Are you sure?

বিবিধ »  বিবিধ

কিছু মুলনীতি ও তথ্য, যেগুলো কিনা প্রচন্ড গুরুত্বপুর্ণ, কিন্ত অবহেলিত।

 

বিষয় : কিছু মুলনীতি ও তথ্য, যেগুলো কিনা প্রচন্ড গুরুত্বপুর্ণ, কিন্ত অবহেলিত। 

লেখক : সামিউল হাসান তবিব আল-ইনফিরাদী

 

0. সুচিপত্র :-

1. ভুমিকা।
2. কিছু ক্রুটিপুর্ণ সমস্যাজনক দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে।
3. ইসরাইলি তথ্যভান্ডার প্রসঙ্গে।
4. একটি চরম গুরুত্বপুর্ণ মুলনীতি।
5. উক্ত (চরম গুরুত্বপুর্ণ) মুলনীতিটির ব্যাখ্যা।
6. ইলমুল-গায়েব ও আল-ইজমা।
7. পরিশিষ্ট।
8. টিকাসমুহ। 

1.ভুমিকা :-

কিছু সাহাবি, তাবেঈ, তাবে-তাবেঈ ও তাঁদের পরবর্তীকালের উলামাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তাঁরা এমন কিছু তথ্য নিজেদের পক্ষ হতে বর্ণনা বা উল্লেখ্য করেছেন যেগুলো ইজতিহাদ, কিয়াস, চিন্তাশক্তি,বুদ্ধি, ব্যাখ্যাবিশ্লেষণ ও মেধাপ্রয়োগ দ্বারা জানা, বোঝা বা নির্ণয় করা সম্ভব নয় বরং ইলমুল-গায়েবের অন্তর্ভুক্ত, এবং সেই উল্লেখিত বা বর্ণিত তথ্যগুলোর পক্ষে কোরান সুন্নাহতে কোনো দলিল-প্রমাণের অস্তিত্ব নেই। এই লেখাটিতে এই ধরনের তথ্যগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও নির্ভরযোগ্যতার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

2. কিছু ক্রুটিপুর্ণ সমস্যাজনক দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে :-

ধরুন কোনো একজন সাহাবি এমন একটা তথ্য বর্ণনা করলেন যা কিনা ইলমুল-গায়েবের অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ ইজতিহাদ, কিয়াস, ব্যাখ্যাবিশ্লেষণ ও মেধাপ্রয়োগ দ্বারা উক্ত তথ্য জানা বা নির্ণয় করা সম্ভব নয় এবং সেই তথ্যটির পক্ষে কোরান-সুন্নাহতে কোনোকিছু বর্ণিত হয়নি। এই ধরনের পরিস্থিতীতে অনেকে মনে করেন যে, যেহেতু তথ্যটা একজন সাহাবি বর্ণনা করেছেন, এরমানে অবশ্যই এই তথ্যটা মারফু, অকাট্য, চুড়ান্ত, পরম সত্য, নিশ্চিত, নির্বিকল্প, অনস্বীকার্য, অপ্রত্যাখ্যেয়, সংশয়াতীত, সন্দেহাতীত,তর্কাতীত, বিতর্কোর্ধ ; যদিও তথ্যটি কোরান-সুন্নাহর কোথাও বর্ণিত হয়নি।

কিন্ত এই দৃষ্টিভঙ্গিটিতে কিছু ঝামেলা বিদ্যমান, এই দৃষ্টিভঙ্গিটি আংশিক সঠিক ও আংশিক ভুল। ক্ষেত্রবিশেষে শর্তসাপেক্ষে একজন সাহাবি কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের তথ্য অকাট্য ও মারফু হয়, তবে ঢালাওভাবে সবক্ষেত্রেই একজন সাহাবি কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের তথ্য মারফু বা অকাট্য হয়না, অর্থাৎ চুড়ান্ত, পরম সত্য, নিশ্চিত, নির্বিকল্প, অনস্বীকার্য, অপ্রত্যাখ্যেয়, সংশয়াতীত, সন্দেহাতীত,তর্কাতীত, বিতর্কোর্ধ হয়না।

অনেকে এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি তাবেঈ, তাবে-তাবেঈ ও তাঁদের পরবর্তীকালের উলামাদের কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের তথ্যগুলোর ক্ষেত্রেও রাখেন। আরো স্পষ্ট করে বলি, ধরুন কোনো তাবেঈ বা তাবে-তাবেঈ বা তাবেতাবেইদের পরবর্তীকালের আলেম এমন একটা তথ্য বর্ণনা করলেন যা কিনা ইলমুল-গায়েবের অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ ইজতিহাদ, কিয়াস, ব্যাখ্যাবিশ্লেষণ ও মেধাপ্রয়োগ দ্বারা উক্ত তথ্য জানা বা নির্ণয় করা সম্ভব নয় এবং সেই তথ্যটির পক্ষে কোরান-সুন্নাহতে কোনোকিছু বর্ণিত হয়নি, এই ধরনের পরিস্থীতে অনেকে মনে করেন যে যেহেতু উক্ত তথ্যটা অমুক তাবেঈ বা তাবে তাবেঈ বা তাবেতাবেইদের পরবর্তীকালের আলেম বলেছেন, এরমানে অবশ্যই উক্ত তথ্যটি অকাট্য কোনোকিছু, যদিও উক্ত তথ্যটি কোরান সুন্নাহতে বর্ণিত হয়নি।

এই দৃষ্টিভঙ্গি সম্পুর্ণরুপে ভুল, এটা আংশিকভাবে ভুল নয় বরং সম্পুর্ণরুপে ভুল।

যাই হোক, এসব ব্যাপারে দলিলসমৃদ্ধ বিস্তারিত আলোচনা পরবর্তী পয়েন্টগুলোতে আসবে।

3. ইসরাইলি তথ্যভান্ডার প্রসঙ্গে :-

মূল আলোচনাকে ভালোভাবে বোঝতে হলে ইসরাইলি তথ্যভান্ডার সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপুর্ণ বিষয় জানা প্রয়োজন। কাজেই এই পয়েন্টটিতে নির্দিষ্টভাবে ইসরাইলি তথ্যভান্ডার সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে।

ইসরাইলি তথ্যভান্ডার মানে হলো ইহুদি খ্রিষ্টান ও অন্যান্য আহলুল-কিতাব সম্প্রদায়ের সকল ধর্মীয় বইপত্রসমুহ, আহলুল-কিতাবদের সমাজে লোকমুখে প্রচলিত বিভিন্ন ধর্মীয় কথাবার্তা, ইত্যাদি ইত্যাদি এই ধরনের জিনিসগুলো।

ইসরাইলি উৎস হতে প্রাপ্ত তথ্য ৩ প্রকার।

এক. কোরান-সুন্নাহ সম্মত তথ্য। যেই ইসরাইলি তথ্য ইসরাইলি উৎসের পাশাপাশি রাসুল সা. এর হাদিসে কিংবা কোরানে বিদ্যমান, সেই ইসরাইলি তথ্য হলো কোরান-সুন্নাহ সম্মত তথ্য। এই ধরনের ইসরাইলি তথ্য কোনোরূপ সন্দেহ ছাড়াই গ্রহণযোগ্য, শুধুই গ্রহণযোগ্য নয় বরং কোরান সুন্নাহতে বিদ্যমান থাকার কারণে এগুলো গ্রহণ করাটা আবশ্যক।

দুই. কোরান-সুন্নাহ বিরোধী তথ্য। যেই ইসরাইলি তথ্যকে কোরান বা রাসুল (সা) এর কোনো হাদিস প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভুল বা মিথ্যা সাব্যস্ত করে, সেই ইসরাইলি তথ্য হলো কোরান-সুন্নাহ বিরোধী তথ্য। এই ধরনের তথ্য জেনে বুঝে গ্রহণ করা অবৈধ।

তিন.  নিরপেক্ষ তথ্য। যেই ইসরাইলি তথ্যকে কোরান বা রাসুল (সা) এর কোনো হাদিস সঠিক/সত্য সাব্যস্ত করেনা, আবার একইসাথে মিথ্যা/ভুলও সাব্যস্ত করেনা, সেই ইসরাইলি তথ্য হলো নিরপেক্ষ তথ্য। এই ধরনের তথ্যের ক্ষেত্রে হুকুম হলো এই যে এগুলোকে সঠিক হিসেবে বিশ্বাস করা যাবেনা, আবার ভুল হিসেবেও বিশ্বাস করা যাবেনা। এগুলো গ্রহণ করা বা বর্ণনা করা বৈধ, তবে এগুলো দলিল-প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়, অর্থাৎ এগুলোকে ইসলাম সম্পর্কিত কোনোকিছু প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে দলিল  হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা , এই ধরনের ইসরাইলি তথ্য নির্ভর করার মত বিশ্বস্ত কোনো জিনিস নয়।

সাধারণভাবে ইসরাইলি তথ্য বলতে তৃতীয় বা দ্বিতীয় প্রকারের ইসরাইলি তথ্যকে নির্দেশ করা হয়ে থাকে। কেননা প্রথম প্রকারের ইসরাইলি তথ্যগুলো মুলত কোরান সুন্নাহরই বক্তব্য, আর কোরান সুন্নাহর বক্তব্যের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে এমনটা বলা হয়না যে সেটা ইসরাইলি।

সাহাবিদের যূগ থেকেই মুসলিমদের মাঝে ইসরাইলি তথ্যভান্ডার হতে বিভিন্ন তথ্যের প্রচার প্রসার আরম্ভ হয়, সাহাবিরা (রিদ্বওয়ানুল্লাহি আলাইহিম) ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়া ইসরাইলি উৎসের পন্ডিতদের নিকট হতে প্রচুর পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য গ্রহণ করতেন।[1] অতপর তাবেঈদের যূগে এই ইসরাইলি উৎস হতে বিভিন্ন তথ্য গ্রহণ ও প্রচার প্রসারের প্রবণতাটা আরো বহুগূণ বৃদ্ধি পায়,তাবেঈদের যূগে অনেক বেশি পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য দ্বীন ইসলামে অনুপ্রবেশ করে। তাবেঈরা কোনোরূপ বাছ-বিচার ও যাচাই বাছাই ছাড়াই  ঢালাওভাবে ব্যাপক হারে ইসরাইলি উৎস হতে বিভিন্ন তথ্য বর্ণনা ও গ্রহণ করা আরম্ভ করেন, যার ফলস্বরুপ তৎকালীন সময়ের তাফসির ও ইতিহাস শাস্ত্রে ইসরাইলি তথ্যসমুহের বন্যা এসে যায়। তাছারা তাবেইদের যূগে ইসরাইলি উৎসের বিভিন্ন তথ্যের এত বেশি প্রচার প্রসার হয়ার আরেকটা কারণ হচ্ছে এই যে এই যূগে ইসলামে ধর্মান্তরিত ইসরাইলি উৎসের পন্ডিতদের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছিলো। সাহাবিদের যূগেও ইসরাইলি উৎস হতে অত্যাধিক হারে প্রচুর পরিমাণ তথ্য বর্ণনা করার প্রবণতা ছিলো। কিন্ত সাহাবিদের যূগে এব্যাপারটা তাবেইদের যুগের মতো লাগামহীন, বাছ-বিবেচনাহীন ও বিশৃঙ্খলতাপুর্ণ ছিলোনা।

তাফসরি, ইতিহাস,  ইলমুল-গায়েব (বিশেষ করে সৃষ্টিতত্ত্ব ও জৌতির্বিদ্যা), এসব ক্ষেত্রসমুহ তাবেইদের যূগে ইসরাইলি তথ্যসমুহের মহাবন্যা দ্বারা আক্রান্ত হয়, আর এই মহাবন্যা তাবে-তাবেঈদের যূগেও বজায় থাকে। অর্থাৎ তাবেইদের যূগের পরের যূগেও ইসরাইলি উৎস হতে প্রচুর পরিমাণ তথ্য যথাযথ যাচাই বাছাই ছাড়াই গ্রহণকৃত ও বর্ণিত হতে থাকে।ইসরাইলি উৎস হতে প্রচুর পরিমাণ তথ্য গ্রহণ ও বর্ণনা করার প্রবণতাটা তাবে তাবেঈদের যূগেও বহাল ছিলো। মুতাকাদ্দিম ও মুতায়াখখির বিভিন্ন উলামাদের বিভিন্ন তাফসির ও ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থে সাহাবি, তাবেঈ ও তাবে তাবেঈদের কর্তৃক বর্ণিত ও গ্রহণকৃত বিপুল সংখ্যাক ইসরাইলি তথ্যসমুহের একটা বড় অংশই সংকলিত ও উল্লেখিত হয়ে যায়, যার ফলস্বরুপ সাহাবি তাবেই ও তাবে তাবেইদের কর্তৃক বর্ণিত অনেকগুলো ইসরাইলি তথ্য পরবর্তী যূগসমুহের মুসলিমদের নিকট বিভিন্ন গ্রন্থে লিপিবদ্ধ থাকা অবস্থায় পৌছে যায়। আর এভাবে, প্রায় সকল যূগের মুসলিম উলামারাই ইসরাইলি তথ্যসমুহ দ্বারা কমবেশি প্রভাবিত হয়েছেন, কিছু আলেমরা কম বা খুবই কম প্রভাবিত হয়েছেন, কিছু আলেমরা বেশি বা খুবই বেশি প্রভাবিত হয়েছেন, কিছু আলেমরা মাঝারি মাত্রায় প্রভাবিত হয়েছেন।

ব্যাপারটা মোটেও এমন না যে তাবে তাবেইদের যূগের পর থেকে ইসরাইলি উৎস হতে এত বেশি পরিমাণ তথ্য উল্লেখ্য করার প্রবণতাটা কমে গিয়েছিলো কিংবা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো। বরং তাবেঈদের যুগে ও তাবে তাবেইদের যুগে অবস্থা যেরকম ছিলো, তাবে তাবেইদের পররবর্তী যূগের অবস্থাটা সেরকমই ছিলো, তাবে তাবেইদের পরের যূগে আগত উলামারাও প্রচুর সংখ্যাক ইসরাইলি তথ্য বিভিন্ন ভঙ্গিতে উল্লেখ্য করতেন। তাবে তাবেইরা ও তাবে তাবেইদের পরবর্তী যূগগুলোতে আগত উলামারা ইসরাইলি তথ্যসমুহের প্রতি আসক্ত ছিলেন, তাঁরা ইসরাইলি উৎস হতে বিভিন্ন তথ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করতেন, বাড়াবাড়ির ফলস্বরুপ অবস্থা অনেকটা এরকম হয়ে গেছিলো যে তাঁরা কোনো ইসরাইলি তথ্য পাওয়া মাত্রই সেটা গ্রহণ করে নিতেন, একটা তথ্যকেও প্রত্যাখ্যান করতেন না, এমনকি কান্ডজ্ঞানের সাথে অসামঞ্জস্যপুর্ণ বিভিন্ন ইসরাইলি তথ্যকে কোরানের সহিত সম্পৃক্ত করা হতেও তাঁরা বিরত থাকতেন না। অতপর ইসরাইলি তথ্যসমুহের প্রতি এই আসক্তি ও গভির আকর্ষণ জারি থাকে। এমন বহু মুফাসসিরদের পাওয়া যাবে যারা কিনা ইসরাইলি তথ্যসমুহ দ্বারা নিজেদের গ্রন্থগুলোকে ভাসিয়ে ফেলেছেন।

অবশ্য সকল যুগেই কিছু ব্যাতিক্রমী আলেম ছিলেন, যারা কিনা ইসরাইলি উৎসের ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন বা সতর্ক থাকার চেষ্টা করতেন। কিন্ত যারা ইসরাইলি উৎসের ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন বা সতর্ক থাকার চেষ্টা করতেন, তারাও অনেকসময় যথাযথ চিন্তভাবনা ছাড়াই  বেখেয়ালিবশত বিভিন্ন ইসরাইলি তথ্য উল্লেখ্য করতেন ও বিভিন্ন ইসরাইলি তথ্যের উপর নির্ভর করতেন, এই ধরনের সতর্ক আলেমদের মধ্য হতে অনেকে আবার ইচ্ছাকৃতভাবেই অনির্ভরযোগ্য বিভিন্ন ইসরাইলি তথ্যকে উল্লেখ্য করতেন নিছকই গ্রন্থের 'শোভাবর্ধনকারী' হিসেবে। এই ধরনের সতর্ক আলেমদের মধ্য হতে একজন হলেন প্রসিদ্ধ মুফাসসির ইবনু কাসির (রহ)।

এতক্ষণ বলা আমার এসব কথার পক্ষে অগণিত সংখ্যাক রেফারেন্স দেখানো যাবে। কিন্ত এত বেশি পরিমাণ রেফারেন্স সংগ্রহ করে উল্লেখ্য করাটা খুবই সময়সাপেক্ষ। কাজেই আমি এখানে অল্প কিছু রেফারেন্স উল্লেখ্য করছি, আর আমার ধারনা অনুযায়ী এগুলোই যথেষ্ট হয়ার কথা।

এক. 'ডক্টর আস-সাইদ হুসাইন আয-যাহাবী' এর গ্রন্থ "التفسير و المفسرون "। ডক্টর হুসাইন আয-যাহাবী তাঁর এই গ্রন্থটির অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অনেকবার এইপ্রসঙ্গে বিস্তারিত ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা এনেছেন। কাজেই নির্দিষ্টভাবে পেইজ বা খন্ড নং উল্লেখ্য করবনা। এই বইটিতে সামান্য অনুসন্ধান করলেই এইসব আলোচনা পেয়ে যাবেন।

দুই. 'ডক্টর মুহাম্মদ আবু-শুহবাহ' এর গ্রন্থ "الإسرائيليات و الموضوعات في كتب التفسير "। ডক্টর আবু-শুহবাহ  তাঁর এই গ্রন্থটির অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অনেকবার এইপ্রসঙ্গে বিস্তারিত ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা এনেছেন। কাজেই নির্দিষ্টভাবে পেইজ বা খন্ড নং উল্লেখ্য করবনা। এই বইটিতে সামান্য অনুসন্ধান করলেই এইসব আলোচনা পেয়ে যাবেন।

তিন. 'ডক্টর নুরুদ্দিন মুহাম্মদ আতার আল-হালবী' এর গ্রন্থ "علوم القران الكريم" এর পৃষ্ঠা নম্বর 75 থেকে 76।

চার. 'মানা বিন খালিল আল-কাত্তান' এর গ্রন্থ "مباحث في علوم القران " এর পৃষ্ঠা নম্বর 364 থেকে 366।

(ইত্যাদি ইত্যাদি……)

4. একটি চরম গুরুত্বপুর্ণ মুলনীতি :-

যদি 'ক' ব্যাক্তি এমন কোনো তথ্য বর্ণনা করেন যা কিনা বুদ্ধি, মেধা ও চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে জানা বা বোঝা বা বলা সম্ভব নয়,যা কিনা ইলমুল-গায়েবের অন্তর্ভুক্ত ও শুধুমাত্র ওয়াহীর মাধ্যমেই জানা ও বলা সম্ভব, যা কিনা কোরান কিংবা রাসুল (সা) হতে বর্ণিত কোনো সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়নি, যার সঠিকতার সাক্ষ্য কোরান ও সহিহ-সুন্নাহতে বিদ্যমান নেই ; সেক্ষেত্রে 'ক' ব্যাক্তি কর্তৃক বর্ণিত সেই তথ্যটি গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য অকাট্য মারফু দলিল হিসেবে গণ্য হবে, যদি 'ক' ব্যাক্তি এমন কোনো একজন সাহাবি হয়ে থাকেন যিনি কিনা ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী নন। পক্ষান্তরে যদি 'ক' ব্যাক্তি একজন ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী সাহাবী হন, সেক্ষেত্রে তাঁর এই বক্তব্য কোনো অকাট্য মারফু দলিল হবেনা, বরং সেক্ষেত্রে তাঁর এই বক্তব্য ক্রুটিপুর্ণ প্রত্যাখ্যানযোগ্য ও অনির্ভরযোগ্য হতে পারে। যদি 'ক' ব্যাক্তি সাহাবি না হয়ে সাহাবিদের নিচের স্তরের যেকোনো একজন আলেম হন, সেক্ষেত্রে 'ক' এর বর্ণিত এই ধরনের তথ্য কোনোক্ষেত্রেই অকাট্য কোনো দলিল নয়, বরং তা সর্বদাই প্রত্যাখানযোগ্য ও অনির্ভরযোগ্য, এবং খুবই দুর্বল। অসাহাবিদের বর্ণিত এই ধরনের তথ্যগুলোকে কোনোকিছু প্রমাণ করার জন্য দলিল হিসেবে ব্যবহার করা যায়না।_[2]

এইটাই হচ্ছে এব্যাপারের প্রাথমিক মুলনীতি।

5. উক্ত (চরম গুরুত্বপুর্ণ) মুলনীতিটির ব্যাখ্যা :-

চতুর্থ পয়েন্টে বর্ণিত মুলনীতিটির কিছু বিষয়কে আরো বিস্তৃত ও প্রসারিত করে এই পঞ্চম পয়েন্টটিতে ব্যাখ্যা করা হবে।

এক.  যদি 'ক' একজন সাহাবি হয় :

উপরে চতুর্থ পয়েন্টে উল্লেখিত মুলনীতিটিতে বর্ণিত 'ক' যদি একজন 'সাহাবী' হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর বর্ণিত এই ধরনের তথ্য হুকুমের দিক দিয়ে মারফু হবে, অর্থাৎ অকাট্য, নির্ভুল, নিশ্চিত, চুড়ান্ত, পরম সত্য, নির্বিকল্প, অনস্বীকার্য, অপ্রত্যাখ্যেয়, সংশয়াতীত, সন্দেহাতীত
,তর্কাতীত ও বিতর্কোর্ধ  হবে।

"কিন্ত, যদি এমনটা জানা যায় সে উক্ত সাহাবী ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী ছিলেন, এবং যদি তাঁর বর্ণিত এই ধরনের গায়েবসক্রান্ত তথ্যটির ইসরাইলি উৎস হতে গ্রহণকৃত হয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে উক্ত সাহাবীর বর্ণিত এই ধরনের তথ্যটি অকাট্য কোনোকিছু হবেনা, কোনো নির্ভরযোগ্য দলিল হবেনা, কোনোকিছু প্রমাণ করার সামর্থ্যধারী হবেনা। বরং তা ভুল ও প্রত্যাখানযোগ্যও হতে পারে। কেননা এক্ষেত্রে সম্ভাবনা ও সন্দেহ থাকে যে সেই সাহাবি উক্ত তথ্যটি ইসরাইলি উৎস হতে বর্ণনা করেছেন।" _[3]

এই একটা মুলনীতিকে উল্লেখ্য করার সময় কিছু আলেমরা লিখেছেন যে উক্ত সাহাবী যদি ইসরাইলি উৎস হতে 'অধিক পরিমাণ' তথ্য গ্রহণকারী হন, তাহলে এই নীতি প্রযোজ্য হবে। পক্ষান্তরে আরেকদল আলেম এই মুলনীতিটিকে উল্লেখ্য করার সময় নিছকই এতটুকু লিখেছেন যে উক্ত সাহাবী যদি ইসরাইলি উৎস হতে গ্রহণকারী হয়ে থাকেন, তাহলেই এই নীতি প্রযোজ্য হবে, তাঁরা এক্ষেত্রে 'অধিক পরিমাণ' বা পরিমাণসক্রান্ত এরকম অন্যকিছু বলেন নি। যেসব উলামারা উক্ত মুলনীতিটি উল্লেখ্য করার ক্ষেত্রে ইসরাইলি তথ্য গ্রহণ বা বর্ণনা করার ব্যাপারটার সহিত 'অধিক পরিমাণ' কথাটা জুড়ে দিয়েছেন, সেসব উলামাদের উক্ত মুলনীতিসম্পর্কিত বক্তব্যগুলো দেখলে অনেকের মনে এইমর্মে প্রশ্ন জাগতে পারে যে "এরমানে কি এই না? যে যদি কোনো সাহাবী অধিক পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য বর্ণনাকারী ও গ্রহণকারী হন তাহলেই শুধুমাত্র তখনিই তাঁর উপর এই নীতি প্রযোজ্য হবে ; এবং যদি কোনো একজন সাহাবী মাঝারি বা কম পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য গ্রহণকারী হোন তাহলে তাঁর উপর এই নীতি প্রযোজ্য হবেনা।"

এই প্রশ্নটির উত্তর নিম্নরূপ,

কোনো সাহাবী যদি 'অধিক পরিমাণ' ইসরাইলি তথ্য গ্রহণকারী হন, তাহলে তাঁর বর্ণিত এই ধরনের তথ্যের ক্ষেত্রে উক্ত নীতিটি খাটবে, এটা সম্পুর্ণ সত্য কথা, এই কথাতে কোনো ভুল নাই। কাজেই যেসব আলেমরা 'অধিক পরিমাণ' কথাটি জুড়ে দিয়ে উক্ত মুলনীতিটি বর্ণনা করেছেন, তারা আসলে এমনটা করে ভুল কিছু করেন নি। কিন্ত এরমানে এইনা যে এই নীতিটি শুধুমাত্র 'অধিক পরিমাণ' ইসরাইলি তথ্য গ্রহণকারী সাহাবিদের উপরই প্রযোজ্য,  বরং কোনো সাহাবী যদি ইসরাইলি উৎস হতে কম বা মাঝারি পরিমাণের তথ্য গ্রহণকারী হয়ে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রেও তাঁর উপর এই নীতিটি প্রযোজ্য হবে। প্রকৃতপক্ষে কোনো একজন সাহাবি 'কি পরিমাণ' ইসরাইলি তথ্য গ্রহণ করতেন তা এক্ষেত্রে বিবেচ্য নয়, বরং বিবেচ্য হলো নিছকই এতটুকু যে তিনি ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী ছিলেন নাকি ছিলেন না। যদি গ্রহণকারী হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর উপর উক্ত নীতি প্রযোজ্য হবে, যদি গ্রহণকারী না হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর উপর উক্ত নীতি প্রযোজ্য হবেনা, গ্রহণ করার হার বা পরিমাণ যাই হোক না কেন।

এব্যাপারে 'শায়খ আবুল-মুনযির মাহমুদ আল-মিনইয়াওই' লিখেছেন যে,

والصواب أنه لا يشترط أن يكون من المكثرين ليرد حديثه، وإنما يكتفى أن يعرف بالأخذ عن أهل الكتاب، وعليه فمفهوم المخالفة من هذا القيد معطل_[4]

মর্ম : এবং সঠিক কথা হলো এই যে এক্ষেত্রে তাঁর (ইসরাইলি তথ্য গ্রহণকারী সাহাবীর) হাদিস প্রত্যাখ্যান করার জন্য তাঁর (উক্ত সাহাবীর) অধিক পরিমাণ (ইসরাইলি তথ্য গ্রহণকারী) হয়াটা কোনো শর্ত নয়। বরং যদি এতটুকু জানা যায় যে তিনি আহলুল-কিতাবদের নিকট হতে গ্রহণ করেছেন, তাহলেই যথেষ্ট হবে। এবং এটাই সঠিক, তাছারা এই নীতিটির বিরোধিতা করাটা ভুল ও সমস্যাজনক।

যেসব সাহাবীরা ইসরাইলি উৎস হতে কমবেশি বিভিন্ন তথ্য গ্রহণ ও বর্ণনা করেছেন, সেসব সাহাবীরা হলেন ; _[5]

1.আব্দুল্লাহ বিন সালাম
2.আব্দুল্লাহ বিন উমার ইবনুল-আসস
3. আবু-হুরাইরাহ
4. আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস
5. আব্দুল্লাহ ইবনু উমার ইবনুল-খাত্তাব
6. আনাস বিন মালিক
7. আব্দুল্লাহ ইবনুয যুবাইর
8. সালমান আল-ফারসী
9. আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ
10. আলি ইবনু আবি-তালিব
11. উবাই বিন কা'ব
12. আয়েশাহ বিনতু আবি-বকর
13. সামুরাহ বিন জানদাব
14. খুরাইম বিন ফাতাক
15. শাদ্দাদ বিন আওস আল-আনসারী
16. আওছ বিন আওছ আছ-ছাক্বাফী
17. কা'ব বিন আজরাহ
18. জারিয়াহ বিন কুদ্দামাহ
19.  আন-নোমান বিন বাশির
20. উমার ইবনুল-খাত্তাব
21. উসমান বিন আফফান
22. আল-আব্বাস বিন আব্দুল-মুত্তালিব
23. আবু-মুসা আল-আশয়ারী
24. আবুদ-দারদা
25. উবাদাহ ইবনুস সমাত
26. মুয়াবিয়াহ বিন আবি-সুফিয়ান
27. আল-মুগিরাহ বিন নাওফেল
28. আবু-ছা'লাবাহ আল-খাশানী
29. আবু-লুবাবাহ আল-আনসারী

(রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম)

দুই.  যদি 'ক' একজন তাবেঈ হয় :

এবার, ধরি চতুর্থ পয়েন্টে উল্লেখিত 'ক' হলেন একজন তাবেঈ।

তাবেইদের মাঝে ইসরাইলি উৎস হতে বিভিন্ন তথ্য গ্রহণের প্রবণতা সাহাবিদের তুলনায় অনেক গুণ বেশি ছিলো, তাবেইরা সাহাবিদের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য গ্রহণ করতেন। সাহাবিদের কর্তৃক ইসরাইলি তথ্য গ্রহণের ব্যাপারটা পুরাই লাগামহীন ছিলোনা, ঢালাওভাবে নির্বিচারে ছিলোনা, বরং তুলনামুলকভাবে অধিক নিয়ন্ত্রিত ও শৃঙ্খলতাযুক্ত ছিলো ; কিন্ত তাবেইদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ছিলো ঢালাওভাবে, নির্বিচারে, লাগামহীন, বিশৃঙ্খলতাপুর্ণ, সাধারণত তাবেইরা কোনো ইসরাইলি তথ্য পাওয়ামাত্রই তা গ্রহণ করে নিতেন কোনোরুপ চিন্তাভাবনা করা ছাড়াই, মানে ইসরাইলি উৎস হতে যা পেতেন ; অনেকটা অন্ধভাবেই গ্রহণ করে নিতেন। ইসলামের প্রায় ১৪০০ বছরের গোটা ইতিহাসে যেই যুগটিতে ইসরাইলি উৎস হতে আগত তথ্যসমুহ সবচেয়ে বেশি প্রচার, প্রসার, পরিচিতি ও খ্যাতি লাভ করেছিলো সেই যুগটি হলো তাবেঈদের যূগ, তাবেঈদের যূগটি ছিলো মুসলিমদের মাঝে ইসরাইলি তথ্যসমুহের প্রচার প্রসার ও গ্রহণকৃত হয়ার এক বিরল বেমিছাল মহা-স্বর্ণযূগ। এই যূগে যেই পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য দ্বীন ইসলামে অনুপ্রবেশ করেছিলো, সেই পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য আর অন্য কোনো যূগেই দ্বীন ইসলামে প্রবেশ করতে পারেনি। ইলমুল-গায়েব সক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মন্তব্যকারী যত তাবেঈ আছেন, তাদের প্রায় সবাই ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী ছিলেন। বিভিন্ন বড় বড় প্রসিদ্ধ তাবেঈরাও ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী ছিলেন, যেমন : আল-হাসান আল-বসরী, ইকরামাহ, কাতাদাহ, মুজাহিদ, সাঈদ প্রমুখ (রহিমাহুমুল্লাহ) । ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী না হয়া সত্ত্বেও ইলমুল-গায়েব সক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজ পক্ষ হতে মন্তব্য করেছেন, এমন তাবেঈ খোজে পাওয়া চরম পর্যায়ের কঠিন, অনেকটা মরুভুমির বালিতে সুই খোজার মত ব্যাপার, এমন তাবেঈ প্রায় নেই বললেই চলে। তাছারা তাবেঈদের বক্তব্যের গ্রহণযোগ্যতা বা নির্ভরযোগ্যতা, তাবেইদের ব্যাক্তিগত মর্যাদা, এজাতীয় যা কিছুই আছে, তার সবই সাহাবিদের তুলনায় তুলনামুলকভাবে কম, সাহাবিরা তাবেইদের তুলনায় অধিক মর্যাদাবান, সাহাবিদের বক্তব্যের মুল্য তাবেইদের বক্তব্যের মুল্যের চেয়ে বেশি।

এবার এই পঞ্চম পয়েন্টের এক নং উপ-পয়েন্টে চলে যান। সেখানে আমি সাহাবিদের ইলমুল-গায়েব সক্রান্ত বক্তব্য কখন অকাট্য দলিল হবে ও কখন অকাট্য দলিল হবেনা সেবিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত একটি মুলনীতি উল্লেখ্য করেছি। সেই মুলনীতিটির সারমর্ম হচ্ছে এই যে, যদি কোনো সাহাবি ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী হয়ে থাকেন ও উনার বর্ণিত ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্যটির ইসরাইলি উৎস হতে গ্রহণকৃত হয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে, তাহলে উক্ত সাহাবি কর্তৃক প্রদানকৃত উক্ত ইলমুল-গায়েব সক্রান্ত বক্তব্যটি অকাট্য কোনোকিছু হবেনা, কোনো নির্ভরযোগ্য দলিল হবেনা। সুতরাং এই একই মুলনিতী তাবেঈদের ক্ষেত্রে আরো দৃঢ়ভাবে, আরো কঠোরভাবে, আরো নিশ্চিতভাবে, এবং আরো বেশিমাত্রায় প্রযোজ্য হয়ার অধিকার রাখে।অতএব, এই মুলনিতীটি অধিক দৃঢ়তা, অধিক কঠোরতা, অধিক নিশ্চয়তা ও অধিক গুরুত্বের সহিত তাবেঈদের কর্তৃক বর্ণিত ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্যগুলোর উপর প্রযোজ্য হবে। আর পুর্বেই উল্লেখ্য করেছি যে, ইলমুল গায়েব সক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে মন্তব্যকারী তাবেইদের মধ্যে প্রায় সবাই ই ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী। যার অর্থ দারায় এই যে, সাধারণভাবে, তাবেঈদের কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের ইসরাইলি উৎস হতে গ্রহণকৃত হয়ার সম্ভাবনাযুক্ত ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্যসমুহ অকাট্য কোনো কিছু নয়, কোনোকিছু প্রমাণ করার সামর্থধারী নয়, নির্ভরযোগ্য কোনো দলিল নয়, বরং এগুলো ভুল ও প্রত্যাখ্যানযোগ্যও হতে পারে।

অতপর, কেও যদি মরুভূমির বালিতে সফলভাবে সুই খুজতে সক্ষম হয় অর্থাৎ এমন কোনো তাবেঈ কে খুজে নিয়ে আসতে সক্ষম হয় যিনি কিনা ইলমুল গায়েব সক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে মন্তব্যকারী হয়া সত্ত্বেও ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী নন ; এবং সেই তাবেঈকে উপস্থাপন করাপুর্বক এইমর্মে প্রশ্ন করে বসে যে "তাহলে এই তাবেঈর ইলমুল গায়েব সক্রান্ত মন্তব্যের ক্ষেত্রে মুলনিতী কি? এনার ইলমুল গায়েব সক্রান্ত বক্তব্য কি তাহলে অকাট্য কোনোকিছু হবে?  যেহেতু ইনি ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী নন!?  "

তাহলে এক্ষেত্রে উত্তরে আমি বলব যে,

প্রথমত, এই ধরনের পরিস্থীতিতে উক্ত তাবেঈ কর্তৃক প্রদানকৃত তথ্যটির উৎস অজ্ঞাত। তাবেঈদের উপর কোনো উহি আসেনা যাদ্বারা তাবেইরা এমনেতেই ইলমুল-গায়েব সক্রান্ত কোনো তথ্য জেনে নিতে পারবেন, বরং অবশ্যই ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্য জানার জন্য তাবেইদের উৎসের প্রয়োজন হয়। আর অজ্ঞাত উৎস হতে গ্রহণকৃত তথ্য নির্ভরযোগ্য নয়, অকাট্য কোনোকিছু নয়।

দ্বিতীয়ত, তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম যে এই ধরনের পরিস্থীতিতে তাবেইরা এই ধরনের ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্যগুলোকে নিজেদের পক্ষ হতে বর্ণনা করার সময় মনে মনে এই ধারনা বা বিশ্বাস রাখেন যে এসব রাসুল (সা) এর কথা। যদি এমনটাও হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রেও ঝামেলা আছে। কেননা এমনটা হলে এসব ইলমুল-গায়েব সক্রান্ত বক্তব্য 'মুরসাল ' স্তরের হবে। আর অধিকাংশ মুহাদ্দিস, প্রচুর সংখ্যাক উসুলবিদ এবং প্রচুর সংখ্যাক ফকিহদের দৃষ্টিতে মুরসাল স্তরের হাদিস সাধারণভাবে যইফ ও দলিল হিসেবে ব্যবহারের যোগ্য নয়।

ডক্টর নুরুদ্দিন মুহাম্মদ আতার আল-হালবী লিখেছেন যে,

مذهب جمهور المحدثين وكثير من الفقهاء والأصوليين وهو أن المرسل ضعيف لا يحتج به_[6]

অর্থ : জুমহুর মুহাদ্দিসগণ এবং প্রচুর সংখ্যাক ফকিহ ও উসুলবিদ এর দৃষ্টিভংগি হলো এই যে মুরসাল হাদিস যইফ ও দলিলযোগ্য নয়।

'শায়খ আব্দুল-আযিয বিন আব্দুল্লাহ আর-রাজিহী' কে এব্যাপারে প্রশ্ন করা হয় যে তাবেইদের বক্তব্য কি ইলমুল গায়েব সক্রান্ত কোনোকিছু প্রমাণের জন্য যথেষ্ট কিনা, উত্তরে তিনি বলেন যে 'তা যথেষ্ট নয় '। [8]

তিন.  যদি 'ক' একজন তাবে তাবেঈ হয় :

ধরি, চতুর্থ পয়েন্টে উল্লেখিত 'ক' হলেন একজন তাবে তাবেই।

দুই নং উপপয়েন্টে তাবেইদের ব্যাপারে আমি যা যা বলেছি, তার প্রায় সবই তাবে তাবেঈদের জন্যও প্রায় সমানভাবেই প্রযোজ্য। কেননা ইসরাইলি উৎস কে কেন্দ্র করে বিবেচনা করলে তাবে তাবেই ও তাবেইদের পরিস্থীতির মাঝে তেমন কোনো পার্থক্য ছিলোনা, বরং উভয় যূগেই পরিস্থীতি প্রায় একইরকম ছিলো। কিন্ত দুই নং উপপয়েন্টের এই অংশটা "অতপর, কেও যদি মরুভূমির বালিতে সফলভাবে……… " থেকে আরম্ভ করে দুই নং উপপয়েন্টের শেষ পর্যন্ত যেসব কথা বলেছি সেগুলা আবার তাবে তাবেইদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তাবে তাবেইদের ক্ষেত্রে এসব ব্যাপারে হালকা কিছু পার্থক্য আছে। তাছারা তাবে তাবেইদের ক্ষেত্রে এমনো কিছু কথা বলার আছে যেগুলো তাবেইদের বেলায় বলা যায়না বা প্রযোজ্য হয়না। এই তৃতীয় উপপয়েন্টে, ক যদি একজন তাবে তাবেই হন সেক্ষেত্রে কি হবে, তা নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আসলে তাবে তাবেইদের কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের তথ্যগুলোর ক্ষেত্রে লম্বা লম্বা উসুলভিত্তিক আলোচনার কোনো প্রয়োজনই নেই, তাবে তাবেইদের ক্ষেত্রে মুলনিতীটা খুবই সরল, সহজ ও অল্প কথায় বর্ণনাযোগ্য।

তাবে তাবেইদের উপর কোনো উহি নাজিল হতোনা, কাজেই উনাদের কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের তথ্যগুলো অবশ্যই কোনো না কোনো উৎস হতেই গ্রহণকৃত।তাবে তাবেইদের কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের গায়েব সক্রান্ত তথ্যগুলোতে উৎস অনুল্লেখিত থাকে, আর হাদিসের মুলনিতী অনুযায়ী এই ধরনের উৎস গোপনকৃত বর্ণনাগুলো 'মুযাল' স্তরের বর্ণনার অন্তর্ভুক্ত, আর মুযাল বর্ণনার হুকুম হচ্ছে এই যে তা যইফ, অনির্ভরযোগ্য, দলিল হিসেবে অগ্রহণযোগ্য [7]

যদিও তাবে তাবেইরাও প্রচুর পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য গ্রহণকারী ছিলেন, কিন্ত তবুও, এক্ষেত্রে এই ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণের ব্যাপারটিকে বিবেচনায় আনার কোনো দরকারই নেই, কেননা এই ব্যাপারটাকে বাদ দিয়ে বিবেচনা করলেও এমনেতেই তাবে তাবেইদের এই ধরনের গায়েব সক্রান্ত বর্ণনা নির্ভরযোগ্য কিছুনা। তাবে তাবেইদের কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের বর্ণনা সর্বদাই  মুযাল, বর্ণনাকারী তাবে তাবেই যদি ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী হয়ে থাকেন তখনও তা মুযাল, আবার বর্ণনাকারী তাবে তাবেই যদি ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী না হয়ে থাকেন, তবুও তা মুযালই। তাবে তাবেইদের কর্তৃক বর্ণিত এই ধরনের গায়েবসক্রান্ত বর্ণনাগুলোর মুযাল হয়ার বিষয়টির সহিত তাবে তাবেইদের ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণকারী হয়া বা না হয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

চার. 'ক' যদি তাবে তাবেইদের পরবর্তী সময়ের কোনো আলেম হন :

তাবে তাবেইদের পরবর্তী সময়গুলোতে  ইসরাইলি উৎস হতে তথ্য গ্রহণের প্রবণতাটা মোটেও কমে যায়নি, বরং তাবে তাবেইদের পরবর্তী যূগগুলোতেও ইসরাইলি উৎস হতে প্রচুর সংখ্যাক তথ্য গ্রহণের ধারাটি বহাল ছিলো। যাই হোক, এক্ষেত্রেও ইসরাইলি উৎসের বিষয়টিকে আলাদাভাবে বিবেচনায় আনার কোনো দরকার নেই।

উল্লেখ্য যে, তাবে তাবেইদের পরবর্তী যূগ বা সময় বলতে আমি বুঝাচ্ছি তাবে তাবেইদের যূগের শেষ থেকে আরম্ভ করে বর্তমান যূগ পর্যন্ত।

এই শ্রেণীর আলেমরা মূলত পাচটি পদ্ধতি ব্যবহার করে ইলমুল গায়েব সক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে নিজেদের পক্ষ হতে মন্তব্য করতেন।

পদ্ধতিগুলো হলো নিম্নরুপ,

এক. কোরান ও সহিহ হাদিসে যেসব ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্য দেয়া হয়েছে সেগুলো বর্ণনা করতেন।

দুই. বিভিন্ন যইফ ও জাল হাদিসে যেসব ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্য বর্ণিত আছে সেগুলো বর্ণনা করতেন ( বিভিন্ন উলামারা জাল হাদিস বর্ণনা করতেন ভুলবশত, ইচ্ছাকৃতভাবে না)।

তিন. সাহাবি, তাবেই ও তাবে তাবেইদের পক্ষ হতে বর্ণিত সহিহ সনদের বিভিন্ন বক্তব্যকে উৎস হিসেবে ধরে নিয়ে এসব বক্তব্য হতে বিভিন্ন গায়েবসক্রান্ত তথ্য বর্ণনা করতেন।

চার.  সাহাবি, তাবেই ও তাবে তাবেইদের পক্ষ হতে বর্ণিত জাল বা যইফ সনদের বিভিন্ন বক্তব্যকে উৎস হিসেবে ধরে নিয়ে এসব বক্তব্য হতে বিভিন্ন গায়েবসক্রান্ত তথ্য বর্ণনা করতেন।

পাচ. নিজেরা ইজতিহাদ-কিয়াস করে বিভিন্ন গায়েবসক্রান্ত তথ্য আবিষ্কার করাপুর্বক বর্ণনা করতেন।

আমার এই লেখাটির আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শুধুমাত্র সেসব ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্য, যেগুলো কোরান সুন্নাহতে বর্ণিত হয়নি, যেগুলো কোরান সুন্নাহতে বর্ণিত হয়ে গিয়েছে, সেগুলোত কোনো সন্দেহ ছাড়াই ধ্রুবসত্য। কাজেই প্রথম পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু বলার দরকার নেই। যইফ হাদিস দলিল-প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়, কাজেই এই ধরনের হাদিস দিয়ে কোনো ইলমুল গায়েব সক্রান্ত তথ্য প্রমাণিত হয়না।সাহাবি, তাবেই ও তাবে তাবেইরা যদি এমন কোনো গায়েব সক্রান্ত তথ্য বর্ণনা করেন যা কিনা কোরান সুন্নাহতে বিদ্যমান নেই, তাহলে সেক্ষেত্রে কখন কি মুলনিতী প্রযোজ্য হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা পুর্বের তিনটি উপপয়েন্টে ইতিমধ্যে গত হয়েছে। সাহাবি, তাবেই ও তাবে তাবেইদের নিকট হতে বর্ণিত যইফ সনদের বর্ণনাগুলো যইফ হয়ার কারণে এমনেতেই অনির্ভরযোগ্য 

অনেক আলেমরা নিজেরা ইজতিহাদ করে 'সম্ভাবনা ' বা 'তত্ত্ব' হিসেবে বিভিন্ন গায়েবসক্রান্ত তথ্য বর্ণনা করতেন ও করেন। কিন্ত এসব কোনো প্রমাণ না, গায়েবসক্রান্ত কোনো বিষয়ের পক্ষে দলিল হিসেবে ইজতিহাদ গ্রহণযোগ্য না, ইজতিহাদ দিয়ে কোনো গায়েবি বিষয় প্রমাণিত হয়না। ইজতিহাদ গায়েব সক্রান্ত কোনোকিছুকে প্রমাণ করার সামর্থধারী নয়। [9]

6. ইলমুল-গায়েব ও আল-ইজমা :-

প্রশ্ন - কোরান সুন্নাহতে বিদ্যমান নেই এমন ইলমুল গায়েব সক্রান্ত কোনো তথ্য কি ইজমা দ্বারা সত্য বা সঠিক প্রমাণিত হতে পারে? 

উত্তর : না, এমনটা হয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কেননা 'ইলমুল-গায়েব' সক্রান্ত বিষয়গুলো ইজমার ক্ষেত্র নয়, ইজমার ধৃতিটি গায়েবসক্রান্ত কোনো বিষয় বা তথ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ইজমা শুধুমাত্র সেসব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য যেসব ক্ষেত্রে ইজতিহাদ করে সঠিক বিষয়টা জানার সুযোগ থাকে, কিন্ত গায়েবসক্রান্ত কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করা বা গায়েব সক্রান্ত কোনো তথ্যকে সত্য হিসেবে প্রমাণ করা ইজতিহাদ দ্বারা সম্ভব নয় বরং তা শুধুমাত্র ওয়াহী দ্বারাই সম্ভব। আর যেহেতু গায়েবসক্রান্ত বিষয় বা তথ্যের ক্ষেত্রে ইজমার ধৃতিটি প্রযোজ্যই নয়, সেহেতু এক্ষেত্রে ইজমার প্রসঙ্গ অবান্তর।অতএব, ইলমুল গায়েব সক্রান্ত কোনো বিষয়ের বা তথ্যের বেলায় ইজমার মত কোনোকিছু সংঘটিত হয়ে গেলেও তা ইজমা হিসেবে গণ্য হবেনা।[10][11]

7. পরিশিষ্ট :-

পরিশেষে বলবো যে, কোনো একজন তাবেঈ বা তাবে তাবেঈ বা অন্যস্তরের আলেম কোরান সুন্নাহ বহির্ভুত কোনো গায়েবী তথ্য বর্ণনা করলে সেই তথ্যটা অকাট্য ধ্রুবসত্য হয়ে যাবে, এরকম মুর্খতা ও অন্ধত্বপুর্ণ ধারনাকে ত্যাগ করাটা সব মুসলিমদের জন্যই জরুরি। তাছারা সাহাবিদের বর্ণিত প্রত্যেকটা গায়েব সক্রান্ত তথ্যই নির্ভরযোগ্য, এই ভুল ধারনাকেও ত্যাগ করতে হবে।

উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন আলেমরা বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ব্যাখ্যার সাথে মাঝে মাঝে বিভিন্ন কোরান-হাদিস বহির্ভুত গায়েব সক্রান্ত তথ্য উল্লেখ্য করে থাকেন। আমাদের এব্যাপারেও সতর্ক হয়া উচিত।

8. টিকাসমুহ :

[1] আশ-শায়খ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী (রহ) বলেছেন,

"ومعلومٌ أن الصحابة كانوا يتلقون كثيراً من الإسرائيليات عن بعض الذين أسلموا من أهل الكتاب"

অর্থ : এটা সবার জানা যে সাহাবিরা আহলুল-কিতাব হতে ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়া কিছু ব্যাক্তিদের নিকট হতে হতে প্রচুর পরিমাণ ইসরাইলি তথ্য গ্রহণ করতেন।

সুত্র : https://shamela.ws/book/7682/203

[2] 'ডক্টর হুসাইন বিন আলি আল-হারবী' তাঁর গ্রন্থ "কাওয়াইদুত তারজিহ ইনদাল মুফাসসিরিন"(1/200,201) এ লিখেছেন যে,

لا يصح حمل الآية علی تفسيرات و تفصيلات لأمور مغيبة لا دليل عليها من القران والسنة.لا سبيل إلى معرفة الأمور المغيبة - وهي كل الأمور التي لا يمكن إدراكها بطرق الاجتهاد وقوة الاستنباط‍ - إلا بنص من قرآن أو سنة، وهذا كله مما لا تعلق له بالأحكام التكليفية، ويتضمن هذا ما قد مضى وسلف كأمور بدء الخلق، وأخبار الأمم البائدة، وما لم يقع كالملاحم والبعث، وصفة الجنة والنار، ونحوها، فكل ذلك لا يصح تفسيره باجتهادات لا دليل عليها، أو بأخبار إسرائيلية.........وقولي: «لا دليل عليها من القرآن أو السنة» خرج به ما ثبت فيه تفصيل أو تفسير أو تعيين مبهم من قبل الله - تعالى - أو رسوله صلّى الله عليه وسلّم. ......وألحق العلماء بالحديث المرفوع قول الصحابي فيما لا مجال للرأي فيه، ولا تعلّق له ببيان لغة وشرح غريب. فقالوا: له حكم الرفع. وجزم به على هذا الإطلاق غير واحد. وقيّده جماعة من الأئمة بأن لا يكون ذلك الصحابي ممن عرف بالنظر في الإسرائيليات. وهو الحق؛ لأن الإطلاق مشكل،………

[3]ইবনু হাজার, আন-নুকত (2/531-533) এবং আন-নুখবাহ (পৃ/49); আবু-শুহবাহ, আল-ইসরাইলিয়াত (পৃ/303) এবং আল-মাদখাল লিদারাসাতিল কোরান (পৃ/52); আশ-শানকিতিঈ, মুযাক্কারাতু উসুলিল ফিকাহ (পৃ/256) … ইত্যাদি ইত্যাদি।

এব্যাপারে আরো দেখা যেতে পারে,

'শায়খ আব্দুল-কারিম আল-খাদ্বির' এর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা
https://shamela.ws/book/23361/96

'শায়খ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী' এর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা
https://shamela.ws/book/7682/203

'শায়খ আব্দুল-আযিয আর-রাজিহী' এর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা
https://shamela.ws/book/35083/149#p1

'শায়খ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ' এর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা
https://islamqa.info/ar/229770

[4]আল-মিনইয়াওই, আশ-শারহুল কাবির লিমুখতাসারিল উসুল (পৃ/408,টিকা-1)

[5]দেখুন : 'আহমাদ ফাওযি ওয়াজিহ' কর্তৃক সংকলিত একটি ছোটো বই "আস-সাহাবাহ আল-লাযিনা রাওয়াউ আনিল আহলিল কিতাব আও ইস্তামাউ লাহুম " (الصحابة الذين رووا عن أهل الكتاب أو استمعوا لهم )।

[6] নুরুদ্দিন আতার, মানহাজুন নাক্বদ ফি উলুমিল হাদিস (পৃ/371)

[7]আব্দুল-মাজিদ আল-গাওরি, মুজামুল মুস্তালাহাতিল হাদিসিয়াহ (751-752)

[8]https://shamela.ws/book/35083/149#p1

[9]https://www.islamweb.net/ar/fatwa/63710/

[10] আস-সিনদী, হাশিয়াতুস সিনদী আলান নাসাঈ (4/58)

[11]আল-আমিন আল-হারারী,শারহু সুনানে ইবনে মাজাহ (1/309)