাখতে বলেছিলেন, স্পষ্টতই এক্ষেত্রে যদি দুটো ঘটনাই সংঘটিত হয়ে থাকে তাহলে ব্যক্ত করাপুর্বক গোপন রাখতে বলা কথার সংখ্যা হবে "দুই", মোটেই "এক" নয়!
সুরা তাহরিম অনুযায়ী রাসুল (সা) "একটি" কথা ব্যাক্ত করাপুর্বক তা গোপন রাখতে বলেছিলেন, উভয় ঘটনা সংঘটিত হয়ার তত্ত্ব অনুযায়ী রাসুল (সা) একটি নয় বরং "দুইটি" কথা ব্যক্তকরাপুর্বক কথাদ্বয় গোপন রাখতে বলেছিলেন।
বিরোধটা এখানে অত্যন্ত স্পষ্ট।
সুতরাং উভয় ঘটনা সঠিক ও সংঘটিত হয়ার মতটি ভুল! বরং প্রকৃতপক্ষে সুরা তাহরিম মধুপানের ঘটনা ও দাসীর ঘটনা এইদুইটি ঘটনার মধ্য হতে যেকোনো একটির কারণে বা প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে, উভয় ঘটনার কারণে বা প্রেক্ষিতে নয়!
সুরা তাহরিম উভয় ঘটনার কারণে বা প্রেক্ষিতে নাযিল হয়নি বরং মধুপানের ঘটনা ও দাসীর ঘটনা এইদুইটি ঘটনার মধ্য হতে যেকোনো একটির কারণে বা প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে, এটা আমার ব্যাক্তিগত মতামত নয়! বরং মূলধারার উলামাদের একটা বড় অংশের মতও এটাই! আমি এক্ষেত্রে কোনো বিচ্ছিন্ন মতের পক্ষে যুক্তি দিচ্ছিনা, বরং আমি যেই মতটির পক্ষে যুক্তি দিচ্ছি তা উলামাদের একটা বড় অংশ কর্তৃক প্রদানকৃত ও ব্যক্তকৃত।
অনেকে মনে করে যে সুরা তাহরিম নাযিলের প্রেক্ষাপট হিসেবে উভয় ঘটনা সংঘটিত হয়ার মতটিই নাকি অধিকাংশ আলেমদের মত, এটা একটা চরম ভুল ধারনা, বাস্তবতাবিরোধী ধারনা, প্রকৃতপক্ষে উভয় ঘটনা সংঘটিত হয়ার মতটি মোটেও অধিকাংশ আলেমদের মত নয় বরং এটা নিছকই আলেমদের একটা অংশের মত যেই অংশটি কিনা কোনোভাবেই অধিকাংশ উলামাদের প্রতিনিধিত্ব করেনা।সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করলে এরবিপরীতে দেখা যাবে যে অধিকাংশ আলেমরাই উভয় ঘটনা সঠিক ও সংঘটিত হয়ার মতটির পক্ষে অবস্থান নেন নি! তাছারা আলেমদের একটা বড় অংশ উভয় ঘটনা সংঘটিত হয়ার মতটির সুস্পষ্ট বিরোধীতা করেছেন।
যাই হোক, মূলকথা হচ্ছে এই যে সুরা তাহরিম দাসীর ঘটনা এবং মধুপানের ঘটনা এদুটি ঘটনার মধ্য হতে যেকোনো একটির কারণে বা প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে, উভয়টির কারণে নয়! হয় দাসীর ঘটনাটিই সঠিক, আর নাহয় মধুপানের ঘটনাটি সঠিক, যেকোনো একটা ঘটনা এক্ষেত্রে সঠিক।
এবং যেই একটি ঘটনার কারণে সুরা তাহরিম নাযিল হয়েছে সেই একটি ঘটনা হচ্ছে মধুপানের ঘটনাটি। কেননা মধুপান সংক্রান্ত হাদিসটি সনদ এবং মতন উভয় দিক দিয়েই অধিক সহিহ অধিক দৃঢ় অধিক শক্তিশালী, পক্ষান্তরে দাসীর ঘটনাটি সংক্রান্ত শক্তিশালী সনদবিশিষ্ট সেই বিশেষ তিনটি বর্ণনা সনদের দিক দিয়ে তূলনামুলকভাবে কম সহিহ কম দৃঢ় কম শক্তিশালী এবং মতনের দিক দিয়ে যইফ।
নিম্নে এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা আসছে।
দাসীর ঘটনাটির সহিহ বা হাসান সনদের বর্ণনাগুলো নিম্নরূপ,
১. আনাস (রা) এর বর্ণনা :
عن أنس بن مالك رضي اللّٰه عنه أن رسول اللّٰه ﷺ كانت له أمة يطؤها فلم تزل به عائشة و حفصة حتی حرمها علی نفسه فأنزل اللّٰه عز و جل يا أيها النبي لم تحرم ما أحل اللّٰه لك الی آخر الآية"
অর্থ : আনাস (রা) হতে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ (সা) এর একজন দাসী ছিল যার সহিত তিনি (সা) সহবাস করতেন, এতে আয়েশাহ (রা) ও হাফসাহ (রা) অসন্তুষ্ট হলেন যার ফলে তিনি (সা) দাসীটিকে নিজের উপর হারাম করে নেন, এবং এইপ্রসঙ্গেই আল্লাহ তায়ালা নাযিল করেন "হে নবী আপনি কেন তা হারাম করে নিচ্ছেন যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন....."।
হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আন-নাসাঈ নিম্নে উল্লেখিত এই সনদে,_[4]
أخبرني إبراهيم بن يونس بن محمد حرمي قال حدثنا أبي قال حدثنا حماد بن سلمة عن ثابت عن أنس
আন-নাসাঈ এর সুত্র ধরে উপর্যুক্ত এই একই সনদে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন দ্বিয়াউদ্দিন আল-মাক্বদিসী। [5]
দ্বিয়াউদ্দিন আল-মাক্বদিসী আরেকটি ভিন্ন সনদে হাম্মাদের সুত্রে আনাস (রা) হতে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, সেই ভিন্ন সনদটি নিম্নরূপ,
أخبرنا أبو هاشم الحسين بن محمد بن علي المعلم أن أبا الخير محمد بن أحمد الباغبان أخبرهم أنا أحمد بن عبد الرحمن بن محمد أنا أبو بكر أحمد بن مردويه الحافظ نا سليمان بن أحمد نا إبراهيم بن هاشم نا هدبة بن خالد نا حماد بن سلمة عن ثابت عن أنس بن مالك_[6]
আল-হাকিম নিম্নে উল্লেখিত এই সনদে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, _[7]
حدثني أبو عبد الله محمد بن أحمد بن بطة الأصبهاني ثنا عبد الله بن محمد بن زكريا الأصبهاني ثنا محمد بن بكير الحضرمي ثنا سليمان بن المغيرة ثنا ثابت عن أنس رضي الله عنه
আল-হাকিমের সুত্র ধরে উপর্যুক্ত এই একই সনদে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আল-বায়হাক্বী [8]
২. উমার (রা) এর বর্ণনা :
عن عمرَ قال: قال النبيُّ صلى الله عليه وسلم لحفصةَ: «لا تُحدِّثي أحدًا، وإنَّ أُمَّ إبراهيمَ عليَّ حرامٌ». فقالت: أَتُحرِّم ما أحلَّ اللهُ لك؟ قال: «فوالله لا أَقرَبُهَا». قلتُ: فلم تَقِرَّ بها نفسُها حتى أخبَرَتْ عائشةَ، فأنزل اللهُ عزَّ وجلَّ: {قَدْ فَرَضَ اللَّهُ لَكُمْ تَحِلَّةَ أَيْمَانِكُمْ}
অর্থ : উমার (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন যে নবি (সা) হাফসাহকে বলেছিলেন "তুমি একথা কাওকেই বলবেনা, নিশ্চয়ই উম্মু ইব্রাহিম আমার উপর হারাম", একথা শুনে হাফসাহ (রা) বললেন "আপনেকি তা হারাম করে নিচ্ছেন যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন?" তিনি (সা) উত্তরে বললেন "আল্লাহর কসম আমি তার (মারিয়াহর) নিকটবর্তীও হবনা "। আমি (উমার রা.) বলব যে অতঃপর হাফসাহ কথাটি নিজের কাছে গোপন রাখতে পারেনি, ফলে সে আয়েশাহকে কথাটা জানিয়ে দেয় ফলে আল্লাহ নাযিল করেন "ক্বদ ফারাদ্বাল্লাহু লাকুম তাহিল্লাতা আইমানিকুম"।
এই হাদিসটি আল-হাইসাম বিন কুলাইব তাঁর "মুসনাদ" গ্রন্থে নিম্নে উল্লেখিত এই সনদে বর্ণনা করেছেন,_[9]
الهيثم بن كليب في مسنده حدثنا أبو قلابة عبد الملك بن محمد الرقاشي حدثنا مسلم بن إبراهيم حدثنا جرير بن حازم عن أيوب عن نافع عن ابن عمر عن عمر
তাছারা আল-হাইসাম পর্যন্ত সনদ পৌছিয়ে এই একই সনদে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন দ্বিয়াউদ্দিন আল-মাক্বদিসী তাঁর 'আল-মুখতারাহ' গ্রন্থে। [10]
৩. ইবনু আব্বাস (রা) এর বর্ণনা :
আবু-বকর আহমদ বিন উমার আল-বাযযার তাঁর "মুসনাদ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে,
حدثنا بشر، قال: حدثنا ابن رجاء عن إسرائيل، عن مسلم، عن مجاهد، عن ابن عباس، رضي الله عنهما، {يا أيها النبي لم تحرم ما أحل الله لك} قال: نزلت هذه في سريته_[11]
অর্থ : আমাদের বিশর বর্ণনা করে বলেছেন যে আমাদের ইবনু রাজা বর্ণনা করেছেন ইসরাইল হতে তিনি মুসলিম হতে তিনি মুজাহিদ হতে তিনি ইবনু আব্বাস (রা) হতে যে তিনি (ইবনু আব্বাস) রা. বলেছেন যে "হে নবি আপনে কেন তা হারাম করছেন যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন" এই আয়াতটি নাযিল হয়েছে তাঁর (সা) দাসী প্রসঙ্গে।
দাসীর ঘটনাটি সংক্রান্ত উপর্যুক্ত তিনটি বর্ণনার সনদগুলো অবশ্যই সহিহ বা হাসান,এই বর্ণনাগুলোর সনদসমূহ কর্তৃক সহিহ বা হাসান হয়ার ব্যাপারটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই যে, দাসীর ঘটনা সংক্রান্ত উপর্যুক্ত তিনটি বর্ণনার সনদসমূহ এবং মধুপানের ঘটনাটির সনদসমূহের মধ্য হতে কোন ঘটনার সনদসমূহ তুলনামুলকভাবে অধিক শক্তিশালী বা অধিক দৃঢ়?
এপ্রশ্নের উত্তর হচ্ছে এই যে, এক্ষেত্রে মধুপানের ঘটনাটির সনদসমূহ দাসীর ঘটনাটি সংক্রান্ত উপর্যুক্ত বর্ণনাত্রয়ের সনদসমূহের তুলনায় তুলনামূলকভাবে অধিক শক্তিশালী অধিক দৃঢ় অধিক সহিহ।
যদিও উপর্যুক্ত বর্ণনাত্রয়ের সনদগুলো সহিহ বা হাসান। কিন্ত উক্ত সনদগুলোতে এমন কিছু নেতিবাচক বিষয়বস্তু বিদ্যমান রয়েছে যেগুলো দ্বারা এটা সাব্যস্ত হয় যে উপর্যুক্ত বর্ণনাত্রয়ের সনদগুলো মধুপানের ঘটনাটির সনদসমূহের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী কম দৃঢ়।
সেই নেতিবাচক বিষয়গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হল,
আনাস (রা) হতে বর্ণিত বর্ণনাটির দুটি চুড়ান্ত সুত্র রয়েছে, প্রথম চুড়ান্ত সুত্রটির একজন রাবী হলেন "হামমাদ বিন সালামাহ" এবং দ্বিতীয় চুড়ান্ত সুত্রের একজন রাবি হলেন "মুহাম্মদ বিন বুকাইর আল-হাযারমী।"
উমার (রা) হতে বর্ণিত বর্ণনাটির সনদে "আবু ক্বিলাবাহ আব্দুল মালিক বিন মুহাম্মদ আররাক্বক্বাশী" এবং "জারির বিন হাযিম" নামের দুজন রাবি আছেন এবং উমার (রা) এর এই বর্ণনাটির ক্ষেত্রে জারির বিন হাযিম এই বর্ণনাটি "আইয়ুব" হতে বর্ণনা করেছেন।
ইবনু আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত বর্ণনাটিতে একজন রাবি হচ্ছেন "বিশর বিন আদম আল-আসগ্বার।"
এখন,
আল-বায়হাক্বী, আবু হাতিম আর-রাযী, ইবনু হাজার, ইবনুল কিয়াল, ইবনুল আজামী সহ অন্যান্য বহু উলামারা উল্লেখ্য করেছেন যে নিজ জীবনের শেষের দিকে "হামমাদ বিন সালামাহ" এর মানসিক বিকৃতী ঘটেছিল। অপরদিকে আল-বোখারী এবং মুসলিম হামমাদের এই মানসিক বিকৃতী ঘটার ব্যাপারটা সম্পর্কে অবগত ছিলেন এবং হামমাদ কর্তৃক বর্ণিত হাদিস গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তাঁরা দুজন এবিষয়টি বিবেচনায় রাখতেন, হামমাদের মানসিক বিকৃতী ঘটার ব্যাপারটা নিয়ে আল-বোখারী ও মুসলিম সতর্ক ছিলেন।
…[12]
মুহাম্মদ বিন বুকাইর আল-হাযারমী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেছেন যে, "সে আমার নিকট ছুদুক (সত্যবাদী) তবে মাঝে মাঝে ভুল করে"[13] এবং ইবনু হাজার বলেছেন যে "সে ছুদুক (সত্যবাদী) এবং ভুল করে" [14]।
আল-আলাঈ, ইবনু রজব, ইবনু খুযাইমাহ, ইবনুল আজামী, ইবনু হাজার, আল-ঈরাক্বী, ইবনুস সালাহ, ইবনুল কিয়াল, আল-আবনাসী, ইবনুল আঈনী সহ অন্যান্য বহু উলামারা উল্লেখ্য করেছেন যে 'আবু ক্বিলাবাহ আর-রাক্বক্বাশী' জীবনের শেষের দিকে নিজ মানসিক ভারসম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। [15]
তাছারা মানসিক ভারসম্য হারানোর পুর্বেও আবু ক্বিলাবাহ আর-রাক্বক্বাশী এর মাঝে দুর্বলতা ও ভুল করার প্রবণতা ছিল।
আবু ক্বিলাবাহ সম্পর্কে,
আদ্ব-দ্বারাক্বুত্বনী বলেছেন যে,
"সত্যবাদী তবে সনদ ও মতন বর্ণনার ক্ষেত্রে প্রচুর ভুল করে, সে কোনো হাদিস এককভাবে একা বর্ণনা করলে তা দ্বারা ইহতিজাজ করা যাবেনা।" [16]
আবুল ক্বাসিম ইবনু মানিঈ বলেছেন যে,
"… সে নিজের স্বরণশক্তি দ্বারা হাদিস বর্ণনা করে যার ফলে তার পক্ষ হতে ভুলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। " [16]
ইবনু রজব আল-হাম্বলী বলেছেন যে,
"ইবনু খুযাইমাহ বলতেন যে আমাদের আবু ক্বিলাবাহ বসরায় ইখতিলাতের পুর্বে হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং বাগদাদের উদ্দেশ্যে যাত্রা আরম্ভ করেছেন। আমি (ইবনু রজব) বলব যে এর পাশাপাশি ইখতিলাতের পুর্বেও উনি এমনেতেই প্রচুর ভুলকারী ছিলেন। "[17]
ইবনু হাজার আল-আসক্বালানী বলেছেন যে "সে সত্যবাদী এবং ভুল করে"।[18]
আবু ইসহাক্ব আলহুয়াঈনী, আবু ক্বিলাবাহ সম্পর্কে আসা জারাহগুলোকে সমর্থন করেছেন। [19]
অপরদিকে, জারির বিন হাযিম কর্তৃক আইয়ুব হতে হাদিস বর্ণনা করা প্রসঙ্গে আহমাদ বিন হাম্বল বলেছেন যে,
"জারির বিন হাযিম আইয়ুব হতে বহু অদ্ভুত জিনিস বর্ণনা করে।"[20]
আবার বিশর বিন আদম আল-আসগ্বার সম্পর্কে,
ইবনু হাজার আল-আসক্বালানী বলেছেন যে "সে সত্যবাদী তবে তাঁর মধ্যে হালকা সমস্যা আছে।" [21]
আবু হাতিম আর-রাযী বলেছেন যে "সে শক্তিশালী নয়।"[22]
আদ্ব-দ্বারাক্বুত্বনী বলেছেন যে "সে শক্তিশালী নয়।"[23]
কিন্ত তবুও, উক্ত বর্ণনা তিনটির সনদ তো তবুও সহিহ বা হাসান পর্যায়েই আছে, এরমানে কি তাহলে এইনা যে উক্ত তিনটি বর্ণনা সহিহ বা হাসান? যদি উক্ত তিনটি বর্ণনা সহিহ বা হাসান হয় তাহলে এসব বর্ণনাতে বর্ণিত কথাগুলো কিভাবে ভুল হতে পারে?
এই প্রশ্নটির বিস্তারিত উত্তর নিম্নরূপ,
কোনো হাদিসের সনদ সহিহ বা হাসান হয়ার মানেই এইনা যে এর মতনকেও সহিহ বা হাসান হতে হবে, বরং এমনটাও হতে পারে এবং হয় যে একটা হাদিসের সনদ সহিহ বা হাসান কিন্ত তা সত্ত্বেও মতনটা যইফ[24]। সাধারণভাবে একটা হাদিসের সনদ সহিহ বা হাসান হলে এর মতনকেও সহিহ বা হাসান হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে এই সাধারণ নীতি সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটা হাদিসের সনদে কোনো সমস্যা না থাকলেও মতনে সমস্যা থাকে, ফলে সনদ সহিহ বা হাসান হয়া সত্ত্বেও মতন যইফ হয়।
উপর্যুক্ত তিনটি বর্ণনার সনদ যদিও সহিহ বা হাসান, কিন্ত বর্ণনাগুলোর মাতান প্রকৃতপক্ষে যইফ, কেননা এক্ষেত্রে উপর্যুক্ত বর্ণনাত্রয়ের মাতানে ইল্লত অর্থাৎ অস্পষ্ট ক্রুটি বিদ্যমান। এবং সেই অস্পষ্ট ক্রুটি বা ইল্লতটি হচ্ছে এই যে এই বর্ণনাগুলোর মাতান সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান অধিক সহিহ অধিক দৃঢ় অধিক শক্তিশালী মধুপানের ঘটনার হাদিসগুলোর বিরোদ্ধে যায়।
অর্থাৎ, উপর্যুক্ত বর্ণনাত্রয়ের সনদগুলো সহিহ বা হাসান হলেও মাতানগুলো যইফ।
আর যেহেতু মাতানগুলো যইফ সেহেতু প্রসিদ্ধ দাসীর ঘটনাটিও যইফ, কেননা দাসীর ঘটনাটির বিবরণ বর্ণনাত্রয়ের মাতানসমূহে বর্ণিত হয়েছে সনদগুলোতে নয়!
এপ্রসংগে এইমর্মে আপত্তি আসতে পারে যে : দাসীর ঘটনা এবং মধুপানের ঘটনা উভয় ঘটনাই সুরা তাহরিম নাযিলের কারণ হিসেবে সঠিক ও সংঘটিত, কাজেই এদুটো বর্ণনাকে পরস্পরের বিরোদ্ধে দাড় করিয়ে দাসীর ঘটনাটির বর্ণনাসমূহকে মতনের দিক দিয়ে যইফ বলে দেয়াটা সঠিক হবেনা।
উক্ত সাম্ভাব্য আপত্তিটির জবাব আমি এই লেখাটিতেই ইতিমধ্যে দিয়ে রেখেছি। আমার এই লেখাটি শুরু থেকে পড়তে পড়তে এখান পর্যন্ত আসলে অবশ্যই উক্ত সাম্ভাব্য আপত্তিটির জবাব পেয়ে যাওয়ার কথা। কাজেই এনিয়ে পুনরায় আবার আলোচনা করবনা।
যাই হোক, এক্ষেত্রে মূলধারার উলামাদের একটা উল্লেখ্যযোগ্য অংশের মতও এটাই যে প্রসিদ্ধ দাসীর ঘটনাটি সংক্রান্ত সকল বর্ণনা যইফ কেননা এসংক্রান্ত বর্ণনাগুলো সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান অধিক দৃঢ় অধিক শক্তিশালী অধিক সহিহ মধুপানের ঘটনার হাদিসের বিরোদ্ধে যায়। অর্থাৎ, উপরে আমার বলা কথাগুলো মোটেও নব্য আবিষ্কৃত কোনো ব্যাখ্যা বা মতামত নয়!
জামালুদ্দিন মুহাম্মদ ইবনু নুরুদ্দিন আল-ইয়ামনী বলেছেন যে,
قال بعضُ أهلِ العلمِ بالحديثِ: والصحيحُ في نزولِ هذهِ الآية أَنَّها في قِصَّةِ العَسَلِ، لا في قِصَّةِ مارِيَةَ، فلمْ تأتِ قِصَّةُ ماريةَ -رضيَ اللهُ تُعالى عنها - من طريقٍ صَحيح [25]
অর্থ - হাদিসশাস্ত্রের একদল আলেম বলেছেন যে : "এবং (সুরা তাহরিমের) এই আয়াতটির নাযিল হয়ার প্রেক্ষাপট হিসেবে সহিহ হলো এই যে তা মধুপানের ঘটনার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে, মারিয়াহর ঘটনাটির প্রেক্ষিতে নয়, মারিয়াহর (রা) ঘটনাটি সহিহ সুত্রে বর্ণিত হয়ে আসেনি।"
আলাউদ্দিন আলী বিন মুহাম্মদ আল-খাযিন বলেছেন যে,
قال العلماء الصحيح في سبب نزول الآية أنها في قصة العسل لا في قصة مارية المروية في غير الصحيحين ولم تأت قصة مارية من طريق صحيح [26]
অর্থ - উলামাগণ বলেছেন যে "এবং (সুরা তাহরিমের) এই আয়াতটির নাযিল হয়ার প্রেক্ষাপট হিসেবে সহিহ হলো এই যে তা মধুপানের ঘটনার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে, মারিয়াহর ঘটনাটির প্রেক্ষিতে নয় যা কিনা সহিহাইনের বাহিরে বর্ণিত হয়েছে, এবং মারিয়াহর ঘটনাটি সহিহ সুত্রে বর্ণিত হয়ে আসেনি। "
মুহাম্মদ আল-আমিন আল-হারারী বলেছেন যে,
قال العلماء الصحيح في سبب نزول الآية أنها في قصة العسل لا في قصة مارية المروية في غير الصحيحين ولم تأت قصة مارية من طريق صحيح [27]
অর্থ - উলামাগণ বলেছেন যে "এবং (সুরা তাহরিমের) এই আয়াতটির নাযিল হয়ার প্রেক্ষাপট হিসেবে সহিহ হলো এই যে তা মধুপানের ঘটনার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে, মারিয়াহর ঘটনাটির প্রেক্ষিতে নয় যা কিনা সহিহাইনের বাহিরে বর্ণিত হয়েছে, এবং মারিয়াহর ঘটনাটি সহিহ সুত্রে বর্ণিত হয়ে আসেনি। "
নিম্নে এমন কিছু উলামাদের নাম ও প্রাসঙ্গিক বক্তব্য উল্লেখ্য করা হল যারা কিনা মধুপানের অধিক সহিহ অধিক দৃঢ় অধিক শক্তিশালী হাদিসের উপর ভিত্তি করে দাসীর ঘটনাটিকে ভুল বলেছেন।
"আল-কাদ্বী আইয়াদ্ব বিন মুসা আস-সাবতী" বলেছেন যে,
الصحيح فى أمر العسل، لا فى قصة أم إبراهيم، كما جاء فى غير الصحيحين ، ولم يأت بتلك القصة بطريق صحيح [28]
অর্থ : সহিহ হচ্ছে এই যে তা মধুর বিষয়টি সংক্রান্ত, উম্মু ইব্রাহিমের ঘটনাটি সংক্রান্ত নয় যেমনটা সহিহাইনের বাহিরে বর্ণিত হয়েছে, এবং সেই ঘটনাটি সহিহ সুত্রে বর্ণিত হয়নি।
"সিরাজুদ্দিন আবুহাফস উমার ইবনুল মুলাক্বক্বিন" বলেছেন যে,
والصحيح أنها في العسل، وحديث مارية وتحريمها لم يأت من طريق جيدة.[29]
অর্থ : এবং সহিহ হল এই যে তা মধু সংক্রান্ত, এবং মারিয়াহ ও তাঁকে হারাম করে নেয়ার হাদিসটি উত্তম সুত্রে বর্ণিত হয়নি।
"বদরুদ্দিন মাহমুদ বিন আহমদ আল-আঈনী" বলেছেন যে,
والصحيح أنه في العسل، وحديث مارية وتحريمها لم يأت من طريق جيدة،[30]
অর্থ : এবং সহিহ হল এই যে তা মধু সংক্রান্ত, এবং মারিয়াহ ও তাঁকে হারাম করে নেয়ার হাদিসটি উত্তম সুত্রে বর্ণিত হয়নি।
"আবু মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিন ইব্রাহিম আল-আসিলী" বলেছেন যে,
قال الأصيلي: حديث حجاج أصح وأولى بظاهر كتاب الله تعالى، كما أن الصحيح في سبب نزول الآية أنها في قصة العسل لا في قصة مارية المروي في غير الصحيحين، ولم تأت قصة مارية من طريق صحيح. [31]
অর্থ : হাজ্জাজের হাদিসটি অধিক সহিহ ও আল্লাহর কিতাবের ব্যাহ্যিক দিকের সহিত অধিক সামঞ্জস্যপুর্ণ, একইভাবে আয়াতটি নাযিল হয়ার প্রেক্ষাপটের ক্ষেত্রে সহিহ হল এই যে তা মধুর ঘটনাটি প্রসঙ্গে নাযিল হয়েছে, মারিয়াহর ঘটনাটির প্রেক্ষিতে নাযিল হয়নি যা কিনা সহিহাইনের বাহিরে বর্ণিত হয়েছে, এবং মারিয়াহর ঘটনাটি সহিহ সুত্রে বর্ণিত হয়নি।
"মুহিউসুস সুন্নাহ আবু মুহাম্মদ আল-বাগ্বওই" বলেছেন যে,
فَفِيهِ دَلِيل علی أَن التَّحْرِيم وَقع على الْعَسَل، لَا على أمِّ وَلَده مَارِيَة الْقبْطِيَّة[32]
অর্থ : এবং এতে (মধুপানের ঘটনার হাদিসে) এইমর্মে দলিল রয়েছে যে হারাম সাব্যস্ত
করণটি ঘটেছিল মধুর উপর, তাঁর (সা) সন্তানের মা মারিয়াহ আল-ক্বিবতিয়াহ এর উপর নয়।
দ্রষ্টব্য : আল-বাগ্বওই একটি তাফসিরগ্রন্থ লিখেছেন যার নাম "মায়ালিমুত তানযিল", এই তাফসিরগ্রন্থটিতে তিনি উভয় ঘটনা সঠিক হয়ার মতটির পক্ষে যায় এমন বেশকিছু কথা লিখেছেন। আল-বাগ্বওই এর এই যেই উপর্যুক্ত বক্তব্যটি আমি এখানে উল্লেখ্য করেছি, এটি উনার নিজস্ব বক্তব্য, তিনি নিজে নিজ পক্ষ হতে নিজ গ্রন্থ 'শারহুস সুন্নাহ' তে এই কথাটি লিখেছেন। পক্ষান্তরে আল-বাগ্বওই এর তাফসিরগ্রন্থটি হচ্ছে আরেকজন ভিন্ন লেখক কর্তৃক রচিত আরেকটি ভিন্ন তাফসিরগ্রন্থ এর পুনবিন্যাসকৃত ও সংক্ষেপিত সংস্করণ বা রূপ, আল-বাগ্বওই মূলত অন্য একজন মুফাসসির কর্তৃক রচিত আরেকটি ভিন্ন তাফসিরগ্রন্থকে নতুনভাবে বিন্যাস্ত ও সংক্ষিপ্ত করে সেই অন্য তাফসির গ্রন্থটিরই একটি নতুন পুনবিন্যাসকৃত সংক্ষেপিত সংস্করণ হিসেবে নিজ তাফসিরগ্রন্থ 'মায়ালিমুত তানযিল' লিখেছেন।[33] সুতরাং নিজস্বতার দিক দিয়ে বিবেচনা করলে আল-বাগ্বওই এর উপর্যুক্ত বক্তব্যটিই তাঁর অধিক নিজস্ব অধিক আপন।
"আবু সুলাইমান হামদ বিন মুহাম্মদ আল-খাত্তাবী" বলেছেন যে,
وفي هذا الحديث دليل على أن يمين النبي صلى الله عليه وسلم إنما وقعت في تحريم العسل لا في تحريم أم ولده مارية القبطية كما زعمه بعض الناس [34]
অর্থ : এবং এই হাদিসটিতে (মধুপানের হাদিসটিতে) এইমর্মে দলিল রয়েছে যে নবী (সা) এর শপথটি মধু হারামকরণের ক্ষেত্রে সংঘটিত হয়েছিল, তাঁর সন্তানের মাতা মারিয়াহ আল-ক্বিবতিয়াহ কে হারামকরণের ক্ষেত্রে নয় যেমনটা কিছু মানুষ দাবি করে থাকে।
"মাওফিক্বুদ্দিন আবু মুহাম্মদ ইবনু কুদ্দামাহ আল-হানবলী" বলেছেন যে,
فإنْ قيل: إنّما نَزَلَت الآيةُ فى تَحْريمِ مارِيَةَ القِبْطِيَّة، كذلك قال الحسنُ، وقَتادَةُ . قُلنا: ما ذَكَرْناه أَصَحُّ؛ فإنَّه مُتَّفَقٌ عليه، وقولُ عائِشَةَ صاحِبَةِ القِصَّةِ الحاضِرَةِ للتَّنْزيلِ، المشاهِدَةِ للحالِ، أَوْلَى [35]
অর্থ -
যদি আপত্তি করে বলা হয় যে : অবশ্যই আয়াতটি মারিয়াহ আল-ক্বিবতিয়াহকে হারামকরণ প্রসঙ্গে নাযিল হয়েছে, আল-হাসান এবং ক্বাতাদাহ ও অনুরূপ বলেছেন। তাহলে আমরা জবাবস্বরূপ বলব যে : আমরা যা (অর্থাৎ মধুপানের ঘটনা) উল্লেখ্য করেছি তা অধিক সহিহ, সেটার (মধুপানের ঘটনার) সহিহ হয়ার উপর তো সকলের ঐক্যমত আছে! এবং আয়েশাহ (রা), যিনি কিনা কাহিনীটির একজন মূল চরিত্র, নাযিল হয়ার প্রেক্ষাপটে সরাসরিভাবে উপস্থিত, প্রকৃত বাস্তবতার প্রত্যক্ষদর্শী, তাঁর বক্তব্যই অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।
"শামসুদ্দিন আব্দুর রহমান ইবনু আবি উমার মুহাম্মদ আল-হানবলী" বলেছেন যে,
فإنْ قيل: إنّما نَزَلَت الآيةُ فى تَحْريمِ مارِيَةَ القِبْطِيَّة، كذلك قال الحسنُ، وقَتادَةُ . قُلنا: ما ذَكَرْناه أَصَحُّ؛ فإنَّه مُتَّفَقٌ عليه، وقولُ عائِشَةَ صاحِبَةِ القِصَّةِ الحاضِرَةِ للتَّنْزيلِ، المشاهِدَةِ للحالِ، أَوْلَى [36]
অর্থ -
যদি আপত্তি করে বলা হয় যে : অবশ্যই আয়াতটি মারিয়াহ আল-ক্বিবতিয়াহকে হারামকরণ প্রসঙ্গে নাযিল হয়েছে, আল-হাসান এবং ক্বাতাদাহ ও অনুরূপ বলেছেন। তাহলে আমরা জবাবস্বরূপ বলব যে : আমরা যা (অর্থাৎ মধুপানের ঘটনা) উল্লেখ্য করেছি তা অধিক সহিহ, সেটার (মধুপানের ঘটনার) সহিহ হয়ার উপর তো সকলের ঐক্যমত আছে! এবং আয়েশাহ (রা), যিনি কিনা কাহিনীটির একজন মূল চরিত্র, নাযিল হয়ার প্রেক্ষাপটে সরাসরিভাবে উপস্থিত, প্রকৃত বাস্তবতার প্রত্যক্ষদর্শী, তাঁর বক্তব্যই অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।
মূল আলোচনা এখানে এসে সমাপ্ত হল।
পরিশিষ্ট :
যদি মধুপানের ঘটনাটির পাশাপাশি দাসীর ঘটনাটিও সঠিক ও সংঘটিত হয়ে থাকে অর্থাৎ যদি উভয় ঘটনা সংঘটিত হয়ার তত্ত্বটি সঠিক হয়েও থাকে, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই।
কেননা দাসীর ঘটনাটির অংশ হিসেবে প্রচলিত রসালো, নাটকীয় ও বিব্রতকর অংশগুলো অপ্রামাণ্য অনির্ভরযোগ্য যইফ। দাসীর ঘটনাটির সহিহ বা হাসান সনদবিশিষ্ট অংশগুলোর কোথাও উইসব রসালো, নাটকীয় ও বিব্রতকর অংশগুলো নেই।
আরেকটা বিষয়,
বিপুল সংখ্যাক সহিহ হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত যে রাসুল (সা) দাস দাসীদের প্রতি অস্বাভাবিক মাত্রায় দয়ালু ছিলেন। কাজেই এমনটা হয়া সম্ভবই না যে তিনি (সা) মারিয়াহ (রা) কে অত্যাচার করে বা কোনোকিছুর ভয় দেখিয়ে সহবাসে বাধ্য করবেন।তাছারা রাসুল (সা) মারিয়াহ (রা) কে অত্যাচার করে বা ভয় দেখিয়ে সহবাসে বাধ্য করেছিলেন এমন কোনো প্রমাণও নেই।
সুত্রসমূহ :
[1]https://shamela.ws/category/3
[2]দেখুন : 'সালিম বিন আব্দুল্লাহ আল-হিলালী' এবং 'মুহাম্মদ বিন মুসা আলে নাসর' কর্তৃক রচিত গ্রন্থ "আল-ইস্তিআব ফি বায়ানিল আসবাব" এর তৃতীয় খন্ডের পৃষ্ঠা নম্বর 433 থেকে আরম্ভ করে 450 পর্যন্ত।
[3] সেই স্ত্রীটি যে আয়েশাহ (রা) ই ছিলেন তা কোনো বর্ণনাতেই সুস্পষ্টভাবে বলা হয়নি। তবে নিম্নে উল্লেখিত এই রেওয়ায়াতটি দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে সেই স্ত্রীটি হচ্ছেন আয়েশাহ (রা)।
আন-নাসাঈ (রহ) তাঁর "আস-সুনানুল কুবরা" (10/307) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে,
أخبرنا قتيبة بن سعيد، حدثنا حجاج، عن ابن جريج، عن عطاء، أنه سمع عبيد بن عمير، قال: سمعت عائشة، زوج النبي صلى الله عليه وسلم تزعم أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يمكث عند زينب ويشرب عندها عسلا، فتواصيت وحفصة , أيتنا ما دخل النبي صلى الله عليه وسلم عليها فلتقل: إني أجد منك ريح مغافير، فدخل على إحداهما , فقالت ذلك له، فقال: «بل شربت عسلا عند زينب»
, وقال لي: «لن أعود له» , فنزلت {لم تحرم ما أحل الله لك} [التحريم: ١]، {إن تتوبا إلى الله}
[التحريم: ٤]، {وإذ أسر النبي إلى بعض أزواجه حديثا} [التحريم: ٣] , لقوله: «بل شربت عسلا»
এই বর্ণনাটির وقال لي: «لن أعود له» অংশটি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে সেই স্ত্রীটি হলেন আয়েশাহ (রা)। এব্যাপারটা আরো ভালোভাবে বুঝতে চাইলে উক্ত রেওয়ায়াতটির সহিত মধুপানের ঘটনাটির ব্যাপারে বর্ণিত হয়া অন্যান্য রেওয়ায়াতগুলোকে তুলনা করে দেখুন।
[4]সুনানুন নাসাঈ আল-কুবরা (10/307,8/157) এবং সুনানুন নাসাঈ আল-মুজতাবা (7/71)।
[5]আল-মাকদেসী,আল-মুখতারাহ (5/69)।
[6]আল-মাকদেসী,আল-মুখতারাহ (5/70)।
[7]মুস্তাদরাকুল হাকেম (2/535)।
[8]আল-বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা (7/578) এবং আল-খিলাফিয়াত (হা/4413)।
[9]ইবনু কাসির, আত-তাফসির (8/159) এবং মুসনাদুল-ফারুক (2/604)।
[10]আল-মাকদিসী, আল-মুখতারাহ (1/299-300)
[11]আল-বাহরুয যাখার মুসনাদুল বাযযার (11/197)
[12]আল-বায়হাক্বী, আল-খিলাফিয়াত (2/50,4/285) এবং আস-সুনানুল কুবরা (8/46) এবং আল-মারিফাহ (2/212) ; ইবনু হাজার, তাহযিবুত তাহযিব (3/14) এবং আত-তাক্বরিব (রাবি/1499); ইবনু আবি-হাতিম, আজ-জারহু ওয়াত তা'দিল (9/66); ইবনুল কিয়াল, আল-কাওয়াকিবুন নাইরাত (পৃ/460) ; ইবনুল-আজামী,আল-ইগ্বতিবাত্ব (রাবি/28) … ইত্যাদি ইত্যাদি।
[13]ইবনু আবি-হাতিম, আজ-জারহু ওয়াত তাদিল (7/214)
[14]ইবনু হাজার,তাক্বরিবুত তাহযিব (রাবি/5765)
[15]আল-আলাঈ, কিতাবুল মুখতালিতিঈন (রাবি/31);ইবনু রজব, শারহু ইলালিত তিরমিযী (2/251);ইবনুল-আজামী, আল-ইগতিবাত (রাবি/65) ;ইবনুল-কিয়াল, আল-কাওয়াকিবুন নাইরাত (পৃ/309) ;ইবনুল-আইনী, শারহুল আলফিয়াহ (পৃ/376) ;আল-ঈরাক্বী, আত-তাক্বইইদ ওয়াল ইদ্বাহ (পৃ/362-363);ইবনু হাজার, আত-তাহযিব (6/419-421) এবং আত-তাক্বরিব (1/522) … ইত্যাদি ইত্যাদি।
[16]সাওয়ালাতুল হাকিম লিদ্বদ্বারাক্বুত্বনী (পৃ/131)
[17]ইবনু রজব আল-হাম্বলী, শারহু ইলালিত তিরমিযী (2/251)
[18]ইবনু হাজার,আত-তাক্বরিব (রাবি/4210)
[19]আবু-উমার, নাছলুন নাবাল (4/318-319)
[20]ইবনু রজব, শারহু ইলালিত তিরমিযী (2/513) & ফাতহুল বারী (7/370-371)
[21]ইবনু হাজার,আত-তাক্বরিব (1/167)
[22]ইবনু আবি হাতিম, আজ-জারহু ওয়াত তাদিল (2/351) ; ইবনু হাজার, তাহযিবুত তাহযিব (1/224) ; আল-মিযযী, তাহযিবুল কামাল (4/90)।
[23]ইবনু হাজার, তাহযিবুত তাহযিব (1/224) ; মোগলতাঈ, ইকমালু তাহযিবিল কামাল (2/389)।
[24]https://www.islamweb.net/amp/ar/fatwa/356587/
[25]ইবনু নুরুদ্দিন, তাইসিরুল বায়ান (4/276)
[26]আল-খাযিন, লুবাবুত তা'ওইল (4/312)
[27]আল-হারারী, তাফসিরু হাদাইক্বির রুহ ওয়ার রাইহান (29/453)
[28]আইয়াদ্ব, ইকমালুল মু'লিম বিফাওয়াইদে মুসলিম (5/29)
[29]ইবনুল মুলাক্বক্বিন, আত-তাওদ্বিহ লিশারহিল জামিঈস সহিহ (23/424)
[30]আল-আঈনী, উমদাতুল ক্বারী (19/247)
[31]ইবনু রাসলান, শারহু সুনানে আবি দাউদ (15/233)
[32]আল-বাগ্বওই, শারহুস সুন্নাহ (9/227)
[33] ইবনু তাইমিয়াহ, মাজমুয়ুল ফাতাওয়া (13/354) & আল-মুকাদ্দামাহ ফি উসুলিত তাফসির (পৃ/31) & মিনহাজুস সুন্নাহ (7/12)
[34]আল-খাত্তাবী, মাআলিমুস সুনান (4/272)
[35]ইবনু কুদ্দামাহ, আল-মুগনী (13/466-467)
[36]ইবনু আবি উমার, আশ-শারহুল কাবির (27/506)