ঈমাম যাহাবী বলেছেন ٣٦٠٥ - محمد بن إسماعيل، أبو عبد الله البخاري: قدم بغداد بعد الخمسمائة، وكتب عن جماعة: قال ابن الجوزي: كذاب، قلت: أما محمد بن إسماعيل الإمام مؤلف الصحيح فثقة بعد ⦗٣٤٣⦘ ذا فما سلم من الكلام لأجل مسألة اللفظ، تركه لأجلها أبو زرعة وأبو حاتم، وهجره الذهلي.
অর্থাৎ, - মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল, আবু আব্দুল্লাহ আল-বুখারী:
“তিনি ৫০০ হিজরির পর বাগদাদে আগমন করেন এবং একদল ব্যক্তির থেকে হাদীস লিখে নেন। ইবনুল জাওযী বলেন: ‘সে একজন মিথ্যাবাদী।’ আমি (ঈমাম যাহাবী) বলি: ‘যিনি সহীহ গ্রন্থের প্রণেতা ঈমাম মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল (আল-বুখারী), তিনি অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন। ⦗৩৪৩⦘ তবে, ‘লফয’-এর (উচ্চারণ) বিষয়ে একটি আকীদাগত মতানৈক্যের কারণে তিনি (সম্পূর্ণরূপে) সমালোচনার হাত থেকে রক্ষা পাননি। এ কারণে আবু যুরআ ও আবু হাতেম তাকে পরিত্যাগ করেছিলেন এবং যুহলী তাকে ত্যাগ করেছিলেন।’”
এখানে দু’জন “মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল” নামধারী ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে।
যিনি “৫০০ হিজরির পরে” বাগদাদে আসেন—তাকে ইবনুল জাওযী মিথ্যাবাদী বলেন।
কিন্তু ঈমাম যাহাবী স্পষ্ট করেন যে, ঈমাম বুখারী (রহ.)—যিনি সহীহ বুখারীর প্রণেতা, তিনি বিশ্বাসযোগ্য (ثقة) ছিলেন।
তবে 'اللفظ بالقرآن' বিষয়ক আকীদাগত বিতর্কের কারণে কিছু সমসাময়িক মحدث তার বিরোধিতা করেন।
প্রমাণ স্বরুপ একই গ্রন্থে ঈমাম যাহবির উক্তি , ٣٦٠٥ - محمد بن إسماعيل،আমি (ঈমাম যাহাবী) বলি: ‘যিনি সহীহ গ্রন্থের প্রণেতা ঈমাম মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল (আল-বুখারী), তিনি অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন। ⦗৩৪৩⦘ তবে, ‘লফয’-এর (উচ্চারণ) বিষয়ে একটি আকীদাগত মতানৈক্যের কারণে তিনি (সম্পূর্ণরূপে) সমালোচনার হাত থেকে রক্ষা পাননি। এ কারণে আবু যুরআ ও আবু হাতেম তাকে পরিত্যাগ করেছিলেন এবং যুহলী তাকে ত্যাগ করেছিলেন।’” -গ্রন্থ: ديوان الضعفاء والمتروكين وخلق من المجهولين وثقات فيهم لين
পৃষ্ঠা: ৩৪২-৩৪৩
প্রকাশনা: মাকতাবা মাদরাসাতুল ফিকাহ (অনলাইন সংস্করণ) https://ar.lib.efatwa.ir/47061/1/342
এখন প্রশ্ন হলো প্রশ্ন: ঈমাম বুখারী কি কুরআনকে ‘মাখলুক’ (সৃষ্ট) মনে করতেন?
উত্তর: না, ঈমাম বুখারী কুরআনকে ‘মাখলুক’ মনে করতেন না।
তিনি বিশ্বাস করতেন, আল্লাহর কালাম (কুরআন) অসৃষ্ট (غير مخلوق)। এটাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ-এর আকীদা, এবং ঈমাম বুখারী ছিলেন এই দলেরই একজন ঈমাম।
দলিল ও প্রমাণ:
১. ঈমাম বুখারীর বক্তব্য (خَلْقُ أَفْعَالِ العِبَاد):
ঈমাম বুখারী তাঁর বিখ্যাত আকীদাগত রচনায় বলেন:
"والقرآن كلام الله، ليس بمخلوق، ومن زعم أن كلام الله مخلوق فهو كافر."
"কুরআন আল্লাহর কালাম, এটি মাখলুক নয়। যে বলবে আল্লাহর কালাম মাখলুক, সে কাফির।"
— خلق أفعال العباد (পৃষ্ঠা ১৫)
এখানে স্পষ্টভাবে তিনি বলেন যে, কুরআন অসৃষ্ট এবং এর বিপরীত বিশ্বাস কুফড়
২. বিভ্রান্তির উৎস: “اللفظ بالقرآن” বিতর্ক
ঈমাম বুখারী “اللفظ بالقرآن” (কুরআনের উচ্চারণ) বিষয়ে একটি মত প্রকাশ করেন, যা বিতর্কের জন্ম দেয়। তিনি বলেন:
"أفعال العباد مخلوقة، ومن أفعالهم التلاوة."
অর্থাৎ: “মানুষের কর্ম মাখলুক, আর তাদের কর্মের অন্তর্ভুক্ত তিলাওয়াত (উচ্চারণ)।”- https://shamela.ws/book/9697
এ বক্তব্যে তিলাওয়াতের ‘কার্য’ (لفظ)—অর্থাৎ জিহ্বা ও কণ্ঠের আন্দোলনকে মাখলুক বলা হয়েছে, কিন্তু কুরআনের মূল শব্দ ও অর্থ (كلام الله) কে নয়। ঈমাম বুখারী (রহ.) এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট করেছেন যে, মানুষের সমস্ত কর্ম, যেমন: উচ্চারণ, লেখা, শোনা, দেখা ইত্যাদি, মাখলুক (সৃষ্ট)। তিনি বলেন:
"حركاتهم وأصواتهم واكتسابهم وكتابتهم مخلوقة، فأما القرآن المتلو المبين المثبت في المصحف المسطور المكتوب الموعي في القلوب فهو كلام الله ليس بمخلوق."
অর্থাৎ: “তাদের চলাফেরা, কণ্ঠস্বর, উপার্জন, লেখা—সবই মাখলুক। তবে যে কুরআন তিলাওয়াত করা হয়, স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়, মুসহাফে লিপিবদ্ধ আছে, হৃদয়ে সংরক্ষিত আছে—তা আল্লাহর কালাম এবং এটি মাখলুক নয়।” - https://midad.com/.../%D8%AE%D9%84%D9%82-%D8%A3%D9%81%D8...
তবে অনেক সমসাময়িক ঈমাম—যেমন আবু যুরআ, আবু হাতেম, ঈমাম যুহলী প্রমুখ—এই বক্তব্যকে ভুল বুঝে তার থেকে বিরত হন, তাঁরা মনে করেছিলেন ঈমাম বুখারী হয়ত কুরআনের “লফজ” অর্থেই কুরআনকে মাখলুক বলেছেন।
অর্থাৎ আলচ্য বিষয়ে ঈমাম বুখারীর আকিদাতে কোন সমস্যা ছিল না বরং তাঁর একটি কথা কে ভুল বুঝার কারণে অপর কিছু ঈমামগণের তাঁর প্রতি ভ্রন্তধারনা তৈরী হয়েছিলো । এবং এ বিভ্রান্তি ঈমাম বুখারীর গ্রহনযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেনা ।
اللَّهُمَّ عَلِّمْنَا مَا يَنْفَعُنَا، وَانْفَعْنَا بِمَا عَلَّمْتَنَا، وَزِدْنَا عِلْمًا، اللَّهُ أَعْلَمُ.