বিষয় : ইবনু উমার (রা) কর্তৃক বাজারে একজন দাসীর দেহের বিভিন্ন অংশে স্পর্শকরণ সম্পর্কে আলোচনা।
লেখক : সামিউল হাসান তবিব আল-ইনফিরাদী
0. সূচীপত্র :-
1. ভূমিকা।
2. বর্ণনাগুলোকে উল্লেখকরণ।
2.1. সহিহ ও হাসান সনদের বর্ণনাগুলোকে উল্লেখকরণ।
2.2. যইফ সনদের বর্ণনাগুলোকে উল্লেখকরণ।
2.2.1. উক্ত যইফ সনদগুলোর যইফ হওয়ার কারণগুলোকে উল্লেখকরণ।
3. বর্ণনাগুলোর নির্ভরযোগ্যতা সংক্রান্ত কিছু কথা।
4. একটি উল্লেখ্য বিষয়কে উল্লেখকরণ।
5. ইবনু উমার (রা) উক্ত কাজটি কেন করেছিলেন?
6. পরিশিষ্ট।
7. টীকাসমূহ।
1.ভূমিকা :-
বর্ণিত হয়েছে যে, সাহাবী ইবনু উমার (রা) একটি দাসীকে ক্রয়করণের সময় বাজারে অন্যান্য লোকদের সামনে উক্ত দাসীটির দেহের বিভিন্ন অংশে স্পর্শ করেছিলেন এবং উক্ত দাসীটির দেহের সামান্য কিছু অংশকে বস্ত্রমুক্ত করেছিলেন।
এই লেখাটিতে, ইবনু উমার (রা) সম্পর্কে বর্ণিত হওয়া উক্ত ঘটনাটি প্রসঙ্গে আলোচনা করা হবে।
2. বর্ণনাগুলোকে উল্লেখকরণ :-
আলোচনাধীন উক্ত ঘটনাটি অনেকগুলো সনদে এবং অনেকগুলো মতনে বর্ণিত হয়েছে। উক্ত সনদগুলোর মধ্যে কিছু সহিহ, কিছু হাসান এবং কিছু যইফ।
2.1. সহিহ ও হাসান সনদের বর্ণনাগুলোকে উল্লেখকরণ :-
আলোচনাধীন উক্ত ঘটনাটির জন্য বর্ণিত সহিহ এবং হাসান সনদের বর্ণনাগুলো নিম্নরূপ।
এক.
আবু-বকর আল-বাইহাক্বী তাঁর "আস-সুনানুল কুবরা" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, _[1]
أخبرنا أبو الحسين بن بشران العدل، ببغداد، أنا إسماعيل بن محمد الصفار، ثنا الحسن بن علي بن عفان، ثنا ابن نمير، عن عبيد الله بن عمر، عن نافع، عن ابن عمر، " أنه كان إذا اشترى جارية كشف عن ساقها ووضع يده بين ثدييها، وعلى عجزها " وكأنه كان يضعها عليها من وراء الثوب
অর্থ : আমাদের নিকট আবুল-হুসাইন বিন বিশরান আল-আদাল বাগদাদে বর্ণনা করেছেন যে আমাদের নিকট ইসমাঈল বিন মুহাম্মাদ আস-সফফার বর্ণনা করেছেন যে আমাদের নিকট আল-হাসান বিন আলী বিন আফফান বর্ণনা করেছেন যে আমাদের নিকট ইবনু নুমাইর বর্ণনা করেছেন উবাইদুল্লাহ বিন উমার হতে (এবং তিনি) নাফি হতে (এবং তিনি) ইবনু উমার হতে যে, তিনি (ইবনু উমার) যখন একটি দাসীকে ক্রয় করেছিলেন (তখন) তিনি (ইবনু উমার) তার (দাসীটির) জঙ্ঘা থেকে বস্ত্র সরিয়েছিলেন এবং তিনি (ইবনু উমার) তার (ইবনু উমার এর) হাত তার (দাসীটির) দুই স্তনের মাঝখানে এবং নিতম্বের উপরে রেখেছিলেন। মনে হয় যেন, তিনি (ইবনু উমার) তার (দাসীটির) উপর সেটাকে (ইবনু উমার এর হাতটাকে) কাপড়ের পিছন থেকে (অর্থাৎ কাপড়ের উপর দিয়ে) রাখছিলেন।
দুই.
আবু-বকর ইবনু-আবি-শাইবাহ তাঁর "আল-মুসান্নাফ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে,_[2]
حدثنا جرير، عن منصور، عن مجاهد، قال: كنت مع ابن عمر أمشي في السوق فإذا نحن بناس من النخاسين قد اجتمعوا على جارية يقلبونها، فلما رأوا ابن عمر تنحوا وقالوا: ابن عمر قد جاء، فدنا منها ابن عمر فلمس شيئا من جسدها، وقال: «أين أصحاب هذه الجارية، إنما هي سلعة
অর্থ : আমাদের নিকট জারির বর্ণনা করেছেন মানসুর হতে (এবং তিনি) মুজাহিদ হতে যে, তিনি (মুজাহিদ) বলেছেন যে : আমি (মুজাহিদ) ইবনু উমার এর সাথে বাজারে হাঁটছিলাম। অতঃপর আমরা দাস-ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত কিছু লোকদের নিকট আসলাম, তারা (উক্ত দাস-ব্যবসায়ীরা
) একটি দাসীর নিকট একত্রিত হয়ে তাকে (উক্ত দাসীটিকে) পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষণ করছিল। যখন তারা (উক্ত দাস-ব্যবসায়ীরা) ইবনু উমার (রা) কে দেখল তখন তারা (উক্ত দাস-ব্যবসায়ীরা
) সরে গেল এবং বলল যে : ইবনু উমার এসেছেন। ইবনু উমার তার (উক্ত দাসীটির) কাছে আসলেন এবং তার (উক্ত দাসীটির) দেহের কিছু অংশকে স্পর্শ করলেন, এবং বললেন যে : এই দাসীটির সহিবরা (অর্থাৎ মালিকরা বা সাথীরা) কোথায়? নিশ্চয়ই সে (উক্ত দাসীটি) পণ্য।
তিন.
আবু-বকর ইবনু-আবি-শাইবাহ তাঁর "আল-মুসান্নাফ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, _[3]
نا علي بن مسهر، عن عبيد الله، عن نافع، عن ابن عمر: «أنه كان إذا أراد أن يشتري الجارية وضع يده على أليتيها، وبين فخذها، وربما كشف عن ساقيها»
অর্থ : আমাদের নিকট আলী বিন মুসহির বর্ণনা করেছেন উবাইদুল্লাহ হতে (এবং তিনি) নাফি হতে (এবং তিনি) ইবনু উমার হতে যে, তিনি (ইবনু উমার) যখন একটি দাসীকে ক্রয় করতে চেয়েছিলেন (তখন) তিনি (ইবনু উমার) তার (ইবনু উমার এর) হাতকে তার (উক্ত দাসীটির) নিতম্বের উপর এবং তার (উক্ত দাসীটির) ঊরুর মাঝে রেখেছিলেন, এবং সম্ভবত তিনি (ইবনু উমার) তার (উক্ত দাসীটির) জঙ্ঘা থেকে কাপড় সরিয়েছিলেন।
চার.
আব্দুর-রযযাক্ব আস-সনআনী তাঁর "আল-মুসান্নাফ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, _[4]
عن عبد الله بن عمر، عن نافع، عن ابن عمر، ومعمر، عن أيوب، عن نافع، عن ابن عمر كان إذا أراد أن يشتري جارية، فراضاهم على ثمن، وضع يده على عجزها، وينظر إلى ساقيها وقبلها - يعني بطنها ". عن معمر، عن الزهري، عن سالم، عن ابن عمر مثله
অর্থ : আব্দুল্লাহ বিন উমার হতে (তিনি) নাফি হতে (তিনি) ইবনু উমার হতে, এবং মা'মার হতে (তিনি) আইয়ুব হতে (তিনি) নাফি হতে (তিনি) ইবনু উমার হতে (বর্ণনা করেছেন যে,) তিনি (ইবনু উমার) যখন একজন দাসীকে ক্রয় করতে চেয়েছিলেন, তখন তিনি (ইবনু উমার) তাদেরকে (দাস-ব্যবসায়ীদেরকে) একটি দামের উপর সন্তুষ্ট করেছিলেন, এবং তিনি (ইবনু উমার) তার (ইবনু উমারের) হাতকে তার (উক্ত দাসীটির) নিতম্বের উপর রেখেছিলেন। এবং তিনি (ইবনু উমার) তার (উক্ত দাসীটির) জঙ্ঘা ও পেট এর দিকে তাকাচ্ছিলেন। মা'মার হতে (তিনি) আয-যুহরী হতে (তিনি) সালিম হতে (তিনি) ইবনু উমার হতে এটার অনুরূপ (বর্ণনা করেছেন)।
উল্লেখ্য যে : উপর্যুক্ত এই বর্ণনাটিতে মোট তিনটি সনদ বিদ্যমান। উক্ত তিনটি সনদের মধ্যে, প্রথম সনদটি "আব্দুল্লাহ বিন উমার বিন হাফস" এর কারণে যইফ [5], দ্বিতীয় সনদটি সহিহ, এবং তৃতীয় সনদটি হাসান।
পাঁচ.
আব্দুর-রযযাক আস-সনআনী তাঁর "আল-মুসান্নাফ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে,_[4]
عن معمر، عن عمرو بن دينار، عن مجاهد قال: مر ابن عمر: على قوم يبتاعون جارية، فلما رأوه وهم يقلبونها، أمسكوا عن ذلك، فجاءهم ابن عمر، فكشف عن ساقها، ثم دفع في صدرها، وقال: «اشتروا»
অর্থ : মা'মার হতে (তিনি) উমার বিন দিনার হতে (তিনি) মুজাহিদ হতে (বর্ণনা করেছেন যে,) তিনি (মুজাহিদ) বলেছেন যে, ইবনু উমার একটি দলের নিকট দিয়ে গমন করছিলেন যারা (উক্ত দলটি) একটি দাসীকে ক্রয় করছিল, তারা (উক্ত দলটি) তাকে (উক্ত দাসীটিকে) পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষণ করছিল। অতঃপর যখন তারা (উক্ত দলটি) তাঁকে (ইবনু উমার কে) দেখতে পেল, তখন তারা (উক্ত দলটি) তার (উক্ত দাসীটির) নিকট থেকে সরে গেল, অতঃপর ইবনু উমার তাদের (উক্ত দলটির) নিকট আসলেন, অতঃপর তিনি (ইবনু উমার) তার (উক্ত দাসীটির) জঙ্ঘা থেকে কাপড় সরালেন, অতঃপর তিনি (ইবনু উমার) তার (উক্ত দাসীটির) বুকে ধাক্কা দিলেন এবং বললেন যে : ক্রয় কর।
ছয়.
আব্দুর-রযযাক আস-সনআনী তাঁর "আল-মুসান্নাফ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে,_[4]
عن ابن عيينة، عن عمرو بن دينار، عن مجاهد قال: كنت مع ابن عمر في السوق، فأبصر بجارية تباع، فكشف عن ساقها، وصك في صدرها، وقال: «اشتروا». يريهم أنه لا بأس بذلك
অর্থ : ইবনু উয়াইনাহ হতে (তিনি) উমার বিন দিনার হতে (তিনি) মুজাহিদ হতে (বর্ণনা করেছেন যে,) তিনি (মুজাহিদ) বলেছেন যে, আমি ইবনু উমার এর সাথে বাজারে ছিলাম। এবং তিনি (ইবনু উমার) বিক্রয় করা হচ্ছে এমন একটি দাসীকে দেখতে পেলেন, অতঃপর তিনি (ইবনু উমার) তার (উক্ত দাসীটির) জঙ্ঘা থেকে কাপড় সরালেন এবং তার (উক্ত দাসীটির) বুকে আঘাত করলেন এবং বললেন যে : ক্রয় কর। তাঁরা মনে করেন যে এতে কোনো সমস্যা নেই।
2.2. যইফ সনদের বর্ণনাগুলোকে উল্লেখকরণ :-
আলোচনাধীন উক্ত ঘটনাটির জন্য বর্ণিত যইফ সনদের বর্ণনাগুলো নিম্নরূপ।
উল্লেখ্য যে, নিম্নে উল্লেখকৃত যইফ সনদের বর্ণনাগুলোর প্রত্যেকটাই আব্দুর-রযযাক্ব আস-সনআনী এর "আল-মুসান্নাফ" এ বর্ণিত হয়েছে। [4]
এক.
عن ابن جريج، عن عطاء قال: قلت له: الرجل يشتري الأمة، أينظر إلى ساقيها، وقد حاضت، أو إلى بطنها؟ قال: «نعم»، قال عطاء: كان ابن عمر «يضع يده بين ثدييها، وينظر إلى بطنها، وينظر إلى ساقيها، أو يأمر به»
অর্থ : ইবনু জুরাইজ হতে (তিনি) আতা (ইবনু আবি-রাবাহ) হতে (বর্ণনা করেছেন যে,) আমি (ইবনু জুরাইজ) তাঁকে (আতা ইবনু আবি-রাবাহ কে) বললাম যে, একজন ব্যক্তি একটি দাসী ক্রয় করল, এবং সে (উক্ত দাসীটি) ঋতুবতী হল, এখন সে (উক্ত ব্যক্তিটি) কি তার (উক্ত দাসীটির) জঙ্ঘাদ্বয়ের দিকে তাকাবে? নাকি তার (উক্ত দাসীটির) পেটের দিকে (তাকাবে)? তিনি (আতা) বললেন : হ্যা। আতা বললেন যে : ইবনু উমার তার (ইবনু উমার এর) হাত তার (একটি দাসীর) দুই স্তনের মাঝখানে রাখছিলেন এবং তার (উক্ত দাসীটির) পেটের দিকে তাকাচ্ছিলেন, এবং তার (উক্ত দাসীটির) জঙ্ঘাদ্বয়ের দিকে তাকাচ্ছিলেন, অথবা তিনি এমনটা করার নির্দেশ দিচ্ছিলেন।
দুই.
أخبرنا ابن جريج قال: أخبرني عمرو - أو أبو الزبير -، عن ابن عمر: " أنه وجد تجارا مجتمعين على أمة، فكشف عن بعض ساقها، ووضع يده على بطنها
অর্থ : আমাদেরকে ইবনু জুরাইজ বর্ণনা করে বলেছেন যে, আমার নিকট উমার অথবা আবুয-যুবাইর বর্ণনা করেছেন ইবনু উমার হতে যে, তিনি (ইবনু উমার) বহু ব্যবসায়ীদেরকে একটি দাসীর নিকট সমবেত অবস্থায় পেলেন, অতঃপর তিনি (ইবনু উমার) তার (উক্ত দাসীটির) জঙ্ঘা এর কিছু অংশ থেকে কাপড় সরালেন এবং তিনি (ইবনু উমার) তাঁর (ইবনু উমার এর) হাতকে তার (উক্ত দাসীটির) পেটের উপর রাখলেন।
তিন.
عن ابن جريج، عن نافع، أن ابن عمر: كان يكشف عن ظهرها، وبطنها، وساقها، ويضع يده على عجزها
অর্থ : ইবনু জুরাইজ হতে (তিনি) নাফি হতে (তিনি) ইবনু উমার হতে (বর্ণনা করেছেন যে,) তিনি (ইবনু উমার) তার (একটি দাসীর) পিঠ, পেট ও জঙ্ঘা থেকে কাপড় সরাচ্ছিলেন এবং তিনি (ইবনু উমার) তাঁর (ইবনু উমার এর) হাতকে তার (উক্ত দাসীটির) নিতম্বের উপর রাখছিলেন।
চার.
قال معمر، وأخبرني ابن أبي نجيح، عن مجاهد قال: وضع ابن عمر يده بين ثدييها، ثم هزها
অর্থ : মা'মার বলেছেন যে, এবং আমার নিকট ইবনু আবি-নাজিহ বর্ণনা করেছেন মুজাহিদ হতে যে তিনি (মুজাহিদ) বলেছেন যে, ইবনু উমার তাঁর (ইবনু উমার এর) হাতকে তার (একটি দাসীর) দুই স্তনের মাঝখানে রাখলেন, অতঃপর তিনি (ইবনু উমার) সেটাকে (ইবনু উমার এর উক্ত হাতকে) নাড়ালেন।
পাঁচ.
عن ابن عيينة قال: وأخبرني ابن أبي نجيح، عن مجاهد قال: «وضع ابن عمر يده بين ثدييها، ثم هزها»
অর্থ : ইবনু উয়াইনাহ হতে বর্ণিত যে, তিনি (ইবনু উয়াইনাহ) বলেছেন যে, এবং আমাকে ইবনু আবি-নাজিহ বর্ণনা করেছেন মুজাহিদ হতে যে তিনি (মুজাহিদ) বলেছেন যে, ইবনু উমার তাঁর (ইবনু উমার এর) হাতকে তার (একটি দাসীর) দুই স্তনের মাঝখানে রাখলেন, অতঃপর তিনি (ইবনু উমার) সেটাকে (ইবনু উমার এর উক্ত হাতকে) নাড়ালেন।
2.2.1. উক্ত যইফ সনদগুলোর যইফ হওয়ার কারণগুলোকে উল্লেখকরণ :-
আতা ইবনু-আবি-রাবাহ এর স্মরণশক্তি তাঁর জীবনের শেষের দিকে বিকৃত ও দূর্বল হয়ে গিয়েছিল এবং এই কারণে এক নং বর্ণনাটির সনদ যইফ অথবা অন্ততপক্ষে সন্দেহজনক [6]।ইবনু আবি-নাজিহ ও ইবনু জুরাইজ এবং আবুয-যুবাইর, এনাদের প্রত্যেকেই তৃতীয় স্তরের মুদাল্লিস [7] ও এনাদের প্রত্যেকেই এক্ষেত্রে শ্রবণ স্পষ্টীকরণ ব্যতীত আন শব্দে বর্ণনা করেছেন এবং এই কারণে দুই, তিন, চার ও পাঁচ নং বর্ণনাগুলোতে বিদ্যমান সনদগুলো যইফ।
3. বর্ণনাগুলোর নির্ভরযোগ্যতা সংক্রান্ত কিছু কথা :-
আলোচনাধীন ঘটনাটি সম্পর্কে বর্ণিত হওয়া কথাগুলোকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা :
(১) যেই কথাগুলো সহিহ বা হাসান সনদবিশিষ্ট একটি বা একাধিকটি বর্ণনাতে বিদ্যমান এবং যইফ সনদবিশিষ্ট বর্ণনাগুলোর সবগুলোতেই অবিদ্যমান।
(২) যেই কথাগুলো সহিহ বা হাসান সনদবিশিষ্ট একটি বা একাধিকটি বর্ণনাতে বিদ্যমান এবং যইফ সনদবিশিষ্ট বর্ণনাগুলোর একটিতে বা একাধিকটিতে বিদ্যমান।
(৩) যেই কথাগুলো সহিহ এবং হাসান সনদবিশিষ্ট বর্ণনাগুলোর সবগুলোতেই অবিদ্যমান এবং যইফ সনদবিশিষ্ট বর্ণনাগুলোর একটিতে বা একাধিকটিতে বিদ্যমান।
উপর্যুক্ত ১ নং শ্রেণীটির অন্তর্ভুক্ত কথাগুলো নির্ভরযোগ্য এবং প্রমাণিত।
উপর্যুক্ত ২ নং শ্রেণীটির অন্তর্ভুক্ত কথাগুলোও নির্ভরযোগ্য এবং প্রমাণিত।
তবে, উপর্যুক্ত ৩ নং শ্রেণীটির অন্তর্ভুক্ত কথাগুলো অনির্ভরযোগ্য এবং অপ্রমাণিত।
4. একটি উল্লেখ্য বিষয়কে উল্লেখকরণ :-
আলোচনাধীন ঘটনাটির ক্ষেত্রে, ইবনু উমার (রা) কর্তৃক উক্ত দাসীটির দেহের বিভিন্ন অংশকে স্পর্শকরণ সংঘটিত হয়েছিল কাপড়ের উপর দিয়ে। অর্থাৎ,আলোচনাধীন ঘটনাটির ক্ষেত্রে,ইবনু উমার (রা) উক্ত দাসীটির দেহের যেই অংশগুলোকে যখন স্পর্শ করেছিলেন সেই অংশগুলো তখন বস্ত্র দ্বারা আবৃত ছিল। আবু-বকর আল-বাইহাক্বী কর্তৃক রচিত "আস-সুনানুল কুবরা" গ্রন্থে বিদ্যমান উপর্যুক্ত বর্ণনাটি হচ্ছে আমার এই দাবিটির সত্য হওয়ার প্রমাণ।
যদি বলা হয় যে : আস-সুনানুল কুবরা গ্রন্থের বর্ণনাটিতে বিদ্যমান وكأنه كان يضعها عليها من وراء الثوب অংশটি মূল বর্ণনাটির অন্তর্ভুক্ত না বরং উক্ত অংশটি হচ্ছে আল-বাইহাক্বী এর বক্তব্য।
তাহলে জবাবস্বরূপ বলা হবে যে : এটা একটা প্রমাণহীন ও ভিত্তিহীন কথা। এক্ষেত্রে, উক্ত অংশটিকে মূল বর্ণনাটির বহির্ভূত আল-বাইহাক্বী এর নিজস্ব বক্তব্য হিসেবে বিবেচনা করার কোনো যথার্থ কারণ নেই। এবং, কোনো বর্ণনার মাতানের কোনো অংশকে কোনো যথার্থ কারণ ছাড়াই উক্ত বর্ণনাটির মূল অংশটির বহির্ভূত হিসেবে বিবেচনাকরণ অগ্রহণযোগ্য।
কিছু হাম্বলী ফক্বীহরা উল্লেখ করেছেন যে, আবু-হাফস সনদ ধরে ইবনু উমার (রা) হতে বর্ণনা করেছেন যে,_[8]
أن ابن عمر كان يضع يده بين ثدييها وعلى عجزها من فوق الثياب ويكشف عن ساقها
অর্থ : তিনি (ইবনু উমার) তার (একটি দাসীর) দুই স্তনের মাঝখানে এবং নিতম্বে তাঁর (ইবনু উমার এর) হাতকে রেখেছিলেন কাপড়ের উপর দিয়ে, এবং তিনি (ইবনু উমার) তার (উক্ত দাসীটির) জঙ্ঘা থেকে কাপড় সরিয়েছিলেন।
ইবনু উমার (রা) কর্তৃক উক্ত দাসীটির দেহের বিভিন্ন অংশকে স্পর্শকরণ "কাপড়ের উপর দিয়ে" সংঘটিত হওয়াকে এবং "আস-সুনানুল কুবরা" এর বর্ণনাটিতে বিদ্যমান وكأنه كان يضعها عليها من وراء الثوب অংশটি কর্তৃক মূল বর্ণনাটির অন্তর্ভুক্ত হওয়াকে, আবু-হাফস এর উপর্যুক্ত এই বর্ণনাটি সমর্থন করে।
5. ইবনু উমার (রা) উক্ত কাজটি কেন করেছিলেন? :-
ইবনু উমার (রা) বাজারে অন্যান্য লোকদের সামনেই উক্ত দাসীটির দেহের বিভিন্ন অংশে কেন স্পর্শ করেছিলেন?
উক্ত দাসীটির সহিত ইবনু উমার (রা) এর এরূপ ব্যবহার দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় যে, ইবনু উমার (রা) নিজ যৌন লালসার বশীভূত হয়ে উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করেছেন। তবে, আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হয়, তা সকল ক্ষেত্রে সত্য হয় না, কিছু ক্ষেত্রে প্রকৃত বাস্তবতা আপাতদৃষ্টিলব্ধ ধারনার চেয়ে ভিন্ন হয় ও হতে পারে।
ইবনু উমার (রা) এর আলোচনাধীন পরিস্থিতিটিতে আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হচ্ছে তা সত্য হওয়া সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব না। কিন্তু এক্ষেত্রে আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হচ্ছে তা অসত্য হওয়ার অত্যন্ত তীব্র ও খুবই শক্তিশালী একটা সম্ভাবনা রয়েছে।
রাসূল (সা) এর হাদিসসমূহ সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞানী সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত একজন হচ্ছেন ইবনু উমার (রা)। রাসূল (সা) কে অনুসরণের ক্ষেত্রে সাহাবীদের মধ্য হতে যারা সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিলেন ও সর্বাধিক কট্টর এবং সর্বাধিক সচেতন ছিলেন তাঁদের অন্তর্ভুক্ত একজন হচ্ছেন ইবনু উমার (রা)। ইবনু উমার (রা) এর একটা অভ্যাস ছিল এই যে, তিনি (রা) তুচ্ছ থেকে তুচ্ছতর থেকে অতিতুচ্ছ ব্যাপার-স্যাপারেও রাসূল (সা) কে অনুসরণ ও অনুকরণ করতেন।
আয়িশাহ (রা) হতে সহিহ সনদে বর্ণিত ও প্রমাণিত আছে যে তিনি (আয়িশাহ রাঃ) বলেছেন যে,_
[9]
وما مست يد رسول الله ﷺ يد امرأة إلا امرأة يملكها
অর্থ : রাসূলুল্লাহ ﷺ এর হাত কোনো মহিলার হাতকে স্পর্শ করেনি, যেই মহিলাদের উপর তাঁর অভিভাবকত্ব আছে সেই মহিলারা ব্যতীত।
আয়িশাহ (রা) এর উপর্যুক্ত এই বক্তব্যটি হতে বুঝা যায় যে, রাসূল (সা) এর অভ্যাস ছিল এই যে, তিনি (সা) এমন কোনো মহিলাকে স্পর্শ করতেন না যেই মহিলার উপর তাঁর (সা) অভিভাবকত্ব ছিল না। কোনো ব্যক্তি কোনো দাসীকে ক্রয় করলে উক্ত ক্রয় সম্পন্ন হওয়ার পর উক্ত ব্যক্তিটি উক্ত দাসীটির উপর অভিভাবকত্ব অর্জন করে। উক্ত দাসীটিকে ক্রয় করার আগ পর্যন্ত উক্ত দাসীটির উপর উক্ত ব্যক্তিটির কোনো অভিভাবকত্ব থাকে না। অতএব, বুঝা গেল যে, রাসূল (সা) কখনোই কোনো দাসীকে ক্রয় না করে বা ক্রয় করার আগে স্পর্শ করেননি।
রাসূল (সা) সংক্রান্ত উপর্যুক্ত এই বিষয়গুলো ইবনু উমার (রা) জানতেন না, এমনটা হওয়া প্রায় অসম্ভব। বরং প্রায় শতভাগ নিশ্চয়তার সহিত বলা যায় যে, উপর্যুক্ত এই বিষয়গুলো ইবনু উমার (রা) জানতেন। রাসূল (সা) এর একজন অতিকট্টর অনুসারী হিসেবে ইবনু উমার (রা) রাসূল (সা) সংক্রান্ত উপর্যুক্ত এই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রেও রাসূল (সা) কে অনুসরণ ও অনুকরণ করতেন, এমনটা হওয়ার সম্ভাবনাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি।
ইবনু উমার (রা) এর আলোচনাধীন পরিস্থিতিটিতে ইবনু উমার (রা) কর্তৃক উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করার পিছনে দুইটি সম্ভাব্য কারণ বিদ্যমান, যথা :-
(১) ইবনু উমার (রা) নিজ যৌন লালসার বশীভূত হয়ে উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করেছিলেন।
(২) ইবনু উমার (রা) উপরে বর্ণিত ১ নং সম্ভাব্য কারণটি হতে ভিন্ন অন্য কোনো কারণে উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করেছিলেন।
উপর্যুক্ত ১ নং সম্ভাব্য কারণটি সত্য হওয়ার সম্ভাবনা এক্ষেত্রে অত্যন্ত কম ও খুবই দূর্বল। রাসূল (সা) কে অতিকট্টরভাবে অনুসরণকারী ও অনুকরণকারী সাহাবী ইবনু উমার (রা) নিছক যৌন লালসার কারণে রাসূল (সা) কে অনুসরণ ও অনুকরণ হতে বিরত থেকেছিলেন, এমনটা হওয়া প্রায় অসম্ভব এবং অকল্পনীয়।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে, ইবনু উমার (রা) কর্তৃক উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করার পিছনের কারণ উপর্যুক্ত ১ নং সম্ভাব্য কারণটি ব্যতীত আর কী হতে পারে? উপর্যুক্ত ১ নং সম্ভাব্য কারণটি যদি সত্য না হয় তাহলে ইবনু উমার (রা) উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করেছিলেন কেন?
উপর্যুক্ত এই প্রশ্নটির উত্তরস্বরূপ বলব যে,
উপর্যুক্ত ১ নং কারণটি যদি সত্য না হয় তাহলে ঠিক কোন কারণে ইবনু উমার (রা) উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করেছেন, তা জানা বা নির্ণয় করা বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব, কেননা বর্তমানে এমন কোনো নির্ভরযোগ্য বর্ণনা পাওয়া যায় না যেখানে ইবনু উমার (রা) কর্তৃক উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করার পিছনে কারণ আসলে কী ছিল তা প্রত্যক্ষভাবে অথবা পরোক্ষভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে উপর্যুক্ত ১ নং কারণ হতে ভিন্ন কিছু সম্ভাব্য কারণ অনুমান করার সুযোগ আছে। যেমন : এমনটা হওয়া সম্ভব যে উক্ত দাসীটির দেহে কোনো ধরনের কোনো শারিরীক অস্বাভাবিকতা বা বিকৃতি বা প্রতিবন্ধকতা ছিল নাকি না তা নির্ণয় করার উদ্দেশ্যে ইবনু উমার (রা) উক্ত দাসীটির প্রতি এরূপ আচরণ প্রদর্শন করেছিলেন।
6. পরিশিষ্ট :-
দাসীদের ব্যাপারে ইবনু উমার (রা) এর মনমানসিকতা আসলে কেমন ছিল তা নিম্নে উল্লেখকৃত এই দুইটি বর্ণনা থেকে বুঝা যায়। উল্লেখ্য যে নিম্নোক্ত বর্ণনাদ্বয়ের সনদগুলো নির্ভরযোগ্য।
মুহাম্মাদ ইবনু সাদ তাঁর "আত্ব-ত্ববাক্বতুল-কুবরা" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, _[10]
أخبرنا محمد بن يزيد بن خنيس قال: سمعت عبد العزيز بن أبي رواد قال: أخبرني نافع أن عبد الله بن عمر كانت له جارية فلما اشتد عجبه بها أعتقها وزوجها مولى له.قال : محمد بن يزيد قال: بعض الناس هو نافع، فولدت غلاما. قال نافع: فلقد رأيت عبد الله بن عمر يأخذ ذلك الصبي فيقبله ثم يقول: واها لريح فلانة، يعني الجارية التي أعتق.
অর্থ : আমাদের নিকট মুহাম্মাদ বিন ইয়াযিদ বিন খনীস বর্ণনা করে বলেছেন যে, আমি আব্দুল-আযীয বিন আবি-রাওয়াদ হতে শ্রবণ করেছি যে তিনি বলেছেন যে, আমাকে নাফি বর্ণনা করে বলেছেন যে, আব্দুল্লাহ বিন উমার এর একটি দাসী ছিল, যখন দাসীটির প্রতি তাঁর মুগ্ধতা তীব্র হয়ে যায় তখন তিনি তাকে (দাসীটিকে) মুক্ত করে দেন ও তাঁর একজন মুক্তকৃত প্রাক্তন দাস এর সহিত তাকে (দাসীটিকে) বিয়ে দেন। অতঃপর সে (দাসীটি) একটি ছেলেকে জন্ম দেয়। নাফি বলেছেন যে : আমি আব্দুল্লাহ বিন উমার কে দেখেছি যে তিনি সেই শিশুটিকে তুলে চুমু খেয়েছেন অতঃপর বলেছেন : বাহ! নিঃসন্দেহে অমুকের ঘ্রাণ, মানে তিনি যেই দাসীটিকে মুক্ত করেছেন সেই দাসীটির ঘ্রাণ।
আবু-দাউদ তাঁর "আয-যুহদ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, _[11]
حدثنا محمود بن خالد، عن عمر يعني ابن عبد الواحد عن عمر بن محمد، عن نافع: أن عبد الله بن عمر، كان إذا خلا بالجارية فأعجبته، كان قمنا أن يصفها، كان يقول إذا أعجبته الجارية: إن الله تعالى قال: {لن تنالوا البر حتى تنفقوا مما تحبون}. فإذا أعتق الجارية قالت صبابة: لا أصبرك.
অর্থ : আমাদেরকে মাহমুদ বিন খালিদ বর্ণনা করেছেন উমার অর্থাৎ ইবনু-আব্দিল-ওয়াহিদ হতে, তিনি উমার বিন মুহাম্মাদ হতে, তিনি নাফি হতে যে, আব্দুল্লাহ বিন উমার যখন একটি দাসীর সহিত একা হয়েছিলেন তখন সে তাঁকে মুগ্ধ করে, তিনি (ইবনু উমার) তাকে (দাসীটিকে) প্রশংসা করার জন্য উদ্যত ছিলেন, এবং যখন সে (দাসীটি) তাঁকে (ইবনু উমার কে) মুগ্ধ করে তখন তিনি (ইবনু উমার) তাকে (দাসীটিকে) বলতে থাকেন যে, আল্লাহ তাআলা বলেছেন "তোমরা কখনো সওয়াব অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ না ব্যয় করবে তা থেকে, যা তোমরা ভালবাস"। অতঃপর যখন তিনি দাসীটিকে মুক্ত করেন তখন দাসীটি অনুরাগ প্রকাশের স্বরে বলে যে : আমি আপনাকে (প্রিয় জিনিস থেকে ব্যয় করার দ্বারা সাওয়াব অর্জন করার জন্য) আর অপেক্ষা করাব না।
7.টীকাসমূহ :-
[1]
السنن الكبری لأبي بكر البيهقي (دار الكتب العلمية ،5/537)
[2]
المصنف لابن أبي شيبة (دار كنوز إشبيليا ، 11/309)
[3]
المصنف لابن أبي شيبة (دار كنوز إشبيليا ،11/310)
[4]
المصنف لعبد الرزاق الصنعاني (دار التأصيل ،الطبعة الثانية ، الجزء السابع ،صفحة 236-238)
[5]
تقريب التهذيب لابن حجر (دار الرشيد ،صفحة 314)
[6]
معجم المختلطين لمحمد بن طلعت (دار أضواء السلف ،صفحة 225-226)
[7]
طبقات المدلسين لابن حجر (مكتبة المنار ، صفحة 39 و 41 و 45)
[8]
معنونة أولي النهی لابن النجار الفتوحي (مكتبة الأسدي،9/19) ومنار السبيل لابن ضويان (المكتب الإسلامي ،2/137) ودقائق أولي النهی لمنصور البهوتي (عالم الكتب بيروت، 2/624) والفوائد المنتخبات لعثمان بن عبد الله بن جامع (مؤسسة الرسالة ،3/261)والفروع لابن مفلح المقدسي و معه تصحيح الفروع لعلاء الدين المرداوي ويليهماحاشية ابن قندس (مؤسسة الرسالة و دار المؤيد ، 8/182)
[9]
قال الإمام البخاري في صحيحه (السلطانية ،9/80)
حدثنا محمود، حدثنا عبد الرزاق، أخبرنا معمر، عن الزهري، عن عروة، عن عائشة ﵂ قالت: «كان النبي ﷺ يبايع النساء بالكلام بهذه الآية ﴿لا يشركن بالله شيئا﴾ قالت: وما مست يد رسول الله ﷺ يد امرأة إلا امرأة يملكها.»
[10]
الطبقات الكبری لابن سعد (دار صادر ، 4/167)
[11]
الزهد لأبي داود السجستاني برواية ابن الأعرابي عنه (دار المكشاة ، صفحة 263)
*****