Are you sure?

বিজ্ঞান »  ইসলাম ও বিজ্ঞান

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি সম্পর্কে একটি আলোচনা।

 

বিষয় : শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি সম্পর্কে একটি আলোচনা। 

লেখক : সামিউল হাসান তবিব আলইনফিরাদী  

0.সূচিপত্র :  

0.সূচিপত্র। 
1.ভূমিকা।
2.কিছু স্পষ্টীকরণ।
3.হাদিসটিতে বিদ্যমান ইল্লতসমূহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।
4.হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী কিছু উলামাদের নাম উল্লেখকরণ।
5.হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী উলামাদের সংখ্যাটা কম নয় বরং বেশি!  
6.অধিকাংশ উলামাদের নিকট হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট।
7.উক্ত ইল্লতসমূহকে সমর্থনকরণ।
8.হাদিসটির মাতান ইল্লতবিশিষ্ট হওয়া সংক্রান্ত কিছু কথা।
9.একটি বিশেষ নীতি প্রতিষ্ঠিতকরণ।
10.হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী উলামাগণ প্রসঙ্গে।
11.উপসংহার। 
12.পরিশিষ্ট, হাদিসিটি কি বিজ্ঞানের সহিত সাংঘর্ষিক?  
13.টীকাসমূহ। 


1.ভূমিকা :  

ইমাম মুসলিম তাঁর "সহিহ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِي فَقَال ‏خَلَقَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ التُّرْبَةَ يَوْمَ السَّبْتِ وَخَلَقَ فِيهَا الْجِبَالَ يَوْمَ الأَحَدِ وَخَلَقَ الشَّجَرَ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَخَلَقَ الْمَكْرُوهَ يَوْمَ الثُّلاَثَاءِ وَخَلَقَ النُّورَ يَوْمَ الأَرْبِعَاءِ وَبَثَّ فِيهَا الدَّوَابَّ يَوْمَ الْخَمِيسِ وَخَلَقَ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ بَعْدَ الْعَصْرِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فِي آخِرِ الْخَلْقِ وَفِي آخِرِ سَاعَةٍ مِنْ سَاعَاتِ الْجُمُعَةِ فِيمَا بَيْنَ الْعَصْرِ إِلَى اللَّيْل…[1] 

অর্থ : আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃ) আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহ তা’আলা শনিবার দিন মাটি সৃষ্টি করেন এবং এতে পর্বত সৃষ্টি করেন রবিবার দিন। সোমবার দিন তিনি বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার দিন তিনি বিপদাপদ সৃষ্টি করেন। তিনি নূর সৃষ্টি করেন বুধবার দিন। তিনি বৃহস্পতিবার দিন পৃথিবীতে পশু-পাখি ছড়িয়ে দেন এবং জুমুআর দিন আসরের পর জুমুআর দিনের শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ আসর থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ মাখলুক আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করেন।  

উক্ত হাদিসটির সঠিকতা নিয়ে মুহাদ্দিসদের মাঝে বিতর্ক এবং মতভেদ বিদ্যমান। একদল উলামাদের মতে হাদিসটির মাতান ইল্লতবিশিষ্ট,এর বিপরীতে আরেকদল উলামাদের মতে হাদিসটির মাতান সম্পূর্ণ সহিহ এবং ইল্লত হতে মুক্ত। এই লেখাটিতে আমি উক্ত হাদিসটিকে মাতানের দিক দিয়ে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী উলামাদের পক্ষে কিছু কথা বলব।এবং লেখাটির একদম শেষের দিকে অতিরিক্ত সংযুক্তি হিসেবে উক্ত হাদিসটি বিজ্ঞানবিরোধী নাকি না তা নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা উপস্থাপন করব। 

2.কিছু স্পষ্টীকরণ :  

মূল আলোচনা আরম্ভ করার পূর্বে, কিছু বিষয় শুরুতেই স্পষ্ট করে দেয়া উচিত, অন্যথায় কিছু জটিল বিষয় ব্যাখ্যা করার জন্য মূল আলোচনার মাঝখানে বার বার বিরতি নিতে হবে, যা লেখাটির শৃঙ্খলা এবং বোধগম্যতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।  

প্রথম স্পষ্টীকরণ :  

প্রথম স্পষ্টীকরণ এর ক্ষেত্রে কিছু জটিল ও বিস্তারিত বিষয়কে সংক্ষেপে ও সরলভাবে প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে কিছু ছোট আকৃতির পরিভাষা ব্যবহার করা হবে, সেই পরিভাষাগুলো হল : ব্যতিক্রমী হাদিসত্রয়,প্রথম উক্তি, দ্বিতীয় উক্তি, তৃতীয় উক্তি, প্রথম ক্রিয়া এবং দ্বিতীয় ক্রিয়া। 

"ব্যতিক্রমী হাদিসত্রয়" মানে হচ্ছে নিম্নে উল্লেখকৃত এই তিনটি হাদিস,  

১.শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিস। 

২.সেই হাদিসটি, যা অনুযায়ী মক্কা বিজয় এবং আবুসুফিয়ান কর্তৃক ইসলাম গ্রহণ এর পর রাসূল (সা) এবং উম্মুহাবিবাহ (রা) এর মাঝে বিবাহ সংঘটিত হয়েছিল।  

৩.সালাতুল কুসুফ এর প্রত্যেকটা রাকায়াত তিন বা এর অধিক রুকুবিশিষ্ট হয়ার হাদিস। 

"প্রথম উক্তি" মানে হচ্ছে এমন যেকোনো উক্তি যা দ্বারা "ব্যতিক্রমী হাদিসত্রয়" এর কোনো একটি বা একাধিকটি ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত হয়। 

"দ্বিতীয় উক্তি" মানে হচ্ছে এমন যেকোনো উক্তি যা দ্বারা ব্যাপকার্থে সহিহ মুসলিমের সব হাদিসকে সহিহ সাব্যস্ত করা হয় কিন্ত সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান কোনো নির্দিষ্ট হাদিসকে নির্দিষ্টভাবে উদ্দেশ্য করা হয় না।  

"তৃতীয় উক্তি" মানে হচ্ছে এমন যেকোনো উক্তি যা দ্বারা ব্যাপকার্থে সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা ঘোষণা বা সাব্যস্ত করা হয় কিন্ত সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান কোনো নির্দিষ্ট হাদিসকে নির্দিষ্টভাবে উদ্দেশ্য করা হয় না।  

"প্রথম ক্রিয়া" মানে হচ্ছে এক বা একাধিক স্থানে বা সময়ে বা ক্ষেত্রে  "প্রথম উক্তি" ব্যক্তকরণ। 

"দ্বিতীয় ক্রিয়া" মানে হচ্ছে অন্য বা অন্যান্য এক বা একাধিক স্থানে বা সময়ে বা ক্ষেত্রে "দ্বিতীয় উক্তি" এবং "তৃতীয় উক্তি" এর কোনো একটি কিংবা উভয়টি ব্যক্তকরণ। 

ধরা যাক যে, কোনো একজন আলেম প্রথম ক্রিয়াটি করলেন এবং উক্ত একই আলেম দ্বিতীয় ক্রিয়াটিও করলেন।  

মূলনীতি হচ্ছে এই যে, আম্ম এবং খাস একই প্রসঙ্গে এসে মিলিত হলে খাস এর উপর ভিত্তি করে আম্ম কে তাখসিস করতে হয়। [2] 

এক্ষেত্রে, প্রথম ক্রিয়াটি খাস, দ্বিতীয় ক্রিয়াটি আম্ম, এবং এদের উভয়েই একই প্রসঙ্গে এসে মিলিত হয়েছে। সুতরাং এক্ষেত্রে আম্ম প্রথম ক্রিয়াটির উপর ভিত্তি করে খাস দ্বিতীয় ক্রিয়াটিকে তাখসিস করতে হবে। 

প্রথম ক্রিয়াটির উপর ভিত্তি করে দ্বিতীয় ক্রিয়াটিকে তাখসিস করলে যা পাওয়া যায় তা হচ্ছে এই যে,উক্ত আলেম দ্বিতীয় ক্রিয়াটির ক্ষেত্রে প্রথম ক্রিয়াটিতে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকৃত হাদিসটিকে বিবেচনার বাহিরে রেখেছেন, অর্থাৎ উক্ত আলেমের দৃষ্টিতে প্রথম ক্রিয়াটিতে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকৃত হাদিসটি ব্যতীত সহিহ মুসলিমের বাকি সকল হাদিস সহিহ অথবা সহিহ হয়ার ইজমাপ্রাপ্ত অথবা সহিহ হয়ার ইজমার সহিত সহিহ, এবং সুনির্দিষ্টভাবে শুধুমাত্র প্রথম ক্রিয়াটিতে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকৃত হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট এবং সহিহ হয়ার ইজমা হতে মুক্ত। 

যদি বলা হয় যে : প্রথম ক্রিয়াটিতে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকৃত হাদিসটির সঠিকতা প্রসঙ্গে উক্ত আলেম কর্তৃক রুজুউ (মত পরিবর্তন) সংঘটিত হয়ার সম্ভাবনা আছে। 

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে : আম্ম এবং খাস একই প্রসঙ্গে এসে মিলিত হয়ার ক্ষেত্রে রুজুউ সংঘটিত হয়ার সম্ভাবনা থাকলেও মূলনীতি হচ্ছে এটাই যে খাস এর উপর ভিত্তি করে আম্ম কে তাখসিস করতে হবে [3]। সুতরাং রুজুউ সংঘটিত হয়ার সম্ভাবনাটি এক্ষেত্রে অবিবেচ্য অধর্তব্য। 

দ্বিতীয় স্পষ্টীকরণ :  

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর কখনোই কোনো যুগেই কোনো ধরনেরই ইজমা সংঘটিত হয়নি।  

দ্বিতীয় স্পষ্টীকরণ এর ক্ষেত্রে, আমি যখনই "হাদিস" বা "হাদিসটি" বলব, তখনই ধরে নিবেন যে এর দ্বারা সুনির্দিষ্টভাবে শুধুমাত্র শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে।  

যদি বলা হয় যে : সহিহ মুসলিম এর সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়েছে, হাদিসিটি সহিহ মুসলিমের সব হাদিসের অন্তর্ভুক্ত, সুতরাং হাদিসটি সহিহ হয়ার উপরও ইজমা সংঘটিত হয়েছে। অর্থাৎ হাদিসটির উপর আসা সকল সমালোচনা অবিবেচ্য অধর্তব্য। 

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে : হাদিসটি ব্যতীত সহিহ মুসলিমের বাকি সকল হাদিস সহিহ এবং সহিহ হয়ার ইজমাপ্রাপ্ত।এক্ষেত্রে,এই হাদিসটি হচ্ছে সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম।হাদিসটি সহিহ মুসলিম এর অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রচুর সংখ্যাক মুতাক্বাদ্দিম, মুতায়াখখির এবং মুয়াসির উলামারা হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। হাদিসটি সহিহ নাকি ইল্লতবিশিষ্ট এই প্রসঙ্গে ইখতিলাফ ঘটেছে,ইখতিলাফ! যা কিনা ইজমার বিপরীত! অতএব এমনটা হয়া কোনোভাবেই সম্ভব না এই হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়েছে। কাজেই হাদিসটির উপর আসা সমালোচনাগুলো বিবেচ্য, ধর্তব্য এবং গুরুত্বপূর্ণ।  

যদি বলা হয় যে : ইবনুল আনবারী শনিবারে সৃষ্টি আরম্ভ হয়ার উপর উলামাদের ইজমা ঘোষণা করেছেন, সুতরাং হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর ইজমা আছে। 

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে : ইবনুল আনবারী কর্তৃক শনিবারে সৃষ্টি আরম্ভ হয়ার উপর উলামাদের ইজমা ঘোষণা করার বিষয়টিকে ইবনু তাইমিয়াহ অশুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন[4],সুতরাং হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়নি। 

যদি বলা হয় যে : হাদিসটি সহিহ নাকি ইল্লতবিশিষ্ট তা নিয়ে উলামাদের মাঝে একটা সময় পর্যন্ত মতভেদ বা ইখতিলাফ ছিল, কিন্ত পরবর্তীতে মুসলিম উলামারা এইমর্মে ইজমায় উপনিত হন যে হাদিসটি সহিহ হয়ার মতটিই সঠিক। 

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে : হাদিসটিকে প্রচুর সংখ্যাক মুতাক্বাদ্দিম, মুতায়াখখির এবং মুয়াসির উলামারা ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন, এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর কখনোই কোনো যুগেই কোনো ধরনেরই ইজমা সংঘটিত হয়নি। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ইখতিলাফ থাকার পর ইজমা সংঘটিত হয়ে থাকলে মুতায়াখখিরদের যুগেই হাদিসটি নিয়ে সংঘটিত বিতর্ক ও মতভেদ এর সমাপ্তি ঘটে যেত, কিন্ত এমনটা হয়নি, বরং বর্তমানেও বিভিন্ন উলামারা হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন।  

যদি বলা হয় যে : মুতায়াখখিরদের যুগের কোনো একটা সময়ে হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়ে গিয়েছিল এবং উক্ত ইজমা সংঘটিত হয়ার পর যেসব মুতায়াখখির এবং মুয়াসির উলামারা হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন তাঁরা সকলেই মূলত ইজমা অস্বীকার করেছেন।  

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে : এভাবে চিন্তা করলে যেকেউ চাইলে যেকোনো সময় যেকোনো ইখতিলাফী মাসয়ালার ক্ষেত্রে প্রচলিত যেকোনো একটা নির্দিষ্ট মতের ব্যাপারে দাবি করতে পারবে যে সেই মতটি সঠিক হয়ার উপর যেকোনো এক সময়ে ইজমা সংঘটিত হয়ে গিয়েছিল এবং উক্ত ইজমাটি সংঘটির হয়ার পর যারাই উক্ত মতটির বিরোধী অন্য কোনো মত দিয়েছেন তাঁরা সবাই মূলত ইজমা অস্বীকার করেছেন। স্পষ্টতই, উক্ত কথাটি উদ্ভট, অবান্তর এবং ভুল।  

যদি বলা হয় যে : বিপুল সংখ্যাক উলামারা বলেছেন যে সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়েছে, এবং তাঁরা এমনটা বলার ক্ষেত্রে কোনো ব্যতিক্রম থাকার কথা উল্লেখ করেন নি।শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি সহিহ মুসলিম এর সব হাদিসেরই অন্তর্ভুক্ত, সুতরাং উক্ত বিপুল সংখ্যাক উলামাদের উক্ত বক্তব্য শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটির জন্যও প্রযোজ্য। অর্থাৎ বিপুল সংখ্যাক উলামাদের মতে হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়েছে!  

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে :  

প্রথমত, 

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর কোনো ধরনের ইজমা সংঘটিত হয়নি, যে যা ই বলুক না কেন, এটাই এক্ষেত্রে বাস্তবতা যা অপরিবর্তনীয়, কারণ প্রচুর সংখ্যাক মুতাক্বাদ্দিম, মুতায়াখখির এবং মুয়াসির উলামারা হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। 

দ্বিতীয়ত, 

ধরে নিলাম যে, উক্ত বিপুল সংখ্যাক উলামাদের দ্বারা এক্ষেত্রে কোনো ধরনের কোনো ভুল সংঘটিত হয়নি।  

তৃতীয়ত,  

সহিহ মুসলিম এর মোট হাদিস সংখ্যা 3033 টি। 

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি হচ্ছে সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান 1 টি হাদিস। 

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি সহিহ মুসলিমের সকল হাদিসের 0.03297066% এর প্রতিনিধিত্ব করে, অপরদিকে এই হাদিসটিকে বাদ দিয়ে বিবেচনা করলে সহিহ মুসলিমের অন্যান্য সকল হাদিস সহিহ মুসলিম এর সকল হাদিসের 99.96702934 % এর প্রতিনিধিত্ব করে। 

চতুর্থত,  

উক্ত বিপুল সংখ্যাক উলামাদের কর্তৃক ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি উল্লেখকরণ ব্যতীত সহিহ মুসলিম এর সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়ার বিষয়টি ব্যক্তকরণের ক্ষেত্রে দুইটি সম্ভাবনা বিদ্যমান, যথা :-  

(১) উক্ত বিপুল সংখ্যাক উলামারা "সব" বলতে সহিহ মুসলিমের 100% হাদিসকেই উদ্দেশ্য করেছেন। 

(২) উক্ত বিপুল সংখ্যাক উলামারা "সব" বলতে সহিহ মুসলিমের শুধুমাত্র উক্ত 99.96702934 % হাদিসকে উদ্দেশ্য করেছেন এবং উক্ত 0.03297066% হাদিসকে অতিসামান্য হয়ার দরুণ গণায় ধরেন নি। 

যদি উপর্যুক্ত ১ নং সম্ভাবনাটি সত্য হয়, তাহলে এর মানে হবে এই যে, শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি সহিহ হয়ার উপরও ইজমা সংঘটিত হয়েছে, যা কিনা এক্ষেত্রে বাস্তবতাবিরোধী। 

সুতরাং উপর্যুক্ত ১ নং সম্ভাবনাটি ভুল। 

সুতরাং উপর্যুক্ত ২ নং সম্ভাবনাটি সঠিক। 

সুতরাং উক্ত বিপুল সংখ্যাক উলামাদের উক্ত বক্তব্য শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটির জন্য প্রযোজ্য নয়। 

পঞ্চমত, 

এমনও অনেক উলামারা আছেন যারা কিনা সহিহ মুসলিম এর সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা থাকার বিষয়টি ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁরা বলেছেন যে অত্যন্ত সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ব্যতীত সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়েছে। 

এমন মুতায়াখখির উলামাদের মাঝে আছেন,  

ইবনু তাইমিয়াহ, ইবনুল কাইইম, ইবনু কাসির, ইবনু আবিল ঈয, আসসিলাফী, ইবনুস সালাহ, ইবনু হাজার, আননওওই, আসসাখাওই, আযযারকাশী, আলমুনাওই … ইত্যাদি ইত্যাদি।[5]  

এমন মুয়াসির উলামাদের মাঝে আছেন,  

বিন বায, আলআওনী, মুস্তফা আল আদাওই, মুক্ববিল বিন হাদী, ইব্রাহিম আললাহিম, হাসান আবুলআশবাল আযযুহাইরী, আযযাহরানী, মুহাম্মাদ যারইওহ …… ইত্যাদি ইত্যাদি। [6]  

যদি বলা হয় যে : যেসব উলামারা সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা থাকার বিষয়টি ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সেসব উলামাদের অনেকেই অন্যান্য বিভিন্ন স্থানে ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি উল্লেখকরণ ব্যতীত সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়ার বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন। এটাত এক ধরনের স্ববিরোধীতা!   

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে :  

এটা স্ববিরোধীতা নয়, বরং এটা হচ্ছে ভাষাগত বৈধতা। তাঁরা কিছু স্থানে ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করার সহিত সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়ার বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন এবং কিছু স্থানে ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি উল্লেখকরণ ব্যতীত সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়ার বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা যেসব স্থানে ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি উল্লেখকরণ ব্যতীত সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়ার বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন, সেসব স্থানে ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি শাব্দিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও অর্থের মধ্যে উহ্যভাবে বিদ্যমান আছে। _[7]  

উল্লেখ্য যে :  

উক্ত বিপুল সংখ্যাক উলামারা সাধারণভাবে বলেছেন যে সহিহ মুসলিম এর সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়েছে, উক্ত ইজমাটি কখন সংঘটিত হয়েছে তা তাঁরা সুনির্দিষ্ট করে দেন নি।কাজেই তাঁদের উক্ত ব্যতিক্রম উল্লেখকরণমুক্ত ইজমা ঘোষণাকরণ কে কোনো একটা সুনির্দিষ্ট সময়কালের উপর প্রযোজ্য করিয়ে এটা দাবি করা যাবেনা যে উক্ত সুনির্দিষ্ট সময়কালটিতে হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়ে গিয়েছিল এবং উক্ত সুনির্দিষ্ট সময়কালটির পরে যারা হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন তাঁরা ইজমা অস্বীকার করেছেন। 

তৃতীয় স্পষ্টীকরণ :  

তৃতীয় স্পষ্টীকরণ এর ক্ষেত্রে আমি যখনই "উক্ত আলেম" বলব তখনই ধরে নিবেন যে এর দ্বারা  এমন অনির্দিষ্ট কোনো একজন আলেম উদ্দেশ্য যিনি কিনা শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে পৃথকভাবে উদ্দেশ্য করে সহিহ সাব্যস্ত করেন নি। 

তৃতীয় স্পষ্টীকরণ এর ক্ষেত্রে, আমি যখনই "হাদিস" বা "হাদিসটি" বলব, তখনই ধরে নিবেন যে এর দ্বারা সুনির্দিষ্টভাবে শুধুমাত্র শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে।  

যদি উক্ত আলেম কর্তৃক এমনটা বলা হয়ে থাকে যে সহিহ মুসলিম এর সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়েছে, তাহলে উক্ত আলেমের উক্ত বক্তব্যটি দ্বারা এটা প্রমাণিত হবেনা যে উক্ত আলেমের দৃষ্টিতে হাদিসটি সহিহ। হাদিসটির ক্ষেত্রে অপরিবর্তনীয় বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, হাদিসটি সহিহ হয়ার উপর কখনোই কোনো ধরনেরই ইজমা সংঘটিত হয়নি, বরং প্রচুর সংখ্যাক মুতাক্বাদ্দিম, মুতায়াখখির এবং মুয়াসির উলামারা হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। এক্ষেত্রে, হয় উক্ত আলেম ইজমা ঘোষণাকরণের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করে দেয়া হতে ভুলবশত বিরত থেকেছেন, আর নাহয় তিনি ইজমা ঘোষণা করার সময় হাদিসটিকে অতিসামান্য হওয়ার দরুণ গণায় ধরেন নি। 

যদি উক্ত আলেম কর্তৃক এমনটা বলা হয়ে থাকে যে "সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ কারণ সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়েছে ", তাহলে উক্ত আলেমের উক্ত বক্তব্যটি দ্বারা এটা প্রমাণিত হবেনা যে উক্ত আলেমের দৃষ্টিতে হাদিসটি সহিহ।উক্ত বক্তব্যটির ক্ষেত্রে সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা থাকার বিষয়টির উপর  সরাসরিভাবে নির্ভর করে সহিহ মুসলিমের সব হাদিসকে সহিহ বলা হয়েছে, যেহেতু সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা থাকার বিষয়টি হাদিসটির জন্য প্রযোজ্য না, সুতরাং উক্ত ইজমা থাকার বিষয়টির উপর ভিত্তি করে সহিহ মুসলিমের সব হাদিসকে সহিহ বলাও হাদিসটির জন্য প্রযোজ্য না। 

যদি উক্ত আলেম সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ হয়ার উপর ইজমা সংঘটিত হয়ার বিষয়টির উপর নির্ভর না করে পৃথকভাবে বলেন যে "সহিহ মুসলিমের সব হাদিস সহিহ", তাহলে উক্ত আলেমের উক্ত বক্তব্যটি দ্বারা এটা প্রমাণিত হবেনা যে উক্ত আলেমের দৃষ্টিতে হাদিসটি সহিহ। কারণ, এক্ষেত্রে এমনটা হয়া তীব্রভাবে সম্ভাব্য যে উক্ত আলেম যখন উক্ত কথাটি বলছিলেন তখন সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান উক্ত 0.03297066% হাদিসের কথা তাঁর খেয়ালে ছিলনা।_[8]  

চতুর্থ স্পষ্টীকরণ :  

আহমাদ বিন শুয়াঈব আননাসাঈ শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে নিম্নে উল্লেখকৃত এই সনদটি দ্বারা বর্ণনা করেছেন, [9]  

أخبرنا إبراهيم بن يعقوب، قال: حدثني محمد بن الصباح، قال: حدثنا أبو عبيدة الحداد، قال: حدثنا الأخضر بن عجلان، عن ابن جريج المكي، عن عطاء، عن أبي هريرة، 

আননাসাঈ কর্তৃক বর্ণিত উক্ত সনদটি শায। 

উক্ত সনদটিতে, আলআখদ্বার বিন আজলান বর্ণনা করেছেন যে ইবনু জুরাইজ হাদিসটি পেয়েছেন আতা হতে।  

অপরদিকে, হাজ্জাজ বিন মুহাম্মাদ, হিশাম বিন ইউসুফ এবং মুহাম্মাদ বিন ছাওর বর্ণনা করেছেন যে ইবনু জুরাইজ হাদিসটি পেয়েছেন ইসমাইল বিন উমাইয়াহ হতে। 

স্পষ্টতই, এক্ষেত্রে ইবনু জুরাইজ হতে সূত্র বর্ণনাকরণের ক্ষেত্রে মতভেদ ঘটেছে, আলআখদ্বার এর মতে ইবনু জুরাইজ হাদিসটি পেয়েছেন আতা হতে, পক্ষান্তরে হাজ্জাজ, হিশাম এবং ইবনু ছাওর এর মতে ইবনু জুরাইজ হাদিসটি পেয়েছেন ইসমাঈল বিন উমাইয়াহ হতে। _[10]  

হাজ্জাজ বিন মুহাম্মাদ এবং হিশাম বিন ইউসুফ, এনারা দুজন রাবি হিসেবে আলআখদ্বার বিন আজলান এর চেয়ে অধিক শক্তিশালী।  

হাজ্জাজ, হিশাম এবং ইবনু ছাওর কর্তৃক ইবনু জুরাইজ হতে বর্ণিত সূত্রটি শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটির ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ এবং পরিচিত। অপরদিকে আলআখদ্বার কর্তৃক বর্ণিত সূত্রটি শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটির ক্ষেত্রে খুবই কম পরিচিত।  

সুতরাং, আননাসাঈ কর্তৃক বর্ণিত উক্ত সনদটি শায।  

…[11][12] 

পঞ্চম স্পষ্টীকরণ :  

সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান সমালোচিত হাদিসগুলোকে দুই প্রকারে বিভক্ত করা যায়, যথা :-  

(১) প্রথম প্রকার :  

একজন বা দুইজন মুহাদ্দিস হঠাত আর্বিভূত হয়ে সমালোচনাস্বরূপ বললেন যে সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান অমুক হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট, অতঃপর মুসলিম বিশ্বের বাকি সকল মুহাদ্দিসরা সম্মিলিতভাবে উক্ত সমালোচনাটিকে প্রত্যাখ্যান করলেন এবং এব্যাপারে একমত হলেন যে উক্ত সমালোচনাটি ভুল।…এই ধরনের যত সমালোচিত হাদিস সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান, তার সবগুলোই প্রথম প্রকারের অন্তর্ভুক্ত। 

(২) দ্বিতীয় প্রকার :  

একজন বা দুইজন মুহাদ্দিস হঠাত আবির্ভূত হয়ে সহিহ মুসলিমের একটা হাদিসকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করলেন, এর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ মুসলিম বিশ্বের মুহাদ্দিসদের একটা বড় অংশ উক্ত সমালোচনাটিকে গ্রহণ করাপূর্বক সঠিক সাব্যস্ত করলেন, অপরদিকে মুহাদ্দিসদের আরেকটা অংশ উক্ত সমালোচনাটিকে প্রত্যাখ্যান করলেন, অতঃপর উক্ত সমালোচনাটি সঠিক নাকি ভুল তা নিয়ে উক্ত দুইটি অংশ সর্বদাই সকল যুগেই সবসময়ই মতভেদ করে গেলেন কখনোই কোনো যুগেই সুনির্দিষ্ট একটি মত সঠিক হয়ার উপর একমত হলেন না, অতঃপর বর্তমানেও উক্ত সমালোচনাটি সঠিক নাকি ভুল তা নিয়ে মুহাদ্দিসদের মাঝে মতভেদ চলমান আছে।…এই ধরনের যত সমালোচিত হাদিস সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান, তার সবগুলোই দ্বিতীয় প্রকার এর অন্তর্ভুক্ত। 

সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান সকল সমালোচিত হাদিসের প্রায় সবগুলোই উক্ত প্রথম প্রকার এর অন্তর্ভুক্ত। সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান সকল সমালোচিত হাদিসের মধ্য হতে শুধুমাত্র 3 টা হাদিস উক্ত দ্বিতীয় প্রকার এর অন্তর্ভুক্ত, আর এই তিনটা হাদিস হচ্ছে প্রথম স্পষ্টীকরণে বর্ণিত ব্যতিক্রমী হাদিসত্রয়। 

প্রথম প্রকারের অন্তর্ভুক্ত সমালোচিত হাদিসগুলোর উপর আসা সমালোচনাগুলো শায, ভুল, অবিবেচ্য, অধর্তব্য, অগ্রহণযোগ্য। কিন্ত দ্বিতীয় প্রকারের অন্তর্ভুক্ত সমালোচিত হাদিসগুলোর উপর আসা সমালোচনাগুলো গায়রে শায, সঠিক হতে পারে, বিবেচ্য, ধর্তব্য এবং গ্রহণযোগ্য।  

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি হচ্ছে উক্ত দ্বিতীয় প্রকারের অন্তর্ভুক্ত।  

ষষ্ঠ স্পষ্টীকরণ :  

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট হওয়ার মানে কখনোই এই না যে, আবু হুরাইরাহ (রা) হাদিসটি বর্ণনা করার ক্ষেত্রে কোনো ভুল করেছেন। হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী উলামাদের কেউই হাদিসটির ইল্লতবিশিষ্ট হওয়ার পিছনে আবু হুরাইরাহ (রা) কে দায়ী করেন নি। 

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট হওয়ার দ্বারা কখনোই কোনোভাবেই হাদিসশাস্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়না, হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী উলামাদের প্রত্যেকেই মূলধারার সুন্নী মুসলিম ছিলেন এবং হাদিসশাস্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন।  

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট হওয়ার দ্বারা সহিহ মুসলিম গ্রন্থটির নির্ভরযোগ্যতা বা মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ হয়না, কারণ হাদিসটি সহিহ মুসলিমের মাত্র 0.03297066% অংশের প্রতিনিধিত্ব করে।

3. হাদিসটিতে বিদ্যমান ইল্লতসমূহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা : 

নিম্নে উল্লেখকৃত ইল্লতসমূহের দ্বারা বিভিন্ন মুহাদ্দিস কর্তৃক শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করা হয়েছে, 

(১) শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি প্রকৃতপক্ষে কাব আলআহবার এর বক্তব্য, এটি রাসূল (সা) এর বক্তব্য নয়। হাদিসটিকে ভুলবশত মারফুরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। 

(২) ইসমাঈল বিন উমাইয়াহ প্রকৃতপক্ষে আইয়ুব বিন খালিদ হতে হাদিসটি নেন নি, বরং ইসমাঈল বিন উমাইয়াহ প্রকৃতপক্ষে ইব্রাহিম বিন আবি ইয়াহইয়া নামক একজন মাতরুক রাবি থেকে হাদিসটি নিয়েছেন।  

(৩) হাদিসটির সনদে বিদ্যমান 'আইয়ুব বিন খালিদ' একজন যইফ রাবি।   

(৪) একাধিক বিভিন্ন কারণে এবং উপায়ে, হাদিসটির মাতানটি ক্রুটিপূর্ণ, সমস্যাজনক, ভুল এবং অগ্রহণযোগ্য।  

…[13]  

4. হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী কিছু উলামাদের নাম উল্লেখকরণ :  

প্রচুর সংখ্যাক মুতাক্বাদ্দিম, মুতায়াখখির এবং মুয়াসির উলামারা শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। 

হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী কিছু মুতাক্বাদ্দিম উলামাদের নাম নিম্নরূপ, 

ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আলক্বাত্তান [13][14] 
আব্দুররহমান বিন মাহদী [13] 
আলি ইবনুল মাদিনী [13] 
ইয়াহইয়া ইবনু মুয়াঈন [13] 
মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আলবুখারী [13] 
মুহাম্মাদ ইবনু জারির আততাবারী [13]  

হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী কিছু মুতায়াখখির উলামাদের নাম নিম্নরূপ, 

আবুলফাতাহ আলআযদী [13][14] 
আবুবকর আলবায়হাক্বী [13] 
ইবনু আতিয়াহ আলআন্দালুসী [13] 
আবুলআব্বাস আলক্বুরতুবী [13] 
আবুআব্দুল্লাহ আলক্বুরতুবী [13] 
মুহিউদ্দিন আননওওই [15] 
তাক্বিউদ্দিন ইবনু তাইমিয়াহ [13] 
ইবনু ক্বাইয়িমিল যাওযিয়াহ [13] 
জামালুদ্দিন আলমিযযী [16] 
আলাউদ্দিন আলখাযিন [17] 
ইবনু কাসির আদদিমাশক্বী [13] 
আব্দুলক্বাদির আলক্বুরেশী [13]
ইবনু আবিল ঈয আলহানাফী [18] 
বাদরুদ্দিন আযযারকাশী [13]
সিরাজুদ্দিন ইবনুল মুলাক্কিন [19] 
আলমোল্লা আলী আলক্বারী [20] 
আব্দুররউফ আলমুনাওই [13] 
মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আসসানআনী [21]  

হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী কিছু মুয়াসির উলামাদের নাম নিম্নরূপ, 

শিহাবুদ্দিন আবুছছানা আলআলওয়াসী [13] 
মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ আলমাযহারী [22] 
আবু আব্দুর রহমান আলহুউত [23] 
মুহাম্মাদ রাশিদ রিদ্বা [13] 
জামালুদ্দিন আলক্বাসিমী [13] 
আব্দুল হাফিয আলফাসী [13] 
আবুলফাইদ্ব আহমাদ আলগুমারী [13] 
মুহাম্মাদ আলআমিন আশশানকিতিঈ [13] 
মুহাম্মাদ বিন সালিহ আলউসাইমিন [13] 
আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায [24][25] 
শুয়াইব আলআরনাউত [13] 
বকর আবু যাইদ [25] 
সালিহ আলফাওযান [25] 
আব্দুল্লাহ বিন গ্বাদইয়ান [25] 
আব্দুল আযিয আল আশশায়খ [25] 
আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ আররাজিহী [26] 
মুহাম্মাদ দ্বিয়াউর রহমান আলআযামী [27] 
ইব্রাহিম বিন আব্দুল্লাহ আললাহিম [28] 
মুহাম্মাদ আবু শুহবাহ [13] 
সাঈদ বিন মুহাম্মাদ আসসানারী [29] 
হুসাইন সালিম আসাদ [30] 
বাশশার আওয়াদ মারুফ [31] 
মুহাম্মাদ বিন ফারিদ যারইওহ [13] 
সুলাইমান বিন মুহাম্মাদ আদদাবিখী [13] 
আহমাদ আলক্বুসাইইর [13] 
আব্দুল্লাহ আলগ্বুনাইমান [32] 
নাসির বিন আব্দুলকারিম আলআলী [33]  

5.হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী উলামাদের সংখ্যাটা কম নয় বরং বেশি! :  

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী উলামাদের সংখ্যাটা কম (قليل) নয় বরং বেশি (كثير)।  

হাদিসটির সঠিকতা নিয়ে চিন্তাকারী একাধিক সংখ্যাক উলামারা এই ব্যাপারটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যেমন :-  

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী আলেম 'হাসান আবুলআশবাল আযযুহাইরী'' বলেছেন যে,[34]  

وهذا الحديث نازع في ثبوته كثير من المحدثين 

অর্থ : প্রচুর সংখ্যাক মুহাদ্দিসরা এই হাদিসটির সঠিক হয়ার বিরোধীতা করেছেন। 

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী আলেম 'মুহাম্মাদ সালিহ আলমুনাজ্জিদ' বলেছেন যে,[35]  

وذهب إليه كثير من العلماء والمحدثين 

অর্থ : প্রচুর সংখ্যাক উলামা এবং মুহাদ্দিস এই মতটির (অর্থাৎ ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকরণের) পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। 

হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী আলেম 'ইব্রাহিম বিন আব্দুল্লাহ আললাহিম' বলেছেন যে, [36]  

ومتن الحديث فيه نكارة رده بسببها كثير من النقاد 

অর্থ : হাদিসটির মাতানটিতে নাকারাত বিদ্যমান এবং একারণে প্রচুর সংখ্যাক নাক্বিদরা হাদিসটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। 

6.অধিকাংশ উলামাদের নিকট হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট :  

'আবুজাফার মুহাম্মাদ ইবনু জারির আততাবারী', শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করতে গিয়ে হাদিসটির বিরুদ্ধে লিখেছেন যে, [37]  

وأولى القولين في ذلك عندي بالصواب قول من قال: اليوم الذي ابتدأ الله تعالى ذكره فيه خلق السموات والأرض يوم الأحد، لإجماع السلف من أهل العلم على ذلك 

অর্থ : উক্ত দুটি মতের মধ্য হতে আমার নিকট সঠিক মত হচ্ছে তাঁদের মত, যারা বলেছেন যে আল্লাহ যেই দিনটিতে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টিকরণ আরম্ভ করেছেন সেই দিনটি হল ইয়াওমুল আহাদ, কারণ এর উপর সালাফ উলামাদের ইজমা আছে। 

আততাবারীর পরিভাষায় জুমহুরের মতই "ইজমা" [38], সুতরাং এক্ষেত্রে আততাবারী কর্তৃক সালাফদের ইজমা আছে বলার মানে হচ্ছে যে, এটাই জুমহুর সালাফদের মত।  

'আবুজাফার আহমাদ বিন মুহাম্মাদ আননাহহাস আলমুরাদী' লিখেছেন যে, [39]  

فأما الاختلاف في ابتداء الخلق، فقال ابن سلام فيه: ابتداؤه يوم الأحد، وكذا قال مجاهد والضحاك، وعليه أكثر الناس، وقال بعض العلماء: يوم السبت؛ وكذا قال محمد بن إسحاق 

অর্থ : সৃষ্টির আরম্ভ হয়া প্রসঙ্গে ইখতিলাফ বিদ্যমান, এপ্রসঙ্গে ইবনু সালাম বলেছেন যে সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে, অনুরূপ বলেছেন মুজাহিদ, আদ্বদ্বাহহাক, এবং অধিকাংশ মানুষ এই মতের উপরই, কিছু উলামারা বলেছেন যে তা ইয়াওমুস সাবাত, অনুরূপ বলেছেন মুহাম্মাদ বিন ইসহাক্ব। 

'তাক্বিউদ্দিন আবুলআব্বাস ইবনু তাইমিয়াহ আলহাররানী' লিখেছেন যে, [40]  

وقد روى في ابتدائه يوم السبت حديث رواه مسلم فالذي عليه الجمهور وعامة الأحاديث أن ابتداءه يوم الأحد 

অর্থ: সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হয়া প্রসঙ্গে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে যা মুসলিম বর্ণনা করেছেন, কিন্ত জুমহুররা যেই মতটির পক্ষে আছেন তা হল এই যে সৃষ্টির আরম্ভ হয়েছে ইয়াওমুল আহাদে।  

'মুহিউদ্দিন আব্দুলক্বাদির বিন মুহাম্মাদ আলক্বুরেশী' শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে এই বলে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন যে, [41]  

 واتفق الناس على أن يوم السبت لم يقع فيه خلق، وأن ابتداء الخلق يوم الأحد 

অর্থ : মানুষরা এব্যাপারে একমত হয়েছে যে ইয়াওমুস সাবাতে সৃষ্টি সংঘটিত হয়নি এবং সৃষ্টির আরম্ভ হয়েছে ইয়াওমুল আহাদে। 

'আব্দুলহক্ব বিন সাইফুদ্দিন আদদিহলওই' শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন যে, [42]  

دل هذا الحديث على أن ابتداء الخلق يوم السبت، والمشهور أنه يوم الأحد 

অর্থ : এই হাদিসটি ইঙ্গিত করে যে সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুস সাবাতে হয়েছে, এবং প্রসিদ্ধ হচ্ছে এই যে তা ইয়াওমুল আহাদে হয়েছে। 

সুতরাং প্রমাণিত হল যে, জুমহুরের মতে সৃষ্টির আরম্ভ হয়েছে ইয়ামুল আহাদে। 

যদি বলা হয় যে : 'আবুবকর মুহাম্মাদ ইবনুল ক্বাসিম আলআনবারী'(তিনি ইবনুল আনবারী নামে প্রসিদ্ধ) বলেছেন যে, [43]  

واتفق أهل العلم على أن الله جل وعز ابتدأ الخلق يوم السبت،  

অর্থ : এবং উলামারা এব্যাপারে একমত হয়েছেন যে আল্লাহ তায়ালা ইয়াওমুস সাবাতে সৃষ্টি আরম্ভ করেছেন। 

তাহলে জবাবস্বরূপ বলা হবে যে :  

প্রথমত, ইবনুল আনবারী এর উপর্যুক্ত বক্তব্যটি আততাবারী এবং ইবনু তাইমিয়াহ এর উপর্যুক্ত বক্তব্যদ্বয়ের সহিত সাংঘর্ষিক। 

দ্বিতীয়ত, ইবনুল আনবারী এর উপর্যুক্ত বক্তব্যটিকে ইবনু তাইমিয়াহ সুনির্দিষ্টভাবে উদ্দেশ্য করাপূর্বক অশুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন। ইবনুল আনবারী এর উপর্যুক্ত বক্তব্যটিকে উদ্দেশ্য করে ইবনু তাইমিয়াহ বলেছেন যে,[44]  

 غلط من جعل الأول إجماع أهل العلم من المسلمين 

অর্থ : যিনি মনে করেছেন যে প্রথমটা (অর্থাৎ সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হয়ার মতটা) মুসলিম উলামাদের ইজমা, তিনি ভুল করেছেন। 

সুতরাং, ইবনুল আনবারী এর উপর্যুক্ত বক্তব্যটি ভুল। 

এবার, 

জুমহুর এর মতে সৃষ্টির আরম্ভ হয়েছে ইয়াওমুল আহাদে। 

শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি অনুযায়ী সৃষ্টির আরম্ভ হয়েছে ইয়াওমুস সাবাতে। 

স্পষ্টতই, এক্ষেত্রে জুমহুরের মত হাদিসটির সহিত সাংঘর্ষিক। 

অর্থাৎ, এক্ষেত্রে জুমহুর উলামারা হাদিসটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।  

সুতরাং জুমহুরের নিকট শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট।  

যদি বলা হয় যে : হতে পারে যে, জুমহুর উলামারা হাদিসটি জানতেন না, তাই তাঁরা এমন একটি মতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন যা হাদিসটির সহিত সাংঘর্ষিক। 

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে : শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি একটি "প্রসিদ্ধ"(مشهور) হাদিস [45],হাদিসটি প্রসিদ্ধ হওয়ার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে জুমহুর উলামারা হাদিসটি জানতেন। সুতরাং এক্ষেত্রে উক্ত সম্ভাবনাটি বাতিল। 

যদি বলা হয় যে : সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হওয়া এবং শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটির মাঝে প্রকৃতপক্ষে কোনো বিরোধ নেই। সুতরাং জুমহুর কর্তৃক সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হওয়ার মতটির পক্ষে অবস্থান নেওয়ার দ্বারা এটা প্রমাণিত হয়না যে জুমহুরের নিকট হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট।  

তাহলে উত্তরস্বরূপ বলা হবে যে :  

সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হওয়া এবং শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটির মাঝে প্রকৃতপক্ষে কোনো বিরোধ নেই, এটা শুধুমাত্র তখনই সম্ভব হতে পারে যখন ধরে নেয়া হবে যে শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিতে বর্ণিত ইয়াওমগুলো কোরআনে বর্ণিত ছয় ইয়াওম হতে ভিন্ন। 

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী উলামারা সহ অন্যান্য সকল উলামারা এই ব্যাপারে একমত ছিলেন যে শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিতে কোরআনে বর্ণিত ছয় ইয়াওমই উদ্দেশ্য। উক্ত ঐক্যমত বহাল ছিল বিংশ শতাব্দীর আলেম নাসিরুদ্দিন আলআলবানী এর আগ পর্যন্ত। অতঃপর নাসিরুদ্দিন আলআলবানী ইসলামের ইতিহাসের সর্বপ্রথম আলেম হিসেবে দাবি করেন যে শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিতে বর্ণিত ইয়াওমগুলো কোরআনে বর্ণিত ছয় ইয়াওম হতে ভিন্ন।
…[46]  

সুতরাং,সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হওয়া এবং শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি একে অপরের বিরোধী।  

সুতরাং জুমহুর কর্তৃক সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হওয়ার মতটির পক্ষে অবস্থান নেওয়ার দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে জুমহুরের নিকট হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট। 

অপরদিকে, একাধিক সংখ্যাক মুয়াসির উলামারা বলেছেন যে অধিকাংশ উলামাদের নিকট হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট, যেমন :-  

'আবু আব্দুররহমান আলহুউত' হাদিসটি সম্পর্কে লিখেছেন যে, [47]  

وأكثر أهل العلم على أنه غلط 

অর্থ : এবং অধিকাংশ উলামাদের মতে হাদিসটি ভুল।  

'আবু আব্দুল্লাহ মুস্তফা ইবনুল আদাওই' হাদিসটি সম্পর্কে বলেছেন যে, [48]  

الرفع وهم والجمهور من المحدثين على إعلاله وأنه من قول كعب الأحبار 

অর্থ : মারফু হিসেবে বর্ণনাকরণ ভুল, জুমহুর মুহাদ্দিসদের মতে হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট এবং কাব এর বক্তব্য।  

'সুলাইমান বিন মুহাম্মাদ আদদাবিখী' হাদিসটি সম্পর্কে লিখেছেন যে, [49]  

إلا أن المضعفين له أكثر عددا وأعلم بالعلل من المصححين له. 

অর্থ : কিন্ত হাদিসটিকে যইফ সাব্যস্তকারীরা হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারীদের তুলনায় সংখ্যার দিক দিয়ে বেশি এবং ইলাল প্রসঙ্গে অধিক জ্ঞানী।  

'আহমাদ বিন আব্দুলআযিয আলক্বুসাইইর' হাদিসটি সম্পর্কে লিখেছেন যে, [50]  

وهذا رأي الأكثر من المفسرين و المحدثين  

অর্থ : এবং এটাই (অর্থাৎ ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকরণের মতটাই) অধিকাংশ মুফাসসির এবং অধিকাংশ মুহাদ্দিস এর মত। 

'islamweb' এ বলা হয়েছে যে,[51]  

وأكثر المحققين والجهابذة الكبار على إعلاله 

অর্থ : বেশিরভাগ মুহাক্কিকগণ ও উচুস্তরের দক্ষ সমালোচক মুহাদ্দিসগণ হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করার পক্ষে।

7.উক্ত ইল্লতসমূহকে সমর্থনকরণ :  

এক. 

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, 

"কাব আলআহবার হতে এমনটা সহিহ সনদে প্রমাণিত আছে যে তিনি সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হয়ার মতটির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন,যা কিনা শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটির সহিত সাংঘর্ষিক [52]। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি কাবের বক্তব্য নয়।"  

উপর্যুক্ত দাবিটির খণ্ডন নিম্নরূপ, 

কোনো একজন আলেম কর্তৃক স্ববিরোধীতা সংঘটিত হয়া খুবই সম্ভব এবং এর অনেক উদাহরণও আছে। অতএব, কোনো একজন আলেম এর পক্ষ থেকে একে অপরের বিরোধী দুইটি ভিন্ন ভিন্ন কথা প্রকাশিত হওয়ার দ্বারা এটা প্রমাণিত হয়না যে উক্ত আলেম একে অপরের বিরোধী উক্ত কথাদ্বয়ের কোনো একটিকে ব্যক্ত করেন নি। 

সুতরাং কাব আলআহবার কর্তৃক সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হয়ার মতটির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করার দ্বারা এটা প্রমাণিত হয়না যে শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি কাবের বক্তব্য নয়। 

দুই. 

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, 

"ইহুদি-খ্রিষ্টানরা এব্যাপারে একমত যে সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হয়েছে, ইহুদি-খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতেও এটাই বলা আছে যে সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হয়েছে। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি ইসরাইলি উৎস হতে গ্রহণকৃত নয়।"  

উপর্যুক্ত দাবিটির খণ্ডন নিম্নরূপ, 

ইমাম আলবুখারি এবং একাধিক সংখ্যাক অন্যান্য মুহাদ্দিসরা শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে কাব কর্তৃক ইসরাইলি উৎস হতে গ্রহণকৃত হিসেবে গণ্য করেছেন।  

কাব এর যুগে, মূল ধারার সংখ্যাগরিষ্ঠ ইহুদি-খ্রিষ্টানদের থেকে বিচ্ছিন্ন এমন কিছু ছোট ছোট অপরিচিত উপেক্ষাকৃত ইহুদি-খ্রিষ্টান দলের অস্তিত্ব ছিল যারা কিনা বিভিন্ন বিষয়ে মূল ধারার ইহুদি-খ্রিষ্টানদের বিরোধিতা করত।এক্ষেত্রে এমনটা হয়া খুবই সম্ভব যে, কাব শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে এরকম কোনো একটা বিচ্ছিন্ন দল থেকে গ্রহণ করেছেন। সুতরাং, ইহুদি-খ্রিষ্টানগণ কর্তৃক সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হয়ার উপর একমত হয়ার দ্বারা উক্ত মুহাদ্দিসগণ কর্তৃক শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে কাব কর্তৃক ইসরাইলি উৎস হতে গ্রহণকৃত হিসেবে গণ্যকরণ ভুল প্রমাণিত হয়না। 

প্রায় সকল ইহুদি-খ্রিষ্টানদের কর্তৃক গ্রহণকৃত তাওরাত-ইনজিলের সুপ্রসিদ্ধ সুপরিচিত মূল ধারার সংস্করণগুলোর পাশাপাশি তাওরাত-ইনজিলের কিছু বিচ্ছিন্ন অপরিচিত উপেক্ষাকৃত সংস্করণও ছিল। এসব বিচ্ছিন্ন সংস্করণগুলো এবং উক্ত মূল ধারার সংস্করণগুলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে একে অপরের সহিত সাংঘর্ষিক ছিল। এক্ষেত্রে এমনটা হয়া খুবই সম্ভব যে, কাব কোনো একটা বিচ্ছিন্ন সংস্করণ থেকে শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি গ্রহণ করেছেন। সুতরাং ইহুদি খ্রিষ্টানদের ধর্মগ্রন্থগুলোতে সৃষ্টির আরম্ভ ইয়াওমুল আহাদে হয়ার কথাটি ব্যক্তকৃত হয়ে থাকার দ্বারা উক্ত মুহাদ্দিসগণ কর্তৃক শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে কাব কর্তৃক ইসরাইলি উৎস হতে গ্রহণকৃত হিসেবে গণ্যকরণ ভুল প্রমাণিত হয়না। 

তিন. 

আলী ইবনুল মাদিনী হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকরণস্বরূপ বলেছেন যে : ইসমাঈল বিন উমাইয়াহ হাদিসটি আইয়ুব বিন খালিদ হতে গ্রহণ করেন নি বরং ইব্রাহিম বিন আবি ইয়াহইয়া হতে গ্রহণ করেছেন। 

ইবনুল মাদীনির উক্ত বক্তব্যটির জবাবস্বরূপ হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, 

" ইসমাঈল বিন উমাইয়াহ ছিক্বাহ গায়রে মুদাল্লিস, সকল মুহাদ্দিসরাই এব্যাপারে একমত। সুতরাং ইবনুল মাদিনী এর উক্ত বক্তব্যটি ভুল। "  

উক্ত জবাবটির জবাব নিম্নরূপ, 

কোনো একজন রাবী কর্তৃক ছিক্বাহ গায়রে মুদাল্লিস হওয়ার মানে এই না যে উক্ত রাবীটির দ্বারা হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটা ভুলও হতে পারবেনা। বরং কোনো একজন ছিক্বাহ রাবীর দ্বারাও অন্তত ১ টা ভুল হয়া সম্ভব এবং এমনটা হওয়ার প্রচুর পরিমাণ উদাহরণও বিদ্যমান। 

কোনো একজন মুহাদ্দিস যখন কোনো একজন রাবীকে ছিক্বাহ সাব্যস্ত করেন তখন উক্ত মুহাদ্দিস উক্ত ছিক্বাহ সাব্যস্তকরণ দ্বারা এটা বুঝান না যে উক্ত রাবীটি দ্বারা শুধুমাত্র একটা ভুলও সংঘটিত হতে পারেনা, অন্যথায় হাদিসশাস্ত্রে শায নামক কোনোকিছুর অস্তিত্বই থাকতনা। 

কোনো একজন রাবী কর্তৃক শুধুমাত্র একবার ভুল করা উক্ত রাবীর ছিক্বাহ হওয়ার উপর কোনো প্রভাব ফেলেনা। [53]  

আলি ইবনুল মাদিনী, ইসমাঈলের ছিক্বাহ হওয়ার উপর কোনো ধরনের আপত্তি আনেন নি, তিনি ইসমাঈলকে মুদাল্লিসও সাব্যস্ত করেন নি। বরং ইবনুল মাদিনী, ইসমাঈলের একটিমাত্র বিশেষ সুনির্দিষ্ট খাস হাদিসকে একান্তভাবে বিশেষভাবে সুনির্দিষ্টভাবে খাসভাবে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে, উক্ত হাদিসটি ইসমাঈল, ইব্রাহিম হতে গ্রহণ করেছেন, অর্থাৎ শুধুমাত্র উক্ত হাদিসটির ক্ষেত্রে ইসমাঈল ছিক্বাহ গাইরে মুদাল্লিস হওয়া সত্ত্বেও ভুলবশত সনদ হতে ইব্রাহিমের নাম বাদ দিয়ে দিয়েছেন। 

সুতরাং, ইসমাঈল কর্তৃক ছিক্বাহ গায়রে মুদাল্লিস হওয়া এবং ইবনুল মাদিনী এর উক্ত বক্তব্যটি একে অপরের বিরোধী নয়। 

সুতরাং, উক্ত দুটি বিষয়কে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো অসঠিক। 

সুতরাং, ইসমাঈল কর্তৃক ছিক্বাহ গায়রে মুদাল্লিস হওয়ার দ্বারা আলী ইবনুল মাদিনী এর উপর্যুক্ত বক্তব্যটি ভুল প্রমাণিত হয়না। 

চার. 

হাদিসটির সনদে বিদ্যমান 'আইয়ুব বিন খালিদ' একজন যইফ রাবী। উক্ত এই ইল্লতটির জবাবস্বরূপ হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারীদের পক্ষ হতে বলা হয়েছে যে, 

"শুধুমাত্র আবুলফাতাহ আলআযদীই আইয়ুব বিন খালিদ এর উপর জারাহ করেছেন, আল আযদী ব্যতীত আর কেউই আইয়ুবের উপর জারাহ করেন নি। আলআযদী এর একক জারাহ অনির্ভরযোগ্য, কেননা তিনি জারাহের ক্ষেত্রে ভুলকারী ছিলেন, তাছাড়া আলআযদী নিজেই একজন যইফ রাবী। "  

উক্ত জবাবটি সম্পর্কে আমার মন্তব্য নিম্নরূপ, 

প্রথমত,  

উক্ত জবাবটি খুবই শক্তিশালী, দৃঢ় এবং প্রায় অখণ্ডনীয়। সুতরাং উক্ত জবাবটি মেনে নিলাম।  

দ্বিতীয়ত, 

যেসব মুহাদ্দিসরা হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন, তাঁদের মধ্য হতে শুধুমাত্র আল আযদী এবং ইয়াহইয়া আলক্বাত্তান ই আইয়ুব বিন খালিদ কে যইফ সাব্যস্ত করার দ্বারা হাদিসটিকে পরোক্ষভাবে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। এনারা দুইজন ব্যতীত আর কেউই আইয়ুবকে যইফ সাব্যস্তকরণের দ্বারা হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেন নি। 

পাঁচ.  

হাদিসটির মাতান ইল্লতবিশিষ্ট হওয়ার পক্ষে এই লেখাটির "হাদিসটির মাতান ইল্লতবিশিষ্ট হওয়া সংক্রান্ত কিছু কথা" অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।  

8. হাদিসটির মাতান ইল্লতবিশিষ্ট হওয়া সংক্রান্ত কিছু কথা :  

হাদিসটির মাতান ইল্লতবিশিষ্ট হওয়া প্রসঙ্গে সঠিক রাজিহ কথা হচ্ছে এই যে, তা ইল্লতবিশিষ্ট।  

যেসব ব্যাখ্যার দ্বারা হাদিসটির মাতানকে সহিহ ইল্লতমুক্ত সাব্যস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে সেসব ব্যাখ্যা হাদিসটির মাতানকে সহিহ ইল্লতমুক্ত সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট না।  

মুহাম্মাদ বিন ফারিদ যারইওহ, সুলাইমান বিন মুহাম্মাদ আদদাবিখী এবং আহমাদ বিন আব্দুল আযিয আলক্বুসাইইর কিছু দৃঢ় ও শক্তিশালী জবাব প্রদান করার দ্বারা উক্ত ব্যাখ্যাগুলোকে খণ্ডন করেছেন। [13]   

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারীদের পক্ষ থেকে উক্ত আলেমত্রয়ের জবাবসমূহকে খণ্ডন করা হয়েছে নাকি না, তা আমি জানিনা। হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারীদের পক্ষ থেকে উক্ত আলেমত্রয় কর্তৃক খণ্ডিত ব্যাখ্যাগুলোর বহির্ভূত অন্য কোনো ভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে নাকি না তাও আমি জানিনা।  

যদি কেউ উক্ত আলেমত্রয় কর্তৃক প্রদানকৃত জবাবসমূহকে খণ্ডন করে থাকে বা ভবিৎষতে করে, অথবা যদি কেউ উক্ত আলেমত্রয় কর্তৃক খণ্ডিত ব্যাখ্যাগুলোর বহির্ভূত অন্য কোনো ভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকে বা ভবিৎষতে করে, তাহলেও কিছু আসে যায়না, কারণ উক্ত সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়াটি ভুল, কেন ভুল, কিভাবে ভুল, তা নিম্নে ব্যাখ্যা করা হল।  

উক্ত আলেমত্রয় কর্তৃক প্রদানকৃত জবাবসমূহকে খণ্ডন করার অথবা উক্ত আলেমত্রয় কর্তৃক খণ্ডিত ব্যাখ্যাগুলোর বহির্ভূত অন্য কোনো ভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করার শুধুমাত্র একটাই উপায় আছে, আর তা হচ্ছে এমন কোনো সামঞ্জস্যসাধনকেন্দ্রিক তাওইল প্রদানকরণ যা কিনা যাহির অর্থ হতে অনেক দূরে অবস্থিত, এক্ষেত্রে এই একটা উপায় ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।  

এক্ষেত্রে এমন কোনোকিছুরই অস্তিত্ব নেই, যা কিনা যাহির অর্থ হতে অনেক দূরে অবস্থিত উক্ত সম্ভাব্য সামঞ্জস্যসাধনকেন্দ্রিক তাওইলটির জন্য সমর্থনকারী قرينة বা دليل  হিসেবে বিবেচিত হতে পারবে।   

কোনো তাওইল কর্তৃক সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে এই যে তাওইলটির পক্ষে একটা বা একাধিকটা সমর্থনকারী (قرينة أو دليل) থাকতে হবে, যদি তাওইলটির পক্ষে একটাও সমর্থনকারী (قرينة أو دليل) না থাকে, তাহলে তাওইলটি সঠিক হিসেবে বিবেচিত হবেনা এবং গ্রহণযোগ্য হিসেবেও বিবেচিত হবেনা।_[54][55][56]   

সুতরাং যাহির অর্থ হতে অনেক দূরে অবস্থিত উক্ত সম্ভাব্য সামঞ্জস্যসাধনকেন্দ্রিক তাওইলটি অগ্রহণযোগ্য এবং অসঠিক।  

সুতরাং উক্ত সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়াটি  ভুল। 

যদি দাবি করা হয় যে : এক্ষেত্রে উক্ত তাওইলটির জন্য সমর্থনকারী قرينة বা دليل হচ্ছে এই যে, শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি সনদ এবং মতন উভয় দিক দিয়েই সহিহ। 

তাহলে জবাবস্বরূপ বলা হবে যে :  

এক্ষেত্রে হাদিসটির সহিহ হওয়াকে উক্ত তাওইলটির জন্য সমর্থনকারী قرينة বা دليل হিসেবে বিবেচনা করা অগ্রহণযোগ্য, কারণ এক্ষেত্রে হাদিসটির সহিহ হওয়া উক্ত তাওইলটির সঠিক হয়ার উপর সরাসরিভাবে নির্ভরশীল, যদি তাওইলটি সঠিক হয় তাহলে হাদিসটি সহিহ, যদি তাওইলটি ভুল হয় তাহলে হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট। 

ধরুন, আপনে একজন লোকের সাথে কোনো একটা ফিক্বহী মাসয়ালা নিয়ে বিতর্ক করছেন। 

আপনে বললেন : অমুক বিষয়টা তমুক। 

সে বলল : না, অমুক বিষয়টা তমুক না। 

আপনে বললেন : অমুক বিষয়টা তমুকই, এই দেখুন, এই হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে যে অমুক বিষয়টা তমুক। 

সে (তাওইলস্বরূপ) বলল : উক্ত হাদিসে এটা বুঝানো হয়নি বরং অন্যকিছু বুঝানো হয়েছে। 

আপনে বললেন : আপনে তো হাদিসের যাহির অর্থ থেকে অনেক দূরে চলে গেলেন, তো আপনার এই তাওইলের পক্ষে দলিল কী?  

সে বলল : আমি ধরে নিয়েছি যে অমুক বিষয়টা তমুক না, আমার ধরে নেওয়াটাই আমার উক্ত তাওইলের পক্ষে দলিল। 

আপনে বললেন : অ্যাহ?  

স্পষ্টতই, আপনার প্রতিপক্ষ এক্ষেত্রে ভুল, কারণ তাওইল দ্বারা যে বিষয়টাকে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় সে বিষয়টা নিজেই কখনো উক্ত তাওইলের জন্য ক্বরিনাহ বা দলিল হিসেবে বিবেচিত হতে পারেনা। 

একইভাবে, উক্ত দাবিটিও এক্ষেত্রে ভুল। এক্ষেত্রে তাওইল দ্বারা যে বিষয়টাকে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা হচ্ছে এই যে, হাদিসটি সহিহ। সুতরাং হাদিসটির সহিহ হওয়াকে উক্ত তাওইলটির জন্য ক্বরিনাহ বা দলিল হিসেবে বিবেচনা করা যাবেনা।

9. একটি বিশেষ নীতি প্রতিষ্ঠিতকরণ :  

জারাহ-তাদিল সংক্রান্ত একটি প্রসিদ্ধ মূলনীতি হচ্ছে এই যে, 

الجرح المفسر مقدم علی التعديل  

অর্থাৎ : বিশদ-বর্ণনাবিশিষ্ট জারাহ, বিশদ-বর্ণনাহীন তাদিল এর উপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। 

উক্ত মূলনীতিটির পিছনে কার্যরত মূলনীতিটি হচ্ছে এই যে, 

"বিশদ-বর্ণনাবিশিষ্ট নেতিবাচক মন্তব্য, বিশদ-বর্ণনাহীন ইতিবাচক মন্তব্য এর উপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।"  

জারাহ এবং তাদ্বইফ একই ধরনের বিষয়, বরং তাদ্বইফই হচ্ছে জারাহ এর মূল, কেননা কোনো রাবীকে জারাহ করার অর্থ হল উক্ত রাবীটির রিওয়ায়াতগুলোকে তাদ্বইফ করা।  

তাদিল এবং তাসহিহ একই ধরনের বিষয়, বরং তাসহিহই হচ্ছে তাদিল এর মূল, কেননা কোনো রাবীকে তাদিল করার অর্থ হল উক্ত রাবীটির রিওয়ায়াতগুলোকে তাসহিহ বা তাহসিন করা।  

সুতরাং উক্ত জারাহ-তাদিল সংক্রান্ত মূলনীতিটির পিছনে কার্যরত উক্ত মূলনীতিটি তাদ্বইফ এবং তাসহিহ এর উপরও প্রযোজ্য হবে। 

সুতরাং, এমনটা বলা সঠিক হবে যে, 

"বিশদ-বর্ণনাবিশিষ্ট তাদ্বইফ, বিশদবর্ণনাহীন তাসহিহ এর উপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। "  

এই প্রসঙ্গে নাসিরুদ্দিন আলআলবানী বলেছেন যে,  

وهو الصواب الذي تقتضيه قاعدة: " الجرح المفسر مقدم على التعديل " التي يتفرع عنها: أن التضعيف مقدم على التصحيح إذا تبينت العلة، 

অর্থ : এবং এটাই সঠিক যেটাকে আবশ্যক সাব্যস্ত করে মূলনীতি "বিশদ-বর্ণনাবিশিষ্ট জারাহ, বিশদ বর্ণনাহীন তাদিল এর উপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত", যা হতে নির্গত হয় যে : ইল্লত সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হলে তাদ্বইফ, তাসহিহ এর উপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত হবে।

10.হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী উলামাগণ প্রসঙ্গে :  

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী মুতাক্বাদ্দিম উলামাদের মধ্যে আছেন,  

মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক্ব 
মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ 
মুহাম্মাদ ইবনু খুযাইমাহ 
আবুবকর ইবনুল আনবারী 
… এবং অন্যান্য আরও কয়েকজন।  

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী মুতায়াখখির উলামাদের মধ্যে আছেন, 

ইবনু হিব্বান আলবুস্তী 
আবুমানসুর আলআযহারী 
আবুবকর ইবনুল আরাবী 
আবুলফারাজ ইবনুল যাওযী 
সালাহুদ্দিন আলআলাঈ 
জালালুদ্দিন আসসুয়ুতী 
আব্দুররহমান আসসুহাইলী
আবুআব্দুল্লাহ আলবালানসী 
আবুহাইয়ান আলআন্দালুসী 
জামালুদ্দিন ইবনুয যাহিরী 
সাবাতু ইবনিল যাওযী 
হাসান বিন আলী আলফাইয়ুমী 
মুহাম্মাদ বিন আলী আশশাওকানী 
… এবং অন্যান্য আরও কয়েকজন (সম্ভবত)  

(এনারা ছাড়া সহিহ সাব্যস্তকারী মুতায়াখখিরদের মধ্যে আর কেউ আছেন নাকি না, তা আমি জানিনা, হতে পারে আরও কয়েকজন আছেন, হতে পারে আর কেউ নেই, সহিহ সাব্যস্তকারী মুতায়াখখিরদের মধ্যে এনারা ব্যতীত আর কাওকে আমি খুজে পাইনি। ধরে নিচ্ছি যে, এনারা ছাড়াও আরও কয়েকজন আছেন যাদেরকে আমি খুজে পাইনি।)   

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী মুয়াসির উলামাদের মধ্যে আছেন, 

আব্দুররহমান আলমুয়াল্লিমী 
নাসিরুদ্দিন আলআলবানী 
আবু ইসহাক্ব আলহুয়াইনী 
আহমাদ শাকির 
সিদ্দিক হাসান খান 
ইসমাঈল হাক্বক্বী 
হাসান আবুলআশবাল আযযুহাইরী
… এবং প্রচুর সংখ্যাক অন্যান্য উলামারা।  

এবার, 

এক.  

'ইবনু ইসহাক্ব' এর বিপরীতে ইবনু ইসহাক্ব এর চেয়ে অধিক দৃঢ় ও অধিক জ্ঞানী মুহাদ্দিস 'আব্দুররহমান বিন মাহদী' হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন।  

'মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ' এর বিপরীতে মুসলিম এর চেয়ে অধিক জ্ঞানী মুহাদ্দিস 'মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আলবুখারী' হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। 

'মুহাম্মাদ ইবনু খুযাইমাহ' এর বিপরীতে 'মুহাম্মাদ বিন জারির আততাবারী' হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। 

'আবুবকর ইবনুল আনবারী' এর বিপরীতে ইবনুল আনবারী এর চেয়ে অধিক জ্ঞানী মুহাদ্দিস 'ইয়াহইয়া ইবনু মুয়াঈন' হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। 

তাছাড়া, আততাবারী এবং আননাহহাস এর উপর্যুক্ত বক্তব্যদ্বয় হতে স্পষ্ট হয় যে অধিকাংশ মুতাক্বাদ্দিম উলামাদের নিকট শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট। 

দুই. 

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী মুতায়াখখির উলামাদেরকে দুইটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়, যথা:-  

(১) তাঁরা যারা শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্ত করেছেন কিন্ত হাদিসটির ব্যাপারে বর্ণিত ইল্লতগুলোর কোনো একটারও জবাব দেন নি। 

(২) তাঁরা যারা শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্ত করেছেন এবং উক্ত সহিহ সাব্যস্তকরণ এর পাশাপাশি হাদিসটির ব্যাপারে বর্ণিত ইল্লতগুলোর মধ্য হতে কোনো একটির অথবা কোনো একাধিকটির অথবা সবগুলোর জবাব প্রদান করেছেন।  

হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী মুতায়াখখির উলামাদের মধ্য হতে প্রায় সকলেই হাদিসটিকে
ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকরণের সময় হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট হওয়ার কোনো না কোনো কারণ বর্ণনা করেছেন, অর্থাৎ তাঁদের উক্ত ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকরণটি হচ্ছে বিশদ-বর্ণনাবিশিষ্ট।কিন্ত উপর্যুক্ত এক নং শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত উলামাদের কর্তৃক হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকরণ হচ্ছে বিশদ-বর্ণনাহীন। অপরদিকে, বিশদ-বর্ণনাবিশিষ্ট তাদ্বইফ বিশদ-বর্ণনাহীন তাসহিহ এর উপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।

উপর্যুক্ত দুই নং শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত উলামারা হাদিসটির ব্যাপারে বর্ণিত হওয়া কিছু ইল্লতের জবাব দিয়েছেন। তাঁদের এসব জবাবকে দুইটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।

যথা :-  

(১) সনদ সংক্রান্ত ইল্লতের জবাব।

(২) মাতান সংক্রান্ত ইল্লতের জবাব।

উপর্যুক্ত এক নং শ্রেণীর জবাবগুলো সম্পর্কে এই লেখাটির "উক্ত ইল্লতসমূহকে সমর্থনকরণ"  অংশে আলোচনা করা হয়েছে।

উপর্যুক্ত দুই নং শ্রেণীর জবাবগুলো এক্ষেত্রে সমস্যাজনক এবং অযেথষ্ট। [58]

সুতরাং, হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী মুতায়াখখির উলামাদের কর্তৃক হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকরণ এর উপর, হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী মুতায়াখখির উলামাদের কর্তৃক হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকরণ, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।

তিন.  

হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী মুয়াসির উলামাদের মধ্য হতে প্রায় সকলেই হাদিসটির ব্যাপারে বর্ণিত একটি অথবা একাধিকটি অথবা সবগুলো ইল্লতের জবাব দিয়েছেন।

তাঁদের কর্তৃক প্রদানকৃত জবাবগুলোকে দুইটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়, যথা :-  

(১) সনদ সংক্রান্ত ইল্লতের জবাব।

(২) মাতান সংক্রান্ত ইল্লতের জবাব।

উপর্যুক্ত এক নং শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত জবাবগুলো সম্পর্কে এই লেখাটির "উক্ত ইল্লতসমূহকে সমর্থনকরণ" অংশে আলোচনা করা হয়েছে।  

উপর্যুক্ত দুই নং শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত জবাবগুলো এক্ষেত্রে সমস্যাজনক এবং অযথেষ্ট।[58]

সুতরাং, হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকারী মুয়াসির উলামাদের কর্তৃক হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্তকরণ এর উপর, হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকারী মুয়াসির উলামাদের কর্তৃক হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকরণ, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।

11.উপসংহার :-  

উপর্যুক্ত সবকিছুর উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটির সঠিকতা প্রসঙ্গে সঠিক রাজিহ মত হচ্ছে এই যে, তা ইল্লতবিশিষ্ট।

তাছাড়া উল্লেখ্য যে,এই লেখাটিতে বেশকিছু প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়নি, তার উপর আবার বেশকিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়কে খুবই সংক্ষিপ্ত করে উপস্থাপন করা হয়েছে, শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট হওয়া প্রসঙ্গে আরও বিস্তারিতভাবে জানার জন্য 13 নং টীকাটিতে উল্লেখকৃত উৎসগুলো দেখা যেতে পারে।  

12.পরিশিষ্ট, হাদিসটি কি বিজ্ঞানের সহিত সাংঘর্ষিক?:-  

এক্ষেত্রে এমনটা হওয়া আবশ্যক না যে হাদিসটি বিজ্ঞানের সহিত সাংঘর্ষিক। বরং হাদিসিটিকে বিজ্ঞানের বিরোধী হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যায়, আবার বিজ্ঞানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যায়।  

নিম্নে হাদিসটির জন্য এমন একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা উল্লেখ করা হল, যা গ্রহণ করলে হাদিসটি এবং বিজ্ঞান এর মাঝে কোনো বিরোধ থাকেনা। 

এক.  

হতে পারে যে, হাদিসটিতে বর্ণিত ইয়াওমগুলো কোরআনে বর্ণিত সৃষ্টির ছয় ইয়াওম হতে ভিন্ন। 
…[59]  

দুই.  

হতে পারে যে, হাদিসটিতে نور দ্বারা আক্ষরিক অর্থে "আলো" উদ্দেশ্য নয় বরং রূপকার্থে "কল্যাণ" উদ্দেশ্য। …[60]  

তিন.  

হতে পারে যে, হাদিসটিতে বর্ণিত সাতটি ইয়াওম ধারাবাহিক না, ক্রমভিত্তিক না, একটার পর আরেকটা না। হতে পারে যে, হাদিসটিতে বর্ণিত ইয়াওমগুলো একই সপ্তাহের অন্তর্ভুক্ত না, হতে পারে যে, এদের প্রত্যেকেই একেকটা ভিন্ন ভিন্ন সপ্তাহের অন্তর্ভুক্ত।_[61]

 

13.টীকাসমূহ:-

[1] সহিহু মুসলিম (দারুত তবাআতিল আমিরাহ, 8/127,হা/2789) ; মুসনাদু আহমাদ (মুয়াসসাতুর রিসালাহ,14/82, টীকা নং 1) ; আলমুসনাদুল মুসান্নাফুল মুয়াল্লাল (দারুল গ্বরবিঈল ইসলামি, 34/484-485)। 

[2] এটা একটা সুপ্রসিদ্ধ নীতি,  

قال أبو البقاء أيوب بن موسى الحسيني القريمي الك��وي الحنفي في كتابه "الكليات"(ناشره مؤسسة الرسالة،صفحة 602) :   

"والعام إذا كان مقابلا للخاص يكون المراد من العام ما وراء الخاص." 

قال ابن رجب الحنبلي في كتابه "تقرير القواعد وتحرير الفوائد"(ناشره
ركائز، الجزء الثاني، صفحة 419): 

"فقد يقال: إن الخاص لا يدخل في العام مطلقا، ويكون تخصيصه بالذكر قرينة مخرجة له من العموم، ما لم يعارض ذلك قرينة تقتضي دخوله فيه." 

قال عبد الله بن محمد بن سعد آل خنين في كتابه "توصيف الأقضية في الشريعة الإسلامية"(الجزء الثاني، صفحة 188):  

"يجب العمل بعموم العام من كلام المكلف ما لم يخصص، فإذا قام دليل يخصصه عملنا بالخاص، وبقى العام على عمومه فيما عدا ما خصص منه." 

قال أبو بكر أحمد بن علي الرازي الجصاص في كتابه "الفصول في الأصول"
(ناشره وزارة الأوقاف الكويتية ، الجزء الأول ، صفحة 138): 

"وليس أن دلالة التخصيص غير مذكورة مع اللفظ بمانع أن يكون في معنى الاستثناء المتصل باللفظ لأنا قد وجدنا اللفظ المطلق الذي قد أريد به في استثناء بعضه قد اقتصر فيه على الإطلاق من غير ذكر الاستثناء متصلا به في بعض المواضع وإن كان قد ذكر في بعضها ولم يكن وجود ذلك في الكلام وجوازه فيه بمانع أن يكون الاستثناء مرادا"  

[3] আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন সাদ তাঁর "তাওসিফুল আক্বদ্বিয়াহ ফিশশারিয়াতিল ইসলামিয়াহ"
(2/189) গ্রন্থে বলেছেন যে, 

أما إذا كان الرجوع ممكنا كالوصية فيقدم الخاص على العام مطلقا علم التاريخ أو جهل 

ইবনু রজব আলহানবলী তাঁর "তাক্বরিরুল ক্বাওয়াইদ ওয়া তাহরিরুল ফাওয়াইদ"(রাকাইয, 2/420-421) গ্রন্থে বলেছেন যে,  

والحالة الثانية: أن يكون الرجوع ممكنا، كالوصية، وعزل الإمام لمن يمكنه عزله وولايته؛ فهذا يشبه تعارض العام والخاص في كلام الشارع في الأحكام، وفي ذلك ثلاث روايات:أشهرها: تقديم الخاص مطلقا، وتخصيص العموم به، سواء جهل التاريخ أو علم. والثانية: إن جهل التاريخ؛ فكذلك، وإلا قدم المتأخر منهما.والثالثة: إن علم التاريخ؛ عمل بالمتأخر، وإن جهل تعارضا.ويتصل بهذه القاعدة قاعدتان:إحداهما: إذا اجتمع في شخص استحقاق بجهة خاصة؛ كوصية معينة وميراث، واستحقاق بجهة عامة؛ كالفقر والمسكنة؛ فإنه لا يأخذ إلا بالجهة الخاصة، نص عليه .ويتفرع على ذلك مسائل: منها: إذا أوصى لزيد بشيء، ووصى لجيرانه بشيء، وهو من الجيران؛ فإنه لا يعطى من نصيب الجيران.ومنها: إذا وصى لزيد بشيء، وللفقراء بشيء، وزيد فقير؛ فإنه لا يعطى من نصيب الفقراء شيئا، 

[4]ইবনু তাইমিয়াহ, মাজমুয়ুল ফাতাও���া (মাজমায়ু��� মালিক ফাহাদ,17/237)  

[5]কিছু উলামাদের কিছু বক্তব্য নিম্নরূপ, 

قال ابن حجر العسقلاني في كتابه "نزهة النظر في توضيح نخبة الفكر"
(بتحقيق القاسم ، الصفحة 117) 

"ثم صحيح مسلم؛ لمشاركته للبخاري في اتفاق العلماء على تلقي كتابه بالقبول أيضا سوى ما علل." 

قال عبد الرؤوف المناوي في كتابه "اليواقيت و الدرر شرح شرح نخبة الفكر" (ناشره مكتبة الرشد، الجزء الأول، صفحة 376):  

"ثم صحيح مسلم لمشاركته للبخاري في اتفاق العلماء على تلقي كتابه بالقبول أيضا سوى ما علل." 

قال شيخ الإسلام ابن تيمية في كتابه "جواب الاعتراضات المصرية على الفتيا الحموية"(بتحقيق محمد عزير شمس ، صفحة 46) :  

"واعلم أن جمهور أحاديث البخاري ومسلم من هذا الباب، كما ذكر أبو عمرو بن الصلاح ومن قبله من العلماء، كالحافظ أبي طاهر السِّلَفي وغيره." 

و قال ابن تيمية في كتابه "منهاج السنة النبوية"(بتحقيق محمد رشاد سالم ، الجزء السابع ، صفحة 214-216) :  

ومثل هؤلاء الجهال يظنون أن الأحاديث التي في البخاري ومسلم إنما أخذت عن البخاري ومسلم، كما يظن مثل ابن الخطيب ونحوه ممن لا يعرف حقيقة الحال، وأن البخاري ومسلما كان الغلط يروج عليهما، أو كانا يتعمدان  الكذب، ولا يعلمون أن قولنا: رواه البخاري ومسلم علامة لنا على ثبوت صحته، لا أنه كان صحيحا بمجرد رواية البخاري ومسلم، بل أحاديث البخاري ومسلم رواها غيرهما من العلماء والمحدثين من لا يحصي عدده إلا الله، ولم ينفرد واحد منهما بحديث، بل ما من حديث إلا وقد رواه قبل زمانه وفي زمانه وبعد زمانه طوائف، ولو لم يخلق البخاري ومسلم لم ينقص من الدين شيء، وكانت تلك الأحاديث موجودة بأسانيد يحصل بها المقصود وفوق المقصود. وإنما قولنا: رواه البخاري ومسلم كقولنا: قرأه  القراء السبعة. والقرآن منقول بالتواتر، لم يختص هؤلاء السبعة بنقل شيء منه، وكذلك التصحيح لم يقلد أئمة الحديث فيه البخاري ومسلما، بل جمهور ما صححاه كان قبلهما عند أئمة الحديث صحيحا متلقى بالقبول، وكذلك في عصرهما وكذلك بعدهما قد نظر أئمة هذا الفن في كتابيهما، ووافقوهما على تصحيح ما صححاه، إلا مواضع يسيرة، نحو عشرين حديثا، غالبها في مسلم، انتقدها عليهما طائفة من الحفاظ، وهذه المواضع المنتقدة غالبها في مسلم، وقد انتصر طائفة لهما فيها، وطائفة قررت قول المنتقدة .
والصحيح التفصيل ; فإن فيها مواضع منتقدة بلا ريب، مثل حديث أم حبيبة، وحديث خلق الله البرية يوم السبت، وحديث صلاة الكسوف بثلاث ركوعات وأكثر.وفيها مواضع لا انتقاد فيها في البخاري، فإنه أبعد الكتابين عن الانتقاد، ولا يكاد يروي لفظا فيه انتقاد، إلا ويروي اللفظ الآخر الذي يبين أنه منتقد، فما في كتابه لفظ منتقد، إلا وفي كتابه ما يبين أنه منتقد.
وفي الجملة من نقد سبعة آلاف درهم، فلم يرج عليه فيها إلا دراهم يسيرة، ومع هذا فهي مغيرة ليست مغشوشة محضة، فهذا إمام في صنعته. والكتابان سبعة آلاف حديث وكسر .والمقصود أن أحاديثهما انتقدها الأئمة الجهابذة قبلهم وبعدهم، ورواها خلائق لا يحصي عددهم إلا الله، فلم ينفردا لا برواية ولا بتصحيح . انتهی  

قال صدر الدين محمد ابن أبي العز الحنفي في كتابه "الاتباع" (ناشره عالم الكتب ، صفحة 47-50 ) :  

بخلاف مسلم فإنه وقع له في عدة أحاديث غلط أنكرها عليه الحفاظ
والذي أنكر على الشيخين أحاديث قليلة جدا وأحاديث البخاري ومسلم لم يقل أهل الحديث أنها صحيحة بمجرد رواية البخاري ومسلم لها بل لأنه قد رواها غيرهما من العلماء والمحدثين من لا يحصى عددهم إألا الله تعالى ولم ينفرد واحد منهم بحديث بل ما من حديث رواه إلا وقد رواه قبل زمانه ومن زمانه وبعد طوائف ولو لم يخلق البخاري ومسلم لم ينقص من الدين شيء وكانت تلك الأحاديث موجودة بأسانيد يحصل بها المقصود وفوق المقصود
وإنما قولنا رواه البخاري ة ومسلم كقولنا رواه القراء السبعة والقرآن منقول بالتواتر لم يختص هؤلاء السبعة بنقل الشيء منه وكذلك التصحيح لم يقلد أهل الحديث فيه البخاري ومسلما بل جمهور ما صححاه وما كان قبلهما عند أئمة الحديث صحيحا متلقى بالقبول وكذلك في عصرهما وبعده وقد نظر أئمة هذا الفن في كتابيهما ووافقوهما على تصحيح ما صححاه إلا مواضع يسيرة نحو عشرين حديثا غالبها في مسلم إنتقدها عليهما طائفة من الحفاظ وقد انتصر طائفة لهما وطائفة قررت قول المنتقد والصحيح التفصيل فإن فيها مواضع منتقدة بلا ريب في مسلم مثل حديث أم حبيبة وحديث خلق التربة يوم السبت وحديث صلاة الكسوف بثلاث ركعات وأكثر وفيها مواضع لا انتقاد فيها وأكثر ما لا انتقاد فيه البخاري فإنه أبعد الكتابين عن الإنتقاد ولا يكاد يروي لفظا فيه انتقاد إلا ويروي اللفظ الآخر الذي يبين أنه منتقد وفي الجملة من نقد سبعة آلاف درهم فلم يبهرج عليه فيها إلا دراهم يسيرة ومع هذا فهي معتبرة ليست بمغشوشة محضة فهذا إمام في صنعته وفي كتابه سبعة آلاف حديث وكسر وهذا الذي قاله أهل العلم من أنه ليس بعد القرآن كتاب أصح من كتابي البخاري ومسلم إنما كان لأن هذين الكتابين جرد فيهما الحديث الصحيح المسند ولم يكن القصد بتصنيفهما ذكر آثار الصحابة والتابعين ولا تمييز الحسن والمرسل وشبه ذلك وما جرد فيه الصحيح المسند عن رسول الله صلى الله عليه وسلم فهو أصح الكتب المصنفة لأنه أصح منقول عن المعصوم . انتهی  

قال ابن القيم في كتابه "الصواعق المرسلة على الجهمية والمعطلة"(ناشره دار عطاءات العلم - دار ابن حزم، الجزء الأول، صفحة 360) :  

"وأهل الحديث متفقون على أحاديث الصحيحين، وإن تنازعوا في أحاديث يسيرة منها." 

قال ابن كثير في كتابه "الباعث الحثيث إلی اختصار علوم الحديث"
(بتحقيق أحمد شاكر، صفحة 35) :  

"ثم حكى (ابن الصلاح) أن الأمة تلقت هذين الكتابين بالقبول، سوى أحرف يسيرة، انتقدها بعض الحفاظ، كالدارقطني وغيره، ثم استنبط من ذلك القطع بصحة ما فيهما من الأحاديث، لأن الأمة معصومة عن الخطأ، فما ظنت صحته ووجب عليها العمل به، لا بد وأن يكون صحيحا في نفس الأمر. وهذا جيد.وقد خالف في هذه المسئلة الشيخ محيي الدين النووي وقال: لا يستفاد القطع بالصحة من ذلك. قلت : وأنا مع ابن الصلاح فيما عول عليه وأرشد إليه. والله أعلم."  

قال محيی الدين النووي في كتابه "إرشاد طلاب الحقائق " (ناشره مكتبة الإيمان، الجزء الأول ،صفحة 131):  

"اتفاق الأمة حاصل من ذلك لأنها اتفقت على تلقي ما روياه أو أحدهما بالقبول، سوى أحرف يسيرة تكلم عليها بعض الحفاظ كالدارقطني وغيره وهي معروفة.قلت: وقد أجاب عن تلك الأحرف آخرون." 

قال ابن الصلاح في كتابه "معرفة أنواع علوم الحديث " (بتحقيق نور الدين عتر، صفحة 28-29) :  

 وهو الذي يقول فيه أهل الحديث كثيرا صحيح متفق عليه . يطلقون ذلك ويعنون به اتفاق البخاري ومسلم، لا اتفاق الأمة عليه. لكن اتفاق الأمة عليه لازم من ذلك وحاصل معه، لاتفاق الأمة على تلقي ما اتفقا عليه بالقبول 
......ومن فوائدها: القول بأن ما انفرد به البخاري أو مسلم مندرج في قبيل ما يقطع بصحته لتلقي الأمة كل واحد من كتابيهما بالقبول على الوجه الذي فصلناه من حالهما فيما سبق، سوى أحرف يسيرة تكلم عليها بعض أهل النقد من الحفاظ، كالدارقطني وغيره، وهي معروفة عند أهل هذا الشأن، والله أعلم. انتهی  

قال بدر الدين الزركشي في كتابه "النكت علی مقدمة ابن الصلاح" (ناشره أضواء السلف، الجزء الأول، صفحة 287):  

"سوى أحرف يسيرة قد صرح بالاستثناء أيضا في القطعة التي له على مسلم فقال وهذا مستثنى مما ذكرناه بعد الإجماع على تلقيه بالقبول."  

قال شمس الدين أبو الخير السخاوي في كتابه "فتح المغيث بشرح ألفية الحديث"(ناشره مكتبة السنة، الجزء الأول ،صفحة 72) : 

"إن الذي أورده البخاري ومسلم مجتمعين ومنفردين بإسناديهما المتصل دون ما سيأتي استثناؤه من المنتقد والتعاليق وشبههما - مقطوع بصحته ; لتلقي الأمة المعصومة في إجماعها عن الخطأ"  

[6]কিছু উলামাদের কিছু বক্তব্য নিম্নরূপ, 

روی محمد بن سعد الشويعر في كتابه "مجموع فتاوى ومقالات متنوعة"(ناشره رئاسة إدارة البحوث العلمية والإفتاء، الجزء 25 ، صفحة 69-70) عن عبد العزيز بن عبد الله بن باز أنه قال :  

س: ما موقفنا ممن يضعف أحاديث في صحيح مسلم أو صحيح البخاري؟
ج: هذا شذوذ عن العلماء لا يعول عليه إلا في أشياء يسيرة عند مسلم - رحمه الله - نبه عليها الدارقطني وغيره، والذي عليه أهل العلم هو تلقي أحاديث الصحيحين بالقبول والاحتجاج بها كما صرح بذلك الحافظ ابن حجر والحافظ ابن الصلاح وغيرهما، وإذا كان في بعض الرجال المخرج لهم في الصحيحين ضعف فإن صاحبي الصحيح قد انتقيا من أحاديثهم ما لا بأس به، مثل: إسماعيل بن أبي أويس، ومثل عمر بن حمزة بن عبد الله بن عمر بن الخطاب، وجماعات فيهم ضعف لكن صاحبي الصحيح انتقيا من أحاديثهم ما لا علة فيه؛ لأن الرجل قد يكون عنده أحاديث كثيرة فيكون غلط في بعضها أو رواها بعد الاختلاط إن كان ممن اختلط، فتنبه صاحبا الصحيحين لذلك فلم يرويا عنه إلا ما صح عندهما سلامته.والخلاصة أن ما رواه الشيخان قد تلقته الأمة بالقبول فلا يسمع كلام أحد في الطعن عليهما رحمة الله عليهما سوى ما أوضحه أهل العلم كما تقدم.ومما أخذ على مسلم - رحمه الله - رواية حديث أبي هريرة: أن الله خلق التربة يوم السبت. ... الحديث. والصواب أن بعض رواته وهم برفعه للنبي - صلى الله عليه وسلم - وإنما هو من رواية أبي هريرة - رضي الله عنه - عن كعب الأحبار؛ لأن الآيات القرآنية والأحادي�� القرآنية الصحيحة ��لها قد دلت على أن الله سبحانه قد خلق السماوات والأرض وما بينهما في ستة أيام أولها يوم الأحد وآخرها يوم الجمعة؛ وبذلك علم أهل العلم غلط من روى عن النبي - صلى الله عليه وسلم - أن الله خلق التربة يوم السبت، وغلط كعب الأحبار ومن قال بقوله في ذلك، وإنما ذلك من الإسرائيليات الباطلة. والله ولي التوفيق. 

قال الشريف حاتم بن عارف العوني :  

"لكن العلماء قد نصوا أن أحاديث الصحيحين (صحيح البخاري وصحيح مسلم) كلها مقبولة، إلا أحاديث يسيرة انتقدها بعض النقاد الكبار، الذين بلغوا رتبة الاجتهاد المطلق في علم الحديث. وأن ما سوى تلك الأحاديث اليسيرة، فهي متلقاة بالقبول عند الأمة جميعها."  

انظر : https://shamela.ws/book/894/484 

قال أبو عبد الله مصطفی العدوي :  

ماذا نقول لمن يضعف حديثا في صحيحي البخاري ومسلم؟الجواب : تقدم الكلام على ذلك: وهو أن صحيحا البخاري ومسلم قد تلقتهما الأمة بالقبول إلا أحاديث يسيرة جدا انتقدها الحفاظ كـ الدارقطني وغيره، وهي نسبة لا تتجاوز نصف الواحد في المائة، أي: أن تسعة وتسعين في المائة ونصف صحيح ونصف في المائة ضعيف، فإذا كان المنتقد قد أورد حديثا من الأحاديث المنتقدة، وقال: العالم الفلاني تكلم فيه فله ذلك، لكن إذا تطاول وأدلى برأيه ولم يورد مستندا بذلك فقوله مردود عليه
 
انظر : https://shamela.ws/book/7695/162#p1 

قال مقبل بن هادي الوادعي في كتابه "غارة الفصل على المعتدين على كتب العلل"(ناشره دَارُ الآثَار، صفحة 93):  

وأما حديث قد أخرجه الشيخان أو أحدهما فيكفي العزو إليهما، اللهم إلا أن يكون الحديث من الأحاديث المنتقدة التي انتقدها الدارقطني أو غيره من الحفاظ المعترف بانتقاده، كما قال ابن الصلاح ما معناه: إن أحاديث " الصحيحين " تفيد العلم اليقيني النظري إلا أحاديث يسيرة انتقدها الحفاظ كالدارقطني وغيره، فإذا كان من الأحاديث المنتقدة فله أن يبدي رأيه إن كان أهلا لذلك - بتأييد الانتقاد أو دفعه 

قال إبراهيم بن عبد الله اللاحم :  

........ يعني: هو صحيح إلى درجة كبيرة, أن جمهور أحاديث الصحيحين, إذا استثنينا ما انتقد, أو ما فيه اختلاف على بعض -يعني إذا استثنينا بعض الأشياء-؛ فبقية أحاديث الصحيحين من المقطوع بصحته، ويفيد العلم اليقين 

انظر :https://shamela.ws/book/2066/71#p1 

قال حمد بن عبد الله الحمد :  

فإن أحاديث مسلم لا شك أن أهل العلم قد اتفقوا على تصحيحها، لكن يستثنى من ذلك اليسير الذي خالفه فيها الأئمة الكبار كأحمد والبخاري وغيرهم، وحذاق أهل العلم ممن كان لهم بصيرة في هذا العلم، فكان لهم مخالفة في أحاديث من أحاديث مسلم، وفي أحاديث أقل منها في صحيح البخاري، والواجب على طالب العلم أن يصحح كل ما ثبت في صحيح مسلم إلا تلك الأحاديث التي انتقدها الأئمة النقاد أو بعضهم، فله مجال بتصحيحها أو القول بتضعيفها فلا تكون من الأحاديث التي تلقت بالقبول واتفق الحفاظ على تصحيحها، 

انظر : https://shamela.ws/book/852/1233 

قال حسن أبو الأشبال الزهيري :  

فنقول: على العموم البخاري ومسلم هما أصح الكتب بعد كتاب الله عز وجل، ثم البخاري يتفوق على مسلم، وفي بعض الكتب الأخرى كالسنن والمسانيد والمعاجم والأجزاء والفوائد أسانيد على حدة وعلى انفراد توازي وتعادل بل وتفوق بعض الأسانيد المنفردة عند البخاري وعند مسلم على انفراد، أما الكتابين في مجملهما - البخاري ومسلم - فقد تلقتهما الأمة بالقبول، وهما أصح الكتب بعد كتاب الله عز وجل.وليس هذا القبول لكل حديث ولكل كلمة في الكتابين، وإنما لعموم الكتابين، ثم هناك أحرف يسيرة قد انتقدت على البخاري وعلى مسلم، هذه الأحرف اليسيرة التي طال فيها الخلاف بين إثبات ما كانت على شرط صاحب الصحيح أو لم يكن على شرطه، وظهر فيها الخلاف أيضا بين الصحة والضعف، هذه الأحرف لم تتلقها الأمة بالقبول، وإنما الأمة تلقت بالقبول ما اتفق على صحته. 

انظر : https://shamela.ws/book/37066/3#p1 

قال محمد بن فريد زريوح في كتابه "المعارضات الفكرية المعاصرة لأحاديث الصحيحين -دراسة نقدية"(ناشره تكوين للدراسات والأبحاث، الجزء الأول، صفحة 536) :  

         إنَّ التَّلقي للكتابين بالقَبول إنَّما هو لما تضمَّناه من أخبار مُسندةٍ مرفوعة في الجملة، لا لكلِّ حرفٍ أو لفظٍ فيهما على حِدة، فهذا ليس إلَّا للقرآنِ الكريم، فهو الَّذي قبوله فرضٌ على الأعيانِ بحروفِه وألفاظِه؛ وجميعُ أهلِ العلمِ بالحديثِ، إنَّما يجزمون بصحَّةِ جمهورِ أحاديثِ الكِتابين، لا بكلِّ حرفٍ فيهما.فالصواب أن نقول: إن (جمهور) متون «الصحيحين» معلومة الصحة متقنة، تلقاها أهل العلم بالحديث بالقبول والتصديق، وأجمعوا على صحتها، وأن فيهما ما هو معلول الإسناد والمتن معا، لكنه قليل جدا، وهذا ما ذكره أبو عمرو ابن الصلاح ومن قبله، كالحافظ أبي طاهر السلفي وغيره (١).
وبهذا نعلم أن ما ورد عن بعض العلماء من تعميم هذا الاتفاق على كل حديث فيهما، كما تراه في دعوى الدهلوي (ت ١١٧٦ هـ): «الصحيحان قد اتفق المحدثون على أن جميع ما فيهما من المتصل المرفوع صحيح بالقطع» (٢)؛ وكذا قول أحمد شاكر (ت ١٣٧٧ هـ): «أحاديث الصحيحين صحيحة كلها، ليس في واحد منها مطعن أو ضعف» (٣)؛ فضلا عما تقدم من عبارة الإسفراييني في زعمه صحة كل ما اشتمل عليه الكتابين: فهذا منهم نوع تساهل، مؤداه الغلط وعدم الدقة في العبارة؛ والأولى أن يستثنى من جملة الاتفاق ما قدمنا شرحه آنفا.وهذه الدقة في الاحتراز هي ما تراه في مثل قول السخاوي: «إن الذي أورده البخاري ومسلم، مجتمعين ومنفردين، بإسناديهما المتصل، دون ما سيأتي استثناؤه من المنتقد والتعاليق وشبههما: مقطوع بصحته» (٤).وختاما؛ نستطيع بعد ما مضى في هذا المطلب كله أن نسوغ جملا مختصرة تلم شعث ما تقدم من الأدلة، في ما يتعلق بالموقف العلمي من دعوى الإجماع على «الصحيحين»: في كون الإجماع على صحة جمهور أحاديث «الصحيحين». 

(١) «جواب الاعتراضات المصرية» (ص/٤٦).
(٢) «حجة الله البالغة» (١/ ٢٣٢).
(٣) تعليقه على «اختصار علوم الحديث» لابن كثير (١/ ١٢٤).
(٤) «فتح المغيث» (١/ ٧٢) 

وقال محمد بن فريد زريوح في كتابه السابق (في الجزء الثاني ، صفحة 669) :  

الحال أن مزية «الصحيحين» وجلالتهما ثابتة ثبوت الجبال الرواسي، «لا يهون من أمرهما إلا مبتدع متبع غير سبيل المؤمنين» (١)؛ وهذا الإجماع من علمائهم إنما هو على جمهور أحاديث «الصحيحين»، لا على كل حرف فيهما على حدة، هو في ذاته فضيلة لم يبلغها غير الشيخان.والعاقل من الناس يعلم أن من نقد سبعة آلاف درهم متنوعة، أتته من بلاد مختلفة، فلم يرج عليه منها إلا دراهم معدودة، «وهي مع هذا مغيرة ليست مغشوشة محضة: فهذا إمام في صنعته!فالكتابان سبعة آلاف حديث وكسر» (٢)، واشتمالهما على أحرف يسيرة خولفا فيها من حذاق الفن لا يعيبهما في شيء، بل محمدة استحقا عليها التنويه من النقاد العارفين بوعورة ما اشترطاه في كتابيهما، والتسليم للشيخين بالحذق في هذا الفن، ونفوذ بصيرتهما في انتقاء المتون، وشدة احتياطهما في تصحيح الأسانيد. 

(١) «حجة الله البالغة» للدهلوي (١/ ٢٣٢).
(٢) «منهاج السنة» لابن تيمية (٧/ ٢١٦) 

       قال محمد بن مطر الزهراني في كتابه "تدوين السنة النبوية نشأته وتطوره من القرن الأول إلى نهاية القرن التاسع الهجري"(ناشره دار الهجرة ، صفحة 59) :  

"جميع أهل العلم بالحديث يجزمون بصحة جمهور أحاديث الكتابين، وسائر الناس تبعاً لهم في معرفة الحديث، وإذا أجمع أهل العلم على شيءٍ فسائر الأمَّة تبعٌ لهم فإجماعهم معصوم لا يجوز أن يجمعوا على خطأ."  

[7] আবুবকর আহমাদ বিন আলী আররাযী আলজাসসাস তাঁর গ্রন্থ "আলফুসুল ফিল উসূল" (ওয়াযারাতুল আওক্বাফিল কুয়েতিয়াহ, 1/138-139) তে বলেছেন যে,  

وَلَيْسَ أَنَّ دَلَالَةَ التَّخْصِيصِ غَيْرُ مَذْكُورَةٍ مَعَ اللَّفْظِ بِمَانِعِ أَنْ يَكُونَ فِي مَعْنَى الِاسْتِثْنَاءِ الْمُتَّصِلِ بِاللَّفْظِ لِأَنَّا قَدْ وَجَدْنَا اللَّفْظَ الْمُطْلَقَ الَّذِي قَدْ أُرِيدَ بِهِ فِي اسْتِثْنَاءِ بَعْضِهِ قَدْ اُقْتُصِرَ فِيهِ عَلَى الْإِطْلَاقِ مِنْ غَيْرِ ذِكْرِ الِاسْتِثْنَاءِ مُتَّصِلًا بِهِ فِي بَعْضِ الْمَوَاضِعِ وَإِنْ كَانَ قَدْ ذُكِرَ فِي بَعْضِهَا وَلَمْ يَكُنْ وُجُودُ ذَلِكَ فِي الْكَلَامِ وَجَوَازُهُ فِيهِ بِمَانِعٍ أَنْ يَكُونَ الِاسْتِثْنَاءُ مُرَادًا كَقَوْلِهِ تَعَالَى فِي قِصَّةِ لُوطٍ - عَلَيْهِ السَّلَامُ - {فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍ مِنْ اللَّيْلِ وَاتَّبِعْ أَدْبَارَهُمْ وَلَا يَلْتَفِتْمِنْكُمْ أَحَدٌ وَامْضُوا حَيْثُ تُؤْمَرُونَ} [الحجر: ٦٥] فَلَمْ يَسْتَثْنِ امْرَأَتَهُ فِي هَذَا الْمَوْضِعِ وَهِيَ مُسْتَثْنَاةٌ فِي الْمَعْنَى وَإِنْ لَمْ يَذْكُرْهَا ثُمَّ قَالَ فِي مَوْضِعٍ آخَرَ {فَأَسْرِ بِأَهْلِك بِقِطْعٍ مِنْ اللَّيْلِ وَلَا يَلْتَفِتْ مِنْكُمْ أَحَدٌ إلَّا امْرَأَتَك} [هود: ٨١] فَأَظْهَرَ الِاسْتِثْنَاءَ فِي هَذِهِ الْآيَةِ، ثُمَّ لَمْ يَخْتَلِفْ حُكْمُ اللَّفْظَيْنِ فِي أَنَّ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مُسْتَثْنًى مِنْهُ الْمَرْأَةُ فِي الْمَعْنَى، وَإِنْ كَانَتْ مَذْكُورَةً فِي أَحَدِهِمَا غَيْرَ مَذْكُورَةٍ فِي الْآخَرِ 

[8] ইবনু তাইমিয়াহ তাঁর "মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবুওইয়াহ" গ্রন্থে (7/214-216) এবং ইবন�� আবিল ঈয তাঁর "আলইত্তিবা" গ্রন্থে (পৃ/47-50) একটি উপমা প্রদান করার দ্বারা এবিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। উক্ত উপমাটি দ্বারা তাঁরা যা বুঝাতে চেয়েছেন তা নিম্নে ব্যাখ্যা করা হল। 

কেউ যদি 7000 টি দিরহাম এর নির্ভরযোগ্যতা পরীক্ষা করে, তাহলে সে উক্ত 7000 দিরহাম এর মধ্য হতে সামান্য কয়েকটা নকল দিরহাম পাবে, কিন্ত উক্ত 7000 দিরহামের নির্ভরযোগ্যতা প্রসঙ্গে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষেত্রে সে উক্ত সামান্য কয়েকটা নকল দিরহামকে বিবেচনায় রাখবেনা বরং উপেক্ষা করবে। 

একইভাবে,  

মুহাদ্দিসরা সহিহাইনে বিদ্যমান প্রায় 7000 হাজার হাদিসের নির্ভরযোগ্যতা পরীক্ষা করেছেন, এবং তাঁরা উক্ত প্রায় 7000 হাদিসের মধ্য হতে সামান্য কয়েকটা ইল্লতবিশিষ্ট হাদিস পেয়েছেন, কিন্ত উক্ত প্রায় 7000 হাদিসের নির্ভরযোগ্যতা প্রসঙ্গে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষেত্রে তাঁরা উক্ত সামান্য কয়েকটা ইল্লতবিশিষ্ট হাদিসকে বিবেচনায় রাখেন নি বরং উপেক্ষা করেছেন। 

[9]আননাসাঈ, আসসুনানুল কুবরা (মুয়াসসাতুর রিসালাহ, 10/213)  

[10]ইবনু কাসির, আলবিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ (দারু হিজর, 1/32)  

[11]সাইদ আব্দুলমাজিদ আলগ্বাওরী, মুজামুল মুস্তালাহাতিল হাদিসিয়াহ (দারু ইবনে কাসির,পৃ/414-415)  

[12]উক্ত সনদটি শায হয়া প্রসঙ্গে কিছু উলামাদের বক্তব্য নিম্নরূপ, 

قال محمد بن فريد زريوح في كتابه "المعارضات الفكرية المعاصرة لأحاديث الصحيحين"(ناشره تكوين للدراسات والأبحاث، الجزء الثاني، صفحة 1010) : 

أما ما استدل به من حديث الأخضر على فهمه ذاك: فغير سالم له ولا مسلم، لأن الأخضر بن عجلان خالف في سنده ومتنه الثقات من رواة هذا الحديث عن ابن جريج، وهم: حجاج بن محمد المصيصي (٣)، وهشام بن يوسف الصنعاني (٤)، ومحمد بن ثور (٥)، والصواب روايتهم دونه.والأخضر صدوق نازل عن مرتبتهم في الضبط، فروايته بهذا السياق الشاذ عن المعروف من متن الحديث وسنده مردودة. 

(٣) وعنه رواه مسلم في «صحيحه».
(٤) وعنه رواه ابن معين في «تاريخه - الدوري» (٣/ ٥٢، رقم: ٢١٠).
(٥) وعنه رواه الطبراني في «المعجم الأوسط» (٣/ ٣٠٣، رقم: ٣٢٣٢)، وأبو الشيخ في «العظمة» (٤/ ١٣٦٠). 

قال شعيب الأرناوؤط و عادل مرشد المحقق في تعليق "مسند أحمد" (مؤسسة الرسالة، الجزء الرابع عشر، صفحة 83) :  

أخرجه النسائي في الكبری من طريق الأخضر بن عجلان عن ابن جريج عن عطاء عن أبي هريرة و الأخضر بن عجلان صدوق و قد خالف ثقتين هما حجاج بن محمد و هشام بن يوسف والصواب قولهما ورواية الأخضر خطأ . 

قال أحمد بن عبد العزيز بن مُقْرِن القُصَيِّر في كتابه "الأحاديْثُ المُشْكِلَةُ الواردةُ في تفسير القرآنِ الكريم"(ناشره دار ابن الجوزي، صفحة 244 و 245) : 

قلت: وهذه الرواية معلولة من أوجه:الأول: أن الأخضر بن عجلان خالف ثلاث ثقات، في إسناد هذا الحديث، وحسبك مخالفته لحجاج بن محمد؛ فإنه من أثبت الناس في ابن جريج. ......الوجه الثاني: عنعنة ابن جريج، قال الإمام أحمد: "كل شيء قال فيه ابن جريج: قال عطاء، أو عن عطاء؛ فإنه لم يسمعه من عطاء". اهـ من شرح علل الترمذي، لابن رجب (٢/ ٦٠٠). 

قال مصحح حديث خلق التربة عبد الرحمن المعلمي اليماني في كتابه "الأنوار الكاشفة"( ناشره دار عالم الفوائد، الجزء 12، صفحة 266) :  

أقول: في صحة هذه الرواية عن ابن جريج عن عطاء بن أبي رباح نظر لا أطيل ببيانه، فمن أحب التحقيق فليراجع «تهذيب التهذيب» (٢١٣: ٧) و «فتح الباري» (٥١١: ٨) (٤) ومقدمته (ص ٣٧٣) (٥) وترجمتي أخضر وعثمان بن عطاء من «الميزان» (٦) وغيره. والله الموفق. 

[13]দেখুন : 
 
المعارضات الفكرية المعاصرة لأحاديث الصحيحين لمحمد بن فريد زريوح (الناشر :تكوين للدراسات والأبحاث، الجزء الثاني، صفحة 993-1021) 

الأحاديْثُ المُشْكِلَةُ الواردةُ في تفسير القرآنِ الكريم لأحمد بن عبد العزيز بن مُقْرِن القُصَيِّر (الناشر : دار ابن الجوزي ، صفحة 243-258) 

أحاديث العقيدة المتوهم إشكالها في الصحيحين لسليمان بن محمد الدبيخي (الناشر : مكتبة دار المنهاج، صفحة 356 -378) 

مسند الإمام أحمد بن حنبل بتحقيق شعيب الأرناوؤط و عادل مرشد (الناشر : مؤسسة الرسالة، الجزء 14، صفحة 82-84 ، تعليق 1) 

[14]তিনি হাদিসটিকে পরোক্ষভাবে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন।  

[15] মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আসসানআনী হাদিসটি সম্পর্কে তাঁর গ্রন্থ "আততাহবির লিইদ্বাহি মায়ানিয়িত তাইসির" (মাকতাবাতুররুশদ, 3/683) এ লিখেছেন যে, 

أخرجه مسلم تكلم عليه النووي والبخاري  وغير واحد من الحفاظ
 

[16] জামালুদ্দিন আলমিযযী তাঁর গ্রন্থ "তুহফাতুল আশরাফ" (তাঃ আব্দুসসমাদ শারফুদ্দিন, 10/133) তে আলবুখারীর ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্তকরণটিকে সমর্থন করেছেন। 

[17] আলাউদ্দিন আলখাযিন তাঁর গ্রন্থ "লুবাবুত তাওইল ফি মায়ানিয়িত তানযিল"(দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, 2/206-207) তে হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট হয়ার বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন। 

[18]ইবনু আবিল ঈয, আলইত্তিবা (আলিমুল কুতুব, পৃ/47-50)  

[19]সিরাজুদ্দিন ইবনুল মুলাক্কিন তাঁর গ্রন্থ "তুহফাতুল মুহতাজ" ( দারু হিরা, 2/563-564) তে হাদিসটি ইল্লতবিশিষ্ট হয়ার বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন।  

[20]আলী আলক্বারী, আলআসরারুল মারফুআহ (তাঃ মুহাম্মাদ আসসব্বাগ্ব, পৃ/456-457) 

[21] মুহাম্মাদ আসসানআনী, আততাহবির লিইদ্বাহি মায়ানিয়িত তাইসির (মাকতাবাতুররুশদ, 3/683) এবং আততানওইর শারহুল জামিঈস সাগির (মাকতাবাতু দারিসসালাম, 5/499-500)। 

[22] মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ আলমাযহারী, আততাফসিরুল মাযহারী (মাকতাবাতুররুশদিয়াহ
,8/285, 9/76)  

[23]আবু আব্দুর রহমান আলহুউত, আসনাল মাতালিব ফি আহাদিসি মুখতালিফাতিল মারাতিব (দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ,পৃ/132) 

[24] ছয় নং টীকাতে উল্লেখকৃত বিন বায এর বক্তব্যটি দেখুন। 

[25]"আললাজনাতুদ দায়িমাহ" এর পক্ষ থেকে বিন বায, বকর আবু যাইদ, আলফাওযান, আব্দুল্লাহ বিন গ্বাদইয়ান এবং আব্দুল আযিয আল আশশায়খ সম্মিলিতভাবে শনিবারে মাটি সৃষ্টির হাদিসটিকে ইল্লতবিশিষ্ট সাব্যস্ত করেছেন। 

দেখুন : ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়িমাহ আলমাজমুআতুছ ছানিয়াহ (রিয়াসাতু ইদারাতিল বুহুসিল ইলমিয়াহ ওয়াল ইফতা, 1/10)  

[26]দেখুন :  

https://shamela.ws/book/37048/197 

https://shamela.ws/book/11/4237#p1 

[27]আলআযামী, আলজামিউল কামিল (দারুস সালাম, 7/411) 

[28]আললাহিম, মুক্বারানাতুল মারওইয়াত (মুয়াসসাতুর রাইয়ান, 2/173-174) 

[29]সাঈদ বিন মুহাম্মাদ আসসানারী, তাহক্বিক্বু মুসনাদে আবি ইয়ালা (8/334-335, হাদিস নং 6132 এর টীকা)  

[30]হুসাইন সালিম আসাদ, তাহক্বিক্বু মুসনাদে আবি ইয়ালা (10/513, হাদিস নং 6132) 

[31]বাশশার আওয়াদ মারুফ, তাহরিরু তাক্বরিবিত তাহযিব (মুয়াসসাতুর রিসালাহ,1/160) 

[32]https://shamela.ws/book/3047/26 

[33]https://shamela.ws/book/37717/246 

[34]https://shamela.ws/book/37026/1066 

[35]https://islamqa.info/ar/218080 

[36]আললাহিম, মুক্বারানাতুল মারওইয়াত (মুয়াসসাতুর রাইয়ান, 2/174)  

[37]আততাবারী, তারিখুর রুসুল ওয়াল মুলুক (দারুল মাআরিফ, 1/45)  

[38]মুহাম্মাদ বিন আব্দুলআযিয বিন আহমাদ আলখুদ্বাইরী, আলইজমা ��িত তাফসির (দারুওওয়াতান,পৃ/61)  

[39]আবুজাফার আননাহহাস, উমদাতুল কিতাব (দারুইবনেহাযম,পৃ/88) 

[40]ইবনু তাইমিয়াহ, বাগ্বিয়াতুল মুরতাদ (মাকতাবাতুল উলুম ওয়াল হিকাম, পৃ/299)  

[41]আব্দুলক্বাদির আলক্বুরেশী, আজজাওয়াহিরুল মাদ্বিয়াহ ফি তবাক্বাতিল হানাফিয়াহ (দারু হিজর, তাঃ আব্দুল ফাত্তাহ মুহাম্মাদ আলহুলুউ, 4/568)  

[42]আব্দুলহক্ব আদদিহলওই, লামআতুন তানক্বিহ ফি শারহি মিশকাতিল মাসাবিহ (দারুন নাওয়াদির,9/210) 

[43]আবুবকর আলআনবারী, আযযাহির ফি মাআনিয়িই কালিমাতিন্নাস (মুয়াসসাতুর রিসালাহ, 2/138) 

[44]চার নং টীকাটি দেখুন।  

[45]একাধিক সংখ্যাক উলামারা হাদিসটিকে প্রসিদ্ধ (مشهور) হিসেবে গণ্য করেছেন। 

উদাহরণস্বরূপ, 

ذكره بدر الدين الزركشي في كتابه "اللآلئ المنثورة في الأحاديث المشهورة"(دار الكتب العلمية، صفحة 212) 

. وذكره جلال الدين السيوطي في كتابه "الدرر المنتثرة في الأحاديث المشتهرة"(عمادة شؤون المكتبات، صفحة 112) 

 .وذكره شمس الدين أبو الخير السخاوي في كتابه "المقاصد الحسنة في بيان كثير من الأحاديث المشتهرة على الألسنة" (مكتبة الخانجي,الجزء الأول ، صفحة 200). 

ذكره أبو الفداء إسماعيل بن محمد العجلوني الجراحي في كتابه "
كشف الخفاء ومزيل الإلباس عما اشتهر من الأحاديث على ألسنة الناس" (المكتبة العصرية، الجزء الأول، صفحة 435) 

[46]মুহাম্মাদ বিন ফারিদ যারইওহ, আলমুআরাদ্বাতুল ফিকরিয়াতুল মুয়াসিরাহ লিআহাদিসিস সহিহাইন (তাকওইন, 2/1010) ; সুলাইমান বিন মুহাম্মাদ আদদাবিখী, আহাদিসুল আক্বিদাতিল মুতাওয়াহহামু ইশকালুহা ফিস সহিহাইন(মাকতাবাতু দারিল মিনহাজ,পৃ/377-378)
 
[47]আলহুউত, আসনাল মাতালিব ফি আহাদিসি মুখতালিফাতিল মারাতিব (দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, পৃ/132)  

[48]আবু উয়াইস আশরাফ বিন নাসর আলকুর্দী, সিলসিলাতুল ফাওয়াইদিল হাদিসিয়াহ ওয়াল ফিক্বহিয়াহ (দারুল লু'লু'আহ, 6/235)  

[49]সুলাইমান বিন মুহাম্মাদ আদদাবিখী, আহাদিসুল আক্বিদাহ আলমুতাওয়াহহাম ইশকালুহা ফিস সহিহাইন (মাকতাবাতু দারিল মিনহাজ, পৃ/371)  

[50]আহমাদ বিন আব্দুলআযিয আলক্বুসাইইর, আলআহাদিসুল মুশকিলাতুও ওয়ারিদাহ ফি তাফসিরিল কোরানিল কারিম (দারু ইবনিল যাওযি, পৃ/248)।  

[51]https://www.islamweb.net/amp/ar/fatwa/137773 

[52] 
قال أبو بكر عبد الله بن محمد بن أبي شيبة الكوفي العبسي في كتابه المصنف (كمال يوسف الحوت ، الجزء السابع، صفحة 269) : حدثنا وكيع، حدثنا الأعمش، عن أبي صالح، عن كعب، قال: «بدأ الله تعالى بخلق السموات يوم الأحد فالأحد والاثنان والثلاثاء والأربعاء والخميس والجمعة وجعل كل يوم ألف سنة» 

[53]https://shamela.ws/book/37066/57 

قال مصحح حديث خلق التربة حسن أبو الأشبال الزهيري :  

…فعند ابن الجوزي أن الراوي الثقة هو الذي يخطئ مرة، وهذه المرة عند المحدثين لا عبرة بها؛ لأن الأصل فيه العدالة والتوثيق، لكن إذا أخطأ مرة عند ابن الجوزي سقطت عدالته كلها… 

[54]বাদরুদ্দিন আযযারকাশী, আলবাহরুল মুহিত ফি উসূলিল ফিক্বাহ (দারুল কুতুবী,5/46) 

[55]মুহাম্মাদ বিন আলী আশশাওকানী, ইরশাদুল ফুহুল ইলা তাহক্বিক্বিল হাক্ব মিন ইলমিল উসূল (দারুল কিতাবিল আরাবী,2/34)  

[56]আবুলহাসান আলআমিদী, আলইহকাম ফি উসূলিল আহকাম (আলমাক্তাবুল ইসলামী, 3/53)  

[57]নাসিরুদ্দিন আলআলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিয যয়িফাহ ওয়াল মাওদ্বুয়াহ (মাক্তাবাতুল মায়ারিফ,12/332)  

[58]দেখুন : এই লেখাটির "হাদিসটির মাতান ইল্লতবিশিষ্ট হওয়া সংক্রান্ত কিছু কথা" অংশটি।  

[59]আলআলবানী, মুখতাসারুল উলুউ (আলমাক্তাবুল ইসলামী,পৃ/112)  

[60]মাজদুদ্দিন আবুসসায়াদাত ইবনুল আছির, আননিহায়াতু ফি গারিবিল হাদিসি ওয়াল আছার (আলমাক্তাবাতুল ইলমিয়াহ, 4/169)  

[61]মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ আলমাযহারী তাঁর "তাফসির"(মাক্তাবাতুর রুশদিয়াহ,1/49) গ্রন্থে বলেছেন যে, 

لا دليل في الحديث على ان المراد بالجمعة التي خلق فيها آدم أول جمعة بعد خلق الأرض لعل ذلك الجمعة بعد مضى الدهور 

অর্থ : উক্ত হাদিসের মধ্যে এমন কোনো দলিল নেই যা প্রমাণ করে যে যেই জুময়াতে আদম (আ) কে সৃষ্টি করা হয়েছে সেই জুময়াহ পৃথিবীকে সৃষ্টি করার ঠিক পরের প্রথম জুময়াহই, বরং হতে পারে যে সেই জুময়াহ বলতে উদ্দেশ্য বহু-যূগ গত হয়ে যাওয়ার পরে আগত কোনো জুময়াহ। 

এখন, আলমাযহারীর উক্ত বক্তব্যটি হাদিসটিতে বর্ণিত অন্যান্য ইয়াওমগুলোর জন্যও সত্য, হাদিসটিতে এমনও কোনো দলিল নেই যা প্রমাণ করে যে হাদিসটিতে বর্ণিত ইয়াওমগুলো একই সপ্তাহের অন্তর্ভুক্ত বা ধারাবাহিকভাবে একটার পর আরেকটা। 

*****