Are you sure?

বিজ্ঞান »  ইসলাম ও বিজ্ঞান

আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি, এবিষয়ে কুরান ও বিজ্ঞান একই রকম কথা বলে !

﷽  ‎

💠 বিঃদ্রঃ  [  বিজ্ঞান মানুষের সীমিত জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে , আর কুরআন সর্বোজ্ঞ সর্বশক্তিমান, সবকিছুর মালিক আল্লাহর ওহী তাই কুরআন সবসময়ই বিজ্ঞানের থেকে অগ্রগামী । এই আর্টিকেলে আমি কুরআনের বর্ণনার সাথে বিজ্ঞানের বর্তমান আবিষ্কার ও তত্ত্বের মিলগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র । আসল বিষয় কেমন সেটা একমাত্র সর্বোজ্ঞ মহান রাব্ব আল্লাহভালো জানেন  ]

অভিযোগ:

পরবর্তীতে আলোচনার সুবিধার্থে আমরা অভিযোটি দুটি পয়েন্টে ভাগ করে নেবো ।

💠পয়েন্ট -১.১:

কুরআনের বেশ কিছু আয়াতে(৭:৫৪, ১০:৩, ১১:৭, ২৫:৫৯, ৩২:৪, ৫০:৩৮, ৫৭:৪) বলা হয়েছে আল্লাহ মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে।

💠পয়েন্ট- ১.২:

কিন্তু ৪১:৯-১২ নং আয়াহ্ অনুসারে দেখা যায় আল্লাহ মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন ২ দিনে।   তাহলে কুরআনের আয়াহ্ কি পরস্পর বিরোধী এবং বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক?

অভিযোগের জবাব:

"আরবি ভাষায় يَوْمِ [উচ্চারণঃ ইয়াওম; বহুবচনঃ أَيَّامٍ (আইয়াম)] শব্দটি ব্যাপকার্থে ব্যবহৃত হয় । আরবিতে শব্দটি দিন, পর্যায়কাল, সময়কাল ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়।

'সুরা আল-ক্বাফ এর ৫০:৩৮নং আয়াহ্'তে أَيَّامٍ (আইয়াম) এর কথা বলা আছে তা ২৪ ঘণ্টার দিন হতেও পারে, আবার না হওয়াও সম্ভব কারণ সে সময়ে সূর্য তৈরি হয়নি; কাজেই 'সৌর দিনের হিসাব' এর বিক্ল্প হিসাব করার অবকাশ এখানে রয়েছে ।  এরকম কিছু হিসাবের উদাহরণ হতে পারে 'সুরা  আল-হাজ্জ;২২:৪৭' ও 'আস-সাজদাহ্ ৩২:৫' আয়াহ্'তে যে 'হাজার বছরের দিন' এবং 'সুরা আল মাআরিজ;৭০:৪' এ যে '৫০ হাজার বছরের দিন' এর কথা উল্লেখ আছে সেগুলো ।  এখানে উল্লেখ্য যে, 'সুরা  আল-হাজ্জ;২২:৪৭' ও 'আস-সাজদাহ্ ৩২:৫' আয়াহ্তে যে  'أَلْفَ سَنَةٍ' বা ‘হাজার বছর এর দিন' এর কথা উল্লেখ আছে; তা দ্বারা যেমন নির্দিষ্টভাবে ১০০০ বছর বোঝানো যেতে পারে, তেমনি আবার ‘হাজার বছর’ তথা বিশাল দৈর্ঘ্যের একটি, সময়কালকেও বোঝানো‌ যেতে পারে। কুরআনে শব্দটির ব্যবহারের এই বৈচিত্র্য দ্বারাই বোঝা যাচ্ছে যে-- 'يَوْمِ (ইয়াওম)" শব্দটির অর্থ ব্যাপক; এ দ্বারা যে কোন সময়কালের দিনই বোঝানো যেতে পারে। এ দ্বারা ২৪ঘণ্টা, ১ হাজার বছর, ৫০,০০০ বছর এমনকি হাজার বছর বা বিশাল দৈর্ঘ্যের একটি সময়কালকেও বোঝানো যেতে পারে। মোট কথা, শব্দটি দ্বারা যে কোন time period বা পর্যায়কাল/সময়কাল বোঝানো যেতে পারে।   আধুনিককালে মহাবিশ্ব সৃষ্টির ব্যাপারে সব থেকে গ্রহণযোগ্য মতবাদ হচ্ছে বিগ ব্যাং থিওরি । মুসলিমদের নিকট অবশ্যই কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব মানদণ্ড নয়, কারণ বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রায়শই পরিবর্তিত বা সংশোধিত হয়। মুসলিমদের নিকট মানদণ্ড হচ্ছে কুরআন ও সুন্নাহ তথা বিশুদ্ধ হাদীস। কারণ এগুলো ওহীর অন্তর্ভুক্ত তাই মানুষের জ্ঞানের থেকে এগুলো সবসময় অগ্রগামী। "

💠১.১ পয়েন্টের আয়াহ্সমূহ:

◽আল আরাফ ৭:৫৪

إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِ يُغْشِى ٱلَّيْلَ ٱلنَّهَارَ يَطْلُبُهُۥ حَثِيثًا وَٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ وَٱلنُّجُومَ مُسَخَّرَٰتٍۭ بِأَمْرِهِۦٓۗ أَلَا لَهُ ٱلْخَلْقُ وَٱلْأَمْرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

নিশ্চয়ই তোমাদের রাব্ব হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি স্বীয় আরশের উপর সমাসীন হন। তিনি দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যাতে ওরা একে অন্যকে অনুসরণ করে চলে ত্বরিত গতিতে; সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্ররাজী সবই তাঁর হুকুমের অনুগত। জেনে রেখ, সৃষ্টির একমাত্র কর্তা তিনিই, আর হুকুমের একমাত্র মালিকও তিনি, সারা জাহানের রাব্ব আল্লাহ হলেন বারাকাতময়।◈

 Your Lord is Allah, who created the heavens and earth in six Days, then established Himself on the throne; He makes the night cover the day in swift pursuit; He created the sun, moon, and stars to be subservient to His command; all creation and command belong to Him. Exalted be Allah, Lord of all the worlds!◈ 

◽আল ইউনূস;১০:৩

إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِۖ يُدَبِّرُ ٱلْأَمْرَۖ مَا مِن شَفِيعٍ إِلَّا مِنۢ بَعْدِ إِذْنِهِۦۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمْ فَٱعْبُدُوهُۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

নিশ্চয়ই আল্লাহই হচ্ছেন তোমাদের রাব্ব, যিনি আসমানসমূহকে এবং যমীনকে সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হলেন, তিনি প্রত্যেক কাজ পরিচালনা করে থাকেন। তাঁর অনুমতি ছাড়া সুপারিশ করার কেহ নেই; এমন আল্লাহ হচ্ছেন তোমাদের রাব্ব। অতএব তোমরা তাঁর ইবাদাত কর; তবুও কি তোমরা বুঝছনা?◈

Your Lord is Allah who created the heavens and earth in six Days, then established Himself on the Throne, governing everything; there is no one that can intercede with Him, unless He has first given permission: this is Allah your Lord so worship Him. How can you not take heed?◈

◽আল হুদ;১১:৭

وَهُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُۥ عَلَى ٱلْمَآءِ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًاۗ وَلَئِن قُلْتَ إِنَّكُم مَّبْعُوثُونَ مِنۢ بَعْدِ ٱلْمَوْتِ لَيَقُولَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ إِنْ هَٰذَآ إِلَّا سِحْرٌ مُّبِينٌ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

আর তিনি এমন, যিনি সমস্ত আসমান ও যমীনকে সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে এবং সেই সময় তাঁর আরশ পানির উপর ছিল, যেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করে নেন যে, তোমাদের মধ্যে উত্তম ‘আমলকারী কে? আর যদি তুমি বলঃ নিশ্চয়ই তোমাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করা হবে, তখন যে সব লোক কাফির তারা বলেঃ এটাতো নিছক স্পষ্ট যাদু।◈

It is He who created the heavens and the earth in six Days––His rule extends over the waters too––so as to test which of you does best. Yet [Prophet], if you say to them, ‘You will be resurrected after death,’ the disbelievers are sure to answer, ‘This is clearly nothing but sorcery.’◈

◽আল ফুরকান;২৫:৫৯

ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِۚ ٱلرَّحْمَٰنُ فَسْـَٔلْ بِهِۦ خَبِيرًا۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং ওগুলির মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেন; অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন; তিনিই রাহমান। তাঁর সম্বন্ধে যে অবগত আছে তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ।◈

It is He who created the heavens and earth and what is between them in six Days, and then established Himself on the throne- He is the Lord of Mercy; He is the Best Informed.◈ 

  ◽আস সাজদাহ্;৩২:৪

ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِۖ مَا لَكُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَلِىٍّ وَلَا شَفِيعٍۚ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

আল্লাহ, তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী ও এতদুভয়ের অন্তবর্তী সব কিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনি ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক নেই এবং সাহায্যকারীও নেই, তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবেনা?◈

It is Allah who created the heavens and the earth and everything between them in six Days. Then He established Himself on the Throne. You [people] have no one but Him to protect you and no one to intercede for you, so why do you not take heed?◈

◽আল ক্কাফ;৫০:৩৮

وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوبٍ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

আমরা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এগুলির মধ্যস্থিত সব কিছু সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে। আমাকে কোন ক্লান্তি স্পর্শ করেনি।◈

We created the heavens, the earth, and everything between, in six Days without tiring.◈

◽আল হাদীদ;৫৭:৪

هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِۚ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِى ٱلْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَاۖ وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

তিনিই ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে এবং যা কিছু তা হতে বের হয় এবং আকাশ হতে যা কিছু নামে ও আকাশে যা কিছু উত্থিত হয়। তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন।◈

It was He who created the heavens and earth in six Days and then established Himself on the throne. He knows what enters the earth and what comes out of it; what descends from the sky and what ascends to it. He is with you wherever you are; He sees all that you do;◈

এই আয়াহ্ সমূহ অনুসারে,  নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করা হয়েছে মোট ছয় আওমে ।  এই ছয় পর্যায়/দিন/আইয়াম(اتم)/epoch সম্পর্কে উপরে বলা হয়েছে।

আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষাও এরকম , অর্থাৎ বিগ ব্যাং থেকে পৃথিবী পর্যন্ত ছয়টি epoch গুলোঃ- 

১.Singularity

২.Inflation Baryogenesis

৩.Cooling

৪.Structure formation

৫.Cosmic acceleration

৬.Familiar universe.

(Ref: NASA/WMAP Science Team (6 June 2011). "Cosmology: The Study of the Universe". Universe 101: Big Bang Theory. Washington, D.C.: NASA. Archived from the original on 29 June 2011. Retrieved 18 December 2019. The second section discusses the classic tests of the Big Bang theory that make it so compelling as the most likely valid and accurate description of our universe.)

এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান কুরাআনের সাথে অনুরুপ কথা বলে ।

💠পয়েন্ট ১.২ এর আয়াতসমূহ:

◽আল ফুসিলাত;৯ -১০

قُلْ أَئِنَّكُمْ لَتَكْفُرُونَ بِٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْأَرْضَ فِى يَوْمَيْنِ وَتَجْعَلُونَ لَهُۥٓ أَندَادًاۚ ذَٰلِكَ رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ۝ وَجَعَلَ فِيهَا رَوَٰسِىَ مِن فَوْقِهَا وَبَٰرَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَآ أَقْوَٰتَهَا فِىٓ أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَآءً لسَّآئِلِينَ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

বলঃ তোমরা কি তাকে অস্বীকার করবেই যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দুই দিনে এবং তোমরা তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করাতে চাও? তিনিতো জগতসমূহের রাব্ব।◈ তিনি স্থাপন করেছেন অটল পর্বতমালা ভূপৃষ্ঠে এবং তাতে রেখেছেন কল্যাণ এবং চার দিনে ব্যবস্থা করেছেন খাদ্যের - সমভাবে, যাঞ্চাকারীদের জন্য।◈

Say, ‘How can you disregard the One who created the earth in two Days? How can you set up other gods as His equals? He is the Lord of all the worlds!’◈ He placed solid mountains on it, blessed it, measured out its varied provisions for all who seek them––all in four Days.◈

অর্থাৎ  শুধু পৃথিবীর প্রাথমিক রূপ ২ দিনে সৃষ্টি হয়েছে আর পরিপূর্ন রূপ সৃষ্টি হয়েছে ৪ আইয়ামে ।(৪১ঃ৯-১০)

এখন‌ বিজ্ঞান কুরআনের এই আয়াহ্'র অনুরুপ কথাই বলে । অর্থাৎ আধুনিক বিজ্ঞান অনুসারে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে দুই আইয়ামে( এ বিষয়ে একটু পর আলোচনা করছি ) আর পরিপূর্ন রূপ অর্থাৎ পৃথিবীর আকার, পাহাড় পর্বত, ভূমি, সুমদ্র ইত্যদি  সৃষ্টি  চার পর্যায়/দিন/আইয়াম(اتم)/eon এ যথা:

১.Hadean

২.Archean

৩.Proterozoic

৪.Phanerozoic

(Ref:The Age of the Earth. By Dalrymple, G.B.- California: Stanford University Press. ISBN 978-0-8047-1569-0.)

 

পরের আয়াহ ৪১ঃ১১ তে বলা হয়েছে,

◽আল ফুসিলাত;৪১:১১

ثُمَّ ٱسْتَوَىٰٓ إِلَى ٱلسَّمَآءِ وَهِىَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ ٱئْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَآ أَتَيْنَا طَآئِعِينَ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

তখন তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন যা ছিল ধূম্রপুঞ্জ বিশেষ। অতঃপর তিনি ওটাকে এবং পৃথিবীকে বললেনঃ তোমরা উভয়ে এসো স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বললঃ আমরা এলাম অনুগত হয়ে।◈

Then He turned to the sky, which was smoke––He said to it and the earth, ‘Come into being, willingly or not,’ and they said, ‘We come willingly’––◈

এই আয়াহ্'টি বুঝতে হলে আমাদেরকে এর পূর্বে ২১নং সূরা আল্ আম্বিয়ার ৩০ নং আয়াহ'টি একটু দেখে নেয়া দরকার   এ আয়াহ'তে আল্লাহﷻ‎ বলেন

◽আল আম্বিয়া ২১:৩০

أَوَلَمْ يَرَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ أَنَّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَٰهُمَاۖ وَجَعَلْنَا مِنَ ٱلْمَآءِ كُلَّ شَىْءٍ حَىٍّۖ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখেনা যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে; তবুও কি তারা বিশ্বাস করবেনা?◈

Are the disbelievers not aware that the heavens and the earth used to be joined together and that We ripped them apart, that We made every living thing from water? Will they not believe?◈

অর্থাৎ ৪১ঃ১১ নং‌ আয়াহ্'তে বলা হয়েছে অর্থাৎ ঐ সময়ে আল্লাহ‎ আকাশের দিকে মনোযোগ দিয়েছিলেন যা ছিল ধূম্রপূঞ্জ, আর তিনি তাকে ও (তার সাথে মিশে থাকা) পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে (আকৃতিতে=come into being) আসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।   আর(২১:৩০ অনুযায়ী) পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে আকাশ ও পৃথিবী একত্রে ধোঁয়ার আকৃতিতে সম্মিলিত অবস্থায় ছিল আল্লাহর আদেশে তারা পৃথক পৃথক আকৃতি লাভ করে।    বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য অভিমত হলো বিগব্যাং তত্ত্ব । এ তত্ব অনুসারে আজ থেকে প্রায় ১৩.১৮ বিলিয়ন বছর(Ga) আগে সংঘটিত হয় বিশাল একটি বিস্ফোরণ  ‌বা Big Bang । এবং বিংব্যাং এর পরের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সময় পর্যন্ত (৪.৫Ga) পৃথিবীও আকাশ তথা সৌরজগত সহ সবকিছু একত্রে ধোঁয়ার মত ( cloud of interstellar dust and gas ) ছিলো এই  ধোঁয়া  হতে আকাশ ও পৃথিবির পরস্পর পৃথক হয়ে আকৃতি গত অবস্থায় আসা সুরু হয়।

এর পরের আয়াহ্'তে আল্লাহ বলছেন,

◽আল ফুসিলাত;৪১:১২

فَقَضَىٰهُنَّ سَبْعَ سَمَٰوَاتٍ فِى يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِى كُلِّ سَمَآءٍ أَمْرَهَاۚ وَزَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَٰبِيحَ وَحِفْظًاۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْعَلِيمِ۝

(সম্ভাব্য ভাবানুবাদ)

আর তিনি আকাশমন্ডলীকে দুই দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশে উহার বিধান ব্যক্ত করলেন এবং আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।◈

And in two Days He formed seven heavens, and assigned an order to each. We have made the nearest one beautifully illuminated and secure. Such is the design of the Almighty, the All Knowing.◈

অর্থাৎ আকাশ ও পৃথিবী কে পৃথক করার পরে,২টি পর্যায়/দিন/আইয়াম(اتم)/epoch/eon আকাশকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তাকে সাতটি স্তরে সাজানো হয়েছে ।     এখন বর্তমান বিজ্ঞান বলে বিগ ব্যাং হতে মোট সময়ের তিন ভাগের এক ভাগ সময় পর্যন্ত আকাশ ধোঁয়ার ন্যায় (cloud of interstellar dust and gas ) ছিল এবং পরবর্তী দুইভাগ সময়ে মহাকাশের সৃষ্টি হয়েছে এবং এই সময়েই সকল গ্রহ উপগ্রহ নক্ষত্র সমৃদ্ধ গ্যালাক্সি সমূহ সৃষ্টি হয়েছে ।

(Ref: Earth: evolution of a habitable world by Lunine, J.I. . United Kingdom: Cambridge University Press. ISBN 978-0-521-64423-5.)

অর্থাৎ বিজ্ঞান বলছে এই আকাশের সৃষ্টি কার্যক্রমও ঠিক দুটি পর্যায় বা 'اتم' এ সংঘটিত হয় যথাঃ

১.Pre-solar nebula

২.Formation of the planets।

এই দুই পর্যায়ের সময়ে আকাশ ও পৃথিবীর পৃথক আকৃতি সৃষ্টি হয় । একই কথা বলা রয়েছে ইতিপূর্বে আলচিত ৪১:৯-১০ এ অর্থাৎ আকাশ সৃষ্টি ও পৃথিবীর সৃষ্টি একি সাথে  চলেছে ।  

বিশ্লেষণ ও সমন্বয়:

তাহলে, আমরা উপরের আলোচনা থেকে পেলাম

💠i.কুরআন অনুসারে:

(সমগ্র মহা বিশ্বের সৃষ্টি ছয় পর্যায়ে) = ( আকাশ ও পৃথিবী এবং এর মধ্যবর্তী সব কিছু সৃষ্টি ছয় পর্যায়) = { (পৃথিবী ও আকাশ একত্রে থাকা কালিন সময়)→(আকাশ ও পৃথিবীর পৃথক  সৃষ্টির দুই পর্যায় + পৃথিবীর পরিপূর্ণ সৃষ্টির চার পর্যায়)}

💠ii.বিজ্ঞান অনুসারে:

(Singularity+ Inflation &Baryogenesis+ Cooling + Structure formation + Cosmic acceleration+Familiar universe) = [ { cloud of interstellar dust and gas Formation→ (Hadean+Archean +Proterozoic+Phanerozoic) } =/< (Pre-solar nebula + Formation of the planets)]

সিদ্ধান্ত , i=ii

বর্তমান বিজ্ঞানের প্রমাণিত কোন ফ্যাক্ট ও কুরআনের বক্তব্যে কোন বিরোধ নেই !

কুরআন বা হাদীসের  একই আয়াহ্'র বিভিন্ন ব্যাখ্যা সম্ভব। একটি বাক্যকে  বিভিন্নভাবে  ব্যাখ্যা করা যায় এবং কখনো একাধিক ব্যাখ্যার সম্ভাবনার অবকাশ থাকে। কিন্তু সেই ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে এবং অন্যান্য সমান সম্ভাব্য ব্যাখ্যাগুলোকে অগ্রাহ্য করে যদি কেউ একটি  বাক্যের উপর একটি সিদ্ধান্ত দিয়ে বসে সেটা তার ভুল সিদ্ধান্ত। তবে যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে যে, অন্য ব্যাখ্যাটি করার কোন সুযোগ নেই, তাহলে তার দাবি মেনে নিতে কারো সমস্যা থাকবে না ।  মানুষ যে কোন ব্যাখ্যাই তার পূর্বে অর্জিত জ্ঞানের ভিত্তিতে করে। যত মানুষ জগৎ সম্পর্কে জানতে থাকবে, ততই তারা কুরআনের আয়াহ্ গুলো বিভিন্ন আঙ্গিকে ব্যাখ্যা  করতে পারবে। আর তখন তারা কন্ট্রাডিক্টিং ব্যাখ্যা থেকে সঠিকটি বেছেও নিতে পারবে। তবে কুরআন বা হাদীস বুঝতে শুধু  একটা বিষয় দেখলেই হবে না বরং বিজ্ঞান, আরবী ভাষা ও তাফসীরের মূলনীতি গুলোতেও দক্ষতা সম্পন্ন হতে হবে।

[আর আল্লাহ‎ ভলো জানেন, এই লেখাটির মধ্যে কোন ভুল থাকলে তার দায়ভার সম্পূর্ন আমার আর যদি প্রশংসনীয় কিছু থাকে তার সবটুকু আমাদের সকলের রব আল্লাহর]