Are you sure?

হাদিস »  বিবিধ

মুহাম্মাদ ﷺ কি অল্প বয়সী কুমারী মেয়েদের বিয়ে করার পরামর্শ দিতেন?

অভিযোগ: ইসলাম-বিরোধীরা এই হাদিসটি হতে দাবি করে যে, রাসুল ﷺ অল্পবয়সী কুমারিদের বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন,

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏"‏ أَتَزَوَّجْتَ يَا جَابِرُ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ نَعَمْ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ بِكْرًا أَمْ ثَيِّبًا ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ لاَ بَلْ ثَيِّبًا ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ هَلاَّ جَارِيَةً تُلاَعِبُهَا وَتُلاَعِبُكَ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ عَبْدَ اللَّهِ مَاتَ وَتَرَكَ سَبْعَ بَنَاتٍ أَوْ تِسْعًا فَجِئْتُ بِمَنْ يَقُومُ عَلَيْهِنَّ ‏.‏ قَالَ فَدَعَا لِي[1]

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা:) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, এক মহিলাকে বিয়ে করে আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকটে গেলাম। তিনি বললেন, হে জাবির! তুমি কি বিয়ে করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, কুমারী মেয়ে না বিধবা মেয়ে?আমি বললাম, না, বরং বিধবা। তিনি বললেন, কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না কেন? তাহলে তার সাথে তুমিও আনন্দ করতে পারতে এবং তোমার সাথে সেও আমোদ-প্রমোদ করতে পারত। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মৃত্যুর সময় আবদুল্লাহ (আমার পিতা) সাতটি অথবা নয়টি মেয়ে রেখে গেছেন। এজন্য এমন মহিলাকে এনেছি যেন সে তাদের দেখাশোনা করতে পারে। আমার জন্য তখন তিনি দু’আ করলেন। তাদের দাবি হলো, এখানে "অল্পবয়সী কুমারী মেয়েকে বিবাহ" করতে বলা হয়েছে।

অভিযোগের জবাব: তারা তাদের কৃত দাবিতে হাদিসের বক্তব্যের সাথে নিজেদের কথা ঢুকিয়ে দিয়েছে। হাদিসে "কুমারী" বলা হয়েছে, তারা "কুমারী" এর আগে নিজেদের পক্ষ হতে "অল্প বয়সী" যুক্ত করে দাবিটা করেছে। হাদিসটিতে কোথাও "অল্প-বয়সী কুমারি" বলা নেই, বরং শুধুই "কুমারী" বলা হয়েছে।

হাদিসে বর্ণিত "بِكْر"(কুমারী) শব্দটি দ্বারা এমন একজন নারীকে বুঝায় যার বিয়ে হয়নি, যার কারো সাথে সহবাস হয়নি, যাকে কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি।[2]  بِكْر বা কুমারি হওয়ার জন্য "অল্প বয়সী" হতে হবে; এমন কোন শর্ত নেই। ১৫-৩০ বছর বয়সী কোনো নারীও যদি বিবাহিত না হন, কারো সাথে সহবাস না করে থাকেন, কোনো পুরুষের স্পর্শলাভ না করে থাকেন, তাহলে তিনিও একজন "بِكْر" তথা একজন কুমারী।

এখন যদি কেউ দাবি করে যে, এখানে তো "খেলা করার" কথা আছে, যদি অল্পবয়সী কুমারি উদ্দেশ্য না হয় তাহলে খেলা করার কথা আসল কেন?  

জবাব: প্রথমত, এখানে "ملاعبة"  বলতে বাচ্চাদের মত খেলাধুলা করা নয়, বরং রসিকতা করা, আড্ডা দেয়া, আনন্দ করা, মজা করা বুঝানো হয়েছে; যাদ্বারা দুজন মানুষের মাঝে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। [3] এর অর্থ বাচ্চাদের মত "খেলা করা" ধরে নেয়া-টা ভুল হবে। কেননা রাসুল বলেছেন স্ত্রীর সংগে ملاعبة করা "খেলা" নয়।[4] দ্বিতীয়ত, যদি ধরে নেই এখানে "খেলা করা" বুঝানো হয়েছে, তাহলেও এর দ্বারা "অল্পবয়সী" প্রমানিত হবেনা। কেননা রাসুল এর নিকট "খেলা" এর সংজ্ঞা হলো "এমন কাজ যাতে আল্লাহকে স্বরণ করা হয়না।[4]  যেই কাজে আল্লাহকে স্বরন করা হয়না সেটাই রাসুল এর নিকট খেলা।

 

 

রেফারেন্স:

  • [1] সুনানুন নাসাঈ (6/65), সহিহুল বুখারি (2309),  (2097), (2406), (2967), (4052), (5245), (5247), (5367), (6387), সহিহ মুসলিম (1466), সুনান আবি দাউদ (2048), সুনানুত তিরমিযি (1125), মুসনাদ আহমাদ (14132), সহিহ ইবন হিব্বান (7138), (7143), সুনান ইবন মাজাহ (হা/1860)।
  • [2] আল-আইন (5/364), তাহযিবুল লুগাহ (10/127), শামসুল উলুম (1/600), শারহুল ফাসিহ (146), মাকাইসুল লুগাহ (1/289), লিসানুল আরব (4/78), আল-মুহকাম (7/19), মুজাম দিওয়ানিল আদাব (1/180), মুজমালুল লুগাহ (132),আস-সিহাহ তাজুল লুগাহ (2/595), তাজুল উরুস (10/239), আল-মুহিত ফিল-লুগাহ (2/49),আল-মুতালা'আ  (278),আল-গারিবিঈন (1/126), আলমিসবাহুল মুনির (1/58)।
  • [3] হাশিয়াতুস সিনদি আলা সুনানিন নাসাই (6/61), কিফায়াতুল হাজাহ (1/573), ফাতহুল উদুদ (2/453), মুজামুল লুগাতিল আরাবিয়াতিল মুয়াছিরাহ (3/2014)।
  • [4] সিলসিলাতুস সহিহাহ (হা/315), সহিহুল জামিইস সাগির (2/834), আল-মুসনাদুল জামে (4/452)।