আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহু প্রিয় ভাই ও বোনেরা। আশা করি অবশ্যই সবাই মহান আল্লাহ্ সুবাহানাহু ওয়াতা'আলার অসীম রহমত ও দয়ায় ভালো এবং সুস্থ আছেন। তো আজকে আমরা খুবই গুরত্বপূর্ণ একটা টপিকে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহু তাআলা।
আল্লাহর রাসূল ﷺ এর গায়েব বা ভবিষ্যদ্বাণী জানা সম্পর্কে:
মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ পবিত্র কোরআন মাজীদের ৭২ নং সূরা আল জ্বিনের ২৬ ও ২৭ নং আয়াতের মধ্যে বলেছেন:
Al-Jinn 72:26
عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِۦٓ أَحَدًاতিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারও নিকট প্রকাশ করেন না- [অনুবাদক: মুজিবুর রহমান]
English - Sahih International
[He is] Knower of the unseen, and He does not disclose His [knowledge of the] unseen to anyone.
Al-Jinn 72:27
إِلَّا مَنِ ٱرْتَضَىٰ مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُۥ يَسْلُكُ مِنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِۦ رَصَدًاতাঁর মনোনীত রাসূল ব্যতীত। সেক্ষেত্রে আল্লাহ রাসূলের অগ্রে এবং পশ্চাতে প্রহরী নিয়োজিত করেন।" [অনুবাদক: মুজিবুর রহমান]
English - Sahih International
Except whom He has approved of messengers, and indeed, He sends before him [i.e., each messenger] and behind him observers.
অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ অদৃশ্য বা গায়েবের জ্ঞান তথা ভবিষ্যতে কী হবে অথবা হবে না এ সম্পর্কে কারো নিকট প্রকাশ করেন না কেবলমাত্র তাঁর মনোনীত রাসূল ছাড়া। এর মানে মহান আল্লাহ্ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কেবলমাত্র তাঁর মনোনীত রাসূলকেই জানিয়ে দেন। আর রাসূল ﷺ ও আমাদের কে বহু ভবিষ্যদ্বাণী করে আগাম তথ্য জানিয়ে গেছেন এ উম্মাহের কল্যাণে; যেন আমরা আগে থেকেই সতর্ক থাকতে পারি এবং ঈমানহারা না হই। তো আমাদের সবার প্রিয় কলিজার টুকরো বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ আমাদের বলে গেছেন যে, "জেনে রাখো! তোমাদের পূর্ববর্তী আহলে কিতাব বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে এবং এ উম্মাত অদূর ভবিষ্যতে তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। এর মধ্যে বাহাত্তর দল জাহান্নামে যাবে এবং একটি জান্নাতে যাবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেনঃ আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত।" [আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ ও তিরমিজি শরীফ]
এর মানে বোঝায় ইসলামের নাম করে ভবিষ্যতে অনেক বাতিল ফিরকা বের হবে যা থেকে তোমাদের সতর্ক থাকতে হবে অর্থাৎ আল্লাহর রাসূল ﷺ এবং তাঁর সাহাবীগণ যে পথের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন এবং যারাই তাঁদের অনুসরণ করবে তারাই হলো জান্নাতী দল। আর সাহাবীগণ আল্লাহর রাসূল ﷺ এর আনীত পবিত্র কোরআন এবং তাঁর দেওয়া সুন্নাহ পালন করত এবং তা একে-অন্যের কাছে বর্ণনা করে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তাবেঈগণ এবং তাবে-তাবেঈগণের মাধ্যমে। আর এভাবেই আল্লাহর রাসূল ﷺ এর আনীত পবিত্র কোরআন এবং তাঁর দেওয়া সহীহ সুন্নাহ পরবর্তী প্রজন্ম থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে হাজার বছরের বেশি সময় ধরে যা কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এই জন্যই তো আল্লাহর রাসূল ﷺ বলে গেছেন, "কিয়ামতের আগ পর্যন্ত আমার উম্মতের একদল লোক সত্য পথের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আর এরাই জান্নাতী দলের অন্তর্ভুক্ত।"
অনলাইন সোর্স থেকে পড়তে ক্লিক করুন:
http://ihadis.com/books/muslim/chapter/34/section/3967
নোট: আল্লাহর রাসূল ﷺ নিজে থেকে গায়েব বা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতেন না। কিন্তু মহান আল্লাহ্ তাঁকে যতটুকু অবগত করেছেন কেবলমাত্র ততটুকুই তিনি জানতেন বিধায় আমাদেরকেও তা জানিয়ে দিয়েছেন। এই জন্য আমরা সহীহ হাদিসে বহু ভবিষ্যদ্বাণী জানতে পারি। মূলত তিনি এসব জানিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাঁর উম্মত কে সতর্ক করেছেন ঈমান হারানোর আগে। তাহলে তিনি যে ভবিষ্যদ্বাণী মূলক কথা-বার্তা বলেছেন বা অবগত করেছেন তা মূলত কোরআন দ্বারা স্বীকৃত।
তাহলে আমরা যদি সত্য পথে থাকতে চাই তবে পবিত্র কোরআন এবং সহীহ সুন্নাহের অনুসরণ করতে হবে এবং তা পালন করতে হবে মৃত্যু অবধি। তো বর্তমান সময়ে নতুন আরেকটি বাতিল ও বিভ্রান্ত ফিরকা বের হয়েছে যারা মূলত ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত। আর এই ফিরকার নাম হলো আহলে কোরআন; যারা মূলত তাদের নিজেদের কে আহলে কোরআন বলে পরিচয় দেয় অর্থাৎ মুনকিরিনে হাদিস তথা হাদিস অস্বীকারকারী। এদের দাবি অনুযায়ী কেবলমাত্র কোরআন ছাড়া হাদিস মানি না। অথচ না! এটাও তাদের মিথ্যা দাবি। তারা কোরআনও মানে না আবার আল্লাহর রাসূল ﷺ এর দেওয়া সহীহ সুন্নাহ তথা হাদিসও মানে না। তারা মূলত সহীহ সুন্নাহ কে অস্বীকার করতে গিয়ে কোরআনকেই অস্বীকার করে ফেলেছে। কেননা কোরআন মানতে গিয়েই সহীহ হাদিস মানতে বাধ্য যা কিনা কোরআনের আলোকে প্রমাণিত।
প্রমাণ চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করুন:
https://unknowntruth203.blogspot.com/2022/05/blog-post_17.html
আবার এসব আহলে কোরআন দাবিদাররা কেবলমাত্র কোরআন মানার মিথ্যা দাবিদার এবং আল্লাহর রাসূল ﷺ এর সহীহ হাদিস অস্বীকার করে একে অবান্তর, আজবগুজি, কিচ্ছা-কাহিনী ইত্যাদি বলে চালিয়ে দিয়ে সাধারণ মুসলিমদের মাঝে ফিতনার বিস্তার করছে এবং তাঁরা শীর্ষ ব্যক্তিত্ব যেমন আল্লাহর রাসূল ﷺ এর ঘনিষ্ঠ সাহাবীগণ, সাহাবীগণের ছাত্র তাবেঈগণ, তাবেঈগণের ছাত্র তাবে-তাবেঈগণ সহ যুগ শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী-গুণী ইমাম, মুহাদ্দিস ও রিজাল শাস্ত্রবিদগণের সম্পর্কে সেক্যুলার নাস্তিক, খ্রিস্টানদের মতো গণহারে কটাক্ষবাজী করে এরা। এরা সাধারণ মুসলিম তথা যারা কোরআন হাদিস মানে তাদের কে কাফের মুশরিক বলে মিথ্যা প্রচারণা চালায়।
তারা বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে যৌক্তিকতাও মানে না। তারা কেবলমাত্র কোরআন কে নিজেদের মনগড়া ভাবে অযৌক্তিক ব্যাখ্যা করে ফিতনা সৃষ্টি করে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং কোরআন হাদিসের মূল উসুল থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তো এরুপ পরিস্থিতিতে আমাদের যুবসমাজ কে আরো সতর্ক সচেতন থাকতে হবে। আল্লাহর রাসূল ﷺ বলে গেছেন, "এই উম্মাহের কাছে একের পর এক ফিতনা আসতেই থাকবে।" [সহীহ বোখারির ফিতনা অধ্যায় দ্রষ্টব্য, সহীহ মুসলিমের ফিতনা ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলি দ্রষ্টব্য]।
অর্থাৎ এই উম্মাহের কাছে প্রতিনিয়ত একের পর এক সমস্যা আসতেই থাকবে। এই ফিতনাগুলোর সৃষ্টি হবে কোরআন-হাদিস সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে। আর এই ফিতনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য পবিত্র কোরআনের পাশাপাশি রাসূল ﷺ এর থেকে পাওয়া সহীহ হাদিসগুলোও মানতে হবে।
আর এই তথাকথিত আহলে কোরআনরাই হলো মুসলিমদের জন্য এক ভয়ঙ্কর ফিতনার অন্যতম। কেননা খ্রিস্টান মিশনারিদের মতো তারাও কোরআন কে ইচ্ছে মত অপব্যাখ্যা অপপ্রচার করার জন্য, নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জিনিসকে বৈধতা দেওয়ার জন্য, তা পূরণের জন্য তারা আল্লাহর রাসূল ﷺ এর সহীহ হাদিসকেই বাতিল এবং অপ্রয়োজনীয় বলে প্রচার করছে এবং সাধারণ মুসলিমদের ঈমানহারা করছে। এখন কোরআন মানা মানে কী? কোরআন মানা মানে কী এই, যে আল্লাহর রাসূল ﷺ এর সহীহ হাদিসও ত্যাগ করতে হবে? অবশ্যই না। বরং কোরআনের বিধিনিষেধ মানতে গেলে রাসূল ﷺ এর দেওয়া সহীহ হাদিস তথা সুন্নাহের অনুসরণ করতে বাধ্য।
আমাদের দেখতে হবে কোরআনে আল্লাহর রাসূল ﷺ এর থেকে পাওয়া সহীহ হাদিস মেনে নেওয়ার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে কী? তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক।
কোরআনে সহীহ হাদিস মানার স্বীকৃতি:
এখন সহীহ হাদিস কী কোরআন দ্বারা স্বীকৃত? আমরা কেন সহীহ হাদিস মেনে নিব? এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের বিধান কী? তো পবিত্র কোরআন মাজীদের ২ নং সূরা আল বাকারার ১৫১ নং আয়াতে এরশাদ করেছেন:
كَمَآ أَرۡسَلۡنَا فِيكُمۡ رَسُولًا مِّنكُمۡ يَتۡلُواْ عَلَيۡكُمۡ ءَايَٰتِنَا وَيُزَكِّيكُمۡ وَيُعَلِّمُكُمُ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمۡ تَكُونُواْ تَعۡلَمُونَ
আমি তোমাদের মধ্য হতে এরূপ রাসূল প্রেরণ করেছি যে তোমাদের নিকট আমার নিদর্শনাবলী পাঠ করে এবং তোমাদেরকে পবিত্র করে, তোমাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেয় এবং তোমরা যা অবগত ছিলেনা তা শিক্ষা দান করে।" [অনুবাদক: মুজিবুর রহমান] (এই একই কথা বলা হয়েছে অন্যত্রে ৩:১৬৪ নং আয়াতে)
Just as We have sent among you a messenger from yourselves reciting to you Our verses and purifying you and teaching you the Book and wisdom and teaching you that which you did not know." [Translator: Sahih International]
উক্ত আয়াতের বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পড়তে ক্লিক করুন:
https://islamicauthors.com/article/290
তাহলে এইখানে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভাবে খেয়াল করুন তো? এই আয়াতে মহান আল্লাহ কী কী শিক্ষা দেবার কথা বলেছেন?
• কিতাব (ٱلۡكِتَٰبَ)
• হিকমত (لۡحِكۡمَةَ)
• এবং তোমরা যা অবগত ছিলেনা (وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمۡ تَكُونُواْ تَعۡلَمُونَ)
তাহলে মহান আল্লাহ্ রাসূল ﷺ কে শিক্ষা দেবার ক্ষেত্রে তিনটা বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন, যার একটা হলো আল-কিতাব অর্থাৎ নির্দিষ্ট ভাবে কোরআন। আরেকটা হলো হিকমত তথা প্রজ্ঞা যা সরাসরি অভিজ্ঞতার সাথে জড়িত। সেই সাথে আরেকটা বিষয় হলো এমন কিছু যা আমরা জানতাম না।
এখন একটা কথা বলে রাখি। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ একক আয়াতের মধ্যে কোন একটা কিছু একক ভাবে বোঝানোর জন্য বার বার অর্থাৎ পুনরাবৃত্তি করবেন না। অন্যথায় এটা করা মানেই বাক্যের অলংকার নষ্ট হওয়া সহ অতিরিক্ত শব্দের অপচয় হবে এবং সেই সাথে কুরআন পুনরাবৃত্তির দোষে দুষ্ট (নাউজুবিল্লাহ; আস্তাগফিরুল্লাহ)।
তো এর সব কিছুই যদি শুধুমাত্র কোরআন কে বুঝিয়ে থাকে যেটা তথাকথিত আহলে কোরআনরা বলে থাকে তাহলে এটার অর্থ এরুপ হবে:
• কিতাব = কোরআন
• হিকমত = কোরআন
• এবং তোমরা যা জানতে না/অবগত ছিলে না = কোরআন
তাহলে এই তিনটা শব্দ গুচ্ছ কে পরস্পর সাজালে এরুপ হয়, "সেই রাসূল তোমাদের কে কোরআন এবং কোরআন এবং কোরআন-ই শিক্ষা দেয়। আর মহান আল্লাহ্ কখনোই এইভাবে বলবেন না এরুপ বোঝাতে গিয়ে। কেননা এভাবে বলা মানেই বাক্যের যে সৌন্দর্য, অলংকার, শ্রুতিমধুরতা, তাৎপর্য, ভাবগম্ভীরতা থাকে তা নষ্ট হয়ে যাবে, ভাষাগত ভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে, সাহিত্যিক ভঙ্গি নষ্ট হয়ে যাবে, ব্যাকরণগত সমস্যায় পড়তে হবে ইত্যাদি। তাহলে লজিক্যালী বোঝা যায় যে, এর সবগুলোই কেবলমাত্র কোরআন (এর ভেতরে থাকা জ্ঞান বা বিভিন্ন দিক নির্দেশাবলি) উদ্দেশ্য নয় বরং আরো কিছু আছে।
এখন ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمۡ تَكُونُواْ تَعۡلَمُونَ বাক্যটাই একটা সমস্যা, যেটাকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে হবে, এরপর বুঝতে হবে। তো এটার ব্যাখ্যা আমাদের কে দিবে? কারা কোরআন সবচেয়ে ভালো বুঝত, সেই অথেনটিক পারসন কারা? নিশ্চয়ই সাহাবীগণ। আর সাহাবীগণ কোরআন বুঝেছিলেন স্বয়ং আল্লাহর রাসূল ﷺ এর থেকে। এবং সাহাবীগণের থেকে তাবেঈগণ, তাবেঈগণের থেকে তাবে-তাবেঈগণ; এরপর ইমাম মুফাস্সির মুহাদ্দিসগণ থেকে ক্রমান্বয়ে ধারাবাহিক ভাবে চলে আসছে বর্তমান যামানা পর্যন্ত। আর এটা এভাবেই চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। এটাই প্রকৃতিগত নিয়ম যেটাকে বলা যায় আল্লাহর সুন্নাহ।
▪︎ কিতাবঃ তো এইখানে "কিতাব" মানেই যে কোরআন (যেটা নিজে নিজেই হচ্ছে থিওরিটিক্যাল জ্ঞানে পরিপূর্ণ) উদ্দেশ্য এটা নিশ্চিত কোনরুপ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ছাড়াই নিজস্ব কমন সেন্স ব্যবহার করেই বোঝা যায়। আল্লাহ এতটুকু জ্ঞান অবশ্যই সবাই কে দিয়েছেন। এরপরেও এর ব্যাখ্যা হিসেবে স্বয়ং সাহাবীগণ, তাবে-তাবেঈগণ সহ মুফাস্সির মুহাদ্দিসগণের কমেন্টস আছে যেখানে তাঁরা কিতাব বলতে পবিত্র কোরআনকেই বলেছেন। এটা যারা সহীহ হাদিস অস্বীকার করে তারাও মানে যে, কিতাব বলতে পবিত্র কোরআন কেই বোঝানো হয়েছে।
▪︎ তো আমাদের মূল সমস্যা হলো "حكمت/হিকমত" নিয়ে। আমরা যারা সহীহ হাদিস মানি তারা নিশ্চিত এক বাক্যে হিকমত বলতে আল্লাহর রাসূল ﷺ এর সুন্নাহকেই বুঝি যার সমর্থনে বিভিন্ন স্কলার অথবা মনীষীগণের কমেন্ট আছে। কিন্তু যারা সহীহ হাদিসও মানে না তারাই কেবলমাত্র হিকমত অর্থে পবিত্র কোরআনকেই দাবি করে যা আবার অযৌক্তিকতাপূর্ণ এবং ভুল; কিন্তু তারা কিসের ভিত্তিতে প্রমাণবিহীন দাবি করে সেটা বলতে পারবে না সঠিক ভাবে। যদিও তাদের দাবিটা মেনে নেই তবুও তাদের পক্ষে কোন সাহাবী অথবা তাবে-তাবেঈগণ সহ কোন ইসলামিক স্কলারদের কমেন্টস নেই। কারণ কী? কারণ তাদের দাবিটাই ভুল। কেননা কোরআন কেবলমাত্র নিজে নিজেই হচ্ছে থিওরি। অর্থাৎ এই থিওরিটিক্যাল জ্ঞানকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য জলজ্যান্ত একটা রোল মডেল দরকার। তো সেই রোল মডেল কে? যাঁর উপর কোরআন নাযিল হয়েছে তিনিই সে ব্যক্তি। আর ইনিই হলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ। তো তাঁর আচারণের মাধ্যমেই কোরআনের জ্ঞান বাস্তবায়িত হতো। আর এখানে বাস্তবায়নের সাথে সরাসরি অভিজ্ঞতা জড়িত, যা সরাসরি ব্যক্তির সাথে জড়িত অর্থাৎ ব্যক্তি কোন কিছু বাস্তবায়নের জন্য নিজেকে হাতে কলমে কাজ কর্ম করতে হয় একটা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। অর্থাৎ জ্ঞান কে বাস্তবে সঠিক ভাবে রুপ দেওয়ার যে অভিজ্ঞতা সেটাই হচ্ছে প্রজ্ঞা বা হিকমত।
তাহলে ২:১৫১ নং আয়াতে "حكمت/হিকমত" দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? কোরআন নাকি সহীহ সুন্নাহ? অবশ্যই কোরআন হবে না। কেননা এটা নিজে নিজেই হচ্ছে কেবলমাত্র থিওরিটিক্যাল জ্ঞানে পরিপূর্ণ যাতে সরাসরি অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ নেই। আর ইহা একটি জড় বস্তু এবং এর ভেতরে থাকা জ্ঞান কে ইহা (কোরআন) নিজে নিজেই বাস্তবায়িত করতে পারে না। কিন্তু এর জ্ঞান কে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য দরকার অভিজ্ঞতা। আর এই অভিজ্ঞতা আসে দক্ষতা ও কাজের মাধ্যমে যা একজন জলজ্যান্ত ব্যক্তি করে থাকে। আর কোরআনের জ্ঞান কে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য এরুপ উপযুক্ত ব্যক্তি হলেন মহানবী ﷺ।
▪︎ তাহলে হিকমত বলতে কী হবে? নিশ্চিত সহীহ সুন্নাহ তথা বিশুদ্ধ তরিকা পদ্ধতি সমূহ যা রাসূল ﷺ নিজেই করেছেন + বলেছেন। অর্থাৎ রাসূল ﷺ এর কোরআনের থিওরিটিক্যাল জ্ঞানকে বাস্তবায়ন করার পেছনে অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ রয়েছে। আর এটাই সহীহ হাদিস। হাদীসের অপর নাম সুন্নাহ্। (السنة) সুন্নাত শব্দের অর্থ চলার পথ, কর্মের নীতি ও পদ্ধতি। যে পন্থা ও রীতি নবী কারীম ﷺ অবলম্বন করতেন তাকে সুন্নাত বলা হয়। অন্য কথায় রাসুলুল্লাহ ﷺ প্রচারিত উচ্চতম আদর্শই সুন্নাত। কুরআন মাজিদে মহত্তম ও সুন্দরতম আদর্শ (أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ) বলতে এই সুন্নাতকেই বুঝানো হয়েছে।
▪︎ তাহলে ২:১৫১ নং আয়াতে হিকমত দ্বারা কী উদ্দেশ্য নেওয়া হয়েছে?
আমরা বলব অবশ্যই আল্লাহর রাসূল ﷺ এর সহীহ হাদিস তথা সুন্নাতকেই বোঝানো হয়েছে। আমরা মৌখিক দাবি করলেই হবে না কিন্তু। এই জন্য প্রথমেই লজিক্যাল বিশ্লেষণ করে প্রমাণ দেখিয়েছি আমাদের কথার সমর্থনে। এরপরেও সাহাবীগণ, তাবেঈগণ সহ মুফাস্সির মুহাদ্দিসগণের থেকে দলিল প্রমাণ উপস্থাপন করে দেখাব যে, এখানে হিকমত বলতে সবাই রাসূল ﷺ এর সহীহ হাদিসকেই গ্রহণ করেছেন। বিখ্যাত মুহাদ্দিস আবুল ফিদা হাফিজ ইবনে কাসীর রহঃ, ইবনে জারির রাহিঃ, হযর কাতাদা রাঃ থেকে এ ব্যাখ্যাই গ্রহণ করেছেন। হাসান বসরী রহঃ, মুকাতিল ইবনে হিব্বান রহঃ, আবু মালিক রহঃ ও এ কথাই বলেছেন "[তাফসীর ইবনে আবী হাতিম ১/১৯০]।
▪︎ আবার কেউ "وَٱلۡحِكۡمَةَ/হিকমত" বলতে কোরআনের তাফসীর, কেউ দ্বীনের গভীর জ্ঞান, কেউ ইসলামী শরিয়তের যাবতীয় বিধিবিধানের পরিপূর্ণ প্রয়োগিক জ্ঞান বলেছেন অর্থাৎ নিশ্চয়ই এসব উক্তির মূল সারমর্ম হলো রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ তথা হাদিস; যা প্রমাণিত।
হাদিসের পরিচয় জানতে ক্লিক করুন:
https://www.hadithbd.com/books/detail/?book=17§ion=162
নোট: এইভাবে কোরআনের বহুত আয়াত দিয়ে সহীহ হাদিস মেনে নেওয়ার যৌক্তিকতা প্রমাণ করা যায়। আর যদি সহীহ হাদিস না মানার কথা বলা হতো তাহলে আল্লাহ্ রাসূল ﷺ এর আনুগত্য করতে বলতেন না, তাঁর অনুসরণ কে বাধ্যতামূলক করতেন না, তিনি যা দেয় তাই গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করে তাই মেনে নাও" মর্মে ওহী প্রেরণ করতেন না। তিনি কেবলমাত্র কোরআনের অনুসরণ করো, কোরআনের আনুগত্য করো বললেই পারতেন যা কিনা বলেননি। এর অর্থ রাসূল ﷺ এর থেকে প্রমানিত যে কোন কিছুই মেনে নেওয়ার স্বীকৃতি আল্লাহ্ দিয়ে দিয়েছেন। তখন হাদিস মানার গ্রহণযোগ্যতা কোরআনের আলোকেই বৃদ্ধি পায়।
তাহলে কোরআনের আলোকে রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ তথা সহীহ হাদিস মেনে নেওয়ার স্বীকৃতি প্রমাণিত। আর তৃতীয় পয়েন্ট টাই কোরআন সংশ্লিষ্ট বাণী সহীহ হাদিস কে বোঝানো হয়েছে। যা কিছু আমরা জানতাম না তিনি তাই অবগত করেছেন আমাদের কে। আরো একটি জিনিস আমাদের কে শিক্ষা দিয়েছেন। কেননা কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ শরীয়তের মূল উৎস এবং একটি অপরটির পরিপূরক। সহীহ হাদীস ছাড়া কখনো শরীয়ত পূর্ণভাবে চলতে পারে না। যারা বলে- আমরা কুরআনে যা কিছু পেয়েছি তা-ই আমাদের জন্য যথেষ্ট; তারা পথভ্রষ্ট ছাড়া কিছুই নয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছে:
أَلَا إِنِّي أُوتِيتُ الْقُرْآنَ وَمِثْلَهُ مَعَهُ
সাবধান! জেনে রেখ! আমি কুরআন ও অনুরূপ আরো পেয়েছি।" [মুসনাদ আহমাদ হা. ১৭১৭, সহীহ]
আর এই অনুরূপ জিনিসটাই হলো রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহ হাদিস, যার কথা বলা হয়েছে ২:১৫১ ও ৩:১৬৪ নং আয়াতের মধ্যে রাসূল সেটাই শিক্ষা দিবে:... তোমরা যা অবগত ছিলেনা (وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمۡ تَكُونُواْ تَعۡلَمُونَ). এখন কোরআন বহির্ভূত কেন তাঁর কথা মানব? কারণ পবিত্র কোরআনের ৫৩ নং সূরা আন-নাজমের ৩ নং আয়াতে এরশাদ করা হয়েছে :
وَمَا يَنطِقُ عَنِ ٱلۡهَوَىٰٓ
এবং সে মনগড়া কথাও বলে না।" [অনুবাদক: মুজিবুর রহমান]
এ আয়াত থেকে এটাও প্রমাণিত হয় যে, দীনের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নিজস্ব মনগড়া কোন কথা বলতেন না। যা বলতেন ওহী প্রাপ্ত হয়েই বলতেন। এই জন্য আমরা হাদিস শাস্ত্রকে এত বড় দেখি যাতে মানবজাতির জন্য জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূল ﷺ এর নির্দেশনা পাই। আপনি পানির গ্লাস ডান হাতে না বাম হাতে ধরবেন, দাঁড়িয়ে নাকি বসে পান করবেন, পান করার সময় পানির পাত্রে নিঃশ্বাস ছাড়বেন কি ছাড়বেন না, এসবেরও পর্যন্ত রাসূল ﷺ এর নির্দেশনা রয়েছে। এক কথায় মানব জীবনের সঙ্গে ওৎপ্রোৎভাবে জড়িত প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে তিনি আমাদের কে অবগত করেছেন যা কিনা সহীহ হাদিস পাঠ করলে অহরহ জানা যায়। কোন একজন ইহুদি বলেছিল, মুহাম্মদ তাঁর অনুসারীদের সব কিছুই শেখায় এবং কি পায়খানায় যাওয়ার নিয়মটাও। যা হযরত সালমান ফার্সি রাঃ এর কাছে এইভাবে মন্তব্য করেছিলেন।
▪︎ সুন্নাতের অনুসরণ আবশ্যক কেন?
এতক্ষণে আমরা এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেলাম যে শুধু কুরআনই ওহীর মাধ্যমে নাজিল হয়নি, বরং ওহীর মাধ্যমে আমাদের জন্য বিভিন্ন নির্দেশনাও নাজিল হয়েছে। এবারে দেখার পালা যে রাসুল ﷺ কে অনুসরণ করা কি বাধ্যতামূলক? পবিত্র কোরআনের ৩ নং সূরার ৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে:
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِى يُحْبِبْكُمُ ٱللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তুমি বলঃ যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসেন ও তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করেন; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। [অনুবাদক: মুজিবুর রহমান]
Say, [O Muhammad], "If you should love Allah, then follow me, [so] Allah will love you and forgive you your sins. And Allah is Forgiving and Merciful." [Translator: Sahih International]
[নোট: রাসূল ﷺ এর অনুসরণ এবং আনুগত্য করার কথা বলা হয়েছে, পবিত্র কোরআনে ৩:৩১-৩২,১৩২; ২৪:৫২,৫৪,৫৬; ২৬: ১০৮, ১১০,১২৬,১৪৪,১৬৩,১৭৯; ৩৩:৩৩,৬৬,৭১; ৪৭:৩৩; ৪৮:১০; ৪৯:১৪; ৫৮:১৩; ৫৯:৭; ৬০:১২; ৬৪:১২,১৬ আয়াত দ্রষ্টব্য]
এখন তাঁর অনুসরণ করতে গেলেই তো সহীহ সুন্নাহ তথা হাদিস মানার বাধ্যবাধকতা চলে আসে অটোমেটিক্যালি। তাহলে কোরআন মানতে গিয়ে কিভাবে তাঁর সুন্নাহ কে অস্বীকার করব? অস্বীকার করতে গেলে পক্ষান্তরে কোরআনের বাণীকে অস্বীকার করা এবং অবমূল্যায়ন হয়ে যায়। তাহলে কোরআনের কথানুযায়ী আমাদের কে অবশ্যই তাঁর আনুগত্য করা সহ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক। আর এটাই সহীহ হাদিস মেনে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা প্রমাণিত হয়।
▪︎ সুন্নাতের অনুসরণ অস্বীকার করা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী:
আল্লাহর রাসূল ﷺ সহীহ হাদিসের মধ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছেন যে, অচিরেই তাঁর পরে কিছু লোক তাঁর দেওয়া সুন্নাহ কে অস্বীকার করবে।
প্রমাণ:
নবী মুস্তফা ﷺ এর প্রত্যেকটি বিষয় আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে, তার নিজের পক্ষ হতে নয়- এ মর্মে বর্ণিত সুস্পষ্ট হাদীস:
১] আবূ রাফি’ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ আমি যেন তোমাদের মধ্যে কাউকে এমন অবস্থায় না পাই যে, সে তার সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসে থাকবে এবং তার নিকট যখন আমার আদিষ্ট কোন বিষয় অথবা আমার নিষেধ সম্বলিত কোন হাদীস উত্থাপিত হবে তখন সে (তাচ্ছিল্যভরে) বলবে, আমি তা জানি না, আল্লাহ তা’আলার কিতাবে আমরা যা পাই, তারই অনুসরণ করবো।
২] "আল-মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ জেনে রাখো! আমাকে কিতাব এবং তার সঙ্গে অনুরূপ কিছু দেয়া হয়েছে। জেনে রাখো! এমন এক সময় আসবে যখন কোনো পরিতৃপ্ত লোক তার গদিওয়ালা আসনে বসে বলবে, আমার ও তোমাদের মাঝে এ কিতাব (কুরআন) ই-রয়েছে। তাতে আমরা যা হালাল পাবো তা হালাল জানবো এবং যা হারাম পাবো, তা হারাম বলে গ্রহণ করবো। নবী ﷺ বলেন, জেনে রাখো! বিষয়টি কিছুতেই তা নয়।" অনলাইন সোর্স থেকে পড়তে ক্লিক করুন:
https://www.hadithbd.com/hadith/subjectwise/detail/?sub=19
তাহলে এইখানে আল্লাহর রাসূল ﷺ সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছেন যে, "অচিরেই এমন কিছু লোকের আবির্ভাব হবে যাদের নিকট আল্লাহর রাসূল ﷺ এর সহীহ হাদিস থেকে কিছু উত্থাপন করলে তা সে অস্বীকার করবে।" তাঁর করা ভবিষ্যদ্বাণী ১০০% হুবহু ফলে গেল বাস্তবে। এখন কেন ফলল??? কারণ মহান আল্লাহ্ এই আগাম খবরটাও তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন বিধায় তিনিও আমাদের কে এসব লোকদের কবল থেকে ঈমানহারা হওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন তা অবগত করার মাধ্যমে। তো যিনি সবচেয়ে ভালো বুঝতেন কোরআন এবং তা পালন করতেন, স্বয়ং তিনি নিজেই এই কথা বলেছেন। এখন তাঁর উপর আর কোন কথা হতে পারে না।
আল্লাহর রাসূল ﷺ সেই ১৪০০+ বছর পূর্বে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলে গিয়েছেন এই কথা। এখন যদি তাঁর সহীহ হাদিস মিথ্যা হতো তাহলে কেন তাঁর করা ভবিষ্যদ্বাণীর একটাও আজ পর্যন্ত মিথ্যায় পরিণত হলো না???? আবার আপনি নিজেই সহীহ হাদিসের ভেতরে করা ভবিষ্যদ্বাণী মূলক বাণী সমূহ কে একত্রিত করেন। এরপর সেটাকে বাস্তবতার আলোকে যাচাই বাছাই করে দেখেন কোন ভবিষ্যদ্বাণী মূলক কথা মিথ্যায় পরিণত হয়েছে কিনা? যদি এমন কোন হাদিস যা সহীহ অথচ তার ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবে না ফলে বরং মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে এমন কোন হাদিস থাকলে প্রমাণ দেখান?? তাহলে আমরাও আল্লাহর রাসূল ﷺ এর থেকে প্রমানিত হাদিসও অস্বীকার করব।